#হৃদস্পন্দনের_টানে___
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_6
❤❤
জুবিনঃ নুর তুমি ওই মেডিসিন আর খাবে না…কেন?এই কেন এর উওর আমি এখন দিতে পারবো না।তবে আমি তোমার খারাপ চাইবো না এই বিশ্বাস টুকু রাখো…
এর উওর তুমি পেয়ে যাবে বাট কিছুদিন আমার কথা মত তোমার চলতে হবে।
–
জুবিন নুরকে নিয়ে একটা মেডিসিনের দোকানে গেল তারপর ওর লিখে দেওয়া মেডিসিন গুলো নিলো।আর নুরকে বললো এগুলো খেতে বাট ওর রুমে থাকা মেডিসিন যাতে ভুলেও যাতে না খায়।তবে এমন ভাবে খাবে এগুলো যাতে কেউ না দেখে আবার ওই গুলোও যেন খায় এমন একটা ভাব করে চলতে!নুর এতটুকুহ বুঝেছে এখানে হয়তো নুরের ভালো হবে এজন্য জুবিন এসব বলছে….আর নুর বেশি কিছু জিজ্ঞেস করিনি কারন কেন এর উওর সময় মত পেয়ে যাবে আর সেটা জুবিনই ওকে দিবে…..
–
জুবিন নুরের থেকে ওর ফোন নাম্বার টা নেয় আর কফি শপি গিয়ে কফি খেয়ে তারপর জুবিন নুরকে বাসায় পৌঁছে দেয়।নুর এতটুকু সময়ে বুঝছে যে জুবিন যথেষ্ট হাসি-খুশি আর ভাল মাইন্ডের একটা ছেলে।নুর বাসায় এসে মা -মায়ের সাথে আড্ডা দেয় তারপর ডিনার করে নেয় আর শুয়ে পড়ে…
–
নুর বিছানায় শুতেই জুবিনের নাম্বার থেকে ফোন আসে!নুর ওর চোখের পানি মুছে ফেলে ফোনটা রিসিভ করে। জুবিন হাসি মুখে ওপাশ থেকে বলে উঠে….
জুবিনঃ আসসালামু আলাইকুম ম্যম! কি করেন?
নুরঃ ওয়ালাইকুম সালাম! শুয়ে আছি আপনি..
জুবিনঃ আমি কেবল হসপিটাল থেকে আসলাম!
নুরঃ ফ্রেশ না হয়ে ফোন দিলেন যে..
জুবিনঃ ন ন মা মানে বন্ধুটা কি করছে জানার জন্য আর কি??
(আমার জানটার সাথে কথা বলার মনটা আকুবাকু করছিলো এজন্য…. মনে মনে)
নুরঃ ওহহ!আপনি ফ্রেশ হয়ে,ডিনার সেরে আসুন..
জুবিনঃ হুম হুম! ১০ মিঃ দাও আমাকে..
নুরঃ ১০মিঃ না আপনাকে ২০ মিঃ দিলাম….
জুবিনঃ হা হা হা! ওকে…
তারপর জুবিন ওর কাজ সেরে কথা নুরের সাথে বকবক করতে থাকে!
–
নুর আর জুবিনের রিলেশন টা এখন নরমাল হয়ে গেছে!নুর এখন ওর সব কথা জুবিনকে শেয়ার করে,এক সাথে ঘুরতে বের হওয়া,ফুচকা খাওয়ার, বন্ধুর মত পাশাপাশি হাঁটা, মাঝে মাঝে জুবিনকে বাসায় ডেকে রান্না করে খাওয়ানো,দুজন একসাথে শপিং করতে যাওয়া… আর এই কয়েকদিন জুবিন নুর আপনি থেকে তুমি বলাতে পেরেছে।নুর জুবিনের সঙ্গ পেয়ে এখন নিজের কষ্টটা একটু হলেও ভুলাতে পেরেছে….
–
আজকে সকালে থেকে জুবিন ফোন রিসিভ করছে না!নুর সকালে উঠে দেখে ওর গাছে একটা লাল টকটক গোলাপ ফুটেছে,বাট এটা জানানোর জন্য জু্বিনকে ফোন দিচ্ছে বাট জুবিন ফোনটা রিসিভ করছে না।নুর ব্রেক ফাস্ট করে জুবিনের বাসায় চলে গেল।নুর জুবিনের বাসায় গিয়ে দাঁতে দাঁতে চেঁপে বলে…
–
নুরঃএই পাগলের ডাক্তার! কই তুমি (চিৎকার করে)
সার্ভেন্টঃ স্যারের জর কালকে রাত থেকে!স্যার
উঠেও নি, আর হসপিটালেও যায় নি।
নুরঃ কিছু খেয়েছে??
সার্ভেন্টঃ সুপ করে দিয়ে এসেছি.. খেয়েছি কিনা জানি না।
নুরঃওকে!
–
নুর জুবিনের রুমে গিয়ে দেখে জুবিন চোখের উপর হাত দিয়ে শুয়ে আছে।একটা সাদা গেন্জী আর কালো টাওজার পড়ে।নুর গিয়ে জুবিনের কপালে হাত রাখতেই জুবিন চোখ খুলে দেখে নুর দাড়িয়ে আছে!জুবিন উঠে বসে বেডে নুরকে দেখে…
জুবিনঃ তুমি কখন আসলে!শরীর ঠিক আছে তোমার…
নুরঃ নিজে জর বাধিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে আমার শরীর ভালো আছে কি না??
জুবিনঃ আরে না এখন ঠিক আছি আমি…
নুরঃ কিছু খেয়েছেন আপনি…সার্ভেন্ট নাকি সুপ দিয়ে গেছে।
জুবিনঃহুমম!বাট খেতে পারি নি…
নুরঃ কেন??
জুবিনঃ অনেক ঝাল!আসলে আমি বেশি ঝাল খাবার একেবারেই খেতে পারি না।
নুরঃ ওহহ!দাড়াও আমি বানিয়ে দিচ্ছে।
জুবিনঃ না না লাগবে না।আমি কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না…
–
নুর জুবিনের জন্য সুপ করে এনে খাইয়ে মেডিসিন খাইয়ে দেয়।নুর আসাটা জরটাও মনে হচ্ছে ভয়ে পালিয়েছে!নুর আর জুবিন ডিভানের উপর বসে কফি খাচ্ছে আর গল্প করছে!নুর ভেবে পায় না একটা ছেলে এত কথা কি করে বলতে পারে?নুরের সাথে জুবিন যতটুকু সময় থাকে ততটুকু সময় নুরকে হাসাতেই থাকে কোন না কোন ভাবে….
–
নুরঃ আচ্ছা জুবিন আমার একটা হিসাব মিলছে না! তুমি মিলিয়ে দিবে…
জুবিনঃহুমম বলো! চেষ্টা করবো..
নুরঃ ডাক্তার রা তো বেশি কথা না!একটু রাগী রাগী আর গম্ভীর হয়, তাহলে তুমি এত বেশি কথা বলো কেন???
জুবিনঃ হা হা হা! কেন ডাক্তারদের কি বেশি কথা বলতে নেই??আর এটা কোথায় লিখা আছে শুনি??
নুরঃ আসলে তা না!আমার জীবনে দেখা বেশি ডাক্তারাই দেখছি কেমন গম্ভীর টাইপের ।বাট তুমি অনেক মনখোলা টাইপের,আর হেসে হেসে কথা বলো, এজন্য বললাম আর কি…
জুবিনঃআসলে প্রতিটা ডাক্তারের ব্যবহার এমন হওয়া উচিত যাতে কোন রুগী ডাক্তারের ব্যবহারেই তার অধেক অসুখ ভাল হয়ে যায়…যদি গম্ভীর হয় তো অনেক রুগী ভয়ে তার সমস্যার কথায় বলতে পারে না।কথা বলতে ভয় পায়,কিছু জিজ্ঞাসা করতে চেয়েও পারে না। এজন্য আমি চেষ্টা করি সবার সাথে মিশে চলার…আর রুগীদের সাথে হেসে কথা না বললে,ভালো ভাবে না মিশলে তাদের মনের কথা জানবো কি করে???
নুরঃ হুমমম! তোমকর কথা গুলো পছন্দ হয়েছে।
ডাক্তারঃ হাস্যকর একটা কথা শুনবে!অনেক মেয়ে/ছেলে যখন কোন ইনজেকশন দিতে আসে তখন ভয়ে কেঁদে দেয়,আর বলে আস্তে দিতে যাতে ব্যাথা না পায়!বাট আমরা ডাক্তার যদি বলি ভয় পাবেন না ব্যাথা লাগবে না।তখন দেখবে রুগী মনে মনে সাহস পায় বাট ইনজেকশন পুশ করতে যতটুকু লাগার কথা সে ততটুকু ব্যাথা পায়….বাট এখানে শান্তনাটা দেয় যাতে রুগীটা সাহস পায়।এই কথাটাই যদি কারো ভয় টা দুর তো হোক না…।
নুরঃ না না অনেক ডাক্তার আছে ইচ্ছে করে ব্যাথা দিয়ে ইনজেকশন দেয়।আমি তো একবার কেঁদে দিসিছিলাম যখন আমার নিউমোনিয়া হয়েছিলো তখনকার ইনজেকশনে……
জুবিনঃ আসলে তা না অনেক মেডিসিন আছে চামড়ার নিচে দিতে হয়,আবার কোন মেডিসিন আছে মাংসতে দিতে হয়,কোনটা আছে রগে দিতে হয়।সেটা মেডিসিনের উপর নির্ভর করে।আর মেডিসিন অনুযায়ী ইনজেকশনের সুচ টা পুশ করা লাগে….এজন্য কোনটাই ব্যাথা লাগে আবার কোনটাই লাগে না..
নুরঃ হুমমম বুঝলাম!তাও রুগীর কথা ভেবে আস্তে ইনজেকশন টা দেওয়া উচিত। সব ডাক্তারদের….
জুবিনঃচিকিৎকার সময় আবার বেশি মায়া করলে রোগ ভালো হবে না।তাই আমাদের ডাক্তারকে মাঝে মাঝে কঠোর হতে হয়। বুঝলেন… (নাক টেনে)
নুরঃ হুমমম ডাক্তার সাহেব সবই তো বুঝলাম!বাট আরেকটা কথা! আপনার তো কোন কিছু অভাব নেই তাহলে বিয়ে করে সংসারী হচ্ছেন না কেন শুনি???
জুবিনঃপাগলের ডাক্তার আমি!কে আর বিয়ে করবে আমাকে বলো।ওয়েট করি কোন মেয়ে যদি একটু দয়া করে এসে বলে আমাকে বিয়ে করবে….হা হা হা
নুরঃ হা হা হা! সেই আশাতে বসে থাকো? ততদিনে বুইড়া হয়ে যাবে…
–
জুবিনের সামনে একজন লোক বসে আছে!জুবিনের ঠোঁটে রহস্যজনক হাসি ঝুলিয়ে লোকটির দিকে তাকিয়ে আছে!লোকটিও ভ্রু কুচকে জুবিনের দিকে তাকিয়ে আছে।জুবিন লোকটির দিকে তাকিয়ে বললো…
জুবিনঃ নুরকে মারতে চান কেন আপনি??ওর পেছনে লেগেছেনই বা কেন??এবার আমার সামনে অত্যন্ত গিরগিটির খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসুন…
চলবে…
(কেমন হলো জানিও! তাহলে আরেক পার্ট দিবো সন্ধ্যায়…)