😏 # মেঘের_আড়ালে_রৌদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒
Part-05 (কমলা_রঙের_ভালোবাসা🧡)
আজ ভ্যালেনটাইন ডে,ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস দুই উপলক্ষেই আজ ক্যাম্পাস সেজেছে অপরুপ সাজে,,কেউ হাঁটছে তার প্রিয়া মানুষের হাত ধরে কেউ বা তার প্রিয় মানুষকে করছে প্রেম নিবেদন,,কতো রঙীন না পৃথিবীর সব ভালোবাসা গুলো
সাদা চুড়িদার আর সাদা পান্জাবি তে নিজেকে আজ সাজিয়েছে উজান,,পাঞ্জাবির হাতা কনুই পর্যন্ত গুটানো,,কালো সানগ্লাস টা না পড়েই বুকের ডান দিকের পকেট টায় ঝুলিয়ে রাখা,হাতে চিরায়ত সেই চেন সিস্টেম ঘড়ি,চুল গুলো বরাবরের মতো গোছানো সাথে চাপা চাপা খোঁচা দাড়ি,,এক কথায় উজানকে রুপকথার গল্পের মতো এক সুদর্শন পুরুষ লাগছে আজ
এদিকে আমাদের হিয়া সে তৈরি হচ্ছে ঝিনুকের দেওয়া একটা কমলা জর্জেটের শাড়ি দিয়ে,,যদিও হিয়া শাড়ি পড়তে চায় নি কিন্তু ঝিনুকের এক প্রকার জেদে হিয়া ঝিনুকের কাছে হেরে গিয়ে শাড়ি টা নিতে বাধ্য হয়,,শাড়ি পড়েই হিয়া দাঁড়িয়ে আয়নার সামনে নিজেকে দেখে নিজের উপর হেঁসে উঠে,,ঝিনুক তো ওকে শাড়ি দিয়ে দিলো এখন এই শাড়িতে হিয়া নিজেকে সাজাবে কি দিয়ে,,হিয়ার কাছে যে সাজার জিনিস বলতে কিছুই নেই!!
শ্রাবণঃ বুবুনি
শ্রাবণের ডাকে হিয়ার হুঁশ ফিরে
হিয়াঃ হ্যা কিছু বলবি সোনা
শ্রাবণঃ এদিকে আয়,,চোখ দুটো বন্ধ কর তো
হিয়াঃ সেকি কেনো
শ্রাবণঃ আহা তুই খুব কথা বলিস,,বন্ধ করতে বলছি কর না
হিয়াঃ কি রকম বুবুনিকে শাসন করছে দেখো,,আচ্ছা নে চোখ বন্ধ করলাম
হিয়া চোখ বন্ধ করলে শ্রাবণ হিয়ার হাতে দু ডজন কমলা রঙের কাঁচের চুড়ি ধরিয়ে দিয়ে হিয়াকে চোখ খুলতে বলে
হিয়াঃ এসব কি সোনা,,এগুলো কোথায় পেলি তুই
শ্রাবণঃ আমি এগুলো তোর জন্য কিনেছি রে বুবুনি,,আজ তো ভালোবাসা দিবস আমাদের স্কুলে ম্যাডাম বলেছে এই দিনে বাবা আর মা কে মন ভরে ভালোবাসতে হয় দিন টা নাকি ওদের কেও ভালোবাসা দেবার জন্য,,আর আমার কাছে আমার বাবা মা মানেই তো তুই
শ্রাবণের কথায় হিয়ার চোখ জুড়ে জল চলে আসে নিমিষে
হিয়াঃ কিন্তু তুই এগুলো কিনবার টাকা কোথায় পেলি
শ্রাবণঃ তুই যে মাঝে মাঝে আমাকে টিফিনে ঝালমুড়ি কিনে খাবার জন্য পাঁচ টাকা করে দিতি আমি ওখান থেকে জমিয়ে জমিয়ে কিনেছি,,,তোর পছন্দ হয় নি না
হিয়াঃ কে বলেছে আমার পছন্দ হয় নি
শ্রাবণঃ তাহলে পড়ছিস না যে
হিয়া কাঁদতে কাঁদতে চুড়ি গুলো হাতে পড়ে নেয়,শ্রাবণ দু হাতে হিয়ার চোখ মুছে দেয়
শ্রাবণঃ তোকে বলেছি না তুই কাঁদলে তোকে পেঁচার মতো লাগে,কেনো কাঁদিস তারপরো
হিয়াঃ (শ্রাবনকে বুকের সব দিয়ে আগলে ধরে)খুব খুব খুব পছন্দ হয়েছে ভাই আমার চুড়ি গুলো,,তোর জন্য আমি সব করবো,,তোর জন্যেই একদিন আমাকে অনেক বড় হতে হবে শুধু তোর জন্য ভাই শুধু তোর জন্য
________________________
ক্যাম্পাস
উজানঃ ফুলকলির ও কি Valentine লাগছে নাকি ফুল দিয়ে সেজেছিস যে___মিষ্টি লাগছে ভীষণ(ফুলকলির থুতনি টা ধরে)
ফুলকলিঃ হে হে___আচ্ছা ভাইজান আজকে তো সবাই আমার কাছে ফুল কি-ইন্না ভালো বাসাবাসি করছে তা আপনি ফুল কিনে কোনো আপা কে দিয়ে ভালোবাসা বাসি করবেন না
উজানঃ ফুলকলি রে ফুলকলি আমার মতো রাগি,বদমেজাজি খারাপ ছেলেকে কে সহ্য করবে বলতে পারিস
মিন্টুঃ ভাই আপনি খারাপ মানুষ____!! আপনার জন্য আমাগো বস্তির সব বাচ্চা দু বেলা খাইবার পায় আর আপনি কোওন আপনি নাকি খারাপ
ছোটঃ ভাই আছে বইলাই না এই ক্যাম্পাসের মেয়ে গুলো এখন স্বাধীন ভাবে চলবার পায়____আগে যখন ভাই আছিলো না তখন তো মোর বাপ মোক কইতো মাইয়া গুলা নাকি আইতে যাইতে চেংরা গুলোর জ্বালায় বাঁচতে পাইতো না,আর এখন মাইয়া গুলোক জ্বালা তো দূরে থাক চোখখান তুইল্লাও কেউ দেখবার সাহস পায় না___আর তাছাড়া এমনিতেও আমাগো ভাইয়ের যা চেহারা আমাগো ভাই এমনি মেয়ে পাইবো
উজানঃ লাভ নেই রে ছোটওওও আমার জন্য মেয়ে দের লাইন লাগালেও এগুলো একটা কেও আমার মনে ধরে না
ফুলকলিঃ (দুষ্টুমি হাসি দিয়ে) ভাইজান আমি কিন্তু আজ ভোর বেলা স্বপ্নে দেখছি আপনি আজ আমার কাছে হাজার টাকার ফুল কি-ইন্না একটা আপাকে দিয়া আপার লগে এই রাস্তা দিয়ে হাটবার লাগছিলেন
উজানঃ (হেঁসে দিয়ে) আমি কিনবো কোনো মেয়ের জন্য ফুল তাও আবার হাজার টাকার,হাসালি রে ফুলকলি হাসালি
ছোটঃ ভোরের স্বপ্ন কিন্তু সত্যি হয় ভাই,সাবধানে থাইকেন আজ🥰
উজান একটা হাসি দিয়ে সবার হাতে হাতে একশ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলে আজ মন মতো সবাই কিছু খেয়ে নিস,,তারপর উঠেই উজান ওদের বসার জায়গায় গিয়ে ফোন হাতে বসে পড়তেই সবাই কে দেখেই খিঁচে উঠে
উজানঃ কি এসব মুখে রঙ চঙ মেখে এসেছিস,,সিম্পল থাকতে পারিস না রোজকার মতো
সন্ধিঃ এ মা,,শাড়ি পড়েছি একটু সাজবো না
উজানঃ হ্যা সাজ,,কিন্তু সব কিছু এতো ওভার ওভার কেনো,,এই যে ভারী ভারী কিসব কানে পড়ে আছিস তার উপর আবার ঠোঁট টা দেখ একবার,দেখেই মনে হচ্ছে কোনো ট্রাফিকের রেড লাইটের মতো লাগছে
সন্ধিঃ কুত্তা😡😡আমার এতো সুন্দর ঠোঁট টাকে তুই বিপদ সংকেত এর সাথে তুলনা করলি,,,হু দেখবি শুধু,তোর বউ কি রকম হয়,ঔ সারাদিন শুধু আয়নায় বসে বসে মেকআপ ডলবে মিলিয়ে নিস
উজানঃ 😏😏
রাইসাঃ এভাবে বলছিস কোনো তুই আজ তো সবাই শাড়ি পরে সুন্দর করে সেজেছে,,মেয়ে গুলোকে দেখ আমাদের চাইতেও ডীপ শেডের লিপিস্টিক দিয়ে আসছে,কি সুন্দর লাগছে সবাই কে
উজানঃ মেয়ে হয়ে মেয়ে কে দেখছিস,,ছিঃ,,এই তোর ভেতরে সব হরমোন ঠিক আছে তো
রাইসাঃ কি বললি তুই😡😡
উজানঃ সরি সরি😌আরে আমি তো জাস্ট মজা করছিলাম
তুষারঃ কি ব্যাপার হ্যা কয়দিন থেকে দেখছি খুব মুডে আছিস
উজানঃ ব্যাপার তো একটা আছে বন্ধু,,যেদিন নিজে সেই কারণ টা খুঁজে পাবো ওদিন বলবো না হয়
উজান তুষারের দিকে রহস্য সূচক হাসি দেওয়া মাএই নীলিমা এসে দুম করে উজানের পাশে বসে পড়ে খ্যাট খ্যাট শুরু করে
সন্ধিঃ তোর আবার কি হলো,এ-র কম করছিস কেনো এসেই
নীলিমাঃ দেখ না ঔ আইসক্রিম টা খেতে গিয়ে লিপিস্টিক টা কি রকম উঠে গেলো,ধুর
বলা মাএই নীলিমা ওর ব্যাগ থেকে লিপিস্টিক আর আয়না বের করে আবার ঠোঁট ঘষতে শুরু করে
নীলিমাঃ উজান দেখো তো এবার ঠিক আছে না
উজানঃ কি😒
নীলিমাঃ আরে আমার লিপিস্টিক
উজানঃ আজব আমি কি করে বুঝবো নীলিমা লিপিস্টিক ঠিক আছে না বেঠিক আমি কি মেকআপ আটিস্ট নাকি🙄
নীলিমাঃ আরে আমি তা বলি নি,আমি তো শুধু
সন্ধিঃ আচ্ছা বাদ দে,তোদের সবার হয়ে গেলে চল না আমরা মঞ্চের সামনে যাই,,নাটক টা শুরু হয়ে গেলো তো বুঝি
রাইসাঃ হ্যা চল আজ সুকন্যাও পার্টিসিপেট করবে আর আমার ওর টা দেখতেই হবে মাস্ট
সবাই উঠে দাঁড়িয়ে যায়,সন্ধি শাড়ি ঠিক করতে থাকে,উজান তখনো ফোনের মধ্যে মুখ গুঁজে দিয়ে,,,,হঠাৎই পাশ থেকে সাব্বির বলে উঠে মামা তোমার হাঁস পাখি আসছে সাথে ঔ শামুক ঝিনুক টাও আছে দেখছি,,সাব্বিরের কথায় উজান ফোন থেকে মুখ তুলে সামনে তাকাতেই পুরো থ হয়ে যায়,,মনে হয় জীবনে এরকম কোনো সৌন্দর্য সে এই প্রথম দেখলো🧡🧡🧡
হিয়া আর ঝিনুক দুজনে গল্প করতে করতে এদিকের রাস্তা টায় আসছিলো,,ঝিনুকো হিয়ার মতো একটা হলুদ শাড়ি পড়েছে আজ কোমড় অবধি চুল গুলো হাফ বেঁধে ছেড়ে দেওয়া,,শাড়ি পড়ে যে সব জিনিস দিয়ে নিজেকে সাজাতে হয় সব দিয়েই সে সাজিয়েছে নিজেকে,,
কিন্তু হিয়ার মুখে নেই সাজ নামক কোনো বস্তু না আছে কোনো ডিপ শেডের লিপিস্টিক না কোনো ভারী ময়দার আবরণ,,কপালে একটা টিপ দেবার সামর্থ্যও হয়ে উঠেনি হিয়ার,,,,শুধু দু হাতে দেখা মিলছে শ্রাবণের কিনে দেওয়া কমলা চুড়ি গুলো,,তবু এই পড়ন্ত বিকেলের গোধুলির অস্ত যাওয়া সূর্যের মতোই স্নিগ্ধতা বিরাজ করছে হিয়ার মুখের প্রত্যেকটা ভাঁজে,,আর হিয়ার গালের টোল পড়া হাসি যেনো এই স্নিগ্ধতা টাকে আরো পবিএ আরো মায়াময় আরো প্রাণবন্ত করে তুলছে থেকে থেকে🧡
ঝিনুকঃ আগে যদি জানতাম তুই এরকম নিরামিষ হয়ে আসবি তাহলে বাড়ি থেকেই সব কিছু সাজার নিয়ে আসতাম,,হারামি,,এভাবে শাড়ি পড়ে না সেজেগুজে কেউ আসে কখনো
হিয়াঃ ছাড় তো,,ওসব সাজ টাজ আমার ভালো লাগে না,,কি রকম পেঁচার মতো লাগে
ঝিনুকঃ বললেই হলো পেঁচার মতো লাগে,,,শোন না সামনেই তো নীল ক্ষেএ ওখানে নিশ্চয় কিছু না কিছু সাজার কিনতে পারবো,,চল না গিয়ে কিনে নিয়ে আসি
হিয়াঃ তোর মাথা ঠিক আছে,,শোন এইসব সাজগোছ নামক বিলাসিতা না আমাদের মতো মেয়েদের মানায় না বুঝলি
ঝিনুকঃ একদম বাজে বকবি না,,চল না হিয়া প্লিজজজজ তোকে এরকম বেরসিক হয়ে একদম ভালো লাগছে না চললল না
ঝিনুক হিয়াকে টানতে থাকে,কাতুকুতু দিতে থাকে,কিন্তু হিয়া ঝিনুকের কথা শুনে না,খিলখিল করে হাসতে হাসতে পেছনে তাকিয়ে সামনে দৌড় দিতে ধরলে ধাক্কা খায় কারো একজনের সাথে,মানুষ টার চওড়া বুক বরাবর হিয়ার মাথা ডুবানো,,মুখ তুলে আলতো চোখে তাকাতেই হিয়া অবাক,,শেষে এসে এই মুরগী টার সাথেই ধাক্কা খেতে হলো ধুর
উজানঃ কি হচ্ছে এসব,,ক্যাম্পাসে এসে এরকম বাচ্চা দের মতো দৌড়াদৌড়ি করছো কেনো তোমরা😒
ঝিনুকঃ ইয়ে মানে ভাইয়া,,আসলে,,হিয়া কিছু সাজেনি তো তাই আমি ওকে জোর করছিলাম যদি কিছু দিয়ে ওকে সাজিয়ে দেওয়া যায়,,কিন্তু ও শুনছেই না আমার কথা,,দেখুন তো কি রকম ফ্যাকাশে লাগছে
হিয়াঃ আহ কি করছিস কাকে কি বলছিস,,চুপ কর না
ঝিনুকঃ আহ তুই চুপ কর,,আমি ঠিক মানুষকেই সব বলছি
হিয়াঃ ঠিক মানুষ মানে
উজানঃ তোমাদের দুজনের ফিসফাস শেষ
উজানের কথায় হিয়া ঝিনুক চুপ হয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়
উজানঃ ভাগ্যিস তোমার বান্ধবী সাজেনি নাহলে যে পেঁচার মতো চেহারা সাজলে তো পুরো শাঁকচুন্নি লাগতো
হিয়াঃ 😡😡
ঝিনুকঃ মোটেই না আমার বান্ধবী সব চাইতে সুন্দর,,আমার চাইতেও সুন্দর বুঝলেন
উজানঃ এএএএ যে না এক চেহারা নাম আবার তার পেয়ারা😏
হিয়াঃ আপনাকে তো আমি😡
ঝিনুকঃ এই যে ভাইয়া শুনুন আমার বান্ধবী পেয়ারা না কমলা আপনার সেটা গবেষনা না করলেও চলবে বুঝলেন
হিয়াঃ বাদ দে না ঝিনুক,,আমাদের পারসোনাল ব্যাপারে কেনো তুই খামোখা ওনাকে টানছিস বল তো,,আর তাছাড়া উনি তো ঠিকি বলেছে আমাদের মতো মেয়েদের সাজগোজ বিলাসিতা ছাড়া কিছুই না,ওসব আমার সাথে যায় না
কথাটা বলেই হিয়া মুখ ফুলিয়ে সামনে হাঁটতে শুরু করে
ঝিনুকঃ দিলেন তো খামোখা মেয়েটার মুড টা নষ্ট করে,,এই আপনার ভালোবাসা,,কতো কষ্ট পেলো বলুন তো😡
উজানঃ শালি সাহেবা কি এজন্য রাগ করলেন নাকি আমার উপর
ঝিনুকঃ হুম খুব রাগ করেছি আমি খুব খুব
উজানঃ তাহলে এ-ই রাগ ভাঙ্গাতে একটা কাজ করলে হয় না
ঝিনুকঃ কি কাজ শুনি
উজানঃ আমি যদি আপনার বান্ধবী কে সাজিয়ে দেই ব্যাপারটা কি রকম জমবে বলুন তো
ঝিনুকঃ দিবাস্বপ্ন দেখা বাদ দিন ভাইয়া,,হিয়াকে ছুঁইয়ে তো দেখান তারপর না সাজাবেন😎😎
উজানঃ ছুঁইয়ে দিয়ে কেনো শুধু সবসময় সাজিয়ে দিতে হবে না ছুঁইয়েও তো অনেক কিছু করা যায় ঝিনুকপাখি
ঝিনুকঃ মানে
উজানঃ একটু অপেক্ষা করো,আমি আসছি
উজান ঝিনুক কে হিয়ার কাছে পাঠিয়ে দিয়ে পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে খুঁজে খুঁজে ফুলকলিকে সাথে নিয়ে আসে,ফুলকলির ব্যাগ ভর্তি গাঁদা ফুলের সৌন্দর্যে,,উজান ফুলকলিকে একটা বড় বসার জায়গায় বসিয়ে দিয়ে হিয়ার কাছে হিয়াকে আনতে যায়
হিয়াঃ কি হচ্ছে কি আপনি এভাবে আমাকে হাত ধরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন,,ভাইয়া প্লিজ ছাড়ুন,,দেখুন সবাই কি রকম করে আমাদের দেখছে,,,ভাইয়া প্লিজ আমার হাত টা ছাড়ুন,,,,,আরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন সেটা তো বলুন,,,ভাইয়াআআআআ,,,আমি কিন্তু এবার চেঁচাবো বললাম😡,,,,ও ভাইয়া দেখুন সবাই কি রকম করে তাকিয়ে আছে,,ভাইয়া
উজানঃ ভাইয়া ভাইয়া ভাইয়া এই নিয়ে পাঁচবার ভাইয়া ডাকলে আর একবার যদি ভুল ক্রমে তোমার মুখ দিয়ে ভাইয়া নামক এই অসহ্য শব্দ টা বের হয় তাহলে কিন্তু
হিয়াঃ তাহলে
উজানঃ তাহলে(দুষ্টু হাসি দিয়ে)
হিয়াঃ হ্যা মানে ইয়ে
উজানঃ এই ভরা ক্যাম্পাসে তোমার লজ্জা রাঙা মুখ দেখে সেন্স হারিয়ে পড়ে থাকার কোনো ইচ্ছে আমার আপাতত নেই,,কথা টা পাওনা থাক🥰😌
হিয়াঃ অসভ্য লোক,,ছাড়ুন তো
উজান হিয়াকে ছাড়িয়ে দিয়ে ফুলকলির সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দেয়,,ফুলকলি ফিক করে হেঁসে দিয়ে হাতে থাকা মালা গুলো নিয়ে উঠে বসে,,
উজানঃ দেখি চুপচাপ এখানে বসো
হিয়াঃ কেনো
উজানঃ বসতে বলেছি বসো
হিয়াঃ আআআ অসহ্য লোক একটা,কেনো যে ঘুরেফিরে এই ভার্সিটিতে আমার স্কলারশিপ টা হতে হলো,,আজ বুঝতে পারছি শ্রাবণ কেনো বলে যে বুবুনিইইইই বেশি ভালো রেজাল্ট করতে নেই তাহলে ভবিষ্যৎ এ বিপদে পড়তে হয়,,আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি বিপদ কতো প্রকার ও কি কি
ফুলকলিঃ ভাই কি কি বানাবো
উজানঃ (একবার ফুলকলিকে দেখে নিয়ে) তুই এগুলো যা যা পড়ছিস সব বানাবি,,হাতের মালা গলার মালা কানের দুল সব
ফুলকলিঃ আচ্ছা ভাইজান আপনি আপা কে নিয়ে বসেন আমি চটপট সব বানিয়ে দিচ্ছি
ফুলকলি কমলা রঙের গাঁদাফুল গুলো দিয়ে হিয়ার দু হাতের দুটো মালা,গলার একটা মালা,,,তারপর দু কানে দুটো ফুল দিয়ে দুল বানিয়ে হিয়াকে পড়িয়ে দেয়,,আর কমলা শাড়ি তে কমলা রঙের এই সমাহার হিয়ার স্নিগ্ধতা মাখা সৌন্দর্য টাকে আরো আরো আরো গভীরে মিশিয়ে গোধুলির হেলে পড়া রক্তিম সূর্যের মতোই মাধুর্য এ ভরিয়ে তুলে নিমিষে
উজান চোখ উজার করে হিয়ার এই সৌন্দর্য দেখায় ব্যস্ত,এই মুহুর্তে চক্ষু দয়ের সর্বস্ব দিয়ে সে গিলে খাচ্ছে হিয়াকে🧡ফুলকলির ডাকে হুশ ফিরে তার
ফুলকলিঃ ভাই মাথার জন্য কি একটা মালা বানায় দেবো এমন আমার মতো দেখেন তো
উজানঃ (হিয়ার চুল গুলো কানের পাশে গুঁজে দিয়ে) না থাক খোলা চুলেই বেশি ভালো লাগে নাহলে ঠিক শাঁকচুন্নি শাঁকচুন্নি টাইপ ফিল আসে না বুঝিস না
হিয়াঃ 😡😡
ঝিনুকঃ এবার কি রকম হলো বল তো,,কি মিষ্টি দেখাচ্ছে
হিয়াঃ আমি এসব পড়বো না,,এই ফুল গুলোর দাম এখন কে দিবে
ঝিনুকঃ তোর সবসময় টাকার চিন্তা,,কিছু জিনিসের মূল্য হয় না কবে বুঝবি তুই এ কথা
হিয়াঃ সে যাই হোক কিন্তু আমি এভাবে
উজানঃ আবার দুজনে ফিসফিস শুরু করলে
ঝিনুকঃ (আস্তে)থ্যাংক ইউ ভাইয়া,,আমার রাগ টাকে এতো কিউটলি হ্যান্ডেল করবার জন্য🤗🥰
উজানঃ ওয়েলকাম শালি সাহেবা
হিয়া চোখ পাকিয়ে ঝিনুকের হাত ধরে টানতে টানতে ওখান থেকে বেড়িয়ে পড়ে,সবাই কি রকম তাকিয়ে আছে দেখেই হিয়ার কতো লজ্জা পাচ্ছে,,
ফুলকলিঃ কি ভাই মিললো তো আমার স্বপ্ন টা
উজানঃ (হেঁসে দিয়ে ফুলকলির গাল দুটো টেনে)এই নে এটা রাখ,,এতো সুন্দর স্বপ্ন দেখার জন্য এটা তোর বকশিস
ফুলকলিঃ কিন্তু ভাই আমি তো আপাকে হাজার টাকার ফুল দেই নি তাইলে আপনি আমাকে এতো টাকা ক্যান দিচ্ছেন
উজানঃ ফুলকলি রে ফুলকলি তুই নিজেও জানিস না তুই আমাকে কি দিয়েছিস❤️🧡❤️