#হাতটা_দাও_বাড়িয়ে
#অরিত্রা_অর্নি
#পর্ব_৯
#রাজনীতি_রিলেটেড
” দুপুর গড়িয়ে এখন প্রায় বিকেল । আহিল গাড়ির ভেতর বসে আছে চুপ করে মাথার কিছুই ঢুকছে না তার । রিজন ওকে কিছুতেই বলবে না । আর মুহূর্তে রিজনের সাথে ঝামেলায় আহিল যেতে চায় না । আসে পাশের সব জায়গায় খোঁজ লাগানো হয়েছে গোপনে ।
শাওন চুপ করে আহিলের পাশে বসে আছে আহিলের এই অস্থিরতা শাওন আগে কখনো দেখেনি । আহিল মাথায় হাত রেখে কিছু একটা ভেবে যাচ্ছে । হুট করেই আহিলের ফোন বেজে উঠে । কোনো খবর এসেছে ভেবে আহিল সাথেই সাথেই ফোন টা ধরে। কিন্তু আহিলকে অবাক করে দিয়ে ওপর পাশ থেকে শুরু হাসির শব্দ আসে ”
_ কি মিস্টার আদিয়ান আহমেদ আহিল । খুঁজে পেলি না তোর প্রিয়তমা কে । এই তোর ক্ষমতা । এই ক্ষমতার জোর দেখিয়ে বেড়াস বুঝি। তোর তো নিজের মানুষকেই নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষমতা নেই জনগণের নিরাপত্তা কি করে দিবি রে ,,,, ( কথাটা বলে আরো জোড়ে হেসে উঠে )
” আহিলের এইসব শুনে প্রচুর রাগ হয়। কিন্তু এই মুহূর্তে সে অসহায় । অন্তত রাফিয়ার নিরাপত্তার জন্য হলে ও আহিল নিজেকে শান্ত করে ”
_ রাফিয়া কোথায় ? কোথায় রেখেছিস ওকে । দেখ রুদ্র তোর সাথে আমার ঝামেলা এর মধ্যে ওই মেয়েটাকে টানবি না ভালো হবে না ।
_ আহা ,, বুকে খুব ব্যাথা তাই না রে । কষ্ট হয় খুব । আমি তো জানতাম তুই জনগন নিয়ে থাকিস । তোর যে এত সুন্দর একটা পাখির ছানা ও আছে এইটা কিন্তু ভাবিনি । ভাগ্যিস রিজন ছিলো । চল এত কথা না বলি ডিলে চলে আয় তাহলেই হলো তুই তোর পাখির ছানা নিয়ে চলে যাস । যদি ও দিতে বুকে লাগবে ।
_কি চাই ?
_ নির্বাচন থেকে সড়ে যাবি । মনোয়ন তুলে নিবি । শুধু এইটুকু ই ।
_ ঠিক আছে । তাই হবে । দেখা হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি ।
” কথাটা বলে আহিল নিজেই ফোনটা কেটে দেয় । এতে রুদ্র অবাক না হলে রিজন বেশ অবাক হয় । এত সহজে সব কিছু মেনে নেওয়ার পত্র আহিল নয় । কিছু একটা হতে চলেছে ।
আহিল সাথে সাথে গাড়ি স্টার্ট করে । জোড়ে গাড়ি চালাতে থাকে । শাওন শুধু চুপ করে দেখে যাচ্ছে । আধ ঘন্টার রাস্তা আহিল পনেরো মিনিটের মধ্যে চলে আসে । একটা বড় গোডাওন এর সামনে এসে গাড়ি থামায় আহিল এখন প্রায় সন্ধ্যা নেমে এসেছে । আহিল আর শাওন ছাড়া এই পুরো জায়গাটা ই ফাঁকা ”
” অন্ধকার একটা রুমের ভেতর পাটির উপর হাত মুখ বাধা অবস্থায় পড়ে আছে রাফিয়া । প্রচুর কষ্ট হচ্ছে ওর । সেই দুপুর থেকে এইভাবেই পরে আছে এইখানে । তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে আছে । কেউ আকবরের জন্য আসেওনি। রাফিয়ার ইচ্ছে করছে জোড়ে জোরে চিৎকার করছে । বুকটা ফেটে যাচ্ছে । কি হচ্ছে ওর সাথে এইসব ।ওর তো কোনো শত্রু নেই করা তুলে আনবে । তুলে এনে লাভ ই বা কি । ওকে কি তাহলে মেরে ফেলবে ”
” গাড়ি থেকে নেমে দাড়িয়ে আছে শাওন আর আহিল । গোডাওন বাইরে থেকে বন্ধ দেখাচ্ছে । তবে ভেতরে যে মানুষ আছে এইটা আহিল নিশ্চিত । আহিল এগিয়ে গিয়ে সাটার টেনে তুলে । ভেতরে পুরো অন্ধকার আহিল নিজের পকেটে থাকা গন্ট টা বের করে । শাওন ও তাই করে । আস্তে আস্তে করে ভেতরে ঢোকে ওরা । এত পরিমাণ অন্ধকার যে কিছুই ভালো মত দেখতে পারছে না । আহিল একটু এইদিক ওইদিক লক্ষ্য করে । না এইখানে কেউ নেই
আহিল সোজা হয়ে দাড়ায় । ভালো করে লক্ষ্য করতে ওর চোখে পড়ে ছোট্ট একটা রুম বাইরে থেকে তালা বদ্ধ । আহিলের বুকটা কেঁপে উঠে। এই রুমের ভেতর যদি সত্যি ই রাফিয়া থেকে থাকে তাহলে একটা ও ছাড়বে না আহিল । আহিল দ্রুত পায়ে রুমটার সামনে এসে দাঁড়ায় ।ফোনের ফ্ল্যাশ অন করে ভারী কিছু একটা তালা খুলে ভেতরে ঢুকে । আহিল দেখে রাফিয়াকে একটা পাটির উপর । দ্রুত আহিল রাফিয়ার কাছে যায় । রাফিয়ার জ্ঞাণ নেই । আহিল রাফিয়াকে কোলে তুলে নেয় ।
শাওন ফ্ল্যাশ লাইট ধরে ওরা বেরিয়ে আসে ।গাড়ির পেছন সিটে রাফিয়াকে শুয়িয়ে দিয়ে সামনে বসে আহিল । শাওন শুধু দেখে যাচ্ছে । গাড়িতে বসেই আহিল দ্রুত চলে আসে । একটা হসপিটাল এর সামনে এসে আহিল আবার রাফিয়াকে খলে তুলে নিয়ে ভেতরে যায় । সব কিছু ঠিক করে দিয়ে আহিল। বাইরে বেরিয়ে আসে । ততক্ষন এ সিয়াম রিপাকে নিয়ে চলে আসে
রাফিয়ার কাছে । আহিল হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসে সাথে শাওন ও যায় ।
_ তুই কিভাবে জানলি যে মেয়েটাকে ওরা ওইখানে ই রেখেছে ?
” আহিল জানতো শাওন এমন প্রশ্ন ই করবে ”
_ তোর মনে আছে যখন রুদ্র আমাকে কল দেয় ।আমার হাতে আরেকটা ফোন ছিলো
যেইটা দিয়ে আমি ওর লোকেশন ট্রেক করেছি । ও তখন ওই জায়গার আসে পাশেই ছিলো । আমি তখন ও সিওর ছিলাম না । পরে মনে পড়ে রুদ্রর বাবার করা সেই গোডাওনের কথা ।
_ রুদ্র যখন জানতে পারবে আবার ক্ষতি করতে চাইবে ।
_ সেইটা হতেই দিবো না । আমার প্ল্যান ছিলো সাপ আর লাঠি দুট ই ঠিক রাখা ।
” মুচকি হেসে আহিল রুদ্রর নাম্বার এ কল করে । সাথে সাথে ই কল ধরে রুদ্র ”
_ কি ,,,, দেখা করতে এলি না যে ভয় পেয়েছিস নাকি । তোর পাখির ছানা কি ফেরত নেওয়ার ইচ্ছে নেই নাকি রেখে দিবো আমার কাছে । ( হেসে বলে রুদ্র )
_ দেখা তো নির্বাচনের দিন হবে বলেছিলাম ।তুই কি ভেবেছিলি এখন ই দেখা করবো বলেছি । তোর মতো এত সময় নেই তো আমার । আর আমার পাখির ছানা আমার কাছেই আছে তোকে আর কষ্ট করে ফেরত দিতে হবে না । কষ্টের সময় এগিয়ে আসছে রুদ্র দিন গুনতে শুরু কর ।
” কথাটা বলেই আহিল রুদ্র কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কল কেটে দেয় । পাশে বসে থাকা শাওনের সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে ”
_ কি করতে চায়ছিস কি তুই ?
_ ঐটা কাল ই দেখতে পারবি ।
_ তুই কি এমপি হতে চাচ্ছিস নাকি প্রেমিক বুঝতেই পারছি না ।
_ দুটোই ।
“আহিল গাড়ি স্টার্ট দেয় । অনেক কাজ এখন তার সব আজ রাতের মধ্যেই শেষ করতে হবে । কাল সকাল টা যেনো একটা সুন্দর সকাল হয় ধরা দেয় আহিলের জীবনে ”
চলবে ,,,