বিষাক্তময় আসক্তি – বোনাস পর্ব

0
1119

#বিষাক্তময়_আসক্তি (The Villain 😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#বোনাস_পর্ব…….💐

“নামাজ শেষে আয়ানা ইরফানের দিকে তাকাতে দেখতে পেলো ইরফান মোনাজাতে বসে আছে।।আয়ানা একদৃষ্টিতে সেই সুন্দর দৃশ্য দেখতে লাগলো।।ইরফানকে খুব পবিত্র লাগছে।কে বলবে এই লোক মাডার করে ভেবে আয়ানা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে পুনরায় ইরফানের দিকে তাকালো।। খুব সুন্দর ভাবে দুজনে নামাজ সম্পূর্ণ করে সেখান থেকে চলে আসলো।। আসেপাশে অনেকক্ষণ ঘুরে ইরফান আয়ানা মাজার থেকে বের হবে এমন সময় তামজিদা এসে ওদের বিদায় জানালো।।যাওয়ার আগে আয়ানার হাতে একটি সুগন্ধি আতর তুলে দিলো আর বললো,,,
__বিয়েতে দোলহানদের পুরষ্কার করতে হয়! যেহেতু বিয়েতে দিতে পারিনি এখন দিয়ে দিলাম।।এটা ব্যবহার করবে কেমন বলে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।।
ইরফান আয়ানা তাঁর থেকে বিদায় নিয়ে নিচে নেমে আসে।। নিচে নামার সময় আয়ানা নিজে নামতে চাওয়াতে ইরফান ধমক দিয়ে বললো,,
— আঁকা বাঁকা রাস্তায় দৌড়াচ্ছো কেনো পরে গিয়ে ব্যথা পাবার ধান্দা।এসব শিড়িতে চলাচল রিস্ক বলে আয়ানাকে কোলে তুলে নিয়ে হাঁটা শুরু করে।।আয়ানা বেচারি নাক ফুলিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে।। তাঁর শিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে ভালো লাগে না কিন্তু তা দিয়ে দৌড়ে নিচে নামতে অনেক ভালো লাগে! কিন্তু এই এরোগেন্ট ম্যান এটাও ব্যস্তে দিলো খবিশ একটা।।। ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে হাঁটতে হাঁটতে বললো,,,,,,,,,,

—- আয়ু তুমি দিন দিন শুঁটকি মাছের মতো হয়ে যাচ্ছো আজকে থেকে আবার তোমার খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে! এতো পাতলা হলে চলে পরে অসুস্থ হয়ে যাবে।।।
—- না না না !এর চেয়ে বেশী খেলে আমি রাদিফা আন্টির মতো গোলোমোলো হয়ে যাবো। তারপর হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হবে সারা বছর। ঠোঁট উল্টিয়ে বললো।।
—-কে বলেছে বেশি খেলে মোটা হয়!ভ্রু কুঁচকে।‌
—-তো নয়তো কী?খেলেই তো মোটা হয়। মাথা নিচু করে।।।
—-খেলে শক্তিশালী হয় অসুস্থ হয় না।।মোটা হয় এই লজিক তোমাকে কে দিয়েছে।।।
—তুতুল দি মন খারাপ করে বলে আয়ানা।।।
—তোমার দি মিথ্যা বলেছে!সে খেতে পারে না বলে।আর রাদিফা আন্টি কে?ভ্রু নাচিয়ে।।
—-আম্মির ফ্রেন্ড, আমাদের পাশের বিল্ডিংয়ে থাকেন! খুব মোটা আমার একদম ভালো লাগে না।।মুখ বাঁকিয়ে।।‌
—-কেনো?ভ্রু নাচিয়ে
—-কজ ওনি সবসময় আমাকে খাবারের জন্য টর্চার করে! বাসায় আসলে আম্মি কে বলে বেশি বেশি খেতে জোর করে।।আমার রুমে আসলে আমার সব চকলেট নিয়ে যায়।।আর বলে আয়ু বেবি এসব খেও না দাঁতে পোকা হবে।মুখ ভেংগিয়ে বললো আয়ানা।।।
আয়ানার কথা বলার ভঙ্গি দেখে ইরফান হাঁটা থামিয়ে হুহুহুহা করে শরীর কাঁপিয়ে হাসতে লাগলো তাঁর সাথে দুল খেয়ে আয়ানার শরীর ও কেঁপে উঠছে।।আয়ানা হা করে ইরফানের হাসির দিকে তাকিয়ে আছে।। অসাধারণ লাগে যখন ইরফান হাসে। কিন্তু এই ভিলেন তো হাসেই না।।আয়ানাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইরফান মৃদু হেসে আবার পুনরায় হাঁটতে লাগলো।। হঠাৎ ইরফান হাঁটা থামিয়ে দিয়ে আয়ানার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললো,,,
—-তোমাকে ওই রাদিফা আন্টি আয়ু বলে ডাকতো। দাঁত চেপে।।
আয়ানা মাথা নিচু করে আস্তে করে বললো,
—-জ্বী!
—- পরবর্তীতে কখনো দেখা হলে এই নামে ডাকতে নিষেধ করবে। আমি নিষেধ করে দিবো বলে সোজা হয়ে হাঁটতে শুরু করল।।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা ঢোক গিলে সম্মতি জানালো।।।সে জানে এই নামে ইরফান ছাড়া কেউ ডাকলে সে ক্ষেপে যায় কিন্তু মোখ ফসকে বের হয়ে গেছে ভেবে আয়ানা জিভে হাল্কা কামড় খায়।।
আয়ানা ইরফান টুকটাক কথা বলতে বলতে নিচে নেমে আসে।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।

“ইরফান নিচে নেমে আয়ানাকে আস্তে করে নামিয়ে দিলো।।।আয়ানা ইরফানের পাশে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আশেপাশে দেখতে লাগলো।। তাঁদের থেকে কিছু দূরে অনেক গুলো স্টল রয়েছে খাবারের আরো অনেক কিছুর।।।আয়ানা দেখতে পেলো একটা স্টলে গরম গরম জিলেপি ভাজা হচ্ছে তা দেখে আয়ানার জিভে জল এসে গেছে।।আয়ানা ইরফানের দিকে তাকাতে দেখলো সে গাড়ির দরজার সাথে হেলান দিয়ে আয়ানার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।।।আয়ানা মাথা নিচু করে উরনার কোণায় আঙ্গুল পেছাচ্ছে আর খুলছে।।তা দেখে ইরফান বাঁকা হেসে বলতে লাগলো,,,

—-মেরি জান তুমি কী কিছু বলতে চাও?ভ্রু নাচিয়ে দুষ্ট হেসে।।
—-না মানে আমি—কিছু বলবো না। মাথা নিচু করে ঠোঁট উল্টিয়ে!
ইরফান আয়ানার কথায় হেসে আয়ানার হাত ধরে সামনে স্টলের দিকে পা বাড়ালো।।জিলেপির স্টলের সামনে এসে আয়ানার হাত ছেড়ে দিয়ে জিলেপির স্টলের মালিককে চোখ দিয়ে ইশারা করতে সে মাথা নেড়ে আয়ানার সামনে একটি শক্ত কাগজের বানানো থলিতে এক থলি জিলেপি দিলো তা নিয়ে আয়ানা ইরফানের দিকে একবার তাকিয়ে খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।।ইরফান মুচকি হেসে আয়ানার দিকে তাকিয়ে আছে।।আয়ানা সারা মুখে লাগিয়ে জিলেপি খাচ্ছে। একদম বাচ্চাদের মতো করে সারা মুখ হাত জিলেপির রস দিয়ে মাখামাখি করে ফেলেছে,তা দেখে ইরফান আয়ানার হাত থেকে জিলেপির থলি নিয়ে আয়ানার হাত ধরে গাড়ির ভেতরে নিয়ে গেলো।।

__আয়ানা গাড়ির ভেতরে বসে আছে আর ইরফান টিস্যু দিয়ে আয়ানার মুখ হাত মুছতে ব্যস্ত।। ইরফান আয়ানার হাত মুছে দিতে দিতে বললো,,,
—-নিজে নিজে খেতে পারবে না জেনে ও কেনো নিজে নিজে খেতে গেলে।(শান্ত গলায়)
—- আ-আমি খেতে পারছিলাম তো!নিচু স্বরে
—-তা খুব দেখতে পেয়েছি।।এবার খুশি তো নিজের হাতে খেয়ে। পরবর্তীতে আর পারবে না।বলে প্যাকেট থেকে জিলেপি বের করে আয়ানাকে খাওয়াতে লাগলো।।আয়ানা ও লক্ষি মেয়ের মতো করে খেতে লাগলো।।।আয়ানা নিজের হাতে না খেতে খেতে সত্যি নিজের হাতে খেতে ভুলে গেছে।। ইরফান আয়ানাকে খাইয়ে দিয়ে আশেপাশে ঘুরে নিজেদের বাগান বাড়িতে চলে আসে আসার সময় আয়ানার জন্য অনেকগুলো চকলেট নিয়ে আসে।।।।।

“ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং মোবাইলের আওয়াজে ইরফান সেন্টার টেবিলের উপর থেকে মোবাইলটা তুলে নিলো।আয়ানা ওয়াশরুমে শাওয়ার নিতে গেছে।। ইরফান মোবাইলটা কানে নিতে অপরপাশ থেকে একজন বলে উঠলো,,,
—-সালাম স্যার।
—–হুম!কী খবর।
—– স্যার লাশটার কী করবো?
—–অনেক দিন যাবত সার্ক তাজা রক্ত পান করেনি!কতো দিন ধরে তাজা শরীর ও খায়নি।তাই এই স্পেশাল পশুটাকে সার্কের রাতের ডিনারে দিবে বলে বাঁকা হেসে মোবাইলটা কেটে দিলো (তাজা পশু মানে নিজাম উদ্দিন কে মিন করে বলেছে)। পেছনে তাকিয়ে দেখলো আয়ানা ভিতু চোখে তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে।তা দেখে ইরফান মুচকি হেসে আয়ানার সামনে গিয়ে আয়ানার কোমর পেঁচিয়ে আয়ানার খুব কাছে গিয়ে বলতে লাগলো,,,,

—- এইভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে না দেখে সামনাসামনি তাকাও।আই নো আমি খুব হ্যান্ডসাম ডেশিং কুল তাকালে চোখ ফেরাতে পারো না বলে দুষ্ট হেসে আয়ানার কানের লতিতে হাল্কা চুমু খেলো।।
আয়ানা চোখ বন্ধ করে ইরফানের হাত শক্ত করে ধরে ঢোক গিললো।। ইরফান আরেকটু কাছে এসে বললো,,,,
—-তুমি কী জানো মেরি জান যখন তুমি ভয় পেয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে রাখো তখন তোমাকে কতোটা কিউট লাগে ইচ্ছে করে তুমি পুরোটায় খেয়ে ফেলি বলে গালে চুমু দিয়ে আয়ানাকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানা বসিয়ে দেয়।।‌আয়ানার হাতের হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকাতে শুকাতে বললো কাল রাতে আমরা বাড়িতে ব্যাক করবো। কিছু প্রয়োজনীয় কাজ আছে নিলাম বেলীতে।।।আয়ানা আস্তে করে বললো,,
—-তখন আপনি কাকে ডিনার করার কথা বলছিলেন ঢোক গিলে।।‌
ইরফান ভ্রু কুঁচকে বাঁকা হেসে বললো,,
—-আমার পালিত পশু তুমি দেখেছিলে আয়ু।ওর জন্য আজকে বাহিরের থেকে একটা পশু শিকার করেছি ওইটার কথাই বলেছি কেনো তোমার কী চাই ভ্রু নাচিয়ে।।‌
—-ছিইইইইইই না।নাক ছিটকে।।সেই কী ওই হিংস্র পশু নাকি পশু খাবে ছি।আয়ানা নাক ছিটকে মুখ কাচুমাচু করছে।।। ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে আয়ানার কোমর জড়িয়ে কপালে চুমু খেলো।।।‌

_______________________________

ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে তুতুল।। হাতে আয়ানা আর তাঁর কিছু ছবি।। এতোক্ষণ যাবত সে তাদের আগের ছবিগুলো দেখছিলো।।‌কতো দিন দেখে না তাঁর পিচ্চি বোনটাকে।।। হঠাৎ মোবাইলের আওয়াজে তুতুল মোবাইলের দিকে তাকালো মোবাইলে বড় বড় করে লিখা মাই লাভ এটা দেখে মৃদু হেসে মোবাইলটা রিসিভ করে কানে ধরলো তুতুল তখন ওইপাশ থেকে খুব সুন্দর একটা পুরুষের গলা ভেসে আসলো,,,

—-কেমন আছো মাই লাভ?
—–হুম ভালো তুমি! ধিরে গলায় বললো।।
—-মন খারাপ।আয়ানাকে মিস্ করছো।।।
—-হুম অনেক। কাঁপা গলায়।।
—-তুমি কী কান্না করছো মাই লাভ।দেখো এমন করলে কিন্তু আমি এখনি ক্যাম্প থেকে চলে আসবো।।
—-ওহু আমি ঠিক আছি।।আয়ানার কথা খুব মনে পরছিলো।।।
—-ডোন্ট ওয়ারি মাই লাভ আয়ানা ওখানে ভালো আছে।এটা ওর কিসমত।।ও ওখানে খুবই ভালো থাকবে।। কিন্তু তুমি যদি এইভাবে মন খারাপ করো ও জানতে পারলে কী ভালো লাগবে।আয়ানা যদি জানে তাহলে সে খুব কষ্ট পাবে।তাই একদম মন খারাপ করবে না কেমন।।।‌‌
—-হুম। কিন্তু আকাশ আমি কখনো ভাবিনি আয়ানা আমাদের থেকে এতো দূরে থাকবে।‌ও ওখানে——-
—-আয়ানা ভালো আছে। তুতুলের কথা শেষ হওয়ার আগে বললো।।আমরা যা ভাবি তা সবসময় এক হয় না।আর আয়ানা ঠিক পারবে মানিয়ে নিতে।।‌এখন বলোতো আজকে কতো তারিখ।।।
—-কেনো নয় তারিখ।ক্যাম্প করে কী সব ভুলে গেলে। মজা করে বললো।।
—-জ্বী না ম্যাম।আপনি কী ভুলে গেছেন। অসহায় গলায়।।
—-মনে রাখার মতো তো কিছু মনে নেই জনাব বলে মুখ চেপে হাসলো।।।।‌
—–তুতুল তুমি সত্যি ভুলে গেছো 😒।
আকাশের কথা শুনে তুতুল হুহাহুহা করে জোরে হেসে উঠলো।তা শুনে আকাশ মেকি রেগে বললো
—-তুমি মজা করছিলে মাই লাভ।।‌
—-হুম বলে আবার হাসতে লাগলো।তা শুনে আকাশ রেগে বললো,,,
—-ওকে তুমি হাসতে থাকো আমি রাখছি বলে কেটে দিতে নিলে তুতুল তাড়াতাড়ি করে বললো,
—-স্যরি স্যরি স্যরি মিস্টার মেজর আমার ভুল হয়ে গেছে আর পরবর্তীতে এমন ভুল হবে না বলে মৃদু হাসলো।।‌
—-ওকে আপনাকে মাপ করা হলো বলে আকাশ জোরে হাসতে লাগলো তা শুনে তুতুল ও মুচকি হাসলো।।।বেশ কিছুক্ষণ কথা বলার পর আকাশ কল কেটে দিতে তুতুল লাজুক হেসে মোবাইল থেকে নজর সরিয়ে নিচে চলে গেলো।।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।

“আকাশের ক্যাম্পিং শেষ আর চার দিন পর সে ঢাকায় ব্যাক করবে।।তারপর তুতুল আর আকাশের আবার পুনরায় ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া হবে।।।(যারা আকাশের ঘটনা বুঝতে পারেনি তাঁরা পর্ব দুই পরে নিবেন)

“সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আয়ানা আশেপাশে ইরফান কে খুঁজে নিলো। আশেপাশে কোথাও ইরফান নেই। আজকে ও তাঁর ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে। ইরফান নিশ্চয়ই নিচে বাগানে গিয়েছে।।আয়ানা তারাতাড়ি করে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে উরনা ঠিক করে বাগানে যাওয়ার জন্য ছুট লাগালো।‌শিড়ি বেয়ে নিচে নামতে একজন র্সাভেন্ট তাকে নিয়ে বাগানের দিকে যায়।। বাগানের সুইমিং পুলের দিকে মুখ করে ইরফান কারোর সাথে কথা বলছে।।আয়ানা ইরফানের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।। ইরফান মোবাইলে কথা বলে আয়ানাকে নিয়ে নাস্তা করতে লাগলো।।। ইরফান আয়ানাকে খাইয়ে দিচ্ছে।
আর আয়ানা ও লক্ষি মেয়ের মতো খাবার কমপ্লিট করছে।। ইরফান আয়ানার মুখে টুস দিতে দিতে বললো,,,,

—-মামুনী(শীতল)কল করেছিলো।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা খাবার মুখে নেওয়ার অবস্থায় তাঁর দিকে তাকালো।।‌ইরফান আয়ানার দিকে গম্ভীর ভাবে তাকিয়ে থমথমে গলায় বললো,,
—-আকাশের সাথে তুতুলের বিয়ে দিবে তোমাকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছিলো দুধের গ্লাস আয়ানার দিকে বাড়িয়ে দিলো।।আয়ানা চোখ বন্ধ করে এক নিঃশ্বাসে সম্পূর্ণ গ্লাস শেষ করে পাশের পানির গ্লাস থেকে পানি খেয়ে জোরে জোরে শ্বাস ফেলে ইরফানের দিকে তাকালো।।এই দুধ খাওয়ানোর টর্চার তাঁর আর ভালো লাগছে না।।
—-আমরা বিয়ের তিন দিন আগে যাবো আর বিয়ের কাজ শেষ হলে চলে আসবো।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানার মনটা খারাপ হয়ে গেলো মাত্র এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশে যাবে।। কিন্তু সে ভেবেছিলো ইরফান যেতে চাইবে না কিন্তু না সে তাঁকে নিয়ে যাবে এটাই অনেক।।কতো দিন আব্বি আম্মি দি কে দেখেনা।।।‌
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা খুশি মনে মাথা নাড়িয়ে সায় জানায় ‌ইরফান মুচকি হেসে আয়ানার ঠোঁট মুছে দিয়ে এতে হালকা স্পর্শ দিয়ে ছেড়ে দেয়।।‌ইরফানের মোবাইলে কল আসতে ইরফান আয়ানার কপালে চুমু খেয়ে একজন মেয়ে র্সাভেন্টকে দিয়ে বাড়ির ভেতরে পাঠিয়ে দেয়।।।আয়ানা ভেতরে চলে যেতে ইরফান মোবাইলটা রিসিভ করে বললো,,,
—-আমি আসছি। বলে টুট করে মোবাইলটা কেটে দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জ্যাকেটের চেইন লাগিয়ে প্যান্টের পকেটে হাত রেখে বাগানের পেছন সাইটে চলে যায়।।।

—-হাতে চকলেট নিয়ে খাচ্ছে আয়ানা।। সামনে দেয়ালে বড় টিভিতে চলছে টম অ্যান্ড জেরি কার্টুন।।আয়ানা বিছানার সাথে হেলান দিয়ে চকলেট খাচ্ছে আর কার্টুন দেখে হিহি করে বাচ্চাদের মতো করে হাসছে ‌‌।।।এই কার্টুন তাঁর খুব পছন্দের।। বিভিন্ন ধরনের কার্টুন মুভি দেখতে সে পছন্দ করে।।আরো একটা জিনিস পছন্দ করে তা পরে জানতে পারবেন।।।।
আয়ানা আস্তো বড় চকলেট টা সাবার করে উঠে ডয়ার থেকে নতুন চকলেট নামাতে গেলে বারান্দার দরজার দিকে নজর যায়।।একটা পাখি বসে আছে রেলিংয়ে ।এটা একটি অতিথি পাখি ।।সাদা আর হলুদ কালারের পাখিটা দেখে তাঁর ইনো পিনোর কথা মনে পড়ে গেছে।।কী করছে এখন ইনো পিনো নিশ্চয়ই তাকে খুব মিস্ করছে।আয়ানা ধীরে ধীরে পাখিটার কাছে গিয়ে ধরতে যাবে তাঁর আগেই পাখিটা ফুড়ুৎ।।আয়ানা মন খারাপ করে রুমে চলে আসতে যাবে তখন দেখতে পেলো গার্ডরা গোল হয়ে একটা লোক কে স্টিক দিয়ে খুব মারছে তা দেখে আয়ানা ভয় পেয়ে রেলিংয়ের সাথে চেপে দাঁড়িয়ে পরলো।।ঢোক গিলে চোখ বড় বড় করে ভালো করে দেখে দেখতে পেলো ইরফান একটা চেয়ারে উপর পায়ের উপর পা তুলে আয়েস করে বসে আছে।।তা দেখে বুঝতে বাকি নেই এই কাজ করতে ইরফান ওয়াডার করেছে তাদের।। লোকটি প্রায় আধমরা হয়ে যেতে ইরফান হাত দিয়ে ইশারা করে সকলকে থামতে বলে।‌ইরফানের আদেশ পেয়ে সকলে থেমে যায়।।সকলে সরে যেতে আয়ানা ভালোভাবে লোকটিকে দেখতে পেলো লোকটিকে দেখে ভয়ে আয়ানার শরীর জমে যায়।।
লোকটি কে খুব মারার ফলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছিরে রক্ত বের হচ্ছে।তা দেখে আয়ানা ভয়ে মাথায় বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে।‌। ইরফান নিজের হাতে বন্দুক নিয়ে লোকটির দিকে তাক করতে ভয়ে আয়ানা মুখ চেপে ধরে।।। ইরফান ট্রিগারে চাপ দিতে যাবে একজন বৃদ্ধা লোক এসে ইরফানের পায়ের কাছে বসে হাত জোড় করে কিছু বলতে লাগলো যা আয়ানা শুনতে পায়নি।।‌কিন্তু লোকটির কথা শুনে ইরফান লোকটিকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে কিছু বলে রক্তাত লোকটিকে ছেড়ে দেয় এবং গার্ড কে বলে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিতে বললেন।।‌আয়ানা বৃদ্ধা লোকটির দিকে তাকিয়ে দেখলো এটা ওই দিনের সেই বৃদ্ধা যে ইরফানের হাত জরিয়ে কান্না করছিলো।।ওই দিন ইরফান লোকটির সাথে খুব ভালো ব্যবহার করেছে আজকে ও লোকটির কথা শুনে বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে রক্তাত লোকটিকে ছেড়ে দেয় এবং কিছু টাকাও দেয় বৃদ্ধা কে।।আয়ানা বুঝতে পারছে না এই বৃদ্ধার সাথে ইরফানের কি সম্পর্ক।।‌আয়ানা এক হাত দিয়ে কপালের ঘাম মুছে ঢোক গিলে ভেতরে চলে যায়।।আর বিরবির করতে করতে বলে,,,,

—-কী ভয়ংকর ভিলেনরে বাবা।।‌একটুর জন্য মেরেই ফেলছিলো।।।।
ইরফান নিচের কাজ শেষ করে সোজা উপরে চলে আসে। রুমে এসে দরজা আটকিয়ে আয়ানার কাছে এসে দেখতে পায় আয়ানা তাকে দেখে ভয়ে
জরোসরো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তা দেখে ইরফান ভ্রু কুঁচকে আয়ানার দিকে এগিয়ে যেতে নিলে আয়ানা ভয়ে আরো দু কদম পিছিয়ে যায় তা দেখে ইরফান রাগি গলায় বললো,,,,

—-কী হয়েছে? এমনভাবে রিয়েক্ট করছো কেনো। কাছে আসো ফার্স্ট।হাত দিয়ে ইশারা করে।।‌
আয়ানা ইরফানের কথা শুনে মাথা নাড়িয়ে না জানায় সে আসবে না।।তা দেখে ইরফান থমথমে গলায় বললো,,,
—-কী হয়েছে আয়ু এমন করছো কেনো। কাছে আসবে নাকি আমি অন্য ভাবে আনবো।।। তাহলে কিন্তু খুব খারাপ হবে।।‌‌
—-আপনি একটা খুনি। আপনি মাডার করেছেন। কাঁপা কাঁপা গলায়।।।‌





#To_be_continued………🌼
#happy_reading…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here