#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________34
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে রাত প্রায় ২টা বেজে যায় । কিন্তু নিদ্র এতো রাত প্রজন্ত ওখানে ছিল না । সে রাত ১১টার আগেই চেয়ারম্যান বাড়িতে ফিরে আসছে । তৃপ্তি একটা হলুদ লেহেঙ্গা পরে ছিল । যা ওকে ফুটিয়ে তুলে ছিল এক হলুদ পরি’তে । চোখ সরাতে পরাছিল না নিদ্র তৃপ্তির থেকে । মিম কিনে ছিল লেহেঙ্গা’টা তৃপ্তির জন্য । মিমের চাচাতো ভাইয়েরা, ফুফাতো ভাইয়েরা,সুধু তৃপ্তির দিকে হা করে তাকিয়ে ছিল । এটা নিদ্রর সজ্জ হচ্ছিল না । তাই সে চেয়ারম্যান বাড়িতে চলে আসে । মিমের জন্য একটু খারাপ লাকছে নিদ্র । কিন্তু কিছু করার নেই তার । কারন নিদ্রর মন প্রান ঝুরে সুধু তৃপ্তির বসবাস । সে তৃপ্তিকে ছারা অন্য কাওকে নিয়ে ভাবতেই পারছে না । সকালে ঘুম থেকে উঠতে প্রায় ৮টা বেজে যায় নিদ্রর । ফ্রেশ হয়ে নিচ তলায় নামলো সে । নিচ তলায় সোফার উপর বসে বজলুর টিভিতে নিউজ দেখছে । নিদ্র গিয়ে একটা সিঙ্গেল সোফায় বসে পরলো । বজলুর আর-চোখে এক-বার নিদ্রকে দেখে নিলো ।
:+কি-রে ঘুম কেমন হলো ।(বজলুর)
বজলুর বলে উঠলো নিদ্রকে । নিদ্র বজলুরের দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+হুম ভালো । আজ চেয়ারম্যান অফিস যাবে না ।(নিদ্র)
বজলুর টিভি থেকে চোখ নামিয়ে নিদ্রর দিকে তাকালো । এরপর হাত দু’টো উচু করে আর-মোরা ভেঙে বজলুর বললো ।
:+না আজ চেয়ারম্যান অফিসে যাবো না । আজ বিয়ে খেতে যাবো ।(বজলুর)
সালমা টেবিলে সকালের নাশতা সার্ভ করতে করতে বললেন ।
:+এই তোমার নাশতা সেরে নেবে,, আসো ।(সালমা)
:+চল নাশতা’টা সেরে নেই ।(বজলুর)
এই বলে বজলুর টিভি অফ করে খাবার টেবিলের দিকে হাটা ধরলো । নিদ্রও আর বসে না থেকে সেও খাবার টেবিলের দিকে হাটা ধরলো । অতপর খাবার টেবিলে এসে বসলো নিদ্র আর বজরুল ।
:+চাচি আম্মা,,, তৃপ্তিকে দেখছি না যে । ওরা কোথায় ।(নিদ্র)
সালমা নিদ্রর প্লেটে খাবার সার্ভ করতে করতে বললেন ।
:+ওরা এখনো ঘুম থেকে উঠে-নি । কাল অনেক রাত প্রজন্ত যেগে ছিল তাই এখনো ঘুমাচ্ছে । তোমরা খাও আমি ওদের ডেকে নিয়ে আসছি ।(সালমা)
সালামর কথা সুনে বজলুর বলে উঠলো ।
:+না,, এখন ডাকার দরকার নেই । আরো একটু ঘুমোক । তারপর ডেকে দিয়ো ।(বজরুল)
:+ঠিক আছে ।(সালমা)
এই বলে সালমা কিচেনের দিকে চলে গেল । নিদ্র খাবার শেষ করে দো-তলায় নিজের রুমে চলে আসলো । কিছুখন নিজের রুমে বসে থেকে তারপর তৃপ্তির রুমের দিকে উকি দিলো সে । দেখলো তৃপ্তি নিদ্রর আনা সেই টেডি-টাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে । দরজা খোলা থাকায় তৃপ্তির রুমে ভিতরে প্রবেশ করতে কোন সমস্য হয়নি নিদ্রর । নিদ্র তৃপ্তির রুমে ঢুকে ভিতর থেকে দরজা লাগিয়ে দিলো । এরপর আসতে করে তৃপ্তির বেডের পাসে এসে দারালো সে । প্লোরে হাটু মুরে বসে তৃপ্তির বেডের পাসে মাথা কাত করে সুয়ে তৃপ্তির ঘুমোন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো নিদ্র । তৃপ্তির কপালের উপরের চুল গুলো এলো মেলো হয়ে ছরিয়ে ছিটিয়ে আছে সারা মুখে । ঠোঁটে লাল লিপস্টিক লেপ্টে আছে । চোখের কাজল লেপ্টে গেছে । কপালের কালো টিপ নিজের যায়গা থেকে খানিক’টা সরে গেছে । মুখে হালকা তেল ভাসা দিয়েছে । গালে এখনো হালকা হালকা হলুদ দেখা যাচ্ছে । নিদ্র পকেট থেকে ফোন বের করে কয়েক’টা পিক তুলে নিলো এই ঘুমন্ত মায়া পরির । পিক তুলে ফোন’টা আবার পকেটে পুরে নিলো সে । এরপর তৃপ্তির মুখের উপর পরে থাকা চুল গুলো সরিয়ে কানের পিছনে গুজে দিলো নিদ্র । কপালের কালো টিপ আবার নিজের যায়-গায় নিয়ে আসলো সে । তৃপ্তি খানিক’টা কেপে উঠো । নিদ্র ভালো করে তৃপ্তিকে পরক করে দেখলো । রাতের সেই হলুদ লেহেঙ্গা-টাই পরে ঘুমিয়ে আছে তৃপ্তি । কিভাবে পারে মেয়ে’টা এমন বাচ্চাদের মতো কাজ করতে । এতো ভারি লেহেঙ্গা পরে এই গরমের মাঝে কেও কিভাবে ঘুমাতে পারে । ভেবেই নিদ্রর হাসি পাচ্ছে । রাত অনেক হওয়ায় বাড়িতে এসে আর চেঞ্জ করতে মন চায়নি তৃপ্তির । শরীর প্রচন্ড ঘুম চাইছিল । তাই সে কোন রকমে ওয়াসরুমে গিয়ে মুখ,হাত থেকে মিম লাগিয়ে দাওয়া হলুদ গুলো তুলে, রুমে এসে ধপাস করে বেডের উপর সুয়ে পরেছিল । নিদ্র তৃপ্তির বাম হাত নিজের দু’হাতের মুঠোয় নিলো । হাত’টা মুঠোয় নিয়ে একটা শক খেলো নিদ্র । হাতে মেহেদীর কারুকাজ করা । আন-মনেই নিদ্র বলে উঠলো ।
:+এই মেয়ে হাতে মেহেদী লাগালো কখন ।(নিদ্র)
এই বলে নিদ্র তৃপ্তির বাম হাতের তালু নিজের ডান গালে ডান হাত দিয়ে চেপে ধরলো । এরপর হাত থেকে আসা মেহেদীর গ্রান নিতে লাগলো সে । একটা মাতাল করা গ্রান ভেসে আসছে হাত’টা থেকে । একটু হলুদ আবার একটু মেহেদীর গ্রান ভেসে আসছে হাত’টা থেকে । নিদ্র কয়েক বার ঠোঁট ছো্য়ালো হাত-টাতে । বেস অতভুত একটা ফিলিংস হচ্ছে । মন চাচ্ছে সারা জীবন এভাবে কাটিয়ে দিতে । নিদ্র তৃপ্তির কপালে একটা চুমু দিলো । তৃপ্তি খানিক’টা কেপে উঠে চোখ খুললো । তৃপ্তি চোখ খুলে দেখলো নিদ্র তার দিকে ঝুঁকে আছে । নিদ্রকে দেখে তৃপ্তি চিৎকার দিতে যাবে ওমনি নিদ্র তার ডান হাত দিয়ে তৃপ্তির মুখ চেপে ধরলো ।
:+এই চিৎকার করছিস কেন ।(নিদ্র)
কপাল কুঁচকে বললো নিদ্র ।
:+উমমমম উমমমম ।(তৃপ্তি)
তৃপ্তির মুখে হাত থাকায় কথা বলতে পারছে না । নিদ্র আসতে করে তৃপ্তির মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিলো । নিদ্র হাত সরাতেই তৃপ্তি চট করে বলে উঠলো ।
:+তুমি আমার রুমে কি করছো ।(তৃপ্তি)
নিদ্র কিছু না বলে তৃপ্তির বেডে উঠে সুয়ে পরলো । এরপর তৃপ্তিকে সে তার উপর টেনে নিলো ।
:+এই এই কি করছো । ছার শয়তান । আমাকে ছার ।(তৃপ্তি)
নিদ্র তৃপ্তির কোমড় নিজের দু’হাত দিয়ে চেপে ধরলো নিজের শরীরের সাথে ।
:+ছারার জন্য তো ধরি’নি । মাই কিউটি (নিদ্র)
তৃপ্তি নিদ্রর বুকে কয়েক’টা ঘুসি মেরে বললো ।
:+তোমার সাথে আমার কোন কথা নাই । ছারো আমাকে । আমার সাথে কথা বলবে না তুমি ।(তৃপ্তি)
নিদ্র তৃপ্তির চোখে চোখ রেখে বললো ।
:+কাল এমন ভাবে সাজলি কেন । কে বলছে কাল তোকে এভাবে সাজতে ।(নিদ্র)
নিদ্রর কথা সুনে তৃপ্তি কপট রাগ দেখিয়ে বললো ।
:+আমার যেমন ইচ্ছে আমি তেমন ভাবে সাজবো । এতে তোমার কি ।(তৃপ্তি)
নিদ্র তৃপ্তির কোমড় থেকে এক হাত সরিয়ে এনে তৃপ্তির নাক’টা একটু টেনে বললো ।
:+আমার অনেক কিছু । মাই কিউটি ।(নিদ্র)
:+না তোমার কিছু না । আমাকে একদম টাচ করবে না তুমি ।(তৃপ্তি)
নিদ্র আবার তৃপ্তির কোমড়ে হাত নামিয়ে বললো ।
:+কাল সেজেছিস ঠিক আছে । কিন্তু আজ যাতে ওমন সাজ না দেখি ।(নিদ্র)
নিদ্রর এই কথা সুনে তৃপ্তি আরো রেগে গেলো । সে দাঁত কটমট করে বললো ।
:+আমার এক মাত্র বান্ধবীর বিয়ে । আর আমি সাজবো না ।(তৃপ্তি)
:+না ।(নিদ্র)
:+আমি সাজবোওওওওও ।(তৃপ্তি)
হাল্কা একটু চিৎকার সুরে বললো তৃপ্তি ।
:+না,,, এমন ভাবে সাজার দরকার নেই ।(নিদ্র)
তৃপ্তি এবার আরো একটু চিৎকার দিয়ে বললো ।
:+আমি সাজবোওওও,,, সাজবোওওও,,,সাজবোওওও ।(তৃপ্তি)
নিদ্র আসতে করে তৃপ্তির গালে একটা চুমু বসিয়ে দিলো । এতে যেন তৃপ্তির রাগ চড়ম প্রর্যায় পৌঁছে গেলো । সে নিদ্রর গলা দু’হাত দিয়ে চেপে ধরলো ।
:+শয়তান পোলা,বান্দর পোলা,বদমাশ পোলা,হনুমানের নানা,তুই আমাকে চুমু দিলি কেন । আমাকে যখন মেরে ছিলি তখন মনে ছিলো না । উগান্ডা, বান্দর, আজ তোকে আমি মেরেই ফেলবো ।(তৃপ্তি)
এই বলে তৃপ্তি নিদ্রর গলা দু’হাত দিয়ে চেপে ধরলো । হঠাৎ নিদ্রর মাথায় একটা বুদ্ধি এলো । সে নিজের চোখ দু’টো বড়ো বড়ো করে আবার ছোট ছোট করে একে বারে চোখ বুঝে নিলো । এরপর তৃপ্তির কোমড় থেকে দু’হাত এলিয়ে বেডে নিয়ে এলো । নিদ্র নিঃশব্দ হয়ে গেলো । সে এখন দেখতে চায় তৃপ্তি এবার কি করে । হঠাৎ নিদ্র এমন চোখ বড়ো বড়ো আবার ছোট ছোট করায় তৃপ্তি ভয় পেয়ে যায় । সে তাড়াতাড়ি নিদ্রর গলা থেকে হাত নামিয়ে আনলো । কিন্তু তত-খনে নিদ্র চোখ বুঝে নিয়েছে । তৃপ্তির এবার ভয় হচ্ছে । সে আসতে করে নিদ্রর বুকে দু’হাত দিয়ে নিদ্রকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে ডাক দিলো ।
:+ভাইয়া,,,এই ভাইয়া ।(তৃপ্তি)
কিন্তু নিদ্রর কোন হেল দোল নেই । সে নিঃশব্দ হয়ে সুয়ে আছে । তৃপ্তির এবার ভয় করছে ভিষণ ভয় । সে এবার নিদ্রর গায়ের উপরে থেকে সরে গিয়ে নিদ্রর পাসে বসলো । এরপর নিদ্রর গালে আসতে করে চাপড় দিতে দিতে বললো ।
:+ভাইয়া,,,ভাইয়া,,,উঠো প্লিজ । আমার ভিষন ভয় করছে । আমি এবার কান্না করে দেবো কিন্তু ।(তৃপ্তি)
কিন্তু নিদ্রর কোন প্রতিক্রিয়া নেই । তৃপ্তি এবার ঠুকড়ে কেদে উঠলো । এরপর চিৎকার করে কাদতে যাবে ওমনি নিদ্র তৃপ্তিকে নিজের বুকের সাথে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো । তৃপ্তিও জরিয়ে ধরলো ।
:+আমাকে মাপ করে দাও । আমি আর কখনো তোমার গলা ধরবো না ।(তৃপ্তি)
:+ধুর বোকা,,,,, আমি তো মজা করছিলাম ।(নিদ্র)
:+আমি আর সাজবো না । তবুও তুমি এমন করে আমার সাথে আর মজা করো না । আমার এসবে অনেক ভয় করে তুমি যানো না ।(তৃপ্তি)
নিদ্র তৃপ্তির মাথা নিজের বুকের সাথে জরিয়ে ধরলো । এরপর আসতে করে তৃপ্তির মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো ।
:+না,,, আর কখনো এমন মজা করবো না ।(নিদ্র)
তৃপ্তি এবার ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাদছে । নিদ্র তৃপ্তির মাথার কেস কালো চুলে একটা চুমু দিয়ে বললো ।
:+এই পাগলি,,, কান্না করছিস কেন । যা ফ্রেশ হয়ে আয় । চাচি আম্মা তোর জন্য বসে আছে ।(নিদ্র)
:+হুমমমম ।(তৃপ্তি)
:+আমার উপর এখন আর কোন রাগ আছে ।(নিদ্র)
:+না ।(তৃপ্তি)
:+সত্যি তো ।(নিদ্র)
:+হুমমৃ,,,সত্যি ।(তৃপ্তি)
এই বলে তৃপ্তি নিদ্রর থেকে নিজেকে আলগা করে নিলো । নিদ্র আসতে করে তৃপ্তির চোখের পানি মুছে দিলো ।
:+যা,,, তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে যা ।(নিদ্র)
তৃপ্তি কোন কথা না বলে বেড থেকে নেমে ওয়াসরুমে চলে গেল । নিদ্রও আর তৃপ্তির রুমে বসে না থেকে সেও নিজের রুমে চলে আসলো ।
—————————————-
বেলা ১২টা বাজে……..
বিয়ে বাড়িতে ধুম ধারাক্কা আয়োজন চলছে । নিদ্র একটা চেয়ার নিয়ে বসে আছে উঠনের এক কোনায় । বর পক্ষ আসবে বেলা ২টায় । নিদ্রর কোলে বসে আছে সজিব । তারা দু’জনে মুভি দেখছে । কি করবে কোন কাজ নেই তাদের । থেকে থেকে বাতাসের সাথে ফলাও, রোস্ট আরো অনেক রকমের খাবারের গ্রান ভেসে আসছে । খাবারের গ্রান নাকে লাগতেই নিদ্র সজিবের দিকে তাকালো সজিবও নিদ্রর দিকে তাকালো । দু’জনে হেসে উঠলো । কিছু দুর থেকে বসে বসে মিমের কাজিন’রা দেখছে নিদ্রকে ।
:+হেসো না জান । আমি মরে যাবো ওই হাসি দেখে । এতো কিউট কেন তুমি ।(সনিয়া)
লামিয়া সনিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+আচ্ছা সনিয়া আমরা যে ওই বেটার দিকে এমন করে তাকিয়ে আছি । কৈ বেটা তো এক বারও আমাদের দিকে তাকালো না ।(লামিয়া)
:+তাকাবে কি করে । এতো হেন্ডস্যাম দেখতে । নিশ্চয়ই গালফ্রেন্ড আছে । না হলে কি এমন ভাবে চুপচাপ বসে থাকতো ।(সাথী)
:+তুই ঠিক বলছিস সাথী । হতে পারে ওর গালফ্রেন্ড আছে । তাই তো ও আর অন্য কোনদিকে তাকাচ্ছে না ।(লামিয়া)
লামিয়ার কথা সুনে সনিয়া বললো ।
:+ট্রাই করতে খতি কি । হতে পারে ওর গালফ্রেন্ডের থেকে মুখ সরিয়ে আমাদের উপর তাকালো । ওর গালফ্রেন্ড আর কতই সুন্দর হবে । আমরা কি কম সুন্দর নাকি ।(সনিয়া)
লামিয়া সনিয়ার দিক থেকে মুখ সরিয়ে আবার নিদ্রর দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+আমি কাল রাতে মিমের ফ্রেন্ড সামিয়ার থেকে যানতে পেরেছি ওর নাম নিদ্র । ঢাকায় থাকে । মিমের আরেক ফ্রেন্ড তৃপ্তির আব্বু, মানে এই এলাকার চেয়ারম্যান সাহেবের বড় ভাইয়ের ছেলে ।(লামিয়া)
সনিয়া লামিয়ার দিকে চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে বললো ।
:+কি বলিস,,,, সত্যি তাই নাকি ।(সনিয়া)
:+হুমমম ।(লামিয়া)
নিদ্র আর সজিব মুভি দেখছিল । হঠাৎ সজিবের চোখ মিমের কাজিন দের উপর পরে । চোখ পরতেই সে দেখলো মিমের কাজিন’রা তাদের দিকে ডেব ডেব করে তাকিয়ে আছে । সজিব নিজের ডান হাতের তালুতে একটা চুমু দিয়ে মিমের কাজিনদের উদ্দেশ্য ফু দিয়ে ছুরে মারলো মানে যেটাকে প্লাইং-কিস বলে । মিমের কাজিনরাও সজিবের প্লাইং-কিসের পালটা জবাব দিলো । তারাও প্লাইং-কিস ফু দিয়ে ছুরে মারলো তাদের দিকে । এবার সজিবের একটু খটকা লাগলো । প্লাইং-কিস’টা কি তাকে দিলো নাকি নিদ্রকে । সজিব মিমের কাজিন’দের দিকে তাকিয়ে নিদ্রর পেটে নিজের ডান হাতের কনুই দিকে গুতু মেরে বললো ।
:+ভাইয়া,,,একবার ওই দিকে তাকাও ।(সজিব)
সজিবের কান্ড দেখে নিদ্র সজিবের দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+কোন দিকে তাকাবো ।(নিদ্র)
:+ওই যে মিম আপুদের ঘরের বারান্দার দিকে । দেখো কত গুলো পরি আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে ।(সজিব)
সজিবের কথা অনুযায়ী নিদ্র সেদিকে তাকালো । দেখলো কিছু মেয়ে তাদের দিকে ডেব ডেব করে তাকিয়ে আছে । নিদ্র তাকাতেই মেয়ে গুলোর মুখে হাসি ফুটে উঠলো । মনে হলো তার তাকানোর জন্যই মেয়ে গুলো ওখানে বসে আছে । নিদ্র সজিবের মাথায় আসতে করে একটা চড় মেরে বললো ।
:+এতো দিকে তাকাস কে । চুপচাপ মুভি দেখ ।(নিদ্র)
সজিব নিজের মাথা ডলে আবার ফোনের স্কিনে তাকালো । এভাবে কিছু সময় যাওয়ার পর হঠাৎ কোথা থেকে মিমির আগোমন ঘটে ।
:+কি করো জানু ।(মিমি)
সজিব’কে উদ্দেশ্য করে বললো মিমি । সবিজ কপাল কুঁচকে মুখের ভাব শক্ত করে মিমিকে বললো ।
:+ওই,,, কে তোর জানু । আমি তোর জানু না । আমি পরির জানু । যা ভাগ এখান থেকে ।(সজিব)
সজিবের কান্ড দেখে নিদ্র সজিবের দিকে চোখ বড়ো বড়ো করে তাকালো । মিমি মুখ কালো করে বললো ।
:+জানু তুমি আমার সাথে এমন করছো কেন । ওই বুইরা বেডি আসার পর থেকে তুমি আমার সাথে ঠিক মতো কথা বলো না ।(মিমি)
মিমির কথা সুনে সজিব মিমির দিকে হাতের আঙুল তুলে বললো ।
:+ওই আমার পরিরে বুইরা বেডি বলবি না । তোর থেকেও অনেক স্মাট আমার পরি । দেখস নাই কাল কি করে তোর মিম আপুরে সাজাইছে ।(সজিব)
:+ঠিক আছে কমু না ।(মিমি)
কাদো কাদো মুখ করে বললো মিমি । এরপর মিমি নিদ্রর দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+ভাইয়া আপনাকে আম্মু ঘরের ভিতরে গিয়ে ফেনের নিচে বসতে বলছে । এখানে তো অনেক গরম পরেছে ।(মিমি)
এই বলে মিমি হাত মুঠ করে চোখ ডলতে ডলতে হেচকি তুলে সেখান থেকে চলে গেল ।
:+ভাইয়া,,,আমার জানু অনেক কষ্ট পাইছে এবার কি হবে ।(সজিব)
নিদ্রর দিকে তাকিয়ে বললো সজিব । নিদ্র সজিবকে দু’হাত দিয়ে জরিয়ে ধরে বললো ।
:+ভাই আমার,,,তুই যেভাবে কাজ করে যাচ্ছিস সে ভাবে করে যা । কয়দিন পর তো আমরা চলেই যাবো । তারপর তুই আবার তোর জানুরে আগের মতো বানাই লইস ।(নিদ্র)
:+কিন্তু ভাইয়া আমার জানু যদি আমাকে আগের মতো ভালো না বাসে । আর আজ ওর আপুর বিয়ে । আজ একটু ওর সাথে ঠিক মতো কথা বলি ।(সজিব)
সজিবের কথা সুনে মাথা চক্কড় দিয়ে উঠলো নিদ্রর । বলে কি এই ছেলে । নাক টিপ দিলে এখনি দুধ বের হবে আর সে এখনি ভালোবাসা নিয়ে দৌড়া দৌড়ি করছে । নিদ্র ডান হাত বিউটিফুল স্টাইল করে সজিবকে বললো ।
:+ভাই তুই তো সেই । আমার থেকেও অনেক বড় হবি তুই । এখনি তোর পিছনে মেয়ে ঘুরে । আর তুই বড় হলে কি হবে আল্লাহ মাবুদ যানে ।(নিদ্র)
সজিব নিজের সার্টের কলার ডান হাত দিয়ে টেনে বললো ।
:+ভাই’টা কার দেখতে হবে না ।(সজিব)
:+হইছে ভাই আর ভাব নিতে হবে না । চল বাড়ির ভিতরে যাই । এখানে অনেক গরম পরছে ।(নিদ্র)
:+আচ্ছা চলো । তবে আমার গিফটের কথা মনে আছে তো ।(সজিব)
:+হুম আছে । এবার চল ।(নিদ্র)
এই বলে নিদ্র আর সজিব মিমদের ঘরের ভিতরের দিকে হাটা ধরলো । বারান্দায় বসে থাকা মিমের কাজিন’রা নিদ্রকে এদিকে আসতে দেখে তারা নিজেদের পারফেক্ট করে গরে তুলতে বেস্ত হয়ে পরলো । নিদ্র সেদিকে না তাকিয়ে সোজা তাদের ক্রচ করে বাড়ির ভিতরে ঢুলে গেল । নিদ্রর দিকে সুধু ডেব ডেব করে তাকিয়ে ছিল মিমের কাজিন’রা । তারা ভাবছিল হয়তো তাদেরকে কিছু বলতে আসছে । কিন্তু না তাদের ভাবনা ভূল প্রমানিত করে নিদ্র বাড়ির ভিতরে চলে এলো । বাড়ির ভিতরে এসে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে নিদ্র । কোথায় গিয়ে বসবে ভেবে পাচ্ছে না । তখনি আবার মিমির আগমন ঘটে । চোখ দু’টো ডলতে ডলতে নিদ্র কাছে এসে নিদ্রর বাম হাত ধরে টান দিয়ে বললো ।
:+এদিকে আসুন ভাইয়া ।(মিমি)
এই বলে মিমি নিদ্রর হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল একটা রুমে । রুম’টা দেখে নিদ্র বললো ।
:+মিমি এটা কার রুম ।(নিদ্র)
মিমি নিদ্রর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো ।
:+ভাইয়া,,, আপনি আমার নাম যানেন ।(মিমি)
:+না মানে,,,, আগে যানতান না । কাল সজিবের থেকে সুনেছি ।(নিদ্র)
নিদ্রর কথা সুনে মিমি সজিবের দিকে তাকালো । সজিব একটা ভেটকি মাছের মতো হাসি দিলো । নিদ্র বললো ।
:+মিমি,,, বললে না তো এটা কার রুম ।(নিদ্র)
:+এটা আমার রুম ভাইয়া । আপনি ওখানে গিয়ে বসুন আমি আম্মুকে ডেকে দিচ্ছি ।(মিমি)
মিমির কথা সুনে সজিব গিয়ে মিমির বেডের উপর উঠে বসলো । সাথে সাথে মিমি সাপের মতো ফুসে উঠলো । এক দৌড়ে সজিবে কাছে গিয়ে সজিবের হাত ধরে টেনে তার বেড থেকে নামিয়ে দিলো ।
:+শয়তান, তুই আমার বেডে উঠবি না । তোর মতো লুচ্চারে আমি আমার বেডে বসতে দিমু না ।(মিমি)
মিমির কথা সুনে নিদ্র মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো । বলে কি এই মেয়ে । এই টুকু মেয়ের এতো জেদ । সজিব এবার মিমির হাত ধরে বললো ।
:+জানু সরি । আমি আসলে,,,,,,।(সজিব)
সজিবকে থামিয়ে মিমি বললো ।
:+চুপ লুচ্চা । তুই আমার সাথে কথা বলবি না ।(মিমি)
নিদ্র এবার মিমিকে বললো ।
:+মিমি আমার কথা শুনো ।(নিদ্র)
মিমি সজিবের হাত ঝারা মেরে নিজের হাত থেকে ছারিয়ে রুমের দরজা লাগিয়ে নিদ্রর সামনে এসে বললো ।
:+ভাইয়া আগে আমি আপনাকে বলবো আপনি শুনুন ।(মিমি)
এই বলে মিমি হাতের আঙুল সজিবের দিকে তাক করে বললো ।
:+ওই লুচ্চা ছেরার সাথে আমার ১ বছরের রিলেশন । গত কাল থেকে ওই লুচ্চা ছেরা ওই বুইরা বেডিরে পাইয়া আমারে ভুইলা গেছে । এবার আপনি বিচার করেন । ওই লুচ্চা ছেরার কি করা উচিত ।(মিমি)
মিমির কথা সুনে নিদ্র মুখে হাত দিয়ে এক বার মিমির দিকে তাকাচ্ছে আবার সজিবের দিকে তাকাচ্ছে । এখন-কার জেনারেশন কোথায় পৌছে গেছে আল্লাহ । নিদ্র এই সব ভাবতে ভাবতে মিমির বেডের পাসে গিয়ে বসলো ।
#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,
(।কপি করা নিষেধ।)
[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দিষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]