#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_12
🍁🍁
রোদঃ বুঝলে ভালো আর না বুঝলে আরো ভালো।এই শোনো আর একটা কথা তুমি পড়ে যাবে,আছাড় খাবে, ব্যাথা তোমার যত যাই ইচ্ছা হোক! বাট হিজাব আর ওড়না যাতে এদিক ওদিক না হয়।আর কালকে রাতে কি বলছি মনে আছে তো??
আলোঃ জি…!!
রোদঃ ওকে! এখন যাও..!!
.
.
.
তারপর আলো চলে গেল আর রোদ আলোর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো! তারপর রোদও আড্ডা দিতে চলে গেল!আলোর কলেজের মাঠেই রোদ, আকাশ,সিয়াম, আবৃতি বসে আড্ডা দিতে শুরু করলো।রোদরা সব সময় এখানেই আড্ডা দেয় সিনিয়র বলে কথা!রোদ রা আড্ডা দিচ্ছে ঠিক তখন একটা মেয়ে এসে ওদের সামনে দাঁড়ালো ।মেয়েটি রোদের দিকে তাকিয়ে লজ্জা মাখা মুখ আর হাতে গোলাপ নিয়ে রোদকে প্রোপোজ করলো!রোদ মুচকি হেসে মেয়েটিকে ইশারায় আবৃতির পাশে বসতে বললো।মেয়েটিও খুশিতে গদগদ করে রোদের পাশে বসে পড়লো…!রোদ মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললো…!!
.
.
.
রোদঃ তোমার নাম কি??
সোনালীঃ আমার নাম সোনালী শেখ!!
রোদঃ ওহহ নাইস নেম!তুমি কোন ইয়ারে পড়াশোনা করছো??
সোনালীঃআমি ইন্টার প্রথম বর্ষে ছাএী!আপনাকে আমার অনেক ভালো লাগে। আমি আপনাকে সত্যি সত্যি অনেক লাভ করি…!!
রোদঃ তুমি কি আমাকে চেনো আমি কে??
সোনালীঃ জি আমি আপনাকে চিনি! আর আপনার মত লেডি কিলারকে কে না চিনে।
রোদঃ হুমমম বুঝলাম!আচ্ছা আমি তোমাকে কিছু কথা বলি কেমন!আমার কথার মাঝে কোন কথা বলবে না।আগে শুনবে আমার কথাগুলো…….!!
আকাশঃমেয়েটি এখন বাঁশ খাবে সিওর..(বিরবির করে)
সিয়ামঃ এ আর নতুন কি!যা হচ্ছে হতে দে (বিরবির করে)
আবৃতিঃ মেয়েটার জন্য আপসোস হচ্ছে!তবে যাই হোক মেয়েটার জন্য এক বালতি সমবেদনা (বিরবির করে)
সোনালীঃ জি জি বলুন!আমি আপনার সব কথা শুনবো। (অনেক খুশি হয়ে)
রোদঃ বোন এসব আর আমাকে বলবে না কেমন! সত্যি বলতে এসব আমার পছন্দ না।আর তুমি এখানে পড়াশোনা করতে এসেছো সো পড়াশোনাতেই মনোযোগী দাও।কেবল তোমার জীবনে শুরু সো আবেগ প্রবণ হয়ে এমন কিছু করে বসো না যাতে পরে পস্তাতে হয়।ভালো করে পড়াশোনা করো আর নিজের পায়ে দাড়াও!
সোনালিঃ….
রোদঃআমি তোমাকে কতগুলো বুঝিয়ে বললাম তোমার ভালোর জন্য। আর আমি আশা করবো তুমি আমার কথা শুনবে!আর যদি আমার কথা এখন না শুনো আর এই কাজটাই আবার রিপিট করো তো! সবার সামনে এমন একটা থাটিয়ে থাপ্পড় দিবো! যে প্রেমের ভুত মাথা থেকে উবে যাবে।এখন আর একটাও কথা না এখান থেকে উঠে সুন্দর করে ক্লাসে চলে যাবে কেমন..(শান্ত ভাবে)
সোনালীঃ…..
রোদঃ আর এসব হাজিবাজি বাদে অন্য কোন সাহায্য লাগলে বলবে কেমন…!!
সোনালীঃ জি… (মাথা নিচু করে)
–
বেচারা মেয়েটি আর কোন কথা না বলে একবার ছলছল চোখে রোদের দিকে তাকিয়ে সোজা হেঁটে চলে গেল!ঠান্ডা মাথায় আর শান্ত সুরে কিভাবে বাঁশ দিতে হয় এটা রোদের থেকে সবার শেখা উচিত।মেয়েটি চলে যেতেই আকাশ,সিয়াম আর আবৃতি হাসিতে ফেটে পড়লো।কারন এই নিয়ে ৪৮ টা মেয়ে রোদকে প্রোপোজ করছে আর রোদ সবাইকে বোন ডেকে সব গড়মিল করে দিসে।….
.
.
.
সিয়ামঃ আবার আরেকটা বোন বানালি রোদ হা হা হা
আবৃতিঃ এই রোদ তুই এমন করি কেন??একটা প্রেম করলে তো পারিস।
রোদঃ ধুররর এসব প্যারা আমি সহ্য করতে পারবো না..!!আর যাকে ভালবাসার তাকে ভালবাসলেই হলো।
সিয়ামঃ তা মেঘের বউমনি কি আজকে কলেজে এসেছে???
রোদঃ হুমমম!
আকাশঃ আলো যথেষ্ট ভদ্র একটা মেয়ে!রোদ আলোকে ইগনোর করিস না ভাই! এমন মেয়ে আর পাবি না।
রোদঃ হয়েছে উপদেশ দেওয়া! নাকি আরো বাকি আছে।বাকি থাকলে তারাতারি শেষ কর।
আকাশঃ ভাল কথা বললে উপদেশ হয়ে গেলো তাই না!
সিয়ামঃ যে আলো বাসায় তুলছো বস! সেই আলোতেই তুমি আলোকিত হবে….হা হা হা
আবৃতিঃ হা হা হা! যা বলেছিস সিয়াম
রোদঃ তোদের আমার পেছনে লাগা ছাড়া কি আর কোন কাজ নাই!আর আলোকে এখন পাত্তা দেওয়ার সময় আমার কাছে নাই।সো ওই মেয়েটার কথা বলিস না তো…
আকাশঃ হা হা হা!হুমমম! হুমম!
সিয়ামঃ রোদের আলো হয়েই নিজেকে আলোকিত করবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা….!!
রোদঃ হুমম ব
–
রোদ কথা বলতে বলতে রোদের ফোন রিংটোন বেজে ওঠে!রোদ পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে রোদের আম্মু। রোদ ফোনটা রিসিভ করে…
রোদঃ জি আম্মু..!!
আম্মুঃ আলো কি কলেজে পৌঁছে গেছে!
রোদঃ হুমমম
আম্মুঃআব্বু তুমি এখন কোথায় আছো??
রোদঃ আমি আশে পাশেই আছি!কেন কিছু বলবে??
আম্মুঃ আব্বু তুমি কি এখন একটু শপিং মলে যেতে পারবে??
রোদঃ কেন আম্মু?? জুরুরী কিছু..!!
আম্মুঃ আসলে একটা বড় টাওয়াল দরকার??
রোদঃ টাওয়াল আর এখন তুমি বড় টাওয়াল দিয়ে কি করবে??
আম্মুঃ আলোর ওয়াশরুমে যে টাওয়ালটা আছে ওইটা তো ছোট টাওয়াল।আর আলোর মে বি একটু সমস্যা হয় কারন ওর চুল তো বেশ বড়। সাওয়ার নিয়ে চুল পেছানো যায় না।যদিও আলো আমাকে লজ্জায় কিছু বলে নি বাট আমি খেয়াল করছি..!!
রোদঃ আম্মু আমি মেয়েলি জিনিস কোনদিন কিনি নি! তুমি বরং তোমার মেয়েকে নিয়ে নিজে গিয়ে কিনে নাও।
আম্মুঃ আমার কোমরের ব্যাথাটা বেড়েছে এজন্য তোমাকে বললাম।(যাহা ঢপ)
রোদঃ উফফ! আজকেই লাগবে কালকে আনলে হবে না। (বিরক্তের সুরে)
আম্মুঃ কলেজ থেকে এসে সাওয়ার নিবে তখন তো লাগবে তাই না।তাই এখন আনলে তো ভালো হয়…!!
রোদঃহুমম বুঝেছি!
–
তারপর রোদ ফোন কেটে দিলো আর একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।রোদ আকাশ আর সিয়ামকে বললো এখানেই আড্ডা দিতে আর আলোর দিকে খেয়াল রাখতে।সিয়াম আর আকাশ মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে হ্যা বোঝালো।আর রোদ বাইক নিয়ে গেল শপিংমলে!রোদ ওর বাইক পার্ক করে শপিংমলে ঢুকে টাওয়াল দেখতে শুরু করলো!একটাও রোদের পছন্দ হচ্ছে না!রোদের বিরক্ত লাগছে। অনেক টাওয়াল দেখার পর রোদের একটা টাওয়াল পছন্দ হলো।
.
.
.
রোদ যে টাওয়াল টা পছন্দ করছে সেটা একটু বড় সাইজের আর টাওয়ালটা হালকা পিংকের উপর সাদা গোলাপ আঁকানো ! রোদ টাওয়ালটা নিলো আর আলোর জন্য একটা হেয়ার ড্রায়ার নিলো।তারপর রোদ সেগুলো নিয়ে আবার কলেজে চলে আসলো!রোদ আসার পর পরই আলো বাইরে বেরিয়ে আসলো!কারন আজকে আলোর আর কোন ক্লাস নাই!আলো কলেজের গেট দিয়ে বের হতেই দেখে রোদ বাইকে বসে ওর বন্ধু দের সাথে আড্ডা দিচ্ছে! আলো ভাবছে এখন রোদের কাছে যাবে কি না!আর রোদকেই বা কিভাবে ডাকবে।আর রোদ তো আলোকে কড়া ভাবে বলে দিয়েছে! সে যেন ছেলেদের থেকে দুরে থাকে!এখন ওখানে গেলে যদি রোদ রেগে যায় এজন্য আলো চুপচাপ দাড়িয়ে নখ কামড়াচ্ছিলো।
.
.
.
রোদ আলোকে দেখে সিয়াম আর আকাশের থেকে বিদায় নিয়ে বাইক স্টাট দিয়ে আলোর সামনে এসে থামলো।রোদ আলোর সামনে এসে অনেক জোরে ব্রেক কষে আর আলো ভয় পেয়ে কয়েক পা পিছিয়ে যায়।রোদ তেডি স্মাইল দিয়ে আলোকে বাইকে বসতে বলে!আলো রোদের বাইকে বসেতেই একটা জিনিস খেয়াল আর সেটা হলো অনেকেই আলোর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে বাট আলো কিছু বুঝতে পারে না । রোদ কোন কথা না বলে বাইক স্টাট দেয়!আলো মুখ কাচুমাচু করে রোদকে জিজ্ঞেস করে…
.
.
.
আলোঃ ভ ভ ভাইয়া একটা কথা বলবো??আ আম
রোদঃনা!তার আগে তুমি আমাকে একটা কথা বলো! তুমি আমার কত নাম্বার মায়ের পেটের বোন যে আমাকে ভাইয়া ডাকো।ভাইয়া না ডেকে একেবারে মামা কিংবা আংকেল ডাকলেই তো পারো!একেবারে ল্যাটা চুকে যায়(দাঁতে দাঁত চেপে)
আলোঃ…..
রোদঃ এবার থেকে আমাকে মামা বা আংকেল ডাকবে??আর এখন চুপ করে আছো কেন?ফাজিল মেয়ে কানের কাছে সব সময় ভাইয়া ভাইয়া করে আমার কানের পোকা বের করে দেয়।(দাঁতে দাঁত চেপে)
আলোঃ…..
রোদঃ আর একটা কথা বলবে বলে আবার চুপ করে থাকলে কেন?এখন তোমার কথাটা শোনার জন্য কি আমাকে সিরিয়ালে দাড়াতে হবে..!!
আলোঃইয়ে না মানে! আমি যখন আপনার বাইকে বসলাম তখন অনেকে ওইভাবে তাকিয়ে ছিলো কেন?ওরা কি আপনাকে আগে থেকে চিনে…??
রোদঃ আমি ওই কলেজের স্টুডেন্ট !আর আমাকে সবাই ভালো করেই চেনে!আর সবাই কেন তাকিয়ে ছিলো আমি কি করে বলবো??ওরা তো আর আমাকে আগে থেকে কিছু বলে তারপর তাকায় নি যে! আমি সব জানবো আগে থেকে তাই না..!!
আলোঃ হুমমম…!!
রোদঃআর কে কি বললো?কে কি করলো এটা দেখার জন্য আপনাকে কলেজে পাঠানো হয় না।তাই অন্য দিকে খেয়াল না করে বইয়ের দিকে খেয়াল করুন।
–
রোদের সাথে আগ বাড়িয়ে কথা বলতে যাওয়া আর নিজের দিকে বাঁশের বাগান ঘুরিয়ে নেওয়া ওই একই কথা!তাই আলো আর কিছু বললো না চুপ চাপ রাস্তার মানুষ দেখতে লাগলো! আর রোদ ওর বাইকের লুকিং গ্লাস দিয়ে আলোর দিকে তাকাচ্ছে বার বার! কারন রোদে আলোর মুখটা লাল হয়ে গেছে!গাল গুলোও বেশ লাল হয়ে গেছে!নাকের উপরে, ঠোঁটে নিচে আর থুতনীতে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে আর দেখতে দারুন লাগছে!রোদের জানা ছিলোনা কারো ঘামার্ত মুখ দেখতে এত ভালো লাগে!রোদের কারনে ঘাম গুলো চিকচিক করছে…!!আলোর ওর নিচের ঠোঁট কামড়ে রাস্তার মানুষ দেখছে আর রোদ ওর বাইকের গ্লাসে আলোকে দেখছে।
.
.
.
রোদ একটা দোকানের সামনে বাইক থামিয়ে আলোকে নামতে বললো।তারপর রোদ একটা স্প্রাইট নিয়ে খেতে শুরু করলো!রোদ আলোকে জিজ্ঞাসা করলো কি খাবে?আলো মাথা নাড়িয়ে বললো কিছু খাবে না! রোদ আলোকে দুইটা ভ্যানিলা আইসক্রিমের বক্স কিনে দিলো! আর দুইটা আইসক্রিম কিনে দেওয়ার কারন বাসাতে যে আরেক বিচ্ছুটা আছে তার একাই একটা লাগে!রোদ হাফ স্প্রাইট খেয়ে আলোকে বাকিটা খেতে বললো। আর আলো রোদকে মাথা নাড়িয়ে বললো যে সে খাবে না বললো!রোদ আলোর দিকে রাগী চোখে তাকাতেই আলো ভয়ে খেতে শুরু করলো!আলো ভয়ে তাড়াহুড়ো করে খেতে ভীষম খায়! রোদ এগিয়ে এসে আলোর দিকে পানি এগিয়ে দেয় আর মাথা হাত বুলাতে থাকে।আলোর কাশি থামলে রোদ আলোর দিকে তাকিয়ে বলে…!!
রোদঃ খাবে না বলে হাভাতের মত খাচ্ছিলে কেন??আস্তে খেলে কি আমি কেড়ে খেয়ে নিতাম।
আলোঃ বললাম তো খাবো না আপনিই তো…
রোদঃ ওহহহ্ তারমানে আমি যদি তোমাকে এখন বলি! আমাকে কিস করতে! তাহলে কি সত্যি আমাকে কিস করবে??
আলোঃ……
–
রোদের কথা শুনি আলো চোখ বড় বড় রোদের দিকে তাকিয়ে আছে!রোদ ওর ঠোঁটের কোণে দুষ্টু হাসির রেখা টেনে আলোকে বললো বাইকে বসতে! রোদও বাইকে বসে বাই স্টাট দিলো।তারপর দুই বাসায় গেল!আলো বাইক থেকে নামতেই রোদ শপিংব্যাগটা আলোর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো……..!!!
–
রোদঃ এই যে খুকুমনি এটা শপিংব্যাগটা নাও!
আলোঃ কি আছে এটাতে??
রোদঃ এখানে একটা টাওয়াল আছে!আর টাওয়ালটা নিয়ে আপনি নিজের রুমে গিয়ে আগে আপনার এই পেত্নীর মত দেখতে মুখটা মুছবেন।আমি কিন্তু আগে মুখটাই মুছতে বলছি মনে থাকে যেন!আর আমার কথা না শুনলে কালকে থেকে কলেজে যাওয়া বন্ধ…!!
রোদ আলোকে এই কথাটা বলে হনহন করতে করতে বাসায় ঢুকে গেল।
To be continue…..
(সন্মানিত পাঠক-পাঠিকাগণ আপনাদের কাছে যদি আমার লিখা গল্প ভালো না লাগে! তারা প্লিজ ইগনোর করুন!শুধু শুধু আপনারা কটু কথা বলে আমার উৎসাহ টা নষ্ট করে দিবেন না।আর যারা next লিখেন তাদের বলছি আপনারা Next না লিখলেও পরের পার্ট দিবো।তাই কষ্ট করে শুধু next লিখার দরকার নাই….পাঠকরা কেন কষ্ট করবে বলুন!কষ্ট তো করবে রাইটার রা!তাই আমি আপনাদের এই কষ্টটাও কমিয়ে দিলাম……!!!)