পর্বঃ১০+১১ #অবৈধ_বিয়ে #Sabriha_Sadi

0
660

#পর্বঃ১০+১১
#অবৈধ_বিয়ে
#Sabriha_Sadi
পর্ব : ১০

রাজ করবে কি এই সময়ে তার মাথা কাজ করছে না।

কাছের মানুষের বিপদের সময় এমনটাই হয়। তখন কি করা উচিৎ কি করা উচিৎ নয়, ভাবা যায় না। একটা তালগোল পাকিয়ে যায়।
রাজ কি করবে মাথা কাজ করছে না।

রাজ আর কিছু না ভেবে দরজা ধাক্কা দিতে লাগল।

হঠাৎ করেই দরজা খুলে গেল। একি? এটা দেখার জন্যে রাজ এত ভয় পেয়ে ছিল? ইচ্ছে করছে রানি কে কষিয়ে একটা চর দিতে। কি পাগল মেয়ে এভাবে কেউ ঘুমায়? রানি এত ঘুম কাতরে মেয়ে রাজের তো আগে জানা ছিল না। কি আজব একটা মেয়ে। রানি বিছানায় শুয়ে ঘুমোচ্ছে। রাজ তার পাশে গিয়ে বসল। রানির ঘুমন্ত মুখ টা দেখে এতক্ষণের ভয়, কষ্ট আর রাগ টা কমে গেল। রানি কে দেখে তার মনে হচ্ছে একটা ঘুমপরী ঘুমে আছে। রানি কে এই ভাবে বাচ্চাদের মতো ঘুমাতে দেখে রাজের মুখের কোণে এক টুকরো হাসির আবেশ ভেসে এলো।

রাজ তার পাশে অনেকক্ষণ বসে ছিল। তারপর হঠাৎ করে তার ঘুমপরী কে নিজের কোলে তুলে নিল।

কিন্তু তার ঘুমপরী এতটাই ঘুমাকে ব্যস্ত যে তার সাইকো যে তাকে কোলে নিল সে টেরই পেল না। রাজ রানির দিকে তাকিয়ে আছে। চুপিচুপি পায়ে নিজের রুমে গেল। খুব যত্নে তার ঘুমপরী কে বিছানায় শোয়িয়ে দিল। রানির উপর চাদরটা তুলে দিয়ে রাজ ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়ল।

প্রায় সন্ধ্যার সময় রানি ঘুম থেকে উঠল। তার খেয়াল এলে রানি রাজের বিছানায় শুয়ে আছে। কিন্তু সে তো পাশের ঘরে ছিল। এখানে কেন সে?

রানির বুঝার বাকি নেই এটা রাজের কাজ।

রানি এক বার নিজেকে ভালে করে দেখে নিল। সব ঠিকঠাক আছে কিনা। পরে মনে হলো কি ভাবছে রাজের সম্পর্কে? রাজ কে তার সুযোগ নিবে? নিতে চাইলে তো আগেও পারত। কিন্তু তার পরেও রাজ কে যে তার খুব ভয় হয়। রাজের রাগের চোখ গুলি দেখলে তো রানির কাঁপুনি শুরু হয় ভয়ে।

রানি উঁকি দিয়ে দেখে রাজ বেলকুনিতে বসে আছে ল্যাপটপ হাতে নিয়ে।

তারও তো অনেক খিদে পেয়েছে। কি খাবে এখন? রানি কিছু না চিন্তা করে রান্না ঘরে চলে গেল। কি আর করবে? খিদে তো আগে মিটাতে হবে। তাই পাস্তা বানিয়ে অসময়ে কাজ চালাতে হবে।

রানি পাস্তা বানিয়ে টেবিলে বসে খাওয়া শুরু করবে। এমন সময় রাজ এসে হাজির।

– তুমি একা একা খাচ্ছো?
– দুকা পাবো কোথায়?
– মানে? আমাকে কি চোখে পরে না? জলজেন্তু মানুষ টা তোমার নজর কাড়ে না?
– আমার খিদে পেয়েছে তাই খাচ্ছি।
– তাতে কি? আমার বুঝি খিদে পায়নি? তোমার জন্যে আমি দুপুরে না খেয়ে রইলাম। আর তুমি কিনা আমাকে এক বার না ডেকে খেতে বসে পড়লে।
যাই হোক এখন আগে খেতে দাও।
– আমি শুধু পাস্তা রান্না করেছি। অন্য কিছু না।
– সেটাতেই হবে। দাও।

– শান্তি নেই। ( বিড়বিড় করে বলল)

– কি বললে?
– কই কিছু না। আপনি বসুন।
– হুম।
-…… (মুখ ভেংচি দিল)

– রাতে আর রান্না করতে হবে না।
– তাহলে খাবেন কি?
রানির কথা শুনে রাজ একবার তার দিকে তাকাল।
– না মানে বলছিলাম খাবো কি?
– আমি বাহির থেকে অর্ডার করে দিবো।
– কেন?
– এমনি।

রানি আর কথা বাড়াল না।

রাতে,,
– তুমি এখানেই বসো আমি দেখছি। হয়তো খাবার নিয়ে এসেছে।
-….

রাজ দরজা খুলে খাবার নিয়ে রানির কাছে দিল।
– সার্ফ করে দাও।
– হুম।

রাজের এই সামান্য কথা যেন রানির কাছে হুকুম মনে হয়। কিছু বলতেও পারে না। তবে কাজ করতে যে তার কষ্ট হয় বা সে আলসে তেমনটা নয়। রানি প্রায় সব কাজই করতে পারে।
ছোটবেলায় মা মরে যাওয়ার পর থেকে বাবা কে তো সেই দেখে রেখেছে।
ক্লাস ৭/৮ থেকে রান্নাবান্না জুর করে বাবার কাছ থেকে শিখে নিয়েছে। ঘরের সব কাজ রানি আনন্দের সাথে করে।
কিন্তু এখানে সে রাজের ভয়ে ভয়ে থাকে। কখন কি হয় নিজেই জানে না। ভয়টা রানির এখন অনেক হয়। মনে ভয় থাকলে কখনে শান্তি পাওয়া যায় না। সেই ভয়টাই কুঁড়তে তাকে নিজেকে।

– খাবার দিয়েছি। খেয়ে নিন।
– তুমি বসো আমি আসছি।

একটি পর রাজ খাবার খেতে টেবিলে আসল।
– তোমার জন্যে রেডি করো নি কেন?
– আমি পরে খেয়ে নিব আপনি খেয়ে নিন।
– পরে কেন এখন বসো। একা একা খেতে ভালো লাগে না কারো। আর আগের দিনের হিসাব নিয়ে বসে থেকো না। যে সবাই খাওয়ার পর ঘরের বউ একা একা এক কোণোয় বসে খাবে।
– মোটেও সেটা না।
– বসো।

রানি বাধ্য মেয়ের মতো চেয়ারে বসে পড়ল।
– হা করো।
– কি?
– হা করতে বলেছি।
– বললাম তো আমি খেয়ে নিব আপনি খেয়ে নিন।
– তোমাকে হা করতে বলেছি।
– আমার হাত আছে আমি খেয়ে নিচ্ছি।

রাজ কথা বাড়াল না। কারণ সে জানে রানি স্বেচ্ছায় কখনো রাজের হাতে খাবার খাবে না। উল্টে প্রশ্ন করে যাবে।
রাজ আর কিছু বলল না। এবার সে রানির মুখের দুপাশে একটু চেঁপে ধরে জুর করেই খায়িয়ে দিল।

– রানি আমার এত প্রশ্ন ভালো লাগে না। প্লিজ আমাকে এত প্রশ্ন করবে না। যা বলি তা শুনবে।
– সব কথা আপনার মুখ বুঝে সহ্য করতে হবে?
– হ্যাঁ। তাই করতে হবে।
– কেন করব?
– তুমি আমার ঘরের বউ তাই করবে। আমি যা যা বলব তাই করবে।

( রাজ কথাটা একটু রুক্ষ সুরু বলেছে যা রানি বেশ বুঝতে পেরেছে।)

– সাদা শপিংয়ে সে ড্রেস টা আছে সেটা পড়ে নিও।
– কি আছে?
– সেটা নিজেই দেখে নিও। যাই থাকুক পড়ে নিতে বলেছি পড়ে নিবে।
– না পড়লে?
– আমি বাহিরে যাচ্ছি। না পড়লে যদি আমার হাতে পড়তে চাও। তাহলে তাই হবে।

কথাটা বলেই রাজ বাহিরে চলে গেল। রানি রাগে কটকট করতে থাকে। সে তে রাজের ভয়ে ঠিক করে কথাই বলতে পারে না। যে দু একটা বলে তাও ভয়ে ভয়ে সাহস করে বলে ফেলে। রানি রাগে ফুসতে থাকে।

খাবার শেষ করে রানি রুমে গেল।
একটু সময় বসে থাকল। রাজ বাহিরে গিয়ে অনেকটা সময় হলো। রানির মনে হলো রাজের কথাটা। সে পরবে না ঠিক করে রাখল।

কিন্তু রাজ যদি সত্যিই এসে রানি কে জুর করে পড়ায়? তাহলে? রাজের কাছে এটা তো অসম্ভবের কিছু না। না না তার থেকে যা আছে নিজেই পড়ে নেওয়া ভালো। তাই রানি আলমারি থেকে ব্যাগ টা বের করল। ব্যাগ খুলে যা দেখে সে নিজেই বলতে লাগল।

– এ মা এটা কি? আমি এটা পড়ব? কখনোই না। লোকটা আসলেই বাজে পড়ব না আমি এই সব। এই ছাইপাঁশ আমার ভালো লাগে না। আমি গাউন, থ্রী প্রিজেই ভালো আছি। এই সব পড়ে আমার কি হবে? আজাইরা। পরব না আমি। ঢং……
কিন্তু উনি তো বলে গেল যে আমি যদি না পড়ি তাহলে উনি নিজে এসে পড়াবে। সত্যিই যদি উনি……
নাআআ। দরকার নেই আমিই পড়ে আসি। উনাকে বুঝা যায় না। কখন এসে আবার জুর করে পড়াতে চাই রাগে। তার থেকে ভালো আমার টা আমিই পড়ি।

রাজ একটা কাজে বাহিরে এসেছে। আকাশটাও তো বেশ ডাকাডাকি করছে। ঘুরঘুর মেঘের আওয়াজ শুনা যাচ্ছে। কখন ঝুম বৃষ্টি দরে কে জানে? না বিজে বাড়ি যেতে পারলেই হলো।

রাজ বাসায় আসতে আসতে ঝুড়িঝুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

রাজ মাথার একটু একটু পড়া বৃষ্টির কণা গুলি মুছতে মুছতে রুমে ডুকল। আর রানি ওয়াশরুম থেকে বেড় হচ্ছিল।

রানির দিকে চোখ যেতেই রাজ হা করে তাকিয়ে আছে। চোখের পলক যেন তার পড়ছেই না। রাজের চোখের সামনে থাকা মানুষটাকে দেখে সে নিজের তাল সামলে রাখতে পারছে না। বেসামাল হয়ে যাচ্ছে রাজ।

চলবে……

ধন্যবাদ।
— হ্যাপি রিডিং।
#অবৈধ_বিয়ে
#Sabriha_Sadi
পর্ব : ১১

রাজ এ দৃষ্টিতে তাকিয়ে সামনের মানুষটাকে দেখছে। সত্যি রানি কে সে মাতোয়ারা হয়ে দেখছে।

রাজের চাওনি দেখেই রানি ভয় পাচ্ছে।

একটু একটু করে রাজ রানির খুব কাছেই এসে পড়েছে। এদিকে রানির বুকের ভেতরের ভয়টা তীব্র আকার ধারণ করছে। রাজ রানির অতি নিকটে। সে রানির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। “রানির ভয়টা যে কমবার নয় ভয়ের পরিমাণের আছে।” রাজ রানির খোলে রাখা এক মুট চুল নিজের হাতে তুলে নিল। সে চুলের মাতোয়ারা গন্ধ নিতে লাগল। রানির চুলের মাতোয়ার গন্ধে যে রাজ মাতাল হয়ে পরছে। এই মাতাল হওয়ার জন্যে কোনো নেশার প্রয়োজন হয় না।

“কাছের মানুষের চুলের গন্ধে মাতোয়ারা হওয়া যায়।”

রাজ যে এ এক নেশার বালুচরে ডুবে যাচ্ছে। আর রানির ভয়টা ভেতরে ভেতরে বাড়তে থাকে।

রাজ তাকে কোমর দরে এক টানে নিজের কাছে নিয়ে এলো। রানির বুকের ভেতরটা ভয়ে কুঁকড়ে উঠল। রাজ তার চুল গুলি কানের পাশে গুঁজে দিল। এক গালে খুব নরম ভাবে ধরল রানির। তারপর ভালোবাসার প্রথম পরশ রানির কপালে একটা চুমু খেলো। রানির আরো কাছে একটু একটু করে নিরবে যেতে লাগল রাজ।

হঠাৎ এক বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দে রানি রাজকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।

এই প্রথম রানি নিজে থেকে তাকে জড়িয়ে ধরল। ভয় পেয়ে হোক জড়িয়ে তো ধরল। এতেই রাজের কম পাওয়া কিসের?

রাজের ঠোঁটের কোণায় হাসি ফুটে এলো। এ যেন এক খুশির ফুটে উঠা ফুল।

রাজ হুট করেই রানি কে কোলে তুলে নিল। রানির মাঝে ভয়টা থাকলেও বেশ লজ্জা লাগছে তার।

রাজ চুপিসারে রানি কে নিয়ে বেলকুনিতে গেল।

আবহাওয়া টাও যেন রাজ রানির মিলন চায়। রাজ রানি কে কোলে নিয়ে বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে আছে। হাল্কা ঝুড়িঝুড়ি বৃষ্টি তাদের শরীরে এসে পড়ছে। ভালোই লাগছে। এই বাতাস তার উপর বৃষ্টির পানি এসে পড়ায় শরীর যেন শিহরিত হয়ে উঠে। বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে। রানিও এই পরিবেশটা ভালো লাগছে। রানি অমত করছে না দেখে রাজ এই ভাবেই রানি কে কোলে নিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে।

রাজ রানির সুবিধার কথা ভেবে শপিং থেকে একটা নাইট ড্রেস নিয়ে এসেছিল। রানি তখন সেটাই পড়ে ছিল।

তবে সেটার মাঝে এমন কিছু ছিল না। যা দেখতে দৃষ্টিকটু মনে হবে। রাজ সেটা তার মায়াপরীর জন্যে করবেও না।
রানি অভ্যস্ত নয় এই সবে। তাই পড়তে চায়নি। একটা নরমাল লাইট ড্রেই ছিল সেটা।
কিন্তু রাজের কাছে সেটা নরমাল মনে হয়নি। সাদা নাইট ড্রেসে রানির সাদা শরীরটা বেশ ফুটে উঠে ছিল। মনে হচ্ছিল, রাজের সামনে এক, রাতের সাদাপরী দাঁড়িয়ে আছে। সাদা সাদা গোলাপের সমারোহ চলছিল রানির মাঝে।
যা রাজ কে মাতাল করে তুলার জন্যে যথেচ্ছ।

রাজের যে সাদা কালো রং টা বেশ লাগে। খুব পছন্দের রং। কি অদ্ভুত তার জীবন টাও তার পছন্দের রঙ্গের মতো, সাদা কালে হয়ে আছে। সেই সাদা কালো জীবনে অন্য রং মেলা যে ভারি ভাড়।

রাজ রানির মুখের দিকে তাকাল। রানি বাহিরের বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে।

রানির মুখে বিদ্যুতেরচমক পড়ছিল। রানির রূপের জটা আরো দিগুণ পরিণত হয়ে পড়ছিল। রাজের এটা দেখাতেই শান্তি। বাহিরের পরিবেশ টার মতো তার মন টাও আজ বেশ শান্তি হয়েছে। রানি যে তার কোলে ছিল এতেই রাজের বুকটা শান্তির পানি তে ভিজে উঠল।

খুব শব্দের এক বজ্রপাত হলো। সাথে সাথে রানি রাজের বুকে মুখ লুকাল। রাজের বুকে মুখটা গুঁজে দিয়ে ভয়ে জুরে নিশ্বাস নিতে লাগল।

রাজ একটু হেসে রানি কে নিয়ে ঘরে ঢুকে গেল।
রানি কে বিছানায় শোয়িয়ে দিল। তারপর বিছানা থেকে সরে গিয়ে লাইট টা অফ করে দিল।

তারপরেও ঘরে মাঝে মাঝে বিদ্যুতের আলো এসে পড়ছিল। রানি কে এই ভাবে দেখতে রাজের বেশ ভালো লাগছিল। তাই লাইট টা অফ করে দিল।

– আপনি কি বিছানায় থাকবেন?
– তাহলে তুমি কি দরজার ওপাশের ঘরে যাবে।
– তা নয়। আপনি এখানেই থাকুন না। ( নরম সুরে বলল)
– আমি এখানেই আছি। সোফায় শুয়ে পড়ব। তুমি ঘুমিয়ে পড়ো।
– আপনি বিছানায় শুবেন।
– তুমি সোফায় ঘুমাতে পারবে না। বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ো।
– আপনিও বিছানায় আমার পাশে শুবেন।
(খুব আস্তে করে কথাটা বলল)

রাজ ভূত দেখার মতো রানির দিকে তাকাল।

– আসলে…
– ভয় করছে খুব বেশি। তোমার চোখ দেখে বুঝা যায়। আমি আছি শোয়ে পড়ো। কিছু হবে না।
– মাঝখানে কোলবালিশ দিয়ে দিব। আপনি…

রাজ জানে, রানি কে এই ভাবে এত কাছে পেয়েও নিজের করে পাবে না। সেটা রাজ মানতেও পারবে না। নিজেকে সামলে রাখাটা খুব কষ্টময় হবে তার জন্যে। তাই রাজি হতে চাইছে না।
কিন্তু মেয়ে টাও তো ভয় পাচ্ছে। নিজেকে কষ্ট দিয়ে না হয় মেয়েটা কে একটু শান্তু তে ঘুমাতে দিবে।

– ঠিক আছে।

রানি কোলবালিশ টা মাঝে দিয়ে ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়ল।
রাজও এক পাশে শুয়ে রইল। রাজের বুকে চিনচিন এক ব্যথা হচ্ছে। “ভালেবাসার মানুষ টাকে এই ভাবে এত কাছে পেয়েও না পাওয়ার কষ্ট টা অনেক।”

“ভালোবাসায় কি শুধু প্রাপ্তি থাকে? না। সেখানে বিসর্জন নামক শব্দটাও থাকে।”

সব ভাবতে ভাবতে রাজের চোখটা লেগে গিয়েছিল। চোখ টা খুলে গেলে রানির কোঁকানোর শব্দে।

রাজ উঠে রানির দিকে একটু ঝুঁকল। রানি তো জ্বরে কাঁপছে।

রানির শরীরে তো খুব জ্বর এসেছে। কাঁপছেও। রাজ বালিশটা সরিয়ে রানির কাছে গেল। রানির কপালে মুখে হাত দিয়ে দেখল অনেক টা জ্বর। এই দিনে আর এত রাতে ডক্টর আঙ্কেল আসবেই কি করে? রাজ বিছানা থেকে উঠে গিয়ে একটা বাটি করে পানি নিয়ে এলো। রানির কপালে জলপট্টি দিলে লাগল।

অনেকক্ষণ দিল। কিন্তু কমছে না তো। হঠাৎ জ্বরই বা কেন এলে শরীরে? কি হলে ওর?

রাজ ঔষধের বক্স থেকে একটা জ্বরের টেবলেট বের করল। রানি তো জ্বরের ঘোরে আছে। টেবলেট কি করে খাবে? তাই সে অল্প পানি তে ঔষধটা ঘুলে ফেলল। তার পর রানির মাথাটা একটু উপরে তুলে কিছুটা ঔষধের পানি খায়িয়ে দিল।

রানি প্রচণ্ড কাঁপছে জ্বরের কারণে। রানির এমন অবস্থা দেখে রাজের আর সহ্য হচ্ছিল না।

রানির মাথাটা নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নিল। রানিও এমন সময় গরম কিছু পেয়ে রাজ কে আকড়ে ধরতে শুরু করল।
রাজও রানি কে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে।
রানি রাজ কে পারছে না নিজের সাথে মিশিয়ে রাখতে।

রানির এমন আচরণ রাজ কে ঠিক রাখতে পারছে না। রাজ নিজেকে সামলাতেও পারছে না। এমন রানি কেই তো সে চেয়ে ছিল। যে রানি রাজকে খুব বেশি ভালেবাসবে। এখন জ্বরের ঘোরে হলেও তাকে সেই ভাবেই পেয়েছে রাজ।

রানি জ্বরের ঘোরে কি সব আবোলতাবোল বলতে শুরু করল। এ দিকে রাজ কেও সে ধরে রেখেছে।

রাজ কে এক টানে সে নিজের উপরে নিয়ে এলো। রানির গরম নিশ্বাস রাজের বুকে এসে পড়ছে। রাজ আর কি করবে ভেবে উঠতে পারছে না। রানি রাজ কে হুট করেই জড়িয়ে ধরল। রাজ যে আর পারছে না। নিজে কে রানির কাছ থেকে ছাড়াতে চাইছে। যদিও সে মন থেকে তা চায় না।
রাজ পারছে না রানি কে ছাড়াতে। রাজের মন টাও মানছে না। কোন ভালোবাসার মানুষ না পাওয়া ভালোবাসা এইভাবে পেলে ছারতে চায় না।

এদিকে রাজের বুকে রানির নিশ্বাস পরছে। রাজের মাথায় এক নেশা চরে উঠছে। রানি রাজের বুকে মুখ লুকাতে চাইছে। রানি চোখ, মুখ, ঠোঁট রাজের বুক স্পর্শ করছে। রাজের নেশা টা আরো বেড়ে উঠছে। রাজ নিজের শার্টের বোতাম খুলে ফেলে দিল। খালি গায়ে রানির নিশ্বাস রাজের বুকে ভারি খাচ্ছে। রাজের বুকে এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে। এক অজানা অনুভূতি কাজ করছে তাদের মাঝে। রাজের খালি বুকে রানির যেই ঠোঁটে স্পর্শ লাগল রাজ আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারল না। সে রানির ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিল। আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে দুজনের ঠোঁটযোগল। রাজ তার গলায় ডুব দিল। সে রাজ কে খুব যত্নে জড়িয়ে আছে। পিঠে রানির নকের আছড় রাজ কে এক অজানা নেশায় মাতাল করে দিচ্ছে। রাজ তার মায়াপরী কে এত দিনের ভালোবাসা মনে মতো করে দিচ্ছে। “এক ভালোবাসার অতল সাগরে ডুব দিয়েছে দুজনে।” এত দিনের না পাওয়া ভালোবাসার পূর্ণতা মিলল আজ। আজ তাদের পূর্ণতার রাত ছিল।

এই ভালোবাসার পূর্ণতার রাত আবার কোনো কাল হয়ে দাঁড়াবে না তো ওদের জীবনে?

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here