মেঘনিবাসী #Part-9

1
269

#মেঘনিবাসী
#Part-9
#Esrat_Jahan

আকাশ রৌদ্রকরোজ্জ্বল। দুপুরের সোনাবরণ রোদ্দুরে মেতে আছে চারিপাশ৷ ক্লান্ত পাখিরা দূরদিগন্তে ওড়ে যাচ্ছে ডানা মেলে। ব্যলকনিতে দাঁড়িয়ে অতিব সুন্দর দৃশ্যপটটা মস্তিষ্কে গেঁথে নিচ্ছিলো বিভা। তখনি উচ্চস্বরে বেজে ওঠলো ওর হাতের সেলফোনটা। রুবাইদার ফোন। রিসিভ করে ফোনটা কানে ঠেকালো ও।

‘হ্যালো বিভা? কী করছিস রে মা?’

বিভা ধরা গলায় বলে, ‘কিছু করি না। তোমরা কী করো? প্রভা কোথায়?’

‘স্কুলে গিয়েছে।’

‘বাবা ফিরে নি এখনো?’

‘আজ ফিরবে। শোন, কাল রাতে তো ভালো করে কথাই বলতে পারি নি। তোর আরিয়া ফুপি কেমন? তোর সাথে হেসে হেসে কথা বলে তো?’

মায়ের অবান্তর, সরল প্রশ্ন শুনে বিভা মৃদু হাসলো। প্রতিটা মা-ই বোধহয় চিন্তা করে অন্য স্থানে, অন্য কারোর আওতাধীন তাঁর সন্তানটা আদর পাবে কিনা, কেউ ভালোবাসবে কি-না! সে কেমন থাকবে! বিভা একটু কঠোর গলায় বলল, ‘হেসে হেসে কথা বলবেনা কেন? ফুপির মুখটাই তো হাসি হাসি। দেখো নি তুমি?’
রুবাইদা বলল, ‘আরে বল না..’

বিভা গলা ঝেড়ে মুখ কালো করে বলল, ‘ফুপি খুবই ভালো মা। কিন্তু ওনার একটা ছেলে আছে না? এই ছেলের ব্যবহার খারাপ।’

রুবাইদা আঁৎকে ওঠে বলল, ‘সে কী? তোর সাথে কিছু করেছে নাকি?’

‘করেছে তো।’

রুবাইদার উদ্বিগ্ন স্বর, ‘কী? আমাকে খুলে বল মা, আমি তোকে সেখানে থাকতে দেব না। ওরকম বাসায় থাকার দরকার নেই। আচ্ছা ছেলে কি নেশাটেশা করে?’

বিভা চমকে যাওয়া গলায় বলল, ‘আরে না না। তুমি ভুল বুঝছো। সেরকম নন ওনি।’

রুবাইদা সন্দেহী কন্ঠে বললেন, ‘তাহলে?’

বিভা মা’কে খুলে বললো সকালের ঘটনাটা। সব শুনে রুবাইদা গম্ভীরমুখে বললেন, ‘এখানে দোষ তো আমি তোরই দেখতে পাচ্ছি। তুই দেখেশুনে হাঁটবি না? তাছাড়া তুই ওর মোবাইল ভেঙে ফেলেছিস তো রাগ হবে না ওর? তুই হলে কি চুপ থাকতি নাকি? মাফ চেয়ে নিস ছেলেটার কাছে!’

বিভা আহত হলো। ওর দোষ? ওই লোকের দোষ নেই? তাছাড়া বিভা ভেবে দেখলো সত্যিই তো, বিভার ফোনটা যদি কেউ এভাবে ভেঙে দিতো তাহলে ওর প্রচন্ড রাগ হতো। আর রাগের মাথায় মানুষের মাথা ঠিক থাকে নাকি? কাল আসার পথেও তো ট্রেনে ওই হেডফোনওয়ালাটার ওপর বেহুদা চেঁচামেচি করেছিল ও। বিভার মন মেনে নিলো পুরো দোষটাই ওর। মা যখন বলেছে তখন সেটাই হবে হয়তো!

Continue…..

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here