#আমায়_রেখো_প্রিয়_প্রহরে
#পর্ব_১০
Writer #প্রিমা_ফারনাজ_চৌধুরী
বড় সাইজের মগে করে কফি নিয়ে এল অভিক। সুজানা তখন অনা আর আবিদের সাথে বাগানের ভেতর। ফুলের নামগুলো সে শেখাচ্ছে তাদের। অভিক ধীরপায়ে হেঁটে হেঁটে তাদের পেছন পেছন গেল। অনা ঘাড় ঘুরাতেই অভিককে দেখে হেসে বলল
অভি আসি গেছে।
অভিক ফুলের টব টপকে ওদের কাছে গেল।
সুজানার দিকে মগ বাড়িয়ে দিয়ে বলল
নিন।
সুজানা অনিচ্ছা প্রকাশ করার আগেই অভিক বলল
তাড়াতাড়ি নিন।
সুজানা অনিচ্ছা স্বত্বেও নিল। বলল
আমার এখন খেতে ইচ্ছে করছেনা।
খেতে হবে। জুনিয়র আপনারা খাবেন?
দু’জনই চেহারা বিকৃতি করলো।
টিতা টিতা।
সুজানা ঠোঁট টিপে হেসে উঠলো। অভিক ভুরু কুঞ্চন করে তাকাতেই সুজানা অন্যদিকে ফিরে গেল।
কেন তিতা হবে?
সুজান বোলচে কফি টিতা টিতা।
সুজানা জিভে কামড় দিয়ে তাদের চুপ করতে বলল। অভিক এক হাতে কফির মগে অন্য হাতে জার নিয়ে পানি দিতে দিতে বলল
সুজানা আপনার মন খারাপ কেন?
সুজানা কফির মগে চুমুক দিয়ে দ্রুত হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে মুখ মুছলো। অভিকের দিকে সটান দৃষ্টি রেখে বলল
আমার মন খারাপ কে বলেছে আপনাকে?
সিক্সথ সেন্স।
সুজানা মাথা নামিয়ে নিল।
নিঃশব্দে একটি ভারী দীর্ঘশ্বাস পড়লো তার।
সে চায় না কেউ তাকে পড়তে পারুক তার মন খারাপের কারণ জানতে পারুক। খোলা খাতার মতো মানুষগুলোর পদে পদে বিপদ। তাদের পড়তে পারা মানুষগুলোর কাছে তাদের সবসময় দুর্বল হয়ে থাকতে হয়। সুজানা দুর্বল হতে চায় না।
সুজানা আপনাকে একটা প্রশ্ন করি?
প্রশ্ন?
হুহ।
যদি না পারি?
শাস্তি নেই।
তাহলে করুন।
অভিক জারটা নিয়ে হেঁটে অন্যপাশের গাছগুলোতে পানি দিতে দিতে বলল
এমন একটা জিনিস কিংবা কোনো বিষয়বস্তু আছে যেটা শুধুই আমার আছে।
সুজানা আগ্রহী হয়ে বলল
আচ্ছা। তারপর?
ওইটা আমি শুধু আপনাকেই দিতে পারি। ওটা কি?
সুজানা ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকলো। বলল
প্রশ্নের উত্তর এখন দিতে হবে?
পরে দিলেও পারেন। আমার মনে হয় না আপনি পারবেন।
পারব। একটু হিসাব কষতে হবে।
গুড সুজানা।
আচ্ছা আমি আমার বন্ধুদের জিজ্ঞেস করতে পারি?
একদম না।
কিন্তু কেন?
অভিক জারটা রেখে সুজানার হাত থেকে খালি হওয়া কফির মগটা নিয়ে নিল। বলল
সব প্রশ্নের উত্তর হয় না সুজানা। এনিওয়ে আপনাকে আজকে একা ছেড়ে দিলাম। রিকশা করে চলে যেতে পারবেন। কিন্তু কাল তাড়াতাড়ি আসবেন। আসবেন তো?
সুজানা চুপ করে রইলো। মৌনতা সম্মতির লক্ষ্মণ ভেবে অভিক চলে গেল।
___________________________
ঘড়ির কাঁটা দশটার ঘরে গিয়ে পৌঁছেছে। মেহুলকে রাহেলা বেগম গত পাঁচ মিনিট যাবত ডেকে ডেকে অস্থির হয়ে উঠেছেন। মেয়ের এখনো খাবার টেবিলে আসার নামগন্ধ নেই। এবার তিনি ভারী অসন্তুষ্ট হলেন। মনিরুল সাহেবকে বললেন
তুমি কি একবারও ডাকবেনা ওকে?
টেবিল গুছিয়ে আসতে তো সময় লাগে রাহেলা। আসু্ক। তুমি খাওয়া শুরু করো।
রাহেলা বেগম দুটো প্লেটে ভাত বেড়ে দিতে দিতে বিরক্তিকর গলায় বললেন
তোমার মেয়ের কপাল অনেক খারাপ জানো? শ্বশুরবাড়িতে লাঠিপেটা খাবে। আমি মা তাই তার এসব সহ্য করি।
আহা এসব বলো না তো।
মেহুল কিছুপরেই এল। চুপচাপ খেতে বসলো। মনিরুল সাহেব মেয়েকে বললেন
মা ডাকার সাথে চলে আসতে হয়।
সরি বাবা। খাওয়ার পর আমি আর কাজ করতে পারিনা। তাই বইপত্রগুলো গুছিয়ে আসছিলাম। সরি মা।
তোর সরি রাখ। শ্বশুরবাড়িতে গেলে খাওয়ার পরপর বিছানায় শুয়ে যেতে পারবি? খাওয়ার পরে বাসনকোসন গোছগাছ করতে হয়। ধুঁতে হয়। তারপর সব সামলে ঘুমাতে যেতে হয়। আমি কিছুই শেখায়নি বলে কথা শোনাবে তখন।
মেহুল ভাতের লোকমা মেখে মুখে দেয়ার আগেই থেমে গেল।
মা সবসময় এসব কি কথা বলো? তখন আমি সেরকম হয়ে যাবো। অভ্যাস হয়ে যাবে।
মনিরুল সাহেব মুচকি হাসলেন। বললেন
আচ্ছা এখন সেসব কথা থাক। মেহুল একটা কথা জানার ছিল তোমার কাছ থেকে।
জ্বি বাবা।
অভিক ফারদিন লেকচারার তোমার ডিপার্টমেন্টে?
মেহুল মাথা নামিয়ে মিহি গলায় বলল
হুম।
তোমাকে তোমাদের স্যারের মা পছন্দ করেছিল। কিন্তু তুমি এখন উনার অপছন্দের।
মেহুল খাওয়া বন্ধ করে বাবার দিকে তাকালো।
কারণ উনি জানেন যে তোমার সাথে অন্য কোনো, মানে অন্য কারো সাথে সম্পর্ক, মানে বুঝতে পারছ আমি কি বলতে চাইছি।
রাহেলা তা শোনার সাথে সাথে গোলগাল চোখ করে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকালো মেহুলের দিকে। মেহুল পানি খেল।
এসব কি সত্যি শুনছি মেহুল? যদি সত্যি না হয় তাহলে আমায় বুঝাও কেন উনারা এসব বলছেন? আর যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে বলো কে সে?
মেহুল সাদা প্লেটে ভাত নাড়তে লাগলো শুধু। চোখ প্লেটে নিবদ্ধ।
মনিরুল সাহেব বললেন
আমি সুজানার কাছে এখন ফোন দিতে পারি কিংবা অনেক উপায় আছে যার মাধ্যমে সত্যিটা জানতে পারি। কিন্তু বেটার হয় তুমি যদি আমাকে সবটা খুলে বলো। আমি তোমার বাবা।
মেহুলকে কিছু না বলতে দেখে তিনি বললেন,
ওকে সময় নাও। তবে কালকের আগে জানতে চাই সবটা। আশা করি তুমি কিছু লুকোবে না আমার কাছ থেকে। তোমাকে উচ্চশিক্ষিত করছি তাই তোমার কাছ থেকে বেটার কিছু আশা করি আমি। আশা করি হতাশ হবো না। রাহেলা ওকে মাছ তুলে দাও।
রাহেলা বেগম বাটি ঠেলে দিলেন। মেহুল মাথা নামিয়ে চুপচাপ খেয়ে উঠে গেল আলু আর বেগুন ভাজি দিয়ে।
রাহেলা বেগম রাগে গজগজ করতে করতে বললেন
তোমার লাই পেয়ে পেয়ে নষ্ট হয়েছে ও। ওর সমবয়সী মেয়ে সুজানা নেই? বাপ মরা মেয়েটার চালচলন দেখেছ?
কি বলতে চাইছো রাহেলা? এখন সব দোষ আমার?
হ্যা তোমার। সময় থাকতে কি করবে করো? ছেলেটা কে খোঁজ নাও।
গলার আওয়াজ ছোট করো। দেয়ালেরও কান আছে ভুলে যেওনা। মেয়ে বড় হয়েছে। ওর পছন্দ অপছন্দ থাকতেই পারে। আমার মেয়ের উপর আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে। ও এমন কিছু করবেনা যাতে আমার মানসম্মান নষ্ট হয়।
________________
ট্রেনের বগি দখল করে বসলো বন্ধুমহল। ঘুম ঘুম আবেশের কারণে আলসেমি কেটে উঠেনি এখনো। চোখমুখ ফোলা আর হাই তুলতে তুলতে সিটে হেলান দিয়ে বসলো সবাই। ঝকাঝক শব্দ করে শাটল ছেড়ে দিতেই পিনপতন নীরবতা কেটে আহির বলে উঠলো
কাল একুশে ফেব্রুয়ারি না? প্ল্যান কি?
সুজানা ব্যাগের চেইন খুলতে খুলতে জবাব দিল
হ্যা। আপাতত কিছু জানিনা।
শান্তা বলল
আর কি শাড়ি পড়ব আর ফুল দিতে যাব। ব্যস। মজা হবে রে তাই না।
মেহুলকে চিন্তিত দেখে সুজানা কনুইয়ের গুঁতো মারলো।
কি রে চুপ কেন?
মাথা দুলালো সে। নিখিল বলল
এই শোন বড়দার বিয়ে ঠিক হয়েছে বুঝেছিস? তোদের দাওয়াত পড়ছে।
সবাই একসাথে হৈহুল্লোড় করে উঠলো। আহির বলল
কি বলিস দোস্ত? কতদিন বিয়া খায় না। তাইলে তো ভালোই জমবে। রাতে টাতে পড়ছে নাকি? তাইলে তো বিরাট সমস্যা।
শান্তা বলে উঠলো
হাহ রাখ তোর সমস্যা। বেডামানুষের এত ভয় কিসের? মায়ের আঁচলের তলে বইয়্যা থাক।
আহির চোখ রাঙিয়ে তাকালো।
চুপ থাক। তুই মায়ের কদর কি বুঝবি? তুই তো দাদীর আঁচলের তলে থাকিস।
শান্তা ক্ষেপে উঠলো। আঙুল তুলে শাঁসিয়ে বলল
আহিরের বাচ্চা।
আহির শার্টের কলার পেছনে ঠেলে দিয়ে বলল
মা তুলে কথা বলবি না।
আমার দাদী তুলে কথা বলবি না।
তুই আগে বলছোস।
সকাল সকাল মুখ খারাপ করবিনা আহিরের বাচ্চা।
তুই একটা আস্ত অশান্তির বাচ্চা।
রাগে গজগজ করতে করতে মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে বসলো শান্তা। নিবিড় বলল
আরেহ থাম।
সামান্য ব্যাপার নিয়েও তোদের ঝগড়া করতে হয় না? বিয়ে রাতেই পড়ছে। আর তোরা মেহেদিতে যাবিনা? দুদিন সময় নিয়ে যাবি। সমস্যা কোথায়? মেহু সুজু তোদের সমস্যা হবে? শান্ত তোর সমস্যা হবে?
শান্তা মাথা নাড়ালো।
নো। মুজে কই পেরেশানি নেহি।
সুজানা বলল
আম্মাকে বুঝিয়ে বলতে হবে। মেহু আর শান্ত গেলে সমস্যা নেই।
মেহুলও মাথা নাড়ালো।
আমার সমস্যা নেই।
নিখিল ফুঁস করে শ্বাস ছাড়লো। বলল
তাইলে তো সমস্যা নাই মামা। কিন্তু কবিসাহেব তো কিছু বলল না ।
শান্তা ডাকলো
ওই ভ্যাবলাকান্ত!
সবাই তাদের বিপরীত পাশের নিহাত নামের মেয়েটার পাশের সিটে জায়িন নামক ছেলেটার দিকে তাকালো। চিকন ফ্রেমের চশমা ঠেলে বোকাসোকা চোখে তাকালো ছেলেটা।
নো প্রব । আম্মুকে ম্যানেজ করে নেব। দু রাতের ব্যাপারই তো।
নিখিল উচ্চরবে বলে উঠলো
তাইলে তো কোনো সমস্যাই রইলো না গাইস।
জায়িন বলল
কিন্তু নিহাতকে দাওয়াত দিবিনা? ওকে ছাড়া গেলে আম্মু আর কাকিয়া আমাকে কি বলবে?
নিহাত কানে ইয়ারফোন গুঁজে জানালার বাইরে মগ্ন থাকায় কথাটা শুনতে পেল না। সবাই নিখিলের পানে তাকালো।
নিখিল কান মললো হাতে। সুজানা বলল
আমার মনে হয় না ও যাবে। তাও তোর ভাইয়ের বিয়েতে।
আহির বলল
আরেহ বেটা তোরে দিছে মানে নিহাতরেও দিছে।
জায়িন হাসলো। নিহাতের কান থেকে ইয়ারফোন খুলে নিয়ে বলল
নিহু গুড নিউজ ?
নিহাত ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করলো
হোয়াট !
বিয়ের দাওয়াত পড়েছে?
তোর বিয়ের?
জায়িন হাসলো।
নিখিলের।
মানে?
নিখিলের দিকে চোখ ফেলতেই নিখিল জানালার বাইরে মুখ করলো। গলা পরিষ্কার করে থুতু ফেলল।
মানে নিখিলের ভাইয়ের। দাওয়াত দিয়েছে। যাবিনা? কাকী আর কাকাইকে ম্যানেজ করা আমার দায়িত্ব।
শান্তা বলল
আমরা সবাই যাচ্ছি নিহাত। তুমি যেতে পারো আমাদের সাথে। একসাথে বেড়ানোর মজাটাই আলাদা। যাবে?
নিহাত চুল কানের পেছনে গুঁজে বেশ ভেবেচিন্তে জবাব দিল
কিন্তু আমাকে তো কেউ দাওয়াত দেয়নি।
সবার দৃষ্টি সাথে সাথেই নিখিলের দিকে ঘুরে গেল।
নিখিল সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল
কি দেখছিস?
ঘটা করে কাউকে দাওয়াত করে দিলাম কখন? তোদের সবাইকে বলেছি গেলে যাবি না গেলে বিয়ে আটকে থাকবে না।
সুজানা বলল
আচ্ছা আচ্ছা আমরা সবাই যাব। নে সবাই নাশতা খা। আম্মা খেজুরি পিঠা বানিয়েছে।
সবাইকে পিঠা বিলি করে দিল সুজানা। খেতে খেতে মায়ের হাতের পিঠার প্রশংসায় ভাসলো বন্ধুমহল।
________________________
বৈদ্যুতিক পাখার ভনভন শব্দ আর ছাত্রছাত্রীর কোলাহলে মাতানো লাইব্রেরীর ছোট্ট এককোণায় বই ঘাটাঘাটি করছে সুজানা।
প্রকান্ড লাইব্রেরীটি চবির অন্যতম নিদর্শন। যার গ্রন্থাগারের সংগ্রহ সংখ্যা চার লক্ষেরও অধিক। প্রকান্ড লাইব্রেরীটিতে চারপাশে অসংখ্য জ্ঞান আহরণকারীদের পদচারণায় মুখোরিত কল্লোলিত গ্রন্থাগারটিতে সুজানা সময় পেলেই ছুটে আসে বই সংগ্রহের উদ্দেশ্যে। মেহুল আর শান্তাও এসেছিল সাথে করে কিন্তু হুট করে দু’জনেই উদাও। সুজানা উপন্যাসের বই ঘাটতে ঘাটতে ইতোমধ্যে অনেকগুলো ঘাটাঘাটি করে ফেলেছে। “রাত ভরে বৃষ্টি ” আর “নবনী” বইদুটো দেখে অন্যগুলো রেখে দিল সে। বইদুটো টানার সময় মনে হলো অপর পাশ থেকে কেউ বই ধরে রেখেছে। সুজানা বইটা ছেড়ে দিতেই ধপাধপ তিন চারটা বই একসাথে পড়ে গেল। মনে মনে ভারী বিরক্ত হয়ে ওপাশের মানুষটাকে দেখার চেষ্টা করলো সে। বইগুলো তুলে বলল
বই ধরেছেন যখন তখন আবার ছেড়ে দিলেন কেন? আজিব! মেহু নাকি? এই শান্তা?
কোনো আওয়াজ এলো না। তবে পাশ থেকে কয়েকটা বই ধীরেধীরে সরে গেল। হাহ তার পছন্দের বইগুলো নিয়ে নিল? বইগুলো সরলো আর ওপাশে ফর্মাল ড্রেসআপে অভিককে দেখে চমকে সটান হয়ে দাঁড়ালো সুজানা। অভিক তাকে চমকাতে দেখে চমৎকার করে হাসলো। ভুরু উঁচিয়ে বলল
বাচ্চাদের এসব উপন্যাস পড়া বারণ।
সুজানার চোখগুলো স্বাভাবিকের চাইতে বড় হওয়ায় হাঁসের ডিমের মতো দেখালো। অভিক কপালের একপাশে কলমের দিয়ে চুলকে বলল
সুজানা আপনাকে একটা প্রশ্ন দিয়েছিলাম না? উত্তর খুঁজে পেয়েছেন?
সুজানার মনে পড়লো প্রশ্নটি। নীরবতা কাটিয়ে উঠে চোখ ফ্লোরে রাখা অবস্থায় বলল
আপনার কাছে আছে অমন জিনিস আপনি আমাকে দেবেন কেন?
গুড কোয়শ্চন।
রেকটা খালি হওয়ায় দুজনেই একেবারে মুখোমুখি। সুজানা অন্য রেকের দিকে এগিয়ে বলল
আমি অন্য বই নিতে এসেছিলাম।
উহু। আপনি এসবই নিতে এসেছেন। নিয়ে যান। আপনার বড় হওয়া দরকার।
সুজানা তার দিকে আর ফিরলো না। বলল
না পড়ব না আর।
আপনাকে পড়তে হবে।
সুজানা মাথা নাড়ালো।
না।
আমার প্রশ্নের উত্তর এখানে।
সুজানা সাথে সাথেই ফিরলো।
কোথায়?
অভিক নাকের নিচে আঙুল টেনে চোখ নিভিয়ে হাসলো। বলল
এই বইগুলোতে।
সুজানা বইদুটো নিয়ে সে চোখ নত অবস্থায় জানতে চায়
যদি উত্তরটা ঠিকঠাক পারি আপনি আমাকে কি দেবেন?
অভিক এবার হেসে উঠলো সশব্দে।
ওই যে বললাম পুরো বাগান দিয়ে দেব। পুরোটা আপনার।
সুজানা কিছু বলবে তার আগেই মার্কেটিং বিভাগের অন্য একজন প্রভাষক এসে পড়লেন।
অভিক সাহেব আপনাকে খুঁজছিলাম।
মেহুল আর শান্তাও এসে পড়তেই সুজানা বড় করে শ্বাস ফেলে সরে পড়লো দ্রুত। বাবারে বাবা স্যারটা কোথাথেকে যেন উড়ে চলে আসে।
মেহুল আর শান্তার সাথে বকবক করতে করতে স্যারের সাথে দেখা হওয়ার ব্যাপারটা বর্ণনা করতে ব্যস্ত সুজানা। ওই রেকে রাখা কয়েকটা বইয়ের ফাঁক গলে কারো তুখোড় দৃষ্টি তখনও তার উপর নিবদ্ধ।
চলবে………….
রেগুলার গল্প চাইলে লেখিকাকে ঘুষ তো দিতে হবে নাকি? ইয়ে মানে কমেন্ট 😜