তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡 #DcD_দীপ্ত #পর্ব__________29

0
670

#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________29

ফোনের ওপাসে একটা মেয়ের কন্ঠ সুনে নিদ্র চমকে উঠলো । তার ফোন নাম্বারে তো কোন মেয়ে কল দেয়া কথা না । সে তো কোন মেয়েকে তার ফোন নাম্বার দেয়নি । তাহলে এই মেয়ে তার ফোন নাম্বার পেলো কোথায় ।

:+হ্যালো,,,,,, কে আপনি ।(নিদ্র)

ফোনের ওপাসে থেকে একটু হাসির আওয়াজ আসলো । এরপর আবার মেয়েটি বললো ।

:+ভাইয়া,,,,, আমি সামিয়া ।(সামিয়া)

নিদ্র অবাক হয়ে বললো ।

:+সামিয়া,,, কোন সামিয়া ।(নিদ্র)

:+এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলেন ভাইয়া ।(সামিয়া)

মন খারাপ করে বলে সামিয়া । সামিয়ার কথা সুনে নিদ্র একটু থেমে গেল । ভাবনার মাজে পরে গেল কে এই সামিয়া ।

:+আসলে আমি ঠিক মনে করতে পারছি না । আপনি প্লিজ আমাকে আপনার পরিচয়’টা দিন ।(নিদ্র)

সামিয়া একটু চরে চড়ে বসে বললো ।

:+ভাইয়া,,,,আমি তৃপ্তির ফ্রেন্ড,,, সামিয়া ।(সামিয়া)

সামিয়ার কথা শুনে নিদ্র নিজের বুকে বাম হাত রেখে জোরে একটা নিশ্বাস ছারলো । একটুর জন্য পুরো থমকে গিয়েছিল সে ।

:+ওহ তুমি । আমি তো ভেবে ছিলাম,,,,। তা হঠাৎ আমার ফোনে কল দিলে যে । আমার নাম্বার পেলে কোথায় তুমি ।(নিদ্র)

:+আপনারা আমাদের ভুলতে পারেন । কিন্তু আমরা আপনাদের ভুলতে পারবো না । কারন আমাদের বেস্টু আপনাদের কাছে ।(সামিয়া)

নিদ্র নিজের কপাল চুল্কাতে চুল্কাতে বললো ।

:+আসলে ঠিক এমন না,,,,।(নিদ্র)

:+এমন না কেমন । এটা আমি ঠিকই বুঝতে পারছি ।(সামিয়া)

:+আমার নাম্বার পেলে কোথায় তুমি ।(নিদ্র)

সামিয়া নিজের ঘার ডলতে ডলতে বললো ।

:+বজলুর চাচার থেকে বিকেলে নাম্বার নিয়েছিলাম । ভাইয়া তৃপ্তির সাথে একটু আর্জেন্ট কথা বলা দরকার । তৃপ্তিকে ফোন’টা দিন ।(সামিয়া)

:+কি আর্জেন্ট কথা আমাকে বলো ।(নিদ্র)

:+তৃপ্তির সাথে একটু দরকারি কথা ছিল ।(সামিয়া)

:+আগে আমাকে বলো । তারপর আমি ওকে ফোন দেবো । নাহলে আমি ওকে তোমার সাথে কথা বলতে দেবো না ।(নিদ্র)

:+ভাইয়া প্লিজ এমন করবেন না । তৃপ্তির সাথে কথা বলা আমার দরকার ।(সামিয়া)

রিকুয়েষ্ট সুরে বললো সামিয়া । নিদ্র ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো ।

:+না আগে আমাকে বলো কি কথা ।(নিদ্র)

:+ওকে,,,,,,।(সামিয়া)

এই বলে একটু থেমে এরপর জোরে একটা নিশ্বাস নিয়ে সামিয়া বললো ।

:+মিমের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে । তাই তৃপ্তির সাথে এই নিয়ে কথা ছিল । পরসু মিমের গায়ে হলুদ । তারপরের দিন মিমের বিয়ে । আজ বর পক্ষ দেখে গেছে মিমকে । তাদের পছন্দ হওয়ায় তারা তাড়াতাড়ি বিয়ের ডেট ফিস্ট করে ।(সামিয়া)

সামিয়ার কথা সুনে নিদ্র অবাক হয়ে গেল । সে একটু ভেবে বললো ।

:+তা হঠাৎ এই ডিসিশন নিলো কেন তোমাদের ফ্রেন্ড মিম ।(নিদ্র)

:+সে তো ও ভালো,,,,,,,।আচ্ছা ভাইয়া বাদ দেন । আপনি প্লিজ তৃপ্তিকে ফোন’টা দিন ।(সামিয়া)

:+গায়ে হলুদ কবে বললে তুমি ।(নিদ্র)

:+পরসু,,,,,,।(সামিয়া)

:+তা এখন তৃপ্তিকে নিয়ে যেতে হবে তাই তো ।(নিদ্র)

:+হুমমম । প্লিজ ভাইয়া আমাদের এক মাত্র বেস্টুর বিয়ে । আপনি প্লিজ ওকে নিয়ে আসুন । আর এখন প্লিজ ওকে ফোন’টা দিন ।(সামিয়া)

:+আমি তো এখন বাসায় নেই ।(নিদ্র)

:+বাসায় নেই মানে । কোথায় আপনি ।(সামিয়া)

:+আমি আমার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে আসছি ফিরতে অনেক রাত হবে ।(নিদ্র)

মিথ্যা বললো নিদ্র । মন খারাপ হয়ে গেল সামিয়ার ।

:+ওহ । আমি ভেবে ছিলাম আপনি বাসায় ।(সামিয়া)

:+এখন রাখছি তাহলে ।(নিদ্র)

:+আচ্ছা ভাইয়া আপনি বাসায় গিয়ে আমাকে একটা কল দিয়েন । সেটা যত রাতই হোক না কেন । তৃপ্তির জন্য মিম মন খারাপ করে আছে,,,,, ।(সামিয়া)

টু টু টু টু টু টু টু

নিদ্র কল কেটে দিলো । এরপর পকেটে ফোন ঢুকিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলো । এতোখন প্রজন্ত বাইকের উপর বসে সে সামিয়ার সাথে কথা বলছিন । মিমের এই ডিসিশন নিদ্রর মনে খটকা লাকছে । তার জন্য নয় তো মিম এমন ডিসিশন নিলো ।

:+কি হয়েছে বলতো সুমি । সেই কখন থেকে টিকটকে ঢুকার ট্রাই করছি কিন্তু ঢুকতেই পারছি না । বার বার আমাকে টিকটক থেকে বের করে দিচ্ছে ।(নীলা)

:+কৈ দেখি,,, এদিকে দে তো ।(সুমি)

সুমি নীলার হাত থেকে ফোন নিয়ে খানিক খন দেখলো । এরপর উচ্চ স্বরে হেসে বললো ।

:+নীলারে,,,, তুই আর কোন দিন টিকটকে ঢুকতে পারবি না । তোর টিকটক একাউন্ট লক করে দেওয়া হয়েছে ।(সুমি)

নীলা চোখ বড় বড় করে সুমির দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+কি বলছিস তুই সুমি ।(নীলা)

:+হ্যাঁ,,,আমি ঠিকই বলছি । তোর টিকটক একাউন্ট হেক করা হয়েছে ।(সুমি)

নীলা মুখ কাদো কাদো করে বললো ।

:+এটা কি করে সম্ভব । কে করলো আমার টিকটক আইডি লক ।(নীলা)

সুমি কিছু খন ভেবে তারপর একটা হাসি দিয়ে বললো ।

:+নীলা তুই কি একটা গাধি । নিদ্র ভাইয়া তোর টিকটক একাউন্ট লক করে দিয়েছে ।(সুমি)

নীলা এবার পুরো কেদে দিবে অবস্থা ।

:+তুই কি করে বুঝলি । যে আমার টিকটক একাউন্ট হেক করা হয়েছে ।(নীলা)

:+সুন নীলা,,, আমরা কম্পিউটার ইউজার । আমরা বুঝবো না তো কে বুঝবে ।(সুমি)

এবার নীলা পুরো কেদে দিয়ে বললো ।

:+এবার কি হবে । আমি আর কোন দিনও টিকটকে ঢুকতে পারবো না ।(নীলা)

সুমি খানিক খন চুপ করে রইলো । এদিকে নীলার চোখের পানি নাকের পানি এক হয়ে যাচ্ছে । আর সুমি মুচকি মুচকি হাসছে ।

:+তোর একটা উপায় আছে নীলা ।(সুমি)

চট করে কান্না বন্ধ করে ওলনা দিয়ে চোখের পানি নাকের পানি মুছে নীলা বললো ।

:+কি উপায় সুমি । তাড়াতাড়ি বল ।(নীলা)

:+এক হয় তুই নিদ্র ভাইয়ার কাছে গিয়ে রিকুয়েষ্ট কর তোর টিকটক আইডি ফিরিয়ে দিতে । বা তাকে ইমপ্রেস কর । আর না হলে তোকে তোর ইমেইল চেঞ্জ করতে হবে । তারপর আবার নতুন টিকটক ইনস্টল করে একাউন্ট খুলতে হবে ।(সুমি)

:+ওই হনুমানকে ইমপ্রেস করা এতো সহজ নারে সুমি । সালা তো আমাকে এখন সামনে পেলেই কানের নিচে দু’টো করে চারটে বাজাবে । আমি একটা চড় সামলাতে পারিনি । চারটা চড় কি করে সামলাবো ।(নীলা)

বলেই আবার কাদা সুরু । সুমি একটু বিরক্ত হয়ে বললো ।

:+তাহলে আরকি । তোকে এবার নতুন ইমেইল খুলতে হবে । তারপর নতুন টিকটক আইডি খুলতে হবে ।(সুমি)

:+সালা, হনুমান, উগান্ডা, আমাকে বললেই পারতি টিকটক ভিডিও’টা ডিলিট করে দে । তা না করে আমার আইডি টাই লক করে দিলো । এখন নতুন আইডি খুলতে আবার সেই আগের যায়গায় যেতে যেতে আমার অবস্থা নাজে হাল হয়ে যাবে ।(নীলা)

সুমি কিছু খন একটা জিনিস ভাবতে লাগলো । আর নীলা তার নেকা কান্না চালিয়ে যেতে লাগলো । সুমি চট করে হাত দিয়ে একটা তুরি বাজিয়ে বললো ।

:+নীলা শেষ একটা উপায় আছে তোর ।(সুমি)

নীলা অসহায় দিষ্টিতে সুমির দিকে তাকালো । সুমি নীলার পাসে এসে নীলার কাধে হাত রেখে বললো ।

:+শেষ উপায়’টা হলো তৃপ্তি ।(সুমি)

নীলা সুমির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো ।

:+তৃপ্তি মানে,,,,,,।(নীলা)

:+হ্যাঁ,,তৃপ্তি,,,তুই যেমন প্লেন করে নিদ্র ভাইয়ার থেকে তৃপ্তিকে দিয়ে ছাদের চাবি আদায় করছিস । ঠিক সেই ভাবে তৃপ্তিকে কাজে লাগিয়ে । তোর আগের টিকটক একাউন্ট আবার নিজের কাছে পেতে পারিস ।(সুমি)

নীলা চট করে চোখের পানি মুছে একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বললো ।

:+বাহ বেস্টু তোর তো কম বুদ্ধি নেই রে । আমি তো ভেবে ছিলাম তুই একটা গাধি । থ্যাংস ইউ,,,, থ্যাংস ইউ,,,,থ্যাংস ইউ,,,,,ঊূমমমমমমআআআ ।(নীলা)

বলতে বলতে সুমির গালে কিস করে বসলো নীলা ।

:+ওই সালি কি করছিস তুইইইইইইইইইই ।(সুমি)

নিদ্র তৃপ্তির রুমের সামনে এসে দারালো । তৃপ্তির রুমের দরজা লাগানো । নিদ্র আসতে করে দরজা’টা খুলে ভিতরে তাকালো । দেখলো আমেনা তৃপ্তিকে চামচ দিয়ে সুপ খাওয়াচ্ছে । দরজা খোলার আওয়াজ শুনে দরজার দিকে তাকালো তৃপ্তি আর আমেনা দেখলো নিদ্র দরজা ধরে দারিয়ে আছে । তৃপ্তি নিদ্রকে দেখে মুখ বাকিয়ে ওন্য দিকে তাকিয়ে থাকলো । আমেনা বললো ।

:+ওখানে দারিয়ে আছিস কেন ।(আমেনা)

নিদ্র আমতা আমতা করে তৃপ্তির রুমের ভিতরে প্রবেশ করলো । ওই সময় আমেনাকে ধমক দিয়ে কথা বলা আর তৃপ্তিকে নিজের বৌ বলে আমেনার সামনে উপস্থাপন করায়, নিদ্রর এখন আমেনার সামনে আসতে কেমন যেন লাকছে । নিদ্র আমেনার সামনে এসে মাথা নিচু করে দারিয়ে বললো ।

:+Sory,,,MOM ।(নিদ্র)

আমেনা নিদ্রর দিকে অবাক হওয়ার ভান করে তাকিয়ে বললো ।

:+সরি কেন ।(আমেনা)

নিদ্র মাথা তুলে আমেনার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো ।

:+ওই সময় তোমার সাথে ওমন ব্যাবহারের করার জন্য । আমি যানি তুমি আমার থেকে ওমন ব্যাবহার আসা করনি । কিন্তু কি করবো বলো । তুমি তো যানো আমার মাথা গরম হয়ে গেলে আমি কি থেকে কি বলি বা কি থেকে কি করি আমার নিজেরই মাথায় থাকে না ।(নিদ্র)

আমেনা চামচে সুপ নিয়ে তৃপ্তির মুখের সামনে ধরলো । তৃপ্তি চামচ থেকে সুপ মুখে নিলো । কিন্তু নিদ্রর দিকে তাকালো না । আমেনা সুপের বাটির দিকে তাকিয়ে চামচ দিয়ে সুপ নারা চারা দিতে দিতে বললেন ।

:+এখন এখান থেকে যা ।(আমেনা)

নিদ্র আমেনা মুখের দিকে তাকালো । মুখ ভার করে বসে সুপ নারা চারা করছে আমেনা । নিদ্র বললো ।

:+MOM,,,,,,,, তুমি কি আমাকে খমা করবে না ।(নিদ্র)

নরম গলায় বলে নিদ্র । আমেনা তাকায় নিদ্রর দিকে । নিদ্র আবার মাথা নিচু করে ফেলে । ফিক করে হেসে দেয় আমেনা । তিনি মনে মনে ভাবেন “এটা তার ছেলে নাকি ওন্য কেও” । রাগলে পুরো হিংসের মতো আচরন করে আর যখন রাগ শান্ত হয়ে যায় তখন পুরো বিড়ালের মতো আচরন করছে । আমেনা আবার সুপের বাটির দিকে তাকিয়ে বললেন ।

:+রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে যা । আমি খাবার দিচ্ছি ।(আমেনা)

নিদ্র মাথা তুলে আমেনার দিকে তাকালো । মায়ের মুখে হাসি দেখে নিদ্র বুঝে গেল তিনি নিদ্রকে খমা করে দিয়েছেন । নিদ্র তৃপ্তির দিকে তাকালো । গালের ফুলা খানিক’টা কমেছে । কিন্তু ঠোঁট দু’টো লাল হয়ে আছে । নিদ্র আর সেখানে দারিয়ে না থেকে নিজের রুমে চলে আসলো । আমেনা চামচে সুপ নিয়ে তৃপ্তির মুখের সামনে ধরলো । তৃপ্তি আমেনাকে বললো ।

:+বড় আম্মু তুমি ভাইয়াকে বকা দিলে না কেন । একটু আগে বলছিলে আজ ভাইয়া বাসায় এলে অনেক বকা ঝকা দিবে । কৈ তুমি তো ভাইয়াকে বকা দিলে না । ওহ বুঝচ্ছি,,, নিজের ছেলে তো তাই কিছু বললে না । এখন যদি আমি এমন করতাম তখন ঠিকই আমাকে বকা দিতে । তোমরা কেও ভালো না সবাই পচা ।(তৃপ্তি)

এই বলে গাল ফুলিয়ে চামচের সামনে থেকে মুখ সরিয়ে ওন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো তৃপ্তি । আমেনা মুচকি হেসে চামচ’টা সুপের বাটিতে আবার রাখলেন । এরপর সুপের বাটি’টা বেডের পাসে টিবিলের উপর রেখে দিলেন ।

:+তুই ওকে যেমন’টা ভাবছিস । ও কিন্তু তোকে তেমন’টা ভাবে না ।(আমেনা)

তৃপ্তি আমেনার দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+মানে,,,,,।(তৃপ্তি)

:+মানে কিছু না । তুই এখনো ছোট । আগে বড় হ তারপর বুঝবি ।(আমেনা)

আমেনার কথা সুনে তৃপ্তি চিৎকার দিয়ে উঠলো ।

:+আআআআআআআ । বড়ররররররররররর আম্মুমুমুমুমুমুমুমুমুমুমু । আমিইইইইইই এখঅঅঅঅঅঅন আআআআআআআআর ছোওওওওওওট নেইইইইইইইইইইই । এএএএএএক ককককককথা ককককতো বাবাবাবাবার বববববববলবো । আআআআআমি এএএএএএএবার কককককককলেজে ভভভভভভভর্তি হইছিইইইইইইইইইই ।(তৃপ্তি)

আমেনা দু’হাত দিয়ে নিজের কান চেপে ধরলেন । তৃপ্তি থেমে যাতেই কান থেকে হাত নামিয়ে ফুস করে জোরে একটা নিশ্বাস ছারলেন ।

:+এতো জোরে চিৎকার করছিস কেন । আমি কি কানে কম সুনি ।(আমেনা)

:+হ্যাঁ,,,তুমি কানে কমই সুনো । আমি বার বার বলছি আমি,,,,,,,।(তৃপ্তি)

তৃপ্তির কথা টেনে নিয়ে আমেনা বললো ।

:+তুই কলেজে ভর্তি হইছিস তুই এখন আর ছোট নেই তাই তো ।(আমেনা)

:+হ্যাঁ,,,,,,,।(তৃপ্তি)

এই বলে তৃপ্তি রাগে মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিলো । আমেনা তৃপ্তির পাসে এসে তৃপ্তিকে নিজের কাছে টেনে এনে তৃপ্তির মাথা নিজের বুকের সাথে জরিয়ে ধরে বললেন ।

:+তুই রাগ করলে আমার একটু ভালো লাগে না । তুই রাগ করিস কেন । আমি তো মজা করছি । তুই এখন বড় হয়েছিস,,,, আমি আর তোকে কখনো ছোট বলবো না,,,,, ওকে,,,,, হেপি ।(আমেনা)

তৃপ্তি আমেনাকে দু’হাত দিয়ে জরিয়ে ধরে বললো ।

:+হু,,,হেপি । কিন্তু তোমার উপর এখনো আমার একটু রাগ রয়ে গেছে ।(তৃপ্তি)

আমেনা তৃপ্তির মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন ।

:+কেন,,, বেসি রাগ নেই ।(আমেনা)

:+না,,,,, একটু রাগ আছে ।(তৃপ্তি)

:+তা সেই রাগ টুকু কিসের জন্য একটু বলবেন প্লিজ ।(আমেনা)

:+তুমি ভাইয়াকে বকা দেওনি যে তাই ।(তৃপ্তি)

:+ওহ আচ্ছা এই জন্য । বকে দিলে রাগ আর থাকবে না ।(আমেনা)

:+না ।(তৃপ্তি)

:+ঠিক আছে আমি পরে বকে দেবো ।(আমেনা)

:+না তুমি এখনি বকা দিবে ।(তৃপ্তি)

:+এখন কি করে বকা দেবো । ও তো নিজের রুমে ফ্রেশ হচ্ছে ।(আমেনা)

তৃপ্তি কিছু খন ভেবে বললো ।

:+হ্যাঁ,,পাইছি । খাওয়ার টেবিলে বকা দিবে । চলো চলো ।(তৃপ্তি)

এই বলে তৃপ্তি আমেনার থেকে ছুটে বেড থেকে নেমে দারালো । আমেনা বেড থেকে নামতেই তৃপ্তি আমেনার বাম হাত নিজের দু’হাত দিয়ে ধরে ডান দিকের বগলের নিচে নিয়ে আমেনাকে টানতে লাগলো । আমেনা তৃপ্তির এমন কান্ড দেখে হাসছেন । সুপের বাটি ডান হাতে নিয়ে তৃপ্তির পিছু পিছু হেটে যাচ্ছেন তিনি । আর তৃপ্তি আমেনার বাম হাত নিজের ডান বগলের নিচে নিয়ে দু’হাত দিয়ে শক্ত করে জরিয়ে ধরে আমেনার সামনে সামনে হাটছে । আজ তো নিদ্রকে বকা খেতেই হবে ।

—————————————

রাত ১০.১০ বাজে…………..
খাবার টেবিলে বসে আছে তৃপ্তি, নিদ্র,আমেনা আর ফরহাদ । ফরহাদ তৃপ্তিকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছেন আর নিদ্রর দিকে তাকাচ্ছেন । তৃপ্তি বার বার আমেনাকে ইসারা করছে নিদ্রকে বকা দেওয়ার জন্য । কিন্তু আমেনা কি দিয়ে সুরু করবেন সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না । নিদ্র মাথা নিচু করে এক মনে খেয়ে যাচ্ছে । আমেনার পাসের চেয়ারে বসে ছিল তৃপ্তি । তৃপ্তি হাতের আঙুল দিয়ে টেবিলের নিচ দিয়ে আমেনার পেটে গুতু দিলো । আমেনা অসহায় দিষ্টিতে তৃপ্তির দিকে তাকালো । তৃপ্তি চোখের ইসারায় বলে নিদ্রকে বকা দেওয়ার জন্য । আমেনা আর না পেরে গলা খেখিয়ে নিদ্রর উদ্দেশ্য কাঠ কাঠ গলায় বললো ।

:+নিদ্র তুই তৃপ্তিকে চড় দিয়েছিস কেন ।(আমেনা)

নিদ্র প্লেট থেকে মাথা তুলে আমেনার দিকে হাবলার মতো তাকালো । আমেনা একবার তৃপ্তির দিকে তাকালো । দেখলো তৃপ্তি আমেনার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে । যেন সে এই বিষসে কিছুই যানে না । আমেনা আবার আমতা আমতা করে বললো ।

:+ইয়ে মানে । কিরে বলছিস না কেন । তুই তৃপ্তিকে চড় দিয়েছিস কেন ।(আমেনা)

আমেনার কথা সুনে নিদ্রর আর বুঝতে বাকি রইলো না । যে আমেনা এখন কোন প্রেসারে আছে । সে তৃপ্তির মুখের দিকে একবার আর আমেনার মুখের দিকে একবার তাকিয়ে বললো ।

:+না মানে MOM………।(নিদ্র)

:+চুপ বেয়াদব ছেলে । তুই কোন সাহসে আমার ফুলের মতো মেয়ের গায়ে হাত তুলছিস ।(আমেনা)

আমেনার এই কথা সুনে তৃপ্তি তো মহা খুশি । সে নিদ্রর দিকে তাকিয়ে একটা চোখ টিপ মারলো । নিদ্র একটু থম থমি খেয়ে গেল । মনে মনে বলে উঠলো ।

:+হয় আল্লাহ এই মেয়ে চোখ টিপ মারতে যানে কবে থেকে । এর আগে তো কোন দিন দেখিনি । আমাকে মেরে ফেলবে নাকি এ এর মায়ায় ফেলে ।(নিদ্র)

মনে মনে বলে নিদ্র । আমেনা আর বকছে না দেখে তৃপ্তি আমেনার মুখের দিকে তাকালো । সাথে সাথে আমেনা আবার নিদ্রর দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+আজ তোকে কুকুরের মাংস খাওয়াবো ।(আমেনা)

নিদ্রর ভিসম উঠে যায় । তাড়াতাড়ি পানি খেয়ে সে নিজেকে শান্ত করে । ফরহাদ এতোখন হাবলার মতো খাবার খাচ্ছিল আর আমেনা আর নিদ্রর মুখের দিকে তাকাচ্ছিল । এই পর্যায় আমেনার কথা সুনে ফরহাদের মুখ হা হয়ে যায় । সবে মাত্র মাংসের টুকরো মুখে দিয়েছিলেন তিনি । সেটা আপনা আপনি মুখ থেকে আবার প্লেটে পরে গেল । ফরহাদ একবার মাংসের টুকরোর দিকে তাকাচ্ছে আবার আমেনার মুখের দিকে তাকাছে । নিদ্র ফরহাদের দিকে তাকালো । দেখলো ফরহাদও নিদ্রর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে । আমেনা বাপ ছেলের এমন চাওনি দেখে মুচকি হাসেন । এটার অবশ্য একটা কারন আছে । একদিন আমেনা মুরগীর মাংস রান্না করেছিল । কিন্তু ভুল ক্রমে লবন অনেক বেসি হয়ে গিয়েছিল । সেই নিয়ে নিদ্র আর ফরহাদ আমেনার উপর অনেক রাগা রাগি করে । সেদিন আমেনা কিছু বলেনি । কিন্তু পরের দিন সকালে নিদ্র আর ফরহাদ দুজনে নিজেদের বাধা আবস্তায় খাবার টেবিলে আবিষ্কার করে । দু’জনে চোখ খুলে দেখছিল আমেনার হাতে বটি দাও । আর সামনে একটা কুকুর । কুকুরের পাসে গেটের দারোয়ান দারিয়ে ছিল । আমেনা সেদিন বলে ছিল । আজ তোমাদের দুজনকে কুকুরের মাংস রেধে খাওয়াবো যাতে কোন দিন আর আমার রান্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ না তোলো । সেদিন বাপ ছেলে অনেক রিকুয়েষ্ট করে আমেনার হাত থেকে বেচে ছিল । এরপর থেকে আমেনা যেমনই রান্না করতো বাপ বেটা দু’জনে চুপচাপ খেয়ে উঠে যেতো । উলটো আমেনাকে বলতো আজ খাবার অনেক ভালো হয়েছে
। অবশ্য আমেনা অনেক ভালোই রান্না করেন । তার রান্নার কোন তুলানা নেই । তৃপ্তি নিদ্র আর ফরহাদের দিকে তাকিয়ে আমেনাকে ফিস ফিস করে বললো ।

:+বড় আম্মু ভাইয়া আর বড় আব্বু এমন হাবলা হয়ে গেল কেন ।(তৃপ্তি)

আমেনা তৃপ্তির দিকে তাকিয়ে এক গাল হেসে বললো ।

:+সে অনেক কথা । এখন বল তুই খুশি তো নিদ্রকে বকে দেওয়াতে ।(আমেনা)

:+হু,,,,বড় আম্মু অনেক খুশি । এবার এদের খেতে দাও । বাকি বকা ঝকা পরে হবে ।(তৃপ্তি)

আমেনা তৃপ্তির দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো ।

:+তুই আরো বকা খাওয়াতে চাস নিদ্রকে ।(আমেনা)

:+হ্যাঁ,,,, অবশ্যই,,,,আমাকে কি চড় আসতে মেরে ছিল নাকি ।(তৃপ্তি)

:+তৃপ্তি,,,,,,,।(আমেনা)

আমেনাকে থামিয়ে তৃপ্তি বললো ।

:+এখন আর কথা বলো না । এখন খেতে দাও এই নিয়ে পরে আবার কথা হবে ।(তৃপ্তি)

আমেনা চুপ হয়ে গেল । নিদ্র আর ফরহাদ অসহায় দিষ্টিতে আমেনার দিকে তাকিয়ে আছে । আমেনা তাদের দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+খাচ্ছো না কেন তোমরা ।(আমেনা)

ফরহাদ আমেনাকে বললো ।

:+এটা তুমি কি করলে আনু শেষে আমাদের কুকুরের মাংস খাওয়ালে ।(ফরহাদ)

ফরহাদ যখন বেশি ইমোশনাল হয়ে যায় । তখন আমেনাকে আনু বলে ডাকে । আমেনা অবাক হয়ে বললো ।

:+আমি তোমাদের কখন কুকুরের মাংস খাওয়ালাম ।(আমেনা)

:+তাহলে একটু আগে যে বললে কুকুরের মাংস খাওয়াবে ।(নিদ্র)

:+আরে ওটা তো এমনি বললাম ।(আমেনা)

:+আনু,,,,,।(ফরহাদ)

:+বেশি কথা বললো না । চুপচাপ খেয়ে উঠে চলে যাও । নাহলে সত্যি সত্যি কাল কুকুরের মাংস খাওয়াবো ।(আমেনা)

ফরহাদ আর নিদ্র,,,, আর কিছু বললো না । চুপচাপ খেয়ে উঠে নিজেদের রুমে চলে গেল । ফরহাদ আর নিদ্র চলে যেতেই আমনার আর তৃপ্তি হেসে উঠলো ।

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,

(।কপি করা নিষেধ।)

[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দিষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here