তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡 #DcD_দীপ্ত #পর্ব__________39

0
434

#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________39

নীলা সজিবকে কোলে নিয়ে স্টেজের সামনের দিকে আসলো । সজিব ছট ফট করতে লাগলো নীলার কাছ থেকে ছারা পাওয়ার জন্য । কিন্তু নীলা সজিবের মুখ শক্ত করে চেপে ধেরে আছে । অবশেষে হার মানলো সজিব । সে নীলার মুখের দিকে অসহায় দিষ্টিতে তাকালো । নীলা এটা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে সজিবকে কোল থেকে নামিয়ে দার করালো । এরপর সজিবের দিকে ঝুকে সজিবের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিস ফিস করে নীলা বললো ।

:+হারামি আর যদি আমার পিছনে লেগেছিস । তাহলে দেখবি তোর কি হাল করি ।(নীলা)

নীলা সজিবের দিকে ঝুকে থাকায় । নীলার কথা শেষ হতে সজিব নীলার গালে টুসুর করে একটা কিস করে সেখান থেকে দেয় এক ভৌঁ দৌড় । নীলা ভেবা ছেকা খেয়ে ঠিক হয়ে দারায় । কি ঘটেছে বুঝে উঠতে তার কয়েক সেকেন্ড সময় লাগলো । রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে নীলার । নাক দিয়ে যেন গরম নিশ্বাসের সাথে ধোঁয়াও বেরুচ্ছে ।

:+হারামি,,, পুঁচকে,,, তোরে তো আমি পরে দেখে নেবো । একবার হাতের কাছে পাই তারপর দেখামু এই নীলা কি যনিস ।(নীলা)

রাগে মনে মনে এগুলো বললো নীলা । এরপর নিজেকে ঠিক করে মুখে হাসি এনে স্টেজের দিকে হাটা ধরলো সে । সজিব এক দৌড়ে নিদ্রর কাছে এসে দারালো । হাফাতে হাফাতে নিদ্র বাম হাত নিজের ডান হাত দিয়ে ধরলো সজিব । নিদ্র সজিবকে দেখে বললো ।

:+কি সালা বাবু । আপনার বৌ ওখানে কি জন্য গেছে ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা সুনে সজিব নিজেকে শান্ত করলো । এরপর ঠোঁটে একটা চড়া হাসি এনে বললো ।

:+একটা ছেলে লাভ লেটার দিছে পরিকে ।(সজিব)

:+আবারও পরি,,,,,,তোরে তো আজ আমি এখানে মেরে ফেলবো সজিবের বাচ্চা ।(মিমি)

এই বলে সজিবের দিকে তেরে আসতে লাগলো মিমি । হঠাৎ মিমির গলার আওয়াজ শুনে পিছনে ঘুরে তাকায় নিদ্র আর সজিব । সজিব একটা সুকনো ঢোক গিললো । মিমি এসে দারালো নিদ্র আর সজিবের সামনে । মিমি সিজবকে পুরো বাড়ি খুঁজে এখানে এসে পায় । সজিব নিদ্রর দিকে অসহায় দিষ্টিতে তাকালো । নিদ্র সজিবকে চোখের ইসারায় সাই দিলো “সে দেখে নেবে” । সজিবও সেই আসা নিয়ে থাকলো । মিমি রাগে গজগজ করতে করতে বলে উঠলো ।

:+ওই তুই পরি পরি করছিস কেন । আমাকে কি পরির মতো লাগছে না । আমাকে কি পেন্তির মতো লাগছে ।(মিমি)

মিমি কথা সুনে চুপসে যায় সজিব মুখ খানা । সজিবের চুপসানো মুখ দেখে মিমি আবার বললো ।

:+কিরে কথা বলছিস না কেনো । আমাকে কি পরির মতো লাগছে না ।(মিমি)

সজিব নিদ্রর মুখের দিকে একবার তাকিয়ে আবার মিমি দিকে তাকিয়ে রিনরিনিয়ে বললো ।

:+হ্যাঁ,,,, একেবারে পরির মতো লাগছে ।(সজিব)

সজিবের কথা সুনে মিমি ভ্র-কুঁচকে সজিবের দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+পরির মতো লাগছে মানে । তোর কি আমারে ওই বুইরা বেডির মতো মনে হয় ।(মিমি)

নীলাকে উদ্দেশ্য করে বললো মিমি । সজিব এটা বুঝতে পেরে চট করে বললো ।

:+আরে,,,,না না না । তোমাকে তো একেবারে কচি পরির মতো লাগছে ।(সজিব)

:+কি বললি তুই আমারে । আমারে কচু পরির মতো লাগছে ।(মিমি)

সজিবের কথা শেষ হতেই মিমি রাগে গজগজ করে বললো । সজিব মিমির কথা সুনে মাথায় দিয়ে ফেললো । যেটাই বলে সেটারই উলটো জবাব দেয় মেয়েটা । সজিব বললো ।

:+আরে,,,,জানু তুমি ভুল বুচ্ছো । আমি তো কচি পরি বলছি । মানে,,, সুন্দরী, অপরূপা, ছোট পরি তুমি আমার ।(সজিব)

:+না,,,, এখন আর জানু,সুন্দরী, অপরূপা, বললে কাজ হবে না । এখন তোমাকে এখানে শাস্থি পেতে হবে ।(মিমি)

মিমির কথা সুনে সজিব সুকনো একটা ঢোক গিলে বলে উঠলো ।

:+প্লিজ জানু এমন করো না । এটা বিয়ে বাড়ি,,,না থুক্কু,,, বৌ ভাত বাড়ি । এখানে কতো লোকজন আছে । আমি এখানে কি করে ১০০বার কান ধরবো । কি করে তোমাকে ১০টা কিস করবো । বুঝার চেস্টা করো ।(সজিব)

মিমিকে বুঝ দিয়ে বললো সজিব । কিন্তু মিমি মানতে নারাজ । সে তো শাস্থি দেবেই ।

:+তোমাকে অতো কিছু করতে হাবে না । তুমি সুধু এখন আমাকে জোরে জরিয়ে ধরে গালে একটা জোরে কিস করবা । তাহলে আমার রাগ কমে যাবে ।(মিমি)

মিমির কথা সুনে নিদ্র মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো । এতোখন প্রর্জন্ত নিদ্র সজিব আর মিমির কথা সুনছিল । সজিব কপাল কুঁচকে কঠিন গলায় বললো ।

:+আমি পারবো না ।(সজিব)

এবার নিদ্র বললো ।

:+মিমি,, এটা তোমাদের বা আমাদের বাড়ি না । আমরা এখানে খনিকের জন্য বেড়াতে এসছি । একটু পরই চলে যাবো । সো এমন কিছু বলো না যাতে তোমার আর আমাদের মান-সম্মান নিয়ে টানা টানি ছুটে ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা সুনে মিমি বলে উঠলো ।

:+না ভাইয়া,,, আপনি আমাদের মাঝে কিছু বলবেন না । এটা আমার আপুর শশুর বাড়ি,,, এখানে কিছু হবে না । ওকে আমি যা বলছি তাই করতে হবে ।(মিমি)

মিমি কথা শেষ হতে সজিব ভ্র-কুঁচকে মিমির দিকে তাকিয়ে ধমকের সুরে বললো ।

:+আমি পারবো না । যা ভাগ এখান থেকে ।(সজিব)

সজিবের ধমক খেয়ে মিমি নেকা কান্না জুরে দিলো ।

:+এ্যাঁ,,, এ্যাঁ,,,এ্যাঁ,,,,তুমি আমাকে,,,, এ্যাঁ,,,একটুও,,,এ্যাঁ,,,ভালো,,,এ্যাঁ,,,,,বাসো,,,,না,,,, এ্যাঁ,,,,,এ্যাঁ,,,,,এ্যাঁ,,,,,,।(মিমি)

এই বলে মিমি কাদতে লাগলো । মিমির এমন কান্না দেখে সজিব কপাল কুঁচকায় । নিদ্র বসা থেকে উঠে দারিয়ে মিমিকে বললো ।

:+মিমি এটা তো তোমাদের বাড়ি না । বাড়িতে গিয়ে ওকে শাস্তি দিও । এখন কান্না তামাও ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা পাত্তা দিলো না মিমি । সে নিজের মতো কেদে যাচ্ছে । সজিব মিমির নেকা কান্না সজ্জ করতে না পেরে চার পাসে একবার তাকালো । দেখলো সবাই নিজেদের কাজ নিয়ে বেস্থ । এটা দেখে সজিব শক্ত করে মিমিকে জরিয়ে ধরে গালে একটা কিস বসিয়ে দিলো । সাথে সাথে মিমির কান্না থেমে গেল । নিদ্র চোখ বড় বড় করে তাকালো মিমি আর সজিবের দিকে । এরপর পকেট থেকে ফোন বের করে কয়েক’টা পিক তুলে নিলো সজিব আর মিমির । মিমির গালে কিস করে আবার ছেরে দিয়ে ঠিক হয়ে দারালো সজিব । সজিব দারাতেই মিমি আবার সজিবকে জরিয়ে ধরে সজিবের গালে একটা গভির কিস করলো । এরপর মিমি সজিবের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিস ফিস করে বললো ।

:+ I LOVE YOU জানু ।😘(মিমি)

সজিব এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বললো ।

:+I LOVE YOU TOW । এবার ছার আর এখান থেকে ভাগ ।(সজিব)

সজিবের কথা সুনে মিমি সজিবকে ছেরে দিয়ে আর কোন দিকে না তাকিয়ে সোজা মিমের কাছে স্টেজের দিকে দৌড় দিলো । নিদ্র হা করে তাকিয়ে ছিল এতোখন । আর মনে মনে বলছিল ।

:+এই জেনারেশন কোথায় গিয়ে দারাবে আল্লাহ ।(নিদ্র)

মনে মনে এই বলে সজিবের দিকে তাকালো নিদ্র । সজিব ভেটকি মাছের মতো হাসি দিয়ে নিদ্রর দিকে তাকিয়ে আছে । নিদ্র পকেট থেকে একটা টিসু বের করে সজিবের দিকে বারিয়ে বললো ।

:+গাল থেকে লিপস্টিক মুছে নিন,,, সালা বাবু ।🥴(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে সজিব লজ্জা পেয়ে নিদ্রর হাত থেকে টিসু নিয়ে গাল মুছতে মুছতে গাড়ির দিকে হাটা ধরলো । নিদ্র এটা দেখে হেসে উঠলো । এরপর সেও সজিবের পিছু পিছু যেতে লাগলো । নিদ্রর গাড়ির কাছে এসে দারালো সজিব আর নিদ্র । এদিকে এখন কেও নেই । পুরো শান্ত পরিবেশ’টা । সবাই বাড়ির ভিতরে বেস্ত । সজিব গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দারালো । নিদ্রও সজিবের পাসে দারালো । নিদ্র সজিবকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই নিদ্রর ফোন বেজে উঠলো । নিদ্র পকেট থেকে ফোন বের করে দেখলো সাব্বির ভিডিও কল করছে । নিদ্র একটা হাসি দিয়ে কল রিসিপ করলো । সাথে সাথে সাব্বির, রাহুল,জেকের মুখ ভেসে উঠলো ফোনের স্কিনে । সাব্বির একটা হাসি দিয়ে বললো ।

:+কিরে,,, কি অবস্থা তোর । ওখানে গিয়ে তো আমাদের ভুলেই গেছিস ।(সাব্বির)

নিদ্ররও একটা হাসি দিয়ে বললো ।

:+আরে কি বলিস । তোদের ভুলবো কেন । পরশু তো রাশেদের সাথে কথা হলো ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শেষ হতে রাহুল বললো ।

:+রাশেদ কে কল করলি বাট আমাদের একটা কলও করলি না ।(রাহুল)

রাহুলের কথা সুনে নিদ্র বললো ।

:+নারে ভাই,,,, আমি কল করিনি । রাশেদই আমাকে কল করছে । আমার ফোনে বেলেন্স ছিল না । তাই তোদের কল করতে পারিনি ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শেষ হতে জেক বললো ।

:+তা কেমন হচ্ছে তোর বিয়ে খাওয়া । সালা একা একা চলে গেলি । আমাদেরও বলতি,,,, আমরাও যেতাম ।(জেক)

:+হঠাৎ চলে আসা হয়েছে । তোদের কি করে বলবো বল । আচ্ছা,, রাশেদ আর সুজন কৈ । ওই দুই ডারে দেখছি না কেন ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা সুনে সাব্বির বললো ।

:+রাশেদ আর সুজন । হাতির ঝিল গেছে ।(সাব্বির)

সাব্বিরের কথা সুনে নিদ্র কপাল কুঁচকে বললো ।

:+কেন ?(নিদ্র)

সাব্বির নিজের মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো ।

:+কি যানি ওর কোন খালা নাকি ফুফির বাসায় গেছে,,,,,,,,,,,,।(সাব্বির)

এই টুকু বলে সাব্বির, রাহুল,জেক, চোখ বড় বড় করে তিনো জনে নিদ্রকে চিৎকার করে বলে উঠলো ।

:+নিদ্র পিছনে তাকাআআআআ,,,,,,,।(জেক,রাহুল,সাব্বির)

নিদ্র এদের কথা কিছু বঝতে না পেরে পিছনে তাকাতে যাবে, ওমনি নিদ্রর মাথায় কেও কিছু দিয়ে জোরে আঘাত করলো । নিদ্র টাল সামলাতে না পেরে সামনের দিকে ৪/৫ পা এগিয়ে গিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে । হাতের ফোন’টা তার থেকেও ২/৩ হাত দুরে গিয়ে পরলো । হঠাৎ এমন হওয়ায় সজিব আঁতকে উঠল । সজিব চার পাসে তাকিয়ে দেখলো ৬/৭ টা ছেলে হাতে মোটা শক্ত লাঠি নিয়ে দারিয়ে আছে । সজিব দৌড়ে নিদ্রকে গিয়ে ধরলো । নিদ্র কাপা কাপা হাতে নিজের মাথার পিছনে হাত দিয়ে আবার সামনে এনে ঘোলাটে চোখে দেখলো “রক্ত” । সজিব নিদ্রকে দু’হাত দিয়ে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বললো ।

:+ভাইয়া উঠো,,,, তাড়াতাড়ি উঠো । এরা তোমাকে মারতে,,,,,,,।(সজিব)

সজিব আর কিছু বলার আগে একটা ছেলে এসে সজিবের বাম হাত ধরে সেখান থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলো । সজিব ছটকে গিয়ে পরলো দারিয়ে থাকা একটা গাড়ির সামনে । ফল স্রুতিতে সজিবের কপাল ফেটে রক্ত বেরুতে লাগলো । মাথা ভো ভো করে ঘুরতে লাগলো । সজিব মাথা দু’হাত দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরে হেলতে দুলতে বাড়ির ভিতরের দিকে দৌড় দিলো । এদিকে ছেলে গুলো নিদ্রকে ইচ্ছে মতো মারতে লাগলো । নিদ্রকে দারানোর প্রর্জন্ত সুজুক দিচ্ছে না । একটা ছেলে গিয়ে মাটি থেকে নিদ্রর ফোন হাতে নিলো । ছেলেটার মুখ সাব্বিরের ফোনের স্কিনে ভেসে উঠতেই সাব্বির চিৎকার করে বললো ।

:+কুত্তার*চ্চা ।আমার বন্ধুর কিছু হলে । তোদের একটাকেও ছারবো না ।(সাব্বির)

সাব্বিরের কথা সুনে ছেলেটি উচ্চ স্বরে হেসে দিয়ে বললো ।

:+কিছু করতে পারলে,,, করে দেখা । তোর বন্ধুকে আজ চিরো দিনের জন্য সুয়িয়ে দেবো ।(ছেলেটি)

এই বলে ছেলেটি নিদ্রর ফোন মাটিতে জোরে ছুরে মারলো । ফল স্রুতিতে ফোনটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো । সাব্বির,রাহুল,জেক, আঁতকে উঠল ছেলেটির কথা সুনে । সাব্বির নিজের ফোন ক্লাবের ফ্লোরে ছুরে মারলো । এরপর চিৎকার দিয়ে দারিয়ে বললো ।

:+জেক ইমিডিয়েটলি আমাদের সেখানে যাওয়ার বেবস্থা কর । ছারবো না একটা কেও । সব কয়’টাকে কুপিয়ে রক্তের বন্য বইয়ে দেবো ।(সাব্বির)

সাব্বিরের কথা শেষ হতেই জেক আর রাহুল হুর মুরিয়ে ক্লাব থেকে বেরিয়ে গেল । অতপর তিন’টা মাইক্র আর দুই বাস ভর্তি ছেলে পেলে নিয়ে সাব্বির, রাহুল,জেক রওনা দিলো নিদ্রর চাচা বজলুরের বাড়ির উদ্দেশ্য ।

:+মিম অনেক সময় তো হলো । এবার আমাদের যাওয়া দরকার ।(নীলা)

নীলার কথা সুনে মিমের মুখ কাদো কাদো হয়ে যায় । সে কাদালো কন্ঠে আসতে করে বললো ।

:+আপু আর একটু বসো না । আবার কবে দেখা হবে,,, না হবে ।(নীলা)

মিমের কথা সুনে নীলা একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো ।

:+আরে বোকা কবে দেখা হবে মানে । তুমি আমাকে তোমার ফোন নাম্বার দিয়ে দিও । তাহলে প্রতিদিন তোমার সাথে ইমোতে, ওয়াসআপ এ কথা বলতে পারবো ।(নীলা)

এই বলে নীলা সামনে তাকাতেই আঁতকে উঠল । কারন সজিব নিজের মাথা দু’হাত দিয়ে চেপে ধরে হেলতে দুলতে স্টেজের দিকে এগিয়ে আসছে । আর তার কপাল থেকে রক্ত অঝোর ধারায় বেয়ে পরছে । সজিব স্টেজের সামনে এসে ধপাস করে মাটিতে পড়ে গেল । তৃপ্তি ভাইয়ের এমন অবস্থা দেখে চিৎকার দিয়ে স্টেজ থেকে নেমে দৌড়ে এসে সজিবকে জরিয়ে ধরলো । এরপর হাও মাও করে কেদে উঠলো । তৃপ্তির হাতে রক্ত লাগতে সে কাপা কাপা হাতে নিজের চোখের সামনে হাত আনলো । রক্ত দেখে তৃপ্তি সেখানেই ঙ্গেয়ান হারায় । নীলা সজিবকে টেনে এনে কপালে কাটা যায়গা শক্ত করে ডান হাত দিয়ে চেপে ধরলো । সজিবের এমন অবস্থা দেখে মিম, নীলার, চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো । মিমি তো হাও মাও করে কাদছে । মানুষের ভির যমে গেল সেখানে । সজিব এখনো অঙ্গেন হয়নি । সে কাপা কাপা গলায় বাহিরের দিকে হাত দিয়ে দেখিয়ে নীলাকে বললো ।

:+প প পরি,,,,ভা ভা ভাইয়াকে,,,,,ও ও ওরা,,,,মে মে মেরে,,,, ফে ফে ফেলবে ।(সজিব)

সজিব এই বলে অঙ্গেন হয়ে যায় । সালমা আর বজলুর এখনো কোন কিছু টের পায়নি । কারন তারা দো’তলায় নিলয়ের মা’র রুমে বসে,,, নিলয়ের মা’র সাথে কথা বলছে । নীলা সজিবের কথা কিছু বুঝতে পারলো না । এদিকে লোকজন ভির করে আছে । তখনি একটা ছেলে দৌড়ে সেখানে এসে হাফাতে হাফতে চিৎকার করে বললো ।

:+এই আপনারা এখানে ঝরো হয়ে আছেন । আর ওদিকে একটা ছেলেকে ৬/৭ টা ছেলে মিলে মেরে রক্তাক্ত বানিয়ে ফেলছে ।(ছেলেটি)

ছেলেটির চিৎকার দেখে আঁতকে উঠল সবাই । নীলা যেই ছেলেটির সাথে কথা বলতে গিয়ে সজিবের হাতে ধরা খেলো,,,, সেই ছেলেটি কোথা থেকে দৌড়ে এসে অপর ছেলেটিকে বললো ।

:+কি হয়েছে জয় এমন করে চিৎকার করছিস কেন ।(ছেলেটি)

ছেলেটির কথা সুনে জয় বললো ।

:+ইমন ওই খানে একটা ছেলেকে কয়েকটা ছেলে মিলে অনেক মার ধর করছে । ছেলেটাকে বাচাতে হবে ভাই । নাহলে ছেলেটাকে মেরে ফেলবে ওরা ।(জয়)

জয়ের কথা সুনে ইমন বললো ।

:+তাহলে দেরি করছিস কেনো চল তাড়াতারি ।(ইমন)

এই বলে ইমন আর তার সব বন্ধুরা দৌড় দিলো । ছেলেটার কথা সুনে নীলার বুক ধরত করে উঠলো । সে আন মনে বলে উঠলো ।

:+নিদ্র নয় তো ।(নীলা)

এই বলে নীলা চিৎকার করে বলে উঠলো ।

:+ইকরা,,সামিয়া । তোমরা প্লিজ তৃপ্তির আম্মুকে খুঁজে নিয়ে আসো । তাড়াতাড়ি যাও,,, ফাস্ট ।(নীলা)

নীলার কথা সুনে সামিয়া আর ইকরা সালমাকে খুজতে বেরিয়ে গেল । আর নীলা সজিবকে কোলে নিয়ে দারিয়ে মিমকে বললো ।

:+মিম তুমি একটু সুইটির দিকে খেয়াল রেখো । আমি সজিবকে নিয়ে বাহিরে যাচ্ছি ।(নীলা)

মিম তৃপ্তিকে জরিয়ে ধরে কাদতে কাদতে মাথা নারিয়ে সাই দিলো । নীলা সজিবের কেটে যাওয়া কপাল শক্ত করে ডান হাত দিয়ে চেপে ধরে কোলে নিয়ে বাড়ির বাহিরের দিকে হাটা ধরলো । নীলার পুরো শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে । সমিয়া আর ইকরা সালমাকে পুরো বাড়ি খুজে শেষে নিলয়ের মায়ের রুমে হুর মুড়িয়ে প্রবেশ করলো । সামিয়া আর ইকরার অবস্থা দেখে সালমা বললো ।

:+কি হয়েছে তোমাদের,,,,,, তোমাদের এই অবস্থা কেনো ।(সালমা)

সালমার কথা সুনে সামিয়া কাদতে কাদতে বললো ।

:+আন্টি সজিবকে । কে যেন মারছে,,, ওর কপাল থেকে রক্ত বেরুচ্ছে ।(সামিয়া)

সামিয়ার কথা সুনে সালমা যেন আকাশ থেকে পরলেন । একমাত্র ছেলের কিছু হলে তিনি বাচবেন কিকরে । সালমা সামিয়ার কথা সুনে সেখানে আর বসে না থেকে দৌড় লাগালেন । বজলুর তো সামিয়ার কথা সুনে আগেই বেরিয়ে গেছেন । মিম তৃপ্তির চোখে মুখে পানির ছিটে দিচ্ছে । মিমের ননদ পানি নিয়ে আসছে । চোখে মুখে পানি পরতে ধর ফরিয়ে উঠে বসলো তৃপ্তি । এরপর মিমকে জরিয়ে ধরে আবার হাও মাও করে কেদে উঠলো তৃপ্তি ।

:+মিম,,, আমার ভাই । আমার ভাই ।(তৃপ্তি)

আর কিছু বলতে পারছে না তৃপ্তি । সুধু আমার ভাই,,,আমার ভাই বলে কেদে যাচ্ছে । বজলুর সিরি বেয়ে নিচে নেমে দেখলো লোকজন ভির করে আছে । তিনি তাড়াতারি ভির ঠেলে ভিতরে গিয়ে দেখেন । তৃপ্তি মিমকে জরিয়ে ধরে কাদছে । বজলুর তাড়াতারি মেয়ের পাসে গিয়ে বসে মাথায় হাত রেখে বললো ।

:+কি হয়েছে মা । সজিব কৈ ।(বজলুর)

বজলুরের গলার আওয়াজ পেয়ে তৃপ্তি মিমকে ছেরে দিয়ে বজলুরকে জরিয়ে ধরে কেদে উঠলো । বজলুর কিছু বুঝতে পারছেন না । এখানে একটু রক্ত পরে আছে । বজলুরের বুক’টা ধরত করে উঠলো । সালমা হুর মুড়িয়ে ভির ঠেলে ভিতরে এসে চিৎকার করে বললো ।

:+আমার ছেলে কোথায় ।(সালমা)

মিম কাদো কাদো সুরে বললো।

:+আন্টি,, নীলা আপু । সজিবকে নিয়ে বাহিরের দিকে গেছেন ।(মিম)

মিম কথা সুনে সালমা আর সেখানে দারিয়ে না থেকে পাগলের মতো বাহিরের দিয়ে দৌড় দিলেন । সাথে তৃপ্তি, বজলুর, ইকরা,সামিয়া, আর বাকি সবাই । সুধু মিম যেতে পারেনি । সালমা গাড়ির কাছে এসে দেখলো নীলা সজিবকে কোলে নিয়ে দম ধরে এক দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে বসে আছে । সালমা তাড়তাড়ি দৌড়ে সেখানে যায় । সেখানে গিয়ে সামনে তাকাতেই সালমা মাথা ঘুরে পরে যেতে নিলে ইকরা ধরে ফেললো । তবে সালমা অঙ্গেন হয়েছে এটা ঠিক । তৃপ্তি সেখানে এসে তৃপ্তিও আবার অঙ্গেন হয়ে যায় । তৃপ্তিকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো সামিয়া । বজলুর দৌড়ে গারির পাসে পরে থাকা নিদ্রর রক্তাক্ত দেহ জরিয়ে ধরলো । এরপর নিদ্রর গালে মুখে আসতে আসতে চাপড় দিতে লাগলেন । মুখে কিছু বলতে পারছেন না তিনি । মুখের ভাষা যেন হারিয়ে গেছে বজলুরের । তখন ইমন দৌড়ে আবার সেখানে এসে দারালো । ইমন জয় আর তার বন্ধুরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাতে লাঠি নিয়ে ছেলে গুলোকে তাড়া করছিল । কিন্তু ধরতে পারেনি একটা ছেলে কেও । ইমন তাড়াতাড়ি নিদ্রর পাসে বসে নিদ্র হাত ধরে হাতের পালস চেক করে বললো ।

:+আরে ছেলেটা এখনো বেচে আছে । তারাতাড়ি গাড়িতে তুলুন,,,, হসপিটালের নিয়ে যেতে হবে ।(ইমন)

ইমনের কথায় হুস ফিরে নীলার । সে বসা থেকে সজিবকে কোলে নিয়ে উঠে দারিয়ে বললো ।

:+প্লিজ আপনারা কেও কিছু করুন । প্লিজ হেল্প করুন ।(নীলা)

নীলার কথা সুনে ইমন নীলার দিকে তাকালো । এরপর চোখ নামিয়ে বজলুরের উদ্দেশ্য ইমন বললো ।

:+আংকেল একে ধরুন । গাড়িতে তুলতে হবে । যত দ্রুত সম্ভব হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে । ভেঙে পরলে হবে না ।(ইমন)

এই বলে ইমন নিদ্রর রক্তাক্ত শরীর ধরলো সাথে আরো কয়েক জন মিলে নিদ্রকে একটা মাইক্রতে পিছনে সিটে উঠালো । সেই মাইক্রতে তৃপ্তি, সালমা,সজিবকেও তুললো । ইকরা ধরে আছে সালমাকে, সামিয়া ধরে আছে তৃপ্তিকে,নীলা সজিবকে কোলে নিয়ে বসলো । বজলুর আর ইমন ধরে আছে নিদ্রকে । ইমন জয়কে উদ্দেশ্য বললো ।

:+জয় তুই সামনে ড্রাইভারের পাসে বস ।(ইমন)

ইমনের কথা সুনে জয় ড্রাইভারের পাসে বসে পরলো । ইমন এখানের একটা হসপিটালের নাম বললো । আর ড্রাইভার সেই হসপিটালে সবাইকে নিয়ে বেরিয়ে পরলো । বজলুর একদম স্তম্ভ হয়ে বসে আছে । তার মুখে কোন ভাষা নেই । কিছু মিনিটের মধ্যে কি থেকে কি হয়ে গেল কিছু বুঝতে পারছেন না তিনি ।

:+ভাই,,,, একে বারে শেষ করে দিয়েছি সালাকে ।(ছেলে)

ফোনের অপরপাসের ছেলেটির কথা সুনে তৃপ্তির হাসি হেসে উঠলো নিরব । এরপর ছেলেটিকে বললো ।

:+তা,,,, তোদের টাকা কখন নিবি ।(নিরব)

কেটে যাওয়া ঠোঁটের কোনে মলম লাগাতে লাগাতে বললো নিরব । নিরবের কথা সুনে ছেলেটি বললো ।

:+ভাই সন্ধার পর আসবো । টাকা রেডি রাখিয়েন ।(ছেলে)

:+ঠিক আছে । সন্ধার পর মাঠে চলে আসিশ । টাকা পেয়ে যাবি ।(নিরব)

ছেলেটি নিরবের এই কথা সুনে একটু হেসে বললো ।

:+আচ্ছা ভাই । আমি আপনার জন্য ওয়েট করবো ।(ছেলেটি)

:+আচ্ছা,,,, এখন তাহলে রাখছি ।(নিরব)

:+ঠিক আছে ভা,,,,,,,,,,, ।(ছেলেটি)

ছেলেটির কথা শেষ হওয়ার আগে নিরব কল কেটে দিলো । এরপর নিরব দারিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে উচ্চ স্বরে হেসে উঠলো । নিরবের হাসি যে নিলয়ের কানে পৌঁছে গেছে এটা নিরব টের পায়নি । কারন নিলয় নিরবের রুমের দরজার পাসে দারিয়ে ছিল । এতোখন ছেলেটির সাথে বলা সব কথা নিলয় সুনছিল । নিরবের কথা শেষ হতে নিলয় নিরবের রুমের দরজা ধাক্কা দিয়ে বললো ।

:+নিরব দরজা খোল ।(নিলয়)

নিলয়ের গালার আওয়াজ শুনে নিরব থম থমি খেয়ে দরজার দিকে তাকায় । নিলয় আবার দরজা ধাক্কা দিয়ে কঠিন গলায় বললো ।

:+দরজা খুলবি । নাকি আমি দরজা ভেঙে ফেলবো ।(নিলয়)

নিলয়ের এই কথা সুনে নিরব তাড়াতাড়ি রুমের দরজা খুলে দিলো । দরজা খুলতেই নিলয় নিরবের শার্টের কলার চেপে ধরে বললো ।

:+তোর মতো জানোয়ারকে আমি আমার বাড়িতে যায়গা দিয়েছি এটাই আমার বড়ো ভুল হয়েছে ।(নিলয়)

এই বলে নিলয় নিরবের শার্টের কলার চেপে ধরে রুম থেকে টেনে বের করে নিয়ে আসলো । আর নিরব নিলয়ের হাত ধরে বললো ।

:+নিলয় কাজ’টা তুই ভালো করছিস না । আমি তোর বন্ধু । তোর উচিত আমাকে সাহায্য করা । আর তুই তা না করে আমাকে অপমান করছিস ।(নিরব)

নিরবের কথায় পাত্তা না দিয়ে নিলয় নিরবের শার্টের কলার ধরে টেনে বাড়ির মেন দরজার কাছে নিয়ে এসে নিরবকে ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে বললো ।

:+বেরিয়ে যা তুই আমার বাড়ি থেকে । তোর এই মুখ কখনো আর আমাকে দেখাবি না । তোর মতো বন্ধু থাকার চেয়ে,,, না থাকা ভালো ।(নিলয়)

এই বলে নিলয় আবার দো’তলায় নিরবের রুমে এসে নিরবের সব কিছু লাগেজে ভরে আবার নিচে নামলো । নিলয় মেন দরজার কাছে এসে দেখলো,, নিরব দারিয়ে নিজের গা ঝারছে । নিলয়ের ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পরে গিয়ে ছিল নিরব । নিলয় বড় দুই’টা লাগেজ আর একটা গাড়ির চাবি নিরবের দিকে ছুরে মেরে বললো ।

:+তোর সব কিছু এই দুই’টা লাগেজে আছে । এবার তুই তোর গারি নিয়ে দয়া করে এখান থেকে চলে যা । তোর মুখ দেখতেও আমার এখন ঘৃণা হচ্ছে ।(নিলয়)

এই বলে নিলয় পিছনে ঘুরে সেখান থেকে নিজের রুমে চলে আসলো । আর নিরব এই অপমান মুখ বুঝে সয়ে গেল । ভরা মেহমানে ঘেরা বাড়িতে অপমানিত হয়েছে নিরব । সব মেহমান কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে নিরবের দিকে । নিরব আর দেরি না করে তার লাগেজ আর গাড়ির চাবি মাটি থেকে তুলে নিলয়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলো । নিরব ভেবেছিল সে চুপি চুপি কাজ’টা করে যাবে আর নিলয় টেরও পাবে না । কিন্তু নিলয় সব সময় নিরবের উপর চোখ রেখেছিল । নিরব এটা যানতো না । নিরব নিজের গারিতে লাগেজ দু’টো তুললো । এরপর সে ড্রাইভিং সিটে বসে রাগে, দুঃখে,আপমানে গাড়ি স্টাড দিয়ে খান বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল ।

—————————————

বিকেল ৫ টা বাজে………….
হসপিটালের সামনে এসে মাইক্রো দার করালো মাইক্রো ড্রাইভার । ইমন, জয় আর বজলুর,নিদ্রকে কোলে তুলে হসপিটালের ইমারজেন্সি কেবিনে নিয়ে গেল । আর নীলা সজিবকে কোলে তুলে তাদের পিছু পিছু ইমারজেন্সিতে সজিবকে নিয়ে আসলো । তৃপ্তি আর সালমার এখনো ঙ্গেন ফিরেনি । ইকরা সালমাকে ধরে বসে আছে মাইক্রোতে । আর তার পাসে সামিয়া তৃপ্তিকে জরিয়ে ধরে বসে আছে । কিছুখন পর নীলা হসপিটালের দু’জন স্টাফকে নিয়ে এসে সামিয়াকে বললো ।

:+সামিয়া তুমি একটু সরে এসো । এরা আন্টিকে আর সুইটিকে কেবিনে নিয়ে যাবে ।(নীলা)

নীলার কথা অনুযায়ি সামিয়া তৃপ্তিকে সিটের সাথে হেলান দিয়ে সুয়িয়ে দিয়ে মাইক্রো থেকে বেরিয়ে আসলো । সামিয়া বেরিয়ে আসতেই দু’জন স্টাফ তৃপ্তিকে একটা ট্রলিতে তুলে হসপিটালের একটা কেবিনে নিয়ে আসলো সাথে সালমাকেও । সালমা আর তৃপ্তিকে এক কেবিনে রাখা হলো । ইকরা আর সামিয়া তৃপ্তি আর সালমাকে যে রুমে রাখা হয়েছে সেই রুমে বসে রইলো । কিছুখন পর নীলা একজন ডক্টর নিয়ে এসে তৃপ্তি আর সালমাকে চেকাপ করতে বললো । ডক্টর তৃপ্তি আর সালমাকে চেকাপ করে একটা ইনজেকশন লিখে দিলো । আর বললো ।

:+তাড়াতারি এই ইনজেকশন নিয়ে আসুন । তারপর রিসিপশনে গিয়ে একজন নার্স কে বলবেন ইনজেকশন’টা এনাদের দিয়ে দিতে ।(ডক্টর)

এই বলে ডক্টর চলে গেল কেবিন থেকে । সামিয়া আর ইকরা চুপচাপ বসে আছে । একটা আতংকের মধ্যে আছে সামিয়া আর ইকরা । নীলা বুঝে গেছে যা করার তার একাই করতে হবে । নীলা কেবিন থেকে বেরিয়ে দেখলো একটা চেয়ারে বজলুর মাথা নিচু করে বসে আছে । নীলা বজলুরের কাছে গিয়ে দারিয়ে বললো ।

:+আংকেল এভাবে ভেঙে পরলে তো চলবে না । আপনাকে শক্ত হতে হবে । এই ইনজেকশন গুলো লাগবে একটু তাড়াতাড়ি নিয়ে আসার বেবস্থা করুন আংকেল ।(নীলা)

হাতে থাকা ইনজেকশনের কাগজ বজলুরর দিকে বারিয়ে দিয়ে বললো নীলা । নীলার কথা সুনে মাথা তুলে নীলার দিকে তাকালো বজলুর । এরপর নীলার হাত থেকে কাগজের টুকরো’টা নিয়ে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে গেলেন তিনি । নীলা আর সেখানে দারিয়ে না থেকে ইমারজেন্সি কেবিনের দিকে রওনা দিলো । নীলা কেবিনে এসে দেখলো ইমন একজন ডক্টরের সাথে কথা বলছে । আর জয় তাদের পাসে দারিয়ে আছে । নীলা ইমনের কাছে গিয়ে দারিয়ে বললো ।

:+ইস্কুজমি,,,,, নিদ্র আর সজিব কোথায় ।(নীলা)

নীলার কথা সুনে পিছনে ঘুরে তাকালো ইমন । ইমন নীলাকে দেখে বললো ।

:+আপনি এখানে কেন । আপনাকে তো বলছি আন্টি আর ওই মেয়ের সাথে থাকতে ।(ইমন)

নীলা ইমনের কথা সুনে রিনরিনিয়ে বললো ।

:+সামিয়া আর ইকরাকে বসিয়ে এসছি আন্টি আর তৃপ্তির পাসে । আপনি প্লিজ বলুন নিদ্র আর সজিব কোথায় ।(নীলা)

ইমন একটা ফস করে নিশ্বাস ছেরে বললো ।

:+ওদের অপারেশন রুমে নিয়ে গেছে । আপনি প্লিজ বাহিরে গিয়ে আংকেলকে শান্তনা দিন । আর এদিক’টা আমি সামলে নেবো ।(ইমন)

:+আপনি,,,,,,,।(নীলা)

নীলাকে থামিয়ে ইমন বললো ।

:+আমি একজন ডক্টর,,,,,ওকে । আপনি প্লিজ ওদিক দেখুন । আর এদিক আমার উপর ছেরে-দিন ।(ইমন)

:+কিন্তু,,,,,,,,,।(নীলা)

আবারো নীলাকে থামিয়ে ইমন বললো ।

:+বলছি তো আমি সামলে নেবো । আর বিষয়’টা এতো যটিল না । যত’টা আমি ভেবে ছিলাম ।(ইমন)

:+ওরা ঠিক হয়ে যাবে তো ।(নীলা)

মুখ’টা মলিন করে বললো নীলা । নীলার এমন ফেস দেখে ইমন বললো ।

:+হ্যাঁ,,,, ঠিক হয়ে যাবে । কারো কিছু হবে না । আমি আছি এখানে আপনি যান ।(ইমন)

:+ওকে ।(নীলা)

এই বলে নীলা সেখান থেকে বেরিয়ে আসলো । নীলা ইমারজেন্সি কেবিন থেকে বেরিয়ে দেখলো । বজলুর হাতে ইনজেকশন নিয়ে লম্বা লম্বা পা ফেলে এদিকে এগিয়ে আসছে । বজলুর নীলার সামনে এসে দারিয়ে বললো ।

:+এই নেও মা ইনজেকশন । আর কিছু লাগবে ।(বজলুর)

বিচলিত হয়ে বললো বজলুর । নীলা বজলুরকে বললো ।

:+আংকেল আপনি প্লিজ শান্ত হন । কারো কিছু হবে না । আমি ডক্টরের সাথে কথা বলছি । আপনি আমার সাথে আসুন ।(নীলা)

এই বলে নীলা হাটতে লাগলো আর বজলুর নীলার পিছু পিছু হাটতে লাগলো । দুজনে এসে তৃপ্তি আর সালমাকে যেই কেবিনে রাখা হয়েছে সেখানে আসলো । সামিয়া আর ইকরা দু’জনে চুপচাপ বসে আছে । নীলা বজলুরকে একটা চেয়ার দেখিয়ে বললো ।

:+আংকেল আপনি এখানে এখন চুপচাপ বসে থাকুন । আর বাকি সব আমি দেখছি ।(নীলা)

নীলার কথা মতো বজলুর চেয়ারে বসে পরলো । নীলা আবার কেবিন থেকে বেরিয়ে রিসিপশনের কাছে গিয়ে দারিয়ে বললো ।

:+৯ নাম্বার কেবিনে একজন নার্স পিঠিয়ে দিবেন প্লিজ ।(নীলা)

রিসিপশনের একটা ছেলে নীলার কথা সুনে বললো ।

:+ও হ্যাঁ । আপনি তাহলে রুগির লোক । ইনজেকশন এনেছেন ।(ছেলে)

:+হ্যাঁ,,,আপনি প্লিজ একজন নার্স পাঠিয়ে দিন ।(নীলা)

:+ওকে,,, আপনি যান,, আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি ।(ছেলে)

নীলা ছেলেটির কথা সুনে আবার পিছনে ঘুরে কেবিনে চলে আসলো । নীলার পিছু পিছু একজন নার্সও এসে কেবিনে ঢুকলো । নার্স তৃপ্তি আর সালমাকে ইনজেকশন পুস করে দিয়ে বললো ।

:+পাকা দু’ঘন্টা ঘুমুবে এনারা এখন । আপনারা কেও ডিস্টার্ব করবেন না । প্লিজ সবাই কেবিন থেকে বেরিয়ে রিসিপশনের সামনের চেয়ার গুলোতে গিয়ে বসুন ।(নার্স)

নার্স এই বলে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল । নীলা সামিয়া আর ইকরা বললো ।

:+সামিয়া, ইকরা চলো বাহিরে গিয়ে বসতে হবে । আন্টি আর সুইটিকে একটু রেস্ট নিতে দাও ।(নীলা)

নীলা এই বলে আবার বজলুরের দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+আংকেল বাহিরে চলুন ওখানে গিয়ে বসি । তৃপ্তি আর আন্টি রেস্ট নেক ।(নীলা)

নীলার কথা সুনে বজলুর কাপা কাপা গলায় বললো ।

:+আ আ আমার ছে ছে ছেলে ।(বজলুর)

নীলা বজলুরের কাছে গিয়ে বজলুরের হাত ধরে বললো ।

:+আংকেল সজিবের কিছু হবে না । ও ঠিক হয়ে যাবে । ডক্টর দেখছে ওদের । আপনি প্লিজ ভেঙে পরবেন না । এখন চলুন এখান থেকে । আন্টি আর তৃপ্তিকে রেস্ট নিতে দিন ।((নীলা)

এই বলে নীলা বজলুরের হাত ছেরে দিয়ে সামিয়া আর ইকরাকে নিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে আসলো । বজলুর বসা থেকে উঠে ঘুমন্ত অঙ্গেন তৃপ্তির মুখে আলতো করে হাত রেখে বললো ।

:+আজ আমার এই দিনের জন্য যে দাই । তাকে আমি কখনো খমা করবো নারে মা ।(বজলুর)

এরপর বজলুর সালমার দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+ছারবো না আমি তাকে । যে আমার আপন জনদের কষ্ট দিচ্ছে ।(বজলুর)

এই বলে চোখের পানি মুছে কেবিন থেকে বেরিয়ে আসলো বজলুর । এরপর নীলা সামিয়া আর ইকরার পাসে গিয়ে বসে পরলেন তিনি । নীলা বার বার অপারেশন রুমে দিকে তাকাচ্ছে । লাল রঙের বাল্ব জলছে অপারেশন রুমের দরজার উপরে ।

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,

[।কপি করা নিষেধ।]

[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দিষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here