সিঁদুর শুদ্ধি নাফিসা মুনতাহা পরী পর্বঃ ৫০

0
1910

#সিঁদুর শুদ্ধি
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ৫০
.

অভির মায়ার কোন প্রভাব পড়ছেনা বিদ্যার উপর। কিছুতো একটা করতে হবে। এমন সমস্যার সমাধান ওর মমই শুধু করতে পারবে। কিন্তু মমকে বলা যাবেনা। নতুন করে আর ঝামেলা বাড়ানো ঠিক না। ও ভাল হবে কিন্তু দেরিতে। অপেক্ষা করা যায় কিন্তু বিপদ সহ্য করা যায়না। প্রায় শেষ রাত অবদি অভি ওভাবেই কাটালো। কখনো হাত-পা মাসেজ করে দেয় কখনো বা বুকের ভিতর নিয়ে বিদ্যাকে গরম রাখার চেষ্টা করছে। শেষ রাতের দিকে যখন বিদ্যার জ্ঞান ফিরলো তখন সে নিজেকে অভির পাশে আবিষ্কার করলো। অভি গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে। গায়ে কম্বলও নেই। ভারি কম্বোলটা বিদ্যার গায়ে এঁটে দিয়ে সে নিজে শীতে কষ্ট পাচ্ছে। বিদ্যা অভির দিকে কয়েক সেকেন্ড চেয়েই দ্রুত কম্বোল দিয়ে অভির গা ঢেকে দিল। তারপর একদম অভির বুকের ভিতর ঢুকে চুপ করে রইল।

ঘুমন্ত অভিও বিদ্যাকে নিজের বুকের মধ্য আষ্টে-পৃষ্টে জড়িয়ে ধরলো। অভির উষ্ণ ছোয়ায় বিদ্যা আর বেশিক্ষন জেগে থাকতে পারলোনা। আবার ও ঘুমিয়ে পড়ল।

ঘড়ির কাটা যখন সকাল ৯টা ছুইছুই। এমন সময় বিদ্যার ঘুম ভেঙ্গে গেল। চোখ মেলে দেখলো, অভি পাশে নেই। নিজের শরীরটা দু’হাতের উপর ভর দিয়ে একটু জেগে আসেপাশে দেখলো, অভি আছে কি নেই! নাহ্ অভি নেই। তারমানে কি অভি চলে গেছে? বিদ্যা আস্তে আস্তে বিছানা ছেড়ে উঠলো। তারপর ফ্লোরে পা দিতেই বুঝলো, শরীরের উপর দিয়ে গত রাতে কতটা তান্ডপ চলছে। পায়ের পাতা ব্যাথায় টনটন করছে। তবুও অনেক কষ্টে হেঁটে ওয়াসরুমে চলে গেল ফ্রেস হতে। অভির কাকি এর মধ্য একবার এসে বিদ্যার খোঁজ করে গেছেন। বিদ্যা ফ্রেস হয়ে আসতেই কুন্তী দেবী রুমে আসলেন। তিনি বিদ্যার দিকে চেয়ে বললেন,

—” তোমার শরীর এখন কেমন?”

বিদ্যা হালকা মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল,

—” একটু বেটার ফিল করছি।”

—” তা মেয়ে, কিভাবে তুমি এত জখম হলে বলতো! অভি বলছিল তুমি নাকি ব্যালকোনি থেকে পড়ে গেছ? এটা কি সত্যি?”

অভি বলেছে এই কথা! কিন্তু বিদ্যা কথাটি লুকিয়ে গেল। বরং অভিকে অচেনা ভান করে বিশ্মিত স্বরে বলে উঠলো,

—” অভি কে? আমিতো তাকে চিনিনা!”

এবার কুন্তি দেবী বিদ্যার কথা শুনে বিষম খাওয়ার মত অবস্থা হল। মেয়ে বলে কি! নিজের স্বামীরে নাকি চেনেনা। অভি কোন পাগলের পাল্লায় পড়লো রে বাবা! মেয়ে তার স্বামীকে পরিচয়ই দিতে চায়না। কুন্তি দেবী গম্ভীর হয়ে বিদ্যার দিকে তীক্ষ্ণ নজরে চেয়ে বললেন……..

—” তুমি কি সত্যই অভিকে চিনোনা?”

নাহ্, আমি অভিকে চিনবো কিভাবে? আমিতো গতকালই এ বাসায় এসেছি। আমিতো আপনার নামটাই জানিনা। তাহলে অভিকে চিনবো কিভাবে!
বিদ্যার কথা শুনে কুন্তি দেবী বেশ রেগেই গেলেন। তার নাতী মেয়েটার জন্য গতরাতে কি করাটাই না করলো আর আজ সে বলছে তাকে নাকি চিনেইনা।

বিদ্যা কুন্তি দেবীর চাহোনি দেখে কিছু একটা বুঝে বলল,

—” আমি ব্যালকুনি থেকে স্লীপ কেটে পড়ে গিয়েছি নিচে। তারপর কি হয়েছে জানিনা। বাদ দেন সে সব কথা, আমি ঠিক আছি। আপনার ছেলের কাছে আমাকে নিয়ে চলুনতো! আজ তাকে স্পেশাল ডোজ দেওয়ার কথা ছিল।”

অভির দিদা আর কিছু না বলে বিদ্যাকে আশিষের রুমে নিয়ে গেল। জুলিয়া তখন তার স্বামীর পা গরম পানি দিয়ে মুছে দিচ্ছিলো। জুলিয়া শাশুড়ীকে দেখে কাজের ছেলেটিকে পানির পাত্রটি নিয়ে যেতে বলল।

এদিকে বিদ্যা রুমে ঢুকতেই একটা মুচকি হাসি দিয়ে আশিষকে হ্যালো বললো। আশিষও হেসে বিদ্যার প্রত্তুরে বলল,

—” হ্যালো বিদ্যা, তুমি নাকি কাল ব্যালকোনি থেকে পড়ে গিয়েছিলে? এখন কেমন আছো মা?”

জ্বী, ভালো আছি। আপনার হাতে-পায়ে রেসপন্স পাচ্ছেন তো! কথাগুলো বলে বিদ্যা গম্ভীর মুখে আশিষের পা চেক করতে লাগলো।

জুলিয়া কখনো বিদ্যার মুখ দেখেনি বা বিদ্যার বিষয়ে তেমন কিছু জানেনা। কিন্তু অভির যে স্ত্রী আছে সেটা সে জানে। তাই অপিরিচিত ডক্টরের কথা শুনে বলল,

—” টাকা খসানোর জন্য তোমাদের মত ডক্টরদের কতরকম পরিকল্পনা। তুমি জানো, আশিষ ভালো হবার নয়। তারপরও বড়বড় কথা কিভাবে বলছো? মা এই ডক্টরকে দিয়ে কত কাজ হবে সেটা আমি বুঝে গেছি। আপনি দয়া করে ওকে আমার চোখের সামনে থেকে সরান।”

অভির মায়ের কথা শুনে বিদ্যা প্রচন্ড রেগে গেল। ও একাই আশিষের হাত ধরে হ্যাচকা টান দিয়ে আশিষকে বসালো। আশিষের পুরো শরীর যন্ত্রনায় কেঁপে উঠলো। আহ্ বলে একটা শব্দ করতেই জুলিয়া ক্ষেপে গিয়ে চিৎকার করে বলল,

—” এই মেয়ে, অভির বাবার যদি আজ কিছু হয় তাহলে তোমার শরীর আমি নেকড়ে দিয়ে খাওয়াবো। ছেড়ে দাও তাকে! আমি বলছি ছেড়ে দাও তাকে।”

—“আহ্ জুলি,,, এত কথা বলোনা তো! আমিও দেখি সে আমার উপর তার রাগ কতোটা ঝাড়তে পারে? তার অধিকারই বা কম কিসের?”

জুলিয়া এবার থমকে গেল আশিষের কথা শুনে। আশিষ কার ক্ষোভের কথা বলল! তার মানে বিদ্যা অভির স্ত্রী! যে আশিষের এই অবস্থার জন্য দায়ী। অহ্ নো বলে জুলিয়া দ্রুত অভির রুমে চলে গেল। অভি তখন ফোনে কারো সাথে কথা বলছিল।
অভি ওর মমকে দেখেই ফোন কেটে দিয়ে বলল,

—” মম, কোন প্রবলেম?”

জুলিয়া কোন কথা না বলেই আগে অভির গালে ঠাশশশ্ করে একটা চড় মারলো। তারপর কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলো,

—” তোমার স্ত্রীকে থামাও। সে আমাদের এতক্ষতি করেছে তারপরও তার আশ মেটেনি। সে তোমার ড্যাডকে না মেরে দেখছি ক্ষান্ত হবেনা। তোমার, শুধু তোমার আস্কারা পেয়ে আজ সে এত সাহস পেয়েছে।”

যে মা কোনদিনও অভিকে একটা ধমক দিয়ে কথা পর্যন্ত বলেনি সেই মা আজ গায়ে হাত তুলল। সেটা অভি মোটেও হজম করতে পারলোনা। চোখ দিয়ে জল ঝরে গেল। ও ঝড়ের গতিতে রুম থেকে বের হয়ে গেল। অভি চোখের আড়াল হতেই জুলিয়া নিজের হাতের দিকে চেয়েই ঐ হাত গায়ের শক্তি দিয়ে ওয়ালে আঘাত করেই নিচে বসে পড়লো। তারপর ডুকরে কেঁদে উঠলো, নিজের অপরাধ বোধে।

এদিকে অভি ওর বাবার রুমের দরজায় এসে দাড়িয়ে মুগ্ধ হয়ে বিদ্যাকে দেখতে লাগলো। ততক্ষনে বিদ্যা আর ওর দিদা, ওর বাবাকে ধরে দাড় করিয়েছে। কাজের ছেলেটা কোথা হতে যেন হুইল চেয়ারটা নিয়ে এল। আর বিদ্যা বারবার বলছে, বাবা মনে রাখবেন, আজকের ব্যাথা আগামী দিনের পথ চলার সূচনা। যতই কষ্ট হোকনা কেনো, আপনি থেমে রইবেননা। আপনাকে পারতে হবে। আপনার মা, স্ত্রী, সন্তান অধীর আগ্রহে আপনার সুস্থতার অপেক্ষায় আছে। আপনার মা তো, আমাকে আগেই নালিশ করেছেন। তিনি আর আপনার জন্য চোখের জল ফেলতে চাননা। আজ আপনার চেষ্টাই ওনার চোখের জলের গতিপথ রোধ করতে যথেষ্ঠ। তাই আপনি চেষ্টা করেন। আপনি স্মরন করেন সেই সময়ের কথা যেদিন আপনার মা আপনাকে হাটতে শিখানোর জন্য প্রানপনে চেষ্টা করতেন। আজও তার কাধ আপনার হাটার জন্য অনুপ্রেরণা জাগাচ্ছে। তাই নো থামা। আপনাকে পাড়তেই হবে।

রুমের ভিতর চিৎকার চেঁচামেচির শব্দে বাসার সবাই এসে হাজির হল। তারা সকলে দেখল, প্রায় দীর্ঘ ১বছর পর তাদের এই প্রিয় মানুষটি নিজ পায়ে দাড়িয়ে হাটার চেষ্টা করছে। প্রায় ১৫ মিনিটের মত হাটাহাটি করে আশিষকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে দিল। আশিষ শরীরের ব্যাথায় কাতরাচ্ছিল। কুন্তী দেবী কাজের ছেলেটাকে বলল, “দ্রুত জুলিকে ডাকতে।”

বিদ্যা আজও ব্যার্থ হল। ভাগ্য তার এত খারাপ কেন? নিজের উপর প্রচন্ড রেগে গেল বিদ্যা। চোখ দিয়ে জলের ফোয়ারা ছুটছে। শশুড় মসাইয়ের কষ্ট আর সহ্য হলোনা। রুম থেকে বের হয়ে চলে আসতেই অভির সাথে ধাক্কা খেল বিদ্যা। লজ্জায় মুখ তুলে চাইতেও পারছেনা বিদ্যা। তবুও অভিকে কিছু বলতেই জুলিয়া এসে বিদ্যাকে ঠাশ্ করে একটা থাপ্পড় মেরে বলল,

—” তোমার ইচ্ছা এবার পুরুন হয়েছে? আর কত! আর কত ভাবে তুমি আমার পরিবারকে শেষ করবে? আমি লাষ্টবার তোমায় ওর্য়ানিং দিচ্ছি। প্লিজ আমার বাসা থেকে চলে যাও।”

জুলিয়ার এমন কান্ডে আশিষ ক্ষেপে গেল। জুলি…..! বলেই এত জোড়ে একটা ধমক দিল যে, রুমের সবাই ভয়ে কেঁপে উঠলো। জুলিয়ার আর সাহস হলোনা কিছু বলার। ওখানেই চুপ করে গম্ভীর হয়ে দাড়িয়ে রইলো। আশিষ বিদ্যাকে কাছে ডাকলো, কিন্তু বিদ্যা আর দাড়িয়ে থাকলোনা। দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল। পরক্ষনে অভিও রুম থেকে বের হয়ে গেল।

কুন্তী দেবী এসে জুলিয়াকে বেশ কঠোর গলায় বললেন, এ কেমন তোমার অভদ্রতা! তুমি কিভাবে একটা মেয়ের গায়ে হাত উঠাতে পারো। কিছু যখন বোঝইনা, তখন এত দ্রুত অন্যকে দোষী সার্বস্ত্র করো কিভাবে? তুমি জানো, আশুর কতটা উন্নতি হইছে! এতদিনতো তোমার কাছে ছিল। একধাপ তাকে হাটাতে পারছো! যে তোমার উপকার করে তাকেই দেখছি শত্রু ভাব। যাও, এখন গিয়ে পতিধর্ম পালন করো। যত্তসব….. বলে কুন্তি দেবীও বের হয়ে গেলেন।
একে একে সবাই চলে গেল।

আশিষের কাছে জুলিয়া যেতেই আশিষ অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বলল,

—” তুমি একদিন পস্তাবে। ওকে পাগলের মত খুঁজবে কিন্তু পাবেনা।”

জুলিয়া এবার কাঁদতে কাঁদতে বলল,

—” ও এত ক্ষতি আমাদের করছে, তবুও তুমি ওর হয়ে সাফাই গাইছো?”

হ্যা আমি সাফাই গাইছি! কারন ও নির্দোষ। তোমার সেটা বোঝার কোন সেন্স নেই। যাও আমার সামনে থেকে। আমার কাজ আমি নিজে করে নিতে পারবো। আমার কিছু ভালো লাগছেনা।

বিদ্যা দরজা বন্ধ করে কেঁদেই চলেছে। এখানে আর সে থাকবেনা। আর কত? এখানে ওর আপন বলে কেউ নেই। কিন্তু ওর সর্প সন্তানদের অভি কোথায় লুকিয়ে রেখেছে সেটাই ও জানেনা। বিদ্যার মনে হচ্ছে, ওরাই ওর আপন জন। ওরা ছাড়া আর কেউ নেই। বিদ্যা নিজের মায়াবলে ওদের দেখার চেষ্টা করছে। অবশেষে ওদের দেখা পেল। ওরা ফিরে গেছে ওদের রাজ্যতে। ওরাও চলে গেছে! আমাকে না বলে ওরা কিভাবে চলে যেতে পারলো? নাহ্ কি হচ্ছে আমার সাথে! সবকিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। বুকের ভিতর চাঁপা আর্তনাদে হৃদয় খান খান হয়ে যাচ্ছে। আজই সে চলে যাবে। হঠাৎ বিদ্যার মাথায় একটা চিন্তা ঢুকে গেল। ওর মা বৃন্দা একজন শক্তিশালী পিশাচ ছিল। নিশ্চয় ওর মায়েরও একটা রাজ্য আছে। নিশ্চয় ওর আপনজন সেখানে আছে। বিদ্যা আর কারো সাথে সম্পর্ক রাখতে চায়না। যদি তাদের খুঁজে পেত তাহলে সেখানে একেবারে চলে যেত। তাহলে ওকে আর কেউ খুঁজে পাবেনা। নিজের ভাগ্যকে মেনে নিয়েই ওর ভিতরের মায়া জাগাতে লাগলো। হয় সে ওদের কাছে যাবে না হয় আত্বহত্যা করবে। এই জিবন আর তাকে ভাল লাগছেনা। বিদ্যা তার চোখ বন্ধ করে নিজের হাতের তালু কেটে নিজেই রক্ত পান করতে লাগলো। যতক্ষন রক্ত পান করবে ততক্ষন সে তার অতীত খুঁজতে পারবে। তাই হল, সে ওর অতীত খুঁজতে লাগলো। অনেক কষ্টে সে সফল হল। কোন এক নারীর সন্ধান সে পেল। কিন্তু মুখ এখনো দেখতে পেলোনা। বিদ্যার শরীর দুর্বল লাগাতে ও বিছানায় সুয়ে পড়লো।

দুপুর দুটা,

বিদ্যার যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন ও দেখলো, ওর পাশে কুন্তী দেবী বসে আছেন। বিদ্যা ওনাকে দেখেই উঠে পড়ে। কুন্তী দেবী ব্যস্ত হয়ে বললেন,

—” এই মেয়ে তুমি উঠছো কেন! আচ্ছা, তুমি কি খুব কষ্ট পেয়েছ?”

কুন্তী দেবীর কথা শুনে বিদ্যা দীর্ঘশ্বাস ফেলেই বলল,

—” যার মন নেই, তার আবার কষ্ট কিসের? আপনার ছেলে কেমন আছে?”

আশু তোমাকে খাবার টেবিলে ডাকছে। তুমি আমার সাথে চল। তুমিতো এই বাসায় এসে কিছুই খাওনি। এখন লাঞ্চ-এর টাইম। যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।
বিদ্যা কিছু না বলে ফ্রেশ হতে গেল। তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে দেখল, অভির দিদা ওখানেই দাড়িয়ে আছে। তাই বাধ্য হয়ে ওর দিদার সাথে চলে গেল খাবার খেতে।

বিদ্যা খাবার টেবিলে সবাইকে দেখলো, কিন্তু অভিকে দেখতে পেলোনা। বিদ্যা এদিক-ওদিক চাইলো, কিন্তু অভিকে কোথায়ও দেখতে পেলোনা। আশিষ বিদ্যাকে কাছে ডাকলো, তারপর বলল,

—” কেমন আছো মা!”

হুম আছি বলেই টেবিলে চাইতেই ওর কপাল আকাশ ছোয়ার মত অবস্থা হল।
জার্ক চিকেন, চিলি ক্রাব, পিরিগো, বাহ্নমি, বাবল চা, পুতিন, সিমিত ব্রেড, গ্যালোটো, সুপ্পলি, আরিপাস সহ বিখ্যাত কিছু ইটালিয়ান খাবারে ভর্তি টেবিল। বিদ্যার ডাল-ভাত হলেই চলে। আর এখানে এগুলো খাবার! বিদ্যা একবার আশিষের দিকে চাইলো, আবার কুন্তী দেবীর দিকে চাইলো। এগুলো সে খেতে অভ্যস্ত নয়। তবুও সম্মান রক্ষার্থে বসে পড়লো। সত্যিই সে কাল থেকে কিছু খায়নি। তাই বলে খুদার ঠেলায় এগুলো খাবে সেটাও নয়। কাজের বয় সবাইকে খাবার সার্ভ করছে। সবাই খাইতেও শুরু করে দিয়েছে। আর বিদ্যা হাত গুটিয়ে বসে আছে। শেষে কোন উপায় না পেয়ে কিঞ্চিত পরিমানে খাবার মুখে তুলে উঠে এল। এসেই দরজা বন্ধ করে দিয়ে ওয়াসরুমে গিয়ে বমি করতে লাগলো। কারন ওর খাবারে কাকড়া ফ্রাইও দেওয়া হয়েছে। যেটা বিদ্যার একদম সহ্য হয়না। বিদ্যা মুখে বার বার জলের ঝাপটা দিয়ে অলস ভঙ্গিতে ওয়াসরুম থেকে বের হয়েই অভিকে দেখে তাজ্জব বনে গেল। অভি এখানে?

বিদ্যা এগিয়ে গিয়ে অভির সামনে দাড়িয়ে হাত দিয়ে ইশারা করে বলল,

—” এখানে কি চাই?”

অভি বিদ্যাকে অবাক করে দিয়ে ‘জন’ বলে কাজের ছেলেটাকে ডাকতেই, জন একে একে খাবার নিয়ে রুমে ঢুকলো। সব বাঙ্গালি খাবার। অভি জনকে চলে যেতে বলতেই সে চলে গেল। অভি বিদ্যার একদম কাছে গিয়ে ওর গালে হাত দিতেই বিদ্যা আহ্ করে উঠলো। বিদ্যার গাল ব্যাথায় টনটন করে উঠলো। অভি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

—” বিদ্যা, তুমি কি জানো! আজ আমার বার্থডে! রাতে বিশাল পার্টির আয়োজন করা হয়েছে। এই দিনে আমি আমার মমের কাছ থেকে যা চাই তাই দেয়। প্রতি বার্থডে প্রচুর পরিমানে গিফ্ট দিত। আমি আমার বংশের একটাই ছেলে কিনা! তাই সবাই প্রচন্ড ভালোবাসে। তবে আজ আমার মম এই প্রথম আমাকে একটা থাপ্পড় উপহার দিয়েছে। খুব কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু কাল যখন তোমার আর্তনাদ আমার কানে এসে পৌছায় তখন আমিতো প্রায় শেষই হয়ে গিয়েছিলাম। এই বুঝি তোমায় সারা জিবনের জন্য হারিয়ে ফেললাম।”

বিদ্যা অভির কথাগুলোকে পাত্তা না দিয়ে তীক্ষ্ণ নজরে অভির দিকে চেয়ে বলল,

—” অভি, কাল রাতে তুমি আমার সাথে কি করেছ?”

অভি সোজাসাপ্টা উত্তর দিল, তেমন কিছুনা!

অভির উত্তরে বিদ্যা খুঁশি হলোনা। তাই সে বলেই ফেলল,

—” তোমাকে আর তোমার পরিবারকে মুক্তি দিয়ে আজই চলে যাচ্ছি। বাবা ঠিক হয়ে যাবে, টেনশন করোনা। আর আমার জন্য তোমাকে তোমার মমের থাপ্পড়ও খাইতে হবেনা।”

বিদ্যার কথায় অভির পরির্বতন আসলোনা। শুধু বলল,

—” আজই যাবা!”

হুম্ আজই বলতেই অভি বিদ্যার গলা চেঁপে ধরলো। তারপর কঠিন গলায় বলল,

—” খুন করে ফেলব।”

বিদ্যা অনেক কষ্টে বলে উঠলো,

—” সেটা আমার সৌভাগ্য। আমাকে তাহলে আর কিছুই করতে হবেনা।”

অভি বিদ্যার খুব কাছে ছিল তাই ওর মুখ দিয়ে কেমন জানি একটা গন্ধ বের হল। অভি ওর গলা ছেড়ে দিয়ে বিদ্যার কপালে গভীর একটা কিস করে ঠান্ডা মেজাজে বলল,

—” কি খেয়েছ?”

বিদ্যা নিলিপ্ত গলায় বলল,

—” হেমক লতার রস।”

—” মরার খুব শখ জেগেছে? আমার হাতেই না হয় মরতে।”

—” আমি মুক্তি চাই। আশা করি আমি আজ মুক্তিও পেয়ে যাব।”

—” আমি এতটাই ঘৃন্যার পাত্র হয়ে উঠলাম তোমার কাছে! যে তুমি মুক্তি চাইছো আমার কাছে?”

বিদ্যা অভিকে জোড়ে একটা ধাক্কা দিয়ে হেঁসে উঠলো খিলখিল করে। তারপর তাচ্ছিল্য সহকারে বলল,

—” আমি কিছু শুনতে চাইনা, ব্যাস, আমার মুক্তি চাই। আমার সময় অনেকটা শেষ হয়ে গেছে। আমি ইচ্ছা মৃত্যু গ্রহন করেছি। তাই আর কিছু সম্ভব নয়। ভাল থেক।”

বিদ্যার এই শেষ কথা অভিকে পাগল করে তুলল। অভি জোড়ে জোড়ে ওর মাকে ডাকতে লাগলো। মম, প্লিজ হেল্প মি। আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। বিদ্যা ততক্ষনে চোখ বন্ধ করে ফেলেছে। চোখ দিয়ে দু’ফোটা জল ঝরে পড়লো এবং সে ফ্লোরে পরে গেল। এদিকে অভির চিৎকারে জুলিয়া দৌড়ে চলে এল বিদ্যার রুমে। বিদ্যার শরীর আস্তে আস্তে কালো হতে লাগলো। জুলিয়াও প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেল, বিদ্যার শরীর পরিবর্তন হওয়া দেখে। অভি ওর কি হয়েছে? কথাটি জুলিয়া বলতেই অভি ধীর গলায় বলল,

—” ওকে ছাড়া আমি বাঁচবোনা মম। ওর যদি কিছু হয়ে যায়। তাহলে শুধু বিদ্যার একা চিতা জ্বলবেনা। অভিরও চিতা জ্বলবে আজ।”

জুলিয়া দ্রুত বিদ্যাকে নিয়ে ভ্যানিস হয়ে গেল। সাথে অভিও চলে আসলো। বিদ্যাকে বেডে সুয়ে দিয়েই জুলিয়া অভিকে বলল,

—” তোমাকে যে ইয়োলো রং এর পাথর দেওয়া হয়েছিল সেটা কোথায়! দ্রুত করো। সময় খুব কম।”

অভি নিমিষেই ওর শরীর থেকে হলুদ পাথরটি বের করেই ওর মায়ের হাতে দিল। জুলিয়া পাথরটি হাতে নিয়েই চমকে উঠলো। অভি, এই পাথর তুমি ব্যবহার করে ফেলেছ? এখন আমি কি করবো! এর শক্তি ফিরতে দেরী হবে তো! সঠিক সময়ে যদি এর শক্তি ব্যবহার না করা যায় তাহলে আমি কিছুই করতে পারবোনা।

জুলিয়ার কথা শুনে অভি ফ্লোরে বসে ওর মায়ের পা চেঁপে ধরলো। মম, কিছু একটা করো। আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারবোনা। ও আমার অক্সিজেন মম। যখন অভি পাগল প্রায় হয়ে গেল তখন বিদ্যার শরীর প্রায় পুরোই কালো রং ধারন করলো। বিদ্যা তার শেষ সময় গুনছে। বিদ্যা স্বপ্ন দেখছে, গভীর রাত। সে এক পাহাড়ে দাড়িয়ে আছে। বিদ্যার শরীর দিয়ে আলো যেন ঠিকরে পড়ছে। হঠাৎ বিদ্যা ছোট্ট সেই ৬ বছর বয়সী বিদ্যা হয়ে যায়। তার শরীর থেকে ২য় সত্তা বের হয়ে যায়। তারা এখন দু’জন পৃথক হয়ে গেছে। পাহাড়ের শেষ চূড়ায় এক নারী দাড়িয়ে আছে। যে কিনা ছিল বৃন্দা। সে তার সন্তানকে আকুল হয়ে ডাকছে। অশরী সত্তা তার মাকে চিনতে পেরেই ছুটে যায়। কিন্তু ছোট্ট বিদ্যা তার মাকে কখনো দেখেনি। তাই সে ওখানেই দাড়িয়ে থাকে। কিন্তু অশরী সত্তা বিদ্যাকে ডেকে বলে,

—” বিদ্যা, চল মায়ের কাছে! সে আমাদের মা।”

মা, আমার মা বলেই কাঁদতে কাঁদতে বিদ্যা ছুটতে থাকে বৃন্দার দিকে। কিন্তু পথ যেন ফুরাতেই চায়না। সে চলছেই আর চলছেই।

বিদ্যা বার বার ঝাকুনি দিয়ে উঠছে। জুলিয়া স্থির হয়ে ছেলের অসহায়ত্বের দিকে চেয়ে আছে। এমন সময় রুমে দৃশ্যমান হল আশিষ। যা দেখে জুলিয়ার হুশ উড়ে গেল। একজন সাধারন মানুষ কিভাবে মায়া বিদ্যা প্রয়োগ করতে পারলো। কিন্তু আশিষ কোন কথা না বলেই নিজে আলোক রশ্মিতে পরিনিত হয়েই বিদ্যার শরীরে প্রবেশ করে। হ্যা, সেও সেই একই প্রান্তরে এসে উপস্থিত হয়েছে। আশিষ নিজেকে বিশাল দানবে পরিনিত করেই প্রানপনে বিদ্যার পিছনে ছুটলো। এবং এক নিমিষেই বিদ্যাকে আগলে ধরে বলল,

—” ওখানে কিছুই নেই। আমার সাথে বাসায় চল।”

বিদ্যাকে বৃন্দা না পেয়ে ক্ষেপে গেল। সে মাটি হামলাতে হামলাতে বিদ্যার কাছে এসেই বিদ্যাকে নিজের বুকের ভিতর নিয়েই আশিষকে আঘাত করলো। আশিষ ধাম করে মাটিতে পড়ে গেল। আর এদিকে বিদ্যা খুশি হয়ে ওর মায়ের সাথে হাটা দিল। বৃন্দা একহাতে অশরী সত্ত্বা আর অন্য হাতে বিদ্যাকে নিয়ে পথ চলছে। পাহারের চূড়াটি পেরুলেই সে তার সন্তানকে একেবারে পেয়ে যাবে। দানব আশিষ গিয়ে বিদ্যার হাত চেপে ধরে বলল,

—” ওটা তোমার জিবন না মা। তুমি আমার সাথে চল। তোমার জন্য অন্য কেউ অপেক্ষা করে আছে।”

এবার বৃন্দা এতোটাই ক্ষেপে যায় যে একদম আশিষের বুকের ভিতর ওর হাতটা ঢুকে দিয়ে আশিষকে দুরে ছুড়ে ফেলে দেয়। বৃন্দা এতোটাই শক্তিশালী যে, ওর সামনে আশিষ টিকতে পারছেনা।

এমন সময় কে যেন পিছন থেকে বিদ্যা বলে ডেকে ওঠে। সাথে সাথে অশরী সত্ত্বা পিছন ফিরে দেখে অপু দাড়িয়ে আছে। অপুদাদা বলেই ও ওর মায়ের হাত ছেড়ে দিয়ে অপুর কাছে ছুটলো। কিন্তু মাঝপথে থেমে বলল,

—” বিদ্যা আসো, অপুদাদাতো ডাকছে!”

এবার ছোট বিদ্যা কেঁদে উঠলো। তারপর বলল,

—” তুমি যাও, আমার জন্য ওখানে কেউ নেই। আমি আমার মা যাবো।”

বৃন্দা বিদ্যাকে নিয়ে শূন্যতে উঠে যায়। অশরী সত্তাকে বিদ্যা ডেকে বলে,

—” তুমি আমাদের সাথে আসবেনা!”

—” না বিদ্যা, ওটা আমাদের জিবন না। আমাদের জিবনতো ঐ দিকে দাড়িয়ে আছে। দেখ ঐ দিকে!”

কথাটি বলেই অশরী সত্তাটি অপুকে দেখিয়ে দেয়।
এর মাঝে অপু দ্রুত দৌড়ে এসে বিদ্যাকে ওর মার কাছ থেকে ছিনে নিয়ে বিদ্যাকে ওর বুকের ভিতর চেপে ধরে। সাথে সাথে বৃন্দা চিৎকার দিয়ে হাওয়ায় মিশিয়ে যায়।

অপর দিকে হলুদ পাথরের শক্তি ফিরে আসতেই জুলিয়া ওটা বিদ্যার কপালে বসিয়ে দিল। সাথে সাথে বিদ্যার শরীর থেকে অভি আর আশিষ দু’জনেই ছিটকে বের হয়ে গেল। বিদ্যার শরীর আবার স্বাভাবিক হয়ে গেল আস্তে আস্তে। এক দম বন্ধ হওয়া সময়ের মধ্য দিয়ে তাদের যেন সময় কাটিয়ে গেল।
বিদ্যার সেন্স ফিরেনি। কিন্তু একটু সময় নিয়ে ফিরবে। জুলিয়া আশিষকে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল।
অভিও বিদ্যাকে নিয়ে ওর রুমে চলে গেল।

পুরো রুম অন্ধকার। বিদ্যা চোখ খুলে কিছু দেখতে না পেলেও ওর চোখ লাইটের মত জ্বলে উঠলো অন্ধকারে। অভি সাথে সাথে ওর চোখ ধরে বলল,

—” আমার কাছ থেকে আর যাওয়ার চেষ্টা করবা!”

বিদ্যা অভির হাত ঝিটকে ফেলে দিয়ে টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়েই অভির দিকে চাইলো। তারপর ক্ষোভের সাথে বলল,

—” আমার তোমাকে চাইনা। তুমি আমার কাছ থেকে দুর হয়ে যাও। যদি জোর করো তাহলে এমন কিছু করবো, জিবনেও আমার মুখ দেখতে পাবেনা।”

—” সত্যিই আমাকে তোমার চাইনা?”

—“বললামনা, আমার তোমাকে চাইনা!”

দেখি কতক্ষন আমায় না চাইতে পারো বলেই অভি চড়াও হলো বিদ্যার উপর। বিদ্যার গলায় আলতো করে কামড় বসিয়ে দিয়ে বলল,

—” এখনো আমাকে তোর প্রয়োজন নেই?”

বিদ্যা মুখ অন্যদিকে ফিরে বলল,

—” না, আমার তোমাকে চাইনা। আমি চলে যাব। ছাড়ো আমায়।”

অভি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

—” এভাবে হবেনা, অন্য কিছু করতে হবে।”

অভি বিদ্যাকে বুকে টেনে নিয়ে সম্পূর্ন নিজের আয়ত্বে এনেই কয়েকটা কিস করে বিদ্যা কে ছেড়ে দিয়ে উঠে যেতেই বিদ্যা অভির হাত ধরে কাঁদতে লাগলো।
হ্যা, অভি এটাই চাইছিল। অভিকে আর পায় কে! বিদ্যার জেদ, রাগ, অভিমান সব ভেঙ্গে চুরমার করে দিল। অভি বিদ্যার কানে ফিসফিস করে বলল,

—” কাল রাতে কি করেছিলাম নিশ্চয় তা বুঝতে পেরেছ?”

অভির কথা শুনে বিদ্যা অভির পিঠ খামচে ধরে বলল,

—” আমি আমার অভিকে বারবারই এভাবে চাই। আমার তোমাকে সারাজিবন খুব প্রয়োজন অভি।”

বিদ্যা অভির ভালোবাসার কাছে হার মেনে নিজেকে সপে দিল অভির কাছে। অপু, বিদ্যা, অভির কাহিনী এভাবেই পূর্নতা পেল তাদের ভালোবাসার মাঝে।

সাপগুলোকে বুঝে অভি পাঠিয়ে দিয়েছিল তাদের দেশে। হয়ত কোন এক সময় তারা আবার ফিরবে তাদের মায়ের কাছে। আর আশিষকে সারাজিবন হুইল চেয়ারেই কাটাতে হবে। তবে সে যখন অশরীর রুপ ধরবে তখন সে একদম স্বাভাবিক হয়ে যাবে। বিদ্যা এই ব্যবস্থায় করেছে। যা পরে অভি আর ওর মায়ের কাছে প্রকাশ পায়। জুলিয়া অভির কষ্ট দেখে সব ভুলে বিদ্যাকে মেনে নিয়েছে এবং রাত্রিতে অভির বার্থডে পার্টিতে বিদ্যাকে অভির বউ বলে সবার সাথে পরিচয় করে দেয়। এখন তাদের হাজার বিপদ এলেও এই শক্তিশালী পরিবার তাদের বুদ্ধি আর শক্তির জোরে তা মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।
বিদ্যা অভিকে নিয়ে শিঘ্রই অঞ্জনা দেবীর সাথে দেখা করার কথা ভেবেছে। তারও একটা হক আছে অভির প্রতি। বিদ্যা অভিকে পেয়ে সবার প্রতি রাগ ভুলে গিয়েছে। এমনকি সে সাধনা দেবীর সাথে দেখা করার জন্যও মনঃস্থির করেছে। সে আজ খুব খুঁশি। অভি ওর সাধ্যমত চেষ্টা করে বিদ্যাকে আগলে রাখতে। সুখে থাকুক এমন অপেক্ষামান ভালোবাসাগুলো। যারা ভালোবাসার জন্য দীর্ঘ প্রতিক্ষায় থাকে।

সমাপ্ত

বিদ্রঃ খুব শ্রীঘ্রই “অচেনা অতিথী” ২য় পার্ট নিয়ে আমি নাফিসা মুনতাহা পরী উপস্থিত হব এই চিরচেনা পেজে।

সবার হয়ত জানা নেই, “জল সমাধি” বইটিই আমার প্রথম ও শেষ বই। নাফিসা মুনতাহা পরীর আর কোন গল্প, বই আকারে আসবেনা। আমি জানিনা, আমাকে লেখিকা হিসাবে কে কতটা ভালোবাসে। প্রতিটা বইয়ে আমার লেখা চিরকুট পাবেন। যারা চান তারা সেটা স্মৃতি করে রাখতে পারেন।

“জল সমাধি” বইটি প্রি-অর্ডার করতে নিচের লিংক-এ গিয়ে ফরমটি পূরণ করে সাবমিট করুন :
.
https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLSfMkPPayni-cyzXQKOvfWO8-ZxNIzVCdjiz2ye1fZ3aU_yiRQ/viewform

কোনো সমস্যা দেখা দিলে বা বুঝতে না পারলে এই আইডির ইনবক্সে মেসেজ করুন বা কল করুন : 01979 002737

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here