#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________42
নীলার চিৎকার শুনে সদরদরজার দিকে তাকালো জেক, সাব্বির আর রাহুল । তারা নীলাকে এখানে দেখে বেস অবাক হলো । আপনা আপনি কপাল কুঁচকে যায় তাদের । সাব্বির বজলুরের গলা থেকে হাত কিছু’টা আলগা করে নেয় । সেই সুযুকে জেক আর রাহুল বজলুরের কাছ থেকে সাব্বিরকে টেনে নিয়ে সোফায় বসিয়ে দেয় । আর নীলা দৌড়ে এসে বজলুরকে ধরলো সাথে সালমাও । নীলা আর সালমা মিলে বজলুরকে একটা সিঙ্গেল সোফায় নিয়ে বসালো । বজলুর জোরে জোরে শ্বাস টানছেন । একটুর জন্য তার প্রান হুস হয়ে যাচ্ছিল । সালমা বজলুরের গলা আর বুকে হাত বুলাচ্ছেন । বজলুরকে সাভাবিক করার চেষ্টা করছেন তিনি । চোখ দু’টো দিয়ে অঝর ধরায় পানি গরিয়ে পরছে তার । এদিকে সাব্বিরকে শান্ত করার চেষ্টা করছে জেক আর রাহুল । নীলা দৌড়ে কিচেনে গিয়ে এক গ্লাস পানি নিয়ে আসলো । এরপর বজলুরকে পানি টুকু খেতে বললো নীলা । সালমা নীলার হাত থেকে পানির গ্লাস নিয়ে বজলুরকে ধিরে ধিরে পানি খাওয়াতে লাগলো । রাহুল সাব্বিরের পাসে থেকে উঠে নীলার কাছে এসে বললো ।
:+এদিকে আসো, তোমার সাথে কিছু কথা আছে ।(রাহুল)
এই বলে রাহুল সেখান থেকে বাড়ির সিরির কাছে চলে গেল । আর নীলা সবার দিকে চোখ বুলালো । সাব্বিরকে জেক বিভিন্ন ধরনের ঙ্গেন দিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছে । বজলুর কিছু’টা সাভাবিক হয়ে উঠেছে । সালমা বজলুরের বুকে হাত বুলাচ্ছেন । নীলা আর দারিয়ে না থেকে রাহুলের কাছে গেল । রাহুল সিরির কাছে দারিয়ে আছে । নীলা রাহুলের সামনে মাথা নিচু করে এসে দারালো ।
:+কি হয়েছিলো । আর নিদ্র এখন কোথায় । তুমি এই বেপারে কিছু যানো । যানলে সব সত্যি’টা আমার কাছে বলো । আমরা অনেক টেনশনে আছি ।(রাহুল)
শান্ত কন্ঠে বলে উঠে রাহুল । নীলা কিছু’টা কাচুমাচু হয়ে কালকের সব কথা খুলে বললো রাহুলকে । সব শুনে রাহুল বিচলিত হয়ে বলে উঠলো ।
:+তাহলে নিদ্র এখন হসপিটালে । কোন হসপিটালে বলো তাড়াতাড়ি আমাকে ।(রাহুল)
নীলা তখন হসপিটালের নাম বললো । কিন্তু রাহুল তা চিনতে পারলো না । রাহুল বলে উঠলো ।
:+এটা আবার কোথায় । আচ্ছা তুমি এদিকে আসো ।(রাহুল)
এই বলে রাহুল আবার সাব্বির আর জেকের সামনে এসে দারালো । রাহুলের পিছু পিছু নীলাও এসে দারালো সালমার পাসে । রাহুল,,, জেক আর সাব্বিরকে উদ্দেশ্য করে বললো ।
:+গায়েজ,,,,নিদ্র হসপিটালে ভর্তি । আমাদের হসপিটালে যেতে হবে ।(রাহুল)
রাহুলের কথা শুনে সাব্বির আর জেক অবাক দৃষ্টিতে রাহুলের দিকে তাকালো । চোখ দু’টো চক চক করে উঠে তাদের । নীলা সালমাকে আসতে করে বললো ।
:+আন্টি এনারা,,,,নিদ্র ভাইয়ার বন্ধু ।(নীলা)
নীলার কথা শুনে সালমা আর বজলুর অবাক দৃষ্টিতে তাকালো রাহুল,জেক,আর সাব্বিরের দিকে । বন্ধুর জন্য কেও এতো’টা পথ জার্নি করে এতো দুরে আসতে পারে, এটা যানা ছিল না সালমার । সালমা তো ভেবেছিল তাদের কোন পুরোনো শত্রু হয়তো লোক পাঠিয়েছে তাদের মারার জন্য । হঠাৎ কিছু একটা মনে পরতে সালমার বুক ধরত করে উঠলো । চোখ দু’টো দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো । জেক রাহুলের কথা শুনে বলে উঠলো ।
:+কি বলছিস তুই রাহুল ।(জেক)
:+হ্যাঁ,,,আমি সত্যি বলছি । নীলা বলছে ওরা এখন হসপিটাল থেকে এসেছে ।(রাহুল)
রাহুলের কথা শুনে জেক বসা থেকে উঠে সালমা আর বজলুরের কাছে এসে দারালো । জেকের পিছু পিছু রাহুলও এসে দারালো । সাব্বির মাথা নিচু করে সোফায় বসে আছে । জেক কিছু’টা দুঃখীত গলায় বললো ।
:+সরি আংকেল । আমাদের বন্ধু বুঝতে পারেনি । প্লিজ মাপ করে দিবেন তাকে ।(জেক)
জেকের কথা শেষ হতে রাহুল বলে উঠলো ।
:+আংকেল আমাদের মাথা ঠিক ছিল না । তবুও দেখেন কতো’টা শান্ত থাকার চেষ্টা করছি । আমাদের মধ্যে কেও কিন্তু শান্ত নয় । তবে ওর গায়ের রক্ত একটু বেশিই টগবগ,, তাই এমন করে ফেলছে । ওর হয়ে আমরা আপনার কাছে খমা চাইছি প্লিজ ওকে খমা করে দিবেন ।(রাহুল)
জেক আর রাহুলের ব্যবহারে মুগ্ধ হয় বজলুর আর সালমা । সালমা আর বজলুর কিছু বলার আগেই জেক আবার নীলার দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+তুমি যানো নিদ্র কোন হসপিটালে ভর্তি ।(জেক)
নীলা জেকের কথা শুনে মাথা নিচু করে রিনরিনিয়ে বললো ।
:+হ্যাঁ,,,ভাইয়া ।(নীলা)
জেক নীলার কথা শুনে বললো ।
:+তাহলে তুমি আমাদের সাথে চলো । আমাদের হসপিটাল’টা দেখিয়ে দিয়ে আসো ।(জেক)
জেকের কথা শুনে সালমা চোখের পানি মুছে বললো ।
:+তোমরা অনেক দুর থেকে এসেছো । কিছু খেয়ে তারপর যাও । আমি এখুনি খাবারের বেবস্থা করছি ।(সালমা)
এই বলে সালমা কিচেনের দিকে পা বারাতে নিলে রাহুল বলে উঠলো ।
:+আন্টি আমরা এখন কিছু খাবো না । অযথা কষ্ট করার এখন প্রয়োজন নেই । আপনাদের অনেক ট্রায়াড মনে হচ্ছে । আপনারা রেস্ট নিন । আমরা তো আর চলে যাচ্ছি না । আমরা আছি,,, কিছু দিন থেকে যাবো আমরা,, আপনাদের এখানে । কি বলিস জেক ।(রাহুল)
দাঁত কেলিয়ে শেষের কথা জেকের দিকে তাকিয়ে বললো রাহুল । জেক কিছু’টা আমতা আমতা করে বললো ।
:+আব,,,,হ্যাঁ,,,,না,,,,মানে । আচ্ছা সেটা পরে দেখা যাবে । নীলা চলো ।(জেক)
শেষের কথা নীলার দিকে তাকিয়ে বললো জেক । নীলা একটা সুকনো ঢোক গিলে বললো ।
:+ভাইয়া,,,,আপনারা একটু দারান । আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি ।(নীলা)
এই বলে নীলা বোরখা আর পার্স ফ্লোর থেকে হাতে তুলে নিয়ে,,সিরি বেয়ে নিজের রুমে চলে গেল । নীলার পচন্ড ভয় হচ্ছে । নীলা যানে তার কিছু হবে না । কিন্তু,,,,, তবুও কেন যেন ভয় লাগছে । সালমা জেকের দিকে তাকিয়ে কপাল কুঁচকে কিছুখন ভেবে বললো ।
:+তোমাকে কোথায় যেন দেখেছি ।(সালমা)
সালমার কথা শুনে বজলুর জেকের দিকে তাকালো । জেকের দিকে ভালো করে তাকিয়ে বজলুরের চোখ বড় বড় হয়ে যায় । এই তো সেই ছেলে,, লম্বা লম্বা দাঁড়ি,, লম্বা লম্বা চুল,, যাকে বজলুর নিদ্রর ল্যপটপে দেখেছিল জেসিকা মরার সময় । জেক সালমা আর বজলুরের দিকে তাকিয়ে একটু সময় নিয়ে ভেবে তারপর জোরে একটা নিশ্বাস ছেরে সাব্বিরের পাসে গিয়ে বসলো । রাহুল আর সাব্বির অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে জেকের দিকে । রাহুল বললো ।
:+কিরে,,, তোকে ইনি কোথায় দেখেছেন ।(রাহুল)
জেক ফুস করে একটা নিশ্বাস ছেরে বললো ।
:+বস আমি বলছি ।(জেক)
জেকের কথা মতো রাহুল জেকের পাসে গিয়ে বসলো । সালমা এসে বজলুরের পাসে দারালো । জেক মাথা তুলে বজলুর আর সালমার দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+মাস খানিক আগে নিদ্রর ল্যপটপে দেখেছেন আপনারা আমাকে । আসা করছি বুঝতে পারছেন কোন সময় দেখেছেন ।(জেক)
জেকের কথা শুনে সালমার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম যমা হয়ে যায় । কাপা কাপা হাতে বজলুরের কাধে হাত রাখলেন তিনি । মনে পরে যায় সেই রাতের কথা । নিদ্রর উচ্চ চিৎকার,,দেয়ালে ঘুশি দেওয়া,,জেসিকার মিত্যু । সব কিছু মনে পরতে সালমার বুক কেপে উঠে । ভয়ে হিম হয়ে যায় সালমা । বজলুর একবার সালমার দিকে তাকিয়ে আবার জেকের দিকে তাকালো । রাহুল আর সাব্বির জেকের কথা কিছু বুঝতে পারলো না । সাব্বির বললো ।
:+কিছু বুঝলাম না ।(সাব্বির)
জেক একটা বিরক্তি কর মুখ দেখিয়ে বললো ।
:+আরে ওই মেয়েটা,,,নিদ্রর ফ্রেন্ড,,, কিযেন নাম ওর,,,ওহ হ্যাঁ মনে পরছে,,,ওই জেসিকা না ফেসিকা ওই মেয়েকে সায়েস্থা করতে গিয়ে নিদ্রর ল্যপটপে আমাকে দেখেছিল এনারা ।(জেক)
একটু ভেবে ভেবে কথা গুলো বললো জেক । জেকের কথা শুনে সাব্বির আর রাহুল ছোট করে ওহ বললো । বজলুর কিছু’টা আমতা আমতা করে বললো ।
:+মেয়ে’টাকে না মারলে হতো না ।(বজলুর)
বজলুরের কথা শুনে সাব্বির আর রাহুল চোখ বড় বড় করে বজলুরের দিকে তাকালো । সাব্বির আর রাহুলের তাকানো দেখে সালমা সুকনো ঢোক গিলে বজলুরের কাধ খামছি মেরে ধরলো । বজলুরের উপর সালমার এখন রাগ হচ্ছে । এখন এটা কেন বললেন তিনি । এখন এটা না বললে কি হতো না । আর দোষ তো মেয়ে’টার ছিল । ও মরলে কি আর বাচলে কি । এমন জীবন থেকে মরে যাওয়া ভালো । যেখানে নিজের আপন মানুষকে লোক দিয়ে মেরে ফেলেছে এই মেয়ে । সেখানে এ জীবিত থেকে কি লাভ । জেক বজলুরের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো ।
:+আংকেল,,,,মেয়ে’টার বেপারে আমাদের থেকে বেসি আপনারা ভালো যানেন । আর মেয়ে’টাকে আমি মারিনি,,,,ও নিজে নিজে মরেছে । নিজের গলায় আর পেটে নিজে ছুরি চালিয়েছে । এটা আপনারা নিদ্রর ল্যপটপে ক্লিয়ার দেখেছেন ।(জেক)
এই বলে জেক আবার দাঁত কটমট করে চোখ গরম করে বজলুর আর সালমার দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+দু’টো বাচ্চা আর একজন মহিলার মরন যন্ত্রনা দেখেছি আমি ৫বছর আগে । গলা কেটে দিলে মুরগী যেমন ফ্লোরে পরে লাফাতে থাকে । ঠিক তেমনি ভাবে মারা হয়েছিল ওদের । কতো’টা র্নিমম ভাবে মারা হয়েছিল সেটা আমি নিজের চোখে দেখেছি । জীবনে প্রথম মাডার হতে দেখেছি সেদিন । যারা নিজের সন্তানকে নিয়ে চিন্তা করে না,, তারা কিসের মা । আর মেয়ে’টা যে পথে গিয়েছিল,,,, থাক আর বললাম না সে কথা । তবুও আপনি বলছেন মেয়ে’টাকে বাচিয়ে রাখা উচিত ছিল ।(জেক)
জেকের কথা আর তিগ্ম দৃষ্টি দেখে কেপে উঠলো বজলুর আর সালমা । এমন সময় নীলা সিরি বেয়ে নিচ তলায় নেমে আসলো । জেক নীলাকে দেখে নিজেকে কিছু’টা শান্ত করে নিয়ে,,,বসা থেকে উঠে দারিয়ে সাব্বির আর রাহুলের দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+চল,,,,আর বসে থেকে লাভ নেই ।(জেক)
এই বলে জেক বাড়ির ভিতর থেকে বেরিয়ে গেল । জেকের পিছু পিছু সাব্বির আর রাহুলও বেরিয়ে গেল । নীলা সালমার পাসে এসে দারালো । সালমা নীলার ডান হাত নিজের দু’হাতের মুঠোয় নিয়ে কিছু’টা মিনতি শুরে বললো ।
:+কোন সমস্যা হবে না তো তোমার । আমার ভয় হচ্ছে এদের সাথে তোমাকে একা ছারতে ।(সালমা)
নীলা সালমার হাতের উপর নিজের বাম হাত তুলে দিয়ে বললো ।
:+আন্টি আপনি কোন ভয় পাবেন না । এনাদের আমি ভালো করে চিনি ।(নীলা)
নীলার কথা শেষ হতে সালমা বললো ।
:+তা বুঝলাম । কিন্তু তুমি তো এখনো কিছু খেলে না ।(সালমা)
সালমার কথা শুনে নীলা বললো ।
:+আন্টি আপনি আমার খাওয়া নিয়ে টেনশন করবেন না । আমি ওখানে গিয়ে কিছু খেয়ে নেবো ।(নীলা)
:+তুমি একটু দারাও,, আমি আসছি ।(সালমা)
এই বলে সালমা নীলার হাত ছেরে দিয়ে নিজের রুমে চলে গেল । কিছুখন পর আবার ফিরে এসে নীলার হাতে ১০ হাজার টাকা দিয়ে বললো ।
:+তুমি হসপিটালে গিয়ে কিছু খেয়ে নিয়ো । আর কোন কিছুর দরকার পরলে এই টাকা থেকে খরচ করবে । তৃপ্তি আর সজিবের খেয়াল রেখো । আমি তাড়াতাড়ি খাবার রান্না করে নিয়ে আসছি ।(সালমা)
নীলা টাকা গুলো নিতে চাইলো না । কিন্তু সালমা জোর করে নীলার পার্সে টাকা গুলো পুরে দিলো । নীলা বাধ্য হয়ে টাকা গুলো নিয়ে, আসি বলে বাড়ির ভিতর থেকে বেরিয়ে গেল । নীলা বেরিয়ে যেতে সালমা ধপাস করে ফ্লোরে বসে পরলো । আর বিলাপ করতে করতে বললো ।
:+কতো বার বারন করেছি তোকে ওর সাথে না লাগতে । নিজে থাপ্পড় মেরে তোকে বুঝিয়েছি । তবুও কেন লেগেছিস তুই ওর সাথে । দু’দিনের জন্য এসেছিস দেশে । তাও একটু শান্তি দিলি না আমাকে । এখন তোর কিছু হলে, ভাইকে কি বলবো আমি । কি যবাব দেবো তাকে আমি ।(সালমা)
সালমাকে বিলাপ করতে দেখে বজলুর সালমার পাসে বসে সালমার মাথায় হাত রেখে বললো ।
:+শান্ত হও । যা হবার তা হবে । এটা তুমি আটকে রাখতে পারবে না । অন্যয় যেহেতু করেছে তার শাস্তি তো পেতে হবে ।(বজলুর)
সালমা বজলুরকে জরিয়ে ধরে ফুফিয়ে উঠলেন । বজলুর সালমার মাথায় হাত রাখলেন ।
:+ভাইকে কি বলবো ওর কিছু হলে । আমার ভাই এতো ভালো মানুষ,, আর তার ঘরে কিনা এমন ছেলে জন্ম নিলো । ওই ছেলের জন্য আজ তোমাকে এই ছেলে গুলোর হাত সম্মান হানি হতে হয়েছে । এলাকায় তোমার এতো নাম,, আর তোমার গায়ে কিনা হাত তুললো এই ছেলে । সুধু মাত্র আমার ভাইয়ের ছেলে জন্য আজ তোমাকে সম্মান হানি হতে হলো ।(সালমা)
বিলাপ করতে করতে কথা গুলো বললো সালমা । বজলুর সালমার মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন । তিনি চান নিরব শাস্তি পাক । কিন্তু তাকে মেরে ফেলোক এটা চান না বজলুর । কিন্তু এখন তার হাতে কিছু নেই । সব সময়ের উপর ছেরে দিয়েছেন বজলুর । কিছু সময় পর সালমা অনেক ভেবে চিন্তে নিজের মনকে শান্ত করলেন । তিনি কার জন্য কাদছেন । যে কি না তার ছেলেকে আগাত করছে, তার জন্য কেন কদছেন তিনি । কেন কাদছেন ? না সালমা আর কাদবে না । মনে মনে স্থির করে এরপর ধিরে সুস্থে উঠে ফ্রেশ হয়ে কিচেনের দিকে চলে যায় সালমা । অনেক কাজ পরে আছে তার ।
——————————————
বেলা ১১টা বেজে ১৩ মিনিট……….
নিদ্র পলক হিন ভাবে তাকিয়ে আছে তৃপ্তির দিকে । কিছুখন আগে ঘুম ভেঙেছে তার । গায়ে তেমন একটা ব্যথা নেই এখন । নার্স কিছুখন আগেই ইনজেকশন দিয়ে গেছে । তবে নরা চড়া করতে পারছে না নিদ্র । নরা চড়া করলেই ব্যথা লাগছে । তৃপ্তি সজিবকে কোলে নিয়ে বসে আছে সজিবের বেডের উপর । সামিয়া আর ইকরা হসপিটাল থেকে বেরিয়ে গেছে কিছু নরমাল খাবার খোঁজার জন্য । যাতে নিদ্র আর সজিবকে খাওয়াতে পারে । সজিব তৃপ্তির কোলে চুপটি করে বসে আছে । খিদে পেয়েছে তার প্রছন্ড । তৃপ্তি ভাইয়ের মুখে হাত বুলিয়ে ঘুমাতে বলছে বার বার । কিন্তু সজিব চুপচাপ বসে আছে তৃপ্তির কোলে । পেটে খিদে রেখে কি করে ঘুমাবে সে । একটু আগেই তো ঘুম থেকে উঠেছে । এখন আবার কি করে ঘুমাবে । তৃপ্তির কাহিনি দেখে হাসি পাচ্ছে নিদ্রর । কিন্তু হাসতে পারছে না সে । হঠাৎ কেবিনের দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করলো নীলা । নীলার পিছু পিছু জেক, সাব্বির, রাহুলও প্রবেশ করলো । নিদ্র চোখ বড় বড় করে তাকালো তাদের দিকে । ঠোঁট দু’টো কিঞ্চিৎ ফাক হয়ে গেল তার । জেক,রাহুল,সাব্বির এক প্রকার দৌড়ে গিয়েই নিদ্রর বেডের পাসে দারিয়ে নিদ্রকে দেখতে লাগলো । নিদ্র কপালে গুটি কয়েক ভাজ এনে বললো ।
:+কিরে,, তোরা এখানে কি করছিস ।(নিদ্র)
সাব্বির নিদ্রর কথা শুনে কিছু’টা রাগি গলায় বললো ।
:+এতো গুলো মার খেলি,, আর একটা মারও দিতে পারলি না ।(সাব্বির)
রাহুল নিদ্রর নাকের উপরে কেটে যওয়া যায়গায় একটা আঙ্গুল দিয়ে ছুয়ে দিলো । নিদ্র আহ করে উঠলো । রাহুল সোজা হয়ে দারিয়ে বললো ।
:+বাহ,,,ভালোই তো মার খেয়েছিস ।(রাহুল)
নিদ্র চোখ মুখ কুঁচকে রাহুলের দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+আরে ভাই পরে গিয়ে ছিলাম মাটিতে । আর উঠে দারানোর সুঝুক পাইনি । আর এই কাজ কে করেছে আমি বুঝতে পারছি না ।(নিদ্র)
নিদ্রর কথা শুনে জেক কিছু’টা রাগান্বিত গলায় বললো ।
:+আর বলতে হবে না আপনাকে । আপনি এরিয়ে যেতে চাইলেও আমরা এরিয়ে যাবো না । কারন নীলার কাছ থেকে এখানে আসতে আসতে সব শুনেছি আমরা । আর সব শুনে যা বুঝলাম । তাতেই আমরা বুঝে গেছি এই কাজ কে করেছে ।(জেক)
:+জেক,,,,,,,,,,,,,,,।(নিদ্র)
নিদ্রকে থামিয়ে দিয়ে সাব্বির বললো ।
:+এই চুপ,,,, একদম চুপ । চুপচাপ শুয়ে থাক । একটা কথাও বলবি না । এখন যা করার আমরা করবো । সালাকে তো যানে মেরে ফেলবো একদম । সুধু একবার হাতের নাগালে পাই ।(সাব্বির)
:+সাব্বির,,,,,,,,।(নিদ্র)
:+তোকে চুপ থাকতে বলছি আমি । পলা পান পাঠিয়ে দিয়েছি সালাকে ধরে নিয়ে আসতে । তুই চুপ থাকবি একদম । কোন কথা বলবি না ।(সাব্বির)
সাব্বিরের কথা শুনে নিদ্র বুঝতে পারলো,, তার আর কিছু করার নেই । এদেরকে এখন বাধা দিলেও এরা শুনবে না । উলটো তাকে কথা শুনাবে । এদিকে তৃপ্তি জেক,সাব্বির আর রাহুলকে দেখে সজিবকে জরিয়ে ধরলো । সজিবও তৃপ্তিকে জরিয়ে ধরলো । নীলা এসে সজিবের বেডের পাসে বসলো । তৃপ্তি আর সজিব বিষেস করে জেককে দেখে ভয় পাচ্ছে । তাদের মনে পরে গেছে মাস খানিক আগের রাতের ঘটনার কথা । নীলা সজিবের বেডের পাসে বসছে দেখে তৃপ্তি নীলার দিকে এগিয়ে গা ঘেঁষে বসলো । নীলা তৃপ্তির কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো ।
:+আমি তোকে বলেছিলাম না । তোর নিদ্র ভাইয়ার বন্ধু গুলোর কথা । এরাই তোর নিদ্র ভাইয়ার বন্ধু ।(নীলা)
নীলার কথা শুনে তৃপ্তি নীলার দিকে তাকালো । ঠোঁট দু’টো ফাক হয়ে গেল তৃপ্তির । মুখে কোন কথা বলতে পারছে না সে, ভয়ে হিম হয়ে গেছে । সজিবেরও একই অবস্থা । হঠাৎ কেবিনের ভিতর হুড় মুড়িয়ে প্রবেশ করলো সামিয়া আর ইকরা । হাতে তাদের কেজি খানেক আপেল আর মাল্টা । সামিয়া আর ইকরা কেবিনের ভিতরে ডুকে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো । অতপর সামিয়ার চোখ পড়লো জেক, সাব্বির আর রাহুলের দিকে । থম থমি খেয়ে দারিয়ে গেল সে । রাহুল চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে সামিয়ার দিকে । সামিয়াও তাকিয়ে আছে রাহুলের দিকে । কারেন্ট মতো সক খেয়ে গেল সামিয়া । সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিলো রাহুলের থেকে । ফর্শা চেহারায় খোচা খোচা চাপ দাড়ি রাহুলের । চুল গুলো ডানে সিঁথি করা । নেসাক্ত চোখ যেনো মোহ-মায়া । সামিয়া ডুবে যাচ্ছে গহিনে,,, খুব গহিনে । বুকের ভিতর হৃদপিণ্ড কেঁপে কেঁপে টিপ টিপ করছে । এ কেমন আক্রশন ? এমন ভাবেও বুঝি কাওকে নিজের প্রতি আক্রশণ করা যায় । সামিয়া তো এর আগে অনেক ছেলের উপর ক্রাশ খেয়েছে । কিন্তু কখনো তো এমন হয় নি । তবে আজ কেন এমন লাগছে সামিয়ার । ইকরা এক পর্যায় সামিয়াকে টেনে নিয়ে নীলার পাসে দারালো । সামিয়া নিজেকে সামলিয়ে নিলো । কিছু’টা ঘোড় থেকে বেরিয়ে আসলো সে । এরপর সামিয়া নীলার পাসে দারিয়ে নিজের ঘার ডলতে ডলতে নীলার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো ।
:+আপু ,,, এনারা কারা । আর বাহিরে এসব কি দেখলাম । আমার তো ভয়ে জান বেরিয়ে যাচ্ছিল । সবাই ভয়ে এদিক ওদিক ছুটা ছুটি করছে । ছেলে গুলার হাতে কতো বড় বড় ছুড়ি ।(সামিয়া)
সামিয়ার ভয়ান্তক চোখ মুখ দেখে নীলা গলা খাদে নামিয়ে আস্তে করে বললো ।
:+এনারা নিদ্রর বন্ধু । আর বাহিরে যাদের দেখেছো । ওরা সবাই ঢাকা কলেজের স্টুডেন্ট । ওদের হাতে অস্ত্র দেখে তো আমারই জান বেরিয়ে যাচ্ছিল । তোমাকে কি বলবো । সুধু এতো টুকু শুনে রাখো । চোখের সামনে যা হচ্ছে চুপ চাপ দেখে যাও । আগ বারিয়ে কিছু বলতে যেও না,,, তাহলে নিজেই বিপদে পরবে ।(নীলা)
নীলার কথা শুনে সামিয়া মাথা নারিয়ে সাই দিয়ে ঠিক হয়ে দারালো । ইকরা তো রিতিমতো ভয়ে কাপছে । নীলা যখন একা কথা বলে তখন নিদ্রর নাম ধরে বলে । আর যখন বড় কারো সাথে কথা বলে তখন নিদ্রকে,,,নিদ্র ভাইয়া বলে ডাকে । এটা তার অভ্বাস । এদিকে জেক আর সাব্বির নিদ্রকে ইচ্ছা মতো বকে যাচ্ছে । আর রাহুল চুপ করে ভদ্র ছেলের মতো কেবিনের ভিতরে থাকা চেয়ারে বসে আছে । পুরো হসপিটাল দখল করে রেখেছে অস্ত্র হাতে কলেজের ছাত্র’রা । হসপিটালের মালিকও ভয়ে নিজের কেবিন থেকে বের হচ্ছেন না । এদিকে নিরবকে খুজতে বেরিয়ে গেছে ২০/২৫ জন ছেলে ।
#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,
[।কপি করা নিষেধ।]
[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দিষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]