#বুকের_বা_পাশে 🌿🌿
#written_by_Nurzahan_Akter_Allo
#Part_17
তুয়ার বাবা প্রিয়মের সামনেই প্রিয়মের বাবাকে ফোন দিলো। প্রিয়ম ইশারায় তুয়ার বাবাকে বলল লাউড স্পিকারে কথা বলতে। তুয়ার বাবা তাই করলো। প্রিয়মের আব্বু কল রিসিভ করে বললো,
— “হ্যাঁ জাহিদ বল, কি খবর?” (প্রিয়মের বাবা)
— “হুম ভালো। শোন, প্রিয়ম আমার কাছে একটা আবদার করছে। এই বিষয়ে তোদের কি মতামত?” (তুয়ার বাবা)
— “কি বিষয়ে?” (প্রিয়মের বাবা)
— “প্রিয়ম আর তুয়ার বিষয়ে। আমরা তো একসাথে বসে কথা বলতে পারি, তাই না?” (তুয়ার বাবা)
— “না, ওর আবদার আমার কাছে মোটেও পছন্দ হয়নি। এই বিষয়ে আমি কোনো কথা বলবো না।” (প্রিয়মের বাবা)
— “আপনাদের মতলব ঠিকই বুঝতে পেরেছি। আমার ছেলের মাথাটা এভাবেই খাচ্ছেন, তাই না?” (পাশে থেকে প্রিয়মের আম্মু)
— “ভাবি আপনি ভুল ভাবছেন।” (তুয়ার আব্বু)
— “আমি ভুল বুঝিনি। এই বিষয়ে আমরা আর একটা কথা বলবো না। আর আপনাদেরও প্রিয়মের কথা শোনার দরকার নেই।” (প্রিয়মের আম্মু ফোনটা কানে ধরে)
— “কেন? এখন ওরা যদি কোনো ভুল পথ অবলম্বন করে, তাহলে কারো দোষ দিতে পারবেন না। আমি আর পাঁচটা বাবার মত ওদের আলাদা করবো না। কারণ ভালবাসাটা কোন অপরাধ নয়। যদিও আপনাদের মত নিচু মাইন্ডের মানুষরা ভালবাসার মানে বোঝে না। আর টাকার অহংকার করবেন না ভাবি, আপনাদের মত এত প্রোপার্টি না থাকলেও আমরা কিন্তু একেবারেই ভিক্ষারী নই। আপনাদের ঘরে প্রিয়মের মত ছেলে জন্ম হয়েছে, এটাই আপনাদের ভাগ্য। ওর জায়গায় আমি থাকলে জানি না আমি আপনাদের কি করতাম? তবে এটাও বলছি দরকার হলে আমি নিজে দাঁড়িয়ে ওদের বিয়ে দিবো!”
— “আমাদের টাকার লোভ সামলাতে পারছেন না, তাই এখন আমার ছেলেকেই আমাদের বিরুদ্ধে উশকে দিচ্ছেন?” (প্রিয়মের আম্মু চিৎকার করে )
– “আম্মু সবাইকে তোমাদের মতো ভেবো না। আর আমি তো তোমাকে বলেই দিয়েছি, আমি বিয়ে করলে তুয়াকেই করবো। ওকে নিয়ে তোমাদের সমস্যা হচ্ছে, আমার তো কোন সমস্যা নেই! অযথা আর কথা বাড়িও না। এটাও শুনে নাও যে, সামনের শুক্রবারেই আমি তুয়াকে বিয়ে করবো। সময় যদি পাও, আর ইচ্ছে যদি করে তাহলে এসো। রাখছি।
প্রিয়ম কথাটা বলে কল কেটে দিলো। আর তুয়ার বাবার পায়ের কাছে হাটু গেড়ে বসে পড়লো। প্রিয়ম তুয়ার বাবার হাত ধরে বললো,
— “আব্বু আম্মুর ব্যবহারে জন্য আমি সরি আংকেল। আমার কোনো চাওয়াকে ওরা প্রাধান্য দেয়নি কোনদিন। আর আজও দিবেনা,এটাও জানতাম। আংকেল আমার আব্বু আম্মুর জন্য প্লিজ আমাকে খালি হাতে ফেরাবেন না। আমাকে উনারা কতটুকু সময় দেয়, ভালবাসে আপনি তো জানেন। প্লিজ আংকেল আপনাদেরকে বাবা মা ডাকার একটা সুযোগ আমি চাই। আমি নতুন করে আপনাদের সাথে সুখ ভাগাভাগি করে নিতে চাই।আপনাদের মত একটা পরিবার চাই। আমিও সুস্থভাবে বাঁচতে চাই।” (প্রিয়ম)
— “তুমি সত্যি শুক্রবারে তুয়াকে বিয়ে করতে চাও?”
— “আপনারা যদি মত দেন তাহলে!” (মাথা নিচু করে)
তুয়ার বাবা উঠে চলে গেল। প্রিয়ম অসহায় চোখে তুয়ার বাবার চলে যাওয়া দেখছে। প্রিয়ম পারছে না চিৎকার দিয়ে কাঁদতে। তুয়াকে নিজের করে পাওয়ার জন্য কত প্রচেষ্টা, তাহলে কি সব ব্যর্থ? প্রিয়ম মাথা নিচু করেই বসে থাকলো। হঠাৎ তুয়ার বাবা পেছে ঘুরে বললো,
— “বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলো। আমাকে সব সময় তোমাদের পাশে পাবে। আমার মেয়ের সুখের জন্য আমি সব করতে পারি।” (তুয়ার বাবা)
প্রিয়ম অবাক হয়ে তাকালো, তারপর ওর মুখে হাসি ফুটে উঠলো। এত প্রচেষ্টার পর অবশেষে তুয়া প্রিয়মের।প্রিয়মের মুখে হাসি দেখে তুয়ার বাবাও মুচকি হেসে
চলে গেল। তুয়া দরজায় দাঁড়িয়ে ওর বাবার কথাটা শুনলো। তুয়ার আম্মুও মুচকি হেসে প্রিয়মের মাথায় হাত বুলিয়ে চলো গেল। তুয়া এসে প্রিয়মের পাশে দাঁড়াতেই প্রিয়ম তুয়ার হাত ধরে টেনে তুয়ার রুমে নিয়ে গেয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। প্রিয়মের চোখের একফোঁটা পানি তুয়ার কাঁধ স্পর্শ করলো! হঠাৎ করে তুয়া ওর কাঁধে পানির পড়াতে প্রিয়মকে ছাড়তে চাইলেও, প্রিয়ম তুয়াকে ছাড়লো না। আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো! তুয়া প্রিয়মের পিঠে হাত রেখে জিজ্ঞেস করল,
— “কি হয়েছে?”
— “উহুম, কিছু না! আজ আমি খুব, খুব খুশি! তোমাকে আমার করে নিবো, এটা যে আমার কাছে কতটা পাওয়া, সেটা বলে বোঝাতে পারবো না তুয়া। জীবনে এই প্রথম পছন্দের জিনিস নিজের করে পেতে যাচ্ছি।” (চোখের পানি মুছে নিয়ে)
— “আমি বাসায় নেই দেখে আমার বাবাকে পটানো হচ্ছিল বুঝি?” (তুয়া মুচকি হেসে)
— “তুয়া জানো, ভয়ে আমার বুক কাঁপছিল! যদি আংকেল না করে দেয়, তখন কি করতাম? আমি কাপুরুষের মত পালিয়ে বিয়ে করতে পারবো না।”
— “কালকেই তো বললে পালিয়ে বিয়ে করবে? আজকে পাল্টি খাচ্ছো কেন?” (ভ্রু কুচকে)
— “সেটা তো তোমার মনের ভাবটা জানার জন্য বলেছিলাম। আমি কি বখাটে নাকি যে পালিয়ে বিয়ে করবো?” (প্রিয়ম তুয়ার নাক টেনে দিয়ে)
— “আমি তখন তোমার কথাতে তাল মিলিয়েছি, তার কারণ যদি আমি না বলতাম, তুমি আরো হাইপার হয়ে পড়তে! আর ঠান্ডা মাথায় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তোমাকে তখন শান্ত করাটা জরুরী ছিলো। তাছাড়া আমি কালকে রাতেই বাবাকে সব জানিয়ে দিয়েছি। আমি এটাও জানতাম, আমার বাবা আমার জন্য অমত করবে না। বাবার কাছে আমি সব কথা শেয়ার করি, আর বাবা তোমাকে খুব ভালবাসে।” (তুয়া)
– “আমার শশুড়টা আসলেই হিটলার। সবকিছু জেনেও এমন ভাব করছিলো। আমার তো ভয়ে কাল ঘাম ছুটে গিয়েছিলো। হবু জামাইয়ের সাথে এমন কেউ করে?” (প্রিয়ম ওর বুকে হাত বুলিয়ে)
— “হা হা হা! তুমি ভীতুর ডিম যে তাই ভয় পেয়েছিলে!”
— “তোমার জন্য ভীতু উপাধি নিতেও আমি রাজি।” (তুয়ার কপালে আদর দিয়ে)
সেদিন সাদের সাথে মিশির দেখা হওয়ার পর মিশি সাদের গাড়িতে ওর ফোন রেখেই চলে গিয়েছিলো। মিশির ফোনটা ফেরত দিতে মিসি আর সাদ আজ আবার দেখা করতে আসে। সাদ মিশির সাথে কুশল বিনিময় করলো। সাদ মিশিকে ওর ফোনটা দিয়ে দিলো।তারপর দুজন টুকটাক গল্প করতে শুরু করলো। এর মধ্যে, সাদ মিশিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু মিশি বলেছে ওর বাসায় গিয়ে প্রস্তাবটা দিতে। সাদও মিশির কথা মেনে নিয়েছে।
প্রত্যয়ের কাছে একটা মেয়ে পেশেন্ট এসেছে। তার সাথে আছে ছোট্ট একটা বাচ্চা ছেলে। মেয়েটি প্রত্যয়কে দেখে সালাম দিলো। প্রত্যয়ও মুচকি হেসে সালামের উত্তর দিলো। প্রত্যয় মেয়েটির সমস্যার কথা জানতে চাইলো। তখনই ছোট্ট বাচ্চাটা ওর মুখে হাত ঢুকিয়ে বু বু শব্দ করে উঠলো। তারপর মুখ থেকে হাত বের করে প্রত্যয়ের দিকে দুই হাত বাড়িয়ে দিলো। যার মানে সে এখন প্রত্যয়ের কোলে যাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করছে। মেয়েটি বাচ্চাটাকে চেপে ধরে আছে। প্রত্যয় ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বাচ্চাটার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো। আর বাচ্চাটা হামলে পড়লো প্রত্যয়ের কোলে। মেয়েটিও অবাক হলো প্রত্যয়ের এমন কাজে। তারপর প্রত্যয় বাচ্চাটাকে কোলে নিয়েই মেয়েটির সমস্যা গুলো শুনলো। আর বাচ্চাটা ওর লালা মাখা হাতে প্রত্যয়ের নাক, মুখ, চোখ, চুল ছুয়ে দিচ্ছে। আর বু বু শব্দ করে, কি যেন বলছে। প্রত্যয়ও মুচকি হেসে মাঝে মাঝে বাচ্চাটার গাল টেনে দিচ্ছে।
প্রত্যয় ওই মেয়েটাকে কয়েকটা টেস্ট করে নিতে বললো। এবার মেয়েটি বাচ্চাটার দিকে হাত বাড়লো, কিন্তুু বাচ্চাটা যেতে নারাজ। সে প্রত্যয়ের গলা জড়িয়ে ধরলো, আর প্রত্যয়ের শার্ট আকড়ে ধরে কাঁধে মুখ লুকালো।প্রত্যয় মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললো,
— “আপনি কি টেস্টগুলো এখনই করাতে পারবেন?”
— “জ্বি! আমি এখন টেস্ট গুলো করতেই যাচ্ছি।”
— “আচ্ছা আপনি যেতে পারেন, বাবু আমার কাছে থাক।” (প্রত্যয়)
— “না ও খুব দুষ্টু! আপনাকে খুব বিরক্ত করবে।”
— “সমস্যা নেই। আমি সামলাতে পারবো। ওর নাম টা যেন কি?” (প্রত্যয়)
— “ওর নাম আল মুশতাকিম।”
— “খুব সুন্দর নাম।”
মেয়েটি আর কথা না বাড়িয়ে চলে গেল। প্রত্যয় ওর পি. এ কে জিজ্ঞাসা করলো আর কোন পেশেন্ট আছে কি না? পি.এ জানালো আর পেশেন্ট নেই। তাই প্রত্যয় বাবুর সাথে কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে গেল। প্রত্যয় মুচকি হেসে আবার বাচ্চাটার গাল টেনে দিতেই বাচ্চাটা রাগে ওর দন্তহীন মাড়ি দিয়ে প্রত্যয়ের নাক, মুখ আর গালে কামড় বসালো। এতটুকু বাচ্চার রাগ দেখে প্রত্যয় হো হো করে হেসে দিলো। প্রত্যয় বাচ্চাটিকে রাগানোর জন্য সেইম কাজই করতে লাগলো। আর বাচ্চাটা সহ্য করতে না পেরে একটা সময় ঠোঁটে ফুলাতে শুরু করলো! প্রত্যয় এটা দেখে কাতুকুতু দিলো। আর বাচ্চাটা দন্তহীন মুখে, খিলখিল করে হাসতে লাগলো। বাচ্চাটার হাসি দেখে প্রত্যয়ও হেসে দিলো।
তুয়ার বাবা-মা, প্রিয়ম সবাই এক সাথে দুপুরে খাবার খেয়েছে। ওরা সকালের ব্যাপারটাকে স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নিয়েছে। তারপর প্রিয়ম ওর ফ্ল্যাটে চলে গেছে। তুয়া ওর আব্বুর কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে বললো,
— “আব্বু প্রিয়মের বাবা-মা এতো খারাপ কেন? একটা ছেলে, তাও উনারা এমন করে কেন?” (তুয়া)
— “খারাপ মানুষকে ভাল করার জন্যে কারো না কারো আগমন ঘটে। ওরাও নিজেদের একদিন শুধরে নিবে, তবে কবে সেদিন আসবে এটা জানা নেই। ওদেরকে ঠিক করতে হলে, ওদের মতই ছ্যাচড়া হতে হবে।” (আব্বু)
— “আব্বু প্রিয়মকে আমি আমার লাইফ পাটনার করতে চাচ্ছি। এখানে তোমার কিছু বলার নেই?”
— “প্রতিটা মানুষ তার নিজ গুনে গুন্নান্বিত। কেউ কারো মত না। প্রিয়ম ছেলে হিসেবে যথেষ্ট ভালো। কিন্তু ওর সমস্যাটা হচ্ছে, ও গুছিয়ে কথা বলতে পারে না। প্রিয়ম ছোট থেকে দুষ্টু হলেও ও ভীষণ একা। ও নিজ চেষ্টায় একাই এভাবে নিজেকে গড়ে তুলেছে। এটাই বা কম কিসে? প্রিয়মের উচিত ছিলো নেশা করা, মারামারি করা, ক্লাবে যাওয়া, ফুল নাইট পার্টি করা, মেয়েদের সাথে অসভ্যতামি করা, দলবল নিয়ে ঘোরা, ওর তো টাকার অভাব নেই। কিন্তু দেখ প্রিয়মের এসব কোনো রেকর্ড নেই। তাই আমি আমার বিবেক থেকে ভেবে ওর প্রস্তাবটাকে গ্রহন করেছি। ওর জন্য আমারও কষ্ট হয়। আজকে যখন বলল আমাদের বাবা-মা বানাতে চাই। এটা বলার কারন কি জানিস আম্মু?”
— “কি?”
— “কারণ ও বাবা মায়ের ভালবাসা পেতে চায়! আমাদের মত সুখে থাকতে চায়। প্রিয়ম যেমন সরল, কথাগুলোও বলেছে তেমন সরল ভাবেই। তবে ওর কথার গভীরতা, যার তার বোঝার ক্ষমতা নেই।” (আব্বু)
— “যেমন?” (তুয়া)
— “যেমন ধর, প্রিয়ম বললো আমরা যদি না মানি তাহলে অন্য পথ অবলম্বনের কথা। এখানে যদি বলে এটাই বুঝিয়েছে, আজকে যদি বাসায় ভাত না থাকে, তাহলে বিস্কুট খেয়েই থেকে যাবো। এখানে দুইটো অপশন আছে ওর কাছে। আর দুটো অপশনের কথায়, আমাদের জানিয়ে দিয়েছে। সে অন্য পথ অবলম্বন করবে না, বলেই আমার কাছে নিজে এসেছে। ছেলে মেয়েরা কাউকে পছন্দ করলে বাবা মাকে আগে জানায়, তারপরে না মানলে পরে পালিয়ে বিয়ে করে। আসলে বাস্তবে যা ঘটে, ও ঠিক তাই বলেছে। কিন্তু কথাটা গুছিয়ে বলতে পারেনি।” (আব্বু)
— “হুম। তাহলে তুমি কি মন থেকে রাজি আব্বু?” তুয়া)
— “হুম, কেন নয়? প্রিয়ম নিঃসন্দেহে সুপাত্র। যে ছেলে আমার মেয়েকে পাগলের মতো ভালবাসে, তাকে রিজেক্ট কেন করবো? আর ওকে পছন্দ না করার মতো কোনো কারণ আছে বল? ওর বাবা-মা এমন লোভী আর অহংকারী, সে হিসেবে প্রিয়ম ভদ্র আর যথেষ্ট সৎ। আর ওর বুকে সৎ সাহস আছে। তা না হলে সরাসরি কেউ নিজের বিয়ের কথা নিজে এসে বলতে পারে না। আর এই সাহসের উৎপত্তি হয়েছে, তোকে হারানো ভয়ে! আমিও তো একজন বাবা, কি করে প্রিয়মের মতো এমন একটা ছেলের কষ্টে ভরা মুখ আর অসহায় চোখের চাহনি সহ্য করি বলতো?” (আব্বু)
— “কিন্তু ওর বাবা মা যে ঘাউরা, বিয়েটা যদি না মানে?” (তুয়া)
— “জানিস মা, কুকুরকে মুগুর না দেখালে কুকুর সোজা পথে যায় না। তোকেও তাই করতে হবে। আর সত্যি বলতে প্রিয়মকে আমি খুব ভালবাসি। আর আমি জানি তুই পারবি প্রিয়মের বাবা মাকে ঠিক করতে।” (আব্বু)
— “বাবা তুমি ভিলেন হলে না কেন? আমাদের সাপোর্ট করছো কেন?” (তুয়া)
— “হা হা হা! সব বাবা-মায়েরা চায় সন্তান সুখে থাক। কিন্তু মাঝে মাঝে সন্তানের সুখের জন্য আমরা বাবা-মায়েরা সন্তানদের গলায় পড়িয়ে দেয় অদৃশ্য এক ফাঁস। মেয়ে বেকার ছেলেকে ভালবাসলে মেয়েকে বাধ্য করে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয়। কিন্তু সেই বেকার ছেলেটাকে নিজেকে দাঁড় করানোর একটা সুযোগ দিলে বা সহযোগিতা করলে সেও পারতো কিছু করতে। আর এমনটা হলে তাকেও হারাতে হতো না প্রিয় মানুষটাকে।ভালবাসা হারানোর কষ্টটা তাকে বয়ে বেড়াতে হতো না।প্রতি নিয়ত নিজেরা নিজেদের অপরাধী ভাবতো না। কিন্তু না যেখানে আমরা বাবা মায়েরা করি তার উল্টো কাজটা। সার্পোট তো করিই না, বরং আমাদের সন্তানদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেই আমাদের মতামত, চাপ, জোর, কসম আর নাটকে মোড়া কিছু অজুহাত। আর এক পর্যায়ে সব ছেলেমেয়েই বাস্তবতাকে মেনে নিতে বাধ্য হয়। বিসর্জন দিতে হয় নিজেদের ভালবাসাকে। তাতে তাদের দীর্ঘশ্বাসের ভিড়ে চাপা পড়ে যায় তাদের ঝরে যাওয়া ভালবাসার গল্পটা। আমি এমন কষ্ট আমার মেয়ে দিতে চাই না।” (আব্বু)
— “আব্বু সত্যি তুমি বেস্ট আব্বু! কয়টা বাবা এভাবে ভাবতে পারে?” (ওর আব্বুকে জড়িয়ে ধরে)
— “তোর মন যা বলবে তুই তাই করবি। আমি সব সময় তোর পাশে আছি। আমি জানি, তুই ভুল সিদ্ধান্তে নিজেকে জড়াবি না!” (আব্বু)
To be continue….