#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________41
সকাল ৬টা বাজে……………..
বজলুর নিদ্রর গাড়ি হসপিটালে নিয়ে আসছে । ভোরে নিদ্রর গাড়ি নিয়ে আসার জন্য মিমের শশুড় বাড়িতে গিয়েছিল বজলুর । হসপিটালের পাসে গাড়ি পার্ক করে হসপিটালের ভিতরে আসলেন তিনি । অতপর ৫ নাম্বার কেবিনের ভিতরে গেলো বজলুর । বজলুর কেবিনের ভিতর গিয়ে দেখলো, সালমা সজিবের বেডের উপর ঘুমিয়ে আছে । আর সজিব সালমার বুকের সাথে লেপ্টে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে । যেন এটাই তার এক মাত্র নিরাপদ স্থান । সত্যি মায়ের কোলই এক মাত্র সন্তানের নিরাপদ স্থান । যা পৃথিবীতে আর কোথাও নেই । ফ্লোরে চোখ যেতে বজলুর দেখলো, নীলা, তৃপ্তি, সামিয়া, ইকরা একে অপরের গায়ের উপর হাত, পা ছরিয়ে ছিটিয়ে ঘুমাচ্ছে । নিদ্রর দিকে তাকিয়ে বজলুর একটা দীর্ঘশ্বাস ছারলেন । ছেলেটা নিস্তেজ হয়ে আছে । এরপর বজলুর সজিবের বেডের পাসে এসে দারালেন । সালমাকে আসতে করে ডেকে তুললেন তিনি । ধিরে ধিরে চোখ খুলে বজলুরের দিকে তাকালো সালমা । বজলুর আসতে করে রিনরিনিয়ে বললো ।
:+তাড়াতাড়ি উঠো, বাড়িতে যেতে হবে ।(বজলুর)
বজলুরের কথায় কপাল কুঁচকে যায় সালমার । তিনি আসতে করে সজিবকে নিজে থেকে ছারিয়ে উঠে বসলেন । এরপর ঘুম জোরালো কন্ঠে সালমা বললো ।
:+এখন বাড়িতে যাবো কেন ।(সালমা)
সালমার কথায় ফুস করে নিশ্বাস ছেরে বজলুর বললো ।
:+খাওয়া দাওয়া কিছু করতে হবে না । সেই কাল দুপুরে খেয়েছে সবাই । আর এখনো কিছু খাওয়া হয়নি । মেয়ে গুলোর দিকে দেখো একবার । কি অবস্থা ওদের । (বজলুর)
বজলুরের কথা শুনে সালমা সজিব সহ কেবিনের ভিতরে থাকা সবার দিকে তাকালো । এরপর বেড থেকে নেমে দারিয়ে সালমা আসতে করে বললো ।
:+হোটেল থেকে কিছু নিয়ে আসো । বাড়িতে যেতে হবে না এখন ।(সালমা)
সালমার কথা শুনে বজলুর ফুস করে একটা নিশ্বাস ছেরে বললো ।
:+এখন না হয় হোটেলের খাবার খওয়া যাবে । কিন্তু দুপুরের খাবারের কি করবে ।(বজলুর)
কেবিনের ভিতরে থাকা একটা চেয়ারে বসতে বসতে বললো বজলুর । সালমা কেবিনের ভিতরে থাকা ওয়াসরুমে দিকে এগিয়ে এসে শান্ত কন্ঠে বললো ।
:+তুমি এখন খাওয়ার বেবস্তা করো । দুপুরের খাবার পরে দেখা যাবে ।(সালমা)
এই বলে সালমা ওয়াসরুমের ভিতরে চলে গেলো । বজলুর খানিকক্ষণ সময় সেদিকে তাকিয়ে থাকলো । এরপর আর বসে না থেকে খাবার আনার জন্য কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলেন তিনি ।
★
গায়ের উপর ভারি কিছু অনুভব করতে ধিরে ধিরে চোখ দু’টো খুলে নীলা । নীলা চোখ খুলে ডান পাসে তাকিয়ে দেখলো । তৃপ্তি তাকে ডান দিক থেকে কোল-বালিশের মতো জরিয়ে ধরে আছে । বাম দিকে চোখ ফিরিয়ে নীলা দেখলো । ইকরা বাম দিক থেকে তার পায়ের উপর পা ফেলে রেখেছে । আর সামিয়া ইকরাকে বাম দিক থেকে কোল-বালিশের মতো জরিয়ে ধরে আছে ঠিক তৃপ্তির মতো । নীলা একটা জোরে নিশ্বাস ছারলো । মাঝখানে সুয়ে তার অবস্থা না’যে’হাল । নীলা তার বাম হাত দিয়ে আসতে করে তৃপ্তির কাছ থেকে তার ডান হাত ছারালো । এরপর আসতে করে তৃপ্তির ডান পা নিজের গায়ের উপর থেকে সরিয়ে দিলো নীলা । নীলা সোয়া থেকে উঠে বসে ইকরার পা নিজের পায়ের উপর থেকে সরিয়ে ফাঁক গলিয়ে তাদের মাঝখান থেকে বেরিয়ে আসলো । নীলা বসা থেকে উঠে দারিয়ে এক পলক তৃপ্তি, সামিয়া আর ইকরার দিকে তাকালো । এরপর কেবিনের ভিতরে থাকা ওয়াসরুমে দিকে চলে আসলো সে । ওয়াসরুমে দরজার কাছে এসে নীলা বুঝতে পারলো ভেতরে কেও আছে । ভিতরে কে হতে পারে, তা বোঝার জন্য নীলা পিছনে ঘুরে পুরো কেবিনের ভিতরে চোখ বুলালো । দেখলো কেবিনের ভিতরে সালমা আর বজলুর নেই । নীলা বুঝতে পারলো ওয়াসরুমের ভিতরে সালমা নতুবা বজলুর গিয়েছে । এটা বুঝতে পেরে নীলা আসতে করে সেখান থেকে সরে এসে কেবিনের ভিতরে থাকা একটা চেয়ারে বসে পরলো । কিছু সময় পার হবার পর ওয়াসরুমের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসলো সালমা । সালমা বেরিয়ে আসতেই নীলা চট করে লম্বা পা ফেলে ওয়াসরুমের ভিতরে চলে গেলো । সালমা কিছু বুঝতে না পেরে খানিকক্ষণ সময় সেদিকে তাকিয়ে থাকলো । এরপর সালমা তৃপ্তি, সামিয়া, ইকরার কাছে গিয়ে একে একে তিনো’জনকে ডেকে তুললো । এমন সময় নার্স আসলো কেবিনের ভিতরে । নার্স কেবিনের ভিতরে এসে সোজা নিদ্রর বেডের ডান দিকে গিয়ে ইনজেকশনে ঔষধ নিতে লাগলো । তৃপ্তি সেটা দেখে নিদ্রর বেডের বাম দিকে এসে নার্সের কার্যক্রম মনযোগ দিয়ে দেখতে লাগলো । একে একে তিন’টে ইনজেকশনে ঔষধ নিলো নার্স । এরপর ধিরে ধিরে নিদ্রর ডান হাতে থাকা কেনোলাতে একে একে তিন’টে ইনজেকশনের ঔষধ দিয়ে দিলো । তৃপ্তি খুব মনোযোগ সহকারে সেটা দেখলো । সালমা তখন নার্সের কাছে এগিয়ে এসে বললো ।
:+এখন কি অবস্থা ওর ।(সালাম)
নার্স একটু সময় নিয়ে সালমার দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+আসলে আন্টি আমি তো ডক্টর নই, আমি একজন নার্স । ওনার কি অবস্থা সেটা ডক্টর বলতে পারবেন । তবে আমি এখন আসা করছি, ওনার শরীরের ব্যথা কিছু’টা কমবে । ভালো ফিল করবে । বাকি’টা ডক্টর দেখে তারপর বলবেন ।(নার্স)
এই বলে নার্স সজিবকে ইনজেকশন দেওয়ার জন্য ইজেকশনে ঔষধ নিতে লাগলো । নার্সের এমন কথা সুনে সালমা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো ।
:+ওর খাওয়া দাওয়ার বেপারে কিছু,,,,,,,।(সালমা)
সালমা আর কিছু বলার আগে নার্স বলে উঠলো ।
:+হ্যাঁ,,,,,ওনাকে আপনারা তরল জাতীয় খাবার খাওয়াবেন । সাথে এই পিচ্চি টাকেও । যাতে ওনাদের সেটা চিবোতে না হয় । যেমন ধরুন:- সুপ, সেমাই, সুজি, ইত্যাদি ।(নার্স)
ইকরা তখন সজিবের বেডের কাছে এসে দারিয়ে নার্সকে বললো ।
:+আচ্ছা তা বুঝলাম । কিন্তু আপনাদের ডক্টর রুগি দেখতে আসবে কখন ।(ইকরা)
ইকরার কথা সুনে নার্স ইকরার দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+ডক্টর তো আপনাদের লোকই । উনি কখন আসবেন তা তো আপনারাই যানেন ।(নার্স)
নার্সের এই কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে গেল । এখানে তো তাদের মধ্যে কেও ডক্টর নয় । তাহলে নার্স তাদের লোক’কে ডক্টর বলছে কেন । সামিয়া নার্সের দিকে এগিয়ে এসে বললো ।
:+ডক্টর আমাদের লোক মানে । আমাদের মধ্যে তো কেও ডক্টর নয় ।(সামিয়া)
এমন সময় নীলা ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে আসলো । সে এসে সামিয়ার শেষের কথা শুনতে পেলো । নীলা তখন সামিয়ার কাছে এসে বললো ।
:+কি হয়েছে সামিয়া ।(নীলা)
নীলার কথা শুনে পিছনে ঘুরে নীলার দিকে তাকালো সবাই । সামিয়া বললো ।
:+আপু,,,, নার্স বলছে । আমাদের লোক নাকি ডক্টর । যে কি’না সজিব আর ভাইয়ার চিকিৎসা করছে । কিন্তু আমাদের মধ্যে তো কেও ডক্টর নয় ।(সামিয়া)
সামিয়ার কথা শুনে নীলা একটু সময় নিয়ে ভেবে, ফুস করে একটা নিশ্বাস ছেরে বললো ।
:+হ্যাঁ,,,ডক্টর আমাদের লোক ।(নীলা)
নীলার এই কথা সুনে তৃপ্তি বলে উঠলো ।
:+ডক্টর আমাদের লোক মানে । তুমি কি বলছো আপু । তাহলে কে সে । আমাদের মধ্যে তো কেও ডক্টর নয় ।(তৃপ্তি)
:+আচ্ছা আপু আপনি তো যানেন ডক্টর কে । তাহলে নিশ্চই আপনার কাছে ডক্টরের নাম্বার আছে । আপনি প্লিজ ওনাকে একটু আসতে বলুন ।(নার্স)
সজিবকে ইনজেকশন দিয়ে নার্স এই বলে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল । সালমা তখন নীলার কাছে এসে বললো ।
:+আমার যানা মতে আমাদের,,,,,,।(সালমা)
সালমাকে থামিয়ে নীলা বললো ।
:+আন্টি আপনি এখানে এসে বসুন, আমি সব বলছি ।(নীলা)
এই বলে নীলা সালমাকে সজিবের বেডের পাসে বসালো । তারপর নিজেরও সালমার মুখো মুখি বসলো । সামিয়া আর ইকরা দু’টো চেয়ার টেনে এনে বসলো । আর তৃপ্তি এদিকে নিদ্রর বেডের বাম পাসে বসে গালে হাত দিয়ে নিদ্রর মুখের দিকে তাকিয়ে নিদ্রকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো । নীলা বললো ।
:+নিদ্র ভাইয়াকে যারা বাচিঁয়েছে, মানে আমাদের সাথে যেই দু’জন ছেলে হসপিটালে এসেছে, তাদের মধ্যে একজন ডক্টর । উনি নিদ্র ভাইয়া আর সজিবের চিকিৎসা করেছেন ।(নীলা)
নীলার কথা সালমা কিছু বুঝতে পারলেন না । তিনি সরু চোখে নীলার দিকে তাকিয়ে বললেন ।
:+আমি কিছু বুঝতে পারছি না তোমার কথা । কোন দু’জন ছেলে হসপিটালের এসেছে আমাদের সাথে । আর কে চিকিৎসা করছে,, আমি কিছু বুঝতে পারছি না ।(সালমা)
সালমার কথার পিঠে ইকরা বলে উঠলো ।
:+আমি বুঝতে পারছি নীলা আপু কার কথা বলছে । আসলে আন্টি নীলা আপু, ইমন ভাইয়ার কথা বলছে । উনি হলেন নিলয় ভাইয়ার (মিমের স্বামী) বড় চাচুর ছেলে । ঢাকায় থাকেন । উনি একজন ডক্টর । কাল আপনি আর তৃপ্তি যখন অঙ্গেন হয়ে গিয়েছিলেন । তখন ইমন ভাইয়া আর জয় ভাইয়া সবাইকে নিয়ে এই হসপিটালে আসে । উনার সাথে আমার গত পরসু কথা হয়েছিল, বেস ভালো একজন মানুষ উনি ।(ইকরা)
ইকরার কথা শুনে সালমা ফুস করে একটা নিশ্বাস ছারলেন । যা বোঝার তিনি সব বুঝে গেছেন । কিন্তু এদিকে ইকরার শেষের কথা গুলো শুনে নীলার ভিরত থেকে গা জ্বলে গেল । কেন এমন হলো নীলা নিজেও বুঝতে পারছে না । কিছু সময় নিরবতা কাটলো কেবিনের ভিতরে । কারন সবাই ফ্রেশ হতে বেস্থ । তখন বজলুর আসলো কেবিনের ভিতরে । তিনি কেবিনের ভিতরে এসে সোজা সালমার কাছে গিয়ে হাতে থাকা নানরুটি, সব্জির পেকেট আর তিন’টে প্লেট,এক বোতল পানি সালমার হাতে দিলেন । সালমা বজলুরের হাত থেকে খাবারের পেকেট গুলো নিজের হাতে নিয়ে বললো ।
:+আমাদের বাড়িতে যেতে হবে তাড়াতাড়ি ।(সালমা)
বজলুর অবাক দৃষ্টিতে সালমার দিকে তাকালো । একটু আগে তো তিনি বলেছিলেন বাড়ি যাওয়ার কাথা, কিন্তু সালমা নিষেদ করে বলেছিল হোটেলের খাবার নিয়ে আসতে । এখন আবার বাড়ি যাওয়ার কথা বলছে । সত্যি মেয়ে মানুষের মন বুঝা বড়ো দায় । বজলুর মনে মনে এগুলো ভেবে সালমাকে বললো ।
:+এখন বাড়ি যাবো কেন । হোটেল থেকে তো খাবার নিয়ে আসছি ।(বজলুর)
বজলুরের কথা সুনে তৃপ্তি এগিয়ে এসে বললো ।
:+আব্বু,,, আমরা তো এগুলো খাবো । কিন্তু ভাইয়া আর সজিবকে এগুলো খাওয়ানো যাবে না । নার্স বলে গেছে ওদের তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে । যেমন, সুজি, সুপ, সেমাই ।(তৃপ্তি)
বজলুর তৃপ্তির দিকে তাকালো । নীলা এগিয়ে এসে বললো ।
:+আন্টি তাহলে আমাদের দেড়ি করা উচিত হবে না । এক কাজ করলে কেমন হয়,আমি,আপনি আর আংকেল বাড়িতে যাই । আর সুইটি,সামিয়া, ইকরা ওরা একটু সময় এখানে থাকুক । আমরা ফিরে আসলে নাহয় ওরা যাবে ।(নীলা)
নীলার কথা সুনে ইকরা এগিয়ে এসে বললো ।
:+কিন্তু আপু,,আমার আম্মু বার বার ফোন করছে বাড়িতে যাওয়ার জন্য । আমি থাকতে পারবো না ।(ইকরা)
নীলা ইকরার কথা শুনে বললো ।
:+একটু সময়ই তো থাকো । আমরা তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো ।(নীলা)
এই বলে নীলা আবার বজলুরের দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+আংকেল এখান থেকে আপনাদের বাড়িতে যেতে কতো সময় লাগবে ।(নীলা)
বজলুর একটু সময় ভেবে নিয়ে বললো ।
:+প্রায় ১ ঘন্টা ।(বজলুর)
বজলুরের কথা শুনে নীলা নিজের ফোন থেকে টাইম দেখে ইকরাকে বললো ।
:+এখন বাজে ৭.২৫ মিনিট । আমরা ১২টা বাজে আবার ফিরে আসবো । ইকরা তুমি একটু তোমার আম্মুকে মেনেজ কে এই সময় টুকু থাকো প্লিজ ।(নীলা)
নীলার কথা শুনে ইকরা একটু ভেবে বললো ।
:+আচ্ছা আমি থাকছি । বাট তোমরা তাড়াতাড়ি আসার চেষ্টা করো ।(ইকরা)
ইকরার কথার পিঠে নীলা আর কিছু বললো না । সে সামিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+সামিয়া তোমার কোন সমস্যা আছে ।(নীলা)
সামিয়া এগিয়ে এসে দারিয়ে বললো ।
:+আমার কোন সমস্যা নেই । আমি ইকরা আপুর ফোন দিয়ে আম্মুকে সব বলেছি ।(সামিয়া)
নীলা কেবিনের কোনে পরে থাকা রক্ত মাখা নিজের বোরখা, পার্স, তৃপ্তির বোরখা,পার্স আর সালমার বোরকা হাতে নিয়ে তারা দিয়ে বললো ।
:+আন্টি চলুন আমরা বাড়িতে যাই । আমরা বাড়িতে গিয়ে কিছু খেয়ে নেবো । ওদের এগুলো দিয়ে যান ।ওরা এগুলো খাক ।(নীলা)
নীলার কথা শুনে সালমা তরি ঘরি করে তৃপ্তিকে বললো ।
:+হ্যাঁ,,ঠিক বলছো । আচ্ছা মা তোরা এগুলো খেয়েনে । আর সজিব ঘুম থেকে উঠলে বলবি । আম্মু বাড়িতে গেছে খাবার আনতে ।(সালমা)
:+আচ্ছা ।(তৃপ্তি)
ছোট করে উওর দিলো তৃপ্তি । সালমা, নীলা, আর বজলুর কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল । উদ্দেশ্য বাড়িতে যাবে । তৃপ্তি এগিয়ে এসে সজিবের বেডের পাসে বসে তিন’টে প্লেটে দু’টো করে নানরুটি আর সব্জি দিয়ে প্লেট সাজিয়ে সামিয়া আর ইকরাকে বললো ।
:+সামিয়া, আপু আসেন খেয়ে নেই ।(তৃপ্তি)
তৃপ্তির কথা শুনে ইকরা আর সামিয়া এগিয়ে এসে দু’টো চেয়ারে বসলো । আর তৃপ্তি সজিবের বেডের উপর বসে তাদের হাতে প্লেট গুলো দিলো । সামিয়া বললো ।
:+কয়’টা রুটি এনেছে আংকেল ।(সামিয়া)
একটু রুটি ছিরে মুখে পুরে বললো সামিয়া । তৃপ্তি পেকেটের ভিতরে তাকিয়ে বললো ।
:+আরো ৮টার মতো আছে । কেন আরো লাগবে নাকি তোর ।(তৃপ্তি)
:+আরে না । আমি তো এমনি জিজ্ঞেস করলাম । এতো রুটি এনেছে কেন আংকেল ।(সামিয়া)
সামিয়ার কথা শুনে ইকরা বললো ।
:+সবাই খাবে ভেবে এনেছিল হয়তো । কিন্তু তারা তো না খেয়ে চলে গেল । তাই এগুলো বেসি হয়ে গেছে ।(ইকরা)
:+হতে পারে ।(সামিয়া)
এই বলে সামিয়া খেতে লাগলো আর সাথে ইকরাও । তৃপ্তি একটু সময় বসে থেকে সেও খাওয়া সুরু করলো ।
——————————————–
সকাল ৮ বেজে ৩৫ মিনিট………………
বজলুর গাড়ি ড্রাইভ করে নিজের বাড়ি দিকে যাচ্ছেন । চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে একটু দুরে গাড়ি দার করিয়ে ফেললো বজলুর । সামনের দিকে তাকিতে আতকে উঠলেন তিনি । বুকের ভিতর দুর দুর করতে লাগলো । হঠাৎ গাড়ি দারিয়ে যাওয়ায় সালমা আসে পাসে তাকিয়ে বললো ।
:+কি হলো গাড়ি রাস্তার মধ্যে দার করালে কেন ।(সালমা)
নীলাও বলে উঠলো ।
:+কি হয়েছে আংকেল গাড়ি দার করালেন কেন । কোন সমস্যা হয়েছে কি ।(নীলা)
গাড়ির পিছনের সিট থেকে নীলা আর সালমার কথা সুনে পিছনে ঘুরে তাকালো বজলুর । বজলুরের কপাল ঘামে ভিজে আছে । সালমা তা দেখে বললো ।
:+কি হয়েছে তোমার । তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন ।(সালমা)
কিছু’টা বিচলিত হয়ে বললো সালমা । বজলুর আবার ঠিক হয়ে বসে বললো ।
:+সামনে তাকাও । তারপর বুঝতে পারবে ।(বজলুর)
বজলুরের কথা অনুযায়ী নীলা আর সালমা সামনের দিকে তাকালো । সামনে তাকিয়ে নীলার মুখ চুপসে যায় । বুকের ভিতর ধপ ধপ শব্দ সুরু হয়ে যায় । সুকনো ঢোক গিলে সালমার ডান হাত ধরে সে । সালমা নিজেও সক খেয়ে তাকিয়ে আছে । একি দেখছেন তিনি । কতো গুলো ছেলে হাতে অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়ির চার পাস ঘেরাও করে রেখেছে । বজলুর নিজেকে শান্ত করে আবার গাড়ি স্টার্ড দিয়ে চেয়ারম্যান বাড়ির গেটর কাছে আসলো । গেট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে নিলে,, দু’জন ছেলে হাতে রা’ন’দা নিয়ে গাড়ির সামনে এসে দারালো । বজলুর সাথে সাথে গাড়ি ব্রেক করলো । আর একটা ছেলে বজলুরের কাছে এসে জাঝালো কন্ঠে বললো ।
:+কি চাই এখানে । গাড়ি ভিতরে ঢোকানোর চেষ্টা করছেন কেন ।(ছেলে)
ছেলেটার জাঝালো কন্ঠের কথা শুনে গাড়ির ভিতরে থাকা সালমা আর নীলা কেঁপে উঠল । বজলুর শান্ত কন্ঠে বললো ।
:+এটা আমার বাড়ি । আর তুমি বলছো,, আমি কেন গাড়ি ভেতে ঢুকাচ্ছি ।(বজলুর)
হঠাৎ একটা ছেলে দৌড়ে এসে বললো ।
:+আরে এটা তো নিদ্র ভাইয়ের গাড়ি । এই তুই এনাদের দার করিয়ে রেখেছিস কেন । আংকেল আপনারা ভেতরে যান ।(ছেলে)
এই বলে ছেলে’টি আগের ছেলে’টির মাথায় গাটা মেরে বললো ।
:+বেসি পাক-নামি করিস তুই ।(ছেলে)
:+আরে ভাই কি করছিস তুই ।(ছেলে)
নিজের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে ছেলেটি । বজলুর গাড়ি আবার স্টার্ড দিয়ে বাড়ির ভিতরে গাড়ি প্রবেশ করালো । গাড়ি পার্ক করে গাড়ির ভিতর থেকে নেমে তাড়াতাড়ি বজলুর বাড়ির ভিতরের দিকে হাটা ধরলো । বজলুরের পিছু পিছু সালমাও হাটা ধরলো । নীলার ভয় করছে গাড়ি থেকে নামতে । কিন্তু বাড়ির ভিতরে তো যেতে হবে । নীলা হাতে বোরখা আর পার্স গুলো নিয়ে আসতে করে গাড়ি থেকে বেরিয়ে দারালো । আসে পাসে তাকিয়ে নীলার প্রান হুস হয়ে যায় । কতো গুলো ছেলে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র হাতে নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে । যেন সে মঙ্গল গ্রহ থেকে এসেছে এমন ভাবে তার দিকে তাকিয়ে আছে । নীলা ভয়ে ভয়ে মাথা নিচু করে তাড়াতাড়ি বাড়ির ভিতরের দিকে হাটা ধরলো । বাড়ির মেন দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে নীলার প্রান ফিরে এলো । কারন নীলা সাব্বির, জেক,আর রাহুলকে দেখতে পেয়েছে । কিন্তু নীলা একি দেখছে । সাব্বির বজলুরের গলা চেপে ধরে আছে আর জেক,রাহুল তা ছারানোর চেষ্টা করছে । সালমা সাব্বিরের পায়ে পরে বিলাপ করছেন বজলুরকে ছেরে দেওয়ার জন্য । নীলা এটা দেখে চিৎকার করে বলে উঠলো ।
:+সাব্বির ভাইয়া আপনারা এটা কি করছেন ।(নীলা)
#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,
[।কপি করা নিষেধ।]
[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দিষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]