হাতটা_দাও_বাড়িয়ে #অরিত্রা_অর্নি #পর্ব_২ #রাজনীতি_রিলেটেড

0
335

#হাতটা_দাও_বাড়িয়ে
#অরিত্রা_অর্নি
#পর্ব_২
#রাজনীতি_রিলেটেড

“বাসা থেকে বেরিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছে রাফিয়া আর রিপা উদ্যেশ্য ভার্সিটি । কাল রাফিয়াকে অনেক বলেছে রিপা যাতে কোনদিন রাস্তায় ওই ছেলেগুলোকে দেখলে সরি বলে দেয় কিন্তু রাফিয়া সেইসব কথা কানেই নেয়নি । দুইজনে হেঁটে হেঁটে গলির মুখে আসতেই রিপা লক্ষ্য করে রবিন আর সিয়াম দাড়িয়ে আছে । রিপা মনে মনে এই ভয়টা ই পাচ্ছিল । রাফিয়ার হাত টেনে ধরে রিপা ।

_ শোননা আজ যেতে হবে না কাল যাবো বাড়ি ফিরে চল ।

_ বাড়ি কেনো যাবো আর তুই ই না বললি আজ ভর্তি ফ্রম দিবে ।

_ না কাল দিবে আজ চল ।

” রাফিয়া রিপার কথা কিছুই বুঝতে পারে না । রিপা কেনো হটাৎ এমন করছে বুঝার জন্য আসে পাশে তাকায় চোখে পড়ে কালকের সেই দুইজন ছেলে গাড়ির সামনে দাড়িয়ে চা খাচ্ছে । রাফিয়ার আর বুঝতে বাকি নেই রিপা কেনো এমন করছে । রিপার হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে রাফিয়া ওই ছেলে দুটোর দিকে এগিয়ে যায় রিপা রাফিয়াকে কিছুই বলতে পারে না । সিয়াম আর রবিনের সামনে গিয়ে দাড়ায় রাফিয়া ”

_ কি ব্যাপার আবার আপনারা । আমাকে মারতে এসেছেন নাকি ? তা একা কেনো এসেছেন আপনাদের ওই বস কই আজকে নাকি ভয় পেয়েছে ।

” রাফিয়ার এমন কথায় রেগে হয় সিয়াম কিন্ত রবিন সিয়ামকে চোখের ইশারায় শান্ত হতে বলে তারপর রাফিয়ার দিকে তাকায় ”

_ গাড়িতে উঠেন আপনাকে আমাদের সাথে যেতে হবে ।

_ যেতে হবে মানে কোথায় যেতে হবে ?

_ ওই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় নেই গাড়িতে উঠে বসুন ( বলে সিয়াম )

“ওদের কথার মধ্যে রিপা আসে ও একটু দূরেই দাড়িয়ে ছিলো ”

_ সিয়াম ভাই ওকে কোথায় যেতে হবে । ওকে কোথাও নিয়েন না । ও আমার বোন হয় ।বুঝতে পারেনি ভুল করে ফেলেছে ও এখনি সরি বলবে এই রাফিয়া সরি বলে ( রাফিয়াকে উদ্যেশ্য করে বলে রিপা)

_ রিপা তুমার বোন যে কি ভুল করছে এইটা উনি নিজেই বুঝতে পড়ছে না । কিছু করার নাই আহিল ভাই নিয়া যাইতে কইছে ( বলে রবিন )

_ আমি যাবো আপনাদের সাথে নিয়ে চলুন দেখি আপনার ওই বস আমার কি করে ।

” রাফিয়ার কথা শুনে রিপার মাথায় হাত । ও রাফিয়াকে বাঁচাতে চায়ছে আর এই মেয়ে ইচ্ছে করে কুমিরের পুকুরে ঝাপ দিতে চায়ছে ”

_ কি বলছিস কি তুই পাগল হয়ে গেলি। সরি বলে আর বাড়ি চল রাফিয়া ।

_ তুই কেনো ওদের ভয় পাচ্ছিস কি করবে ওরা । আমি ও দেখতে চাই ।

” কথাটা বলে রাফিয়া নিজেই গাড়িতে গিয়ে উঠে বসে । রিপা শুধু দেখে যাচ্ছে । রাফিয়া শুরু থেকেই এমন ঘারতেরা করো কথা শুনে না । এর জন্য ওর বাবা ওকে এই ঢাকায় পাঠিয়েছে যাতে একা থেকে নিজের দস্যিপনা একটু কমে কিন্তু এইখানে তো আরো বেড়ে যাচ্ছে ।
রাফিয়াকে নিয়ে চলে যায় সিয়াম আর রবিন । রাফিয়াকে দেখে রবিন খুব অবাক হয় এই মেয়ে একটু ও ভয় পাচ্ছে না । পুরো চিল মুড নিয়ে বসে আছে দেখে মনে হচ্ছে ওকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ।
পনেরো মিনিট পরেই গাড়ি এসে থামে ক্লাব ঘরের সামনে । রাফিয়া নেমে সোজা ভেতরে চলে যায় সিয়াম আর রবিন শুধু দেখে যাচ্ছে আল্লাহ ই জানে কি হবে ।
ভেতরে প্রবেশ করেই রাফিয়া দেখে চেয়ারে বসে আছে আহিল আর তার সামনে দাড়িয়ে আছে দুইজন ছেলে । রাফিয়াকে দেখেই আহিল ছেলে দুটোকে ইশারায় বেরিয়ে যেতে বলে । ছেলেগুলো বেরিয়ে গেলে রাফিয়ার সামনে এসে দাঁড়ায় আহিল”

_ আপনি আমায় তুলে আনতে বলেছেন ?

_তুমি তো হেঁটেই এসেছো দেখছি । তুলে আনতে হলে অন্য কাউকে পাঠাতাম না আমি নিজেই যেতাম ( টেবিলের উপরে গিয়ে বসে পাঞ্জাবির হাত ঠিক করতে করতে বলে আহিল )

_কেনো আসতে বলেছেন সেইটা বলুন । নাকি আমাকে ও মারতে চায়ছে ।

_ তোমার মত এইটুকু একটা মেয়েকে মারার জন্য আমার কোথায় নিয়ে আসতে হবে না । জায়গায় দাড়িয়েই মেরে দিতে পারবো।

” রাফিয়া এইবার হেঁটে হেঁটে আহিলের সামনে গিয়ে দাড়ায় ”

_ তাহলে মেরে দেখান । আমি ও দেখতে চাই কিভাবে মারেন আমায় । আসি ।

“রাফিয়া পেছন ফিরে বেরিয়ে আসবে তার আগেই আহিল পেছন থেকে বলে ”

_ চ্যালেঞ্জ করছো । তাহলে শুনে নাও তোমায় আমি অবশ্যই মরবো তবে জানে না অন্য ভাবে । তৈরি থাকো মেয়ে ।

” রাফিয়া কোনো উত্তর দেয় না দৌড়ে বেরিয়ে যায় । আহিল রাফিয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে । আহিলের সাথে পাঙ্গা নেওয়ার মতো কোনো মেয়ে আছে তাহলে । রাফিয়াকে বেরিয়ে যেতে দেখেই রবিন আর সিয়াম দৌড়ে ঢুকে দেখে আহিল টেবিলের উপরে বসে হাসছে ”

_ ভাই মেয়েটা দেখি চইলা গেলো । ভারি ঘ
ঘারতেরা মেয়ে ভাই কোনো ভয় নাই চোখে । আমরা ওরে তুইল্যা আনতে গেছিলাম ওই তো নিজের ইচ্ছায় ই আয়ছে।

_ মেয়েটার পরিচয় চাই আমার সিয়াম (হুট করেই বলে আহিল)

_ ভাই পরিচয় তো পাইয়া গেছি কাল ই । ও হচ্ছে ,রাফিয়া সুলতানা রাফা ,পাশের একালার রিজন আছে না এর খালাতো বোন। এইখানে পড়তে আয়ছে ভাই আমাগো ভার্সিটিতেই ভর্তি হইবো ।

“সিয়ামের কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে যায় আহিলের রিজনের খালাতো বোন । যেই রিজন আহিলের শত্রু সেই রিজনের ই খালাতো বোন হইতে হইলো এই মেয়েকে । আহিল আর কিছু বলে না । নিজের কাজে মন দেয় । রিজনের সাথে আহিলের শত্রুতা শুরু থেকে আহিলের সব কাজে রিজন বাঁধা দিয়ে এসেছে সব সময় । কতবার যে আহিলের ক্ষতি করতে চেয়েছে ”

” রাফিয়া হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরে আসে । কলিং বেল বাজাতেই দরজা খুলে দেয় রাফিয়ার খালা রুবিনা বেগম । রাফিয়া ভেতরে ঢুকতেই টেবিলে দেখতে পায় রিজিনকে ভাত খাচ্ছে সে । রাফিয়া এসেছে আজ দুইদিন কিন্তু রজিনকে দেখেনি একবার ও রিপার কাছে শুনেছে রিজন নাকি এমন ই বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়ায় । রাফিয়ার দিকে তাকায় রিজন । রাফিয়া ও তাকায় ওর দিকে সালাম দিয়ে ভেতরে চলে যায় রাফিয়া । রুমে আসতেই দেখে রিপা এইদিক ওইদিক করছে রাফিয়াকে দেখেই দৌড়ে আসে ওর কাছে ”

_ তুই ঠিক আছিস তো । তোকে কিছু করেনি তো আগেই বলেছি সরি বলে দে শুনলি না তো আমার কথা ।

_আস্তে বইন থাম । কি হবে আমার । কি করবে আমাকে কিছু করতে আসলে মেরে দিবো না আমাকে কিছু করবে । কিচ্ছু করেনি আমার এমনেই নিয়ে গেছে আমি তো একাই চলে এসেছি । তোরা যে কেনো ওই মাস্তান লোকটাকে দেখে ভয় পাস বুঝি না ।( বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে বলে রাফিয়া )

” রিপা অবাক হয় । আহিল রাফিয়াকে নিয়ে গিয়ে ও কিছু না বলে ছেড়ে দিলো । নাকি রাফিয়া মিথ্যে বলছে ”

_ সত্যি করে বল আহিল ভাই তোকে কিছুই বলেনি ।

_ কি বলবে । কিছু বলতে দিকে তো বলবে

_ কিছুই বলেনি মনে করে দেখ একটু ।

_ কি বলবে শুধু বলেছে আমাকে নাকি জানে মারবে না অন্য ভাবে মারবে রেডি থাকতে ।

” রাফিয়ার এই কথা শুনে রিপার চোখ বর বর হয়ে যায় । আহিল এই কথা বলেছে ।
আল্লাহ ই জানে এইবার রাফিয়ার কপালে কি দুঃখ আছে ”

_ শোন কাল তুই আমার সাথে যাবি । আহিল ভাইকে সরি বলবি বলবি । তুই আমি কেনো রাফিয়া । আহিল ভাই কি কি করতে পারে তোর কোনো ধারণা নেই । উনি যেহেতু বলেছে তোকে রেডি থাকতে তোর কপালে ভীষণ দুঃখ আছে দেখে নিস তুই ।

” রাফিয়া রিপার কথায় পাত্তা না দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায় । দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে রাফিয়া ”

” অন্যদিকে আহিল সারাদিন পরে বিকেলের দিকে বাড়ি ফেরে । বাড়িতে খুব বেশি থাকা হয় না আহিলের বাবা ও বেশি থাকতে পারেন না বাড়িতে শুধু আহিলের মা আর কিছু কাজের লোকরা ই থাকেন ।
রাতে তিনজন এক সাথে খায় শুধু এই নিয়ে
ওর মা রেবেকা বেগমের অভিযোগের শেষ নেই । কতবার আহিলকে বিয়ে করতে বলেছে আহিল কখনোই পাত্তা দেয়নি এইসব এ ।
বিকেলে বাড়ি ফিরে আহিল নিজের ঘরে চলে যায় । রেবেকা বেগম ছেলের ঘরে খাবার নিয়ে যায় । আহিল মাত্রই সাওয়ার নিয়ে বেরিয়েছে বিছানায় রেবেকা বেগম কে দেখে মুচকি হেসে উনার সামনে এসে বসে আহিল ”

_ কি কিছু বলবে তুমি । বললে আমাকে খাইয়ে দিতে দিতে বলো আমি শুনছি ।

” রেবেকা বেগম মন খারাপ করে ভাত মেখে খাইয়েই দিতে থাকেন ”

_ তোরা কি আমার কথা শুনবি না আর । আমি কি এই বাড়িতে একা একা ই থাকবো জীবন ভরে । তোর দাদী মারা যাওয়ার পর আমি একেবারে একা থাকি তোর বাবার তো সময় ই হয় না আবার তুই ও । কতবার বলেছি একটা বিয়ে করে আবার জন্য একটা বউ নিয়ে আয় শুনেছিস আমার কথা কোনোদিন ( অভিমান করে বলে রেবেকা বেগম )

” আহিল মুচকি হেসে রেবেকা বেগমের গাল টেনে দিয়ে বলে ”

_ তোমার কি বউ লাগবেই মা । ছেলের বউ ছাড়া চলবে না ।

_ না চলবে না ।

_ তাহলে কিছুদিন সময় দাও আমি নিজেই বউ নিয়ে আসবো তোমার জন্য যাও আর কেঁদো না ( মুচকি হেসে বলে আহিল)

“আহিলের কথা শুনে খুব খুশি হয় রেবেকা বেগম । অবশেষে তার ছেলে বলেছে তো বউ এনে দিবে ”

_ তোর কাউকে পছন্দ হয়েছে আহিল ?

_ ভীষণ পছন্দ হয়েছে মা ।

” মুচকি হেসে ঘর থেকে চলে যায় রেকেবা বেগম । আহিল বিছানায় গা এলিয়ে দেয় ।
মনের মধ্যে চলছে অনেক কিছু ”

চলবে “””

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here