#বিষাক্তময়_আসক্তি (The Villain 😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#পর্ব_৪১………….🌼
“খয়েরী রঙের লেহেঙ্গার সাথে খুব ভারি ভারি জুয়েলারি পরেছে আয়ানা ঠোঁটে লাগিয়েছে লাল খয়েরী রঙের গারো লিপস্টিক । সবসময়ের মতো মুখে কোনো প্রসাধনী ব্যবহার না করলেও দেখে মনে হচ্ছে খুব গর্জিয়াস ভাবে সেজেছে সে।দুই পায়ে কিছুক্ষণ আগে ইরফান আলতা দিয়ে দিয়েছে।সাদা ধবধবে পায়ে আলতা দেওয়ায় অপরুপ সুন্দর লাগছে পা দুটো।। ইরফান খুব সুন্দর করে নিখুঁত ভাবে পায়ে আলতা দিয়ে দিয়েছে, অবশ্যই এটা তাঁর দ্বারা কাম্য নয় তবুও নিজের বৌয়ের প্রতি ভালোবাসা তাই ইউটিউব দেখে অনেক সময় নিয়ে আলতা লাগিয়েছে কোন পরিমাণ ত্রুটি ধরা যাবে না এতো সুন্দর এবং নিখুঁত ভাবে দিয়েছে।।।আয়ানা শুধু হা করে ইরফানের প্রত্যেক কার্যক্রম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখেছে কতোটা মাধুর্য নিয়ে প্রত্যেকটা কাজ করছে ইরফান।। ইউটিউব দেখে আজ পর্যন্ত কোনো কাজ সে একই রকম করতে পারেনি দেখেছে এক বানিয়ে ফেলেছে আরেক।।পায়ে সুন্দর ভাবে আলতা দিয়ে এক জোড়া নূপুর পড়িয়ে দিলো মাথার চুল গুলো খোঁপা করে সম্পূর্ণ চুলে গাজরা ফুল লাগিয়ে দিয়েছে।। সম্পূর্ণ সাজ কমপ্লিট করে ইম্প্রটেনট কল এ্যটেন্ট করতে গিয়েছে ইরফান।আয়ানা মিররের সামনে নিজেকে দেখে মৃদু হাসলো, তাকে এই সাজে একদম বৌ বৌ লাগছে গহনার বক্স থেকে ডায়মন্ডের নজপিন পরে নিলো,হাতে বাকি চুড়ি গুলোর সাথে মোটা মোটা দুটো বালা পরে নিলো মিররের দিকে নিজের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলো মিররের দিকে ঠিক ভাবে তাকাতে দেখতে পেলো ইরফান দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে ঘার বাঁকা করে তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে চোখে তাঁর ঘোর লাগানো নেশা ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি। ইরফানের এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে আয়ানা।।
লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।। ইরফান ধীরে পায়ে আয়ানার দিকে এগিয়ে এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঘারে থুতনি রেখে মিররে নিজেদের প্রতিছবির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে উঠলো,,
—আমার লাল টুকটুকে বউ! খুব ভালোবাসি তাকে।।
ইরফানের কথায় আয়ানা লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে,ইরফান আলতো হাতে আয়ানার থুতনিতে রেখে সোজা করে মিররের দিকে তাকিয়ে হেসে বললো,
একদম পরীর মতো লাগছে তোমায় মেরি জান একদম চোখ ধাঁধানো সুন্দর লাগছে বলে টুপ করে আয়ানার গালে চুমু খেয়ে আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।লজ্জায় মাথা নিচু করে রেখেছে আয়ানা। ইরফান মিররের দিকে তাকিয়ে আয়ানার ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানো দেখে আয়ানাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে আয়ানার থুতনিতে হাত রেখে শান্ত গলায় জিজ্ঞাসা করলো,,,
—- ঠোঁটে লিপস্টিক কেনো লাগিয়েছ আয়ু! তুমি জানো না আমার তোমার ন্যাচারেল চকলেট কালারের ঠোঁট দুটো ভালো লাগে এসব রঙ লাগানোর মানে কি? এসব আমার একদম পছন্দ না!
—-এই গুলো রঙ না এগুলো লিপস্টিক আর আপনিতো নিজেই আনিয়ে দিয়েছেন এতো গুলো তাহলে লাগাবো না কেনো?গাল ফুলিয়ে।
ইরফান মৃদু হেসে আয়ানার গাল দুটো টেনে বলে উঠলো,,
—-এই গুলো সব তোমার জন্য তোমার যা যা প্রয়োজন তা চাওয়ার আগেই পেয়ে যাবে কিন্তু লিপস্টিক নামে রঙ আর ঠোঁট ব্যবহার করবে না আমার আয়ু জানের চকলেট রঙের ন্যাচারাল ঠোঁট দুটো আমার সবচেয়ে প্রিয় তাই একদম এতে বাজে কিছু লাগাবে না। লিপস্টিক যতোই ব্রেন্ড আর দামি হোক না কেনো এগুলা ক্যামিকেল দ্বারা তৈরি ইনফেকশন হতে পারে তাই পরবর্তীতে এমন কিছু করবে না যেইটায় তোমার কষ্ট হয় সাথে আমারও ঠিক আছে টিস্যু পেপার দিয়ে ঠোঁট মুছতে মুছতে বললো।।।
—-হুম ঠিক আছে। কিন্তু এতো গুলো লিপস্টিক না ব্যবহার করলে কি করবো?
—-যা খুশি করতে পারো বাট্ট ঠোঁটে এসব ব্যবহার করবে না।। সম্পূর্ন ঠোঁট মুছে আলতো করে চুমু খেয়ে বললো।।।
আয়ানা ইরফানের স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠলো।ইরফান আয়ানার সামনের কিছু চুল পেছনে গুজে দিয়ে হাত ধরে নিচে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো।।।
🌸”লাল রঙের বেনারসী পরে ভাড়ি ব্রাইডেল লুকে স্ট্রেইজে বসে আছে তুতুল, তাঁর পাশে সব কাজিন ফ্রেন্ডরা নানা কথা নিয়ে হাসি মজা করছে।সবার কথা আজকে বাসুর রাতে কি করবে আকাশ তুতুলের সাথে এই থিম নিয়ে।সকলের কথা শুনে লজ্জায় লাল রঙের ব্লাস করা গাল দুটো আরো লাল হয়ে যায় তুতুলের।।তুতুল শিড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে আয়ানা ইরফানের হাত ধরে নিচে নামছে আয়ানাকে দেখে তুতুলের মুখে হাসি ফুটে উঠল, অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাঁর ছোট বোনটাকে
একদম পিচ্চি থেকে পিচ্চি গিন্নিদের মতো লাগছে।।আয়ানা নিচে নেমে তুতুলের কাছে চলে আসে।। ইরফান আয়ানাকে তুতুলের কাছে বসিয়ে দিয়ে বাহিরে চলে যায়।।আয়ানা তুতুলের পাশে বসে বেশ কিছু সেলফি নিলো দুই বোন মিলে তারপর নানা কথার ফুলঝুড়ি নিয়ে বসে পরে দুজনে কতো কথা যে কিলবিল করছিলো পেটে তা প্রকাশ করছে।।।
❀আয়ানার ইচ্ছে ছিল বড় বোনের বিয়েতে জমিয়ে আনন্দ করবে একই রকম সাজবে প্রতিটা সুন্দর মূহুর্তে ক্যামেরায় বন্দী করে রাখবে কিন্তু তা আর হলো কই।। ইচ্ছে ছিল লাবিহা সাবিহার সাথে বরের জুতো চুরি করবে গেইট ধরে টাকা আদায় করবে অবশ্য তা সে কখনো করেনি এবং পারে না কিন্তু বোনের বিয়েতে ইচ্ছে পূরণ করার জন্য লাবিহা সাবিহার সাথে মিলে সব করবে কিন্তু দেখো আনন্দ করা তো দূরের কথা লাবিহা সাবিহা ফুফি কেউই বিয়েতে আসেননি। কেনো আসেননি তা জানে না আয়ানা ওই দিন রিসিপশনের পর থেকে আর কখনো ফুফি কিংবা লাবিহা সাবিহা কারোর সাথে কথা হয়নি তাঁর।বেশ কয়েকবার ইরফানকে দিয়ে ফুফির মোবাইলে কল করলেও অপর পাশ থেকে আপনার কাঙ্ক্ষিত নম্বরটি এই মুহূর্তে বন্ধ আছে ছাড়া আর কোনো উত্তর আসেনি।।। হঠাৎ বর এসেছে বর এসেছে বলে সব মেয়েরা ছুট লাগাতে আয়ানা ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে তুতুলের দিকে তাকিয়ে দেখে সে লজ্জায় মুখ নীচু করে বসে আছে তা দেখে আয়ানা হেসে দিল।। তাঁর কাছে খুব অদ্ভুত লাগছে আজকে তাঁর বোনের বিয়ে কিন্তু সে তাঁর ছোট বোন হয়ে বড় বোনের আগেই বিয়ে করে বসে আছে ভেবেই আয়ানার হাসি পাচ্ছে।।
গেইটের সামনে কি হচ্ছে তা জানা নেই আয়ানার বেশ কিছুক্ষণ পর সব মেহমানরা ভেতরে আসতে দেখে আয়ানা চেয়ার থেকে উঠে পরে।আয়ানা উঠে পড়তে তুতুল আয়ানার হাত ধরে ফেলে,সে প্রচন্ড লজ্জা এবং ভয় দুটোই পাচ্ছে তাই কেউ না আসা পর্যন্ত আয়ানা তুতুলের পাশে ছিল পরে আকাশকে নিয়ে সবাই আসার পর তুতুলের পাশে আকাশকে বসিয়ে দেওয়া হয় ।।শালিকা হওয়া সুবাদে আয়ানা আকাশের সাথে কিছু কথা বলে উঠে পরে আশেপাশে তাকিয়ে দেখে তাঁর এরোগেন্ট ম্যান মোবাইলে কথা বলতে বলতে তাঁর দিকে এগিয়ে আসছে।।আয়ানা লেহেঙ্গা উঁচু করে ইরফানের দিকে পা বাড়ালো।। ইরফানের কাছাকাছি যেতে ইরফান আয়ানার হাত ধরে অন্য হাত দিয়ে মোবাইলে কথা বলতে লাগলো।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।।
———————————————-
“কাজি আসার পর সব নিয়মকানুন মেনে তুতুল আর আকাশের বিয়ে পড়ানো শুরু হয়।।। সম্পূর্ণ বিয়েতে আয়ানা ইরফানের হাত ধরে বিয়ে উপভোগ করেছে।। আকাশের জুতো চুরি করার সময় নীলা আয়ানাকে চোখ দিয়ে ইশারা করে আসার জন্য বললে আয়ানা চোখ ঘুরিয়ে ইরফানকে দেখিয়ে ঠোঁট উল্টিয়ে ইশারায় করে না বলে।।সবার মজা হৈ-হুলড়ে মাধ্যমে বিয়ে সম্পূর্ণ হয়।। দুই পরিবারের একসাথে খাবার খাওয়ার পর এবার এলো বিদায়ের পালা।এই মুহূর্ত সব মেয়েদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর নিজের পরিবার ছেড়ে অচেনা অজানা জায়গায় নিজেকে মানিয়ে নিতে হয় তুতুলের কাছে কিছু অজানা কিংবা মানুষ জন অচেনা নয় সবাই তাঁর পরিচিতি তবুও নিজের বাবা মাকে ছেড়ে যেতে তাঁর ভিষন কষ্ট হচ্ছে ।।। জায়েদ আহাম্মেদ মেয়ের হাত জামাইয়ের হাতে তুলে দিতে খানিকটা কেঁপে উঠেন তিনি।তুতুল ঝাপটে ধরে তাঁর বাবাকে। তাঁর বাবা কে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কান্না করছে সাথে জায়েদ আহাম্মেদও কাঁদছে ।। নিজের মেয়েদের নিজের ঘর অন্ধকার করে অন্যের ঘর আলো করতে তাঁর পাঠিয়ে দিতে হয় তাঁর ভিষন কষ্ট হচ্ছে কিন্তু এটাই যে পৃথিবীর নিয়ম।।
বাবা মেয়ের কান্না দেখে সবাই কাঁদছে ইরফান আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে, ইরফানের বুকে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে আয়ানা। ইরফান বারবার আয়ানাকে শান্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছে।এক এক করে সবার থেকে বিদায় জানিয়ে তুতুল আয়ানার কাছে আসতে ইরফান আয়ানাকে ছেড়ে দেয়,ছাড়া পেতে আয়ানা তুতুলকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে ওঠে তুতুলও বোনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে কারোর চোখের পানি জেনো বাঁধই মানছে না।।।তুতুল সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আয়ানার চোখের পানি মুছে দিয়ে গালে হাত রেখে বলল,,,,
—- এইভাবে কাদছিস কেন পাগলী মনে হচ্ছে আজকে আমার বিয়ে নয় তোর বিয়ে হেসে দিয়ে।।
তুতুলের কথায় সবাই হেসে দিল আয়ানা মৃদু হেসে কিছু বলতে যাবে তখন আহাম্মেদ ভিলার গেইট দিয়ে একটা পুলিশের গাড়ি প্রবেশ করলো তা দেখে সবাই চমকে যায় হঠাৎ এই বিয়ের দিনে কেনো পুলিশ এসেছে।।
পুলিশ আসতে দেখে সবার চোখ মুখে আতংকের ছাপ দেখা দিল শুধু ইরফান পকেটে হাত গুজে শান্ত ভাবে তাকিয়ে আছে।।।
“গাড়ি থেকে দুজন পুলিশ বের হতে জায়েদ আহাম্মেদ এগিয়ে গিয়ে হ্যান্ডসেক করে জিজ্ঞাসা করলো,,
—-আরে অফিসার আপনারা হঠাৎ আমার বাড়িতে কোনো কাজ আছে কী?
—-জ্বী আমাদের কাছে একটা মেসেজ আছে সেইটা জানাতে আসলাম আপনাদের।। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলে উঠলেন।।। ওনার কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে কী এমন মেসেজ নিয়ে এসেছে তাঁরা যে বিয়ে বাড়িতে চলে আসলো।।।
জায়েদ আহাম্মেদ কিছু বলতে যাবে তাঁর আগে পুলিশ কর্মকর্তা বলে উঠলেন,,,
—-আপনাদের মাঝে মি.জায়েফ আহাম্মেদ আর সামিয়া আহাম্মেদ কে আছেন।।।
পুলিশের কথা শুনে জায়েফ আহাম্মেদ আর সামিয়া আহাম্মেদ সামনে এগিয়ে আসলো এসে বললো,
—–জ্বী আমরা কিছু কি হয়েছে অফিসার।।
(জায়েফ আহাম্মেদ)
—-আসলে আমাদের কাছে কাশ্মীর লিপা বেলী থানা থেকে একটা চিঠি এসেছে চিঠিটা মূলতঃ আপনাদের দুজনের জন্য।আপনারা কিছু দিন পূর্বে থানায় ডায়রি করেছেন আপনাদের নিখুজ ছেলে জিসান আহাম্মেদ কে নিয়ে। লোকটির কথা মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে সামিয়া আহাম্মেদ উত্তেজিত কন্ঠে বললো,
—-জিসান আমার ছেলে।কেমন আছে সে? কোথায় আছে?কতো দিন যাবত দেখি না কান্না জড়িত কন্ঠে।।
সামিয়া আহাম্মেদের কথার কোনো জবাব দেননি পুলিশ কর্মকর্তা অন্য পুলিশের হাত থেকে একটা প্যাকেট নিয়ে জায়েফ আহাম্মেদের হাতে দিয়ে বলেন।
—-আপনারা বাংলাদেশে রয়েছেন তাই আপনাদের র্পাসেলটা এখানে দিয়ে দেওয়া হলো এখানে আপনাদের ছেলের কিছু জিনিস আছে যা,,,,,,,,,
—-আমি আমার ছেলের কথা জিজ্ঞাসা করছি সে কোথায় বলুন আমাকে জোরে চিৎকার করে সামিয়া আহম্মেদ বলে উঠলো।।
সামিয়া আহাম্মেদর কথা শুনে পুলিশ অফিসার মাথা নিচু করে বললো,,,
—- দুঃখিত মিসেস আহাম্মেদ আপনার ছেলেকে পাওয়া যায়নি। আমাদের ধারনা সে আর বেঁচে নেই।। উপস্থল থেকে শুধু তাঁর কিছু জিনিস উদ্ধার করছে তা আপনাদের কাছে পৌঁছে দিতে বলেছে।।
পুলিশের কথা শুনে সামিয়া আহাম্মেদ চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শতীল আহাম্মেদ দৌড়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে।।সবাই যেনো বিষ্ময়ের শেষ চূড়ায় পৌঁছে গেছে কেউ কারোর কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। জিসান আর এই পৃথিবীতে নেই এই কথাটা শুনে হাসি খুশি বিয়ে বাড়ীতে কান্নার রুল পরে যায়।।জায়েফ আহাম্মেদ বুকে হাত চেপে চেয়ারের উপর ধপ করে বসে পড়েন তাঁর হাত পা কাঁপছে জায়েফ আহাম্মেদের কাঁধে হাত রেখে শক্ত করে চেপে রেখেছে জায়েদ আহাম্মেদ তিনি ক্ষিপ্ত গলায় পুলিশ অফিসার কে বলে উঠলো,,,
—কী উল্টা পাল্টা বলছেন অফিসার জিসান নেই মানে কি?আপনারা ভালো করে খোজ খবর না নিয়ে একটা জীবিত মানুষকে মৃত্যু বলছেন আপনারা,,,,,,,,
—-আমাদের কাছে সব তথ্য প্রমাণ আছে বলেই আমরা আপনাদের জানিয়েছি।।এর ভিতরে সব প্রমান আছে প্যাকেটটা দেখিয়ে। জিসান আহাম্মেদ যেই গাড়িটা ব্যবহার করেন এবং লাস্ট টাইম তাকে যেই গাড়িতে দেখা গিয়েছে সেই গাড়িটা রাতি গালি পাহাড়ের বেশ কিছু নিচে মোটা একটা গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় পেয়েছে।বেশ উঁচু পাহাড় আর এর নিচের গভীরতা অনেক সেখান থেকে কোনো মানুষ নিচে পড়লে আর বেঁচে ফিরে আসবে না। পাহাড়ের নিচে রয়েছে বিশাল বন আর পাহাড়ের ঠিক নিচ বরাবর অনেক গভীরে এক নদী যেখানে ফরেস্ট দেখাশোনা কর্মীরা কুমির চাষ করেন ।এই বিশাল হিংস্র কুমিরের হাত থেকে বাঁচা কোনো ভাবেই সম্ভব না।। পুলিশ ফোর্স অনেক খুজো খুজি করেও কোনো লাশ উদ্ধার করতে পারেনি আশেপাশে থেকে।। ওনার গাড়ি থেকে ড্রাইবিং লাইসেন্স ঘড়ি আর ড্রাইবিং সিট থেকে ওয়ালে্ট পেয়েছি সম্ভবত ওনি নিচে পরে যাওয়ার সময় পকেট থেকে পড়ে গিয়েছে এসব দেখে আমরা সিউর যে এটা জিসান আহাম্মেদ।কথা গুলো এক নিঃশ্বাসে বলে থামলেন অফিসার।।অফিসারের কথা শুনে জোরে জোরে চিৎকার করে কেঁদে উঠলো সামিয়া আহাম্মেদ।জায়েফ আহাম্মেদের নিচের দিকে তাকিয়ে আছে ছেলের মৃত্যুর শোক জেনো তাকে পাথরে পরিণত করেছে।।বিয়ের মহলে ক্ষনিকের মাঝে নেমে আসলো দুঃখের ছায়া।।সবার চোখে পানি শুধু পানি নেই আয়ানা আর ইরফানের চোখে।আয়ানা আবাক চোখে তাকিয়ে আছে ইরফানের দিকে এই সব কিছু যে ইরফানের সাজানো তা বুঝতে বাকি নেই তাঁর।।তুতুল আকাশের বুকে মাথা রেখে ডুকরে কেঁদে উঠলো আজকে তো সবার মাঝে জিসানের থাকার কথা কী থেকে কী হয়ে গেল সব যেনো এখনো স্বপ্ন মনে হচ্ছে, একটা খারাপ স্বপ্ন যা ঘুম ভাঙ্গলে আবার সব আগের মতো ঠিক হয়ে যাবে।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।শীতল আহাম্মেদ সামিয়া আহম্মেদকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে আর অন্যহাতে চোখের পানি মুচছে।।
❀❀হলরুমে নিস্তব্ধ থমথমে পরিবেশ। সবার চোখে পানি আর কষ্টের ছাপ এখন মেয়ে বিদায় দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু অল্প সময়ে জেনো সব কিছু শেষ হয়ে গেলো।।বাড়ির একমাত্র ছেলের মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছে না সবাই জেনো পাথর হয়ে গিয়েছে।।। সামিয়া আহাম্মেদ ছেলের শেষ চিহ্ন আঁকড়ে ধরে বিলাপ করছেন তাঁর সেই হ্নদয় ফাটানো চিৎকার সবার কষ্ট আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে কেউ তাকে শান্ত করতে পারছে না।।। একজন মায়ের মনে কি চলছে তা একজন মা উপলব্ধি করতে পারে।।। নিরবতা কাটিয়ে জায়েদ আহাম্মেদ বলে উঠে,,,,
—-আমরা সবাই কাশ্মীর যেতে চাই। নিজের চোখে দেখতে চাই সব। আমাদের চোখের সামনে আবার খোঁজা হবে।।এমনও হতে পারে জিসানের লাশটা অনন্তপক্ষে পেয়ে যাই।। ছেলেটার লাশটও যদি না পাই তাহলে বলে তিনি মাথায় হাত দিয়ে বসে পরেন।।।
—-পাওয়ার সম্ভাবনা এক পার্সেন্ট ও নেই।। তবুও আপনারা চাইলে চেষ্টা করতে পারেন।।এমন জায়গায় পরেছে সেখানে লাশ পাওয়া অসম্ভব।। কথা গুলো বলে তাঁরা বিদায় নিয়ে চলে যায়।।
সবাই জায়েদ আহাম্মেদের কথা শুনে কিছুটা আশার আলো পেলেন ছেলেটা যদিও মরে গেছে এর থেকে কষ্টের আর সকলের জন্য কি হতে পারে তাঁর উপর লাশ পাওয়া যাবে না বলে পুলিশের ধারণা শেষ বারের মতো ছেলেটার মুখটাও দেখতে পাবেনা এটা হতে পারে না।। সবার ধারণা ভালো করে খুঁজলে কোথাও না কোথাও জিসানের লাশ পাওয়া যাবে কিন্তু আয়ানাতো জানে হাজার খুঁজলেও জিসানের লাশ পাওয়া যাবে না তা অনেক আগেই সার্কের পেটে চলে গিয়েছে।।।
(গল্পটা কেমন হয়েছে সবাই গঠন মূলক মন্তব্য করবেন কেউ বাজে মন্তব্য করবেন না ভালো না লাগলে ইগনোর করবেন।যারা আজকের পর্ব বুঝতে পারছেন না আগের পর্ব গুলো পড়ে নিবেন।এই পর্বের আরো কিছু অংশ বাকি আছে কালকের পর্বে বাকি অংশ দেওয়া হবে ধন্যবাদ সবাইকে ❤️)
#To_be_continued……………🌼
#Happy_Reading🌸
লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম✵