তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡 #DcD_দীপ্ত #পর্ব__________61

0
568

#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________61

সকাল ৬’টা বাজে…………..
আমেনা কিচেনে সকালের নাস্তা তৈরি করছেন । উনার মনে কি চলছে এক মাত্র উনি’ই যানেন । লিয়া ফোনে কথা বলতে বলতে কিচেনের দিকে আসলো ।

:+হ্যালো সুজন ।(লিয়া)

অপর পাস থেকে সুজন এক রাশ বিরক্ত নিয়ে, ঘুম জোরালো কন্ঠে বললো ।

:+হুম,,, বল । এতো সকালে কল করছিস কেন ? শান্তিতে ঘুমতেও দিবি না,,, না-কি ।(সুজন)

সুজনের কথা শুনে, লিয়া একটা ঝাড়ি মেরে বললো ।

:+ওই তোর ঘুম রাখ । কাল তোকে কি বলেছিলাম আমি । মনে নেই তোর । না-কি ওটা তুই নিতে চাস না ।(লিয়া)

লিয়ার ঝাড়ি আর কথা শুনে, মূহুর্তের মধ্যে সুজনের ঘুম হারাম হয়ে গেল । সে শোয়া থেকে উঠে বসে লিয়াকে বললো ।

:+আমি এখনি আসছি । কোথায় আসতে হবে বল ।(সুজন)

:+সোজা আমাদের বাসায় চলে আয় ।(লিয়া)

এই বলে লিয়া কল কেটে দিলো । সুজনকে আর কিছু বলতে দিলো না । কিচেনের মধ্যে প্রবেশ করে, আমেনাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো লিয়া । এরপর আমেনার কাধে চিবুক ঠেকিয়ে, কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো ।

:+কি করো শাশুড়ী মা ।(লিয়া)

আমেনা এতোখন এক মনে কাজ করছিলেন । কিন্তু এই প্রর্য্যায় তিনি থমথমি খেয়ে যান । তিনি জোর পূর্বক মুখে হাসি এনে বললেন ।

:+নাস্তা তৈরি করছি ।(আমেনা)

এই টুকু বলে আমেনা একটু থেকে আবার বললেন ।

:+এতো সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়লি যে ।(আমেনা)

:+আর বলো না । ওই বেটা সুজন আছে না । মানে আমার জামাইয়ের বন্ধু । ওরে আসতে বলছি । একটা কাজ আছে ।(লিয়া)

লিয়ার কথা শুনে, আমেনা লিয়াকে নিজে থেকে ছারিয়ে সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন ।

:+কি কাজ ।(আমেনা)

:+এখন কিছু বলবো না । আগে কাজ’টা কমপ্লিট করি,,,, তারপর বলবো । শুনে তুমি হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাবে ।(লিয়া)

এই বলে লিয়া হাসতে লাগলো । আমেনা আর কিছু বললো না । তিনি একটু হেসে, সামনের দিকে ঘুরে, নিজের কাজে মন দিলেন । কারন তিনি যানেন, লিয়া অনেক পাজি মেয়ে । নিশ্চয় কোনো শয়তানি বুদ্ধি ওর মাথায় নাড়া দিয়েছে । লিয়া আবার আমেনাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বললো ।

:+আমার জন্য একটু নাস্তা হবে গো শাশুড়ী মা । আমি একটু বাহিরে ঘুরতে যাবো তো । তাই এতো তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়ছি ।(লিয়া)

:+ওখান থেকে একটা প্লেট নিয়ে আয় । আমি খাবার দিচ্ছি ।(আমেনা)

হাতের ইশারায় কিছু প্লেট দেখিয়ে বললো আমেনা । লিয়া আমেনাকে ছেরে দিয়ে একটা প্লেট বেসিং এর মধ্যে ধুয়ে, আবার আমেনার কাছে আসলো । আমেনা ভাজি আর দু’টা রুটি দিলো । লিয়া কিচনের মধ্যে দারিয়ে দারিয়ে’ই খেতে লাগলো আর আমেনার সাথে ফটড় ফটড় করতে লাগলো ।

ঘুমের মধ্যে তৃপ্তি অনুভব করলো কেও তার কান ধরে টানছে । তাড়াতাড়ি চোখ খুলে,দু’হাত দিয়ে কানে থাকা হাত’টা ধরলো সে । এরপর শোয়া থেকে উঠে বসলো । সামনের দিকে তাকাতে’ই চিরো চেনা মুখ’টা দেখে বলে উঠলো ।

:+আহহ,,ভাইয়া কি করছো, বেথা পাচ্ছি তো । কান ছাড়ো ।(তৃপ্তি)

ঘুম ঘুম কন্ঠে, দু’হাত দিয়ে শক্ত করে নিদ্রর হাত ধরে বললো তৃপ্তি । নিদ্র তৃপ্তির কান ধরে’ই বেডের পাসে বসে বললো ।

:+সকালে আমার জন্য কফি বানিয়ে আনতে বলেছিলাম আমি । কাল ঘুমিয়ে ছিলি,,এজন্য মাপ করলাম । কিন্তু আজও অনিয়ম,,, এটা তো হয় না । তাড়াতাড়ি চট পট আমার জন্য কফি বানিয়ে নিয়ে আয় । আমি এখানে বসলাম ।(নিদ্র)

এই বলে তৃপ্তির কান ছেরে দিলো নিদ্র । তৃপ্তি নিজের কান ডলতে ডলতে চোখ গরম করে নিদ্রর দিকে তাকিয়ে আছে । একটু আদর করে ঘুম থেকে তুললে কি হতো । এভাবে আঘাত দিয়ে তোলার কি আছে । এমনি তেই তো মন’টা ভালো নেই । নিদ্র পকেট থেকে ফোন বের করে হাত নিয়ে বললো ।

:+এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই । তাড়াতাড়ি কিচেনে যা । কফি না খেয়ে আমি বাবা এখান থেকে যচ্ছি না ।(নিদ্র)

পা দু’টো বেডের উপর তুলে, গোল হয়ে বসে বললো নিদ্র । তৃপ্তি জোরে নিদ্রকে একটা ধাক্কা মেরে বেড থেকে নেমে দাড়ালো । এরপর বিরবির করতে করতে রুম থেকে বেরিয়ে গেল ।

:+একে তো তোকে পাবো না । তার উপর তোর টর্চার । ঊফফ,,, আমারে উঠা’ই নেও আল্লাহ । আমি আঘাত সয্য করতে পারবো না ।(তৃপ্তি)

এই বলে লম্বা লম্বা পা ফেলে সিরির কাছে আসলো তৃপ্তি । এরপর সিরির বেয়ে নিচে নেমে দেখলো, ফরহাদ নিউজ পড়ছে । তৃপ্তি কিচেনের দিকে পা বাড়িয়ে উঁচু গলায় ফরহাদকে বললো ।

:+গুড মর্নিং বড় আব্বু ।(তৃপ্তি)

ফরহার পেপার সামনে থেকে একটু সরিয়ে তিনিও বললেন ।

:+গুড মর্নিং মামুনি ।(ফরহাদ)

এই বলে তিনি আবার পেপারে মুখ গুজে দিলেন । তৃপ্তি কিচেনের সামনে এসে দারালো । আমেনার নাস্তা বানানো শেষ । তিনি এখন ফরহাদের জন্য প্লেটে নাস্তা নিচ্ছেন । তৃপ্তি সোজা কিচেনের মধ্যে প্রবেশ করে, পানি গরম করার জন্য বসালো । আমেনা চোখ গোল গোল করে তৃপ্তির দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+পানি গরম করছিস কেন ?(আমেনা)

:+কফি বানাবো ।(তৃপ্তি)

তৃপ্তির সোজা সাপ্টা জবাব । আমেনা একটু বিভ্রান্ত হয়ে তৃপ্তির দিকে তাকালো । ইদানীং মেয়ে’টার মধ্যে কিছু একটা পরিবর্তন লক্ষ করেছেন তিনি । আমেনা হাতে থাকা রুটি’টা প্লেটে রেখে, তৃপ্তির কাছে এসে দারালো । এরপর তৃপ্তির কাধে হাত রেখে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বললেন ।

:+ইদানীং কেমন যেন লাগছে তোকে । কি হয়েছে তোর ।(আমেনা)

:+আমার আবার কি হবে,, কিছু হয়’নি । তবে হলেও মন্দ হতো না ।(তৃপ্তি)

আমেনার সামনে থেকে সরে এসে, কফির গুড়োর বৈয়াম হাত নিয়ে বললো তৃপ্তি । আমেনা কিছু বলতে যাবে,,তার আগে’ই তৃপ্তি আবার বললো ।

:+বড় আব্বু মনে হয় নাস্তার জন্য বসে আছে । যাও নাস্তা দিয়ে আসো ।(তৃপ্তি)

:+তোকে আমি পড়ে দেখছি বাদর মেয়ে ।(আমেনা)

এই বলে আমেনা নাস্তার প্লেট হাতে নিয়ে কিচেন থেকে বেরিয়ে গেলেন । তৃপ্তি কফি বানিয়ে বিরবির করতে করতে আবার নিজের রুমে আসলো । নিদ্র বেডের উপর শুয়ে ফোন চাপছে । তৃপ্তি বেডের পাসের ছোট টেবিল কফির কাপ রেখে, ওয়াসরুমের দিকে যেতে যেতে নিদ্রকে উদ্দেশ্য করে বললো ।

:+কফি খেয়ে তাড়াতাড়ি নিচে যাও । বড় আম্মু নাস্তা খেতে ডাকছে ।(তৃপ্তি)

নিজের চুল গুলো হাত দিয়ে মুচড়ে খোপা করে ওয়াসরুমের দরজা ঠাস করে লাগিয়ে দিলো তৃপ্তি । নিদ্র সুধু তাকিয়ে ছিল তৃপ্তির দিকে । তৃপ্তির এমন ব্যবহার নিদ্র হজম করতে পারছে না । এই মেয়ে বড়দের মতো কথা বলতে কবে শিখলো । রহস্য লাগছে নিদ্রর কাছে । ফোন পকেটে পুরে কফির কাপ হাতে নিয়ে তৃপ্তির রুম থেকে বেরিয়ে আসলো নিদ্র ।

:+দেখ, আমি এখন ওর পাসে চুপ করে শুয়ে পড়বো । তুই ক্লিক ক্লিক করে ফটো তুলে নিবি ।(লিয়া)

সাব্বিরের বেড রুমের দরজার সামনে দারিয়ে লিয়া ফিস ফিস করে সুজনকে বললো । সুজন শুকনো ঢোক গিলে মাথা নারালো । লিয়া ধির পায়ে সাব্বিরের বেডের পাসে এসে দারালো । এরপর আস্তে করে বেডের উপর উঠে, সাব্বিরের পাসে শুয়ে পড়লো । সুজন তাড়াতাড়ি সাব্বিরের মাথার পাস থেকে, সাব্বিরের ফোন নিয়ে নিলো । এরপর খুব সাবধানতার সাথে সাব্বিরের ফিঙ্গার ফিন দিয়ে ফোনের লক খুলে নিলো । বেচারা সাব্বির অঘড় ঘুমে তলিয়ে আছে । সুজন কয়েক’টা পিক তুলে নিলো । লিয়া বিভিন্ন স্টাইলে পিক তুলালো । এরপর সুজন, ইকরার নাম্বারে হোয়াটসঅ্যাপে সব ফটো সেন্ড করে দিলো । অতপর বেচারা সাব্বিরের বাসা থেকে বেরিয়ে আসলো লিয়া আর সুজন ।

:+লিয়া,, বেচারা সাব্বিরের কপাল পুড়লো এবারো ।(সুজন)

সুজনের কথা শুনে, লিয়া হা হা করে হেসে উঠলো । এরপর রাহুলের বাসার দিকে রওনা দিলো লিয়া আর সুজন । ফোনের আওয়াজ জোরে জোরে বাজতে লাগলো সাবিরের কানের পাসে । কারন সুজন ফোন’টা সাব্বিরের কানের পাসে রেখে গেছে । সাব্বির ঘুম ঘুম চোখে ফোন হাতে নিয়ে কল রিসিপ করলো । কানে ফোন লাগাতে’ই ইকরার কান্না ভেজা কথা ভেসে এলো ।

:+ইউ,,, চিটার । তোকে বিশ্বাস করে ভুল করেছি আমি । আমার আগে’ই ভাবা উচিত ছিল । তোদের মতো লম্পট ছেলে’রা কখনো মেয়ের মন বুঝে না । যাকে’ই বেটার দেখে তার পিছনে’ই লেগে পড়ে । ভালো থাকিস তুই,, তোর লাঙি*নি নিয়ে । এই ইকরা তোকে আর ডিস্টার্ব করবে না । বায় । সালা লুচ্চা । ব্রেকআপ তোর সাথে ।(ইকরা)

কান্না করতে করতে কথা গুলো বলে কল কেটে দিলো ইকরা । সাব্বির চট করে শোয়া থেকে উঠে বসে পড়লো । ইকরার কথা গুলো তার এ’কান দিয়ে ভিতরে গেছে । অন্য’কান দিয়ে বেরিয়ে গেছে । হোয়াটসঅ্যাপে টুং শব্দ হতে । হোয়াটসঅ্যাপে প্রবেশ করলে সাব্বির । কয়েক’টা ফটো দেখে সাব্বিরের মাথা ঘুরে গেল । ইকরার কথা গুলো এবার বুঝতে পারছে সাব্বির ।

:+লিয়ার আররররর বাচ্চচচচচচচচচচা ।(সাব্বির)

রুমের দরজার দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে উঠলো সাব্বির ।

:+বাহহহহ,,,সুজন । রাহুলের ঘুমানোর স্টাইল তো সেই । এই বেটা বৌ সামলাবে কি করে ভাই । এক রাতে’ই তো এর বৌ, একে ডিভোর্স দিয়ে দেবে । যাগগে সে কথা । এখন তুই ফটো তোল ।(লিয়া)

কথা গুলো বলে, রাহুলের বেডের উপর উঠে শুয়ে পড়লো লিয়া । এরপর রাহুলের বুকের উপর আলতো করে মাথা রাখলো । সুজন রাহুলের ফোন খুজতে লাগলো । কিন্তু ফোন পাচ্ছে না । লিয়া বিরক্ত হয়ে ফিস ফিস করে সুজনকে বললো ।

:+কিরে, ফোন পেলি ।(লিয়া)

:+আরে দেখতে’ছি তো । পাচ্ছি না ।(সুজন)

সুজনও ফিসফিস করে বললো ।

:+ওই টেবিলের উপর দেখ ।(লিয়া)

হাতের ইশারায় একটা টেবিল দেখিয়ে বললো লিয়া । সুজন টেবিলের পাসে যেতে’ই দেখতে পেলো ফোন । ফোন’টা হাতে নিয়ে বেডের পাসে এসে দারালো । এরপর রাহুলের ফিঙ্গার ফিন নিয়ে লক খুলে ফটো তুলে নিলো । লিয়া রাহুলের পাস থেকে উঠে সুজনের কাছে এসে দারালো । সুজন ইমুতে সামিয়ার নাম্বারে ফটো গুলো সেন্ড করে দিলো । এরপর ফোনের সাউন্ড বারিয়ে দিয়ে রাহুলের কানের কাছে ফোন রেখে দিলো । যাতে কেও কল দিলে’ই জোরে আওয়াজে রাহুলের ঘুম ভেঙে যায় । রাহুলের বাসা থেকে বেরিয়ে বাইকের উপর উঠে বসলো সুজন, লিয়া বাইকের পিছনে বসতে’ই বাই স্টাড দিয়ে চালাতে সুরু করলো সুজন ।

:+যানিস লিয়া । রাহুলের গালফ্রেন্ড গ্রামের মেয়ে ।(সুজন)

বাইক চালাতে চালাচে বললো সুজন । লিয়া পিছন থেকে বলে উঠলো ।

:+তাহলে তো আরো ভালো । গ্রামের মেয়েরা ইনোসেন্ট হয় খুব । এরা ইমোশনাল বেশি দেখায় ।(লিয়া)

লিয়া কিছু’টা হেসে বললো । সুজন আবার বলে উঠলো ।

:+রাহুলের কপাল পড়লো ভাই ।(সুজন)

:+তাই,,।(লিয়া)

:+হুমমম,,,।(সুজন)

:+আচ্ছা,, এখন তুই তাড়াতাড়ি বাই চালা । জেকের বাসায় যেতে হবে । ওই সালা ঘুম থেকে যেগে গেলে কিছু করতে পারবো না । এমনিতে’ই সালাকে দেখলে আমার ভয় লাগে । লম্বা লম্বা দাড়ি,,। লাল লাল চোখ । ধুর,, ভেবে’ই ভয় করছে । তুই তাড়াতাড়ি বাইক চালা । আমি বেশি ভয় পেয়ে যাওয়ার আগে ।(লিয়া)

সুজনের কাধে হাত দিয়ে একটু নাড়া দিলো বললো লিয়া ।

:+ওকে,,,।(সুজন)

এই বলে একটু হেসে সুজন বাইকের স্পিড বারিয়ে দিলো । “তোর মন পাড়ায় থাকতে দে আমায়” । গান’টা জোরে জোরে বাজতে লাগলো রাহুলের কানের কাছে । রাহুল বিরক্তিতে চোখ মুখ কুচকে ফোন হাতে নিলো । ফোন না দেখে’ই রিসিভ করে কানে ধরলো ।

:+আমি বলেছিলাম তুমি আমাকে ভুলে যাবে । কিন্তু তুমি বলেছিলে আমাকে ভুলবে না । কিন্তু এখন এটা কি করলে তুমি । যেই আমার থেকে বেশি সুন্দরীর দেখা পেলে । ওমনি আমাকে ভুলে গেলে । কি দোষ করেছি আমি রাহুল । কেন আমাকে এভাবে ঠকালে । অনেক সপ্ন দেখেছি আমি তোমাকে নিয়ে । আজ আমার সব সপ্ন তুমি ভেঙে চুড় মাড় করে দিলে । যাগগে,,,। কাল রাত অনেক মজার সাথে কাটিয়েছো তাই না । ভালো থেকো তুমি । এই সামিয়া নাহয়,, না পাওয়া কিছু নিয়ে থাকলো । আর কোনো দিন আমাকে ফোন দিবে না তুমি । আমি কোনো পতারকের সাথে কথা বলতে চাই না । ভালো থেকো তোমার সুন্দরীকে নিয়ে ।(সামিয়া)

কান্না করতে করতে কথা গুলো বলে কল কেটে দিলো সামিয়া । রাহুল চট করে শোয়া থেকে উঠে বসলো । চোখ দু’টো ঢলে ফোনের ইমুতে গেল সে । ফটো গুলো দেখে মাথা হাত দিয়ে ফেললো ।

:+লিয়ার আররররর বাচ্চচচচচচচচচচচা ।(রাহুল)

দাতে দাত চেপে চিৎকার করে উঠলো রাহুল ।

বাসার কলিং বেলের আওয়াজ পেয়ে জেকের আম্মু রিনা বেগম দরজা খুলে দিলেন । সুজন আর লিয়াকে দেখে তিনি হেসে বলে উঠলেন ।

:+আরে সুজন,লিয়া কেমন আছো তোমরা । অনেক দিন পড় দেখা হলো । এসো এসো ভিতরে এসো ।(রিনা)

দরজার পাস থেকে সরে গিয়ে বললেন রিনা বেগম । লিয়া বাসার ভিতরে প্রবেশ করতে করতে বললো ।

:+আমি ভালো আছি আন্টি । বাট সুজনের’টা যানি না । আপনি কেমন আছেন ।(লিয়া)

:+তোমার এখনো দুষ্টুমি কমেনি লিয়া ।(রানি)

রিনা বেগম একটু হেসে বলেন । লিয়া মাথা চুলকে বললো ।

:+এটা আমার জন্মগত রোগ আন্টি । এটা কি ছেড়ে দেওয়া যায় । এখন বলুন সকালের কি নাস্তা বানিয়েছেন । আপনার হাতে রান্না খাবো বলে,, সেই লন্ডন থেকে ছুটে এসছি ।(লিয়া)

:+হয়েছে আর পাম দিতে হবে না । আমি ভালো করেই যানি তুমি কেমন । এর আগের বার কতো করে বললাম,, লিয়া একটা দিন থেকে যাও আমাদের বাসায় । কৈ,, তখন তো আমার কথা শুনলে না ।(রিনা)

রিনা বেগমের কথা শুনে, লিয়া শুকনো হাসি দিয়ে বললো ।

:+এবার থেকে যাবো আন্টি ।(লিয়া)

:+আরে ভাই,,আমি যে এখানে দারিয়ে আছি । আমাকেও দুই একটা কথা বলার সুযোগ দে ।(সুজন)

সুজনের কথা শুনে, লিয়া মুখ বাকিয়ে বললো ।

:+তোরে কে ধরে রাখছে । কথা বলতে হলে বলবি । তোর’ই তো বোনের শা,,,,,,।(লিয়া)

লিয়া পুরো কথা শেষ করতে পাড়লো না । সুজন চোখ গরম করে তাকালো । রিনা বেগম থমথমি খেয়ে লিয়ার দিকে প্রশ্ন বোধক দৃষ্টিতে তাকালো । লিয়া ঢোক গিলে ফোকলা হেসে বললো ।

:+আরে এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছিস কেন সুজন । আমি যাস্ট ফান করছিলাম । আচ্ছা আন্টি জেক কোথায়, ওর সাথে একটু দেখা করে আসি ।(লিয়া)

রিনা বেগম জোরে নিশ্বাস ছেরে হাতের ইশারা করে বললেন ।

:+ওটা ওর রুম । এখনো জেক ঘুমচ্ছে । আচ্ছা তোমার ওকে যাগিয়ে দাও । আমি তোমাদের জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করছি ।(রিনা)

রিনা বেগম কথা শুনে, সুজন বললো ।

:+আংকেল কোথায় আন্টি ।(সুজন)

:+তোমাদের আংকেল কাজের জন্য দেশের বাহিরে গেছেন ।(রিনা)

:+আচ্ছা আন্টি আমরা জেকের রুমে যাচ্ছি । আপনি আমার জন্য দু’টো পড়টা ভাজিয়েন ।(লিয়া)

লিয়া এই বলে সুজনের হাত ধরে টেনে জেকের রুমে নিয়ে আসলো । রিনা বেগম হেসে উঠে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলেন । জেকের রুমে এসে সুজন আর লিয়া দেখলো,, জেক পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে । এক পা বেডের পাসে ঝুলে আছে । আরেক পা বেডের উপরে । গায়ের কম্বল এলো মেলো হয়ে পড়ে আছে জেকের গায়ের উপরে । লিয়া শুকনো ঢোক গিলে সুজনকে বললো ।

:+তোর বোন কি দেখে একে পছন্দ করছে’রে । একে মানুষ বলা ভুল হবে ভাই । পশুরাও কতো সুন্দর করে গুটি শুটি মেরে শোয় । আর একে দেখ । সাব্বির আর রাহুল তবুও মোটা মুটি ঠিক আছে । এই সালা তো একে বাড়ে যঘন্ন । তোর বোন সারাজীবন কি করে কাটাবে এই উটকো বাদরের সাথে । আমি তো এক সেকেন্ডও থাকতে পারবো না ।(লিয়া)

লিয়ার কথা শুনে, সুজন চোখ গরম করে তাকিয়ে বললো ।

:+দেখ লিয়া উল্টা পল্টা কথা বলবি না । একে আমি বোনকে কষ্ট দিতে যাচ্ছি । সুধু তোর জন্য । আবার তুই উল্ট পল্টা কথা বলছিস ।(সুজন)

:+আমার জন্য না । তুই যেটা আমার থেকে চাইবি সেটার জন্য ।(লিয়া)

লিয়া মাজায় হাত দিয়ে জেকের দিকে তাকিয়ে বললো । সুজন রহস্যর হাসি দিয়ে বিরবির করে বললো ।

:+হুমম,,সময় হলে বুঝবি । আমি কি চাইবো তোর কাছে ।(সুজন)

:+ওই কি বিরবির করছিস । আগে কাজ শেষ কর । তারপর যত কথা । এখন ফোনের লক খোল আগে ।(লিয়া)

জেকের মাথার পাস থেকে ফোন হাত নিয়ে, সুজনের দিকে বারিয়ে বললো লিয়া । সুজন ভ্রুকুঞ্চন করে লিয়ার হাত থেকে ফোন নিলো । এরপর জেকের হাতের ফিঙ্গার ফিন ট্রাই করলো । কিন্তু হলো না ।

:+ওই লিয়া হচ্ছে না । ফোনের লক খুলছে না ।(সুজন)

সুজনের কথা শুনে, লিয়া ভাবনার মাঝে পড়ে গেল । কিছুখন এদিক ওদিক হেটে লিয়া বললো ।

:+পায়ের ফিঙ্গার ফিন দিয়ে চেষ্টা কর ।(লিয়া)

ওই বলে লিয়া দাত দিয়ে হাতের নখ কাটতে লাগলো । সুজন লিয়ার কথা মতো চেষ্টা করলো । বাহ সফলও হলো । লিয়া খুশিতে লাফিয়ে উঠে বললো ।

:+দেখলি আমার বুদ্ধি । জেক বাবাজির বুদ্ধির থেকে কম নাকি আমার বুদ্ধি । নে এবার ফটো তোল ।(লিয়া)

এই বলে লিয়া সাবধানে বেডের উপর উঠে জেকের পাসে শুয়ে পড়লো । সুজন ক্লিক ক্লিক করে ফটো তুলে হোয়াটসঅ্যাপে তার বোনের নাম্বারে পাঠিয়ে দিলো । এরপর লিয়া সহ জেকের রুম থেকে বেরিয়ে আসলো । ডাইনিং টেবিলে বসে লিয়া সুজনকে বললো ।

:+তোর কি মনে হয় । তোর বোন এখন ঘুম থেকে উঠে গেছে ।(লিয়া)

:+কেন তোর কি ভয় হচ্ছে । আরে ভয় পাস না । আমার বোন ঘুম থেকে? আরো এক ঘন্টা পড় উঠবে । ততখনে আমরা নাস্তা শেষ করে এখানে থেকে হাওয়া হয়ে যাবো । তোর ভয় নেই ।(সুজন)

লিয়ার কথা শুনে, হেসে উঠে বললো সুজন । লিয়া হাতের আঙুল গুলো এলোমেলো ভাবে ডাইনিং টেবিলে উপড় নাড়িয়ে,,জেকের রুমের দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+বাঘের গুহায় বসে আছি ভাই । আর তুই বলছিস ভয় পাবো না । কাজও তো থাবা খাওয়ার মতো করেছি তাই না । একবার বাঘ ঘুম থেকে যেগে উঠলে । থাবা নিশ্চয় মারবে ।(লিয়া)

লিয়ার কথা শুনে, সুজন হেসে উঠলো । রিনা বেগম এসে নাস্তা দিয়ে গেল সুজন আর লিয়াকে । নাস্তা শেষ করে রিনা বেগমের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে জেকের বাসা থেকে বেরিয়ে আসলো লিয়া আর সুজন । বাসা থেকে বেরিয়ে লিয়া সুস্থির নিশ্বাস ছেরে সুজনের দিকে তাকিয়ে, কেবলা হাসি দিয়ে বললো ।

:+বাচলাম ভাই,,,। এবার রাশেদের পালা । চল রাশেদের বাসায় ।(লিয়া)

লিয়ার কথা শুনে, সুজন বললো ।

:+লাভ নেই । ওই সালাও আমার মতো সিঙ্গেল । তবে এখানে একজনে জন্য আসছে ও । মূলত ওর জন্য আমাদের এখন দেশে আসা । নাহলে আরো কয়েক দিন পড় আসতাম ।(সুজন)

:+তাহলে এখানে দারিয়ে থেকে লাভ নেই । বাঘের গুহার সামনে দারিয়ে থেকে কি লাভ । চল পালাই এবার ।(লিয়া)

সুজনকে টেনে বাইকের উপর বসতে বললো লিয়া । সুজন বাইকের উপর বসতে’ই লিয়াও পিছনে উঠে বসলো । অতপর পালানের পালা । ফোন বেজে চলেছে তো চলছে’ই । কিন্তু জেকের কোনো হুস নেই । রিনা বেগম বকতে বকতে জেকের রুমে আসলেন । এরপর দুই / তিন’টা চড় মেরে জেককে ঘুম থেকে তুলে ফোন ধরতে বললেন । জেক সকাল সকাল রিনা বেগমের এমন রিয়েক্ট হজম করে ফোন রিসিভ করে কানে ধরলো ।

:+ওই ছেঁড়ার বাচ্চা । আমি কোন দিক দিয়ে দেখতে খারাপ ছিলাম’রে । যে আমার সাথে এমন করলি তুই । কি ভুল করেছি আমি । যার জন্য এমন করলি আমার সাথে । খুন করবো তোকে আমি । ছারবো আমি কাওকে । তোর রক্ত চুষে খেয়ে তবে’ই আমি মড়বো । বাচতে দেবনা তোকে । আমি আসছি বাংলাদেশে । তুই মড়ার জন্য তৈরি থাক ছেঁড়া । আর তোর সাথে যেই ডাইনি আছে । ওকে বলে দিস? আমি আসছি ওকে বিধবা করতে । কামড়ে ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করে দেবো তোর । আমি আসছি ।(সাথি)

কান্না করতে করতে, রাগে থর থর করে কাপতে কাপতে, কথা গুলো বলে কল কেটে দিলো সাথি । জেক হাবলার মতো বসে রইলো । কিছু’ই বুঝতে পারলো না সে । কিছুখন পর হোয়াটসঅ্যাপে টুং আওয়াজ হলো । জেক হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকে মাতায় হাত দিয়ে ফেললো । মূহুর্তের মধ্যে সব ঘুম হারাম হয়ে গেল জেকের । তাড়াতাড়ি বেড থেকে নেমে রিনা বেগমের কাছে এসে জেক জিজ্ঞেস করলো ।

:+MOM……লিয়া কি এখানে আসছিল ।(জেক)

রিনা বেগম নিজের কাজে মন রেখেই বললেন ।

:+হুম আসছিল । এসে নাস্তাও করে গেছে । তুই তো পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিলি ।(রিনা)

রিনা বেগমের কথা শুনে, জেক চিৎকার করে বলে উঠলো ।

:+তুমি ওকে বাসার মধ্যে ঢুকতে দিলে কেন MOM….। এখন আমার কি হবে । এবার আমার আর রেহাই নেই । সিঙ্গেল লাফ আমার মাডার হলো’রে । আর শান্তিতে বাচতে পাড়বো না । লিয়ার আরররর বাচ্চচচচচচচচচা ।(জেক)

এই বলে হন হনিয়ে আবার নিজের রুমে চলে আসলো জেক । রিনা বেগম কেপে উঠে চুপসে গেলেন ।

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,

[।কপি করা নিশেদ।]

[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here