#অর্ধ_নক্ষত্র ।১২।
#লেখনীতে_Aiza_Islam_Hayati
সূর্যের তেজের প্রকোপ হ্রাস পেয়েছে অনেকাংশ।বসার ঘরের বিস্তর জানালা ভেদ করে ছুটে আসছে শীতল বাতাস।ভোরের আলো ফোটার পর থেকেই আকাশে কালো মেঘের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।গত কাল রাতে বাড়ি ফেরে নি আরশমান তা নিয়েই চিন্তায় আছেন আরশমানে মা।আমজাদ খান শীতল বাতাস উপভোগ করছেন এবং টিভির পর্দায় সংবাদ দেখছেন,তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে বললেন,”আরেহ চিন্তা করো না তো,তোমার ছেলের কে কী করবে?আর আরশমান বাইরে থাকলে আমার তো মনে হয় ওর না বরং অন্যকারোর কপালে শনি,রবি সব চলে আসে।”
আরশমানের মা বিরক্ত হলেন স্বামীর কথায়,সে চিন্তায় উদগ্রীব হয়ে সদর দরজার বরাবর দাড়িয়ে বারংবার শাড়ির আচলের এক কোনা নিয়ে মোড়া-মোড়ি করছে।তার একমাত্র আদরের ছেলে আরশমান,যেইদিন বাড়ি ফিরতে দেরী হয় তখনই একেক ধরনের দুশ্চিন্তা মাথায় চেপে বসে।
আমজাদ আচমকা উচ্চ স্বরে হেঁসে উঠলো,হাসতে হাসতে বলল,”দেখেছো আমি বললাম না তোমার ছেলে বাইরে থাকলে কারোর না কারোর কপালে শনি, রবি সব ঘণ্টা বেজে ওঠে।”
আরশমানের মা ফিরে তাকালেন তিক্ত কণ্ঠে বললেন,”কী বলতে চাইছো তুমি?”
“দেখো দেখো নির্জন মাঠের কোণায় গাছের সঙ্গে
বি ধ্ব স্ত অবস্থায় কয়েকটা ছেলেকে পাওয়া গিয়েছে।”
“ম রে নি? বেঁচে আছে?আর এতে আমার ছেলের কথা কেন বলছো তুমি?”
“নাহ ম’রেনি আধ ম’রা অবস্থা ছেলেগুলোর,আর এইসব কে বা করতে পারে তোমার ছেলে ছাড়া। তাকে ছাড়া আমার কাউকে সন্দেহ হয়না।”
“তুমি আমাকে এত ভালো করে চিনো বাবা!”,দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে কথাটি বলল আরশমান।আরশমান এর কণ্ঠের ধ্বনি কর্ণে এসে পৌঁছাতেই তার বাবা মা দরজার পানে চাইলো।আরশমানের মা ছুটে গেলো,ছেলের দুই গালে হাত রেখে বলল,”কোথায় ছিলি বাবা?”
“মা পুরো রাত জুড়ে এলাকা থেকে অনেকগুলো ময়লা আবর্জনার কে সরানোর কাজে নিযুক্ত ছিলাম।বলো এই এলাকার এমপি আমি,আর আমিই যদি এলাকার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর না দেই তাহলে কি করে হয়।”
আরশমানের মা মলিন হেঁসে বললেন,”দেখেছো ছেলে আমার কত্ত ভালো।”
আমজাদ আড় চোখে তাকিয়ে বললেন,”ভালোয় গুতয় তোমার ছেলেকে।”
আরশমান হাঁসলো অগ্রসর হলো,তার বাবার পাশে এসে বসলো বলল,”ঠিক বলেছো বাবা।আমার মধ্যে এতই ভালো গুণ আছে যে আমাকে ভালো কাজ করার জন্য সারাক্ষণ গুতয়।”,
“বে’দ্দ’প ছেলে।”
“জানি বাবা আমি অনেক ভালো বারবার বলতে হবে না।আগে বলো আমার শ্বশুর বাবা লন্ডন থেকে কবে আসছে?ওনাকে দ্রুত চলে আসতে বলো,আমি আমার বউকে জলদি আমার করে এই বাড়িতে নিয়ে আসতে চায়।”
“নির্লজ্য ছেলে।তোর শ্বশুর বাবা আরো দুই মাস পর আসবে এইবার তুই অপেক্ষা কর।”
আরশমানের ভ্রু কুঞ্চিত হলো থমথমে কণ্ঠে বলল,”আমার শ্বশুর বাবা কে ফোন করে বলে দাও এই এক সপ্তাহর মধ্যে টিকেট রেডি করে বাংলাদেশ আসতে,নাহয় ওনাকে ছাড়াই আমি আমার বউকে বিয়ে করে ফেলবো।”
আমজাদ দুরুক্তি করার জন্য মুখ খুলবে তার পূর্বেই আরশমান কণ্ঠে একই রেশ টেনে বলে,”এইটা শুধু কথার কথা নয়,হুমকি হিসেবেও নিতে পারো।তাই
জলদি আসতে বলো শ্বশুর বাবা কে।নাহয় মেয়ের বিয়ে দেখা লাগবে না বরং একেবারে এসে নাতিপুতির মুখ দেখবে।”,বলে নিজের ঘরের দিকে চলে গেলো আরশমান।
আমজাদ বিস্মিত নয়নে আরশমানের প্রস্থানের দিকে চেয়ে থেকে বলল,”এ পোলা এত নির্লজ্য কিভাবে?আমাকে হুমকি দিচ্ছে?”
আরশমানের মা রান্না ঘরের দিকে অগ্রসর হতে হতে বললেন,”পোলার বাপ যখন পোলার মা কে তুলে এনে বিয়ে করতে পারে।তাহলে এর কাছে আমার পোলার হুমকি কিছুই না।”
আমজাদ এর মুখ সঙ্গে সঙ্গে হা হয়ে গেলো।
আরশমানের মা পুনরায় বললেন,”বাপ এত বড় নি’র্লজ্য হয়ে যদি ছেলেকে নি’র্লজ্জের উপাধি দেয় তাহলে তা অত্যাধিক হাস্যজনক ব্যাপার তাই না।”
আমজাদ মুখটি ছোট করে বিড়বিড় করলেন,”নি’র্লজ্জের কী আছে নিজের বউকে তুলে এনেই তো বিয়ে করেছি।অন্যের বউকে নিয়ে তো আর টানাটানি করিনি।এমন করে সবাই বলে যেনো মস্ত বড় পাপ করে ফেলেছি।”
.
জুনায়না হাসপাতালের বাইরে দাড়িয়ে আছে।মাঠের কোণায় গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা বি’ধ্ব’স্ত ছেলেগুলোকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।প্রত্যেকটি ছেলের অবস্থা দেখে ডাক্তার বলছেন বাঁচার সম্ভনা খুবই কম।
জুনায়না আকাশ পানে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলল,” আল্লাহ থ্যাংক ইউ আমার জীবনে এমন একটা বন্ধু পাঠানোর জন্য,আমি যা করতে পরি না তা সে অনায়াসে করে ফেলে।এইগুলোর বেঁচে থাকার অধিকার নেই।জেলে থেকে কয়েকমাস জেল খেটে এইগুল আবার মুক্তি পেয়ে যেত।আবার নিজেদের কৃষিত কাজে লিপ্ত হতো।”
জুনায়না পকেট থেকে ফোন বের করে আরশমানের নাম্বার ডায়াল করে ফোন করলো,শেষ রিং বেজে কেটে যাওয়ার আগেই ফোন ধরলো আরশমান। ঐপাশ থেকে ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলল,”কী দোস্ত ফোন করছিস কেনো?”
“থ্যাংক ইউ দোস্ত।”
“আরেহ ভাই কীসের থ্যাংক ইউ।এমনেই পুরো রাত জেগে ছিলাম।সবে চোখ টা লেগে এসেছিল,আর তুই এই থ্যাংক ইউ বলতে আমার ঘুম ভাঙালি।অ’সভ্য মাইয়া।”
জুনায়না হাঁসলো বলল,”আরেহ আবর্জনা গুলোকে এত সুন্দর করে সরিয়ে দিলি তার জন্যই থ্যাংক ইউ বলতে ইচ্ছে করলো।”
“যারা আমার কলিজায় আঘাত করেছে ওদের তো শাস্তি পেতেই হয় দোস্ত তাছাড়া আমি আমার এলাকায় আবর্জনা একদম চাই না।এইবার তুই তোর ফোনটা রাখ আমাকে ঘুমাতে দে।”
জুনায়ানা ঠোঁট প্রসারিত করে হাঁসলো।কানের কাছ থেকে ফোন নামিয়ে আনলো,ফোনের ওয়ালপেপারে দেয়া প্রশান্তর হাঁসি মাখা মুখখানার ছবিটি দেখে জুনায়না বলে উঠলো,”তোকে অনেক করে চাই প্রশান্ত।কবে যে তুই নিজে থেকে বলবি ভালোবাসি জুনায়না।তুই আমার শখের একজন ব্যক্তি প্রশান্ত।আমি বেঁচে থাকা অবস্থায়ই তোর মুখ থেকে ভালোবাসি কথা শুনে যেতে চাই প্রশান্ত।তোর সাথে আমার সুন্দর একটা সংসার গড়ে তুলতে চাই।”
.
সকাল থেকে ধূসরকে নিয়ে একেক ধরনের টেস্ট করে যাচ্ছে ফাইজ এর টিম।সবে টেস্ট গুলো শেষ করে ফাইজ ধূসরকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এলো।নিজের গাড়ির সম্মুখে এসে দাড়িয়ে গাড়ির ভিতরে বসে থাকা ড্রাইভার কে বলল,”চাচা ধূসরকে ওর বাড়ি পৌঁছে দিবেন।ওকে সাবধানে নিয়ে যাবেন চাচা।আবহাওয়া দেখে মনে হচ্ছে ঝড় নামবে।”
ড্রাইভার চাচা গাড়ি থেকে বেরিয়ে ফাইজ থেকে ধূসর কে নিজের কোলে নিয়ে বলল,”আব্বা জান আপনি একদম ভাববেন না ধূসর বাবারে আমি সাবধানে পৌঁছে দিবো।”,ধূসর টিপটিপ চোখে চেয়ে রইলো ফাইজ এর দিকে ছেলেটির মাথা যন্ত্রণায় মুখ ফুটে কথা বলতে পারছে না।
ফাইজ ধূসর এর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,”ধূসর কালকে থেকে আর তোকে টানা হেচড়া করা হবে না।মাথা যন্ত্রণা করছে,ভাই আমার ঠিক হয়ে যাবি তুই দেখিস।আমরা চেষ্টা করছি আর আমরা হেরে গেলে আল্লাহ কোনো না কোনো মীরাক্কেল করবে তোকে ঠিক করে তুলবে।”,বলে ফাইজ ধূসরের কপালে ওষ্ঠ ছুঁয়ে দিলো।ধূসর ঠোঁট প্রসারিত করে ক্ষীণ হাঁসলো বিড়বিড় করলো,”ভাইয়া তুমি ভালো।”
ড্রাইভার চাচা গাড়িতে গিয়ে বসলেন নিজের কোলে ছোট্ট ধূসর কে এক হাতে জড়িয়ে ধরে রেখে গাড়ি স্টার্ট দিলেন।ফাইজ এর দিকে চেয়ে বললেন,”আব্বা জান যাই তবে।”
হাসপাতালের প্রবেশ দ্বার এর সম্মুখে দাড়িয়ে জাহরা দেখছে ফাইজকে।মানুষটা নিজের রোগীকেও এমন করে চিকিৎসা দিতে পারে।আচ্ছা জাহরা তো এই অব্দি ধূসরের পরিবারের কাউকেই দেখতে পেলো না।
ধূসরের পরিবারের কেউ নেই?
ফাইজ কপালের ঘাম মুছে হাসপাতালের প্রবেশ দ্বার এর দিকে অগ্রসর হলো,জাহরা কে দৃষ্টিগোচর হতেই ভ্রু কুঁচকে এলো।জাহরার সম্মুখে গিয়ে দাড়িয়ে বলল,”আর পনেরো মিনিট পর তোমার তো পেশেন্ট দেখার টাইম।এইখানে কী করছো?জলদি পেশেন্ট দেখে বাড়ি যাও,আবহাওয়া ভালো নেই।”
জাহরা ফাইজ এর কথার উত্তর না করে নিজেই প্রশ্ন করলো,”ধূসরের পরিবারের মানুষকে তো দেখলাম না।ছেলেটার এত বড় একটা রোগ আর ওনারা কী ওর সঙ্গে আসেন না?”
ফাইজ দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল বলল,”ধূসরের এই পৃথিবীতে কেউ নেই।ওর নানি মা থাকা অবস্থায় ওকে আমার কাছে এনেছিল চেকাপ এর জন্য,তার কয়েকদিন পরই ধূসরের নানিমা মারা যান।ওর নানিমার মৃত্যুর কথা আমার এসিস্ট্যান্ট আমাকে জানানোর পর,আমি তার পরেরদিনই যাই ওদের ভাড়া বাড়িতে।গিয়ে ধূসরকে বাড়িওয়ালার ঘরে পাই।ওই ছোট্ট ধূসর কে দেখেই আমার কেমন যেন এক মায়া লেগেছিল জাহরা,তারপর তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নেই ওকে আমার কাছে নিয়ে আসব।ধূসর এখন আমাদের বাড়িতে আমাদের সঙ্গেই থাকে।আমরাই ওর পরিবার।”
জাহরার ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাঁসির রেখা ফুটে উঠলো।বলল,”এইদিক দিয়ে আপনি খুব ভালো ফাইজ।”
ফাইজ ভাব নিয়ে বলল,”আমি জানি আমি অনেক ভালো।”,বলে ভিতরের দিকে হাঁটা ধরলো।জাহরা পিছন থেকে বলে উঠলো,”নিজের প্রশংসা নিজে করা ভালো না মিস্টার ফাজিল।”
ফাইজ ফিরে চাইলো হেঁসে বলল,”তাহলে কী তোমার প্রশংসা করবো?আরেহ জাহরা তুমি দেখতে জাস্ট পরীর মত।তোমার রূপ চাঁদের মত প্রশংসনীয় আর তোমার ঐ মুখে থাকা দাগ গুলো মোহনীয়।”
জাহরা অবাক হলো।ফাইজ পুনরায় হাঁসলো বলল,”একদম না তুমি তো পুরোটাই পেত্নী জাহরা।”,বলে এক দৌড় লাগালো ফাইজ।জাহরা রেগে ফাইজ এর পিছন পিছন দৌড়।
.
আকাশ ধূসর রঙের মেঘে ছেয়ে এসেছে।ধূসর রং এর সঙ্গে ক্ষীণ সাদা রঙের এক মিশ্রণে মুগ্ধ করে দেয়া রং ধারণ করেছে আকাশ।আশপাশ জুড়ে বয়ে যাচ্ছে শীতল বাতাস।গাছপালা সেই বাতাসের দিক ধরে দুলছে।জন শূন্য রাস্তার ধুলোবালি উড়ে বেড়াচ্ছে।মেহরা জানালা দিয়ে এহেন মনোমুগ্ধ পরিবেশ দেখে নিজেকে আটকে রাখতে পারল না বিছানার এক পাশ থেকে ওড়না নিয়ে গায়ে জড়িয়ে বেরিয়ে পড়ল। ফ্লাটের দরজার নিকট আসতেই তার মা মায়া বলে উঠলো,”এইসময় কোথায় যাচ্ছিস মেহরা।”
“মা আমি বাইরের পরিবেশ উপভোগ করতে যাচ্ছি,বৃষ্টির এই আগ মুহূর্ত আমার কত পছন্দ তুমি হয়তো জানই।”,বলে জুতা পরে ধীর পায়ে বেরিয়ে গেলো মেহরা।মায়া চিন্তায় পড়ে গেলো,মেয়েটা এই অবস্থায় বেরিয়ে গেলো।দুশ্চিন্তা নিয়ে নিজের ঘরের দিকে অগ্রসর হলো তখনই দৃষ্টিগোচর হলো সোফার এক কোণায় পড়ে বাজতে থাকা মেহরার ফোনটি।মায়া এগিয়ে গেলো ফোনটি হাতে নিয়ে বলে উঠলো,”কী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মেয়েটা।”
ফোনটি বাজতে বাজতে বন্ধ হয়ে গেলো,পুনরায় বেজে উঠলো।মায়া রিসিভ করলো কানের কাছে ধরতে ঐপাশ থেকে পুরুষালি কণ্ঠে ভেসে আসলো,”রূপসী আপনার হাত পায়ের অবস্থা কী?”
“বাবা আমি তোমার রূপসীর মা বলছিলাম।”
“ওহ মা আপনি।”
“কে তুমি বাবা আমার মেয়েকে রূপসী বলো,আবার আমাকে মা বলছো?শুনো বাবা এইসব ছেড়ে দাও আমার মেয়ের হবু জামাই আছে,সে জানতে পারলে তোমায় উল্টো করে লটকে রাখবে।”
ঐপাশ থেকে হাঁসি ঝংকার ভেসে এলো।মায়া বলল,” ছেলে তুমি পাগল নাকি হাসছো কেনো।ভালো করে বলছি শুধরে যাও।”
“মা আমি শুধরে গেলে আপনার মেয়ের কী হবে বলুন তো।আমি আরশমান মা আমাকে চিনতে পারছেন না।আপনার মেয়ে কী আমার নাম্বার সেভ করেনি?”
মায়া ভড়কে গেলো আমতা আমতা করে বলল,”ওহ বাবা তুমি।নাহ বাবা নাম্বার তো সেভ করেনি।”
“আপনার মেয়েটা বড্ডো জ্বালায় আমাকে।যাইহোক মা কোথায় সে?তার হাত পায়ের অবস্থা কি?”
“আরেহ বাবা বলো না।এই ঝড়ের আগের মুহুর্ত উপভোগ করবে সে একাই বেরিয়ে গিয়েছে।”
“কী বলছেন না,ওকে একা কেনো ছাড়লেন।ও তো ভালো করে হাঁটতেও পারে না।”
“ওকে আটকে রাখতে চাইলেও এই মুহূর্তে ও কারোর কথা শুনতে চায় না বাবা।”
“মা আপনি চিন্তা করবেন না আমি দেখছি।”
.
মেহরার খোলা কেশ এই শীতল বাতাসে এলোমেলো হয়ে উড়ছে।নিজেকে এই শীতল বাতাসে সিক্ত করে নিচ্ছে মেহরা।খিলখিল করে হাসছে সে।ধীর পায়ে এক এক করে কদম ফেলছে।হঠাৎ একটি খালি রিকশা নজরে পড়তেই মেহরা উচ্চ কণ্ঠে ডেকে উঠল,”এইযে মামা যাবেন?”
রিকশা চালক রিকশা ঘুড়িয়ে মেহরার সামনে এসে থামলো বলল,”কোথায় যাবেন?”
“মামা নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় না,আপনি আমাকে যেদিকে ইচ্ছে সেইদিকে ঘুড়িয়ে আনবেন।”
“কী সব বলেন?বৃষ্টি নামবো আর আপনে এইসব বলতেসেন।”
“প্লিজ মামা চলুন না আপনি যত ভাড়া চাইবেন আমি ততোই দিবো।”
রিকশা চালক মানতে চাইলো না দ্বিরুক্তি করলো।মেহরা পুনরায় অনুরোধ করলো।এক সময় রিকশা চালক মানলো।মেহরা উঠে বসলো রিকশায়।তার ঠোঁটের কোণে অমায়িক হাঁসি।আজ বহু দিন পর মেহরা মন খুলে হাসছে।
#চলবে।
ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে আশা করি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।