#প্রিয়তমা♥️
#writer-সালসাবিল সারা
#সিজন_১
পর্ব -৭
*
*
ঘরে একা একা বোরিং টাইম পাস করছি..!!এক্সাম শেষে এক সপ্তাহ ছুটি পেয়েও বাসায় বসে শোক পালন করতে হচ্ছে..!!মা কে কতবার বললাম একটু ঘুরতে যাবো..!!কিন্তু মা তো নিয়ে যেতেই পারেন না কারণ দাদী অসুস্থ!!!!!দাদীকে একা রেখে যাওয়া জীবনেও ভালো দেখাবে না..! সাদিফ ভাইয়া স্পেনে গিয়েছেন আমার এক্সাম শেষের পরের দিনই!!!কি সুন্দর সব টাইমিং মিলে গেলো!!!!!….একেবারে বরাবর আমার এক্সামের শেষেই!!এর পিছে কোনো রহস্য রহস্য গন্ধ পাচ্ছি.!!
রুমে বসে আছি আর মোবাইলে মেসেঞ্জার ফেসবুক ডাউনলোড করলাম..এক্সামের জন্যে সব আনইনস্টল করে দিয়েছিলাম!!
ওয়াও এতগুলা মেসেজ”স!!!!!সবাই দেখছি আমাকে অনেক মিস করেছে!!.. হিহিহি!!সবার সাথে মোটামুটি কথা বলে নিলাম.!!হঠাৎ মাথায় খেয়াল আসলো সাদিফ ভাইয়ার প্রোফাইলে একটু গিয়ে ঘুরে আসি..!!উনার আইডিতে ঘুরে তেমন কোনো মেয়ের আইডি পেলাম না..!!যে কয় জন আছে মেয়ে ওরা সবাই উনার নাহয় আমার কাজিন আর দু জন হয়ত ফ্রেন্ড!!তবে সাদিফ ভাইয়ার যে মাঝে মাঝে কি হয় আল্লাহ্ ই জানেন..!! উনার মাথায় মনে হয় অনেক সময় ভূতে নাচ দেয় নাহয় উনি কেন আমার সাথে মাঝে মাঝে এতো ভালো বিহেভ করেন???!!তবে উনি যখন আমাকে বকা দেন তখন আমার বেশ কষ্ট লাগে..!!মা ভাই বকলেও আমার ততটা কষ্ট লাগে না!!..আর যখন উনি ভালো বিহেভ করেন আমার সাথে তখন ত অনেক বেশি খুশি লাগে.!!পেটে হাজারো প্রজাপতি উড়ে তখন!!..
কিন্তু সাদিফ ভাইয়ার মুড সুইং কখন হয় টা কেউই বুঝতে পারে না.!তবে লাস্ট এক্সামের দিনে শেষ মুহূর্তের ঘটনাটা আমার খুবই ভালো লেগেছিলো ইনফ্যাক্ট ঐ দিনটা আমার মনের স্মৃতিতে একদম ম্যাগনেটের মত চিপকে গিয়েছে..!! .. সাদিফ ভাইয়াও যে একজন রসিক মনের মানুষ আমি সেদিনই জানলাম!!!..
🌸
মাহির কারণে আমাকে সাদিফ ভাইয়া কি বকাটাই না দিলেন সেদিন.!!কিন্তু অন্য রাস্তাটা দিয়ে যখন নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন মনে হচ্ছিলো উনি আমাকে আজকে শেষই করে দিবেন!!!অনেক ভয়ে কাপা কাপা গলায় সাদিফ ভাইয়া কে ডেকে আস্ক করলাম…
“ভাইয়া কোথায় যাচ্ছি আমরা!!বাসার রাস্তা ত এটা না!
ভাইয়া আমাকে মারবেন না প্লিজ..!!আর কখনো এমন
গাঁধীর মত বসে থাকবো না!!..একদম কঠোর জবাব দিবো সবাইকে..!! আই প্রমিজ”..!!!
উনার কোনো হেলদুল হলো না..!!কিন্তু খুব রাগী গলায়
বললেন..!!
“আমাকে বলছিস কেন এসব.!!মারবো নাকি আদর করবো তোকে সেটা আমার পার্সোনাল ব্যাপার আর আমাকে প্রমিজ বলেও কি লাভ??তুই কোন গোয়ালের গরু আমি জানি!!!..সো এসব ফেক প্রমিজ আমাকে দেখাতে আসবি না…!!একটা তেলাপোকা দেখলে সে কান্না করতে থাকে আর সে নাকি কঠোর জবাব দিবে.!!আর কোনো ছেলে যদি তোর দিকে চোখ তুলেও তাকাই না!!…ঐ দিনই তার এই দুনিয়ায় লাস্ট দিন হবে..!!মাইন্ড ইট”!!.
কথাগুলা বলেই উনি এক হতে ড্রাইভ করছিলেন আর আরেক হাতে উনার চুলগুলো ঠিক করছিলেন.!!একটু
উনার দিকে তাকিয়ে বাইরের দিকে ফিরে বাইরের পরিবেশ দেখছিলাম..!!
ওয়্যাও!!এত্ত সুন্দর এই রাস্তা টা কবে হইলো!!!আসায় ই তো হলো না কখনো..!!মুহূর্তটা এঞ্জয় করছিলাম… কিন্তু সাদিফ ভাইয়ার কথা শুনে আমার চোখ রসগোল্লা হয়ে গেলো!!
“শেফা হিজাবটা খুলে ফেল তো.!মাথায় বাতাস লাগা!!
নাইলে ঐদিনের মতো আবার সেন্সলেস হয়ে যাবি..সেই
সকাল থেকেই তো এটা বেঁধে আছিস”..!!
ওয়্যাহ কি সুন্দর করে বললেন কথাগুলা!!যেনো উনার চেয়ে ভদ্র আর কেউই নেই..!!
“না আমার কোনো অসুবিধা হচ্ছে না হিজাবে.. আই অ্যাম কমপ্লিটলি ওকে.!!
“আবার মুখে মুখে কথা!!গাড়ি থেকে নামিয়ে একদম এই ফাঁকা রাস্তায় রেখে যাবো!!তখন বাসায় আর যেতে
হবে না তোর!! যা বলছি এখনি কর নাহলে…!!!খুল আর্লি হিজাব আর গ্লাসটাও নামিয়ে দে গায়ে প্রাকৃতিক হওয়া লাগা..!!
উনার কথায় অনেক ভয় লাগলো..!!না জানি এই লোক আবার কি করেন!!আর্লি হিজাব খুলে হিজাবের ওরনা টা গলার সাথে ঝুলিয়ে রাখলাম..আর সত্যিই অনেক ভাল্লাগছে এই ঠাণ্ডা বাতাস আর এই লং ড্রাইভ..!!!
শেফালী তো নিজের অবস্থায়ই আছে কিন্তু ওর পাশে বসা মানুষটার দিকে একবারও তাকিয়ে দেখলে হয়ত
দেখতে পেত সাদিফ শেফালীর লম্বা চুলের ঘ্রাণে মত্ত!!!
ড্রাইভিং এর পাশাপাশি সাদিফ বাঁকা চোখে শেফালীর
দিকে তাকাচ্ছে আর তার ফুলটার সাথে এই মুহূর্তটা ফিল করতে ভুললো না!!!
*
*
একটা রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি থামলো আর সাদিফ ভাইয়া আমাকে বললো..!!
“হিজাবটা পড়ে নে আর্লি..!! এরপর আমরা এখানেই লাঞ্চ করে নিবো”..!!
আমি চুলগুলো ঠিক করতে করতে বললাম…”ভাইয়া আমি আয়না দেখা ছাড়া হিজাব পড়তে পারি না”..!!
উনি আমার কথা শুনে আমার এলোমেলো চুলগুলো উনার ডান হাত দিয়ে ঠিক করে দিতে দিতে বললেন..
“উফফ শেফা!!আমাকে এত জ্বালাস কেন তুই!!??কোথায় ভাবলাম এই নিউ রেস্টুতে তোকে নিয়ে আমি ফার্স্ট লাঞ্চটা করবো!!আর তুই কিনা”!!??
“তো আপনি করে নিন না লাঞ্চ!!..আমি এখানে বসে আছি..আর হিজাব ছাড়া আমার অস্বস্থি লাগে বাহিরে যেতে!আর আমার এমনিও ক্ষিধা লাগে নি”!!
“চুপ একদম চুপ.!!তোর এই জীবনে ক্ষিধা লাগবেও না!চুল সেটিং করে হিজাবটা ঠিক ওড়নার মত করে পেঁচিয়ে নে..আমি আসছি”..!!
এটা বলেই উনি রেস্টুরেন্টের ভিতরে চলে গেলেন..!!
কি আর করার আমি উনার কথা মত সব করলাম..!!উনার একটা মোবাইল রাখা আছে সামনের বক্সেই!!..যাক একটু আয়না দেখে নি..!! লক খোলা ছাড়াও ক্যামেরা অন করে দেখে নিলাম..!!না ঠিকই লাগছে কিন্তু চোখটা ফুলে নাক টা লাল হয়ে আছে তখন কান্নার জন্যে…!!
🌸
জানালায় টোকা দিয়ে উনি আমাকে গ্লাস নামতে বলতে লাগলেন…গ্লাস নামিয়ে উনার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি..!!
“লাল টমেটো আমার মোবাইলটা সামনের বক্স থেকে নিয়ে নেমে আয়”..!!আমিও উনার কথা মত কাজ করলাম..!!নেমে আসতে আসতেই উনি উনার আইফোন দিয়ে কার সাথে যেনো কথা বলছেন..!! ওহ উনার তো দুইটা মোবাইল.!!আমি ভুলেই গিয়েছিলাম!! হুঁ.!!!!. বড়লোক মানুষ!!
উনি আমার হাত ধরেই রেস্টুরেন্টের ভিতরে নিয়ে যেতে লাগলেন..!!আমিও আস্তে আস্তে হাটতে লাগলাম উনার পাশে..!!
“স্যার আপনাদের জন্যে পুল সাইডের ঐ দিকেই একটা টেবিল বসিয়ে দিয়েছি..!! নর্থ সাইডে চেষ্টা করেছিলাম বাট ওখানে এখনো কিছু ফিটিংস কমপ্লিট হই নি..!!”
“নো প্রবলেম আতিক..থ্যাংকস..!! কাম শেফা ফুল”!!
“এনজয় স্যার..এনজয় ম্যাম”..!!
সাদিফ ভাইয়া আমার হাত ধরে একা একা পুল সাইডের দিকে চলে গেলেন..!!যেন উনার আগে থেকে সব চেনা..!!
সাদিফ ভাইয়া আর আমি একটা সুন্দর টেবিলে বসে আছি আর আশে পাশে দেখছি..!! অনেক সুন্দর বাট বুঝায় যাচ্ছে এখনো কাজ বাকি..!!
“আচ্ছা সাদিফ ভাইয়া আপনি এই রেস্টুরেন্টে কেন আনলেন!!এখানে তো মানুষই নেই”..!!??
” কেন মানুষ দেখার বেশি শখ?তুই ই তো বললি তোর নাকি অস্বস্তি লাগে!!??ইস্ট সাইডে গিয়ে দেখ মানুষ কে মানুষে খাচ্ছে!!এত ভিড়”!!(খুব রাগী গলায়)
“আপনি কেমনে জানেন এইখানে কোনদিকে কি আছে!!আগে এসেছিলেন”!!?
“আমার রেস্টুরেন্ট আমি আসবো না!!”তবে কখনো খাবার টেস্ট করিনি..!!দেখ কি খাবি”..!??(মেনু দিয়ে)
কি আর করার মেনু দেখে আমার জন্যে শুধু পেস্ট্রি নিতে চেয়েছিলাম..!!কিন্তু উনি আমাকে ধমক দিয়ে নিজেই অর্ডার করে নিলেন!!!
হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানী,মোরগ পোলাও,চিকেন মাসআলা এন্ড নান,পেস্ট্রি আর কোল্ড ড্রিংকস…এত্তগুলা খাবার দেখে আমি শেষ..!!উনি বেশ শান্ত গলায় বললেন …
“নে স্টার্ট কর”..!!আমি নেয়ার আগেই উনি আমাকে বললেন ..”হা কর তো”!!! আমার আজকে অবাকের শেষ হচ্ছে না!!ফার্স্ট উনি আমাকে মারেন নি আর সেকেন্ড আমার খাইয়ে দিচ্ছেন..!!চুপচাপ হা করলাম..উনি স্পুন ছাড়াই আমাকে খাইয়ে দিচ্ছেন আর উনার নিচের ঠোঁট চেপে হাসছেন..!!আবার সে হাতে নিজেও খাচ্ছেন!!
কিছুক্ষণ পরে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করলাম..!!!!!”কি ব্যাপার হাসছেন কেনো?আর খাবো না প্লিজ !!!
উনি এবার বাম হাত দিয়ে আমার গালে হালকা চেপে ধরে খাওয়াতে লাগলেন বিরিয়ানীটা..আমার বমি আসার উপক্রম হলে তখনই উনি আমাকে ছাড় দিলেন!!!..আর একাই নিজে বাকি সব খাবার ফিনিশ করলেন..!!অবাক হলাম না..মনে মনে মাশাল্লাহ বললাম!!কারণ আমি জানি উনি বরাবরই ভোজন রসিক!!!
খাবার শেষ করার পর উনি আমাকে অন্য প্লেসে নিয়ে আসলেন.. ওয়াও!!এই জায়গা টা কবে হলো?!একদম শান্ত আর নীরব!!..অনেক সুন্দর..!! খেয়াল করলাম একটা দোলনা ছিল গাছের সাথে বাঁধা!!.দোলনা আমার উইকনেস!!আমি সাদিফ ভাইয়াকে রেখেই দৌড় দিলাম..!! সাদিফ ভাইয়া ডেকেই চললেন..”লাল টমেটো আস্তে দৌড়া পড়ে যাবি ত..!!আমি আসছি দাড়া বলছি”..!!
উনার কথা কে শুনে আমি আপন মনে এক দৌড়ে দোলনায় এসে বসে গেলাম..!!
উফফ !!এত আরামদায়ক বাতাসে আর ঠাণ্ডা পরিবেশে দোলনায় দোল খাচ্ছি আর চুল খুলে ওড়নাটা গলায় জড়িয়ে নিলাম… আহা!নিজেকে নায়িকা মনে হচ্ছে !!.হাহাহা..!! সাদিফ ভাইয়া এসে আমার পাশে দাড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়েই থাকলেন..!!
আমি তো আমার মতই আছি..!!সাডেনলি বৃষ্টি চলে আসে আর আমি উঠে উনাকে বলি..”ভাইয়া চলেন বৃষ্টির বেগ বেড়ে যাচ্ছে”!!কিন্তু উনার কোনো রেসপন্স পেলাম না আমার দিকে স্থিরভাবে তাকিয়ে আছেন..!!বৃষ্টিতে আমি প্রায় ভিজে যাচ্ছি আর তখনই কাশি আসতে স্টার্ট করলো..!!এবার উনার হুশ হলো..!! উনি আর্লি উনার কোট টা আমার মাথার উপর দিয়ে দিলেন.!!আর আমার হাত ধরে দৌড়াতে দৌড়াতে বলতে লাগলেন..”দৌড়াও ফুল!!এই জীবন থেমে নেই ফুল..!!!দৌড়াও”…!!
আর আমি!! এই মুহূর্তটা জাস্ট ফিল করছি আর খিল খিল করে হাসছি..!!গাড়ি অনেকটা দূরেই..!!আরো অনেক পথ বাকি..!!হঠাৎ আমাকে উনি কোলে তুলে নিলেন আর বললেন..
“ফুল প্লিজ কোটটা মাথার উপর ভালো করে ধরো যেন মাথায় পানি না লাগে নাহয় জ্বর উঠবে”..!!
আমি এমন ভাবে ধরলাম কোট টা যেন আমরা দুজনই কভার হই!! উনি একবার আমাকে হালকা উঁচুতে উঠিয়ে টুপ করে একটা কপালে একটা চুমু দিলেন..আর আমি!!আমার তো গায়ে যেনো কেউ কারেন্ট দিয়ে শক দিলো..!!!!উনার কাণ্ডে আমি জমে গিয়েছিলাম…!! ভয় আর লজ্জায় উনার বুকের ভিতরে ঢুকে গেলাম”!!!এই ফিলিংস টা একদম অন্যরকম..!!!
মনে মনে ভাবতে লাগলাম উনার মত পাথরও দেখি আনন্দ করতে জানে!!!
🌸
উফফ!!সেইদিন টা আমার জীবনের অন্যতম ভালো দিন হিসেবে সেভ থাকবে..!! সেই যে উনাকে দেখলাম আর দেখিনি তবে আমি রাফসান ভাইয়া মানে আমার বড় ভাইয়ার সাথে ভিডিও কলে কথা বলার সময় উনি এসে এসে উকি মেরে যান!!!কি হাস্যকর!! এমনি নরমালি কথা বললে কি এমন হয়!!!
এভাবেই দিন যাচ্ছিলো একদম পানসা..আর মাত্র তিনদিন বাকি আছে ছুটি শেষ হওয়ার..!!তাই মা ভাবলেন পরশুদিন বাবার জন্যে কুরআন খতম পড়াবেন আর ক্লোজ আত্মীয়দের দাওয়াত দিবেন..!!বড়ভাইয়া রাতে ফোন করলে মা ভাইয়া কে বললেন..
“হ্যাঁ রে রাফসান তোর বাবার জন্যে পরশু রাতে একটা খতম পড়াবো ভাবছি আর চাচার,খালার,মামার,ফুফুর ফ্যামিলিকে দাওয়াত দিব… তা তোরা কেমন আছিস আর ঐ রাগী মানুষটা কই..!! সাদিফ বাবা কখন ফিরবে!!??তোর তো আসতে আরো ক’মাস খানেক আছে..!!মিস করছি তোদের.”.!!
“ঠিকাছে মা আমি টাকা পাঠাচ্ছি আজকেই..!!আর আমরা ভালো আছি অনেক!! আলহামদুলিল্লাহ্…..!! সাদিফ আছে আমার পাশেই..কাজ করছে.!! সব শুনছেন উনি…আর ওর আসতে আরো দুই সপ্তাহ লাগবে!! ছোটফুলটা কই মা”!!!?আর দাদীই বা কই??
“ভাইয়া আমি আছি পাশেই সব শুনছি.!কাপড় আয়রন করছি..!!তোমরা ঐখানে বসে থাকো আর আমি মা খালা আপু আমরাই সব কাজ করবো!!?? এসে যাও না তোমরা”..!!আর দাদী ঘুম..!!
আমার কথার মাঝে মা বলে উঠলেন…
“আরে শেফা ভালো কথা আমার মোবাইল থেকে তোর বাপ্পি ভাইয়া কে কল দিয়ে বলে রাখ.. ভালো একটা ছাগল কিনতে হবে তাকে..!! আসতে বল কাল..!!”
আমি কিছু বলার আগেই সাদিফ ভাইয়ার আওয়াজ শুনলাম..কিন্তু উনাকে দেখতে পারছি না হয়ত পাশ থেকেই বলছেন…”খালামণি ও বলবে না কোনো ছেলের সাথে কথা আই মিন ও ছোট মানুষ কি বলতে কি বলে ফেলে তাই একেবারে তুমিই বলে ফেলো”..!!!
উনার কথা শুনে অনেক রাগ লাগলো মা ভাইয়ার সামনেও অপমান!!!!হাহ জল্লাদ…!!
কল তখনো কাটেনি আমি মা কে বললাম..মা সব ভাইবোন অনেকদিন পরে মিট করবো তাই না!!সবাই কত মডার্ন হয়ে গেছে এখন..!! হাহ গত বছর দেখেছিলাম সবাইকে ইদে আর দেখাই হলো না..!! খালামণি আর মামারা ছাড়া কেউ তো আসেনা আমাদের এখানে দাওয়াত ছাড়া..!!বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে চাচা ফুফি আমাদেরকে দেখতেই পারে না…এসব বলতেই কান্না চলে আসছে আর মা আমাকে বুকে নিয়ে কপালে চুমু দিলেন!!!
ল্যাপটপে তাকিয়ে দেখলাম..ভাইয়া চোখ মুছছে আর সাদিফ ভাইয়া তাকিয়ে আছেন আমাদের দিকে..!!!!এতক্ষণে উনাকে দেখলাম!!!আর উনি ভ্রু কুচকে রাগী ভাবে তাকিয়ে আছেন যেন সামনে পেলেই চড় দিয়ে গাল লাল করে ফেলবেন..!!
*
*
অনেক কাজ পড়ে আছে খালামণি আপুরা আজ সকালেই চলে এসেছেন..আর খালু কসায়ের সাথে সাথেই আছেন…!!বাসায় মেহমান সব রাতে আসবেন.. মামিরা আসবে সন্ধ্যায়…তাই আমি আর আপুরা দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুম দিলাম আমার রুমে আর মা আর খালা ভাইয়ার রুমে ঘুমাচ্ছে..!!
মোবাইলে কল আসাতে আমার ঘুম ভেংগে গেলো..!!উফফ রবি অফিসের কল..!!অসহ্যকর..!!
কলিং বেলের আওয়াজ শুনে ওড়নাটা মাথায় দিয়ে দরজা খুলতে চলে গেলাম..কারণ মা আর খালা ওষুধ খেয়ে ঘুম… বিকালের আগে উঠবেন না..!!!
দরজা খুলে দেখলাম..!! সাদিফ ভাইয়া..!!উনার পাশে উনার লাগেজ, ব্যাগ সবই আছে..!!!দেখেই বুঝা যাচ্ছে উনি অনেক টায়ার্ড আর কেমন জানি ক্ষেপে আছেন.!!
কিন্তু আমার তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে..!! সাদিফ ভাই এখানে কেমনে!!??
দু হাতে চোখ কচলিয়ে নিলাম ভালো করে..এটা কি সম্ভব..!!আরে হ্যাঁ এটা ত সাদিফ ভাইয়া!!!
স্পেন থেকে বাংলাদেশ আসতে সাড়ে সতেরো ঘণ্টা লাগে ..!!!
তাহলে উনি কখন রওনা দিলেন!!??!?যেদিন কথা বলেছিলাম উনাদের সাথে সেদিনই নাকি??
চলবে…♥️
কেমন হয়েছে গল্প অবশ্যই জানাবেন আমাকে কমেন্টস করে…হ্যাপি রিডিং ♥️