বুকের_বা_পাশে 🌿🌿 #written_by_Nurzahan_akter_allo #Part_22

0
468

#বুকের_বা_পাশে 🌿🌿
#written_by_Nurzahan_akter_allo
#Part_22

তুয়া এতোক্ষণ সেদিনের সেই ঘটনাটা ভাবতেই মগ্ন ছিলো।চোখের কোণে থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে।বুকের মধ্যে তোলপাড় করা ঝড় শুরু হয়ে গেছে।তুয়া ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে। হঠাৎ কারো ছোঁয়া পেয়ে তুয়া পাশ ফিরে তাকালো।প্রত্যয়ের আম্মু খাবার নিয়ে এসেছে।তুয়া প্রত্যয়ের আম্মুকে দেখে চোখ মুছে নিলো।আর উঠে বসলো।ভেজা চুলের পানিতে বালিশটাও ভিজে গেছে। কিন্তু তুয়ার কোনো খেয়ালই নেই। প্রত্যয়ের আম্মু তুয়ার চোখের পানি মুছে দিলো।আর কাঁদতে নিষেধ করেতুয়ার মুখের কাছে খাবার ধরলো।তুয়া খাবেনা বলে জেদ ধরলো।তখনই প্রত্যয় রুমে এসে ওর আম্মুকে বললো,
–“আম্মু তুমি গিয়ে দেখো বাবাইয়ের কিছু লাগবে কি না? আমি ওকে খাইয়ে দিচ্ছি।”
–“হুম!আমি যাচ্ছি তাহলে।”
–“হুম।”
প্রত্যয় খাবারের প্লেট হাতে তুলে নিলো।আর তুয়া উল্টো ঘুরে,প্রত্যয়ের দিকে পিঠ করে বসলো।প্রত্যয় তুয়ার বাহু ধরে ওর দিকে ঘুরালো আর নরম সুরেই বললো,
–“তোর বাবা হার্টের পেশেন্ট। আমি যদি এখন গিয়ে বলি তুই আমার কথাও শুনছিস না।তাহলে কি হবে বুঝতে পারছিস?আর হার্টের পেশেন্টেদের উত্তেজিত করা মোটেও উচিত না।” (প্রত্যয়)
—(সাইলেন্ট)
–“তাই বলছি এখন চুপ করে খেয়ে নে। তোর খাওয়া শেষ হলে আমরা হসপিটালে যাবো।আর তুই না খেলে আমিও হসপিটালে যাবো না। আর আংকেলেরও চেকআপ করা হবেনা।” (প্রত্যয়)

প্রত্যয়ের কথা শুনে তুয়া আর অবাধ্য হয়নি। প্রত্যয়ের হাতেই চুপ করে খাচ্ছে। তবে ওর অবাধ্য চোখ দুটো থেমে নেই।অবিরাম ধারায় গাল বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। প্রত্যয় ওর বাম হাত দিয়ে আলতো করে তুয়ার চোখ মুছে দিলো।তুয়ার খাওয়া শেষ হলে প্রত্যয় তুয়াকে রেডি হয়ে নিতে বললো।আর প্রত্যয় রুমের বাইরে চলে গেল। তারপর দুজনেই রেডি হয়ে হসপিটালের দিকে রওনা হলো।প্রত্যয় গিয়ে তুয়ার আব্বুকে চেকআপ করছিলো।আর এটা ওটা জিজ্ঞাসা করছিলো।তুয়া কেবিনের এক কোণে চুপ করে দাড়িয়ে দেখছিলো।তুয়ার বাবা তুয়াকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নিলো।তুয়া ছলছল চোখে ওর বাবার দিকে তাকালো।তারপর কেবিন থেকে বের হয় সামনের পেতে রাখা একটা চেয়ারে বসলো।আর জোর পূর্বক হেসে ওর চোখের পানিটা মুছে ফেললো।তারপর তুয়া আবার স্মৃতিচরণ করতে মগ্ন হয়ে পড়লো।

সেদিন___!!

–“ভা ল বা সি, খুব বে শি ভা ল বা সি। আম আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, খুব। আমি খারাপ, খুব খারাপ। আম আমাকে মাফ করে দাও। আর আ আ আমাকে একটু আশ্রয় দাও। প্লিজ!তোমার পায়ে পড়ি আমাকে তাড়িয়ে দিও না।নাহলে আমি বাঁচবো না সত্যি এবার মরেই যাবো।তুমি ফিরিয়ে দিলে আমি একেবারে নিঃশেষ হয়ে যাবো।” (তুয়া কান্না জড়ানো গলায়,উচ্চস্বরে কাঁদতে কাঁদতে)

প্রত্যয় কিছু বলবে তার আগেই প্রিয়ম এসে দাঁড়ালো ওদের সামনে।প্রিয়ম এসে একটানে তুয়াকে ওর দিকে ঘুরালো।তুয়া প্রত্যয়ের শার্টের হাতা খামছে ধরে আছে।প্রিয়মের চোখ রাগে লাল হয়ে আছে। মনে হচ্ছে এখনই সে ধ্বংস লীলার খেলায় মেতে উঠবে।তুয়া ছলছল চোখে প্রিয়মের দিকে তাকালো।আর প্রত্যয় যেনো বাক শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।মস্তিষ্ক কোন কাজ করছে না।এখন এই পরিস্থিতিতে মস্তিষ্কও টাও যেনো বেইমানীর খেলায় মেতেছে।

প্রিয়ম তুয়ার গাল চেপে ধরলো।আর চিৎকার করে বললো,
–“আমার বুকে আগুন জ্বালিয়ে এসে।এখন অন্য কারো বুকে মুখ লুকাচ্ছিস। তুই এতটা ছলনাময়ী এত ভালবাসা দিলাম তাও এমনটা করলি?এতদিন তোর মতো কালসাপকে আমার বুকে জায়গা দিয়েছিলাম?” (প্রিয়ম তুয়ার বাহু ধরে)
–“তুমি এখানে কেনো এসেছো?” (তুয়া)
–“কেন এসেছি?আমি কেন এসেছি, সত্যিই তুই জানিস না?প্রত্যয়কেই যখন ভালবাসিস তাহলে কেন আমাকে তুরুপের তাশ বানালি?কেন আমার সাথে মিথ্যে ভালবাসার অভিনয় করলি?” (প্রিয়ম তুয়াকে থাপ্পড় মেরে)

প্রিয়মের থাপ্পড়ে তুয়া মেঝেতে পড়ে গেছে।প্রিয়ম তুয়াকে তুলে আবার থাপ্পড় মারতে যায়।তখনই প্রত্যয় এসে প্রিয়মের হাত ধরে ফেলে।প্রত্যয় প্রিয়মের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“প্রিয়ম ওর গায়ে হাত তোলার সাহস,আর দেখিও না।অনেক হয়েছে আর না।”(প্রত্যয় তুয়াকে তুলে দাঁড় করালো)
— “হা হা হা, এত ভালবাসা। কষ্ট হচ্ছে বুঝি, ভালবাসার মানুষটাকে মার খেতে দেখে?তাহলে আমি কি করে সহ্য করবো? আমার কলিজাটাকে অন্য কারো বুকে মুখ লুকাতে দেখলে?বলতে পারেন আমার কি করা উচিত?” (প্রিয়ম চিৎকার করে)
–“ভালবাসা জোর করে পাওয়া যায় না প্রিয়ম।তুমি শান্ত হও,আর বোঝার চেষ্টা করো।” (প্রত্যয়)

প্রিয়ম এগিয়ে এসে তুয়ার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।তারপর তুয়ার দিকে তাকালো।আর শান্ত সুরে বললো।
–তু তু য়া অনেক তো হলো এবার চল না জান।আমাকে আর ফিরিয়ে দিস না।আমার খুব কষ্ট হচ্ছে রে জান।প্লিজ! আমাকে জীবন্ত লাশে পরিণত করিস না জান।তুই তো জানিস আমি তোকে ঠিক কতটা ভালবাসি।” (প্রিয়ম তুয়ার দুই গালে হাত রেখে)

প্রিয়ম কথাটা বলার পর তুয়ার হাত ধরে জোর করে নিয়ে যাচ্ছিলো।তখন তুয়া প্রত্যয়ের হাত আঁকড়ে ধরলো।প্রত্যয়ের হাতটাই যেন তুয়ার শেষ সম্বল।প্রত্যয় কি করবে বুঝতে পারছেনা।না পারছে প্রিয়মকে কিছু বলতে, আর না পারছে তুয়ার আঁকড়ে ধরা ওর হাতটা ছুটিয়ে নিতে।প্রিয়মের হাত টান পড়লো।তাই প্রিয়ম পেছনের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো।তখনই প্রিয়ম তুয়াকে প্রত্যয়ের হাতটা আঁকড়ে ধরে থাকতে দেখলো।তখন প্রিয়ম তুয়ার যে হাত ধরেছিলো সে হাতটা ছেড়ে দিলো।তুয়া ওর হাতটা ছাড়া পেয়ে প্রত্যয়ের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললো,

–“প্রিয়ম আমাকে মাফ করে দাও।আমি পারবো না তোমাকে বিয়ে করতে।প্লিজ তুমি চলে যাও আর আমার সামনে আসবেনা।প্লিজ! তুমি তুয়া নামক বিষাক্ত অতীতটার কথা ভুলে যাও। প্লিজ! প্লিজ আমাকে মুক্তি দাও।আমি তোমার থেকে মুক্তি চাই।আমি তোমার সাথে আর থাকতে চাইনা।” (তুয়া কেঁদে কেঁদে )
— “তুই মুক্তি চাচ্ছিস জান?আর আমি তোকে মুক্তি দিয়ে বাঁচবো কিভাবে?এই কথাটা একবার ভাবলি না? আচ্ছা আমি এতদিন তোর সব আবদার পূরণ করেছি।তুই বললে, আমার জানটাও তোকে দিয়ে দিতে পারি।আচ্ছা তোর মুক্তি চাই তাই তো?ওকে তাই হবে।তুই আমার কাছে থেকে কিছু চেয়েছিস আর আমি দিবো না। তা কি করে হয়?” (প্রিয়ম চোখ মুছে
প্রিয়মের কান্না তুয়া এর আগে দেখেনি।আজকে তুয়া প্রিয়মের কান্না করাটাও দেখলো।একটা ছেলে ঠিক কতটা ভালবাসলে,এভাবে কাঁদতে পারে?প্রত্যয় চুপ করে ওদের দেখে যাচ্ছে।কি বলবে কিছু বুঝতে পারছেনা।আর পরিস্থিতিটাও যেন বিপরীত পথে অগ্রসর হচ্ছে। এজন্য সবদিকের, ফলাফলটা বার বার শূন্যের খাতায় এসে থমকে যাচ্ছে।

ওইদিকে প্রিয়মের ফ্ল্যাট থেকে, প্রত্যয়ের আর তুয়ার পরিবারের সবাই চলে এসেছে।সবাই প্রত্যয়ের রুমে এসে উপস্থিত হয়েছে।সবাই দেখলো প্রিয়ম,তুয়া আর প্রত্যয়ের কার্যকলাপ।প্রিয়ম আজকে ওর ভালবাসার কাছে হার মানলো। তুয়াকে হারিয়ে ফেললো বিনা দোষে!প্রিয়মের এত রিকুয়েস্ট তুয়ার মন গলাতে পারলোনা।প্রিয়মেরও আর কিছু বলার নেই।মনে হচ্ছে,গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।আর মুখেও কোন শব্দ আসছেনা।সবকিছু যেন থমকে গেছে।হেরে গেছে ও জীবনের কাছে,আজকে তুয়াও প্রিয়মকে প্রত্যাখ্যান করলো।প্রিয়ম আর টু শব্দ করলো না।চোখ মুছতে মুছতে প্রত্যয়দের বাসা থেকে বের হয়ে গেল।

তুয়ার আব্বু হঠাৎ করে উনার বুকে হাত দিয়ে মেঝেতে বসে পড়লো।সবাই উনাকে কোনমতে ধরলো।প্রত্যয় আর তুরাগ দ্রুত গিয়ে উনাকে ধরে সোফাতে বসালো।তখনই তুয়া দৌড়ে ওর বাবার কাছে যাচ্ছিলো।ওমনি তুয়ার আম্মু তুয়াকে ধরে স্বজোরে ধাক্কা দিলো।এমন ধাক্কাতে খাটের কোণাতে লেগে তুয়ার কপাল কেটে গেল।আর কপাল বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়লো।প্রত্যয় এবার দৌড়ে তুয়াকে তুলে তুয়ার কপালে রুমাল চেপে ধরলো। ওদিকে তুয়ার আব্বুর অবস্থাও ভালো না।উনাকে দ্রুত হসপিটালে নিতে হবে।

প্রত্যয় উনার কিছু লক্ষণ দেখে দ্রুত অ্যাসপিরিন জাতীয় একটা মেডিসিন গুড়ো করে খাইয়ে দিলো।কারণ গলাধঃকরণ করা ঔষুধের তুলনায় চিবিয়ে সেবন করা ঔষুধ দ্রুত শরীরের উপর ক্রিয়া করে। তবে পেশেন্টের চিবিয়ে সেবন করার শক্তি না থাকলে ঔষুধ গুঁড়ো করে সেবন করতে সাহায্য করতে হবে। প্রত্যয় তুয়ার আব্বুর বুকে ওর ডান হাত রেখে সেই হাতের পিঠে অন্য হাত মুঠ করে নিলো।তারপর আস্তে আস্তে চাপ দিতে থাকলো। অর্থাৎ সিপিআর করলো (এভাবে ধীরে ধীরে চাপ দেওয়াকে, চিকিৎসার ভাষায় সিপিআর বলে)।হার্ট এ্যার্টাক হলে রোগীর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা জ্ঞান হারিয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে দুই হাত দিয়ে রোগীকে সিপিআর (কার্ডিয়াক পালমোনারি রিসাসসিটেশন) দিতে হবে।আর প্রত্যয় প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে তাই করলো।

তারপর তুয়ার বাবাকে সবাই মিলে দ্রুত হসপিটালের নিয়ে গেল।প্রত্যয় দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলো।তুয়ার বাবা হার্ট এ্যার্টাক করেছে।কিন্তু কোন ধরনের হার্ট এ্যার্টাক করেছে,এটার জন্য টেস্ট করতে দেওয়া হয়।কারন:-
প্রকট (acute) হার্ট এ্যাটাক দুধরনের হয়:১। STEMI, ২। NSTEMI , প্রথমটির ক্ষেত্রে আধুনিক চিকিৎসা হলো সঙ্গে সঙ্গে এ্যানজিওগ্রাম করে রিং বা stent পরিয়ে দেয়া। এবং এটি করতে হবে লক্ষণ শুরুর ১২ ঘণ্টার মধ্যে, নইলে হার্টের মাংসপেশির মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়। হার্ট ও ব্রেনের টিসু একবার ধ্বংস হলে আর ফিরিয়ে আনা যায় না।

আরেকটি বিষয়। STEMI হার্ট এ্যার্টাক নির্ণয় করতে শুধুমাত্র একটি ইসিজি-ই যথেষ্ট। কোন রক্ত পরীক্ষার আবশ্যকতা নেই। ইসিজি করে যদি দেখা যায়, রোগীর STEMI হয়েছে। তাহলে সাথে সাথে তাকে জরুরি বিভাগ থেকে সরাসরি ক্যাথলাবে নিয়ে, জরুরি এ্যানজিওগ্রাম করে রিং পরাতে হবে।প্রকট হার্ট এ্যাটাকের দ্বিতীয় ধরণটি হল:- NSTEMI . এটা শুধু ইসিজি দিয়ে বুঝা যাবে না। রোগীর লক্ষণ, ইসিজি এবং রক্ত পরীক্ষা Troponin করে যদি দেখা যায়, এটি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি! তাহলে কিছু ঔষুধ প্রয়োগ করতে হবে!আর একধরণের রক্তজমাটবিরোধী হেপারিন (injection Clexane) দিয়ে, যত দ্রুত সম্ভব এ্যানজিওগ্রাম করে দেখতে হবে! ব্লকের সংখ্যা, ধরণ ও মাত্রা কেমন। ব্লকের চরিত্রের উপর নির্ভর করবে রোগীর রিং লাগবে, বাইপাস (ওপেন হার্ট) সার্জারি লাগবে, নাকি শুধু ঔষুধ দিয়ে রাখা যাবে।

বিপদ যখন আসে, তখন চারদিক থেকেই তেড়ে আসে।তুয়া বাবা NSTEMI হার্ট এ্যার্টাক করেছে।প্রত্যয় ওর সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছে। ওটির বাইরে সবাই কাঁদছে! তুয়ার আম্মু , তুয়ার সামনে গিয়ে স্বজোরে একটা থাপ্পড় মারলো।হটাৎ থাপ্পড়ের আওয়াজ শুনে তুরাগ সহ সবাই চমকে উঠলো।তুয়ার আম্মু কড়া ভাবে বললো,
–“খুশি হয়েছিস?এবার শান্তি হলো তোর?মানুষটাকে একেবারে শেষ করে দিলি।আর তুই এখানে কি করছিস?তোকে তো আমরা চিনিনা।আমাদের মেয়ে মরে গেছে।আর একটা কথা শুনে রাখ তোর জন্য যদি আমার নিরাপদ স্থানটা(স্বামীকে) হারাতে হয়।তাহলে তোকেও আমি মাফ করবো না।” (তুয়ার আম্মু)
–(তুয়া সাইলেন্ট )
–“আম্মু শান্ত হও।চুপ করো আর ধৈর্য ধরো।দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।” (তুরাগ ওর আম্মুকে ওখান থেকে নিয়ে গেল।)

তুয়ার কোনো হেলদোল নেই!সে রোবটের মতো চুপ করে বসে আছে।তিন্নি তুয়ার পাশে বসে কাঁদছে।আর তুয়ার সাথে কত কথা বলছে। কিন্তু তুয়া কিছু শুনছে বলে মনে হচ্ছে না। ও একেবারে নিঃশ্চুপ হয়ে গেছে।

দুইঘন্টা পর প্রত্যয় ওটি থেকে বের হলো।আল্লাহর রহমতে আপাতত কোনো রকম বিপদটাকে সামলাতে পেরেছে।দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসাটা করার ফলে এ যাত্রায় রক্ষা পেলো তুয়ার আব্বু।এখন যত দ্রুত সম্ভব, এ্যানজিওগ্রাম করে দেখতে হবে। ব্লকের সংখ্যা, ধরণ ও মাত্রার অবস্থা কেমন । ব্লকের চরিত্রের উপর নির্ভর করবে, রোগীর রিং লাগবে, বাইপাস (ওপেন হার্ট) সার্জারি লাগবে, নাকি শুধু ঔষুধ দিয়েই কাজ হবে।প্রত্যয় সবাইকে একথাটাই জানালো।সবাই একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও চিন্তাটা মাথায় থেকে গেলো।তুরাগ প্রত্যয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“বাবার সাথে দেখা করা যাবে?”
–“ভাইয়া আংকেলকে আপাতত দুর থেকেই দেখুন।কারন কাউকে কাছে থেকে এলাও করা আপাতত সম্ভব হচ্ছে না।” (প্রত্যয়)
–“হুম।”

তারপর সবাই দুর থেকেই তুয়ার বাবাকে দেখলো।তুয়া স্তব্ধ হয়ে মাথা নিচু করে বসে আছে।একটু পর কিছু পড়ার শব্দ পেয়ে প্রত্যয়সহ সবাই বাম দিকে তাকালো।আর দেখতে পেলো তুয়া সেন্সলেস হয়ে মেঝেতে পড়ে আছে।

To be continue…!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here