#হাতটা_দাও_বাড়িয়ে
#অরিত্রা_অর্নি
#পর্ব_১১
#রাজনীতি_রিলেটেড
“কাবিন নামায় সাইন করেই রাফিয়া উঠে নিজের রুমে চলে আসে । কেনো যেনো খুব অস্থির লাগছে সমান তালে হাত পা কেপে যাচ্ছে ।রাফিয়ার পিছে পিছে রিপা ও আসে ।রিপা আসতেই রাফিয়া অন্যদিকে ফিরে যায় । এই মুহূর্তে কাউকেই সহ্য হচ্ছে না রাফিয়ার । রিপা চেষ্টা করে ও রাফিয়ার মুখ থেকে কথা বের করতে পারে না । রাফিয়া চুপ করে আয়নার সামনে বসে আছে । চোখ পানি দিয়ে ভরে যাচ্ছে যেনো পলক ফেললেই জল গড়িয়ে পড়বে । রিপা হতাশ হয়ে বেরিয়ে যায় রুম থেকে । আহিল রিপার আসার ই অপেক্ষা করছিল । রিপাকে বেরিয়ে আসতে দেখেই ইশারায় জিজ্ঞেস করে রাফিয়ার কথা । রিপা ও ইশারায় উত্তর দিয়ে দেয় ।
_ একটু আসছি আমি ( বসা উঠে দাড়ায় আহিল)
” কথাটা বলে আহিল উঠে আসে । বাকিরা বসে নাস্তা করছে আর টুকটাক গল্প করছে । আহিল রাফিয়ার রুমে প্রবেশ করে । দেখে রাফিয়া আয়নার সামনে বসে অনবরত কেঁদে যাচ্ছে । আহিল আস্তে দরজা বন্ধ করে এগিয়ে যায় রাফিয়ার দিকে । রাফিয়ার পেছনে গিয়ে দাড়ায় । রাফিয়ার চোখ আয়নার দিকেই ছিলো ।
_ কি আয়নায় দেখছো কাঁদলে তোমায় কেমন দেখা যায় ( মুচকি হেসে বলে আহিল)
” রাফিয়া কোনো উত্তর দেয় না । চোখের পানি মুছে উঠে দাড়ায় । আহিলের দিকে ঘুরে আহিলের পাঞ্জাবির কলার চেপে ধরে । আহিল কোনো প্রতিবাদ করে না চুপ করেই দাড়িয়ে থাকে ”
_ আপনি ইচ্ছে করে এমন করলেন তাই না । প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য । আমি সব জানি । আমাকে কিডন্যাপ ও নিশ্চয়ই আপনি ই করিয়েছেন । যাতে আমাকে বাঁচিয়ে আমার বাবার কাছে হিরো সাজতে পারেন । আমাকে বিয়ে করে শাস্তি দিতে পারেন । নিন এইবার তো আপনি খুশি আপনার প্ল্যান সাকসেস ।
_ আর কিছু । ( আস্তে করে বলে আহিল )
_ আর কিছু মানে । আর কিছু কি । আপনি কি ভেবেছেন কি আপনি আমায় বিয়ে করবেন আর আমি সব মেনে নিবো । কক্ষনো না । আর কেউ না জানুক আমি খুব ভালো করেই জানি আপনি কি । কেনো করলেন । কি ক্ষতি করেছি আমি আপনার । আমার সব স্বপ্ন আপনি শেষ করে দিলেন । কি যাদু করেছেন আমার বাবাকে। একটা কথা শুনে রাখুন আমি আপনাকে কক্ষনো মেনে নিবো না । প্রয়োজনে আমি মরে,,,,,,,,
” রাফিয়া আর কথা শেষ করতে পারে না তার আগেই আহিল রাফিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট নিজের ঠোঁট চেপে ধরে। বিষয়টা এতটাই জলদি হয়েছে রাফিয়া হতবাক হয়ে আছে
আহিল রাফিয়ার কোমরে এক হাত রাখে আরেকটা হাত রাফিয়ার চুলের মদ্ধে দিয়েছেপে ধরে । অনবরত চুমু খেতে থাকে রাফিয়ার ঠোঁটে । রাফিয়া নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে ও আহিলকে দূরে সরাতে পারে না । বরং আরো আহিল শক্ত করে রাফিয়াকে চেপে ধরে ।
অনেকটা সময় নিয়ে আহিল রাফিয়ার ঠোঁট ছেড়ে দেয় । রাফিয়া ছাড়া পেয়ে জোড়ে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে । আহিল শুধু রাফিয়ার ঠোঁট দুটো দেখে যাচ্ছে । এতটা সময় চুমু দেওয়াতে রাফিয়ার ঠোঁট দুটো লাল হয়ে গেছে । রাফিয়ার নিজের ঠোট মুছে আহিলের দিকে আবার এগিয়ে আসে ।কিন্তু আইবার আর আহিল কে ধরতে পারে না তার আগেই আহিল রাফিয়ার হাত চেপে ধরে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে ”
_ তোমার খুব সাহস তো দেখছি ধানিলংকা
এত চুমু দেওয়ার পরে ও আমার সাথে আবার শক্তি দেখাতে আসছ। শোনো মেয়ে
তুমাকে যদি ঐখানে ( বিছানার দিকে ইশারা করে ) নিয়ে যাই না । তুমি কিন্তু দুইদিন উঠে ও দাঁড়াতে পারবে না। তাই তোমার এই চুনুপুরটির মত শক্তি তোমার কাছেই রাখো । আর তোমাকে বিয়ে করার জন্য আমার তোমাকে কিডন্যাপ করে হিরো সেজে বিয়ে করতে হবে কেনো। আমি চাইলে তোমায় তুলে নিয়ে গিয়ে ও বিয়ে করতে পারতাম তুমি কিছুই করতে পাড়তে না । আমি আরো ভাবলাম বিয়ে যখন করবোই তোমার পরিবার ও থাকুক সাথে এতে তোমার মন খারাপ ও হবে না । তুমি দেখি উল্টো আরো আমাকে দোষ দিয়ে যাচ্ছ । এইটা কেমন হলো ।
” রাফিয়া চুপ করে আহিলের কথাগুলো শুনে । তারপর আবার ও মোচড়াতে শুরু করে । আহিল তো নাছোড় বান্দা সে আরো কাছে এসে চেপে ধরে রাফিয়াকে ”
_ তুমি কি চাইছো বলো তো ? থাকতে চায়ছ আমার সাথে ( চোখ মেরে বলে আহিল )
_ আপনার একটু ও লজ্জা নেই তাই না । আমি আপনাকে যেইখানে মানি ই না সেই খানে আপনার সাথে থাকতে চাইবো।
_ কেউ একজন বলে গিয়েছিল । তুমি নির্লজ্জ হও তবে সেইটা তোমায় বউয়ের কাছে । আমি ও নির্লজ্জ । আর মেনে নাও
তারপর আমাকে মেনে না নেওয়ার আগেই বাচ্চার মা হয়ে গেলে আবার তোমার আফসোস থেকে যেতে পারে ।
_ ছাড়ুন আমায় ?
_ ছাড়বো না । আছি ই তো আর একটু সময় ।
_ থাকতে হবে না চলে যান । কে থাকতে বলেছে আপনাকে ।
_ কেউ না । কিন্তু আমি তো থাকতে চাইছি ।তমার বাপ ই তো বুঝতে পারছে না।
বিয়ে করে বাসর না করেই চলে যাবো। এই দুঃখ কি আমার পরানে সইবো তুমি বলো ।
” রাফিয়া আহিলের কথায় চরম বিরক্ত । আহিলকে জোড়ে একটা ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে দেয় । যদি ও আহিল চাইলে রাফিয়া ওকে নরাতে ও পারতো না ।
তাই আহিল ইচ্ছে করেই দুরে সরে যায় । রাফিয়ার আর ভালো লাগছে না । সব কিছু কেমন উল্টে পাল্টে যাচ্ছে । আহিল কাছে আসলে অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে । আহিল এইবার আস্তে করে রাফিয়ার হাত ধরে । রাফিয়া বাধা দেয় না চুপ করে থাকে”
_ শোনো মেয়ে তোমার জেদি মুখটা আমার ভীষন প্রিয়। তোমার এই কোমলতায় আমি বার বার হারিয়ে যাই। বিয়ে করার অন্য কোনো উদ্যেশ্য নেই আমার শুধু তোমাকে নিজের করে রাখার একটা শক্ত দলিল দরকার ছিলো তাই এই বিয়ে ।কোনো প্রতিশোধের জন্য না ।
” আহিল কথাটা বলে রাফিয়ার কপালে একটা চুমু খায়। রাফিয়া যেনো চেয়ে ও কিছু বলতে পারছে না । আহিল রাফিয়া কে চুপ থাকতে দেখে মুচকি হাসে ”
_ অভ্যাস করো মেয়ে বিয়ে হয়েছে বর তো আদর করবেই । এত অবাক হওয়ার কিছু নেই। আর আমি একটু বেশি ই করবো ।
_ আপনাকে একদিন আমি সত্যি ই খুন করে দিবো । আমার কাছে আসলে ।
_ এইযে এখনো কাছে করে দাও খুন । বউয়ের হাতে খুন হওয়া তো ভাগ্যের ব্যাপার ।
” রাফিয়া বেশ বিরক্ত । কোনো কথা বলে ও শান্তি পাচ্ছে না । আহিল তা বুঝতে পারছে
_ আসছি আমি ।
” হুট করেই আহিল কথাটা বলে রাফিয়ার কপালে আবার ও একটা চুমু খেয়ে বেরিয়ে যায় দরজা খুলে । রাফিয়া আহিলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে । জীবন টা কেমন যেনো মনে হচ্ছে রাফিয়ার । বাইরে এসে আহিল আনিসুল হকের পাশে বসে টুকিটাকি কথা বলে উঠে যায় । যাওয়ার আগে রাফিয়াকে ডাকে আনিসুল হক । না চাইতে ও রাফিয়া বেরিয়ে আসে । রাফিয়া আসতেই হাবিব আহমেদ আর রেবেকা বেগম রাফিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় ।
_ তোমার বাবার জন্য আজ তোমায় রেখে যেতে হচ্ছে । কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি ই তোমায় আমাদের ঘরে নিয়ে যাবি মা । ভালো ভাবে থেকো । তোমাকে কিছু না জানিয়ে হুট করে এইসব হয়েছে বলে মনে কষ্ট নিও না ।
( বলেন হাবিব আহমেদ)
” উত্তরে রাফিয়া কিছু বলে না চুপ করে থাকেন । রেবেকা বেগম এগিয়ে এসে রাফিয়ার দুই হাতে দুটো বালা পরিয়ে দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেন তারপর বেরিয়ে যায় । রাফিয়া বেশ অবাক হয় সব কিছুতেই । আহিলরা যেতেই আনিসুল হক রাফিয়াকে হাত ধরে সোফায় বসিয়ে দেন তিনি জানেন তার মেয়ের তার উপর বড্ড অভিমান করেছে । মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নেয় । রাফিয়া বাবাকে ধরে কেঁদে দেয় ”
_কাঁদিস না মা । তোকে আমি যার হাতে তুলে দিয়েছি দেখিস সে আমার জায়গা তোর মনে করে নিবে। আমার করা দায়িত্ব গুলো ও সে পালন করবে। তুই খুব খুশি হবি দেখিস । শুধু বাবার উপর ভরসা রাখ ।
” রাফিয়া ভাগ্যকে মেনে নিতে পারে । তবে আহিলকে করবি যেনো মেনে নিতে পারছে না । জীবন সঙ্গী বুঝি এইভাবে হয়ে যায় মেয়েদের । রাফিয়া সব থেকে বেশি ভরসা করে তার বাবাকে । আহিল কি সত্যিই ই পারবে সেই ভরসা অর্জন করতে ”
চলবে ,,,,,