স্বপ্নের প্রেয়সী 💖 Part – 28

0
68

💖 স্বপ্নের প্রেয়সী 💖
Part – 28
___________________________

বাসা থেকে বের হয়ে নিচে চলে আসলাম।
ফারহান ভাইয়া দের নিচে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করার কথা।
নিচে চলে যাওয়ার সময় বাগান থেকে কয়েকটা কাঠগোলাপ নিয়ে নিলাম।
কাঠগোলাপ আমার কাছে বেশ ভালো লাগে।
বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেই পেছন থেকে রিফাত ভাইয়া ডাক দিলেন।
রিফাত ভাইয়া কে দেখে মনিকা আপু রেগে গেলেন।
দুজনের মান অভিমান হয়ে ছে কি না।

রিফাত ভাইয়া মনিকা আপুর হাত ধরে আটকে দিলেন।
আমি একটা মেকি হাসি দিয়ে চলে আসলাম।
বাইরে বেরোনোর সময় একটু পেছনে তাকাতেই সামনে কারো সাথে ধাক্কা খেলাম।
সেই পারফিউম, আহা নাকে প্রবেশ করতেই অদ্ভুত শান্তি অনুভব করলাম।
বুঝতে পারলাম এটা ফারহান ভাইয়া।
ওনাকে ছেড়ে একটু দূরে সরে আসলাম।
ফারহান ভাইয়া গাড়িতে পিঠ ঠেকিয়ে দাড়িয়ে আছেন তা ও আবার আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।
ফারহান ভাইয়ার দিকে তাকাতে লজ্জা লাগছিল।
নিজের অপ্রস্তুত বোধ কাটিয়ে মাথা উঁচু করে তাকালাম।
কিছুক্ষণের জন্য চোখ জোড়া স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল।
সাদা শার্টের উপর কালো কোর্ট , কালো পেন্ট আর কালো সু।
একটা সাদা কালো ফ্রেম এর সানগ্লাস ।
চুল গুলো জেল দিয়ে সেট করা।
হাতে টাইটানিক এর ওয়াচ।
উফফফ যা লাগছে না।
পুরো ক্রাশ, কিন্তু আমি ক্রাশ খেলাম না।
নিজের চোখ জোড়া কে সংযত রেখে নিচের দিকে তাকালাম।
কিছুক্ষণ পর ফারহান ভাইয়া গাড়ি থেকে সরে এসে একদম আমার কাছে এসে দাড়ালেন।
কিছুক্ষণ আমাকে মাথা থেকে পা অব্দি স্ক্যান করলেন।

তারপর আমার কাছে এসে মুখে ফু দিলেন।
আর সেই আবেশে চোখ জোড়া আপনাআপনি বন্ধ হয়ে গেল।
কিছুক্ষণ পর ফারহান ভাইয়া উচ্চ শব্দে হেসে উঠলেন।
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে হা হয়ে আছি।
ওনি কখনো উচ্চ শব্দে হাসেন না।
ওনার দিকে চোখ যেন অবাদ্ধ হয়ে গেছে আবার লজ্জা ও লাগছে।
এতো স্নিগ্ধ তার হাসি , না চাইতে ও চোখ জোড়া আটকে যাচ্ছে।
মনে হচ্ছে সময় টা থমকে যাক।
আর আমি এভাবেই তাকিয়ে থাকি।
কিছুক্ষণ পর ফারহান ভাইয়া হাসি থামিয়ে আমার সামনে হাত দিয়ে তুরি বাজালেন।
আর আমি চমকে গিয়ে লজ্জা পেলাম।
ফারহান ভাইয়া মুচকি হেসে বললেন
– পিচ্ছি টা।
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না।
____________________

📌. পিন দেওয়া লাইন গুলো অবশ্যই পড়ে নিবেন ।

কিছুক্ষণ পর রিফাত ভাইয়া আর মনিকা আপু আসলো।
দেখেই বুঝলাম সমস্ত মান অভিমান কাটিয়ে নিয়েছে।
দুজন কে দেখে মুখ চেপে হাসছি আমি।
হঠাৎ রিফাত ভাইয়া আমাকে হালকা করে গাট্টা মেরে বলল
– হাসছিস কেন।

আমি ব্রু কুঁচকে বললাম
– ইসসস । দুজোন প্রেম করছে, আর আমি হাসলে
ই দোষ।

ফারহান ভাইয়া ও আমার কথায় সায় দিলেন।
কিন্তু পরক্ষণেই কথা পুরো পাল্টে দিলেন।
ফারহান ভাইয়া মাথার চুল গুলো ঠিক করতে করতে বললেন
– হুমম তাই তো , তোরা প্রেম করবি।আর ফারাবি হাসলেই দোষ।
দিস ইজ নট ফেয়ার।

আমি উজ্জ্বল চোখ নিয়ে বললাম
– এক্সাকলি ।
বলুন ,বলুন ওদের।

রিফাত ভাইয়া অবাক হয়ে আছে ।

ফারহান ভাইয়া রিফাত ভাইয়া কে ধরে বলল
– তাই তো ।
এতে ফারাবির কি দোষ।
আরে ওর ও তো প্রেম করতে ইচ্ছে করছে ।
রিফাত ভাইয়া আর মনিকা আপু হাসতে হাসতে গাড়িতে উঠে গেলো।

আমি ওনার কথা শুনে হা হয়ে গেলাম।
চোখ মুখ কুঁচকে বললাম
– আমি কখন বললাম।

ফারহান ভাইয়া মৃদু হেসে আমার কাছে মুখ নিয়ে বললেন
– তুই চাইলে ও পারবি না।
তোর লাইফ এর প্রেম , রিলেশন , ঘোরাঘুরি সব বন্দি।

আমি ওনার দিকে সন্দিহান চোখে তাকালাম।

উনি হালকা হেসে বললেন
– বড্ড বেশি পিচ্ছি তুই।
সময় হোক, আগে বড় হো তারপর সব বুঝিয়ে দিবো।

আমি ওনার কথার মাথা মন্ডু মিলাতে পারলাম না।
কিছু বোঝার আগেই ওনি আমার হাত ধরে নিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে দিলেন।

রিফাত ভাইয়া আর মনিকা আপু পেছনে বসেছেন।
তাই আমাকে ফ্রন্ট সিটেই বসতে হলো।

ফারহান ভাইয়া ড্রাইভিং করবেন।
উনি ড্রাইভিং সিটে বসে আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলেন তারপর বললেন
– সিট বেল্ট টা ও বেঁধে দিতে হবে।
উফফফ

পেছন থেকে মনিকা আপু আর রিফাত ভাইয়া ফোরন কেটে বলল
– আরে ও তো বাচ্চা।
ওকে বড় করতে হবে তোকেই।
একমাত্র তোকেই তো ভয় পায়, আর আমাদের সাথে শুধু লেগে থাকে।
দেখ ভাই এই বাচ্চা কে মানুষ করতে পারিস কি না।
না হলে একে বিয়ে দিতে গিয়ে ও হিমসিম খেতে হবে।

এই বলেই দুজোন হাসতে লাগলেন।
আর ফারহান ভাইয়া মৃদু হাসলেন।
তারপর আমার সিট বেল্ট বেধে দিলেন।
আর আমি ওদের দুজোন এর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছি।
দুজোন আমাকে এভাবে তাকাতে দেখে ইনোসেন্ট ফেস এ তাকালো।
আমি ওদের ভেংচি কেটে সামনের দিকে নজর দিলাম।
ফারহান ভাইয়া গাড়ি চালাতে থাকলেন।
গাড়ি ও চলল আপন মনে।
শীতের মাজে ও হালকা ফুরফুরে বাতাস বেশ ভালো লাগছে।
রাতের পৃথিবী দেখতে কিন্তু বেশ সুন্দর।
মনের ভেতর অজানা সব অনুভূতি হচ্ছে।
কিছুর অভাব তো বোধ করছি।
কিন্তু সেটি কি ?
এইসব প্রশ্ন আওরাতে থাকলাম কিন্তু কোনো উত্তর পেলাম না।

বেশ কিছুক্ষণ যাওয়ার পর ফারহান ভাইয়া গাড়ি থামালেন এক বিশাল লেকের পাশে ।
অসম্ভব সুন্দর লেক টা , রাত বা দিন যেকোনো সময়ে ঘোরার জন্য একদম পারফেক্ট।
লেকটার চারপাশ ঘিরে গাছ লাগানো।
কিছুদূর পর পর বিভিন্ন ফুড কোড ও আছে।
খানিকটা হাতির ঝিল এর মতোই , অসাধারণ।
চারপাশে হালকা লাইটিং করা।
যাতে চলতে তেমন কোনো সমস্যা না হয় ।
গাড়ি থেকে নেমেই আমি খুশি তে গদগদ হয়ে গেলাম।
ইসসস এখন যদি শীত কাল না হতো , তাহলে আমি এই লেকের পারে বসে পা ভেজাতাম।
রিফাত ভাইয়া পাশেই একটা ফুড কোড এ যাওয়ার কথা বললেন।
ঐ ফুড কোডের ফুচকা নাকি এখানকার বেস্ট ফুচকা।

এখানে পার প্লেটে মোট 5 টা ফুচকা দেওয়া হবে।
তবে 5 রকমের , যার স্বাদ নাকি অসাধারণ।
আর ফুচকার সাইজ ছোট ফুচকার চার ডাবল।

ফুড কোড টা অনেক বড় না।
মোটামুটি 20 – 25 জন একসাথে বসে খেতে পারবে।

আমরা একটা টেবিলে বসে ফুচকা অর্ডার করলাম।
5 মিনিটের মাথায় ফুচকা চলে আসলো।
ফুচকা গুলো দেখতেই খুব লোভনীয় লাগছে।
এখানে দই ফুচকা , ডাল ফুচকা , বিফ ফুচকা , চুরমুর ফুচকা আর পানি ফুচকা ( পানি পুরি )
আছে।
আমি এর আগে ও এই সব ফুচকা খেয়েছি কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন করে ।
ফুচকা মুখে দিতেই বুঝলাম এটা অসাধারণ।
এই রকম কোথাও খাই নি।
সবার আগেই সব গুলো ফুচকা টপাটপ খেয়ে নিলাম।
সবাই নিজের খাওয়া ছেড়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি ফুচকা মুখে দিয়ে ব্রু কুচকালাম।আর সবাই হাহা করে হেসে দিলো।
আমি পাত্তা না দিয়ে ফুচকা খেতে লাগলাম।
আর ও এক প্লেট খেতে চাইলাম।
কিন্তু ফারহান কুমার বারন করে দিলেন।
প্রথমত আর ও অনেক খাবার খেতে হবে আর ফুচকা বেশি খেলে পেট খারাপ হওয়ার চান্স থাকবে।
তাই আমি ও আর কিছু বললাম না।
খাওয়ার মাঝে সবার কতগুলো ছবি ও তুলে নিলাম।
ফারহান ভাইয়া বিল পে করে আমাদের নিয়ে ফুড কোড থেকে বেরিয়ে পরলেন।
______________________

📌. আজকের পার্ট ছোট হয়েছে কি না এটা নিয়ে অভিযোগ করবেন না প্লিজ।
কাল সন্ধ্যা তে এই টুকু লিখেছিলাম রাতে লেখা হয় নি আর। এর কারন 1-27 পার্ট অব্দি অনেক কমেন্ট পড়া হয় নি আমার।
তাই কাল রাত জেগে সমস্ত কমেন্ট পড়ার চেষ্টা করেছি আর উত্তর ও দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আমার কিছু রিডার্স এর বেশ কিছু কনফিউশন পেয়েছি আমি।
আমি আমার সাধ্য মতো কমেন্ট এ বুঝিয়ে দিয়েছি।
তবু ও আমি আমার রিডার্স এর সুবিধার জন্য কনফিউশন গুলো আবার ক্লিয়ার করে দিচ্ছি।
আমি জানি না সেই সব কনফিউশন এর জন্য তারা আমার গল্পের এই পার্ট অব্দি পড়বেন কি না।
হয়তো কনফিউশন এর জন্য গল্প টাই অনেক এর কাছে ভালো লাগে নি।
যাই হোক যদি কেউ আসে এই পর্যন্ত তাই আমি আমার দায়িত্ব বোধ থেকে লিখছি।

📌.

গল্পের শুরু তেই ফারাবি দশম শ্রেণীতে পড়ে তাহলে আবার 7 & 8 ক্লাস আসলো কী করে ?

– ফারাবি বর্তমানে দশম শ্রেণীতেই পড়ে । কিন্তু সে একটা সময় তো সপ্তম আর অষ্টম শ্রেণীতে পড়েছে তাই না।
আমি বলেছি ফারাবি মাঝে মাঝে তার অতীতের স্মৃতি তে ডুবে যায়।
যখন সে সপ্তম আর অষ্টম শ্রেণীতে পড়তো।
আমি ক্লিয়ার করেই লিখেছি যে স্মৃতি তে ডুবে ছিল বা কারো ডাকে ধ্যান ভাঙ্গলো।
আশা করি এই কনফিউশন টা এখন আর কারো থাকবে না।
যদি ও থাকে তো ইনবক্স এ আসবেন আমি আমার সাধ্য মতো বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশআল্লাহ ।

📌.

ফারহান কি সবসময় ফারাবি দের বাসাতেই থাকে নাকি, ওর কি নিজের বাসা নেই?

– আমি গল্পের পার্ট এ লিখে দিয়েছিলাম ও ওর মামা বাড়িতে থাকে । কিন্তু কয়েক মাস আগে ওর আন্টির বাসাতে চলে এসেছে।
ওর মামা আর আন্টির বাসা সিলেট এই।
আর ফারাবি , ফারহান ওদের পৈত্তিক বাড়ি ঢাকাতেই।
সিলেট এ ফারাবি র আব্বুর বিশেষ ট্রান্সফারের কারনে চলে এসেছে।
আর ফারহান ও চলে এসেছে , কারন সে তার প্রেয়সী কে ছাড়া থাকতে পারে না।
এই লাইন টা আমার গল্পের শেষে দিতাম।কিন্তু কনফিউশন এর জন্য এই লাইন টা বলতে হলো ।
আশা করি কোনো কনফিউশন নেই, থাকলে অবশ্যই ইনবক্স এ বলবেন।
কারন কমেন্ট যদি গল্প দেওয়ার এক দিনের মধ্যে হয় তো আমি রিপলে দিতে পারি ।
বেশি দিন হয়ে গেলে সম্ভব হয় না। যার কারনে আমার পাঠকদের মনে হতে পারে লেখিকার গল্পে খামতি আছে তাই দেখে ও রিপলে দেয় না।

📌.

ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এক জায়গায় কেন আছে ?

– আমি বলে দিচ্ছি এই গল্পে কেউ সংসার পাবেন না।
এই প্রেম কাহিনী টা হলো এমন যে একজন ভালোবাসি কিন্তু অন্য জন বুঝতে পারে না।
আর ফারহান নিজের ভালোবাসা টা প্রকাশ ও করে না।
এই গুলো শেষের পার্ট এ ক্লিয়ার হয়ে যাবেন।
কেন ফারহান তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারছে না।

📌.

ফারহান তো ফারাবি কে 3 মাস ধরে পড়াচ্ছে তাহলে 8 মাস আসলো কি করে?

– এটা তো প্রথম পার্ট এই ছিলো। ফারহান ফারাবি কে 3 মাস ধরে পড়ায় । কিন্তু তার আগে ফারাবি 8 মাস অন্য টিচার দের কাছে পড়েছে।
8 মাসে 4 টি টিচার বদল হয়েছে। কারন কেউ ফারাবি কে পড়াতে পারে নি । যার কারনে ফারহান ফারাবিকে পড়ানো শুরু করেছে ।
কারন ফারহান কে ফারাবি প্রচন্ড ভয় পায়।
আর ফারহান তার ভালোবাসা এভাবেই প্রকাশ করে যার কারন শেষের পার্ট এ ক্লিয়ার হবেন।

আপাতত এই কয়েকটা কনফিউশন ই মনে পড়ছে। যদি কারো আরো কনফিউশন থাকে তো প্লিজ কমেন্ট করবেন গল্প দেওয়ার এক দিনের মধ্যে ।
আর হ্যাঁ ইনবক্স এ জানাতে পারেন ইনশআল্লাহ কনফিউশন ক্লিয়ার করার চেষ্টা করলাম ।

( আসসালামুআলাই রির্ডাস । আশা করি আমার গল্প ভালো লাগছে। আগে যে হেরে কমেন্ট পেয়েছি এখন তার কিছুই পাই নি।তবে কি আপনাদের ভালো লাগছে না। একটি কমেন্ট করতে কতো সময় লাগে আর। লেখিকা তো একটি কমেন্ট এর আশা তেই থাকে তাই না।
একটি কমেন্ট তো আশা করতেই পারি,বিভিন্ন গ্রুপে রিভিউ আশা করা টা কি অন্যায় ।
জানি না আদো আপনাদের মন ছুঁতে পারছে কি না । আমি আমার সাধ্য মতো চেষ্টা করবো ।
📌রেড পিন্ট করা লাইন গুলো অবশ্যই পড়ে নিবেন ।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ ফলো দিয়ে পাশে থাকুন )

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

💜 হ্যাপি রিডিং 💜

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here