কার্নিশ_ছোঁয়া_অলকমেঘ লেখনীতে: মিথিলা মাশরেকা ৪.

0
170

#কার্নিশ_ছোঁয়া_অলকমেঘ
লেখনীতে: মিথিলা মাশরেকা

৪.

– অন্তু ভাই তোমাকে ঠকাইনি তাথৈ। তুমি নিজে হারিয়েছো তাকে।

অতি সাবলীলভাবে কথাটা বললো সামনের মেয়েটা৷ ওর নীমিলিত চোখে চোখ রেখে টেবিলে রাখা দুহাত মুঠো করে নিলো তাথৈ। মেয়েটা ওর থেকে চোখ নামিয়ে নিলো। দুদন্ড এদিকওদিক তাকিয়ে আবারো দৃষ্টি তুলে বললো,

– সবাই জানছে, ভার্সিটির নজরকারা জুটিটা শেষ হওয়ার জন্য দায়ী অন্তু ভাই। সত্যিই কি তাই তাথৈ?

– মন থেকে বলোতো? তোমাদের বিচ্ছেদের জন্য কি ভাই দায়ী? সে কি সত্যিই তোমাকে ঠকিয়ে অন্যকাউকে বিয়ে করে নিলো? নাকি ঠকে যাওয়া থেকে বাচতে তোমার থেকে দুরে সরে গেলো? কোনটা?

– স্টপ ব্লেমিং মি আলো! আমার সহ্য হচ্ছে না তোমার এইসব কথা।

বলে বড় একটা দম ছাড়লো তাথৈ। রাগে রীতিমতো কাপছে ও। আলো ক্ষুদ্রশ্বাস ফেললো। দুনিয়াতে ওই একটা মানুষ, যার সাথে এখনো অবদি তাথৈ উচ্চস্বরে কথা বলেনি। প্রথম সেমিস্টারের রেজাল্ট পর, ডিপার্টমেন্টে তৃতীয় স্থান দখল করা মেয়েটা আলো। তার আগঅবদি ওকে কেউ না চিনলেও, রেজাল্টপর সবার পরিচিতমুখ হয়ে ওঠে ও। তবে তাথৈয়ের সাথে ওর কথাবার্তার শুরুটা আলাদাভাবে হয়েছিলো। একবার পরীক্ষার প্রশ্নে টপিকের বাইরে থেকে কিছু প্রশ্ন এসেছিলো৷ পুরো ক্লাসে হুল্লোড় পরে গেলেও, সবগুলো প্রশ্নের উত্তর লিখেছিলো তাথৈ। বাকিসবের উন্মাদনা দেখে পরীক্ষার একঘন্টা পেরোনোর পর পরীক্ষক এসে প্রশ্ন শুধরে দেন। সাথে অতিরিক্ত সময়ও বরাদ্দ করেন। কিন্তু তাথৈয়ের তাতে অমত ছিলো। ওর অন্য দরকারী কাজ আছে৷ অতিরিক্ত একঘন্টা পরীক্ষা দেবে না ও। তাই ও আগের প্রশ্নেই পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলো। পরীক্ষক বাধ সাধলেন। এক তাথৈকে আলাদা প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে দেবেন না উনি। অনেকবার বলার পর এক পর্যায়ে তাথৈয়েররাগটা এতোবেশি বেড়ে গিয়েছিলো যে, পরীক্ষার খাতা ছিড়ে ফেলে বেরিয়ে যায় ও।
পুরো ক্লাস হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে ছিলো শুধু। কিন্তু আলো বসে থাকেনি। ওয়াশরুমের কথা বলে বেরিয়ে আসে ও। ছুটে এসে তাথৈয়ের পথ আগলে দাড়ায়। ভ্রুকুটি করে ওরদিক তাকিয়ে ছিলো তাথৈ। আলোর মুখটা পরিচিত লাগেনি ওর সেদিন। আলো জানতে চায়, ও কেনো বেরিয়ে আসলো। ঠিক সেসময়ই তাথৈর ফোনে কল আসে একটা। জবাব না দিয়ে ফোন কানে তোলে ও। আলোকে পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে ফোনে বলে, ‘হ্যাঁ। আসছি আমি। যতো ব্লাড লাগে দেবো। সমস্যা নেই।’
রগচটা মেয়েটাকে সেদিন কেবল বিস্ময় নিয়ে দেখেছিলো আলো। আর বিস্ময়ে মিশে ছিলো সীমাহীন মুগ্ধতা। ক্লাসের আরোকিছু ছেলেমেয়েকে নিয়ে সোজা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে চলে যায় আলো। তাথৈয়ের হয়ে ওর পুনরায় পরীক্ষা নেবার জন্য আবেদন করে। আর ওর সে আবেদন মন্জুরও হয়। আলোর অনাকাঙ্ক্ষিত কাজটা দমিয়ে দেয় তাথৈকে। পরিচয় হয় ওদের। তাথৈ জানতে পারে, নিম্নবিত্ত পরিবারের মেঝো মেয়ে আলো টিউশনি করিয়ে একাধারে নিজে পড়ছে, ছোটবোনকে পড়াচ্ছে, বাড়িতে মা বোন বাবার ভরনপোষণ করছে। তারপর থেকে আলো হয়ে ওঠে ওর সম্মানের নাম। এক এবং একমাত্র। ঘরে-বাইরে সব মিলিয়ে তাথৈ যার কথা কান পেতে শোনে, সেটা আলো। আজও তার বিপরীত হলোনা৷ নোটস নিতে সেমিনারে এসে আলোর একটাএকটা কথা শুনলো তাথৈ। ছলছল চোখে চেয়ে বললো,

– আমার ভুলটা কোথায়?

টুপটাপ জল গরায় তাথৈয়ের চোখ থেকে। আশপাশে তাকায় আলো। লুকিয়েচুরিয়ে হলেও সবাই কমবেশি তাথৈকেই দেখছে। এতোগুলো দিনে যাকে না হাসতে দেখেছে, না কারো কথায় চুপ থাকতে, সেই মেয়েটা আজ প্রকাশ্যে কাদছে। তাথৈয়ের মুঠে করা হাত মুঠো করে নিলো আলো। নমনীয় কন্ঠে বললো,

– লাভ ইউ টু বলার পরিবর্তে, শেষ কবে নিজে থেকে অন্তু ভাইকে ভালোবাসি বলেছো? ছ মাসে একবারো বলেছিলে?

প্রশ্নটা শুনেই তাথৈ আলোর থেকে দৃষ্টিচ্যুত করলো। নিরবতার জবাব বুঝে নিলো আলো। আবারো বললো,

– শেষ কবে অন্তু ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে ভাইকে মিস করেছো? কবে তার জন্য নিজেকে সাজিয়েছো? কবে তাকে বলেছো তোমাকে নিয়ে বেরোতে? কবে তার বলার আগে বলেছো লাভ ইউ? নিজে থেকে কখনো তাকে গিয়ে বলেছো, তুমি তাকে ভালোবাসো?

– উই হ্যাড রিলেশনশিপ।

জবাব দিয়ে আলোর হাত থেকে হাত সরিয়ে নিলো তাথৈ। আলো সামনে থেকে উঠে টেবিল ঘুরে এসে তাথৈয়ের পাশের চেয়ারটায় এসে বসলো। আবারো ওর হাত মুঠো করে নিয়ে বললো,

– হ্যাঁ। কেবল একটা সম্পর্ক ছিলো তোমাদের। যেটাতে ভালেবাসা ছিলো শুধু অন্তু ভাইয়ের আর তোমার কেবল সঙ্গ ছিলো। তার বেশি কিছুনা। ভাই তো ভালোবেসেছিলো তোমাকে, কিন্তু তুমি তাকে ভালোবাসোনি। নিজেকে একম্পানিড বুঝাতে তাকে হ্যাঁ বলেছিলে শুধু। এটা তুমিও জানো।

তাথৈ চুপ। আলো ওর চোখের কোনা মুছে দিলো। উঁকি দিয়ে ওর শক্তপোক্ত মুখটা দেখে নিলো একবার। তারপর থুতনি ধরে ওকে নিজের দিকে ঘোরালো। বললো,

– ভালোবাসা নামক চার অক্ষরের শব্দটা অনেক জটিল তাথৈ। এই চার অক্ষের শব্দে মানুষ নিঃস্ব হয়, দিশেহারা হয়। এই চার অক্ষরের শব্দ মানুষকে সব করতে শেখায়। নিজেকে গড়তে, পৃথিবীর সব নিয়মকে ভাঙতে, সব! এই চার বর্ণের অনূভুতি তোমায় চারবার মৃত্যুপরিমান যন্ত্রণা দেবে, আবার চারবার নবজন্মের সুখ দেবে। এতো সহজে ভালোবাসা হয়না। লাভ ইউ এর বিপরীতে লাভ ইু টু বললেই ভালোবাসা হয়না। আর ভালোবাসলে, তাকে ঘৃণা করা যায়না। থমকে যেতে হয়। ওই একজনে আটকে যেতে হয়। আজন্মের তরে।

– যে অনূভুতি আমাকে আটকে দেবে, সে বিশ্রি চারবর্ণের অনুভূতির কোনো প্রয়োজন নেই আমার আলো। ভাগ্যিস আমি ভালোবাসতে জানিনা!

আলোর হাত সরিয়ে দিয়ে বই নিয়ে উঠে আসছিলো তাথৈ। আলো পেছনে বসা থেকে বলে উঠলো,

– সেটা তো ভাবছি, যেই তুমি ছুটেছো ভালোবাসবে না বলে, সেই তুমি যখন কাউকে ভালোবাসবে, তা কতোটা ভয়ানক হবে। ভদ্রলোক নিসন্দেহে ভাগ্যবান!

তাথৈ আর একমুহুর্ত দাড়ালো না। দ্রুতপদে বেরিয়ে আসলো ওখান থেকে। মুলভবন থেকে বেরোতেই দেখে রুমন সামনের সিড়িতে বসে। নেইলকাটার দিয়ে ও বা হাতের নখ পলিশ করছে আর ফুঁ দিচ্ছে। ঠিক পাশেই জিন্স-চেক শার্ট পরিহিত শার্লি দাড়ানো৷ দেয়ালে একপা পা ঠেকিয়ে দাড়ানো। ডানহাতের বৃদ্ধাঙ্গুল প্যান্টের পকেটে বাঝিয়ে, বিরক্তি নিয়ে নখের প্রতি রুমনের যত্মশীলতা পরখ করছে ও। তাথৈ এগোলো। ওকে দেখেই কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে, সোজা হয়ে দাড়ালো শার্লি। তাথৈ আগেরদিন ম্যাসেজ করে স্পষ্ট জানিয়েছিলো, ‘কাল ক্যাম্পাসে যাবো। তোদের দুটোকে আমার ধারেকাছেও যেনো না দেখি।’ শার্লি মানলেও মানেনি রুমন। শার্লি জানতো, তাথৈ নোটস নিতে সেমিনারে যাবে। দুইবছরের ভার্সিটি জীবনে সেখানে একবারের জন্যও উঁকি দেয়নি ও। কিন্তু রুমনকে নিয়ে আজ ঠিকি চলে এসেছে। তাথৈয়ের চাওনি দেখে কিছুটা জড়োসড়ো হয়ে গেলো শার্লি। আমতা আমতা করে বললো,

– অব্…আ্ আমি কিছুই জানিনা। রুমন নিয়ে এসেছে আমাকে।

এতোক্ষন নিজের মতো ব্যস্ত থাকলেও, শার্লির কথায় ঘাড় তুললো রুমন। তাথৈকে দেখেই ফোকলা একটা হাসি দিলো। ওর রাগকে মাথাচাড়া দেওয়ার আগেই থামিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বললো,

– ত্ তোকে আজ দেখতে অনেকসুন্দর লাগছে তাথৈ! একদম বার্বি!

তাথৈয়ের মেজাজ যেনো আরো বিগড়ে গেলো। ডানহাতে বইখাতা থাকায় বাহাতে রুমনের মাথায় মার লাগালো ও। ঝোঁক সামলাতে না পেরে, সিড়িতে বসা অবস্থা থেকে মুখ থুবড়ে নিচের ঘাসের মধ্যে গিয়ে পরলো রুমন। এমনিতেও ওজন কম বলে বাতাসের আগেআগে ছোটে ও। তারওপর এই মুহুর্তে তাথৈয়ের মারের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। গায়ে একটু বল পরতেই সবটা সম্মুখমুখী ত্বরণ দেখিয়ে দিয়েছে। রুমন পরতে পরতে পরতে মেয়েলী ভঙ্গিতে গেয়ে উঠলো,

– মার ডা’লা…আল্লাহ…মার ডালা…

তাথৈয়ের পায়ের তলা গরম হয়ে গেলো। শুধু ক্ষান্ত হলোনা রুমন। ঘাসের মধ্যে মুখ গুজে রেখে আবারো বলে উঠলো,

– আহ্! এ কোথায় ফেললি আমাকে তাথৈ! আহ কি সুবাস! এ তো মাটি নয়, যেনো মমতাময়ী মা!

– বেশি পছন্দ হলে বল, একেবারে মাটিতে মিশিয়ে দেবার পর্যায়ে পাঠিয়ে দেই।

তাথৈয়ের কড়া কথায় রুমন মাথা তুললো। মুখ বাকিয়ে কাধের ব্যাগ থেকে ছোট আয়না আর টিস্যু বের করলো ও। চেহারা দেখে মুখে লেগে থাকা মাটি মুছতে মুছতে বললো,

– এক চুটকি মিট্টি কি কিমাত, তুম কেয়া জানো তাথৈ আলফেজ। তোর ভাই বললো তার থেকে দুর থাকতে। তুই শার্লিকে বলেছিস তোর সামনে না আসতে। দুভাইবোন মিলে উল্টাপাল্টা ডায়লগ কেনো দিস? আমি দেবদাস নই। আ’ম ড্রিমগার্ল। ওকে?

শব্দ করে হেসে দিলো শার্লি। তাথৈ শীতল দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকালো। যার মানে, আমার জীবনের এমন চুড়ান্ত অশান্তির মাঝে তুই রুমন নামক অশান্তিকেও দাওয়াত করে এনেছিস। শার্লি হচকিয়ে যায়। এমনিতে রুমনের মার খাওয়াটা নতুন কিছু না। ও আর তাথৈ দুজনে মিলে নিয়মিত মার লাগায় ওকে। কিন্তু আজ তাথৈ ওর ওপরও ক্ষেপেছে। ছেলেদের মতো বেশভুষার জন্য চেনাপরিচিতরা ওকে বেশ সাহসী বলেই জানে। কিন্তু ও জানে, তাথৈ ওর সব সাহসের খন্ডন করতে পারে। ভীতিগ্রস্ত চোখে তাথৈয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো শার্লি। একটুখানি নড়েচড়ে বারান্দার পিলারের সাথে লেপ্টে দাড়ালো ও। একটা শুকনো ঢোক গিলে বললো,

– আ্ আমি কিন্তু বাসায় পুশআপ করি তাথৈ। বাইসেপস আছে আমার।

– পরশু মিড। এক্খন লাইব্রেরীতে গিয়ে পড়তে না বসলে তোর বাইসেপস গুড়োগুড়ো করে দেবো আমি।

দাঁতে দাঁত চেপে বললো তাথৈ। শার্লি আরেকবার ঢোক গিললো। ঠিকঠাকমতো দাড়িয়ে, তাথৈয়ের হাতে থাকা বইগুলোর দিক উকি দিলো ও। বললো,

– কোন কোর্সের মিড?

– জু-জিওগ্রাফি।

পুরুষালি আওয়াজ শুনে পেছনে তাকালো তাথৈ। শার্লি, রুমনও ওর পেছনে উকি দিলো। তুল্যকে দেখে এমনিতেও রাগ হয় তাথৈয়ের। কিন্তু ওর শক্ত চোখে তাকিয়ে রইলো তুল্যর হাতের সিগারেটটার দিকে। তুল্য সিগারেট মুখে তুলে টান দিলো একটা। ধোয়া ছেড়ে বোনের দিকে তাকালো। বিজ্ঞদের মতোকরে বললো,

– এইসব ব্যাকবেঞ্চার ছেলে, মেয়েদের সাথে মিশলে সিজি কম আসবে, এটাই স্বাভাবিক। ব্যাপার না সিস, আই ক্যান ফিল ইওর পেইন!

ছেলে বলার সময় শার্লি, আর মেয়ে বলার সময় রুমনের দিক ইশারা করেছে তুল্য। কপালের সামনে একটাও চুল না থাকা সত্ত্বেও রুমন আঙুলে কানে চুল গুজে দেওয়ার মতো ভাব নিলো একটা। লজ্জা পেয়ে দৃষ্টিও নামিয়ে নিলো। কিন্তু শার্লির মন চাইছিলো তুল্যর মুখ বরাবর ঘুষি ছুড়তে। কিন্তু ও খুব ভালোমতোই জানে, এমনটা করলে তুল্য গতদিন যেভাবে রুমনকে করিডোর থেকে ফেলে দিচ্ছিলো, তেমনভাবে আজ ওকেও চ্যাঁঙদোলা করে ড্রেনে ফেলে দেবে। দুবার ভাববে না। তাই ও তাথৈয়ের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষায় রইলো চুপচাপ। তাথৈ একপা এগোলো। তুল্যর চোখে চেয়ে, স্পষ্ট গলায় বললো,

– তোর মনে হচ্ছে না তুই মাত্র পয়েন্ট জিরো থ্রি বাড়তি সিজি নিয়ে ওভারকন্ফিডেন্স দেখাচ্ছিস?

– আমার রেজাল্ট তোরচেয়ে ভালো, আর আলফেজ ইন্ডাস্ট্রির টোটাল হান্ড্রেড পার্সেন্টের ওনার তাথৈ আলফেজ, এই দুইটা দেখার আগে মরিস না। অল দ্যা বেস্ট।

তুল্য নিজের হাতে জ্বলতে থাকা সিগারেটটার দিকে তাকালো। তাথৈ ওকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। শার্লিও আড়চোখে চেয়ে ওকে দেখে নিয়ে চললো তাথৈয়ের পেছন পেছন। রুমন বসা থেকে উঠে দাড়ালো এবারে। ব্যাগটা কাধে নিয়ে, তুল্যর বরাবর দাড়ালো। ওর বুকের দিক হাত বাড়িয়ে চিরাচরিত জড়ানো আওয়াজে বললো,

– সিগারেট ছোড় দো তুল্যবাবু।

– তোর এই গা জ্বালানো কথাসমেত তোকেও আজ এই সিগারেটের আগুনে জ্বালিয়ে দেবো দাড়া!

তুল্য তেড়ে এগোচ্ছিলো। ‘ওহ নো!’ বলে ছুট লাগায় রুমন। তুল্য দেখলো হাত নাড়াতে নাড়াতে ছুটছে রুমন। কয়েকসেকেন্ডের ব্যবধানে পাটকাঠির মতো শরীরটা ওর দৃষ্টিসীমার আড়াল। অনেকটা হাওয়ায় মিশে যাওয়ার মতো। সব ভুলে হাতের সিগারেটের দিকে তাকালো তুল্য। ওর ঠোঁটের কোনে কিঞ্চিৎ হাসির রেশ ফোটে। সিগারেটটা আবারো মুখে পুরে কয়েকটানে শেষ করলো ওটা। হাটা লাগালো টংয়ের দিকে। আজ আরোদুটো সিগারেট বেশি খাবে ও।

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here