#হাতটা_দাও_বাড়িয়ে
#অরিত্রা_অর্নি
#পর্ব_৫
#রাজনীতি_রিলেটেড
“সময় পেরিয়ে আরো দুইদিন । আজ রাফিয়াদের ভার্সিটির নবীন বরণ । রিপা আর রাফিয়া তৈরি হয়ে ভার্সিটির উদ্যেশ্যে বেরিয়ে পরে । রাফিয়ার আজ কেনো যেনো খুব ভালো লাগছে । আজ একটু সাজগোজ ও করেছে । একটা সাদা রঙের থ্রিপিস পড়েছে সাথে ঠোঁটে লাল লিপস্টিক আর চোখে কাজল কপালে ছোট্ট একটা কালো টিপ । ব্যাস এতেই রাফিয়াকে দেখতে বেশ সুন্দর লাগছে । রিপা ও একটু সাজগোজ করেছে ।
ভার্সিটির সামনে এসে রিকশা থেকে নেমে গেটের সামনে দাঁড়ায় ওরা । পুরো গেট ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে । দুইজনে একসাথেই ঢুকে গেট দিয়ে । ভেতরে ঢুকতেই রাফিয়ার চোখ বড় বড় হয়ে যায় । বিশাল আয়োজন করা হয়েছে । দেখে মনে হচ্ছে কোনো কনসার্ট হবে । রাফিয়ার মনটা খুশিতে নাচতে থাকে । রিপা আর রাফিয়া গিয়ে চেয়ারে বসে একটু পরেই অনুষ্ঠান শুরু করা হবে ।
_ এই রিপা । এইটা ভার্সিটির নবীন বরণ নাকি করো বিয়ে রে ?
_ হে তোর বিয়ে, আজকে তোকে বিয়ে দিয়ে দিবো ( হেসে বলে রিপা )
_মজা করিস না , এতবড় আয়োজন হয় নবীন বরনে ।
_ ধীরে ধীরে দেখতে থাক । আরো কতকিছু হবে ।
” রাফিয়া শুধু এইদিক ওইদিক দেখছে । ভার্সিটি ভর্তি ছেলে মেয়ে । মঞ্চে স্যাররা লাগাতার ভাষণ দিয়ে যাচ্ছে । এর মাঝে আরো একজনের সাথে রাফিয়া আর রিপার পরিচয় হয় । মেয়েটার নাম মারিয়া।
তিনজনে মিলে বসে গল্প জমিয়ে ফেলে । কথা বলার সময় রাফিয়া লক্ষ্য করে কি ওর দিকে তাকিয়ে আছে । রাফিয়া একটু নড়েচড়ে বসে । উড়না ঠিক করে নেয় । এত এত মানুষের মধ্যে কর চোখ এসেছে পড়েছে কে জানে । স্যাররা একের পর এক ভাষণ দিয়েই যাচ্ছে। এর মধ্যে আগমন ঘটে প্রধান অতিথি হাবিব আহমেদ এর । রাফিয়া তাকায় সেইদিকে । লক্ষ্য করে হাবিব আহমেদ এর পেছনে থাকা আহিলকে । আজও সাদা পাঞ্জাবি পড়েছে আর পেছনে সেই ছেলেগুলো ও থাকবেই ।তবে আজ কেমন যেনো একটু ভদ্র ভদ্র ভাব নিয়ে আছে ”
_ ওই লোকটাকে ভার্সিটির সবকাজে কেনো ডাকা হয় রে । দেখ আজকে কেমন ভদ্র সেজে আছে ( বলে রাফিয়া )
_চুপ থাক তুই । উনাকে ডাকবে তো কাকে ডাকবে । ভার্সিটি যাদের তাদের ই তো ডাকবে গাঁধী ।
” রাফিয়া একটা মুখ ভেংচি দিয়ে চুপ করে বসে থাকে । স্টেজ এর কোনায় বসে আছে আহিল । রাফিয়ার জন্যই এসেছে আজ ও তাছাড়া কখনোই এই ভেজালে সে আসতো না । দূর থেকে থেকে বসে বসে রাফিয়াকে দেখছে আহিল । এই মেয়েটাকে দেখলেই কেনো যেনো ওর বুকের মধ্যে শান্তি লাগে ।মেয়েটা যখন রেগে যায় দেখতে আরো বেশি সুন্দরী মনে হয় । তাই ইচ্ছে করেই আহিল ওকে রাগাতে চায় ।
এখন ও খুব ইচ্ছে করছে রাফিয়াকে গিয়ে এখন রাগিয়ে দিতে । কিন্তু এত এত মানুষের মধ্যে তা সম্ভব না । একটু পরেই স্যাররা চলে যায় শুরু হয় নাচ গান । মেয়েরা দলে দলে নাচছে । ছেলেরা গান গায়ছে । রাফিয়া ওরা ও আছে । এর মধ্যেই হটাৎ একজন ছেলে এসে রাফিয়াকে ডাক দেয় । রাফিয়া ডাক শুনে আসে পাশে তাকায় একটা ছেলে ওকে ডাকছে । রাফিয়া আস্তে করে ভির থেকে বেরিয়ে । ছেলেটার কাছে যায় ।
_আমাকে ডাকছেন ?
_জি আপনাকে এই চিঠিটা দিতে বলেছে একজন ( বলে চিঠিটা রাফিয়ার হাতে দিয়ে ছেলেটা চলে যায় )
” রাফিয়া বেক্কলের মতো ছেলেটার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে । চিঠিটার দিকে তাকায় । একটু দূরে এসে দাড়ায় । চিঠিটা খুলতে যাবে তার আগেই কেউ একজন সেইটা থাবা দিয়ে ওর হাত থেকে নিয়ে যায় । রাফিয়া অবাক হয়ে যায় তাকিয়ে দেখে আহিল । ওর হাতেই আছে চিঠিটা । রাফিয়ার প্রচন্ড রাগ হয় ।
_ আপনি । আপনি আমার হাত থেকে ঐটা নিলেন কেনো । এইটা কেমন অসভ্যতা । দিন ঐটা আমাকে।
” আহিল রাফিয়ার দিকে রাগী চোখে তাকায় । রাফিয়ার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় ভার্সিটির দুতলায় । রাফিয়া অনেক চেষ্টা করে ও আহিলের থেকে ছাড়া পায়না । নিচে অনুষ্ঠান থাকে এইদিকে পুরো ফাঁকা
আহিল রাফিয়াকে একটা বদ্ধ রুমে এলে দরজা বন্ধ করে দেয় । রাফিয়াকে দরজার সাথে চেপে ধরে । রাফিয়া ভয়ে কিছু বলতে ও পারছে না । এই প্রথম আহিলকে দেখে ভয় হচ্ছে রাফিয়ার ”
_ চিঠি নেওয়া হচ্ছে বাহ । প্রেম পত্র । খুব সখ প্রেম করার ধানিলঙ্কা । তাহলে আমার সাথে করো ।( কথাটা বলে আর জোড়ে চেপে ধরে রাফিয়াকে )
“রাফিয়া চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি । আহিল কথাগুলো বলে রাফিয়ার চোখের দিকে তাকায় । কাজল দেওয়া চোখে পানি এসে জমেছে । আহিলের বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠে । কেনো যেনো মনে হচ্ছে এই চোখ ওকে শেষ করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে । আহিলের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে । রাফিয়ার এমন চুপ করে থাকা আহিলের মনের যন্ত্রণা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে । রাফিয়ার চোখের দিকে আর তাকিয়ে থাকতে পারে না চোখ নামিয়ে নেয় । সরে দাঁড়ায় ”
_ কাজল চোখের মেয়ে আমি এমনিতেই তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছি । আরো শেষ করে দিও না । এই চিঠি নেওয়ার শাস্তি তুমার পাওনা রইলো ।
” কথাটা বলে রাফিয়ার দিকে আবার এগিয়ে যায় । ওর চুলগুলো ঠিক করে ঠিক করে দেয় । তারপর মুচকি হয়েছে বেরিয়ে যায় । রাফিয়া চুপ করে ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে । মানুষটা কি পাগল নাকি অন্য কিছু রাফিয়ার মাথায় ঢুকছে না । কিসব বলে গেলো । রাফিয়া নিজেকে ঠিক করে নিচে নেমে আসে । ভেতরে ভেতরে খুব ভয় পেয়েছে আজ ও ”
চলবে ,,,,,