অদ্ভুত প্রেমবিলাস পর্ব-২৩

0
979

#অদ্ভুত_প্রেমবিলাস
#লেখিকাঃ সারজীন ইসলাম

|পর্ব-২৩|

সন্ধ্যার পর থেকে বাড়িতে জমজমাট পরিবেশ। অনেকটা অনুষ্ঠান বাড়ির মত বাড়ির অবস্থা। আর হবে নাই বা কেন? আজ বাড়ির দুই ছেলে কতদিন পর বাড়িতে ফিরেছে। সবাই আজ কতদিন পরে একত্রে হয়েছে। হাবিব সন্ধ্যার পরেই বাড়িতে ফিরেছে। এখন সে পুকুরপাড়ে গোসল করছে। ধারার দাদি আম্মা সে ঘরের সামনের বারান্দায় বেতের মোড়া পেতে বসেছে। সবার কাজকর্ম সে খতিয়ে দেখছে। রফিক দুলাল আর শফিক দুলাল দুজনেই রফিক দুলালের ঘরে বসে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছি। ইতিমধ্যে জোনাকি তাদের জন্য চা আর হালকা নাস্তা দিয়ে গেছে ওই ঘরে। অভি বাড়ির বাইরে বের হয়েছে ওর গ্রামের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে। সম্রাট সে তো এখনো বাড়িতে ফিরিনি। ধারা বাড়ির সবার সাথে হাতে হাতে কাজ করে দিচ্ছে। সব মিলিয়ে বাড়ির সবাই ব্যস্ত। হাবিব পুকুর থেকে গোসল করে এসে ধারা কে ডাক দিয়ে বলল,

‘ এই বোন শোন তুই আমার ভেজা কাপড় চোপড় গুলো একটু বারান্দায় মেলে দিবি। আমি ধুয়ে দিয়েছি কাপড় চোপড় গুলো।’

ধারা চোখ রাঙিয়ে বলল,

‘ তুমি এতদুর জার্নি করে এসে কাপড় চোপড় ধুতে গেলে কেনো ভাইয়া। আমাকে কিংবা বাড়ির অন্য কাউকে বললেই তো ওগুলো ধুয়ে দিত।’

হাবিব খুব বিচক্ষণ ছেলে। হাজারো চিন্তার মাঝে মাথা ঠান্ডা করে কাজ করা যেন হাবিবের একটা প্রধান গুন। হাবিব হালকা হেসে বলল,

‘ তো কি হয়েছে, আজকে তোরা সবাই ব্যস্ত। কাল না হয় আমার জামা কাপড় গুলো তুই ধুয়ে দিস। এখন যা ওগুলা বারান্দায় মেলে দিয়ে আয়।’

ধারা হাবিব কে কিছু না বলে উত্তরে মুখ বাঁকা করে চলে যায়। হাবিব হেসে বাড়ির ভিতরে চলে যায়।

খাবার টেবিলে সবাই টুকটাক কথা বলতে বলতে রাতের খাওয়া-দাওয়া করছেন‌। আফজাল মিতা বেগমের সাথে টুকটাক কথাবার্তা বলছে। শাহেদা বানু পাশে একটা চেয়ারে বসে সবার খাওয়ার তদারকি করছে। কারো প্লেট খালি হওয়ার আগেই শাহেদা বানু তার বৌমাদের ডেকে প্লেট আবার খাবার দিয়ে ভরে দিচ্ছে। খাওয়ার মাঝে ইভান হঠাৎ করে শব্দ করে হাসে দেয়। সবাই চমকে ওঠে ইভানের দিকে তাকায়। সকলের কেন্দ্রবিন্দু ইভান। কৌতুহলী গলায় কায়েস বলল,

‘ ভাইয়া তুমি হাসছো কেন এভাবে?’

ইভান ঠোঁট চেপে হাসি থামানোর চেষ্টা করে বলল,

‘ সরি, সরি, আমি এমনি হাসছিলাম। তোমরা খাওয়া-দাওয়া কন্টিনিউ করো।’

একে একে সবার দৃষ্টি সরিয়ে নেয় ইভানের উপর থেকে। কিন্তু একজন তীব্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইভানের দিকে। যে ছেলে সচরাচর হাসে না সেই ছেলে কোন কারন ছাড়াই এমন শব্দ করে হাসতে শুরু করেছে। কেমন সন্দেহের লাগছে বিষয়টা মিতা বেগমের কাছে। তিনি চোখ গুলো ছোট ছোট করে ইভানের দিকে তাকিয়ে থাকে। পরখ করে ইভানের হাবভাব দেখছেন। এখনো ঠোঁট চেপে হাসে যাচ্ছে ছেলেটা। ইভানের হাবভাব দেখে তিনি তার মনের তীব্র সন্দেহের বীজ বুনতে শুরু করে। কোন রকমের খাবার শেষ করে মিতা বেগম। টেবিল ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে ইভানের দিকে তাকিয়ে মৃদু স্বরে বলল,

‘ বাবু খাওয়া শেষ হলে আমার ঘরে একবার আসিস তো। দরকার আছে তোর সঙ্গে।’

মিতা বেগম দাঁড়ায় না। গুটি গুটি পায়ে চলে যায় তার ঘরের দিকে। ইভান ওর আম্মুর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ ফুটিয়ে ভাবতে শুরু করে। হঠাৎ করে এই ভেবে বলল কেন ওর আম্মু? কিছু কি হয়েছে? না, আগে তাড়াতাড়ি খাওয়া-দাওয়া শেষ করে গিয়ে দেখি কি হয়েছে ওর আম্মু। নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে তাড়াতাড়ি খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ইভান।

গুটি গুটি পায়ে এসে মিতা বেগমের ঘরের দরজার সামনে দাঁড়ায় ইভান। বিছানায় আধশোয়া হয়ে বসে থেকে কোন বই পড়ছেন তিনি। হয়তো কোন উপন্যাস বই। ইভান গলা পরিষ্কার করে বলল,

‘ আম্মু!’

মিতা বেগম বইয়ের পাতা ভাঁজ করে রেখে দরজার দিকে তাকায়। ইভান দাঁড়িয়ে আছে। মিতা বেগম মৃদু স্বরে বলল,

‘ ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? আর ভিতরে এসে বস।’

মিতা বেগমের কথা অনুযায়ী ইভান এসে বিছানায় বসে তার পাশে। ইভান জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে ওর আম্মুর দিকে তাকায়। মিতা বেগম তার হাতে থাকা বইটার পাশে বালিশের উপর রেখে ইভানের দিকে তাকিয়ে বলল,

‘ কিছু কি হয়েছে তোর?’

ইভান অবাক গলায় বলল,

‘ কী হবে আমার আবার!’

মিতা বেগম ধীর গলায় বলল,

‘ তাহলে কিছুক্ষণ আগে খাওয়ার টেবিলে অমন করে হাসছিল কেন?’

ইভান ওর আম্মুর কথা শুনে হাসে। শব্দ করে হাসে। মিতা বেগম প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালে। ইভান ঠোট চেপে হাসি থামিয়ে বলল,

‘ তুমি হয়তো তোমার ছেলের এমন পাগলের মত হাসি দেখে অবাক হচ্ছ তাই তো? আসলে অবাক হওয়ারই কথা। তুমি যখন কাল বললে ধারা নামের মেয়েটার সঙ্গে তুমি আমার বিয়ে দিতে চাও। তখন আমার খুব রাগ হয় তোমার উপর। অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাই। কিন্তু আমিতো তোমাকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। তাইতো অভিমান আর বেশিক্ষণ করে থাকতে পারিনি। কিছুক্ষণ পরেই বাড়িতে ফিরে আসি। মনে মনে সিদ্ধান্ত নেই, বিয়ে যদি ঠিকও হয়, তাহলে ধারা নামের মেয়েটাকে কিছু একটা বলে বিয়েটা ভেঙে দিতে হবে। দুপুরের পর একা একা বের হই গ্ৰাম ঘুরতে। তুমি তো জানো মিউজিক্যাল ভিডিও করে আমার বেশ নামডাক হয়েছে। সেই সূত্রে গ্রামের কিছু তরুণ-তরুণী আমাকে চিনে ফেলে। ওদের সাথে কথা বলতে বলতে আরো দেরী হয়ে যায়। বিকেলের দিকে দেখা হয় ধারা নামের মেয়েটির সাথে। অবশ্য ধারা আমাকে দেখেনি। আমি ওকে দেখেছি। ওকে একা একা হাঁটতে দেখে আমি ওকে ফলো করি। কিছুদূর যাওয়ার পরে আমি ওর আর ওর বেস্ট ফ্রেন্ডর দুষ্টু মিষ্টি ঝগড়া গুলো দেখতে থাকি। জানো আম্মু ধারা মেয়েটা না খুব বিচ্ছু। ধারা তার বেস্টফ্রেন্ডকে ভাবি বলে খেপিয়ে দিয়ে দৌড়ে পালায়। আমি ওর সঙ্গে দৌড়াতে গিয়ে হাঁপিয়ে গিয়েছি প্রায়। দৌড়ে গিয়ে থামে একটা বাড়ির সামনে। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি একটা গাছের পিছনে লুকিয়ে গিয়েছে ধারা। কাঁধে ব্যাগ নিয়ে একটা ছেলে গাছটা অতিক্রম করে যাওয়ার সময় ধারা লাফিয়ে তার সামনে পড়ে। তখন ছেলেটার মুখ দেখে মনে হচ্ছিল খুব ভয় পেয়েছে ছেলেটা। ছেলেটা ওকে পেত্নী বলায়, ও ছেলেটার চুল ধরে সেকি টানাটানি। পরে জানতে পারি ছেলেটা ধারার ছোট ভাই। শহর থেকে ফিরেছে তখন মাত্র। তখন এই কথাগুলো মনে পড়ে তাই খাবার টেবিলে আমি হাসছিলাম।’

মিতা বেগমের ঠোঁটে দুষ্টু হাসি। মিতা বেগম দুষ্টমির সুরে বলল,

‘ তুই যখন ধারা কে বিয়ে করতে চাস না। তাহলে ওর কথা মনে করে হাসছি কেন? তোর কথা শুনে আমার ভাবা শেষ। তুই যখন ধারা কে বিয়ে করতে চাস না, তাহলে আমি আর তোর সাথে ওকে বিয়ে দিবো না।’

ইভানের মুখে কালো হয়ে যায়। ছোট করে বলল,

‘ তুমি সত্যি ধারার সাথে আমার বিয়ে দিবে না!’

মিতা বেগম ঠোঁটে চেপে হাসে। ইভান মাথা নিচু করে থাকায় তা দেখতে পাচ্ছে না। মিতা বেগম হাসি চেপে রেখে বলল,

‘ না, তুই যখন বিয়ে করতে রাজি না। তাহলে আমি আর তোকে জোর করে বিয়ে দিবো না।’

ইভানের রাগ হয়। খুব রাগ হয়। রাগ চেপে রাখতে না পেরে রাগী গলায় বলল,

‘ কেন জোর করবে না তুমি? কাল তো খুব জোর করছিলে? তাহলে আজ কেনো জোর করবে না!’

ইভানের রাগ ক্রমশ বাড়তে শুরু করে। ইভান এখানে থাকলে হয়তো আরো রাগারাগি করবে। তাই ইভান বসা থেকে উঠে হনহনিয়ে বেরিয়ে যায় রুম থেকে। মিতা বেগম ইভানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।

ধারা সেই কখন থেকে বসে বসে হাঁসফাঁস করছে। বারবার জোনাকি ভাবীর দিকে তাকাচ্ছে সেও কিছু বলছে না। ঘরের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত পায়চারি করে যাচ্ছে ধারা। জোনাকি এক দু বার তাকিয়ে পরে আবার মোবাইল ফোন ঘাটাঘাটি করতে করতে বলল,

‘ কিরে এমন হাঁসফাঁস করছিস কেন? সুস্থ হয়ে দু’দণ্ড বসতে পারিস না।’

ধারা জোনাকি দিকে তাকিয়ে বলল,

‘ তুমি কি করে এত নিশ্চিন্তে বসে আছো তাই আমি বুঝতে পারছিনা ভাবি। আমাদের বাদ দিয়ে ওরা কিসের মিটিং করছে তা আমাদের অবশ্যই জানতে হবে। তুমি যাবে আমার সঙ্গে না হলে আমি একাই যাবো।’

জোনাকি ফোন রেখে ধারার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায়। জোনাকি মৃদু চিৎকার করে বলল,

‘ এই তোর কি মাথা গেছে নাকি? বাড়ির বড়রা কি নিয়ে না কী নিয়ে মিটিং করছে সেখানে আমরা গিয়ে কি করবো? আর আমাদের যদি দরকার হতো অবশ্যই আমাদের ডাকা হতো! আর তোর যদি এতই জানার ইচ্ছে থাকে, তাহলে আমি পরে তোর ভাইয়া কে কাছ থেকে জেনে তোকে বলবো।’

ধারা মুখ গোমড়া করে জোনাকির পাশে বসে বলল,

‘ ধুর ভালো লাগে না কিছু।’

জোনাকি আর কিছু না বলে আবার ফোন ঘাটাঘাটি শুরু করে দেয়।

প্রায় বাড়ির সকলে বসে আছে ধারার দাদি আম্মার ঘরে। আজ সেখানে বসেই সব আলোচনা হবে। সবাই অনেকক্ষণ টুকটাক কথা বলার পরে, ধারার আব্বাজান গলা পরিষ্কার করে গম্ভীর করে বলল,

‘ অনেক তো হাবিজাবি কথাবাত্রা হয়েছে। এবার আসল কথায় আসা যাক। যার জন্য অভি এবং হাবিব কে ইমার্জেন্সী বাড়িতে আসতে বলা। আমার ধারা আম্মাজানের নতুন করে আবার একটা বিয়ের সম্বন্ধ এসেছে। অন্য কোন সম্বন্ধে হলে আমি তোদের বাড়িতে আসতে বলতাম না। আফজাল ভাই সম্বন্ধটা নিয়ে এসেছে, তার মামাতো বোনের ছোট ছেলের জন্য। ছেলে না কী ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছে। বিরাট অবস্থা তাদের। কোন কিছুর কমতি নেই। আফজাল ভাইয়ের কাছে শুনেছি তাদের নাকি বেশ নামডাক আছে। ঢাকার শহরে নাকি ছেলের বাবা কে সবাই এক নামে চেনে। তিনি মারা গেছেন অনেক বছর হয়েছে। কিন্তু তার সুনাম নাকি এখনো একই ভাবে বজায় আছে। ছেলে ছোটবেলা থেকেই বিদেশী মানুষ। ছেলে এখন আমাদের গ্রামেই আছে চাইলে তোরা গিয়ে দেখে আসতে পারিস।’

অভি থমথমে গলায় বলল,

‘ কোন ভিনদেশী সাথে বোনের বিয়ে দেওয়ার থেকে না দেওয়াই ভালো। তার ওপরে বলছো ছেলে ছোটবেলা থেকেই বিদেশী মানুষ। তাহলে ছেলের স্বভাব চরিত্র কেমন হবে বুঝতে পারছো? মতিন আমাদের পাশের গ্রামের ছেলে হয়েও ওর ভিতরের জানোয়ারটা কে আমরা চিনতে পারিনি। তার ওপরে সেই ছেলে আবার ভিনদেশী।’

অভির কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে যায়। অভির কথায় যুক্তি আছে। অভির কথা ফেলে দেওয়ার মতন নয়। ধারার আব্বাজান অন্য সবার দিকে তাকিয়ে বলল,

‘ আর তোমাদের কার কি মত?’

সবাই নিজেদের মত চিন্তা করছে। হাবিব মৃদু স্বরে বলল,

‘ চাচাজান সম্পর্ক ভাঙতে সময় লাগে এক সেকেন্ড কিন্তু সম্পর্ক গড়তে সময় লাগে এক যুগেরও বেশি সময়। তাই তাদের না করে দেওয়া আগে, আমরা একবার তো খোঁজখবর করে দেখতেই পারি ছেলে সম্পর্কে, ছেলের পরিবার সম্পর্কে। সব দেখেশুনে যদি আমাদের ছেলে পছন্দ না হয় তারপর না হয় আমরা তাদের না করে দেবো। এবার বাকিটা তোমার বুঝে দেখো চাচাজান।’

সম্রাট ও আব্বাজানের দিকে তাকিয়ে বলল,

‘ অভি যে কথা বলেছে সে কথায় যুক্তি আছে। কিন্তু হাবিবের কথাও ফেলে দেওয়ার মতো নয়। আমরা তাদের না করে দেওয়ার আগে, একবার অন্তত খোঁজখবর নিয়ে তো দেখতেই পারি! ছেলে কেমন? ছেলের পরিবার কেমন?’

ধারার দাদি আম্মা পান চিবোতে চিবোতে বলল,

‘ আমার কোন নাতির কথাই ফেলে দেওয়ার মতন নয়। এবার তুই আর তোর ছোট ভাই মিলে সিদ্ধান্ত নে, কী করবি তোরা!’

ধারার আব্বাজান তার ছোট ভাইয়ের দিকে তাকায়, তা দেখে সে বলল,

‘ তুমি যেটা ভালো বুঝো ভাইজান তাই করো।’

ধারার আব্বাজান কিছুক্ষণ চিন্তা করার পরে বলল,

‘ আমার হাবিবের কথাগুলো মন্দ লাগেনি। একবার আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখতে পারি। অভি, হাবিব শোন তোরা দু’জনে। আমার, তোর ছোট চাচা কিংবা তোদের ভাইয়া শহরে তেমন কোনো বন্ধু নেই। তাই তদের দুজন কেই সবকিছু খোঁজখবর নিয়ে বের করতে হবে। তোদের তো শহরে অনেক লোকজন জানায় আছে মনে হয় না তাদের সমস্যা হবে।’

হাবিব মৃদু স্বরে বলল,

‘ তোমার কাছে কী ছেলের কোন ঠিকানা আছে?’

ধারার আব্বাজান তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে হাবিবের সামনে দিয়ে বলল,

‘ আফজাল ভাই এই কাগজটা দিয়ে গেছে। এতে নাকি ছেলে সব ঠিকানা লেখা আছে। এমনকি বিদেশে কোন কলেজে পড়ে, কোথায় থাকে এসব কিছুই না কি লেখা আছে। এবার তোরা একটু খুঁজে দেখ। ছেলে এবং ছেলের পরিবার ভালো হলে না হয় ভেবে দেখব আমরা।’

হাবিব কাগজের লেখাগুলো পড়ে ধারার আব্বাজানের দিকে তাকিয়ে বলল,

‘ ছেলে তো ইতালিতে থাকে। ওখানকার একটা নামকরা ইউনিভার্সিটি তে লেখাপড়া করে।’

হাবিবের কথা শুনে অভি হাবিবের হাত থেকে কাগজটা নিয়ে পড়ে বলল,

‘ জুনায়েদ! কাউসার জুনায়েদ ছেলের বাবা!’

সম্রাট জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,

‘ তুই চিনিস তাকে?’

অভি মৃদু স্বরে বলল,

‘ আমি তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। তবে তার নাম ডাক শুনেছি অনেক। কথায় আছে না মানুষ মারা যাওয়ার পর তার কর্মের মাঝে বেঁচে থাকে। কাউসার জুনায়েদ ঠিক তেমন একটা মানুষ। মারা যাওয়ার এত বছর পরেও তার নামে এখনো চর্চা হয়। শুনেছি তিনি মারা যাওয়ার পরে নাকি তার বড় দুই ছেলে তার ব্যবসার হাল ধরেছেন। তাদের অফিসের একটা শাখায় আমার মেসের একটা সিনিয়র ভাইয়া চাকরি করে। তোমরা বললে আমি ঐ ভাইয়ার সাথে কথা বলে এ বিষয়ে খোঁজখবর নিতে পারি।’

সব শুনে ধারার আব্বাজান সম্মতি জানায়। আগে ছেলের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তারপর সিদ্ধান্ত নিবে।

চলবে….

দুই দিন গল্প দিতে পারিনি বলে। তাই আজ দুই পর্ব সমান এক পর্ব দিলাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here