#সুখ
#Part_11
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona
সাকিবকে ভীষণ ভাবে লজ্জায় পরতে হলো নীলিমার জন্য। আয়ান যখন খাবার টেবিলে খেতে বসলো তখন সাকিব মুখ কাচুমাচু করে টেবিলে বসলো আর নীলিমাকে মনে মনে বলল
-তোমার মজা হবে দেখো! স্বামী স্ত্রীর কথা অন্য কাউকে বলা বের করছি।
সাকিব দাঁতে দাঁত চেপে ব্রেকফাস্ট করলো। আয়ান আর সুহানা ও ব্রেকফাস্ট করে উঠে গেলো। সাকিব উপরে উঠছে আর পিছু ফিরে নীলিমাকে বলল
-নীলু উপরে এসো তো একটু।
-আচ্ছা আসছি। (নীলিমা)
সাকিব উপরে গিয়ে খাটে বসে পা ঝুলাচ্ছে আর নীলিমা তখন ঘরে ঢুকে।
-কেন ডেকেছেন বলুন? (সাকিবের দিকে তাঁকিয়ে নীলিমা)
-তোমার মাথায় কি ন্সেন্স নেই? (নীলিমাকে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে সাকিব)
-কেন কি করেছি?? (বুক কাঁপছে নীলিমার)
-আয়ান আর সুহাকে বলেছো আমি তোমাকে কালকে ঘুমাতে দেয়নি। এসব কি কেউ কাউকে বলে? স্বামী স্ত্রীর কথা শুধু স্বামী স্ত্রী ই জানবে। সেইটা কি জানো না??
-না এখন জানলাম। (চোখ বন্ধ করে নীলিমা)
-আর যদি কোনোদিন এসব শুনি সেদিন তোমার একদিন কি আমার যত দিন লাগে। (নীলিমাকে ছেড়ে দিয়ে সাকিব)
-কেন কি করবেন আপনি? আর জানলে কি হবে? (শাড়ি ঠিক করে নীলিমা)
-জানলে কি হবে মানে? এই ফাজিল আমাদের কথা অন্যকেউ জানবে কেন? (রেগে গিয়ে সাকিব)
-হ্যা জানলে কি হবে সেইটাই তো জানতে চাইছি।
-জানাবো ওয়েট! এখন না। এখন তো অফিস টাইম। অফিস থেকে এসে রাতে যখন ঘুমাবো তখন জানাবো। এখন সরো এখান থেকে।
শার্ট আর প্যান্ট নিয়ে সাকিব ওয়াশরুমে চলে যায়। আর নীলিমা হাসতে হাসতে পেট ধরে বসে পরে। আর মনে মনে বলে
-সাকিব আহম্মেদ তাহলে লাইনে আসছে। যাক আসুক। (হাসতে হাসতে নীলিমা)
সাকিব রেডি হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয় আর নীলিমা সাকিবকে বলে
-আপনি রাতে নাকি আমাকে কি জানাবেন সেইটা কি আমি আয়ান আর সুহানাকে জানাবো? পরিবারের সদস্য হিসেবে ওদের ও তো জানা দরকার। (নিজের হাসি কন্ট্রোল করে নীলিমা)
-নীলিমা এইবার কিন্তু বেশি হচ্ছে। এসব ভুলেও বলবেনা ওদের। যদি শুনি তাহলে কিন্তু (নীলিমার দিকে তাঁকিয়ে সাকিব)
-কিন্তু কি? (চোখ নাচিয়ে নীলিমা)
-কিছুনা। (বিরক্ত হয়ে সাকিব টাই বাঁধছে)
-আচ্ছা আপনি টাই বাধুন আমি ওদের বলে আসি যে আপনি নাকি আমায় কি জানাবেন রাতে। যদি ওরা জানে তাহলে ওদের থেকেই জেনে নিব নে। গেলাম আমি।
পা বাড়িয়ে নীলিমা দুই পা এগিয়ে গেলো তখন সাকিব নীলিমার হাত ধরে বিছানার উপর এক টানে ফেলে দিয়ে ওর উপর উঠলো।
-কি করছেন আপনি? (সাকিবকে ধাক্কা দিয়ে নীলিমা)
-দাঁড়াও দেখাচ্ছি কি করছি। এখানেই চুপচাপ এভাবে শুয়ে থাকবে, নড়বেনা। (সাকিব উঠে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিয়ে আসলো)
সাকিব আবার নীলিমার কাছে গিয়ে নীলিমাকে কিস করলো আর নীলিমার পেট থেকে শাড়ির আচল সরিয়ে পেটে চুমু দিল আর পেটে হাত রাখলো। নীলিমা চোখ বন্ধ করে চাদর খামচে ধরে আছে। সাকিব নীলিমার উপর থেকে উঠে ড্রেসিংটেবিল এর সামনে গিয়ে চুল আঁচড়ালো আর নীলিমার দিকে তাঁকিয়ে বলল
-এখন আমি কি কি করেছি সেসব ও বলবা ঠিক আছে নীলু। (শয়তানি হাসি দিয়ে সাকিব)
-আপনি অনেক খারাপ। (উঠে বসে নীলিমা)
-আমি তো জানি আমি খারাপ। সেন্সলেস মেয়ের সেন্স ফিরিয়ে আনতে খারাপ হতেই হবে। মানিব্যাগ টা দাও আর বলো কিন্তু ওদের ঠিক আছে। হাহাহাহা!
সাকিব হাসতে হাসতে বেরিয়ে যায়। আর সাকিব বের হওয়ার পর নীলিমা বারান্দায় দাঁড়ায়। সাকিব গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে সেইটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলো নীলিমা। সাকিব চলে যাওয়ার পর নীলিমা ঘরে এসে আয়নায় নিজের গাল আর ঠোঁট দেখলো। লাল হয়ে গেছে ঠোঁট দুটো। নীলিমা লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ফেলল। সারাদিন নীলিমা হাসিমুখে ছিল। সবার সাথেই আজকে নীলিমা অনেক মজা করেছে।
রাত ১০ টায় সাকিব বাসায় আসে। তিশা আর তুলিকে নীলিমা খাইয়ে দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। আয়ান আর সুহানাও যার যার ঘরে চলে যায়। আম্মুকে ওষুধ খাইয়ে দিয়ে এসে নীলিমা ডায়নিং এ বসে থাকে। তার কিছুক্ষণ পরেই সাকিব বাসায় ঢুকে। নীলিমাকে ডায়নিং এ বসে থাকতে দেখে সাকিব জিজ্ঞেস করে
-এখানে বসে আছো কেন এইভাবে?
-ওহ আপনি আসছেন। যান উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসেন। আমি খাবার বাড়ছি।
-তুমি খেয়েছো?
-না।
-কেন?
-আপনার সাথে খাব।
-ওরা সবাই খেয়েছে?
-হ্যা সবাই খাওয়া দাওয়া করেছে আর তুলি, তিশা ঘুমিয়ে গেছে।
-আচ্ছা তুমি বস আমি আসছি।
-হুম।
কিছুক্ষণ পর সাকিব ফ্রেশ হয়ে আসে। সাকিবের চুল থেকে টপটপ করে পানি পরছে৷
-চুল মুছেন না কেন? (নীলিমা)
-চুল মুছতে আমার ভাল লাগেনা তাই।
-পানি পরে সেইটা ভাল লাগে না??
-হু।
-আমি মুছিয়ে দিচ্ছি!
-ওই না।
-চুপ থাকুন তো।
নীলিমা ওর শাড়ির আচল দিয়ে সাকিবের চুল মুছে দেয়। সাকিব হাত দিয়ে ওর চুলগুলো ঠিক করে।
-ঠান্ডা, জ্বর আসলে পরে আমাকেই দেখতে হবে তাই সাবধান কিন্তু হু! (নীলিমা)
-এহ আসছে।
-খান এখন!
-তুমিও খাও।
ওরা দুইজন ডিনার একসাথে করলো। ডিনার শেষ করে সাকিব উপরে চলে গেলো আর নীলিমা সব গুছিয়ে পুরো বাড়ির বাতি নিভিয়ে উপরে গেলো। সাকিব চশমা পরে বই পড়ছিলো আর চুলগুলোতে জেল লাগিয়েছে। নীলিমা দরজা লাগিয়ে দিয়ে হাসতে হাসতে সাকিবকে জিজ্ঞেস করে
-চশমা?
-হু কেন? (বই থেকে চোখ না সরিয়েই সাকিব)
-জোস লাগছে কিন্তু আপনাকে। আবার ক্রাশ খেয়ে গেলাম। (মনে মনে নীলিমা)
-থ্যাংক ইউ! (বইয়ের পাতা উল্টে সাকিব)
-এত মনোযোগ দিয়ে কি পড়ছেন?
-থ্রিলার সিরিজ।
-পাগলের সুখ মনে মনে! আচ্ছা পড়ুন। আমি চেঞ্জ করে আসি।
-আচ্ছা।
চলবে
*আভি তো পার্টি শুরু হুইয়ে