#হৃদয়ের_মাঝে_তুই
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#পর্বসংখ্যা___০২
ফিহাঃ মে আই কামিং স্যার………….ফিহা ক্লাসে রুমের দিকে তাকিয়ে অবাক হলো।
স্যারঃ আসুন আসুন মহারানী। কয়টা বাজে ঘড়িতে দেখুন। ১০ঃ ১৫ বাজে এখন। তো মহারানী এখন কি ক্লাস করতে এসেছেন। নাকি ফ্রী তে সবাইকে নাটক দেখাতে এসেছেন।
কান ধরে এক পা ওঠিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।
আজকে তো রেজওয়ান স্যারের ক্লাস ছিল। ওনার তো কোন জরুরি কাজ আছে।
ফাহাদের বাচ্চা, শালা খচ্চর,রাক্ষস, হনুমান,হাতি,টিকটিকির তিন নম্বর বাচ্চা, নীল বাদর।সবসময় আমার সাথেই এমন কে হু।(মনে মনে বললো)
ফাহাদঃ আমাকে বকা শেষ হলে এইবার কান ধরো না হলে শাস্তি আরও বেড়ে যাবে বলে একটা বাঁকা হাসি দিলো।
ফিহা রাগে অপমানে মাথা নিচে নামিয়ে ক্লাসে ঢুকে কান ধরে একপা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রইলো।পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর ফিহার পা ব্যথা শুরু করলো। একটু পর পর পা নিচে পরে যাচ্ছে। স্যার যেন না দেখে তাই তাড়াতাড়ি আবার ওপরে উঠিয়ে নিচ্ছে। আর মনে মনে বকাঝকা দিচ্ছে।
ফাহাদ ক্লাস করতে করতে দেখলো ফিহা পা একবার নিচে নামাচ্ছে আবার ওপরে উঠাচ্ছে।
ফাহাদঃ ফিহার দিকে তাকিয়ে বললো,, আর যেন কোনোদিন দেরি না হয় না হলে এর চাইতে বেশি শাস্তি হবে।যাও। ডাপার একটা।
ফিহা মুখটাকে বেলুনের মতো ফুলিয়ে ঝিনুক এর পাশে গিয়ে বসলো।
ঝিনুকঃ ফিহা তুই রাতে মোবাইল নিয়ে গুতাগুতি না করে ঘুমাতে পারিস না তাইলেতো সকালে ঘুম থেকে ওঠতে দেরি হবে না।এখন দেখলি তো স্যার তোকে শাস্তি দিলো।
আর রেজওয়ান স্যার ও তো প্রতিদিন বকে দেরি করে কলেজে আসার জন্য। তুই প্রতিদিন প্রথম ক্লাস মিস করছ।
ফিহা কিছু বললো না চুপ করে মুখ ফুলিয়ে আছে। সত্যি স্যার শুধু আমার সাথেই এমন করে। কই ঝিনুককে তো ক্লাসে ঢুকতে দিলো আমার বেলাতে শুধু শাস্তি।
ফিহা ক্লাস শেষ করে বাড়ি চলে আসল। আসার সময় ঝিনুক এর সাথে ও কথা বলেনি। আজকে স্যার এমন না করলে ও পারতো। মনটা ভীষণ খারাপ লাগছে।
বাড়িতে এসে কলিং বেল চাপলো।
ফিহার মা মিসেস রাজিয়া আহমেদ দরজা খুলে দিল।
মিসেস রাজিয়া আহমেদঃ তো মহারানীর এসে গেছেন।তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন।একটু পর ফাহাদ আসবে পড়াতে।
ফিহাঃ কিন্তু মামনি ফাহাদ স্যার তো বললো আজকে পড়াবে না কি গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে বললো।
মিসেস রাজিয়া আহমেদঃ ও কাজ শেষ করেই আসছে। আমাকে ফোন করে জানালো।কত কষ্ট করে ছেলেটা। এত কাজের ভিতরে ও তোকে এসে সময় দেয়। তুই খুশি না হয়ে উল্টো বলছিস কেন আসবে।দিন দিন অসভ্য হচ্ছিস তুই। তোর বাপ তোকে আদর দিয়ে দিয়ে মাথার ওপর তুলেছে। না জানি এই মেয়ে একদিন কি করে বসে। পড়াশোনা তো নাই শুধু ফাঁকি বাজী।
ফিহাকে অনেক কথা শুনিয়ে দিলো।
ফিহা কিছু না বলে রেগে সেখান থেকে রুমে চলে আসল।
ফিহা রেগে রুমে এসে কাঁধ থেকে ব্যাগ খাটের ওপর ছুড়ে মারলো।
ফিহাঃ সারাক্ষণ ফাহাদ ফাহাদ আর ফাহাদ। ওই লোকটাকে আমার পুরো পরিবার মাথায় করে রাখে। আর আমার তো মনে হয় আমি কেউ না করোর। রাস্তা থেকে তুলে এনেছে।
বকা শেষ হলে বই নিয়ে টেবিলে বস আমি আসছি দু মিনিটে।
ফিহা পিছনে ফিরে দেখলো ফাহাদ স্যার দাঁড়িয়ে আছে। ফিহা কিছু না বলে বই নিয়ে টেবিলে বসে গেলো।কলেজ ড্রেস ও চেঞ্জ করেনি।
কিছুক্ষণ পর ফাহাদ একটা প্লেটে করে ফিহার জন্য খাবার নিয়ে আসলো।
ফাহাদ স্যারঃ খেয়ে নেও।
ফিহা কিছু বললো না চুপ করে মাথা নিচে নামিয়ে বসে আছে।
ফাহাদ স্যারঃ তুমি খাবে নাকি অন্য কিছু করতে হবে।
ফিহা ঝট করে মাথা ওপরে উঠিয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ফাহাদের দিকে।
ফিহাকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ফাহাদ একটা বাঁকা হাসি দিল।
ফাহাদ আরও কিছু বলতে যাবে তার আগে ফিহা খাওয়া শুরু করলো। ফিহা খাচ্ছে আর ফাহাদ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
ফিহা খাচ্ছে আর ছোট ছোট চুল গুলো ফিহার কপালে এসে ফিহাকে বিরক্ত করছে। ফিহা বাম হাত দিয়ে বারবার চুল গুলো সরিয়ে দিচ্ছে। ছোট চুল গুলোর কারণে ও ঠিক মতো খেতে পারছে না।
ফিহা আবার কপালে হাত দিয়ে চুল গুলো সরাবে তার আগে ফাহাদ তার কপালে থাকা ছোট্ চুল গুলো সরিয়ে দিলো।ফাহাদের স্পর্শে ফিহার পুরো শরীর বরফের মতো জমে গেছে। কি হলো বুঝার চেষ্টা করছে ও।ফাহাদ যে এমন কিছু করবে সে বিশ্বাস করতে পারছে না।
ফিহাকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ফাহাদ একটা মুচকি হাসি দিল।
ফিহা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সেই হাসির দিকে। কত সুন্দর হাসি। মন চায় সারাক্ষণ তাকিয়ে থাকতে ওনার হাসির দিকে।
ইস যদি সময় থেমে যেত আর আমি ওনার হাসি দেখতাম।
হঠাৎ করেই ফিহার মন ভালো হয়ে গেল।
[হয়ত সেই মন ভালোর কারন ফাহাদ….]
চলবে,,,,,,,,,,,,,
[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]
—————————————————————-
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ]
#ফিহা আহমেদ 🍂