#হাতটা_দাও_বাড়িয়ে
#অরিত্রা_অর্নি
#পর্ব_৬
#রাজনীতি_রিলেটেড
“আহিল দাড়িয়ে আছে একটা অফিসের সামনে । পুরো জায়গাটা মানুষ দিয়ে ভরা । দুটো দলে বিভক্ত কেউ আহিলের পক্ষে তো কেউ সাবেক এমপির ছেলে রুদ্রর পেক্ষে ।
রুদ্র চৌধুরী, সাবেক এমপি রাহিম চৌধুরীর ছেলে । রাহিম চৌধুরী অনেক বছর ধরে ক্ষমতায় ছিলেন তাকে হারানোর মতো কেউ ছিলো না । তবে হুট করেই হাবিব আহমেদ সেই ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে নিজের নামে করে নেয় । তাই বেশ আগের কথা । এর পরে আর রাহিম চৌধুরী ক্ষমতায় আসতে পারেনি । অনেক ঝামেলা ও করেছেন তিনি কিন্তু পেরে উঠেনি । কিন্তু এইবার যে তার ছেলেকে নিয়ে এসে মনোনয়ন নিবেন তা কেউ আশা করেনি । আহিল ও না । আহিল এইখানে এসেই জানতে পেরেছে । অফিসের ভেতরে আছেন হাবিব আহমেদ আর রাহিম চৌধুরী
কিছু সময়ের অপেক্ষা তারপর ই কাঙ্ক্ষিত
মার্কা কে পাবে জানা যাবে ।
আহিল ওইসব নিয়ে আপাতত মাথা ঘামাচ্ছে না । চুপ করে নিজের ছেলেদের নিয়ে দাড়িয়ে আছে । অন্য এক পাশে রুদ্র ও দাড়িয়ে আছে ।
_ ভাই ওই বেডা কই থিকা আইলো । আমি তো জানতাম ই না রাহিম চৌধুরীর পোলা ও আছে একটা ( বলে সিয়াম )
_ ওই রাহিম কোনোদিন ও শত্রুতা ছাড়বো না । চাচায় এইবার তোর দার করায়ছে । উনি উনার পোলারে নিয়া নিয়া আয়ছে ( বলে শাওন )
” ওদের কথা চুপ করে শুনে আহিল । কোনো উত্তর দেয় না । দূর থেকে ও রুদ্র কে পর্যবেক্ষণ করছে । কম্পিটিশন ছাড়া কি নির্বাচনে মজা আছে নাকি । এইবার হবে আসন নির্বাচন ”
_ওর ডিটেলস বের কর শাওন । আহিলের সাথে পাঙ্গা । সাহস তো আছে ।
_ ভাই সব হইয়া যাইবো তুমি চিন্তা কইরো না ।
” ওদের কথার মধ্যেই দেখে রুদ্র ওদের দিকে এগিয়ে আসছে । শাওন ওরা নড়েচড়ে দাড়ায় । আহিল ইশারায় ওদের শান্ত হতে বলে । রুদ্র এসে আহিলের মুখোমুখি দাড়ায় দুই পকেটে হার দিয়ে । আহিল ও পাঞ্জাবি ঠিক করে সোজা হয়ে দাড়ায় ”
_ তাহলে তুই সেই আহিল । বাবা বলেছিলেন তোর নাকি অনেক দাপট এই এরিয়াতে । এই কয়টা ছেলেপেলে নিয়েই এত দাপট। এতদিন তো একা রাজত্ব করে গেছিস । পারলে এইবার করে দেখা ( আহিলের কাঁধে হাত রেখে বলে রুদ্র )
” আহিল শান্ত মস্তিষ্কের মানুষ । তবে সেইটা কেউ রাগিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত ই । আহিল মুচকি হেসে রুদ্রেরে হাতটা চেপে ধরে ঘার থেকে নামায় । তারপর ঝাড়ি দিয়া হাতটা ছেড়ে দেয় । এর মধ্যেই সিয়াম দৌড়ে আসে ।
_ ভাই আমরা আমাগো মার্কা পাইয়া গেছি ।
” কথাটা শুনেই আহিল তাকায় রুদ্রের দিকে । রুদ্র হতবম্ভ হয়ে তাকিয়ে আছে সিয়ামের দিকে । আহিল রুদ্রের কাঁধে হাত রাখে । রুদ্র ফিরে তাকায় আহিলের দিকে ওর মুখে রাগ স্পট দেখা যাচ্ছে ”
_ আমি কি । আমার কি দাপট । আর আমার কতো ছেলেপেল এইটা তুই আস্তে আস্তেই টের পাবি । আর পারলে রাজত্ব নিয়ে দেখা ।
“কথাটা বলে চলে আসে আহিল । রুদ্র ঢায় দাড়িয়ে আছে । আহিলকে সহজ ভাবে নেওয়া যাবে না । রুদ্র এগিয়ে যায় রাহিম চৌধুরীর দিকে । তিনি আস্তে আস্তে হেঁটে এসে ছেলের পাশে দাঁড়ায় ”
_ আহিলের সাথে ঝামেলায় যাবে না আগেই বলেছি । ওকে দেখে যতটা সহজ মনে হয় ও ততটাই জটিল । বুদ্ধি আর নিজের শক্তি দিয়ে চলো । তাহলেই শুত্রুকে হারাতে পারবে ।
” রুদ্র দাড়িয়ে থাকে । ভীষণ বিচক্ষণ ছেলে রুদ্র । হার মানা পছন্দ না ওর কখনোই কোথাও হেরে যায়নি। এইবার ও হারবে না
নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবে লড়ার। রুদ্র ওর লোকজন নিয়ে বেরিয়ে যায় । আহিল ও চলে এসেছে । হাবিব আহমেদ ছেলের উপর বিশ্বাস আছে ।
” সন্ধ্যায় রাফিয়া বারান্দায় চা নিয়ে বসে আছে দোলনায় । হাতে একটা গল্পের বই । হুমায়ন আহমেদ এর । হটাৎ ই ওর কানে আসে জোড়ে জোরে চিৎকার এর আওয়াজ । রাফিয়া উঠে দাড়ায় । বারান্দার গ্রিল ধরে দাড়ায়। শব্দ শুনে রিপা ও এসে দাঁড়ায় রাফিয়ার পাশে । কিছু বাচ্চা ছেলেরা মিছিল করছে ।
_ শিরায় শিরায় রক্ত আমরা আহিল ভাইয়ের ভক্ত । এক বড় না দুই বড় আহিল ভাইয়ের মন বড় । আহিল ভাইকে দিকে ভোট শান্তি পাবে দেশের লোক ।
” এমন কথা শুনে রাফিয়া হাসবে নাকি কাঁদবে বুঝতে পারছে না । রিপা ও হাসছে
রাফিয়া কিছুতেই হাসি থামাতে পারছে না ”
_ আর কতো হাসবি । হাসি জমিয়ে রাখ। সব হাসি তো শেষ হয়ে যাবে ( পেছন থেকে বলে রিপার মা )
” সাথে সাথে রাফিয়া আর রিপা হাসি বন্ধ করে চুপ করে দোলনায় বসে পড়ে । রিপার মা যেতেই আবার দুইজনে এক সাথে হেসে উঠে ”
_ ওরা এইসব বলে মিছিল করছে কেন ?
_ আজকে নির্বাচনের মনোনয়ন দিয়েছে । মানে মার্কা । আমাদের এইখানে প্রতিবছর দুটো মার্কা নিয়ে দুইপক্ষ ভোটে দাড়ায় । আহিল ভাই তো এইবার ভোটে দাঁড়িয়েছে । এই কয়দিন এমন কতো মিছিল মিটিং দেখবি ঠিক নেই ।
_ ওই বজ্জাত লোককে ভোট দেবে কে ?
_ সবাই । দেখিস আহিল ভাই ই পাশ করবে ।
_ ছাই করবে । উনার বিপক্ষ দলে কে দাঁড়িয়েছে ।
_ রিজন ভাইয়ার বন্ধু রুদ্র । উনি দাঁড়িয়েছে ।
_ তাহলে আমি উনার পক্ষে ।
“রিপা রাফিয়ার পিঠে একটা ঘুষি মেরে দেয় ”
_ ভালো জিনিষ চিনতে শিখ গাঁধী ।
_ তোর ওই আহিল ভাই ভালো না ।
_ অনেক ভালো । একদিন ঠিক ই বুঝবি ।
_ আমি কেনো বুঝবো ( ভেংচি কেটে বলে রাফিয়া )
_ মানুষ যাকে সব থেকে বেশি অপছন্দ করে । তার সাথে ই জরি বেঁধে দেয় । তোকে ও দেবে দেখিস ।
” কথাটা বলে রিপা চলে যায় । রাফিয়া ভাবতে থাকে। সত্যি ই কি এমন কিছু হয় । ওই বজ্জাত লোকের সাথে যদি বাধা পরে তাহলে কি হবে রাফিয়ার ”
চলবে ,,,,,