একটি_সাঁঝরঙা_গল্প #তানিয়া_মাহি #অন্তিমপর্ব_৩০(১)

0
294

#একটি_সাঁঝরঙা_গল্প
#তানিয়া_মাহি
#অন্তিমপর্ব_৩০(১)

আজ ফালাক-নিশোর বিয়ে। সবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজকের দিনটা বেছে নেওয়া হয়েছিল তাদের বিয়ের জন্য। বাহিরের কাউকেই বলা হয়নি এমনকি কাছেপিঠের কোন আত্মীয়দেরও না। বিয়েটা একদম শুধু দুইটা পরিবারের মানুষের সামনেই হবে। গতকাল শুধু নিশো ফালাককে নিয়ে বেরিয়েছিল একটা লাল টকটকে শাড়ি কিনতে। ফালাকের পছন্দমতো শাড়ি কেনা হলে দুজন আবার আগের মতো দুজনের বাড়িতে।
কথা হয়েছে আপাতত ফালাক নিজের বাড়িতেই থাকবে। কিছুদিন গেলে আবির আর তোয়ার সাথেই বিয়ের অনুষ্ঠান করে বড়সড় আয়োজন করে তাদের ঘরে তোলা হবে। জাফর সাহেবের কথায় কেউ আপত্তি করেনি।

সন্ধ্যা পরপরই আবির গেল জাফর সাহেব এবং নিশোকে তাদের বাড়িতে আনতে। বাড়িতে এসে দেখল সবাই তৈরি হলেও তোয়া এখনো তৈরি হয়নি। রূম্পা বেগম তৈরি হয়ে জাফর সাহেবের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত। আবির ঘর থেকে বেরিয়ে সোজা তোয়ার ঘরে নক করল। ভেতর থেকে তোয়ার গলা ভেসে এলো,

“কে? এসো।”

আবির দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করল। সামনের দিকে তাকাতেই দেখল তোয়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। পরনে হালকা গোলাপি রঙের জামদানি শাড়ি। চুলে খোপা করে কাধের ওপর ফেলে রাখা হয়েছে। সাদা রঙের ব্লাউজের সাথে হালকা গোলাপি রঙের শাড়ি যেন আলাদাভাবে সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দিয়েছে৷

তোয়া আয়নার দিকে তাকিয়ে খুব মনোযোগ সহকারে চোখে আইলাইনার দিচ্ছে। কোনদিকে তার খেয়াল নেই। একটু নড়াচড়া করলেই লাইনার ঘেটে ঘ’ হয়ে যাবে ভেবে খুব সাবধানের সাথে কাজটা করছে তোয়া। আবির এসে তোয়ার থেকে কিছুটা দূরে বিছানায় গিয়ে বসলো। তোয়া ব্যস্ত দেখে কোন কথা না বলে চুপচাপ তাকে দেখতে থাকল সে। মিনিট দুয়েক লাগলো চোখে লাইনার দিতে। পাশে রাখা ছোট ফ্যানটা অন করে মুখে বাতাস নিতে থাকলো। যখন বুঝল নষ্ট হওয়ার ভয় নেই তখন ছোট ছোট চোখে আবিরের দিকে তাকালো। মৃদু হেসে বলল,

“কেমন লাগছে আমাকে?”

আবির সহসা বলে উঠল,“প্রিন্সেস লাগছে। ইচ্ছে করছে আজই বিয়ে করে সাদা রঙের ঘোড়ায় চড়ে তোকে নিয়ে দূর-দূরান্তে পাড়ি জমাই। ভরসা করে যাবি না আমার সাথে?”

তোয়া আবিরের চোখে চোখ রেখে মৃদু গলায় বলল,“তোর সাথে যে পথে পাড়ি জমাবো সে পথের শেষটা প্রাপ্তি না লেখা থেকে যদি মৃ*ত্যু লেখা থাকে আমি তবুও যেতে চাই। প্রাপ্তি বা মৃত্যু সবেতেই শুধু তোকে লাগবে আমার, শুধু তোকে।”

আবির মুচকি হাসলো। দরজার দিকে একটু উঁকি দিয়ে দেখে উঠে দাঁড়ালো। তোয়ার কাছাকাছি এসে ঠিক সামনেটায় দাঁড়ালো। দুজনে কাছাকাছি, অনেক বেশি কাছাকাছি। তোয়া আবিরের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। আবিরও ঠিক একইভাবে তোয়ার চোখের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছে। সামনের ছোট চুলগুলো কানের পিঠে গুজে দিয়ে বলল,

“আজ বিয়েটা করে নিলে ভালো হতো না? এত সুন্দর সাজ, মিস করে যাব?”
”মিস করবি কেন? দেখছিস তো!”
“একটু জড়িয়ে টড়িয়ে না ধরলে চলে নাকি? এই ধর, একটু কাছাকাছি এলাম, জড়িয়ে ধরলাম, একটু হাতটা ছুঁলাম, হাত, গাল, কপাল, ঠোঁটে চুমু খেলাম।”

আবির কথাটা শেষ করতেই মেকি রাগ দেখিয়ে পেটে ঘু*ষি দিয়ে বলল,

“এই শোন, একদম নোংরা- অশ্লীল কথাবার্তা বলবি না। ট্রেনে কীভাবে জব্দ করেছিলাম ভুলে গেছিস? আবার কিন্তু….”

তোয়াকে কথা শেষ করতে না দিয়ে সবচেয়ে আশ্চর্যের কাজটা করে বসল আবির। তড়িৎ বেগে তোয়ার গালে চুমু দিয়ে দূরে সরে গেল। তোয়া আশ্চর্যের শেষ সীমানায় পৌঁছল। হা করে আবিরের দিকে তাকিয়ে রইল। আবির মুচকি হেসে বলল,

“এবার কী করবি কর? শোধ নিবি? একটা দিয়েছি, তোর দুটো দিয়ে জিততে হবে।”
“হারামি একটা।”
“বাহিরে আছি, জান। তাড়াতাড়ি এসো। আজ প্রয়োজন অবিবাহিতা থেকে বিবাহিতা ট্যাগ লাগিয়ে দিতে সাহায্য করছি।”

তোয়াকে আর কিছু বলতে না দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। তোয়া আবিরের যাওয়ার দিকে একভাবে তাকিয়ে মৃদু হাসলো শুধু। প্রেমের বহিঃপ্রকাশ আর ভিন্ন কী হতে পারে!
___

ফালাক- নিশোর বিয়ে সম্পন্ন হলো রাত দশটার দিকে। বাহিরের রুমে বসে সবাই তখনও গল্প করছে। মায়ের পাশে বসে আছে ফালাক। খয়েরী রঙের একটা জামদানী শাড়ি পরেছে সে। একই রঙের ব্লাউজ। গায়ের ফর্সা রঙটা যেন আরও টকটকে রঙ ধারণ করেছে। ঠোঁটে হালকা একটা রঙের লিপস্টিক, চোখে গাঢ় করে কাজল দেওয়া। কানে, গলায়, নাকে, কপালে স্বর্ণের অলংকার জ্বলজ্বল করছে। নারীর শরীরের সৌন্দর্য যেন স্বর্ণের গহনাতেই বেড়ে যায়। ফালাকের বেলাতেও সেটা। নাকে মোটা একটা নথ৷ ফালাককে ঠিক কতটা সুন্দর লাগছে সেটা সেটা নিশোর বারবার তাকানোটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে। সবার কথাবার্তার মাঝে সে কিছুক্ষণ পরপর ফালাককে চোরা-নজরে দেখে যাচ্ছে।

রাত এগারোটা ছুঁইছুঁই। তোয়া হাই তুলে রূম্পা বেগমকে উদ্দেশ্য করে বলল,

“মা, অনেক রাত হয়ে গেছে। এটা তোমার বা আমার শ্বশুরবাড়ি না। ভাইয়ার শ্বশুরবাড়ি। ও থাকুক। চলো আমরা বাড়ি যাই। আমার ঘুম পাচ্ছে। ”

রাবেয়া বেগম সামনের সোফা থেকে হেসে বললেন,
“মুখ ফুঁটে একবার আমার ছেলেটা বললে আজ এটা তোরও শ্বশুরবাড়ি হয়ে যেত, মা। চিন্তা করিস না খুব তাড়াতাড়ি এ বাড়িতে নিয়ে আসব তোকে। একদিনেই দুটো ছেলে-মেয়েকে বিয়ে দিলে আনন্দটা একদিনই করতে হতো, এখন দুইটা দিন পাব।”

তোয়া মুখ গোমড়া করে আবিরের দিকে তাকিয়ে বলল,“ আমি কি আমার বিয়ের কথা বলেছি না-কি! আমার ঘুম পেয়েছে সেটা বললাম। আমি বিয়ে করতে না পেরে ম-রে যাচ্ছি না। আর কিছুদিন শান্তিতে থেকে নিই।”

রাবেয়া বেগম আবার বলে উঠলেন,“আমার ছেলেকে বিয়ে করলে অশান্তিতে থাকবে না।”

সবার কথা চলল আরও কিছুক্ষণ। শেষ পর্যায়ে জাফর সাহেব বলে উঠলেন,“আজকের মতো উঠি৷ আসলেই অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। ”

জাভেদ সাহেব ঘড়িতে সময় দেখলেন। সাড়ে এগারোটা বাজে। তিনি আর আটকালেন না। জাফর সাহেব উঠে দাঁড়ালে তিনিও উঠে ভাইয়ের সাথে কোলাকুলি করে বললেন,

“তোমার ছেলেটা তাহলে আজ আমার বাড়িতে রইল, ভাই। আবির তোমাদের এগিয়ে দিয়ে আসুক।”

আবির সবাইকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে বের হলো। রাতের অন্ধকার আকাশ চাঁদের আলোতে আলোকিত হয়ে উঠেছে। চাঁদের চারপাশে বেশ কিছুটা জায়গায় আলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। জাফর সাহেব এবং রূম্পা বেগম আগে আগে হাঁটছেন। দুজনে বিভিন্ন কথাবার্তায় ব্যস্ত। আবির আর তোয়া পিছন পিছন হাঁটছে। বাড়ির ঠিক সামনে এসে তোয়াকে গেইট আটকাতে বলে রূম্পা বেগম এবং জাফর সাহেব ভেতরে চলে গেলেন।

তোয়া আবিরের থেকে বিদায় নিয়ে বলল,“সাবধানে বাড়ি যা। ফিরে আমাকে নক করিস। আমি অনলাইনে থাকব। সোজা বাড়ি চলে যাবি।”

আবির তোয়ার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,“তুই অশান্তির জন্য তৈরি হয়ে নে।”

আবিরের কথাটা ঠিক বুঝল না তোয়া। ভ্রু উঁচিয়ে শুধালো, “কী? কীসের অশান্তি? ”
“তুই বাড়িতে বললি না?”
“হুমায়ুন আহমেদ বলেছে না যে, বিয়ের পর তিন চারমাস সুন্দরী বউদের তাদের বর ঘুমাতে দেয় না? বুঝেছিস? আমি ওত ক্লিয়ারলি বললে আমাকে আবার অশ্লীল বলবি।”

তোয়া পায়ের স্যান্ডেল খুলে আবিরের দিকে অ*গ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,“যাবি তুই এখান থেকে! অশ্লীল একটা। বেয়াদব কোথাকার!”
________

ফালাক নিজের রুমে নিজের বিছানায় পা গুটিয়ে মাথায় লম্বা ঘোমটা টেনে বসে আছে। আজ নিজের চির পরিচিত, পুরোনো ঘরটা নতুন লাগছে। বড় হয়ে ওঠা এই একই ঘরে আজ অন্যরকম এক অনুভূতির জন্ম নিয়েছে।

ওয়াশরুমের দরজায় শব্দ হলো। সাদা পাঞ্জাবি-পাজামা পরিহিত প্রায় বছর ত্রিশ বয়সের এক তাগড়া যুবক বেরিয়ে এলো। হাতে পাঞ্জাবির হাতা গুটানো। পাজামার কিছু অংশ ভাজ করে ওপরে তুলে রাখা। হাত- পা, মুখ ভেজা। ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে শুকনো ঢোক গিললো নিশো। পাপসে পা মুছে ফালাকের দিকে তাকালো। ফালাক মাথানিচু করে বসে আছে। নিশো মৃদু গলায় বলল,

“তোমার তোয়ালেটা কোথায়?”

মাথা তুলে নিশোর দিকে চাইলো ফালাক। একদিকে ইশারা করে বলল,“ওই যে ওখানে।”

নিশো সেদিকে যেতে যেতে বলল,“শাড়ি পরে নামাজ পরতে পারবে? না পারলে চেঞ্জ করতে।”

ফালাক সংক্ষেপে বলল,“সমস্যা নেই৷ পারব।”

দুজনে নামাজ আদায় করে নিল। নিশোর আগে আগে নামাজ শেষ হলেও ফালাক বেশ সময় নিয়ে নামাজ শেষ করল। ফালাকের নামাজ শেষ হওয়ার আগ অবধি নিশো ঠিক একইভাবে পাশে বসে ছিল। নামাজ শেষ হতেই ফালাকের কোলে মাথা রেখে গুটিসুটি মেরে শুয়ে পরল। ফালাকের দিকে তাকিয়ে বলল,

“কী চাইলে সিজদায়? এত বড় সিজদাহ! ”

ফালাক নিশোর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
“সেটা আপনাকে কেন বলব? ওটা আমার আর আমার আল্লাহর ব্যক্তিগত ব্যাপার।”

নিশো মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল,“আমাদের ব্যক্তিগত কথা শুরু হবে না?”

ফালাক নড়েচড়ে বসল। জায়নামাজ কিছুটা গুছিয়ে বলে উঠল,“সরুন। উঠুন তাড়াতাড়ি।”

নিশো উঠে বিছানায় গিয়ে বসল। ফালাক জায়নামাজ দুটো ভাজ করে তাকে রেখে দিল। মাথার ওড়নাটা খুলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলের খোপাটা খুলে ফেলল। নিশোর দিকে এগিয়ে এসে বলল,

“একটা সাহায্য করবেন?”

নিশো ভ্রু উঁচিয়ে ইশারায় জানতে চাইল। ফালাক বলল,“চেঞ্জ করব। শাড়ির আঁচলের দিকের অংশটা পিঠের দিকে সেফটিপিন দিয়ে আটকানো। আমি হাতে নাগাল পাচ্ছি না। একটু খুলে দেবেন?”

ফালাকের কথা শুনে অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইল নিশো। নিশোকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ফালাক আমতা আমতা করে বলল,

“খু খুলে দেবেন না? মা’র কাছে যাব? শুয়েছে হয়তো।”

“আমি হেল্প করছি।” বলেই উঠে দাঁড়ালো নিশো। ফালাকের পিছন দিকে গিয়ে দাঁড়ালো। পিঠ, কোমর ছাঁড়িয়ে হাঁটু পেয়ে যাওয়া চুলগুলো আলতো স্পর্শে সরিয়ে দিল নিশো। খোলা পিঠে এই প্রথম কোন পুরুষের স্পর্শ পেয়ে পুরো শরীরটা যেন একটা ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল। চোখ বন্ধ করে নিয়ে ঢোক গিললো ফালাক।

নিশো সেফটিপিনের অংশ খুঁজে বের করল। পিঠের দিকে ব্লাউজের নিচের অংশ শাড়ির একাংশ আটকে রাখা। খুব সাবধানে শাড়ির আঁচলের নিচের অংশটা আলগা করল নিশো। খয়েরী রঙের ব্লাউজে ফালাকের শরীরটা যে আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে সেটা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারল নিশো। খোলা পিঠ তাকে বারেবারে আকর্ষণ করছে। বারবার শ্বাস ফেলছে নিশো। কম্পনরত হাতটা ফালাকের পিঠে ছোঁয়ালো সে। হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে এলো ফালাকের। চোখ খিঁচে আবারও বন্ধ করে নিলো৷ তারও শ্বাস ঘনঘন ফেলছে। ফালাককে অবাক করে দিয়ে প্রায় উন্মুক্ত পিঠে ঠোঁট ছোঁয়ালো নিশো। বিদ্যুতের ঝটকার মতো নিশোর দিকে ঘুরল ফালাক। নিশোর দিকে ধীরে ধীরে তাকাল। নিশোর চোখে যেন নেশা। ছোট হয়ে এসেছে চোখ দুটো। ফালাকের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,

“কী হলো?”

ফালাক নিশোর দিকে তাকিয়ে মৃদু গলায় বলল,“চেঞ্জ করে আসি?”

ফালাকের কথায় প্রত্তুত্তর করল না নিশো। নিজমনেই পাঞ্জাবির পকেট থেকে দুটো গোলাপ বের করল। একটা হলুন আর আরেকটা লাল। ফালাকের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,

“ফালাক, আজ তোমাকে পেয়ে যাওয়ার রাত। এই রাতে স্ত্রীকে কিছু একটা উপহার দিয়ে তাকে ছোঁয়ার অধিকার চেয়ে নিতে হয়। আমি তো বেকার। আল্লাহ চাইলে একদিন না হয় তোমার সব ইচ্ছে পূরণ করব৷ আজ এটা নেবে? গ্রহণ করবে আমাকে?”

ফালাক মৃদু হাসলো৷ শান্তি লাগছে তার। হাত বাড়িয়ে গোলাপটা নিয়ে বলল,“এতদিন একটা কথা বারবার বলতে চেয়েছিলেন। আজ শুনতে ইচ্ছে করছে। ভীষণ শুনতে ইচ্ছে করছে। বলবেন?”

নিশো এগিয়ে এলো। ফালাকের সামনে দাঁড়িয়ে কোমরে হাত রেখে কাছে টেনে নিল। চিবুকে হাত রেখে ফালাকের মুখটা নিজের সবচেয়ে কাছে নিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,

“ভালোবাসি৷ ভালোবাসি। ভালোবাসি।”

বুকটা কেঁপে উঠল ফালাকের৷ এই শব্দটা অদ্ভুত অনুভূতির সৃষ্টি করল। খাঁমচে ধরল নিশোর পাঞ্জাবির বুকের অংশ। চোখ বন্ধ করে প্রাণহীন রোবটের মতো দাঁড়িয়ে রইল। নিশো সোজা হয়ে ফালাকের দিকে তাকিয়ে রইল৷ চোখ দুটো সমস্ত মুখটাকে পর্যবেক্ষণ করে ঠোঁটে এসে পৌছল। দুইহাত দিয়ে ফালাকের মুখটা আলগোছে স্পর্শ করে ঠোঁটের দিকে অগ্রসর হলো। মিললো অধরে অধর। বাঁধন শক্ত হলো৷ থেমে গেল যেন র*ক্ত সঞ্চালন। সমস্ত শরীরে এসে বারি খেল শীতল হাওয়া। সূচনা হলো নতুন অধ্যায়ের। একে অন্যকে পাওয়ার আগ্রহ তীব্র থেকে তীব্র হলো। নিজেদের অপরজনকে উদ্দেশ্য করে বাড়িয়ে দিল আরও এক ধাপ। এ রাতে দুটো প্রাণ যেন জান্নাতি আরও একটা সম্পর্কের উত্থান ঘটালো। মন ছুঁলো মনকে আর শরীর! শরীর পেল শরীরকে। রাত বাড়ার সাথে সাথে একে অপরকে পাওয়ার উন্মাদনা বাড়তে থাকলে। সাক্ষী হলো একটা অন্ধকার রাত আর রাতের আকাশে অবস্থানরত আলো ছড়ানো চাঁদ। সাঁঝের পর এই রাতে শুরু হলো আরও একটা গল্প। এ গল্পে দুটো প্রাণ উচ্ছ্বসিত হয়ে সময়ের সাথে তাল মেলালো৷ বেপরোয়া হয়ে উঠল একে অপরকে পেতে। এ রাতটা তাদের, শুধুমাত্র তাদের। এ রাত ভালোবাসার আর একটা নারীর অপেক্ষার অবসানের৷ এ রাত দুটো মন আর শরীরের পূর্ণতার। এ রাতের গভীরতার সাথে সবার অলক্ষ্যে ভালোবাসাও গভীর হোক।

#চলবে…..

এবার বাকি আবির-তোয়ার একটি গল্প। আরও একটা পর্ব হয়তো পাবেন পাঠকমহল। আজ বেশি বেশি কমেন্ট চাই। বড় কমেন্ট মিস করছি।

গল্পের পরবর্তী পর্ব পেতে আমাদের গ্ৰুপে জয়েন হয়ে পাশে থাকুন। ধন্যবাদ।
https://www.facebook.com/groups/1129904368415371/?ref=share_group_link

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here