শ্রেয়সী
লেখাঃখাইরুন নেছা রিপা
লেখাঃ৩৭
সোহেলকে তার অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ওকে এরেস্ট করে জেলে নিয়ে আসে সেখান থোকে কোর্টে চালান করে দেওয়া হয়। সব এভিডেন্স সোহেলের বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়। সেদিনকার সেই প্রত্যক্ষ দর্শী মহিলা সাক্ষী দিয়েছিলো এছাড়ও অটো ড্রাইভার। সেই অনুযায়ী কোর্ট রায় ঘোষণা করে৷ আর সোহেলকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।
এক মাস পর।
এই এক মাসে অনেকগুলো কাজ জমা হয় শিশিরের। তাই আজকে আর হসপিটালে থাকলো না শিশির। রাত এগারোটায় হসপিটাল থেকে বাড়ি আসে তারপর সমস্ত কাজ সেরে ঘুমাতে ঘুমাতে অনেক রাত হয়ে যায়। সকাল বেলা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন শিশির। অনেকদিন হয়ে গেছে হসপিটাল, বাড়ি, স্কুল সব সামলে ঘুমটাও ঠিক মতো হয়নি। আজ বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিতেই রাজ্যের ঘুম এসে চোখে বাসা বাঁধলো। সকালবেলা ফোনের রিংটোনে ঘুম ঘুম চোখে বালিশের পাশ থেকে ফোনটা হাঁতড়ে নিলো। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বললো,
–হ্যালো কে?”
–আমি!”
অপর পাশ থেকে বিন্দুর কণ্ঠস্বর কানে ভেসে আসতেই একরকম দরফর করে বিছানার ওপর উঠে বসলো। কাল এমনিতেই হসপিটালে থাকা হয়নি৷ আর এত সকাল সকাল বিন্দুর কল। না জানি কিছু অঘটন ঘটেছে। বাবুটা ঠিক আছে তো?
কথাটা মনে হতেই অসহ্য রকম ব্যথা অনুভব করতে লাগলো শিশির। উত্তেজিত হয়ে প্রশ্ন করে বসলো,
–সব ঠিক আছে তো বিন্দু? আমার মেয়েটা….
আর কিচ্ছু বলতে পারলো না। গলাটা আটকে আসছে। যেন কোনো দৈবশক্তি শিশিরের গলাটা চেপে ধরেছে।শিশিরকে এমন উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে দেখে বিন্দু কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে বললো,
–কী হয়েছে আপনার? এতটা উত্তেজিত লাগছে কেন আপনাকে?”
–আগে বলো আমার মেয়েটা ঠিক আছে কি না?”
বিন্দু একটা তৃপ্তির হাসি দিয়ে বললো,
–একদম ঠিক আছে। কিচ্ছু হয়নি আমার মেয়ের। ”
বিন্দুর উত্তর পেয়ে বুকের দরফরানি কিছুটা কমলো। কিছুক্ষণ নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করলো। বিন্দু ফোনের অপর পাশ থেকে স্পষ্ট শিশিরের জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে। শিশিরের প্রতিটা নিঃশ্বাসের শব্দ বিন্দুর হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই মানুষটা কতটা ভালো হতে পারে ঠিক জানা নেই বিন্দুর। অন্যের বাচ্চার জন্য কেউ এতটা করতে পারে সত্যিই ধারণা ছিলো না বিন্দুর। গভীর এক ভালো লাগায় মন ছুঁয়ে গেল। চোখ বন্ধ করে বুকের ওপর ফোনটা চেপে রাখলো। আর শিশিরের প্রতিটা নিঃশ্বাসের শব্দ এসে বিন্দুর বুকে বারি খাচ্ছে। বিন্দু আবেশে দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো কিছুক্ষণ। অপর পাশ থেকে শিশিরের হ্যালো, হ্যালো শব্দে ফোনটা কানের কাছে নিয়ে বললো,
–হুঁ!”
এই হুঁ বলাটার মধ্যে যেন কত চাওয়া-পাওয়া লুকিয়ে আছে।
–তুমি ভালো আছো তো?”
–হুঁ!
–এই বিন্দু!
–হুঁ!
–কী তখন থেকেই হুঁ হুঁ করে যাচ্ছো? কী হয়েছে তোমার?”
–হুঁ!”
শিশির এবারে হেসে ফেললো বেশ শব্দ করে।
–আমার বউটাকে কী হুঁ এর রোগে পাইলো নাকি?
বিন্দু গভীর একটা চাপা নিঃশ্বাস আড়াল করে বললো,
–জানি না।”
–জানি না বললে হবে না। এতক্ষণ কেন হুঁ হুঁ বলেছিলে সেটাই বলো?”
–উঁহু। কিচ্ছু বলবো না। আপনি অনেক পঁচা কিছু বুঝেন না।”
— কী বুঝি না শুনি?”
–জানি না। এখন রাখছি। আর শুনেন আজ সকাল সকাল আমাদের রিলিজ করে দেবে তাড়াতাড়ি চলে আসবেন কেমন।”
–একদম ফোন রাখবে না। বলো কী বুঝি না আমি?”
বিন্দু চোখটা বন্ধ করে লাজুক গলায় বললো,
–কতদিন হয়ে গেল আমাকে একটু আদর করেন না আপনি।”
কথাটা বলেই ফোনটা কেটে দিলো বিন্দু। শিশির কিছুক্ষণ থ হয়ে বসে রইলো। বিন্দু এটা কী বললো? এটা কী সত্যিই বিন্দু বলেছিলো নাকি বিন্দুর কণ্ঠস্বরে অন্যকেউ? খানিকটা সময় নিয়ে নিজেকে ধাতস্থ করেই হ্যালো বললো বার কয়েক। কোনো রেসপন্স না পেয়ে বুঝলো ফোনটা কেটে দিয়েছে বিন্দু। শিশির আবারও ডায়াল করলো অপর পাশ থেকে ভেসে আসলো, “আপনি যে নাম্বারে ডায়াল করেছে তা সংযোগ প্রদান করা যাচ্ছে না!”
শিশিরের চোখে-মুখে খুশির আবেশ দেখা গেল। আজ সকালটা এত সুন্দরভাবে হবে জানাই ছিলো না। বিন্দুর কোল বালিশটাকে জড়িয়ে ধরে খুশিতে অনেকগুলো চুমু খেলো। পরক্ষণেই নিজের বোকামোতে হেসে ফেললো শিশির।
শিশির রেডি হয়ে মায়ের রুমে গেল।
–মা কাল তো আমি হসপিটালে থাকতে পারিনি স্কুলের অনেকগুলো কাজ জমা হয়েছিলো।সেগুলো করেছি তাই। আজ তো সকাল সকাল যেতে হবে ওদেরকে তো আজই রিলিজ করে দেবে। ”
–তোকে কে বললো?”
–বিন্দু কিছুক্ষণ আগে ফোন করলো।’
–হুম, আমিও যাব।”
–তাহলে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও। রিদি কোথায়?”
শিরিনা বেগম গলার স্বর রুক্ষ্ম করে বললো,
–জানি না।”
শিশির মায়ের পাশে বসলো। শান্ত গলায় বললো,
–মা তুমি অযথা রিদির ওপর রাগ করছো। এসেবর ভেতর ওর দোষটা কোথায়? ও কী চেয়েছিলো এমন কিছু হোক? ওর দিকটা একবার ভাবো ঠিক কতটা ধাক্কা খেয়েছে এইটুকুনি বয়সে৷ তুমি যদি এমন হেলাফেলা করো তাহলে ওর মনের অবস্থা কী হয় একবার ভাবো তো। তুমি মা হয়ে ওর সাথে মিসবিহেভ করলে সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগবে ওর। প্লিজ মা সব ভুলে যাও। ওর সাথে আর এমন করো না।”
–হুঁ। ও চায় ডিভোর্স দিতে।”
–মা আমি ওকে জোর করবো না। সোহেলের যেটা প্রাপ্য ছিলো সেটা ও পাচ্ছে। আমি ওকে প্রথমবার ক্ষমা করতে পারতাম কিন্তু ও দ্বিতীয়বার যেটা করলো সেটাতে আমি ওকে কখনওই ক্ষমা করতে পারি না। হোক সে আমার যতই কাছের। ওর শাস্তি পাওয়াটা প্রয়োজন ছিলো। এখন সব কিছু জেনেও যদি রিদি যেতে চায় সোহেলের কাছে আমার আপত্তি নেই। হয়তো তুমি বা আমি চাইছি বলে ও বাধ্য হয়ে ডিভোর্সের কথা বলছে। কিন্তু মা আমি চাই না ও বাধ্য হয়ে কিছু করুক। ও যথেষ্ট এডাল্ট একটা মেয়ে। ওর কী তে ভালো হবে এটা বোঝার মতো বয়স ওর হয়েছে। এখন যদি ও সেটা না বুঝে সেটা ওর ব্যর্থতা। তবে মা আমি মনে-প্রাণে চাই ও সঠিকটা গ্রহণ করুক। ভুল পথে গিয়ে জীবনটা নষ্ট করুক এটা আমি চাই না। ও ছোট ছিলো তখন না হয় ওকে ধরে, বুঝিয়ে ঠিক-বেঠিলটা বোঝানো সহজ ছিলো। এখন আর ও সেই ছোট্টটি নেই। ওরও তো মন আছে, ভালোমন্দ বোধ আছে। তবে কেন আমি বা আমরা জোর করে নিজেদের সিদ্ধান্ত ওর ওপর চাপিয়ে দেব?”
–তাই বলে তুই ওকে সোহেলের কাছে যাওয়ার জন্য সাপোর্ট করছিস?”
–একদম আমি সাপোর্ট করছি না। ওর সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ ও তো ওর খারাপ চাইবে না। তবে এটা ঠিক সোহেলকে আমি কোনো কালেই মন থেকে মানতে পারবো না। হয়তো বোনের দিকে চেয়ে আমায় মানতে হবে। বোনকে তো আর ফেলে দিতে পারি না। ওর কষ্টে তো আমারও কষ্ট হয়। আর ওকে তো বিয়েটা আমরাই দিয়েছি। ও তো আর নিজের ইচ্ছায় কিছুই করেনি। তাহলে কোন যুক্তিতে আমরা ওকে হেলাফেলা করবো?”
শিরিনা বেগম ঝাঁঝালো গলায় বললেন,
–এত ভালো মানুষ হইস না শিশির। কোনো লাভ নাই বুঝলি।”
দরজার আড়াল থেকে সবটাই রিদি শুনলো। খুব কান্না পাচ্ছে ওর। এই ভাইটা তাকে কতটা ভালোবাসে আর সেই ভাইকেই ভুল বুঝলো। আচমকাই রিদি এসে শিশিরকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে উঠলো।
–ভাইয়া তুই আমাকে ক্ষমা করে দিস। আমি ভুল করে ফেলেছি।”
শিশির বোনের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো,
–আরেহ পাগলী তোর কোনো ভুল নেই। তুই যেটা করেছিস অধিকাংশ মেয়েই এমনটা করতো। এখন কান্না থামা আমার এসব কান্নাকাটি ভালো লাগে না। সবসময় হাসি-খুশি থাকবি। তোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছুই হবে না।”
রিদি এক পলক ভাইয়ের মুখের দিকে তাকালো। কী নির্মল হাসি চোখে-মুখে। একদম নির্ভেজাল হাসি মাখা মুখ শিশিরের। ভালোলাগায় হৃদয়পূর্ণ হয়ে উঠলো রিদির।
–ভাইয়া আমি ওকে ডিভোর্স দিতে চাই। আর সেটা একদম মন থেকে চাই।”
–রিদি আবেগের বশে বা কারও কথায় তুই সিদ্ধান্ত নিস না। যা নেওয়ার ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নে। আমি তোর সিদ্ধান্তে অটুট থাকবো। একদম ভাববি না।”
–না ভাইয়া আমার ভাবার কিছু নেই। তোরা কী আমার খারাপ চাস নাকি? আর আমিও চাই ডিভোর্সটা হোক। আর সেটা মন থেকেই চাই।”
–আচ্ছা দেখি আমি। আজ ওদের রিলিজ করে দিবে। তারপর বাবুর আকিকাটা খুব শিঘ্রই করে ফেলবো। তারপর উকিলের সাথে কথা বলবো। এর মধ্যে যদি তোর সিদ্ধান্ত চেঞ্জ হয় তাও আমাকে জানাবি কেমন?”
–আমার সিদ্ধান্ত চেঞ্জ হবে না।”
শিরিনা বেগম রুক্ষ্ম স্বরে বললেন,
–তা এটা মনে থাকলেই হলো। পরে যেন আমি কোনো কান্নাকাটি আমার ঘরে না দেখি।”
–উফ মা তুমিও না। এখন চলো তো। আর রিদি তুই পারলে একটু আমার রুমটা গুছিয়ে দিস। একদম এলোমেলো। ”
–আচ্ছা ভাইয়া। তুই চিন্তা করিস না।”
একজন নার্স এসে শিরিনা বেগমের কোলে বাচ্চাটা দিলেন। নাতনীকে কোলে নিয়ে সুখের যেন অন্ত নেই শিরিনা বেগমের। নাতনীকে কোলে নিয়ে পুরো মুখে চুমু এঁকে দিলেন। শিশির পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো। মেয়েকে কোলে নেওয়ার জন্য মনটা ছটফট করছে খুব কিন্তু লজ্জায় সেটা প্রকাশ করতে পারছে না। বাচ্চাটা এখন অনেকটা ফুরফুরে হয়েছে। তবে খুব ছোট। ছোট ছোট চোখ মেলে সবাইকে ঘুরে ঘুরে দেখছে। শিরিনা বেগম আদরে গদগদ হয়ে বললেন,
–দেখ শিশির তোর মেয়ে মেয়ে হুবহু দেখতে তোর মতো হয়েছে।”
শিশির মায়ের কথায় হেসে ফেললো।
বাড়িতে এসে গলা চওড়া করে শিরিনা বেগম রিদিকে ডাকতে লাগলেন। আজ যেন ওনার খুশির সীমান নেই। তা তো হবেই নতুন অতিথির আগমন ঘটেছে বলে কথা।
–রিদি, এই রিদি কই তুই? দেখ আজ নতুন অতিথি এসেছে।”
রিদি দৌড়ে এসে দাঁড়ালো। কোলে নিতে চাইতেই বললো,
–এখন না আগে কুপি জ্বালিয়ে নিয়ে আয়। ওর খুব খিদা লাগছে। বিন্দু আগে ওকে খাইয়ে নিক। পরে যত ইচ্ছা কোলে নিস।”
এটা বলেই শিরিনা বেগম বাবুকে বিন্দুদের বেডরুমে নিয়ে আসলো। রিদি কুপি জ্বালিয়ে আনলো।
–বিন্দু আগুনের তাপ নিয়ে গায়ে মাখো।”
বিন্দু শ্বাশুড়ির কথা মতো তাই তাই করলো।”
শিশিরও সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। শিরিনা বেগম বিন্দুর কোলে বাবুকে দিয়ে বললেন,
–ওকে একটু দুধ খাওয়াও।”
বলেই তিনি চলে গেলেন। সাজেদা বেগম আর বিধুও এসেছে। এদের আপ্যায়ণের ব্যবস্থা করতে।
বিন্দু এই প্রথম বাবুটাকে কোলে নিলো। আজ অনেকদিন পর খুব মনে পরছে শিহাবকে। আজ শিহাব সবচেয়ে বেশি খুশি হতো। নিজের মেয়েকে ছুঁয়ে দেখার আনন্দ অনুভব করতে পারতো। দৃষ্টিহীনভাবে তাকিয়ে রইলো নিজের কোলে হাত-পা নেড়ে খেলা করা বাবুটার দিকে। আজ খুব করে শিহাবের সাথে বাবুর চেহারার মিল খুঁজছে বিন্দু। কিন্তু না কোথাও কোনো মিলছে না। কিন্তু রহস্যজনকভাবেই বাবুটা যেন শিশিরের কার্বনকপি। শুধুমাত্র গায়ের রঙটা বিন্দুর পেয়েছে। বাবুটা দুইহাত মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে হাতদু’টো চো চো করে খাচ্ছে। যার স্পষ্ট শব্দ বিন্দুর কানে এসে বাজছে। আরেকটু উঁচু করে ভালোভাবে পরখ করলো নাহ্ এবারেও শিহাবের সাথে কোনো মিল নেই। বিন্দু এক পলক শিশিরের দিকে তাকালো। শিশির বিন্দুর পাশে বসেই ঠোঁটে প্রশস্ত হাসির রেখে টেনে মেয়ের দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে৷ বিন্দু একটা চাপা আর্তনাদ নিজের মধ্যে আড়াল করে মেয়ের কপালে চুমু খেলো। শিশিরকে এভাবে বসে থাকতে দেখে বললো,
–ওকে কোলে নিবেন?”
শিশির যেন খুশিতে কথা বলতেই ভুলে গেছে। একরকম যেন ছোঁ মেরে বাবুটাকে কোলে নিলো। খানিকক্ষণ বুকের মাঝে চেপে রাখলো। তার রক্তকে! তার অস্তিত্বকে। পুরো মুখে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে তুললো। ঠোঁটে চুমু দিতেই বাবুটা শিশিরের ঠোঁট খাওয়ার জন্য হামলে পড়লো। শিশিরে ঠিক কী যে ভালো লাগছে কাউকে বলে বোঝাতে পারবে না ও।
–তাড়াতাড়ি ওকে খাওয়া খুব খিদে পেয়েছে ওর। যেন আমার ঠোঁট খেয়ে ফেলবে।”
বলেই ঠোঁট জোড়া স্ফীত করে হাসলো। বিন্দু মুগ্ধ হয়ে দেখছে সে হাসি। বাবুকে খাওয়ানোর পর রিদি এসে নিয়ে গেল। এই ফাঁকে বিন্দু ওয়াশরুমে ঢুকতে যাবে গোসল করার জন্য তখনই শিশির দরজাটা লক করে এসে বিন্দুকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। বিন্দুর পিঠে নাক ঘষতেই বিন্দুর যেন হৃদস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছিলো। গলার স্বর সুক্ষ্ম করে বললো,
–কী করছেন?”
শিশির বিন্দুকে নিজের দিকে ফিরিয়ে দিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
–তখনই তো ফোনে বললে, আমি নাকি অনেকদিন আদর করি না। তাহলে একটু আদর করলে সমস্যা কোথায়?”
বিন্দু লজ্জায় পুরো লালা হয়ে গেল৷ লাজে রাঙা মুখটা ঢাকার জন্য শিশিরের উন্মুক্ত বুকে মুখ লুকালো। শিশির ওমনি নিজের বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলো বিন্দুকে। পরম তৃপ্তিতে বিন্দু চোখ বুঝলো। আবার কতদিন পর সেই নিরাপদ যায়গায় সে আছে৷ এই জায়গায় এত কেন শান্তি লাগে? নিজেকে কেন পৃথিবীর সুখী মানুষ মনে হয়? এত কেন সুখ এই বুকে? যেন এই জায়গাটা শুধু বিন্দুর জন্যই বরাদ্দ! যেন সে এই জায়গার রাণী! যে জায়গায় শুধু বিন্দুর একমাত্র অধিকার রয়েছে আর কারোর না।
আজ অনেক বড় করে দিলাম। কেমন লেগেছে জানাতে ভুলবেন না। যাদের কাছে এটাকে স্টার জলসা, জি বাংলা বা ১% ভালো লাগর গল্প মনে হয়। তারা প্লিজ গল্পটা পড়বেন না। আমি কাউকে অনুরোধ করিনি গল্প পড়ার জন্য। যার ভালো লাগে সে এমনিতেই পড়বে। হ্যাপী রিডিং 😊
চলবে,,,,