#বিষাক্তময়_আসক্তি(The Villain 😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#অন্তিম_পর্ব…..🌼
(অসুস্থতার কারণে গল্প দিতে দেরি হয়েছে তাঁর জন্য দুঃখিত।। গল্পের নিচের লিখা পড়ার অনুরোধ রইল)
“সময় কারোর জন্য অপেক্ষা করে না।সময় তাঁর নিজের গতিতে এগিয়ে চলতে থাকে।। ইরফান আয়ানার দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসা দিয়ে গড়া সংসারে পেরিয়ে গিয়েছে অনেক দিন।।।ওই দিনের আয়ানার অসুস্থতার পর বেশ অনেক দিন পর ইরফানের অতিরিক্ত ভালোবাসা আর কেয়ারে আয়ানা সুস্থ হয়ে উঠে।।।বেশ ভালো ভাবে চলছে সবার জীবন।এক বছর যেতেই আয়ানা বেবি নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।ইরফানকে এক প্রকার পাগল করে দিচ্ছে বেবির জন্য।। ইরফান নানা ভাবে বুঝিয়েও কিছু করতে পারেনি।।আয়ানা এক প্রকার জিদ্দি হয়ে গিয়েছে বেবির জন্য। তাঁর বেবি চাই মানে চাই।।।আয়ানার যা চাই তা ইরফানকে এনে দিতে হবে। তাঁর রাগের কাছে জেনো ইরফানের রাগ টিকেই না।ইরফানও নিজের রাগকে যথেষ্ট পরিমাণের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।এখন আর আয়ানার উপর হুটহাট রেগে যায় না। শান্ত ভাবে সামলিয়ে নেয় সবকিছু।। কিন্তু রেগে গেলে চোখ মুখে হিংস্রতা ফুটে উঠে যা আয়ানা ফেইস করতে পারে না, নেতিয়ে যায় ভয়ে।।।।
ইরফান নানা ভাবে বুঝিয়েছে কিন্তু প্রতিবার আয়ানা বাচ্চাদের মতো জিদ করে। ইরফান রেগে গিয়ে ধমক দিলে হাত পা ছড়িয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দেয়।। পরে অনেক কিছু করে তাকে শান্ত করতে হয় ইরফানকে।এক কথায় একেবারে নাজেহাল অবস্থা।।।। একদিন আয়ানার জিদ এতো পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে ইরফান রেগে হাত তুলতে গিয়ে নামিয়ে নিলো। নিজের অজান্তেই হাত তুলতে নিয়েছিল যার কারণে ঠোঁট দিয়ে নিজের জিভ ভিজিয়ে আয়ানাকে বোঝাতে নিলে আয়ানা জোরে জোরে কান্না শুরু করে দেয় আর বলতে লাগে,, আপনি আর আমাকে ভালোবাসেন না তাইতো আজ মারতে চেয়েছেন। বলে রুমে গিয়ে সেই কি ভাংচুর।। অনেক কষ্টে ইরফান আয়ানাকে থামায়।। পরে বাধ্য হয়ে আয়ানার রাগের কাছে হার মানতে হয়।।।ওই ঘটনার প্রায় কিছু দিন পর আয়ানা বেবি কনসিভ করে।।যখন সে জানতে পারে সে মা হতে যাচ্ছে তখন সে কী আনন্দ।।।চোখ মুখে খুশির ঝলক। কিন্তু হারিয়ে যায় ইরফানের মুখের হাসি আর চোখ মুখে ফুটে উঠে একরাশ চিন্তা আর ভয়।।।যখন জানতে পারে বেবি হবে আগের তুলনায় আরো কেয়ার করতে লাগলো আয়ানার।এদিক থেকে ওদিক একা যেতে দেয় না।সারা দিন রুমে নিজের সামনে বসিয়ে রাখে।।নিজেও একেবারে বাহিরে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। প্রয়োজনীয় সব কাজ বাড়িতে করে আর গার্ড দিয়ে করায়।।আয়ানার প্রেগনেন্সির সময় থাকার জন্য তিন জন সেবিকা নিয়োগ দেন যারা এই বাড়িতে থেকে আয়ানার সময় সময় প্রতিদিনকার চেকাপ করে যায়,যা প্রয়োজন তা করে দেয়।।।যখন বেবি হবে শুনেছে প্রথম দুই দিন ইরফান আয়ানার সাথে কথা বলেনি। প্রতিদিনকার মতো সব করেছে কিন্তু কথা বলেনি। শুধু আয়ানা একা একা বকবক করেছে।। দুইদিন নানা কথায় ইরফানের সাথে কথা বলতে চাইলেও ইরফান কোনো কথা বলেনি শুধু তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতো।। চোখ মুখে সে কী ভয় আয়ানার জন্য।। তাঁর ধারণা বেবি হওয়ার সময় মেয়েদের অনেক সমস্যা হয় এতে করে বেবি জম্মনোর সময় মৃত্যুও হতে পারে।।এটা ভেবে একেবারে পাগলের মতো ব্যবহার করে ইরফান।আয়ানা ইরফানের অবস্থা দেখে মনে মনে অনেক অনুতপ্ত হয়।মা হওয়ার সাধ গ্রহণ করার জন্য সে ইরফানকে এতো বড় কষ্ট দিয়ে ফেললো।। যেখানে ইরফান তাঁর একটু কষ্ট সহ্য করতে পারে না সেখানে প্রেগনেন্সির সময় অনেক সমস্যা দেখা দিবে সেগুলো কী করে সহ্য করবে।। এখন আয়ানার ভয় হচ্ছে ইরফানকে নিয়ে তাই বারবার তাঁর সাথে কথা বলে তাঁর মন ভালো করার চেষ্টা করছে।।আয়ানা যদি এখন কোনো ভাবে বেবি না নেয় তাহলে ইরফান কখনো বেবি নিতে দিবে না তাকে কিছু না কিছু করে আটকিয়ে দিবে।। ইরফান তাকে নিয়ে কোনো রিস্ক নিতে চায় না সেখানে আয়ানার জীবনের ঝুঁকি রেখে নতুন প্রান তো কোনো মূল্যে চায় না।। তাঁর শুধু পৃথিবীতে আয়ানা চাই আর কিছু না।।। ইরফান রোজ রাতে আয়ানাকে বুকে নিয়ে বিরবির করে বলে,,,, আমাকে কষ্ট দিতে তোমার খুব ভালো লাগে তাই না আয়ু জান।। তুমি আমাকে তিলে তিলে মেরে ফেলতে চাইছো।। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার।।
এসব কথা আয়ানা শুনলে নিজের কাছে অনেক খারাপ লাগে।সে বেবি নেওয়ার জন্য এতোটা স্বার্থপর কী করে হতে পারলো,যা ইরফানের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।।।ইরফান নিজেক সামলিয়ে আয়ানাকে সামলাতে শুরু করলো।বেড়ে গেলো আয়ানার উপর কেয়ার নামক অত্যাচার।আয়ু এটা করবে না ওটা করবে না।এটা খাবে ওটা খাবে না এমন অনেক কথা।। প্রয়োজনীয় সবকিছু নিজেদের রুমে করে যেমন ডিনার লান্স সকালের নাস্তা পর্যন্ত নিজেদের রুমে করে। একদম নিচে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে শুধু মাত্র সময় সময় করে বাগানে কিংবা বাহিরে ঘুরতে নিয়ে যায়।।। প্রেগনেন্সির সময় যত বাড়তে থাকে ইরফানের কেয়ার আর পাগলামো বাড়তে থাকে। তাকে ছাড়া শ্বাস ফালানোর পর্যন্ত অনুমতি নেই।।আয়ানা এসবের মাঝে খুব বিরক্ত হয়ে উঠে অল্পতেই খিটখিট করে।। প্রেগনেন্সির সময় সবাই এমন করে থাকে তাই ইরফান শান্ত ভাবে সব কিছু সামলিয়ে নেয়।। সবসময় আয়ানা কিটকিট করতে থাকে আর ইরফান হাঁসি মুখে সব সহ্য করে নেয়।।। একদম নাকানিচুবানি খাওয়ার মতো অবস্থা করে ইরফানের।।। প্রেগনেন্সির সময় থেকে একটা রাতও দুই ঘন্টার বেশি সে ঘুমাই নি।সারা রাত জেগে আয়ানার ঘুমন্ত মুখ দেখে কাটিয়ে দেয়। সকালে আয়ানার ঘুম ভাঙ্গলে নাস্তা করে নিজে আয়ানার গলায় মুখ ডুবিয়ে ঘুমের দেশে পাড়ি জমায় আর আয়ানা মৃদু হেসে তাঁর মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দেয়।।এইভাবে রাতে জেগে দিনে আয়ানার গলায় মুখ গুজে ঘুমায় এতে জেনো শত চিন্তা গুলো মিলিয়ে যায়।।। এইভাবে সময় কাটাতে থাকে আর আয়ানার গর্ভে বেড়ে উঠতে থাকে ইরফান আয়ানার ভালোবাসার চিহ্ন।।
[লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম]
আয়ানা আহ্ করালে ইরফান পাগলের মতো বলতে লাগে কী হয়েছে কষ্ট হচ্ছে,ডাক্তারের কাছে যাবে।এমন অনেক কথা।আয়ানা শুধু আবাক চোখে তাকে দেখে।কতো চিন্তায় থাকে সারা দিন কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলে না কিন্তু আয়ানা মুখ দেখে সব বুঝে যায়।।। কপালে একেরপর এক ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে সকল চিন্তা দূর করার চেষ্টা করে।সারা মুখে ফু দিয়ে বলে সব চিন্তা দূর হয়ে যাবে।। বিনিময় ইরফান মুচকি হাসি উপহার দিয়ে তাকে বুকে জড়িয়ে রাখে।।।
হাজার চিন্তা দূর করে আয়ানার কোল জুড়ে আসে ফুটফুটে একটা ছেলে।দেখতে হুবুহু ইরফানের কার্বন কপি।সেই সাদা সাদা বিড়াল চোখ বাবার মতোই মুখের গঠন সব হুবুহু বাবার মতো শুধু মায়ের মতো অতিরিক্ত সাদা ফর্সা আর ঠোঁট গুলো চকলেট কালার আর সব পেয়েছে বাবার মতো।।। দেখতে একদম অসম্ভব সুন্দর।।। ইরফানকে নার্স বেবিকে কোলে নিতে বললে সে সেদিকে একবারো না তাকিয়ে আয়ানার কথা জিজ্ঞাসা করে। যখন জানতে পারে আয়ানা ঠিক আছে ক্যাবিনে দেওয়া হবে।।ক্যাবিনে দেওয়ার পর সোজা চলে যায় আয়ানার কাছে তখন আয়ানা অজ্ঞান অবস্থায় ছিল।। ইরফান আয়ানাকে সুস্থ দেখে একেরপর এক চুমু এঁকে দিতে থাকে আয়ানার মুখে। বেশ কিছুক্ষণ আয়ানাকে দেখার পর নার্সের কাছ থেকে নিজের সন্তানকে বুকে জড়িয়ে নিলো যে কিনা ছোট ছোট চোখ করে বাবাকে দেখতে ব্যস্ত।। ইরফান হাতে আলতো স্পর্শ করে আয়ানার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো আমার পৃথিবী।।।বলে বেবির কপালে আলতো চুমু খেয়ে আয়ানার কপালে চুমু খেলো তারপর বাবুকে বুকে জড়িয়ে কথা বলতে লাগলো।।লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।
এইভাবে ইরফান আয়ানা ও তাদের ছেলেকে নিয়ে আনন্দে কাটতে থাকে তাদের জীবন।।।
“বর্তমান”🌸,,,
খান বাড়িতে আজকে ঈদের আমেজে চারিদিকে কোলাহল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।।।সারা বাড়ির চারিপাশ থেকে সকাল বেলা হতে না হতে ঈদ ঈদ পরিবেশ তৈরি হয়ে গিয়েছে।।।আজাদ কাশ্মীর যেহেতু একটা মুসলিম শহর সেই হিসেবে এখানে ঈদ উদযাপন হয় খুব ধুমধাম ভাবে।
কাশ্মীরের নিলাম বেলী আজ সেজেছে ঈদের সাজে।। ঘরে ঘরে ঈদের খুশি আনন্দ ছড়িয়ে পরেছে।।। সকাল সকাল সকলের বাড়িতে পৌঁছে গেছে খান বংশ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা আর নানা নতুন কাপড় জুতা বিভিন্ন উপহার সামগ্রী।।। সকলে খুশি মনে আল্লাহর কাছে ঈদ উপলক্ষে একটাই দোয়া চায় খান বংশের সকলের সুখের কামনা।।।
“বিয়ের পর আয়ানার আজকে ৭ম ঈদ এখানে।।প্রতিবারেই ঈদ তাঁর কাটে খুব আনন্দের সাথে।। তাঁর জীবনটা একদম স্বপ্নের মতো হয়ে গিয়েছে। কিছু চাওয়ার আগে পেয়ে যাচ্ছে।। আল্লাহ জেনো তাকে ভাবার আগেই সব দিয়ে দিচ্ছে।।।আল্লাহর থেকে সবচেয়ে বড় পাওনা হলো ইরফান যে কিনা তাঁর জীবনটা পরিপূর্ণ করেছে এক সুখের সম্রাজে।। এমন কোনোদিন সে ইরফানের ভালোবাসা নিয়ে অভিযোগ করতে পারেনি উল্টো কোন ভাষায় ইরফানের এই অতিরিক্ত মাত্রাহীন ভালোবাসা প্রকাশ করবে সে জানে না।।।দিনকে দিন ভালোবাসা জেনো বেড়েই চলেছে আয়ানার প্রতি সাথে পাগলামো দিওনাপানা তো আছেই।। কিন্তু এখন আয়ানা এই পাগলামো দেখলে ভয় পায় না উল্টো খুব অবাক হয়,একটা মানুষ এতো ভালো কী করে ভাসতে পারে।।।এতো এতো ভালোবাসা আয়ানার মনে ইরফানের প্রতি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা বাড়িয়ে দেয়।। ইরফানের একটা কথা বারবার তাঁর মনে পরে,,
“আয়ু জান, ভালোবাসাতে যদি
পাগলামো না হয় সেটা কখনোই
ভালোবাসা না।। ভালোবাসা যদি রক্ষা
না করতে পারো তুমি কখনো
ভালোবাসোনি।।।আমি ভালোবাসা
রক্ষার্থে হিংস্র আয়ু জান🖤।
“মিররের সামনে দাঁড়িয়ে হিজাব ঠিক আছে কিনা ভালো করে পরখ করছে ইরফান।।আয়ানা গোল গোল চোখে ইরফানকে দেখছে।। বেশ সুদর্শন লাগছে তাকে একদম নজর কাড়া সুন্দর।।।সাদা পাঞ্জাবির সাথে কালো রঙের উরনা গলায় জুলিয়ে রেখেছে। চোখে গাঢ় করে সুরমা পরেছে আর সবসময়ের মতো চুল গুলো হাল্কা জেল দিয়ে সেট করে রেখেছেন।।এমনেতে বেশ সুন্দর তাঁর উপর আরো বেশি সুন্দর লাগছে। মাঝে মাঝে চাপ দাঁড়িতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।জাস্ট মারাত্মক লাগছে।।আয়ানা মৃদু হেসে পা উঁচিয়ে ইরফানের গলা জড়িয়ে আদুরে গলায় বলতে লাগলো,,,,,
—–একদম হিরো হিরো লাগছে।আয়ুর হিরো নাক ঘষে।।
ইরফান মৃদু হেসে আয়ানার কোমর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেয়ে নাক ঘষে বললো,,
—-উহুম আয়ুর ভিলেন বর।।
—-হুম। হেসে দিয়ে। আচ্ছা বারিশ কোথায়?রেডি হয়ে গিয়েছে।।।
ইরফান আয়ানাকে ঘুরিয়ে পেছন থেকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ঘারে মুখ গুজে বললো,,,,
—-হুম। আমার ছেলে তো তোমার মতো পিচ্চি না।সে নিজে নিজে খুব সুন্দর করে তৈরি হয়ে স্টাডি রুমে গিয়েছে।।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা রেগে গাল ফুলিয়ে বললো,,,
—-কী বললেন আমি পিচ্চি! আপনি সবসময় আমাকে পিচ্চি বলেন।আমি কী পিচ্চি নাকি।আমি হচ্ছি বারিশ খানের আম্মি আপনার আমাকে পিচ্চি মনে হয়।।।কে বলেছে আমাকে সবসময় রেডি করিয়ে দিতে।আমি পারি নিজে রেডি হতে কিন্তু আপনিইতো সেই প্রথম থেকে আমাকে নিজের হাতে রেডি করিয়ে দেন। নিজের হাতে কিছু করতেই দেননি। এখন আমি একা একা রেডি হওয়াও ভুলে গিয়েছি শুধুমাত্র আপনার জন্য।।। লাগবে না আপনার আমাকে রেডি করানো।।রেডি করিয়ে খোঁটা দেওয়া হচ্ছে হু।।রেগে ছোটার চেষ্টা করে।।।
ইরফান হেসে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মৃদু ধমক দিয়ে ঘারে নাক স্লাইট করে বললো,,,,
—–একদম পাকামো করার চেষ্টা করবে না তাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে।।। তুমি দশ বাচ্চার আম্মি হলেও আমার কাছে পিচ্চি পরীজানই থাকবে।যার প্রত্যেকটা কাজ আমি নিজের হাতে নিখুঁত ভাবে করবো।। আবার জেনো এই কথাটা পুনরায় রিপিট করতে না হয়।।।
ইরফানের ধমক শুনে আয়ানা কিছুটা দমে গেল। ভয়ে পুনরায় আর কিছু বললো না। এখন কিছু বললে পানিশমেন্ট শুরু হয়ে যাবে।।আয়ানা গাল ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর ইরফান আয়ানার ঘারে গলায় একেরপর এক কিস করে যাচ্ছে।।।।।
“বারিশ খান,আয়ানা ইরফানের একমাত্র ছেলে।।বয়স পাঁচ বছর কিন্তু হাবভাব আর ব্যবহারে অনেক বড় তাঁর প্রমান দেয়।।। দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি চলাফেরার ভঙ্গি।। হুবুহু বাবার কার্বন কপি।।। গাঁয়ের রং ঠোঁট আয়ানার মতো হলেও যতো বড় হচ্ছে ততো চেহারা, চলাফেরা ভঙ্গি, বুদ্ধি জেনো ছোট ইরফান।।।।যা একবার দেখে তা হুবহু মনে রাখে। দৃষ্টি ভঙ্গি, খাওয়ার ধরন, কথা বলার স্টাইল,চলা ফেরা সব জেনো প্রমান করে এটা ইরফানের বংশধর।। বাবার মতো সবসময় চুপচাপ থাকে আর বুদ্ধি মানের মতো সকল কাজ করে।। মুখে বাবার মতো শান্ত ভাবভঙ্গি।। নিলাম বেলীর সবাই ছোট ইরফান পেয়ে জেনো হাতে চাঁদ পেয়েছেন এতোটা খুশি হয়েছেন।।যেদিন বারিশের জম্ম সেদিন জেনো সম্পূর্ণ কাশ্মীর জুড়ে খুশির বন্যা বয়ে গিয়েছে।।সবাই অনেক বড় করে সেই খুশি উদযাপন করেন।।। ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় নানা গিফট আর মিষ্টির প্যাকেট।।।গ্ৰামের আর বাড়ির সবাই তাকে ভালোবেসে ছোট নবাব বলে ডাকে।।। সকলের চোখের মনি সে।। পৃথীবিতে মা বাবা ছাড়া কারোর কথা পরোয়া করে না।।বাবা মাকে ভীষণ ভালোবাসে।।আয়ানার কিছু হলে দুই বাবা ছেলে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। একটু আহ্ করতে পারে না দুজনের জন্য।এর আগেই পাগলামি শুরু।আয়ানা তো মনে মনে ভাবে, একটা ইরফান কী তাঁর জন্য কম ছিল আরেকটা এসে ছুটলো।। বাবা ছেলে দুজনেই এক রকম।। তাকে বিন্দুমাত্র কষ্ট পেতে দেয় না।।।বারিশ যতোটা বুঝে এর এক ভাগও আয়ানা ঠিকঠাক বুঝে না।।। ইরফান সবসময় গ্ৰাম পরিদর্শন করার সময় ছেলেকে সাথে নিয়ে যায়।এটা করতে বারিশের ভীষণ ভালো লাগে।।যখন বাড়িতে ইরফান থাকে না তখন আয়ানাকে দেখে রাখা তাঁর দায়িত্ব।। তখন আয়ানা কিছু একটা করতে গেলে বারিশ বলবে,,আম্মি এটা করবেন না আব্বি নিষেধ করেছে।ঔটা করবেন না আপনার লেগে যাবে।এটা খাবেন না পেটে অসুখ হবে আব্বি নিষেধ করেছে।।এতো মোবাইল গেইমস খেলবেন না চোখে সমস্যা হবে আরো কতো কি।।আয়ানা হাঁপিয়ে গিয়েছে বাবা ছেলের কান্ড কারখানায় । দু’জনের শাসনে সে মুখ ফুলিয়ে বসে থাকলে বাবা ছেলে তাকে দেখে খিলখিল করে হেসে উঠে।আর তাদের হাঁসি দেখে সেও হেসে দেয়।। এইভাবে চলতে থাকে সময়।।। সবার জীবনে নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে।সবাই আঁধার কাটিয়ে নতুন সোনালী আলোর দেখা পেয়েছে।।। আকাশ তুতুলের সুখী পরিবারকে আরো সুখী আর সুন্দর করতে দুটো কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় তুতুল। দুজনে জমজ বোন একজনের নাম তুলি আর অন্যজনের নাম তরি।। দুজন বারিশের থেকে ছয় মাসের বড়। দেখতে অনেক সুন্দর।।।।সাফিয়া আর ইসহাকেরও একটা ফুটফুটে মেয়ে হয়েছে যার বয়স চার বছর।।।নাম রূপসা খান। সবাই রূপ বলে ডাকে।। দেখতে যেমন মিষ্টি তেমনি দুষ্টু।। খুব কিউট দেখতে হয়েছে।বারিশের তুলনায় গাঁয়ের রং কিছুটা কম ফর্সা কিন্তু খুবই মায়াবী।।।পটপট করে কথা বলতে পারে সব কিন্তু র কে ল বলে ফেলে।।। ইসহাক আগের থেকে একদম সুস্থ। কিন্তু হাত গুলো আগের মতো রয়েছে আর মুখে আগের মতো প্রতিবন্ধী ভাব থাকলেও সবার মতো স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে।।সব দিক থেকে সবাই সুখী।। রূপসা কখনো বাবার কোলে চড়তে না পারলেও কাঁধে চড়ে বড় হয়ে উঠছে সে।।বাবার লক্ষী মেয়ে। ছোট হলেও মায়ের সাথে বাবার সব কাজ আদৌআদৌ করে দেয় যতো টুকু করতে পারে।। বাড়ির সবাই তাকে খুব ভালোবাসে।।লক্ষী মেয়ে হওয়ায় সবার কথা শুনে এবং ভালোবাসার পাত্রীও।।।
“আম্মি,আব্বি বলে রুমের দরজায় নক করে বারিশ।।বারিশের আওয়াজ শুনে ইরফান আয়ানা মৃদু হেসে সোজা হয়ে দাঁড়াতে ভেতরে প্রবেশ করে বারিশ।। একদম বাবার মতো সেজেছে সে।একই রকম পাঞ্জাবি একই রকম সাজ।।আয়ানা ইরফান হাঁটু গেড়ে বসে ছেলের গালে চুমু খেতে বারিশ দুজনকে জড়িয়ে ধরে বললো,,,,
—–ঈদ মোবারক আব্বি-আম্মি।।
ইরফান আয়ানা একসাথে জরিয়ে ধরে বলে উঠলো,,,
—–ঈদ মোবারক বাবাই।।।
বারিশ সোজা হয়ে হাতে থাকা একটা গিফটটিং কাগজে মোড়ানো জিনিসটা দুজনের হাতে দিয়ে বললো,,,
—-আপনাদের জন্য।।
আয়ানা ছেলের চুল গুলো ঠিক করে দিয়ে হাসি হাসি মুখে গিফট খুলতে লাগল।। ইরফান আয়ানার কান্ড দেখে মৃদু হাসলো।কে বলবে এক বাচ্চার মা। এখনো কেমন গিফট দেখলে হুমরি খেয়ে পরে।।।
লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।
আয়ানা গিফট খুলে দেখলো একটা পেন্টিং যেখানে ইরফান আয়ানা আর তাঁদের মাঝে বারিশ।।এমন ভাবে পেন্টিং করেছে হঠাৎ দেখে বুঝা মুশকিল এটা পেন্টিং মনে হচ্ছে ক্যামেরায় তোলা কোনো অসাধারণ সুন্দর ছবি। খুব বেশি সুন্দর হয়েছে।। ইরফান আয়ানা দুজনে দেখে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে লাগল সারা মুখে আর উৎসাহ দিয়ে বললো অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে।।। তারপর তিনজনে মিলে বিছানার পাশের দেয়ালে পেন্টিংটি একটি কাঁচের ফ্রেমে ডুকিয়ে তা দেওয়ালে টাঙিয়ে দিলো।। তারপর তিনজনে মিলে নিচে চলে গেলো একসাথে।।।
“খাবার টেবিলে সকলে অপেক্ষা করছে ইরফান আয়ানা আর বারিশের জন্য। তাদের একসাথে নামতে দেখে সকলের মুখে হাসি ফুটে উঠলো।।। রূপসা দৌড়ে এসে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আদৌ আদৌ করে বললো,,,,,
—–ঈদ মোবালক চাচি মনি, চাঁচাজান।।।।
রূপসার কথা শুনে ইরফান আয়ানা হেসে দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে বললো,,,
—-ঈদ মোবারক মনি।।।।
তাদের কথা শুনে কিউট ভাবে হাসলো রূপসা।।অপর পাশে বারিশকে দেখে ভয়ে চুপ হয়ে গেল। সে শান্ত ভাবে কটমট চোখে তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে।।
বারিশকে এইভাবে রূপসার দিকে তাকাতে দেখে আয়ানা বললো,,,,
—–আজকে একদম রূপকে কিছু বলবে না বাবাই । আজকে ঈদ আর ঈদের দিন সবাইকে ভালোবাসতে হয় কেমন।।।গালে হাত রেখে।।
বারিশ শান্ত গলায় বললো,,
—-জ্বী আম্মি ।।
আয়ানা ইরফান মৃদু হেসে খাবার টেবিলে চলে গেল।।।রূপসা পেছন পেছন যেতে নিলে বারিশ খপ করে হাত ধরে বললো,,,,
—-আমাকে ঈজ মোবারক কেনো বলিসনি।।
বারিশের কথা শুনে রূপসা হেসে বললো
—–ঈদ মোবালক বালিশ(বারিশ) ভাইয়া।।।।
বারিশের নামকে বালিশ বলায় রেগে হাত মোচড় দিয়ে বললো,,,
—তুই আবার আমার নামকে বালিশ বললি।।।তুই কী র উচ্চারণ করতে পারিস না।।।ইডিয়েট গার্ল।।
রূপসা ব্যথায় ঠোঁট ফুলিয়ে বললো,,,
—আমি কী কলবো আমি পালি না তো।(আমি কী করবো আমি পারি না তো)
—-আমার দেওয়া ঈদের জামাটা পরিস নি কেনো!হাত ছেড়ে।
—-ঔটা তোমাল জম্ম দিনে পলবো।।।
(ঔটা তোমার জম্ম দিনে পরবো)
—ভাষার একদম বিকৃতি করে ফেলেছে এই মেয়ে।যা গিয়ে কাকিমনিকে বল ঔটা পরিয়ে দিতে না হলে তোর একটা হাড় আস্ত থাকবে না।।।
—-আচ্ছা আচ্ছা যাচ্ছি।বলে ছুট লাগালো সাফিয়ার দিকে।।।।।
💞💞
টেবিলে সবাই যার যার মতো খাবার খাচ্ছে।।।আয়ানা গাল ফুলিয়ে ইরফানের হাত থেকে খাবার খাচ্ছে।। তাঁর দিকে একবার ইরফান তাকিয়ে পুনরায় খাবার খাওয়াতে লাগলো।।। নিজের ছেলে কী সুন্দর করে নিজের হাতে খাচ্ছে আর সে কিনা ইরফানের হাতে খাচ্ছে।।।বারিশ একদম হুবহু ইরফানের মতো সুন্দর ভাবে কাঁটা চামচ দিয়ে খাবার খাচ্ছে আর সে কিনা এখন পর্যন্ত কাঁটা চামচ দিয়ে নিজে নিজে কিছু খেয়েছে কিনা জানা নেই।।।বারিশ একদম ছোট থাকা কালীন ইরফান ছেলে এবং ছেলের মা দুজনকে খাইয়ে দিয়েছে আয়ানাও মাঝে মাঝে খাইয়ে দিয়েছে কিন্তু যখন বারিশ বড় হলো কিছুটা নিজের হাতে খেতে শিখেছে এর পর থেকে কখনো তাকে আর কারোর খাইয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয় নি সে নিজের খাবার নিজে খেতে পারে এবং খুব সুন্দর করে।।আয়ানা কখনো খাইয়ে দিতে গেলে ইরফান বলে উঠে নিজে খেতে পারো না বেবিকে কি করে খাবাবে।।আর এখন বারিশ বড় হয়ে বলে,,,
আম্মি আমি নিজে নিজে খেতে পারি আপনি বরং আব্বির হাতে খাবার খেয়ে নিন।।।বাবা ছেলের হুবহু একই রকম কথা শুনে সে আর কিছু বলে না চুপচাপ তাদের দুজনের অর্ডার শুনেন।।।।
“আর খাবো না! আমার পেট ফুল হয়ে গিয়েছে!এবার তো থামুন দয়া করে।।।
—-ছেলের সামনে বকা খেতে না চাইলে খাবার জলদি ফিনিশ করো।। ফিসফিস করে।।।
আয়ানা গাল ফুলিয়ে কোনো রকমে সম্পূর্ণ খাবার শেষ করলো।।।বারিশ খাবার শেষ করে বলে উঠলো
—-আফটার ইটিং মাই ফুড,আই এম গয়িং টু গ্ৰাডেন নাও।রূপসা,কাম উইথ মি।।হাত ধরে নিয়ে যেতে যেতে বললো।।। রূপসা বেচারি অর্ধেক খেয়ে মায়ের দিকে আর চাচিমনির দিকে তাকিয়ে যেতে লাগল।।
ওদের যাওয়ার দিকে সকলে তাকিয়ে আছে।। ইরফান খাওয়ায় মনোযোগ দিলো আর আয়ানা মুখ বাঁকিয়ে বললো,,,
—-ঠিক বাবার মতো হয়েছে ছেলেটা।। ইংরেজের বাচ্চা।।।
আয়ানার কথা শুনে ইরফান খাওয়া বাদ দিয়ে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে রইল তার দিকে।।
ইরফানের তাকানো দেখে আয়ানা ঢোক গিলে বললো,,,
—মজা করে বলেছি।।।
আয়ানার কথা শুনে ইরফান বাঁকা হেসে খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।।।।
“রুমে”🌸🌸
নিজে নিজে কথা বলছে আয়ানা।।সারা রুমে পায়চারি করছে আর ইরফানকে বিরবির করে বকছে।। ইরফান রুমে প্রবেশ করে আয়ানার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।।ঘারে থুতনি রেখে বললো,,,,
—-কী হয়েছে আয়ু জান। বেশি খাবার খাইয়েছি বলে আমাকে মনে মনে বকা হচ্ছে।।।
( লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম)।।
আয়ানা গাল ফুলিয়ে বললো,,,,
—-হুম। আপনি সবসময় এমন করেন।। একদম আপনার মতো হয়েছে বারিশ। সবসময় যা ইচ্ছে তাই করবে। কিছুক্ষণ আগে রূপসার হাতে কামড় বসিয়ে দিয়েছে। অপরাধ একটা সে বারিশকে বালিশ বলেছে আর তাঁর দেওয়া ড্রেস দেরি করে পরেছে তাই।।। এমন সামান্য বিষয় কেউ এমন করে।।ঠিক আপনার মতো।।গাল ফুলিয়ে।।।
ইরফান মৃদু হেসে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘারে নাক ঘষে বললো,,,,
—-আমার ছেলেও আমার মতো নিজের জিনিস যত্ন করে রাখতে জানে।।।তাই আমার ছেলেকে দোষ দেওয়া বন্ধ করুন। আলতো চুমু খেয়ে।।।।
আয়ানা মুখ ভেংচি কেটে বললো,,,,
—-হুম এরোগেন্ট ম্যান একটা।।
—-তোমার বর!
—হুম। মৃদু হেসে।।।
ইরফান আয়ানাকে নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো। পেছন থেকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে বললো,,,,,
—-আমার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস তুমি।যাকে শেষ নিঃশ্বাস দিয়ে রক্ষা করবো।।।যার ভালোবাসায় পাগল আমি।যাকে ছাড়া আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। আমার আয়ু জান আমার কাছে পৃথিবীতে পাওয়া সবচেয়ে সেরা গিফট।।।ভালোবাসি মেরি জান। খুব বেশি ভালোবাসি।।সারা জীবন এমন করে ভালোবেসে যাবো।। তুমি আমার জীবনটাকে সুখে মুড়িয়ে দিয়েছো।।। আমার দুনিয়াকে আলোকিত করেছো।। আমার অন্ধকার রাজ্যে আলো তুমি।।।
—–আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি মি.এরোগেন্টম্যান।।। ধন্যবাদ এমন দমকা হাওয়ায় মতো আমার জীবনে এসে অদ্ভুত অনুভূতি অদ্ভুত ভালোবাসার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য।।।যে ভালোবাসার কোনো বিশ্লেষণ আমার কাছে ছিল না সে ভালোবাসা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য।। ধন্যবাদ আপনাকে যে শুধু অন্ধকার খারাপ কিংবা কষ্টের প্রতিক হয় তবুও অন্ধকার কে ভালোবেসে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হওয়ার অনুভূতি করার জন্য।।।। খুব ভালোবাসি আপনাকে।হাত দুটো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।।।।
ইরফান মৃদু হেসে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে মূহুর্ত টা উপভোগ করতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ পর বারিশের ডাকে দুজনে হুঁশ ফিরে আসে।বারিশ এসে বলতে লাগলো,,,,
—-আব্বি নিচে গ্ৰামের লোকজন আসতে শুরু করেছে। তাদের গিফট আমি নিজের হাতে দিবো আগের বারের মতো কেমন।।।
ইরফান মুচকি হেসে ছেলেকে কাছে টেনে নিয়ে বললো,,,,
—-ঠিক আছে।।
পাশ থেকে আয়ানা কোমরে হাত রেখে রাগি গলায় বললো,,,,
—-তোমাকে নিষেধ করার পরও কেনো রূপকে কামড় দিলে।জানো না ঈদের দিন যা করে সারা বছর তেমনি ঘটে।।
বারিশ বাবার দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বললো,,,,
—-তাইতো কামড়িয়ে দিয়েছি যাতে করে সারা বছর কামড়াতে পারি।।।
বারিশের কথা শুনে আয়ানা হতোবাক হয়ে গেল।। ইরফান ছেলের কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললো,,,,,
—-গুড বয়।।গাল টেনে।।।
আয়ানা রেগে চিৎকার করে বললো,,,
—-সব বাজে জিনিস আপনি শিখান ।।
ইরফান ডোন্ট কেয়ার ভাব করে ছেলের পাঞ্জাবির হাতা ঠিক করতে করতে বললো,,,,
—-এগুলোকে বাজে জিনিস বলে না আয়ু আদর বলে।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে।বারিশ হেসে বললো,,,
—-আম্মি আপনার নাকটা স্ট্রবেরি হয়ে গিয়েছে।।।
বারিশের কথা শুনে ইরফান বাঁকা হেসে চোখ মারলো তা দেখে আয়ানা রেগে ছেলের কান মলে দিয়ে বললো,,,,
—-আরেকবার দুষ্টু কথা বললে বাবা ছেলেকে রুমে ঢুকতে দিবো না।।। মনে থাকবে।।।গাল ফুলিয়ে।।
—-জ্বী! একসাথে।।।
আয়ানা হেসে দিয়ে বারিশের কপালে চুমু খেলো।।
“বাগানের দিকে ধীরে ধীরে মানুষের ভিড় জমছে।। ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ গ্ৰামের মানুষ এখানে উপস্থিত হচ্ছেন।। সকলের মুখে রয়েছে হাঁসি, উল্লাস।। আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে ইরফান আর তাদের মাঝ বরাবর রেলিংয়ে হাত রেখে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে বারিশ। তিন জনের দৃষ্টি নিচে আসা মানুষগুলোর দিকে।।। তাদের হাসি মুখ এক আলাদা ভালো লাগা কাজ করে।।আয়ানা ইরফানের বুকে আরেকটু গভীরে ভাবে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে হার্টবিট শুনতে লাগলো যা বরাবরের মতো বলে দিচ্ছে,,,ভালোবাসি আয়ু জান।।। তুমি আমার #বিষাক্তময়_আসক্তি।।।।।।।
“আলো আঁধারের ভালোবাসা হচ্ছে গভীর ভালোবাসা।।।যারা একে অপরের পরিপূরক। একজন ছাড়া অন্যজনের কোনো অস্তিত্ব নেই।।আধার শেষে আলো আর আলো শেষে আঁধার উভয়ে মিশে একাকার।।।।।
(সমাপ্ত),,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,💞
🚩অবশেষে শেষ হলো বিষাক্তময় আসক্তি গল্পটি।। সকলের ভালোবাসা দীর্ঘ অনেক সময় নিয়ে লেখা এই গল্পটি।।।জীবনে প্রথম লেখা গল্প তাই অনেক ভুল হয়েছে তাই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।।।যারা প্রথম থেকে পাশে ছিলেন অসংখ্য ধন্যবাদ। অনেকের গঠন মূলক মন্তব্য অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়েছে।। তাদের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।।। প্রথম লিখা গল্প বলে যেমনটা লিখতে চেয়েছি তেমনটা লিখে উঠতে পারিনি আর এর মূল কারণ নতুন নতুন বাংলা টাইপ আর সময়ের অভাব।।যখন গল্প শুরু করেছি তখন সময় থাকলেও তখন বিভিন্ন কারণে গল্প দিতে পারিনি।। বিভিন্ন ঝামেলার মাঝে এই গল্পটা লিখিছি তাই আমার ভাবনার মাঝে থাকা গল্পটার একশো ভাগের এক ভাগও ঠিক ভাবে উপস্থাপন করতে পারি নি এটা আমার ধারণা। তবুও নতুন গল্পের দিক থেকে ভালো সাপোর্ট পেয়েছি।।
🚩 অনেকেই সিজন ২চেয়েছেন কিন্তু এখন সিজন ২দেওয়া হবে না।। সিজন ২ ভেবে রাখলেও ওটা আমি আরো কয়েকটি গল্প লেখার পর শুরু করবো। তাঁর কারণ আমি সিজন ২ আমার বেস্ট দিয়ে লিখতে চাই আর তাঁর জন্য প্রয়োজন অনেক সময় আর লেখালেখির পাকাপোক্ত।।তাই সিজন ২আসতে সময় নিবে।।এই সিজনের রিচের উপর ভিত্তি করে ২ আসবে।।তাই গল্পের রিভিউ দেওয়ার অনুরোধ রইল।।
পরবর্তী গল্প আসতে একটু সময় নিবে। আশা করি সবাই পরবর্তী গল্পের জন্য অপেক্ষা করবেন।। ধন্যবাদ সবাইকে 💞।।।
আজকে অন্ততপক্ষে সাইল্যান্ট রিডাররা মন্তব্য করে যাবেন।।।
#হ্যাপি_রিডিং🦋
[লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম]