আমার একটাই তুমি . Part – 12

0
466

গল্প – আমার একটাই তুমি
.
Part – 12
.
writer – ArFin_$uMon
.
.
রাতের খাবার খেয়ে আমি সোফায় বসে টিভি দেখছি একটু পর উনি আমার পাশে এসে বসলেন উনার শরীর থেকে একটা মিষ্টি গন্ধ আমার নাকে আসছে। ইচ্ছা করছে জুলিকে নিয়ে হারিয়ে যাই কোন এক অচেনা শহরে যেখানে কেউ নেই আপনজন শুধু আমি আর জুলি।
রাতের বেলা জুলির হাত ধরে সমুদ্র পাড় ধরে হেটে বেড়াব। এইসব ভাবতেছিলাম তখন হাতে কে যেন একটি চিমটি দিল আমি সাথে সাথে চিল্লানি দিলাম। আমার চিল্লানি শুনে পাশের রুম থেকে আম্মু এসে বলল..
আম্মুঃ- কি হয়েছে তোর? এইভাবে চিল্লাস কেন?
আমিঃ- না তেমন কিছুই না আসলে মশা কামড় দিছে তো তাই আর কি?
আম্মুঃ- তোর-ই শুধু মশা কামড়ায় না? পাশে জুলিও তো আছে ওরে তো কামড়াচ্ছে না শুধু ফাইজলামি করা যা শুতে যা ১২ টা বাজতে যাচ্ছে।
আমিঃ- আচ্ছা ঠিক আছে আম্মু তুমি যাও আমরা একটু গল্প করব।
একটু পর আম্মু চলে গেল। আমি সাথে সাথে জুলির দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। উনি শুধু মিটমিট করে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। আমি উনার দিকে এইভাবে তাকিয়ে আছি দেখে উনি ইশারায় বলল..
জুলিঃ- কি ব্যাপার? এই ভাবে আপনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেন?
আমিঃ- তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কি করব হুম? তার আগে আপনি বলুন আমাকে চিমটি কেন মারলেন হুম? আপনার জন্য আম্মু আমাকে বকা দিল।
এরপর উনি আবার খাতায় লিখতে শুরু করল লিখা শেষ হলে খাতা টা আবার আমার হাতে দিল।
জুলিঃ- সরি কিছু মনে করবেন না আপনি আমার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছেন তাই আমি একটু ফাইজলামি করে চিমটি দিছি। আপনার কি খুব বেশি লাগছে কি? আসলে আমি বুঝতে পারি নি যে আপনার এতটা লেগে যাবে।
আমিঃ- আরে না আমার বেশি লাগে নি তো হঠাৎ করে চিমটি দিছেন বলে একটু ভয় পেয়ে গেছি।
জুলিঃ- কেন?(ইশারায়)
আমিঃ- না ভাবলাম কোন পোকা কামড় দিছে তাই আচ্ছা জুলি ১২:৩০ বাজতে যাচ্ছে রুমে চলুন না হলে আব্বু আম্মু রাগ করবে।
জুলিঃ- হুম চলুন।(ইশারায়)
আর এই দিকে সারাদিন ধরে জুলিকে খুঁজে না পেয়ে রাত ২টার দিক এক পর্যায়ে হতাশ চেহারা নিয়া বাসায় আসলেন রহিম সাহেব। উনাকে এইভাবে হতাশ লাগছে দেখে জুলির চাচি প্রশ্ন করল..
জুলির চাচিঃ- কি ব্যাপার তোমার মুখ এই রকম দেখাচ্ছে কেন? জুলির কি কোনো খোঁজ পাও নি তাহলে? কি হলো কিছু বলছো না কেন?
জুলির চাচাঃ- না ওদের কোন খোঁজ পেলাম না? কোথায় থাকে তাও জানি না? তোমার কথায় হয়তো ঠিক ও পালিয়ে ওর নানু বাড়ি গেছে আর ওখান থেকে ওকে বিয়ে দিয়ে দিছে মনে হয়।
জুলির চাচিঃ- হুম বুঝলাম এখন কি করবা বলো। সামান্য কিছু টাকার জন্য কি এইগুলো করা ঠিক হবে এর থেকে ভালো হবে ওই ব্যাক্তির টাকা সব দিয়ে
দাও তোমার ব্যবসা করা লাগবে না উনার টাকা দিয়ে দাও।
জুলির চাচাঃ- দেখ তোমাকে আমি আগেও বলছি এখনো বলছি এই সব কথা আমার সামনে বলবা না এত দরদ দেখাবো কেন ওর জন্য। ও কি আমার নিজের মেয়ে নাকি যে দরদ দেখাবো।
জুলির চাচিঃ- তাহলে এখন কি করতে চাচ্ছো তুমি? ওই লোক তোমাকে ৭ দিন সময় দিছে আজ ৩ দিন পার হতে যাচ্ছে। পরবর্তীতে টাকা বা জুলি দুইটার একটাও যদি না দিতে পারো। তাহলে বুঝতেই পারছো কি হতে পারে।
জুলির চাচাঃ- কি হবে কিছুই হবে না এখনো ৩ দিন আছে এর মধ্যে কিছু একটা করব আমি কাল ওর নানু বাড়ি যাব তারপর ওই ছেলের ঠিকানা জোগাড় করে ওদের বাড়ি গিয়ে জুলিকে জোর করে নিয়ে আসব।
জুলির চাচিঃ- ওদের যদি বিয়ে দিয়ে দেয় তাহলে তো তোমার কিছু করার নেই তখন কি হবে?
জুলির চাচাঃ- বিয়ে ওর নানুবাড়ির লোকেরা আমাকে না জানিয়ে দিছে দরকার হলে আমি ওদের নাম এ কেস করব।
জুলির চাচিঃ- ওরা যদি বলে তুমিও ওদের না জানিয়ে জুলিকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দিছ। তখন কি করবা।
জুলির চাচাঃ- তোমার মাথায় কি ভালো কথা আসে না দরকার হলে ওই ছেলেকে খুন করে আমি জুলিকে নিয়ে আসব।
জুলির চাচিঃ- তুমি কি পাগল হয়ে গেছ হুম? সামান্য কয়টা টাকার জন্য তুমি সারাদিন এইভাবে দৌঁড়া দৌঁড়ি করছো। জুলির সব কিছু সব টাকা-পয়সা তো আমরা নিছি তারপর ও এত লোভ কেন তোমার?
জুলির চাচাঃ- ঠাস্ ঠাস্। আর একটা কথা বললে কপালে দুঃখ আছে। যা এখন আমারে খেতে দে যা সামনে থেকে সর আর কাল সকালে আমাকে তাড়াতাড়ি ডেকে দিবি।
এরপর জুলির চাচি আর কোন কথা না বলে খাবার বেড়ে দিয়ে রুমে চলে আসল।
পরেরদিন সকালে উঠে দেখি জুলি আয়নার সামনে দাড়িয়ে আছে কিন্তু পিটের দিকে ব্লাউজ এর লাস্ট বোতাম টা লাগাতে পারছে না আমি একটু পর উঠে লাস্ট বোতামটা লাগিয়ে দিলাম। আমার হাতের স্পর্শ পেয়ে উনি চমকে উঠে তাড়াতাড়ি আমার দিকে তাকালো।
আমিঃ- আসলে এই কাজ টা করা আমার ঠিক হলো না কিন্তু আপনি লাগাতে পারছিলেন না বলে আমি হেল্প করলাম। প্লিজ কিছু মনে কইরেন না?
জুলিঃ- (নিশ্চুপ)।
আমিঃ- আপনার এই নিরাবতা কিন্তু বলে দিচ্ছে যে আপনি আমার উপর রাগ করছেন। এরপর উনি আর আমার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে চেয়ার টেনে টেবিলে বসে কি যেন লিখতে থাকল লিখা শেষ করে খাতাটা আমার হাতে দিল..
জুলিঃ- আচ্ছা আপনি এত বক বক করেন কেন? আমি কি বলছিলাম যে রাগ করছি। ১০ টা বাজতে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি রেডি হন আমি আপনার জন্য নাস্তা বানাতে গেলাম।
আমিঃ- কি ব্যাপার আপনি দেখি খুব এক্সসাইটেট যাওয়ার জন্য।
জুলিঃ- তা তো হবোই আপনি তাড়াতাড়ি গোসল করতে যান (ইশারায়)
এরপর আমাকে ধাক্কা দিতে দিতে বাথরুম এ পাঠালো। তারপর শাওয়ার শেষ করে সকালের নাস্তা করে সকলের আম্মু-আব্বুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এিশাল এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
.
.
চলবে……………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here