হাতটা_দাও_বাড়িয়ে #অরিত্রা_অর্নি #পর্ব_১০ #রাজনীতি_রিলেটেড

0
201

#হাতটা_দাও_বাড়িয়ে
#অরিত্রা_অর্নি
#পর্ব_১০
#রাজনীতি_রিলেটেড

” রাত শেষে ভোরের দিকে জ্ঞাণ ফিরে রাফিয়ার । সারারাত ই স্লাইন দিয়া রাখা হয়েছিল ওকে । চোখ মেলে তাকায় রাফিয়া
সামনে রিপা কে দেখেই রাফিয়া উঠে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয় ।

_ আর কাঁদিস না বোন শান্ত হয়ে দেখ । সব ঠিক আছে ।

” রাফিয়া তাও চুপ হয় না কাঁদতে থাকে । অনেকটা সময় নিয়ে রাফিয়া শান্ত হয় । ভেবেছিল চোখ খুলে আবার সেই অন্ধকার ঘরে নিজেকে বন্ধি দেখবে । রাফিয়াকে ঠিক করে বসিয়ে দেয় রিপা । হালকা কিছু খাইয়ে দিয়ে রাফিয়াকি শুয়ে থাকতে বলে
কিন্তু রাফিয়ার মনে হাজারটা প্রশ্ন ”

_ মনে অনেক প্রশ্ন তাই না । সব কিছুর উত্তর পাবি একটু অপেক্ষা কর ।

_ এখন দিলে সমস্যা কি ?

_ সমস্যা আছে এই জন্যই দিবো না ।

” কথাটা বলে রিপা কেবিন থেকে বেরিয়ে যায় । রাফিয়া মন খারাপ করে আবার শুয়ে পড়ে । শরীল খুব ক্লান্ত । একটু পরেই রিপা কেবিনে প্রবেশ করে রাফিয়া দরজা খোলার শব্দে ঘুরে তাকায় । রাফিয়া পারছে না উঠে যেতে । রিপা এসেছে সাথে রাফিয়ার বাবা আর রিপার মা । রাফিয়ার মা নেই বাবার সাথেই চট্টগ্রাম শহরে বেড়ে উঠা রাফিয়ার । রাফিয়ার বাবা আনিসুল হক পেশায় একজন শিক্ষক । রাফিয়ার বাবা মেয়ের পাশে গিয়ে বসে সাথে সাথে রাফিয়া তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে । রিপা আর রিপার মা দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছে শুধু ।

_ হয়েছে আর কাঁদতে হবে না । বাড়ি ফিরতে হবে এইবার বাড়ি ফিরে আবার কাঁদিস ( বলে রিপার মা )

_ হে মা চল বাড়িতে । আমি তো এসে গেছি কাঁদছিস কেনো । সব ঠিক হয়ে যাবে ।

” সবার কথা শুনে রাফিয়া কিছুটা শান্ত হয় । হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসে ওরা । হাসপাতালের সামনেই একটা বড় গাড়ি দাড়িয়ে আছে । সবাই গিয়ে উঠে বসছে। কিন্তু রাফিয়া ধাপে ধাপে বেশ অবাক হচ্ছে
ও কিভাবে ওই জায়গা থেকে ফিরে এলো । রিপা ই বা ওকে কি করে পেলো । ওর বাবা কিভাবে খবর পেয়ে একদিনের ভেতর ছুটে এলো । সব কিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে রাফিয়ার ”

_ দাড়িয়েই থাকবি । গাড়িতে উঠে বস । বাড়িতে যেতে হবে না ( বলে রিপা )

_ এইটা কর গাড়ি ? তোরা জারতার গাড়িতে উঠে বসছিস কেনো ?

_ এত কথা বলার সময় নেই বইন । হাতে অনেক কাজ জলদি উঠ ।

” রাফিয়া আর কোনো কথা না বলে গাড়িতে উঠে বসে । বাড়িতে ফিরে রাফিয়া যেনো প্রাণ ফিরে পায় । দ্রুত চলে যায় সাওয়ার নিতে । সাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে রাফিয়া দেখে রিপা আলমারিতে কিছু একটা খুঁজছে । রাফিয়া গিয়ে রিপাকে চেপে ধরে ওকে টেনে বিছানায় এনে বসিয়ে দেয়”

_ অনেক নাটক করেছিস আর না । এইবার সত্যি করে বলতো কি কি হয়েছে । আমাকে তোরা পেলি কিভাবে ?

_বললাম না সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবি । শুধু এইটুকু ই বলবো এখন তোকে । তুই ভাগ্যবতী রাফিয়া খুব ভাগ্যবতী । মানুষ যা শত সাধনা করে ও পায় না তাই তুই সাধনা ছাড়া ই পেয়ে যাবি। শুধু আগলে রাখতে শিখে নিস ।

_ মানে ?

_ মানে অনেক কিছু । এইবার উঠ এই ড্রেস টা পড়ে নে জলদি ।

” রাফিয়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই রিপার মা রিপাকে ডাকে। রিপা চলে যায় । রাফিয়ার এইবার বিরক্তি লাগছে । কৌতুহল হচ্ছে খুব ।কিছু একটা তো আছে যা ওর থেকে সবাই লুকাচ্ছে । রাফিয়া রিপার রেখে যাওয়া ড্রেস টা পরে নেয় তারোর রুম থেকে বেরিয়ে আসে । দেখে ওর বাবা সোফায় বসে আছে রাফিয়া গিয়ে বাবার পাশে বসে । রাফিয়া বসতেই আনিসুল হক মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় ”

” এখন প্রায় সন্ধ্যা । রাফিয়া বসে বসে টিভি দেখছে । রিপার আসায় ই বসে আছে কিন্তু রিপা কিছুতেই ওর কাছে গেষছে না । হটাৎ ই কলিং বেল বেজে উঠে । রাফিয়া উঠে দাঁড়াতেই দেখে আনিসুল হক নিজেই গিয়ে দরজা খুলে দিচ্ছে । এর মধ্যে রিপা দৌড়ে গিয়ে রাফিয়ার হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে আসে ”

_ কি হচ্ছে কি আমাকে একটু বলবি তুই । উত্তর পাবো উত্তর পাবো কুথায় উত্তর। আর ঐভাবে টেনে নিয়ে এলি কেনো । কে এসেছে আবার ।

_ তোর উত্তর ।

” রাফিয়া রিপার কথা শুনে অবাক ওর উত্তর মানে। রাগিয়ে দরজা দিয়ে উকি দেয় । সাথে সাথে রাফিয়ার চোখ বড় বড় হয়ে যায় । আহিল বসে আছে সোফায়। সাথে আরো কিছু লোকজন আছে । রাফিয়া আহিল আর আহিল ছেলে পেলে গুলোকে ছাড়া কাউকেই চিনতে পারছে না । তবে রাফিয়া বেশ অবাক হচ্ছে ওর বাবা আহিলের সাথে হেসে হেসে কথা বলে যাচ্ছে ।

_ এই লোক এইখানে কি করছে ?

_ এখন ই বুঝতে পারবি ।

” রিপা কথাটা শেষ করতেই আনিসুল হক রুমে প্রবেশ করেন । রাফিয়ার অস্থিরতা দেখছে সে । এসে রাফিয়ার হাত দুটো ধরে আনিসুল হক”

_ তুমার আমি কিছু কথা বলবো মা। আমি তুমার বাবা তুমি তো আমায় বিশ্বাস করো।

_ বাবা তুমি এইসব কেনো বলছো ?

_ আমার কথার উত্তর দাও।

_ অন্ধের মতো বিশ্বাস করি তুমার বাবা ।

_ আমি তোমাকে না জানিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। বাইরে যাদের দেখছো তাদের তুমি একটু হলে ও চিনো । ছেলেটাকে ও জানো । ও তোমায় কাল বাঁচিয়েছে । ও না থাকলে আজকে হয়তো তুমার বড় কোনো ক্ষতি হয়ে যেতো। আমি অনেক ভেবে দেখলাম আমার পরে কেউ তোমায় নিয়ে এতটা ভেবেছে । আমি নিশ্চিন্ত মনে ওর হাতে তোমায় তুলে দিতে চাই ।

” কথাটা শুনে রাফিয়ার যেনো পায়ের নিচে থেমে মাটি সরে যায় । কি বলছে ওর বাবা । যাকে রাফিয়া সহ্য ই করতে পারে না তার হাতে নাকি তুলে দিবে । শুধু মাত্র বাঁচিয়েছে বলে । রাফিয়ার ভীষণ কান্না পাচ্ছে । রাফিয়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই আনিসুল হক রাফিয়ার হাত ধরে বাইরে নিয়ে যায় । আনিসুল হক নিজের পাশে রাফিয়াকে বসিয়ে দেয় । রাফিয়ার বুক কাপছে। কি হতে চলেছে ।
আহিল বসে আছে চুপ করে । একটু পর পর আর চোখে রাফিয়াকে দেখছে । আহিল জানে রাফিয়ার মনে অবস্থা কিন্তু আহিল যে নিরউপায়।
আহিলের বাবা হাবিব আহমেদ ছেলের বউ দেহে ভীষণ খুশি হয়েছে । তিনি আনিসুল হকের সাথে কাল রাতেই কথা বলে নিয়েছে । যখন আহিল রাতে বাড়িতে ফিরে হুট করেই বললো সে বিয়ে করতে চায় । সব থেকে বেশি খুশি হাবিব আহমেদ ই হয়েছিলেন । আহিলের মা রেবেকা বেগম এসে রাফিয়ার ওপর পাশে বসে । রাফিয়ার হাত ধরে একটা স্বর্ণের রিং পরিয়ে দেয়। রাফিয়া চুপ করে বসে আছে । একটা পর্যায় সেই সময় চলে আসে যার জন্য আহিল অপেক্ষা করছিল আর রাফিয়া অপ্রস্তুত ছিলো । কাজী দিয়ে ওদের বিয়ে পড়ানো হয় । রাফিয়ার বুকটা ফেটে যাচ্ছে । আহিল কে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে । শুধু মাত্র ওকে বাঁচানোর জন্য বিয়ে পর্যন্ত নিয়ে এসেছে লোকটা । নিজের বাবার উপর ও রাফিয়ার প্রচুর অভিমান হয় । কিন্তু মুখে কিছুই প্রকাশ করে না ।
সব শেষে রাফিয়াকে দেওয়া হয় সাইন করতে। রাফিয়া হাতে কলম ধরে রাখতে পারছে না । সাইন করে দিলেই সারাজীবনের জন্য আহিলের সাথে ওর নাম জড়িয়ে যাবে এইটা ভেবেই রাফিয়ার কান্না পাচ্ছে । আর অন্য দিকে আহিল চুপ করে রাফিয়ার হাতের দিকে তাকিয়ে আছে। এই তেরা মেয়েটা ভালো ভাবে সাইন করে দিলে ই আহিল বেঁচে যায় । সমস্ত রাগ অভিমান নিয়েই রাফিয়া কাবিন নামায় সাইন করে দেয় । আহিল যেনো বুক ভোরের নিশ্বাস নেয় । আহিল পেরেছে । অবশেষে তার ধানিলঙ্কা প্রিয়তমাকে তার অর্ধাঙ্গিনী করতে পেরেছে ।

চলবে ,,,,,,

( প্রচুর চোখ জ্বালা করছে । পর্বটা কেমন অগুছালো হয়ে গেলো । একটু কষ্ট করে পরে নিয়েন । পরের পর্ব ইনশাল্লাহ সাজিয়ে দিবো )

_

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here