একটি_সাঁঝরঙা_গল্প #তানিয়া_মাহি #পর্ব_২৭

0
38

#একটি_সাঁঝরঙা_গল্প
#তানিয়া_মাহি
#পর্ব_২৭

বাসায় নিশো আর ফালাকের বিয়ের কথা চলছে। ইয়াদের বিয়ে থেকে বাড়ি ফেরার কয়েকদিন হয়ে গিয়েছে। সবার কাছে সবকিছু যেহেতু স্পষ্ট তাই তারা বিয়েতে আর দেরি করতে চাইছে না। নিজেদের যেহেতু ছেলে-মেয়ে তাই কাউকে দূরে পাঠানোর দূর্ভোগ আর পোহাতে হবে না। প্রথমে আবিরের বিয়ের কথা উঠেছিল তখন আবিরের এক কথাতেই তার বিয়ের কথাটা বন্ধ হয়েছে। সে এখনই বিয়ে করতে চায় না। সময় প্রয়োজন তার। পরিবারের কেউ আর জোরও করেনি৷ বিয়ের ব্যাপারে ছেলে-মেয়েকে জোর করা হয়তো ভালো দেখায় না। নিজেদের মধ্যে তো আরও বেশি খারাপ দেখায়। আবির আর তোয়ার বিয়েটা দেরিতে হোক এ ব্যাপারে সবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও নিশো আপত্তি জানিয়েছিল। সে সব সময় চেয়েছে তার আগে তোয়ার বিয়েটা হোক। বিষয়টা তোয়ার জন্য একটু ঘেটে গেছে দেখে সে নিজেও জোর করার সাহস পাচ্ছে না। বিয়েটা দিলে দিতেই পারে সবাই মিলে কিন্তু এভাবে বিয়েটা হলে দুজনের দূরত্ব কমার বদলে বেড়ে যাবে।

নিশো সকাল সকাল ঘুমোতে যাবে। দেখতে দেখতে অনেকগুলো দিন কেটে গিয়েছে। আগামীকাল তার বিসিএসের রেজাল্ট। নিজের বিয়ের কথাবার্তায়ও নিজে থাকতে পারছে না কয়েকদিন যাবৎ। সবসময় মনে হচ্ছে রেজাল্টের চিন্তায় পেটের নাড়ি অবধি কাঁপছে। মাঝেমাঝে তো দাঁড়িয়ে থাকতেও কষ্ট হয়। নাড়ি এত কাঁপা-কাঁপি করে যার কারণে পেট চেপে তাড়াতাড়ি করে বসে যেতে হয়। এই তো কিছুক্ষণ আগে, নিশোর মা রূম্পা বেগম রান্নাঘর থেকে খাবারগুলো টেবিলে নিয়ে আসছিল। তোয়া সাহায্য করছিল। সে নিজে খাবার টেবিলের একটা চেয়ার ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মেসেজে ফালাকের সাথে টুকটাক কথা বলছিল। আগামীকাল রাতে তাদের বিয়ের ডেট ফিক্সড করা হবে বলে জানালো ফালাক। এদিকে সাথে সাথে তোয়া খাবার টেবিলে তরকারির বাটি রেখে নিশোর দিকে তাকিয়ে বলল,

“কালকে তোর রেজাল্ট কয়টায় রে, ভাইয়া?”

ব্যস! এতক্ষণ রেজাল্টের কথা একটু ভুলে থাকার চেষ্টা করছিল নিশো৷ দুদিক থেকে দুজনের মেসেজ আর কথায় যেন কিডনিতে ব্যথা শুরু হলো সাথে হৃৎপিন্ডে। আর নাড়ি! সেটা কাঁপা-কাঁপির চোটে বেচারা আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারল না। চেয়ার ধরে ধীরে ধীরে বসে পড়ল।

তোয়াকে বলল,“রেজাল্ট দিলেই জানতে পারবি। এত জিজ্ঞেস করার কী আছে?”

তোয়া ভ্রু কুঁচকে শুধালো,“খারাপ কী বললাম আমি? এমন ব্যবহার করছিস কেন? পরিক্ষা ভালো দিসনি? রেজাল্টের কথা জিজ্ঞেস করলেই কেন হাওয়া ছাড়া বেলুনের মতো চুপসে যাস? আজব!”

নিশোর আর খাওয়া হলো না। সবাই একসাথে খেতে বসে, সবাই খাওয়া শেষ করে উঠে গেল অথচ সে যেন গুনে গুনে কয়েকটা করে মুখে দিচ্ছিল। রূম্পা বেগম ছেলের অবস্থা দেখে নিজেই অল্প একটু খাইয়ে দিলেন৷ সেটা খেয়েই বিছানায় এসে শুয়ে পড়ল নিশো৷

ঘুম আসছে না তার। অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকালে মৃদু আলো ছড়ানো চাঁদ চোখে পড়ছে। নিশো এক পলকে সেদিকে তাকিয়ে রইল। আগামীকালের কথাই ভাবছে সে। কী হবে কাল? যদি পাশ না আসে? ফালাককে বিয়ে করা ঠিক হবে তার জন্য? সবাইকে তো সে এটার জন্যই এক প্রকার দমিয়ে রেখেছে। রেজাল্টের জন্য কোনকিছুতে এগুতে দিচ্ছে না সে।

হঠাৎ কাশি হতেই বুক ডলতে ডলতে উঠে বসল নিশো। পাশেই রাখা বোতলটা হাতে নিল পানি খেতে। বোতলের ক্যাপ খুলে এক ঢোক খেতেই ফোনটা বেজে উঠল। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখল ফালাক কল করেছে। সচরাচর কোন প্রয়োজন ছাড়া ফালাক ফোন করে না। পানি খাওয়া শেষ করে বোতলটা পাশে রেখে ফালাকের কলটা রিসিভ করল। ফালাক ওপাশ থেকে মৃদু গলায় বলে উঠল,

“ঘুমাননি?”

নিশো বিছানা ছেড়ে জানালার দিকে এগিয়ে গেল। জানালার গ্রিল ধরে বাহিরের আকাশে নজর রাখলো। সংক্ষেপে উত্তর দিল,

“না।”
নিশোর জবাব পেয়ে কিছু একটা বুঝতে পারল ফালাক। শুধালো,

“চিন্তা হচ্ছে? বেশি চিন্তা হচ্ছে?”

দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলল নিশো। সহসা বলে উঠল,
“কোনকিছুতে মন দিতে পারছি না, ফালাক। দমবন্ধ হয়ে আসছে আমার। মনে হচ্ছে আগামীকাল নিজের কাছে নিজে হেরে যাব। কেন মনে হচ্ছে বলো তো যে, আমি কাল জিততে পারব না? কেন মনে হচ্ছে আমার?”

নিশো থামলো। ফালাক বুঝল নিশোকে অবিন্যস্ত লাগছে। ভয় কাজ করছে তার মধ্যে। ফালাক তীক্ষ্ণ বুদ্ধির তরুণী। সে বেশ স্বাভাবিক ভাবেই নিজে কারো মনের অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারে। সে কিছু বলবে তখনই নিশো আবার বেশ ভারি গলায় বলল,

“তুমি বরং ফোনটা রাখো। আমার উল্টাপাল্টা কথা তোমার এখন ভালো লাগবে না। মেজাজ খারাপ লাগবে। তুমি ঘুমোও, অনেক রাত হয়েছে।”

ফালাক ক্ষণকাল চুপ থেকে বলে উঠল,
“আমি নির্ঘুম রাত কাটাবেন আর আমি ঘুমোবো? এত চিন্তা কেন বলুন তো? আমি আপনাকে কোনদিন বলেছি নাকি যে আমার বর হিসেবে ক্যাডারকেই চাই? বলেছি কখনো? বলিনি তো। বরং আপনি ওটা না হলেই আমি খুশি হব৷ ওটাকে এখন আমার সতীন সতীন লাগছে। আমাদের বিয়ের কথা হচ্ছে আর আপনি রেজাল্ট নিয়ে আছেন। আমার দিকে দেখছেনই না।”

নিশোর কপালে সুক্ষ্ম ভাজ পড়ল। সে আসলেই কোনকিছুতে যেমন মন দিতে পারেনি সেরকম ফালাকের সাথেও ঠিকঠাক কোন ব্যাপারে কথা বলতে পারেনি। বিচলিত বোধ করল সে। বিলম্ব না করে অনুযোগভরা কণ্ঠে বলল,

“আমি কী করব, ফালাক? আমি পারছি না তো কিছু করতে। সৃষ্টিকর্তা যে আমাকে হতাশার সমুদ্রে ডুবিয়ে রেখেছেন। আমি হাতড়েও কূল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছি না। জানি সবাই আছে তবুও আমি সাহায্যের হাত বলতে শুধু রেজাল্ট পজেটিভ হওয়াটাকেই বুঝছি। দূরে যে আলোটা দেখা যাচ্ছে ওটা তুমি। তোমাকে পেতে আমাকে বাঁচতে হবে এখান থেকে।”

ফালাক ইতস্তত গলায় বলল,
“আমার বিজনেসটা আছে। ওটাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবেন না। ওটার মাধ্যমে এক সময় আমার আল্লাহ আমাদের সংসারে রহমত বর্ষণ করেছিলেন। আপনার জন্য সবার দোয়া আছে। আপনি আগামীকাল সফল হবেন ইন শা আল্লাহ। যদি কোনভাবে ভাগ্য আপনার সহায় না হয় তাহলে আমরা দুজন মিলে নাহয় বিজনেসটা বড় করব।”

ফালাকের কথায় মৃদু হাসলো নিশো। সংক্ষেপে বলল,“হেরে যাওয়া মানুষটাকে এত ভালোবাসলে কেন? মেয়েরা তো খারাপ সময়ে হাত ছেড়ে দিতে সবসময় প্রস্তুত থাকে।”

ফালাক নিশোর কথার পৃষ্ঠে বলল,“ সফল হওয়া অবধি প্রেমিকের পাশে থাকা নারীকে পুরুষ ছেড়েছে। সফল হয়ে নারীকে ভুলেছে আর নতুন নারীকে আপন করেছে সেক্ষেত্রে কী বলবেন? আপনি যদি এভাবে বলেন তাহলে তো আমরা দুই দিকের, দুই প্রান্তের মানুষ হয়ে যাব। আমি তো এক হতে চাই। ঠিক বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দুর মতো। আমি স্থীর থাকব আর আপনি আমার হাত ধরে দুনিয়া জয় করবেন।”

নিশো মৃদু হেসে ফিসফিসিয়ে বলল,“তোমার মধ্যে কী আছে বলো তো? নিমিষেই শক্তি হয়ে সামনে দাঁড়াও, মন ভালো করে দাও, সাহস যোগাও!”

ফালাকের ওষ্ঠদ্বয়ের উভয়প্রান্ত ঈষৎ প্রসারিত হলো। উৎসাহ নিয়ে বলে উঠল,

“আমি সেদিনের মতো শাড়ি পরেছি। চোখে কাজন, ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক আর ইয়া বড় একটা বেনী। দেখবেন?”

নিশো কিছুক্ষণ চুপ থেকে শুধালো,“কীভাবে দেখব? এখন তো অনেক রাত। তাছাড়া তুমি এত এনার্জি কই পাও বলো তো আমায়?”

ফালাক মুচকি হেসে বলল,“শুধু শাড়ি পরে সাজগোজ নয়, বিয়ের পর মাঝরাতে ছাদে সময় কাটানোরও এনার্জি আছে আমার। আপনাকে মাঝরাতে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ঘুম নষ্ট করার মন্ত্র আমার জানা।”

নিশো সহসা বলে উঠল,”জীবনের বারোটা বাজাতে আর কী চাই আমার!”
“হয়েছে হয়েছে। সুযোগ দিলে খুব বেশি বলে ফেলেন আপনি। এখন মেসেঞ্জার চেক করুন। আমাকে দেখুন আর নিশ্চিতে ঘুমিয়ে যান। আপনার সৃষ্টিকর্তার পর এই তুচ্ছ মানবী আপনার জন্য আছে। আপনার জিতে যাওয়াতেও আছে আর হেরে যাওয়াতেও। হেরে গেলে জিতে যেতে সাহায্য করার জন্য মেয়েটা আপনার জন্য আছে।”

নিশো পরিমিত হেসে বলল,”একটা কথা বলি?”
“ভালোবাসি বলবেন? না প্লিজ। আমি শুনব না। ওটা তুলে রাখেন। পরে শুনব। এখন রাখছি।”

নিশোকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে ফালাক তৎক্ষনাৎ কল কাটলো। নিশো সোজা মেসেঞ্জারে চলে গেল। বাহির থেকে ফালাকের ইনবক্সে চারটা আনরিড মেসেজ শো করছে। মৃদু হেসে ইনবক্সে প্রবেশ করল। লালরঙা শাড়ি পরেছে ফালাক। ফর্সা টকটকে গায়ের রঙের মেয়েটাকে লালরঙে লালপরি লাগছে। চার চারটে ছবি বারবার দেখছে নিশো। ছবিগুলোতে হাত বুলিয়ে মৃদু হাসতে থাকলো নিশো। ফালাককে অনলাইন দেখাচ্ছে। নিশো ছোট করে লিখল ‘লালবউ লাগছে।’।
_____

ভোরের আলো ফুটেছে অনেক আগে। গতকাল রাতে দেরি করে ঘুমোলেও ঠিক ফজরেই ঘুম ভেঙেছে নিশোর। মাথায় যার রাজ্যের চিন্তা তার ঘুম হবে কীভাবে? সেই ভোরবেলায় নামাজ শেষ করার পর থেকেই বারবার নিজের রুম, বেলকনি, ছাদ, ড্রয়িংরুম এভাবেই পায়চারি করতে করতে সময় কাটানোর চেষ্টা করছে সে। কোনভাবেই সময় যেতেই চাইছে না। চেয়ারে গিয়ে বসে চোখ বন্ধ করে বসে রইল সে।

রূম্পা বেগম রান্না করছিলেন। জাফর সাহেব দোকানে গিয়েছেন সকাল সকাল। বাড়িতে বসে থাকতে মোটেও ভালো লাগছিল না। দোকানে তবু এটা ওটা করে ব্যস্ত থাকতে পারবেন তিনি।

তোয়া নিজের রুমেই ছিল। নিজের রুমটা গুছাচ্ছিল সে। সকালে ঘুম থেকে উঠে বিছানাটাও গোছানো হয়েছিল না। বালিশগুলো ঠিক করে রাখতে গিয়ে জানালার বাহিরে চোখ গেল তার। এ কাকে দেখছে সে! আবির! বুকটা কাঁপছে তোয়ার। এতগুলো দিন পর আবির এসেছে এ বাড়িতে!
এতগুলো দিন কেটে গেছে। আবির এ বাড়িতে আসেনি তার মেসেজগুলো কখনো সিন করেনি আবার কলও রিসিভ করেনি।

আবিরকে ভেতরে ঢুকতে দেখে তোয়া সব কাজ ফেলে বাহিরে দিকে দৌঁড়ে গেল। কোথাও না থেমে সোজা আবিরের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো সে। তোয়া এভাবে দৌঁড়ে সামনে এসে দাঁড়ানোর ফলে হকচকিয়ে গেল আবির। বুকে হাত দিয়ে ভ্রু কুঁচকে সামনে তোয়ার দিকে তাকালো সে। তোয়া হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,

“তুই এতদিন আসিসনি কেন রে? আমার কল, মেসেজ কোনকিছুতে তোর কোন রেস্পন্স নেই। এমন কেন?”

আবির বেশ স্বাভাবিকভাবেই বলল,
“একটু ব্যস্ত ছিলাম।”
“আজ ব্যস্ততা কমেছে?”
“কিছুটা। কেমন আছিস?”
“ভালো আর থাকতে দিলি কীভাবে?”

আবির ঠোঁট বাঁকিয়ে, ভ্রু উঁচিয়ে বলল,
“তোর ভালো থাকা আবার আমার ওপর নির্ভর করতে শুরু করল কবে?”

তোয়া আমতা আমতা করে বলল,
“সেটা ঠিক না। আসলে সেদিন বাড়ি ফেরার সময় স্টেশনে তোর সাথে বাজে ব্যবহার করেছিলাম তার জন্য তোকে স্যরি বলতে না পেরে ভালো লাগছিল না। স্যরি আমি।”
“ব্যাপার না। আচ্ছা আমি আসছি।”

“উহু, দাঁড়া।” আবিরকে আটকে দিল তোয়া।

আবির বিরসমুখে বলল,“কিছু বলবি?”
“তুই সত্যি সত্যি বিয়েতে না করে দিলি?”
“বিয়ে আবার কেউ মিথ্যে মিথ্যে করে নাকি? বাদ দে ওসব। তুইও ভালো আছিস, আমিও ভালো আছি। এসব কথা আর তুলিস না।”
“কেন?”
“কী কেন?”
“কিছু না।”
”আসছি আমি।”

আবির সামনের দিকে এগুলে তোয়া পিছন থেকে বলে উঠল,
“ভালোবাসিস না আর? কোনকিছুতে জোর করছিস না কেন আমাকে?”

পিছে ফিরে তাকালো আবির। মেকি হেসে বলল,
“পুনরায় নিজেকে ছোট করার মানসিকতা আমার নেই। পৃথিবীর অনেক কিছুই আমাদের পছন্দের কিন্তু আমাদের সাধ্যের বাহিরে আবার কোনকিছু একসময় খুব করে দরকার হলে ঠিক সময়ে সেটা না পেলে অসময়ে সেটার প্রতি আর তৃষ্ণা আসে না। অসময়ে প্রয়োজনীয় জিনিস বলতে আর কিছু নেই।”

#চলবে…….

গল্পের পরবর্তী পর্ব পেতে আমাদের গ্ৰুপে জয়েন হয়ে পাশে থাকুন। ধন্যবাদ।
https://www.facebook.com/groups/1129904368415371/?ref=share_group_link

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here