হাতটা_দাও_বাড়িয়ে #অরিত্রা_অর্নি #পর্ব_৮ #রাজনীতি_রিলেটেড

0
181

#হাতটা_দাও_বাড়িয়ে
#অরিত্রা_অর্নি
#পর্ব_৮
#রাজনীতি_রিলেটেড

“নিজের বারান্দায় চুপ করে এতক্ষণ দাড়িয়ে ছিলো রিজন ।দাড়িয়ে দাড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিলো তখন ই চোখে পড়েছিল রাফিয়াকে । দেখে ডাকতে গিয়ে ও ডাকেনি
কারণ রাস্তায় কেউ একজনকে লক্ষ্য করেছিলো । সবটা দেখে রিজন অনেকটা খুশি হয় । মনে মনে বুনতে থেকে হাজারটা বুদ্ধি । পকেট থেকে ফোন বের করে কাউকে কল দেয় । কথা শেষ করেই নিজের রুমে চলে যায় ।

” বাড়ি ফিরে আহিল একটা লম্বা ঘুম দেয় । নির্বাচনের অনেক কাজ । ঠিক মতো ঘুমানো ও হয়ে উঠছে । রাফিয়াকে দেখাটা খুব জরুরী ছিল । দেখে নিয়েছে এইবার শান্তি ”

” সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে রাফিয়া ভার্সিটির উদ্যেশ্যে বেরিয়ে যায় । ক্লাস শেষ করে রাফিয়া আর রিপা রাস্তা দিয়ে হেটে হেটে বাড়ি ফিরছে । রাফিয়া প্রচুর কথা বলে আর রিপা তাই চুপ করে শুনে যায় । কাল রাতের কথা ও রিপা কে বলে দিয়েছে । যা শুনে রিপা হতবম্ব হয়েছে । আহিল এমন কাজ ও করতে পারে এইটা রিপার অজানা ছিল । তবে মনে মনে খুব খুশি ও হয়েছে । রাফিয়ার পাগলামি গুলো সামলাতে এক মাত্র আহিল ই পারবে । যদি ও রাফিয়া এইসব নিয়ে মোটেও ভাবে না তা ও রিপা জানে । ওদের কথার মধ্যেই একটা গাড়ি এসে ওদের সামনে থামে অনেকটা হুট করে এইভাবে সামনে গাড়ি আসায় ভয় পেয়ে যায় দুইজন ই । গাড়ি থেকে দুইজন লোক নেমে আসে ওরা কিছু বুঝে উঠার আগেই দুইজন লোক রাফিয়ার হাত টেনে ধরে গাড়িতে তুলতে চায় । রিপা একটা লোককে চেপে ধরে । রাফিয়া চিৎকার করতে শুরু করে রাস্তায় তেমন মানুষ না থাকায় কোনো লাভ হয় না এতে । রিপা যে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়ে রাফিয়াকে গাড়িতে তুলে নিমিষেই চলে যায় । রিপার এই মুহূর্তে নিজেকে সব থেকে বেশি অসহায় মনে হচ্ছে । কি করবে এখন সে ।
রিপা উঠে দৌড়তে শুরু করে । বাড়ি এসে সোজা মায়ের কাছে যায় রিপা ।

_ মা,,,

_ কি হয়েছে তোর । এইরকম করছিস কেনো ?

_ মা রাফিয়াকে কারা যেনো তুলে নিয়ে গেছে মা। আমার সামনে দিয়ে ( কাঁদতে কাঁদতেই বলে রিপা )

” কথাটা শুনে রিপার মায়ের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়ে । কে তুলে নিয়ে যাবে । আর কেউ যদি তুলে নিয়ে গিয়ে থাকে কি করবে এইবার ।কি জবাব দেবে রাফিয়ার বাবা মায়ের কাছে ”

_ কি বলছিস তুই । কারা তুলে নিয়ে গেছে । কি হয়েছে আমায় আগে খুলে বল।

” রিপা কাঁদতে কাঁদতে সবটা খুলে বলে । সব শুনে রিপার মা বুঝতে পারে না এখন তার কি করা উচিত । তার ছেলেকে দিয়ে যে কিছু হবে না এইটা তার জানা । অনেক ভেবে তিনি রিপাকে আহিলকে কল দিতে বলে । রিপা তাই ই করে ”
আহিল বসে আছে মিটিং এ । ফোন পাঞ্জাবির পকেটেই ছিলো । হুট করে ফোন ব্রায়বেট উঠে আহিল বেশ বিরক্ত হয় । তারপর ও নিজের মিটিং চালিয়ে যেতে থাকে । বার বার ফোন আশায় আহিল মিটিং শেষ না করেই একটি বাইরে আসে ।অপরিচিত নাম্বার দেখে বেশ অবাক হয় ।
ফোনটা রিসিভ করে আহিল ।

_ হ্যালো কে বলছেন ?

_ ভাইয়া আমি রিপা । ভাইয়া রাফিয়াকে কারা যেনো তুলে নিয়ে গেছে আমার সামনে দিয়ে । কথাটা নিয়ে চলে গেছে কিছু বুঝতে পারছি না । ( কাঁদতে কাঁদতে বলে রিপা )

” কথাটা শুনে আহিলের বুকটা কেঁপে উঠে । মনে হচ্ছে কেউ তার বুকে ছুরি চালিয়ে দিয়েছে । পুরো পৃথিবী মনে হচ্ছে সমান তালে ঘুরে চলেছে ”

_ কারা ছিলো কিছু জানো ?

_ না ভাইয়া তবে অনেকগুলো লোক ছিল গাড়িতে দুইজন লোক মুখ ঢাকা ছিলো ওরা এসে ওকে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তুলেছে ।

” আহিল কথাটা শুনেই চোখ মুখ খিচে ধরে । এই মুহূর্তে কোনোভাবেই দে ঝামেলায় জড়াতে চায়নি তবে এইবার এর সম্ভব হচ্ছে না । আহিল কিছুটা হলেও ও আন্দাজ করতে পেরেছে কি হতে চলেছে ”

_ কেঁদো না । আমি দেখছি আমি ওকে নিয়ে আসবো । রাখছি ।

” ফোনটা কেটে দিয়ে । আহিল শাওনকে কল করে । ওরা বাইরেই দাড়িয়ে ছিলো । আহিল এসেই গাড়িতে উঠে বসে সাথে শাওন সিয়াম ও বাকি কয়েকজন । ওরা বুঝতে পারছে না কি হয়েছে । কিন্তু আহিলের এমন ভয়ঙ্কর মুখ দেখতে কিছু বলার সাহস ও পাচ্ছে না ”

_ কি হইছে তোর । মিটিং শেষ না কইরা ই আইসা পড়লি কেন ? কই যাবি ।

” আহিল কোনো উত্তর দেয় না । গাড়ি চালিয়ে সোজা এসে দাঁড়ায় রিজনদের আড্ডা দেওয়ার জাগায় । ঐখানে রিজনরা বসে ছিলো । আহিলকে দেখে সবাই বেশ অবাক হলে ও অবাক হয় না রিজন । সে জানতো আহিল তার কাছে আসবে । আসার ব্যাবস্থা তো সে নিজেই করেছে । আহিল গাড়ি থেকে নেমে সোজা রিজনের সামনে গিয়ে দাড়ায় রিজনের কলার চেপে ধরে টেনে উঠায় ”

_ তুই করেছিস না এইসব । তুই ইচ্ছে করে করেছিস । তোর শত্রুতা আমার সাথে । ওই মেয়েটার সাথে না । শকুনের চোখ । আমি জানতাম তুই দেখে নিবি। তোর দেখার ই উচিত ছিলো। কিন্তু এইভাবে ছোটোলোকের মতো কাজ করবি এইটা ভাবিনি । তোর সমস্যা তো আমি আমার সাথে লোরে দেখা। রাফিয়ার গায়ে যদি একটা আঁচড় ও লাগে তোকে আমি জেন্ত কবর দিয়ে দিবো ।

“আহিল ভয়ংকর রেগে আছে তা ওকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে । তাই মুহূর্তে কেউই আগাচ্ছে না । বাঘ আর সিংহের লড়াইয়ে কারো যাওয়া ও উচিত না । সবাই চুপ এর মধ্যে জোড়ে হেসে উঠে রিজন ”

_ আজকে আমার শান্তি হচ্ছে । বিশ্বাস কর খুব শান্তি হচ্ছে । রাফিয়াকে আমি কিছু করবনা । আর করবো কি করে রাফিয়া তো আমার কাছেই নেই । আমার শুধু তোকে আঁচড় দেওয়ার ছিলো। এইযে যন্ত্রণায় ভুগছিস এইটা ই দেখার ছিলো ।

” আহিলের প্রচুর রাগ হয় । ওর ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য রাফিয়ার কোনো ক্ষতি করে দিবে না তো ”

_ কোথায় রেখেছিস ওকে ?

_ বলবো না । তোর না অনেক ক্ষমতা পারলে খুঁজে নে ( মুচকি হেসে বলে রিজন )

_ আবার বলছি কোথায় রেখেছিস । কর কাছে রেখেছিস । তুই আমার কোথায় হাত দিয়েছিস তোর নিজের ও জানা নেই ।

” আহিল বুঝতে পারছে রিজন ইচ্ছে করে এইসব করছে । এখন যতই বলুক না কেনো
রিজন কিছুতেই কিছু বলবে না । যা করতে হবে আহিলকেই করতে হবে । কিন্তু কিভাবে
করবে । কোথায় রেখে ওরা রাফিয়াকে । যদি রাফিয়ার কিছু হয়ে যায় । কাউকে ছাড়বে না আহিল কাউকে না ”

চলবে “””””’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here