#বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤
#Written_By_Mêhèriyâr_Mêhèr
#Part: 33…….
এভাবেই কেটে যায় ৩মাস। এই তিন মাসে তীব্র তুরের সামনে যায়নি। এমনকি তীব্র নামে কেউ আছে সেটা কেউ তুরকে মনে করিয়ে দেয়নি। তীব্র তিন মাসে দুর থেকেই তুরকে দেখেছে। প্রয়োজনীয় সব কিছুই তুরের কাছে পৌঁছে দিয়েছে তীব্র। তুর যেন কিছু বুঝতে না পারে, তার সব দিকেই খেয়াল রেখেছে তীব্র। তুরকে চোখে চোখে রাখার জন্য তোয়া ওর সাথেই থাকে।
তুর এই তিন মাসে এমনিতে ক্ষনিকের জন্য উত্তেজিত হয়নি। শুধুমাত্র তীব্রের কথা মনে হলেই ওকে সামলানো দায় হয়ে পরত। সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। তুর তীব্রের সাথে কাটানো স্মৃতি গুলো একটু একটু করে ভুলতে বসেছিল৷ নিজের স্বাভাবিক লাইফের দিকে এগিয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু কথায় আছে না। সত্যিকে বেশি দিন লুকিয়া রাখে যায় না। আর হলো তাই। একটার মেয়ের থেকে কিভাবে লুকিয়ে রাখবে সে মা হতে চলেছে। তুরের বেলায় তার ব্যতিক্রম হলো না। তিন মাসের মাথায় নিজের শারীরিক কন্ডিশন দেখে বুঝতে পারল যে ওর প্রেগন্যান্ট। আর তখনি শুরু হল পাগলামী। আর সেটা এমনি যে কেউ শান্ত করতে পারল না। শেষে বাধ্য হয়েই তোয়া তীব্র কে ফোন দিল। তীব্র ফোন পেয়ে আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করল। ছুটে গেল তুরের কাছে। রুমে ঢুকতেই দেখে তুর পাগলের মত উত্তেজিত হয়ে পরছে। ওকে দেখেই তুর চিতকার করে বলে উঠে,
—— ” এই লোকটা এখানে কি করছে? চলে যেতে বলো সহ্য করতে পারছিনা আমি ওনাকে। ”
তুরের বাবা মেয়েকে সামলাতে সামলাতে মিনতির সুরে তীব্রকে যেতে বলল। কিন্তু তীব্র বুঝতে পারল ও গেলে তুর শান্ত হবে না। বরং আরো ভাইলেন্ট হয়ে নিজের ক্ষতি করতে চাইবে। ও পিছু হেটে যেতে যেতে দেয়ালে লেগে গেল। দেয়ালে একপা তুলে চোখটা বন্ধ করে নিল। তারপর নিজের চোখ বন্ধ করে নিল। তুরের প্রেগ্ন্যাসির পাঁচ মাস হতে চলেছে। আর তাই ওর শরীরে মা হওয়ার লক্ষন প্রকাশ পাচ্ছে। তীব্র না হয় চলে গেল, কিন্তু তারপর? তারপর কী? ও যে বাচ্চার জন্য নিজের ক্ষতি করতে চাইবে।
বেবি দুনিয়ায় আসতে এখনও ৫মাস বাকি আছে। আর যাই হোক তুর না চাইলে তো আর এই বাচ্চাটাকে সেইভলি দুনিয়ায় আনতে পারবে না। ধরে বেধে তো আর মাসের পর মাস রাখা যাবে না। তাই মা হওয়ার ইচ্ছেটা তুরের নিজের হতে হবে।
চোখ বন্ধ করে এসব ভাবছিল তীব্র তখনি আবার তুর জোরে চিল্লিয়ে উঠে,
——– “এখনো যাননি আপনি? ”
তুরকে ধরে রাখা যাচ্ছে না। তুরের বাবা মিনতি করেই তীব্রকে যেতে বলে। কিন্তু তীব্র না গিয়ে পাথরের ন্যায় নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে। তুরের মা বেশ ঝাঝালো কন্ঠেই বলল,
——- ” যা করেছ তাতেও কী তোমার মন ভরে নি? এখন কি আমার মেয়েটাকে প্রানে মারতে চাইছ? অনেক করেছ এবার যাও। ”
তোয়া তীব্রের কাছে যায় গিয়ে অস্থির হয়ে তীব্রকে বলে,
——- ” প্লিজ আপনি এখন যান। দেখতেই তো পাচ্ছেন ওর কী অবস্থা? প্লিজ চলে… ”
ওর কথা শেষ হবার আগেই তীব্র শান্ত গলায় বলল,
—— ” তুমি আংকেল আর আন্টিকে নিয়ে বাইরে বেড়িয়ে যাও। আমার তুরের সাথে কথা বলতে চাই। ”
তীব্রের কথায় তোয়া বেশ অবাক! তুর ওকে দেখতে চাইছে না। আর ও কিনা তুরের সাথে কথা বলতে চাইছে।
——- ” আপনি কী বলছেন? তুর আপনার সাথে কথা বলতে চাইছে না। আর আপনি?”
—— ” প্লিজ যাও। ”
তোয়া যেতে চাইলেও ওর বাবা-মা নারাজ। তারা যেতে চাইছেন না। তখনি তীব্র হাত জোর করে ওদের কাছে মিনতি করে,
——- ” প্লিজ কিছুক্ষনের জন্য হলেও আমাকে ওর সাথে কথা বলতে দিন। আমার দরকার ওর সাথে কথা বলার। তুর যেমন আপনাদের মেয়ে, আপনাদের সন্তান। ওর ভিতর যে বেড়ে উঠছে সেও আমার সন্তান। প্লিজ…. ”
কথাটা তুরের মা-বাবার মনে আঘাত করল। ওনারা চাইছিলেন না তুর এই বাচ্চার জন্ম দিক। কিন্তু একটা প্রানের হত্যা করতে চায় না। আর যে আসছে সে তুরের অংশ। যদিও তুর সেটা বুঝতে পারছে না। কিন্তু তারা তো অবুঝ না।
আর এখন তীব্র ওনার মেয়েদের ক্ষতি করবে না। সেই ভরসাটুকু তীব্র জোগাড় করতে পেরেছে। তাই ওনারা না চাওয়া সত্ত্বেও বাইরে চলে গেল। ওরা বাইরে যাওয়া মাত্রই তীব্র দরজা বন্ধ করে তুরের দিকে তাকাল। তুর রাগে ফুসছে। তীব্র ধীর পায়ে ওর দিকে এগোতেই তুর হাটু দিয়ে হেটে বিছানায় থেকে নিচে নামতে চায়। কিন্তু নিচে নামার আগেই তীব্র ওর সামনে দাঁড়ায়৷ নিজের সামনে তীব্রকে দেখে ও সামনে থেকে ওকে সরাতে চায়। কিন্তু তীব্র ওর দিকে তাকিয়ে শান্তভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তুরের রাগ বেড়ে যায়। আর ও সর্বশক্তি দিয়ে তীব্রের বুকে অসংখ্য কিল ঘুশি মারতে থাকে। তীব্র হাত মুঁঠোয় করে ঠোঁট কাঁমরে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে।
তুর মারতে মারতে এক পর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে গেলে তীব্র ওর হাত ধরে নেয়। কিন্তু তবুও হার মানে না। হাপাতে হাপাতে বলে,
——- ” ছাড়ুন আমাকে। ”
তীব্র আর কিছু না বলে ওকে জড়িয়ে ধরে। তুরের হাতগুলো ওর পিছে তীব্র আটকে রেখেছে যা ক্রমাগত ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করছে।
হঠাৎ করেই তীব্র লাইটের সুইচ অফ করে দেয়। ব্যাপারটা দেখে তুর ঘাবড়ে গেল। তুর আরো মরিয়া হয়ে পরল ছাড়া পাওয়ার জন্য। কিন্তু তীব্র ওকে ছাড়ল না বরং তুরের হাত ছেড়ে একহাত দিয়ে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে বা হাত দিয়ে ঘাড়ের চুল সরিয়ে কানের নিচে গলার গভীর ভাবে একটা কিস করে। তীব্রের থেকে ছাড়া না পাওয়াতে ওর পিঠে ইচ্ছেমত খামচাতে শুরু করে। কিন্তু তাতে তীব্র কোন রিয়েক্ট করে না। এটা দেখে তুর একসময় ক্লান্ত হয়ে পরে।
তীব্র যখন বুঝতে পারে তুর ক্লান্ত হয়ে গেছে তখন ও তুরের ঘাড় থেকে ঠোঁট সরিয়ে বিছানার পাশে থাকা টেবিল লাইটটা জ্বালায়। কিছুটা আলো ছড়িয়েছে। তীব্র নিজের বুক থেকে ক্লান্ত তুরের মুখটা তোলে। তুরের চোখ দুটো ছোট হয়ে এসেছে। তীব্র আলত করে ওর চোখে ঠোঁট বুলায়। তুর এবার নরম সুরে অনেকটা অভিমানি কন্ঠে কেদে উঠে বলে,
——– ” আপনাকে আমি যেতে বলেছি না।”
——– ” আমি গেলে তুমি শান্তি পাবে তুর? কই আমি তো দেখিনি। আমার থাকাতেও তুমি শান্তি পাওনা। আর আমি চলে গেলেও পাও না। তাহলে অশান্তি নাহয় আমার সাথে থেকেই পাও। ”
——- ” আপনার কোন কিছুই আমার ভালো লাগে না। ছাড়ুন আমাকে। ”
—— ” আমাকে পছন্দ করো না কেন? ”
—— ” কারন আপনি একটা খারাপ লোক। আপনি সবসময় কষ্ট দেন আমাকে। ”
—— ” আমি খারাপ লোক তাই তুমি আমার সাথে থাকতে চাও না। তাই না। ”
—— ” হুম।”
তুরের কথায় একটা দীর্ঘ শ্বাস বেড়িয়ে আসে তীব্রের ভিতর থেকে। ও তুরকে কোলে তুলে বিছানায় পা নামিয়ে বসায়।নিজেও হাটু গেড়ে মেঝেতে বসে। তারপর ওর হাত ধরে তুরের চোখে চোখ রাখে। শান্ত ভাবে বলে,
——- ” আমি জানি তুর আমি দুনিয়ার সবচেয়ে খারাপ মানুষ। কিন্তু তুমি কি জানো সবচেয়ে ভালো মানুষ কে? ”
তীব্রের কথায় বুঝতে পারে ওর দিকে মনোযোগী হয়েছে। তীব্র ছলোছলো চোখে বলে,
——– ” একজন মা। একজন মা দুনিয়ার সবচেয়ে ভালো মানুষ হয়।কারন তার সন্তান যতই খারাপ হোক না কেন সে কোনদিন তার সন্তানকে ছেড়ে দিতে পারেনা। ”
তুর শান্ত চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। তীব্র আবার বলে,
——– ” এই যে আমি তোমার কাছে এতটা খারাপ। কিন্তু তুমি যদি জানতে পারো আমার মা আমাকে কষ্ট দিয়েছি তুমি কি তখন আমাকে বকবে না আমার মাকে? ”
——- ” আপনার মাকে। ”
——- ” কেন? ”
——- ” কারন সন্তান যতই খারাপ হোক মা কখনো তাকে ছেড়ে দেয় না। ”
এইটা শুনে তীব্র একহাত দিয়ে ওর হাত দুটো ধরে আরেকহাত দিয়ে তুরের গাল স্পর্শ করে বলে,
—— ” তাহলে তুমি কেন নিজেকে খারাপ মা বানাচ্ছ। এইজন্য যে তোমার পেটে যে আছে [ তুরের হাত ছেড়ে ওর পেট স্পর্শ করে ] সে আমার সন্তান। ”
তীব্রের কথায় পিলে চমকে উঠে ওর। তারপর অবাক চোখে তীব্রের দিকে তাকিয়ে নিজের পেটে হাত দেয়৷ পরেই আবার তীব্রের দিকে তাকায়। তুর ইশারায় বোঝানোর চেষ্টা করে পেটে কি ওর বাচ্চা। তীব্র মাথা নেড়ে সন্মতি জানায়। ওর গলায় কান্নার ছাপ স্পষ্ট।
——— ” তোমার পেটে যে আছে, সে আমার অংশ হলেও তার মা তুমি। তুমি বলো একজনের শাস্তি আরেকজনকে দেওয়া কি ঠিক? ”
মাথা নাড়ায় তুর।
——– ” তাহলে তুমি কেন আমার শাস্তি তোমার সন্তানকে দিচ্ছ। তুমি ওকে মারতে চাইছ। তুমি বলো, তোয়ার যদি একটা বেবি হয়। তখন যদি তোয়া ওকে মেরে ফেলতে চায় তুমি কি সমর্থন করবে। ”
মাথা নাড়ায় তুর৷
——– ” জানো তুর মা ছাড়া সন্তান অনেক কষ্টে বেড়ে উঠে। বড্ড কষ্টে৷”
তুর চুপ। তীব্র তুরের কোলে মাথা রাখে।
—— ” জানো তুর, তোমার পেটে ছোট একটা রাজকুমারী আছে। খুবই ছোট একটা মেয়ে। গল্পে যেরকম হয় সেরকম। তুমি যদি এভাবে পাগলামী করো তাহলে ও তো দুনিয়ায় আসতে পারবে না। তখন তোমার মেয়ে তোমাকে বলবে তুমি তাকে মেরে ফেলেছ। সেটা কি তুমি মানতে পারবে। ”
মাথা নাড়ায় তুর।
——- ” তাহলে কেন তোমার মেয়েকে মারতে চাইছ। ”
—— ” আমি আমার মেয়েকে মারতে চেয়েছি। বেশ অবাক হয়ে।
—— ” হ্যা তুর, তুমি আমার অংশ ভেবে যাকে মারতে চাইছ সে তোমার সন্তান। তুমি তার মা। শুধু আমি ওর বাবা বলে ওকে মারা কি ঠিক হবে। ”
মাথা নাড়ায় তুর৷ বুঝতে পারে।
——– ” তাহলে এমন পাগলামী করো না তুর প্লিজ। তবে তুমি যদি না চাও আমি আর কোনদিন আসব না। তবুও তোমার…. ”
কথা শেষ হবার আগেই তুর বোকার মত হেশে বলে,
———- ” সত্যি আমার মেয়ে হবে তীব্র। ছোট একটা মেয়ে। ”
তুরের চোখ খুশিতে চকচক করছে। তীব্র বুঝতে পারল মেয়ের কথাটা শুনে তুর এমন করছে।
——– ” কী হলো বলুন না? আমার মেয়ে হবে। খুব কিউট একদম পুতুলের মত। ”
আলত হাসে তীব্র৷
——– ” হুমম। ”
ওর উত্তরে তুরের খুশি বোধহয় আর ধরে না।ও নিচের দিকে তাকিয়ে এইটুকু বুলি আওরায় ওর মেয়ে হবে৷ কিন্তু আবার কিছু একটা ভেবে রাগ উঠতে থাক।
——– ” আমার যদি মেয়ে হয় তাহলে তো আপনি ওকে আমার থেকে নিয়ে যাবেন তাই না। আর আমাকে আপনার সাথে আবার থাকতে হবে। বন্দী করে রাখবেন আমাকে।”
কথাটা শুনে তীব্রের বুকে ছ্যাত করে উঠে। তবুও ও নিজেকে সামলে নেয়। তারপর তুরের মাথায় হাত রেখে বলে,
_——– ” এই তোমাকে ছুয়ে প্রমিস করছি। তোমাকে কোনদিন আর নিজের জন্য চাইব না। কোনদিন তোমার সামনে হাজবেন্ডের দাবী করব না। এমনকি বেবি হওয়ার পর তুমি যেতে বললে, তোমার লাইফ থেকে সারাজীবনের জন্য চলে যাব। কোনদিন তীব্র স্বামীর দাবী করবে না তোমার কাছে। ”
———- ” সত্যি প্রমিস করছেন চলে যাবেন। ”
তীব্র অপরাধীর দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে ছোট করে ” হুমম ” উচ্চারন করে। এটা দেখে তুরের মুখে হাসি ফুটে উঠে। আজ যেন অনেকদিন পর ও খুশি হয়েছে আর দুটোই তীব্রের জন্য। প্রথমত, ওর মেয়ের জন্য। আর দ্বিতীয়ত, তীব্র ওকে ছেড়ে দেবে সেই জন্য। তুরকে খুশি দেখে তীব্র দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এতদিন পর হলেও ও তুরের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছে। ও তুরের কপালে একটা চুমো দেয় তারপর বেড়িয়ে আসে রুম থেকে।
ও রুম থেকে বেড়িয়ে আসতেই ওর বাবা মা ছুটে আসে। তীব্র নিজের মুখে কাঠ হাসি দিয়ে ওনাদের বলে,
——— ” কিছুটা হলেও বোঝাতে পেরেছি। বাকিটা আপনাদের দেখতে হবে। ও হয়ত বাচ্চার জন্য আর পাগলামী করবে না। ”
ওনারা কিছু বলতে যাবে তার আগেই তীব্র চলে গেল।
.
.
.
★—————————★————————–★
প্রকৃতির নিয়মেই সময় প্রবাহ মান। আর সময়ের সাথে মানুষের ধারাও বাক নেয় বিভিন্ন মোড়ে। যেখানে তীব্র একদিন মিথ্যে ভালোবাসার ফুল ফোটাতে চেয়েছিল তুরের মনে আজ সেই তীব্র ছটছট করছে তুরের ভালোবাসা আপন করে পাওয়ার জন্য। কিন্তু কোথাও একফোটা ভালোবাসার ছোয়া নেই। ভালোবাসা একটা ঘরের মত হয়। বালু দিয়ে তা বানানো যায় না। তার জন্য বিশ্বাস নামের সিমেন্টের প্রলেপ দরকার হয়। তীব্রের এখন তুরকে আর তার বেবিকে চাই।
আর ওদিকে তুর দিন গুনছে নিজের মেয়ের দুনিয়াতে আসার। সেই সাথে এটাও ভাবছে যে ওর মেয়ে আসলে তীব্রের কথা অনুযায়ী চলে যাবে তুরের লাইফ থেকে। কি অদ্ভুত দুজনের চাওয়া৷
এভাবেই কেটে গেছে ৫ মাস। তুরের ডেলিভারির ডেট সামনে। তবে তীব্র এখনো তুরের কাছে আসতে পারেনাই। তীব্র দুর থেকেই ওকে দেখে চলে যায়। ভেবেছে হয়ত তুর সময়ের সাথে সাথে সব মেনে নিবে কিন্তু তা হয়নি। তুরের চাওয়া ওর মেয়ে হলেও সেখানে তীব্রের জায়গা হয়নি। বড্ড বেশি বিরক্ত লাগে সব। বাবা হওয়ার আনন্দটাও যেন দুর থেকেই পুরন করতে হচ্ছে। চাইলে যেন ছুয়ে দেখতে পারে না। কারন তুরের কাছে গেলেই ও অন্যভাবে ব্যাপারটা নিয়ে ক্ষেপে যায়। মেন্টালি দিক দিয়ে দিন দিন তুর আর ও অবুঝ হয়ে যাচ্ছে৷ তীব্রের প্রতি তিক্ততা আর প্রেগ্ন্যাসির সময় হরমোনাল চেঞ্জ এর জন্য দায়ী। তবে একটা ব্যাপারে তীব্র ভয়ে আছে৷
এরপর হঠাৎ একদিন সন্ধ্যার দিকে তুরের ব্যাথা উঠে। তীব্রকে খবর দিলে ও দ্রুত ওকে হসপিটালাইজের ব্যবস্থা করে। কিন্তু তখনি ঘটে বিপক্তি কারন অন্যান্য ডক্টর তুরকে সিজার করার কথা বললেও তীব্র তাতে না জানায়।
——— ” কেন করছিস?”
_——- ” তুষা ভুলে যাস না আমি একজন ডক্টর। আর যেখানে প্রেগ্ন্যাসি নিয়ে তেমন কোন কমপ্লিশন নেই সেখানে…। কোন মানে হয় না। ”
——– ” কিন্তু ওর কষ্ট হবে। ”
——– ” ক্ষনিকের কষ্টে কিছু হবে না। আল্লাহ মেয়েদের সেই ক্ষমতা দিয়েছেন। আর যদি সতি ক্রিটিক্যাল সিচুয়েশন হয় তখন নাহয় ভেবে দেখব। ”
তুষা কথা বলতে পারল না। তীব্র বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। সব কিছু ঠিক ছিল কিন্তু শেষ মুহুর্তে যদি কিছু হয় সেই ভেবেই ও শঙ্কিত।
ভয়ের মুহুর্ত কেটে গিয়ে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শোনা যায়। তুষা বেবিকে নিয়ে বাইরে আসে হাশি মুখে। তীব্র বেবিকে কোলে নিয়ে আনন্দে কেদেই দেয়। খুশিতে ও কিছু বলতে যাবে কিন্তু সেটা গলায় আটকে গেছে। তবে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ওর কান্নাতে ভেসে আসছে৷ তখনি তুষা বলে উঠে,
———- ” কংগ্রেস আপনি বাবা হয়ে গেছেন।”
———- ” তুর! তুর কেমন আছে৷ ”
———- ” রিলাক্স। ও ভালো আছে। জ্ঞান হারিয়েছে৷ একটু বাদেই ফিরবে। ”
———- ” থ্যাংক গড। সব কিছু ঠিক রাখার জন্য। ”
——— ” তার চেয়েও বেশি ধন্যবাদ এইজন্য আল্লাহ তোকে এত কিউট একটা ছেলে দিয়েছে তার জন্য। ”
সব কথা ভালো লাগলেও শেষ কথায় তীব্র থমকে যায়।
——— ” ছেলে মানে? ”
——— ” আরে বোকা, ছেলে মানে বুঝিস না। তুই ছেলের বাব হয়েছিস। ”
মুহূর্তেই তীব্রের অদ্ভুত এক ভয় কাজ করল। জানেনা কেন? সব কিছু ঠিক থেকেও যেন ঠিক লাগল না। ও তুষার দিকে তাকিয়ে মলিন হাসি দিল। তখনি তুষা বেবিকে নিয়ে বলল,
———- ” মায়ের থেকে বেবিকে বেশিক্ষন দুরে রাখা ঠিক নয়। ”
তুষা চলেযেতে ধরলে তীব্র ডাকে।
——— ” তুষা ছেলে নাকি মেয়ে সেটা তুরকে বলিস না। ”
——— ” কেন? ”
_——- ” না এমনি। ”
——– ” আচ্ছা। কিন্তু তুই বাইরে কেন ভিতরে আয়। ”
তারপর ও তীব্রকে টেনে ভিতরে ঢুকায়। কিছুক্ষন বাদেই তুরের জ্ঞান ফেরে। ও নিজের মেয়ের জন্য পাগল হয়ে যায়। তোয়ালে মোড়ানো ছেলেটাকে ওর কোলে দিলে ও আনন্দে গদগদ হয়ে উঠে। তারপর তুষার কথায় ফিডারিং করায়৷ তবে তীব্রের কেন জানিনা ছেলের কথা তুরকে বলতে ভয় লাগছে।
সেদিনের মত সবটা ঠিকি থাকে। তীব্র সবসময় বেবিকে তুরের কাছে রাখলেও এমন ভাবে রাখে যেন ওর বেবিকে নাড়াচাড়া করতে না হয়। তুরের বাবা মা তুরকে বলতে চেয়েছে ওর ছেলে হয়েছে কিন্তু তীব্র নিষেধ করেছে। বেবিকে শুধু ফিডারিং করার সময় তুরের কোলে দেয়। বাকিটা সময় নিজের কাছে আর খুব সাবধানেই তুরের কাছে রাখে।
এভাবেই কেটে গেল ১ সপ্তাহ। তুর আগের চেয়ে সুস্থ। যেহেতু নরমাল ডেলিভারী রিকভার দ্রুত হয়েছে। তুর তো নিজের মেয়ের নাম করনে ব্যস্ত।
সেদিন তীব্র একটা কাজে বাইরে গেছে। বিশেষত ওর কেবিনে বাইরের কেউ এলার্ড না। তুর ঘুমাচ্ছিল। ওর বেবি ঘুম ভেঙে কান্না করে উঠে৷ আর বিপত্তি বাধে তখন। একজন নার্স এসে বেবিকে কোলে নিতেই তুরের ঘুম ভেঙে যায়। তখন ওই নার্স বলে,
——- ” নিন আপনার ছেলেকে ফিডারিং করান। ”
কথা শুনে তুর হাসি মুখে জবাব দিল,
——- ” আপনার ভুল হচ্ছে ও মেয়ে, ছেলে নয়। ”
ওর কথায় নার্স অবাক হয়ে বল,
——- ” আমার ভুল হচ্ছে না। আপনার ছেলেই হয়েছে। ”
কথাটা শুনে রেগে যায় তুর,
—— ” কি বাজে কথা বলছেন? বললাম ত আমার ছেলে নয় মেয়ে হয়েছে৷ ”
—— ” আপনার আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে। তাহলে নিজেই দেখে নিন। ”
বেবিকে তুরের কোলে দিতেই তুর কেপে উঠে। ও বেবিকে বিছানায় রেখেই নিচে নেমে যায়।
——- ” এই বেবি আমার নয়। আমার ত মেয়ে হয়েছিল। ”
—— ” আপনি ভুল ভাবছেন আপনার কোন মেয়ে হয়নি। ”
—— ” তারমানে সবই মিথ্যে বলল। আমার কোন বেবি হয়নি। নাকি আমার মেয়েকে চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। এই ছেলে আমার না। ”
—— ” আপনি শান্ত হোন। আমার কথাটা শুনুন। ”
তখনি তুরের মা আর তোয়া আসে। ওদের দেখে তুর ওদের কাছে ছুটে যায়৷
_—– ” মা কোথায় আমার মেয়ে? আমার ছেলে না আমার মেয়ে এই ছেলে আমার না। ”
তোয়া বিছানায় বেবিকে দেখে ছুটে কোলে নেয়। আর তুর নিজের মেয়েকে খোজায় ব্যস্ত হয়ে পরে। কেবিনের বাইরে গিয়ে চেচামেচি করে সব একসাথ করে ফেলে। কি হয়েছে সেটা দেখার জন্য সবাই ভীর করেছে। তখনি তুরের মা, বাবা, অরুন আর তুষা কেউ ওকে সামলাতে পারছে না।
তীব্র কেবিনে গেলে তোয়া ওকে সবটা বলে। তীব্র বাইরে তুরের কাছে যেতেই,
——- ” আপনি এসেছেন। আপনি বলেছিলেন না আমার মেয়ে হবে। আমি তো আমার মেয়েকে চেয়েছিলাম তাই না। কোথায় আমার মেয়ে?”
—— ” তুর শান্ত হও। আমার কথাটা শোন। ”
—— ” আপনি মিথ্যে বলেছিলেন তাই না। আর এই জন্য অন্যকারও ছেলে আমার ছেলে বলছেন। ”
——- ” তুর আমি…. ”
আর কিছু বলার আগেই সেখানে করিডোর ভর্তি মানুষের সামনে তীব্রের গালে থাপ্পাড় দিয়ে বসল তুর। মুহুর্তেই চারদিকের পরিবেশ থমকে গেল। তুর এমনটা করবে সেটা হয়ত সবার ধারনার বাইরে। তীব্র নিচে তাকিয়ে কিছুটা সময় থমকে গেল।
তুরের বাবার যেন মেয়ের এই বেপরোয়া ভাবটা নিতে পারলেন না। তিনি তুরকে নিজের দিকে ফিরিয়ে থাপ্পাড় মারতে ধরলেই তুর তীব্রকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মুখ লুকায়। আর তীব্র তুরকে আড়াল করে নেয়। ওর বাবা তীব্রের থেকে ছাড়াতে চাইলে ও না করে। তারপর ওর মাথায় হাত বুলাতে থাকে। ইশারায় সবাইকে চলে যেতে বলে। ওরা জায়গায়া খালি করলে তীব্র তুরের মাথায় একটা চুমো দেয়। তারপর বলে,
——- ” ভয় নেই। কেউ কিছু বলবে না। ”
তুর ওর বুক থেকে মুখ উঠায়। জরিয়ে ধরা অবস্থায় কঠোর গলায় জিজ্ঞেস করে,
——- ” আমার মেয়ে কই? ”
_—– ” তুর আমাদের মেয়ে নয় আল্লাহ আমাদের ছেলে দিয়েছেন। ”
কথাটা শুনেই তুর ওকে ছাড়িয়ে নেয়।
——– ” আবার মিথ্যে। এতদিন যে মেয়ের জন্য বসে ছিলাম, তার নামে আবার মিথ্যে৷ ”
তুর তীব্রের কথা না শুনে চলে গেল৷ ও ওর সিদ্ধান্তে অটল। ওর ধারনা এটা ওর সন্তান নয়। আর তাই ওকে কোলে পর্যন্ত নিচ্ছে না। সবাই বেবিকে খাওয়ানোর রাগারাগি করলেও তুর তাতে নাকোচ।
,
,
,
,
——– ” আমি ঠিক এই ভয়টাই পাচ্ছিলাম। এইজন্য আমি চাইনি তুর মা হোক। ”
——- ” এখন কি করব? ”
——- ” তুমি ভালো করেই জানো
—— ” আমার ধারনা মতে তুর পোস্টপারটাম সাইকোসিস মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েচে। ”
তীব্র চুপ।
——- ” দেখ তীব্র, বাচ্চা জন্মের সময় হঠাৎ হরমোন নিঃসরণ, নিজের কোনো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে, বিশেষ করে বাইপোলার ডিজঅর্ডার বা সিজোফ্রেনিয়ার রোগী হয়ে থাকলে, বাচ্চা প্রসবের সময় কোনো ভীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে থাকলে, আশানুরূপ বাচ্চা না হওয়া (গায়ের রঙ বা লিঙ্গ ইত্যাদি)। যেকোন কারন রোগটি হয়। ”
——– ” হমম। ”
——- ” আর তুরের ব্যাপারটায় যা বলা যায়, তুর যেহেতু আগে থেকেই মানসিক সমস্যায় ছিল। তাছাড়া বাচ্চাটা আশানুরুপ হয়নি। মানে মেয়ের পরিবর্তে ছেলে। তাই বলা যায় এখন তুরের এই জন্যই পোস্টপারটাম সাইকোসিস হয়েছে। ”
—– ” এখন কি করব? ”
—– ” তোমার আমার কিছুই করার নেই। ১০০০ জনে ১/২ জনের এই রোগটি হয়৷ আর তুমি জান এই রোগ হলে মা তার সন্তানের জন্য কতটা মারাত্তক হতে পারে। আর দিন দিন রোগটা আরও ভয়ংকর হবে। তুর নিজের ফাস্ট্রেশনে এসে বেবির ক্ষতি করতেও দ্বিধা করবেনা৷ এখন তোমার একটাই কাজ, তুরকে যত সম্ভব বেবির থেকে দুরে রাখা। আর অবশ্যই যেকোন ভাবে তুরকে দিয়ে বেবিকে ফিডারিং করানো। ”
_—- ” ওকে স্যার। ”
,
,
,
,
রুমে এসে দেখে তুর কোনভাবেই বেবিকে ফিডারিং করাতে রাজি হচ্ছে না। তীব্র কি করবে কিছু ভেবে পেল না। এদিকে তোয়া প্রচন্ড রেগে গেছে। ও গিয়ে বেবিকে ফিডারিং করাতে বললে তুর বলে উঠল,
——- ” আমি আরেকজনের বেবিকে কেন খাওয়াব? ”
—— ” কারন ওর মা মরে গেছে৷ দুধের শিশু একটু খাইয়ে বাঁচালে তোর মান কমে যাবে? ”
প্রচন্ড রেগেই বলল কথাগুলো। এর প্রেক্ষিতে তুর আর কিছু বলল না।
—— ” নে খাওয়া। যদি না খাওয়াস তাইলে আর কি কোথাও নিয়ে ফেলে আসব। তুই আমাকে বলতি না মেয়েরা কিভাবে বাচ্চাকে ডাস্টবিনে ফেলে যায়। এই জন্য। ওর মা তো নেই। তুই ওকে খাওয়াতে পারার পর ও যখন খাওয়াবি না আর কি করব? ফেলে দিয়ে আসি। ”
কথাটা যেন তীব্রের হৃদয়কে কেটে বের করে দিয়ে গেল। নিজের বাচ্চার এমন কথা হয়ত কারোই কাম্য না। এটাই শোনা বাকি ছিল। কিন্তু কিছু বলার নেই। আজ যা পরিস্তিতি তার দায়ী ও নিজে। ওর কিছু করার নেই। নিজের বাচ্চার কাছেই অপরাধী ও। ওর জনই ওর মা ওকে নিতে পারছে না। আর নিজের কানে সন্তান ফেলে দেওয়ার কথার প্রতিবাদ করতে পারছে না। তাই ও নিরবে বেড়িয়ে এলো ওখান থেকে।
——– ” কিরে ফিডারিং করাবি নাকি…? ”
——– ” নাহহ… ”
তোয়া একটু স্বস্তি নিয়েই তুরের কোলে দিল বেবিকে। তুর ওকে ফিডারিং করাতেই ও চুপ হয়ে গেল।
★————————–★————————–★
কেটে গেছে ৬মাস৷ তুর নিজের বাড়িতে আছে। হাসপাতাল থেকে আসার পর তোয়া বেবিকে নিয়ে আসে। তুর ওকে খাওয়াই ঠিকি কিন্তু আপন করে নিতে পারেনি। এমনটা নয় যে মায়ায় পরেনি। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে আপন করতে পারেনি বেবিকে। কতবার যে ওর প্রতি ভাইলেন্ট হয়ে গেছে তার ইয়াত্তা নেই। বেবিকে তোয়াই রেখেছে। তুরকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। এটা হয়েছে অসুখের জন্য।
তীব্র এতদিনে বুঝতে পেরেছে তুর ওকে মেনে নিবেনা। পরন্তু তুরের কাছে থাকা মানে ওকে আরো অসুস্থ করে দেওয়া৷ কারন তুরের এতদিন কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হওয়ার কথা কিন্তু ও তা হয়নি বরং দিনকে দিন সেটা বেড়ে চলেছে৷
কলিং বেল বাজতেই তোয়া দরজা খুলে দেয়৷
——– ” আপনি? ”
——- ” বেবিকে দেখতে এসেছি। এখন আসব। ”
—— ” আসুন। ”
ভিতরে ঢুকতেই তীব্র চারপাশ দেখে নেয়। তখনি তোয়া বলে,
—— ” ভয় নেই। তুর ঘুমিয়েছে আমি বেবিকে নিয়ে আসছি। ”
স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে তীব্র। তোয়া বেবিকে ওর কোলে দিয়ে বলে,
—— ” নাম রাখবেন না?”
মলিন হেসে তীব্র মাথা নাড়ায়। তারপর বলে,
—— ” ১ গ্লাস পানি দিও তো৷ ”
তোয়া পানি আনতে যেতে ধরলে তীব্র ওকে পিছন থেকে ডাকে।
-_— ” কিছু বলবেন? ”
—— ” অনেক ধন্যবাদ তোমাকে তোয়া। এভাবে তুর আর বেবির খেয়াল রাখার জন্য। ওর জন্য তুমি নিজের সংসারেও তায়ানের কাছে যেতে পারছ না।”
——- ” এই জন্য আমার চেয়ে বেশি খুশি তায়ান। আর এমনিতেও আমার কোন সমস্যা নেই। ”
তারপর ও ভিতরে চলে যায়। আর তীব্র দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে।
——– ” ভাইয়া আপনার পানি। ”
ফিরে এসে বেশ অবাক হয় তোয়া। তীব্র নেই। কই গেল? তোয়া ওদিকে মুরতেই দেখে টেবিলে একটা চিঠি। তোয়া ওটা নিয়ে পরতেই দেখে তাতে লেখা….
আমার ছেলে আর তুরকে দেখে রাখার জন্য তোমার আর তায়ানের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি ওকে নিয়ে চলে যাচ্ছি। ওর ৬মাস পুরন হয়ে গেছে। মায়ের মত করে হয়ত ওকে আমি বড় করতে পারব না। কিন্তু নিজের পাপের জন্য শাস্তি তুরকে পেতে দিতে পারছি না। বাচ্চার জন্য ওর মেডিকেল ট্টিটমেন্ট হয়নি। তাই আমার আর আমার বেবির জন্য ওর লাইফ আর বিষিয়ে দিতে পারছি না।
না রাগ করে যাচ্ছি না। ও নির্দোষ । যা হয়েছে তার জন্য দায়ী আমি। তাই নিজেই চলে যাচ্ছি। এমনিতেই প্রমিস করেছিলাম যদি বেবি হওয়ার পর ও না চায় তবে আমি চলে যাব। আর এটা বুঝতেই পারছি আমি থাকলে ও কোনদিন সুস্থ হবে না। তাই নিজের শাস্তি স্বরুপ চলে যাচ্ছি দেশ ছেড়ে । কোনদিন আর ফেরা হবে না। কারন আমি ফিরলে তুরকেও ফেরত পেতে হবে আমার। যা আর চাই না।
শেষ অনুরোধ হিসেবে বলব ওকে দেখে রেখ। ওর সমস্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে রেখে গেছি। জানিনা সুস্থ হওয়ার পর ওর ছেলে আছে কিনা জানবে কিনা। তবে ওকে বলো না। তাহলে ওর এটাই মনে হবে আমি ওকে ঠকিয়ে কষ্ট দেওয়ার জন্য ওর সন্তানকে আলাদা করেছি। আর অপরাধী হতে পারছি না। যদি না জানে তবে জানতে দিও না। কারন আমার ছেলেও আর ফিরবে না। জানলে ওর কষ্ট হবে। ডির্বোস পেপারে সাইন করে দিয়ে গেলাম।
ইতি
ড. রায়হান ( তীব্র)
,
,
,
,
,
[ বাকিটা পরের পর্বে জানবেন ]
তুরকে নিয়ে অনেকের সমস্যা হতে পারে। আগেই বলে দিচ্ছি ওইটা এক ধরনের মানসিক সমস্যা। চাইলে নেট সার্স করে দেখতে পারেন।
এবার অনেকের আমাকে নিয়ে সমস্যা। তাদের জন্য,
আমি আছি শেষের পথে না মানে গল্প আছে শেষের পথে।
তুমি সুচনায়, দেখি কিসের সুচনা হয়। বেচারা তীব্র। নায়িকারা কেন শুধু বাচ্চা পালবে😒😒😒 নায়ক গুলা এতটাই আকাইম্মা। 😁 তাই নায়কের পক্ষ নিয়ে এই দায়িত্ব ছেলেদের দিলাম🐸🐸
জাস্ট ফান কেউ সিরিয়াসলি নিয়েন না। সন্তানের জন্য বাবা মা দুজনের প্রয়োজন।🍁🍁🍁🍁
Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr