কলঙ্কের ফুল – পর্ব ৫

0
433

#কলঙ্কের_ফুল
#পর্ব_৫
#Saji_Afroz
.
.
.
-দিবা তোর ভাইয়া আমাকে নিয়ে কিছু বলেছে তোকে?
.
সানিয়ার কথায় হাসি পায় দিবার। হুম বলেছেতো… তুমি একটা টানকিবাজ মেয়ে। তোমার মতো মেয়েকে ভাইয়া বিয়ে করবেনা।
মনে মনে কথাগুলো বললেও বাইরে কিছু প্রকাশ না করে দিবা বলে..
-নাহ আমাকে কিছু বলেনি।
-ওহ। আমি লজ্জায় ওকে ফোন দেয়নি। ভেবেছি আকদের পর কথা হবে। কিন্তু বাবা বলেছে বিয়ে আরো পরে হবে। এতোদিন অপেক্ষা করা কি সম্ভব! তাই আজ এসেছিলাম। কিন্তু দেখ আমার ভাগ্যটায় খারাপ। তোর ভাই বন্ধুর বাসায় থেকে গিয়েছে। ফোনটাও অফ।
-হুম।
-আচ্ছা….
-কি?
-যার বাসায় গিয়েছে তার ফোন নাম্বার আছে তোদের কাছে?
-না আপি নেই।
-উফ্ফ এতো মিস করছি তোর ভাইকে।
-হুম।
.
কিছুক্ষণ চুপ থেকে সানিয়া আবার বলে-
জানিস দিবা? আমার লাইফটায় আমি অনেক ছেলের সাথে সম্পর্ক করেছি। মজা করেছি অনেকের সাথে। কিন্তু আদিকে কখনো আমার প্রেমে ফেলানোর চেষ্টা করিনি। কেনো জানিস?
তোর ভাইটা একদম বাচ্চা স্বভাবের একটা ছেলে। প্রেম ট্রেম বুঝতো কিনা সন্দেহ। আমি সবসময় টাউট, আবুল মার্কা ছেলেদের সাথে প্রেম করেছি। অনেকেতো জীবনও উৎসর্গ করতে রাজী ছিলো। কিন্তু আমি তাদের ইমোশান নিয়ে খেলেছি।
-কেনো এমন করতে আপি?
-মজা পেতাম। কিন্তু এখন বুঝেছি আমি ভূল ছিলাম।
-কিভাবে বুঝলে?
-আদির জন্য। আদির একটা বন্ধুর সাথে সম্পর্ক ছিলো আমার। তাকেও ঠকিয়েছি আমি। ছেলেটা অনেক কষ্ট পেয়েছিলো। তার সাথে ব্রেকাপ এর পর হঠাৎ একদিন আদি এসে আমাকে একটা থাপ্পড় মারে ডান গালে।
-কি! ভাইয়া থাপ্পড় মেরেছে তোমায়?
-হুম। কিন্তু ওই থাপ্পড় খেয়েই তোর ভাইয়ার প্রেমে পড়েছি আমি।
-কি বলো? থাপ্পড় খেয়ে প্রেমে পড়েছো! হাহাহা।
-হাস হাস। কিন্তু এটাই সত্যি।
-থাপ্পড় খেয়ে প্রেমে পড়ার কারণ কি?
-ওই থাপ্পড় টা খেয়েই আমার আক্কেল খুলেছে। থাপ্পড় মেরে তোর ভাইয়া আমাকে বলেছিলো, যেদিন কাউকে ভালোবাসবো কিন্তু পাবোনা সেদিন বুঝবো আমি তার বন্ধুর কষ্ট।
সেদিনের পর থেকে আমি ভেবেছি, অনেক ভেবেছি। আসলেই আমি ভুল ছিলাম। মজা করতে করতে মানুষের মন নিয়ে খেলেছি আমি।
-হুম।
-সেদিন আদি আরো বলেছিলো আমি যদি ভালো হয়ে যায় যেকোনো ভালো ছেলেকেই আমার জীবন সঙ্গী হিসেবে পাবো আমি। আর তাই নিজেকে পরিবর্তন করেছি আমি।
-হুম।
-আদির কথাগুলোতেই ওকে ভালোবেসে ফেলেছি আমি। ওকে নিজে বলতে পারিনি। আব্বু যখন আমাকে বিয়ের কথা বলে তখন আমি আদির কথা বলি। আব্বুকে বলেছিলাম আমজাদ আঙ্কেল কে বলার জন্য। যদি আদি রাজি থাকে বিয়ের কথা আগাতে। আদি যে রাজি হবে ভাবতে পারিনি আমি।
-ভাইয়া রাজি হয়েছে তোমার আব্বু বলেছে তোমাকে?
-হুম। আমি অনেক খুশি দিবা। অনেক খুশি।
আদির পছন্দ মতোই চলবো এখন থেকে।
কাল মার্কেটে গিয়ে সালোয়ার কামিজ, শাড়ি কিনে এনেছি। আদির এসব জিন্স, টপস পছন্দ না তাই। আর জানিস….
.
খুশিতে সানিয়া বকবক করে চলেছে। সানিয়ার জন্য দিবার অনেক খারাপ লাগছে। সানিয়া বদলে গিয়েছে। সে বদলে গিয়েছে জানলে আদি কি মেনে নিবে তাকে?? হয়তো নিবে। যেভাবে হোক আদিতে জানাতে হবে সানিয়ার কথা।
.
.
.
-কি ব্যাপার আজ কাজে যাবেনা তুমি?
.
স্ত্রীর কথায় হাতের মোবাইলটা বিছানার এক পাশে রেখে সিরাজ বলে-
নাহ যাবোনা।
.
সিরাজের পাশে বৃষ্টি বসে বলে-
কেনো শুনি?
-আজ আমার বউটাকে নিয়ে বাইরে কোথাও যাওয়ার ইচ্ছা আছে। আর কিছুদিন পর থেকে সেতো বের হতে পারবেনা।
-কেনো পারবেনা?
-বারে বড় পেট নিয়ে কি করে বের হবে?
-ওহ! হেহে।
-বলো কোথায় যাবে?
-ইশ…..
-কি?
-সকালে কথাটা বললে আদি ভাই আর মেহেরীকাকে যেতে দিতাম না। ওদের সাথে নিয়ে ঘুরতাম। কতো মজা হতো তাইনা?
-হুম তা হতো। তখন মাথায় আসেনি।
-হুম।
-আরে যাওয়া যাবে ওদের সাথেও কোনো একদিন। আছেইতো।
-যেভাবে বলছো যেনো সত্যি সত্যি জামাই বউ ওরা!
-হাহা। তাইতো!
-হুম।
-তাহলে মনে হচ্ছে আরো আগেই ওদের সাথে ঘুরতে যেতে পারবে।
-কেনো?
-সানিয়ার থেকে মুক্তি পেলেও আদির বাবা এতো সহজে মেনে নিবে কিনা সন্দেহ এসব। দেখো আদি আর মেহেরীকাকে নাকি আবার আমাদের বাসায় আসতে হয়।
-হেহে।
.
.
.
আদির রুমে আসে সানিয়া। চোখ বুলিয়ে দেখছে সে রুমটা।
বড় একটা রুম। দেওয়ালে হালকা গোলাপী রং করা। রুমের মাঝখানে বড় একটা খাট। তার পাশেই একটা ছোট টেবিল আছে।
একটা ওয়ারড্রব, একটা কম্পিউটার টেবিল, একটা পড়ার টেবিল, একটা বুক সেলফ, দেওয়াল ঘেষে সোফা সেট সব মিলিয়ে রুমটা বেশ সাজানো গোছানো।
এই রুমটা কিছুদিন পর থেকে তারও হবে ভেবে মনের মাঝে একটা ভালো লাগা কাজ করছে।
টেবিলে চোখ পড়তেই সানিয়া দেখতে পায় একটা ফটোফ্রেম যেটাই আদির ছবি রয়েছে।
কাছে গিয়ে ফ্রেমটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ দেখতে থাকে সানিয়া।
ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে ছবির দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে-
এই যে? ফোনটা অফ কেনো? বিয়ে করবে বলতে পেরেছো কিন্তু আমার সাথে কথা বলতে পারছোনা এটা কেমন কথা! আমিতো মেয়ে বলে লজ্জায় বলিনি। কিন্তু তুমি? খুব খুব খুব পঁচা তুমি। কতগুলা মিস করছি তোমায় জানো? ভেবেছিলাম আজ সময় কাটাবো তোমার সাথে।
.
কিছুক্ষণ চুপ থেকে ছলছল চোখে আবার বলতে শুরু করে সানিয়া-
আমার ভুল সব ভুলে গিয়ে আমাকে তোমার জীবনে ঠাঁই দিচ্ছো তুমি আদি! এতো ভালো কেনো তুমি? আমি কি সত্যি তোমাকে পাওয়ার মতো যোগ্য?
উফ্ফ কতো কথা জমা আছে বলার জন্য। কতো প্রশ্ন আছে করার জন্য। কিন্তু তোমার কোনো খবর নেই।
.
চোখের কোণে আসা পানি হাতের এক আঙুল দিয়ে মুছে নেয় সানিয়া। আদির ছবিটায় একটা চুমু খেয়ে নিজের বুকের মাঝে জড়িয়ে রাখে সে।
.
.
এতক্ষণ দরজার পাশে দাঁড়িয়ে সবটা দেখেছে দিবা। সানিয়ার এতো পরিবর্তন দেখে অবাক সে।
সানিয়ার মনটা খারাপ আপাতত। তাকে নিয়ে বাইরে কোথাও থেকে ঘুরে আসা যায় তাতে যদি মনটা ভালো হয়।
.
-সানিয়া আপি?
.
দিবার ডাকে সানিয়া বুক থেকে আদির ছবি সরিয়ে তাড়াতাড়ি টেবিলের উপর রাখতে রাখতে বলে-
আমি আসলে….
-থাক থাক আমি কিচ্ছু দেখিনি।
-হেহে।
-আপি চলো আমরা বাইরে কোথাও থেকে ঘুরে আসি?
-এখন?
-হুম।
-ঠিক আছে চল।
-আমি ঝটাপট রেডি হয়ে আসি। তুমিতো রেডি আছোই।
-ঠিক আছে, যা।
.
.
.
আরিফ অফিসে চলে গেলে বড্ড একা লাগে মিলির। অফিসের সব কাজ আরিফকেই সামলাতে হয়। মাঝেমাঝে এমন হয় যে সকাল ৭টাই গিয়ে রাত ১টাই আসে সে। আজও সকাল সকাল চলে গিয়েছে সে। একা মানুষ আর কতো সামলাবে! কখন যে ভালো করে আরিফের সাথে সময় কাটিয়েছিলো সে মনেই পড়েনা। প্রেমের বিয়ে তাদের। অথচ কেউ দেখলে বলবেনা সেটা।
ইশ…….
আগের দিনগুলি যদি ফিরে পাওয়া যেতো! মন্দ হতোনা।
এসব ভেবে হতাশ মনে নিজের রুমে বসে থাকে মিলি।
.
.
দিবা তৈরী হয়ে এসে সালেহা চৌধুরী কে বলে সানিয়াকে নিয়ে বেরিয়ে পরে।
.
.
২০মিনিট পর……
.
চৌধুরী বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে আদি আর মেহেরীকা।
নাটক হলেও তাদের জীবনের নতুন মোড় আজ।
.
সুন্দর একটা বাড়ি। ঠিক যেনো বাংলো বাড়ি, যেমনটা টিভিতে দেখতো সে। এমন একটা বাড়ির বউ হয়ে সে আসবে কল্পনাও করেনি।
ওহ বউ না নকল বউ। এসব ভেবে আনমনে হেসে উঠে মেহেরীকা।
.
এই যে?
.
আদির ডাকে তার দিকে তাকিয়ে মেহেরীকা বলে-
কি যে?
.
মুচকি হেসে আদি বলে-
কি কি শিখিয়ে দিয়েছিলাম মনে আছে?
-হুম আছে।
-ঠিকমতো পারবেন তো নাটক করতে?
-আমিতো পারবো কিন্তু মনে হচ্ছে তুমি পারবেনা।
-মানে?
-মানে আমাদের তুমি করে বলার কথা ছিলোনা? ভূলে গিয়েছো?
-ওহ হ্যাঁ! হাহা।
-কি মনেহয়? পারবো?
-হুম পারবে।
.
.
.
এরশাদ ভাইকে জানিয়েছো সব?
.
স্ত্রীর কথায় মাথা নেড়ে জবাব দেয় আমজাদ চৌধুরী-
হুম।
-কি বলেছেন উনি?
-সানিয়া যাতে কিছু না জানে। আদি ফিরলে তাকে বুঝাতে।
-হুম।
-সানিয়া কোথায় এখন?
-দিবার সাথে বাইরে গিয়েছে।
-মেয়েটা বড্ড মিশুক তাইনা?
-হুম।
.
.
নিজের রুম থেকে বের হয়ে হাটাহাটি করছে মিলি।
ড্রয়িংরুমে শ্বশুর-শ্বাশুরীকে বসে থাকতে দেখে মিলি এসে তাদের পাশে সোফায় বসতে বসতে বলে-
সানিয়া যে মেয়ে… আদি তার ভয়ে পালিয়েছে জানলে লঙ্কা কান্ড বাঁধাবে।
.
গম্ভীর মুখে আমজাদ চৌধুরী বলেন-
সানিয়া কেমন মেয়ে তোমার আর না বললেও চলবে। আর আদি পালিয়েছে আদি পালিয়েছে এসব সারাক্ষণ না বললে হয়না তোমার? সানিয়া শুনুক এটা চাও তুমি?
-সানিয়াতো এখানে নেই বাবা।
-দেয়ালেরও কান আছে।
-তাই! তাহলে নাকও থাকার কথা। কিন্তু দেখিনা কেনো বাবা?
.
মিলির কথায় প্রচণ্ড রাগ লাগলেও নিজের রাগ সংযত করেন আমজাদ চৌধুরী।
মিলির স্বভাব তার অজানা নয়। কখন কি বলতে হয় জানেনা, কখন কি করতে হবে বুঝেনা। তার ছেলে যে কেনো একটা বোকা মেয়ে বিয়ে করে নিয়ে এসেছে বুঝেননা তিনি।
.
.
-মা??
.
দরজার পাশ থেকে মা ডাক শব্দ আসতেই চমকে যান সালেহা চৌধুরী।
সোফা ছেড়ে উঠে দরজার পাশে গিয়ে আরো চমকে যান তিনি।
যতটা না খুশি হয়েছেন নিজের ছেলেকে দেখে ততটায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন ছেলের পাশে বউ সাজে একটি মেয়ে দেখে।
.
-এই এই কে তুমি??
.
কথাটি বলে তাদের সামনে এগিয়ে আসে মিলি। মেহেরীকার খুব কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে-
কে তুমি? এমন সাজে এখানে কেনো?
.
মেহেরীকাকে চুপ থাকতে দেখে সালেহা চৌধুরী আদির উদ্দেশ্যে বলেন-
আদি কে এটা?
.
দূরে বসে থাকা বাবার দিকে তাকিয়ে আদি বলে-
ও মেহেরীকা। আমার স্ত্রী।
.
পরিবেশটা থমথমে হয়ে যায়। কারো মুখে কোনো কথা নেই। মিলি আর সালেহা চৌধুরী তাকিয়ে আছেন মেহেরীকার দিকে।
কিন্তু আমজাদ চৌধুরী তার চোখের চশমা ঠিক করে টেবিলের উপরে থাকা পত্রিকাটা নিয়ে পড়া শুরু করেন।
.
.
চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখতে থাকে মেহেরীকা। বাইরে থেকে যতটা সুন্দর ভেতরেও ততটা সুন্দর বাড়িটা। আসবাবপত্র গুলো বাড়ির সৌন্দয্য আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
.
মেহেরীকার কাঁধে হাত রেখে আদি বলে-
মেহের উনি আমার মা আর পাশে দাঁড়ানো আমার ভাবী। দূরে যাকে দেখছো তিনি আমার বাবা।
.
মেহেরীকা মৃদু একটা হাসি দিয়ে সালেহা চৌধুরীর কাছে গিয়ে পায়ে ধরে সালাম করে তাকে বলে-
মা ভালো আছেন?
.
এতো মিষ্টি কোনো মেয়ের কণ্ঠ হতে পারে!
মন ভরে যাওয়ার মত কণ্ঠ। আর দেখতেও একদম একটা পরী। মৃদু হাসিটাও কতো মায়াবী। এটা কি সত্যি তার ছেলের বউ?
.
-মা?
.
মেহেরীকার ডাকে ঘোর কাটে সালেহা চৌধুরীর। মুচকি হেসে বলেন-
ভালো আছি। এসো ভেতরে এসো।
.
এপর্যায়ে আমজাদ চৌধুরী দাঁড়িয়ে কথা বলে উঠেন-
দাঁড়া আদি…..
.
বাবাকে কথা বলতে শুনে গলা শুকিয়ে যায় আদির। এই প্লানটাও কি কাজ হবেনা?
তাকে কি আবারো ঘর ছাড়া হতে হবে?
.
নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে আমজাদ চৌধুরী বলেন-
এই মেয়েটা তোর স্ত্রী! কখন বিয়ে করলি শুনি?
-কাল।
-ওহ তাই! এতোদিন কোথায় ছিলো এই মেয়ে?
.
শ্বশুরের কথা শুনে মিলি বলে উঠে-
আরে বাবা কই থাকবে! বাসায় ছিলো। আপনি আদির সাথে সানিয়ার বিয়ে দিতে চাইছিলেন। বলেছিলেন বাসায় ফিরলে সানিয়ার সাথে বিয়ে করিয়ে দিবেন। তাই আর কি বেচারা এতোদিনের গোপন প্রেমিকাকে বিয়ে করে নিয়ে এসেছে ঘর ছাড়া না হওয়ার জন্য।
.
ভাবীর কথা শুনে বাবার দিকে তাকিয়ে আদি বলে-
হুম বাবা। ভাবী যা আইডিয়া করেছে সব সত্যি।
কিছুক্ষণ চুপ থেকে নিজের রাগ সংযত করে আমজাদ চৌধুরী বলেন-
ভালোতো, ভালোই। এখন এক কাজ কর। যেখান থেকে এই মেয়েকে নিয়ে এসেছিস তাকে রেখে আয়।
.
মাথা নিচু করে আদি জবাব দেয়-
সম্ভব না বাবা।
-ওহ তাই! তাহলে তাকে নিয়ে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যা। আর কখনো যেনো তোকে আমার বাড়ির আশেপাশে না দেখি।
.
যে ভয়টা পেয়েছিলো সেটাই হলো। এতো প্লান সব ভেস্তে যাবে!
.
আদিকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আমজাদ চৌধুরী বলেন-
দাঁড়িয়ে আছিস কেনো? কথা কানে যায়না?
.
সালেহা চৌধুরী স্বামীর দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেন-
অনেক বলেছো তুমি। আর না। আজ যদি আদিকে বাড়ি ছাড়তে হয় আমিও তার সাথে চলে যাবো।
.
অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আমজাদ চৌধুরী বলেন-
সালেহা!
-এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই।
-সালেহা তোমার ছেলে অন্যায় করেছে। আমাদের না জানিয়ে সে বিয়ে করেছে। অথচ ওর অন্য একটা মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক ছিলো।
-তার জন্য নতুন বউ নিয়ে বাড়ি ছাড়া হবে?
-হুম হবে।
-ঠিক আছে। আমিও হবো।
.
ছেলেকে উদ্দেশ্য করে সালেহা চৌধুরী বলেন-
চল আদি। আমিও তোদের সাথে যাবো।
-না মা এটা হয়না।
.
-হুম মা। আপনি কেনো যাবেন? যে দোষ করেছে সে যাক না।
.
মিলির কথা শুনে রাগে কটমট করে সালেহা চৌধুরী বলেন-
তুমি আপাতত চুপ থাকো।
.
মিলিকে চুপ থাকতে দেখে তিনি বলেন-
বাসার সবার খেয়াল রেখো, আমরা গেলাম।
.
সালেহা চৌধুরী নিজের ছেলে ও তার বউ নিয়ে পা বাড়ায় সদর দরজার দিকে।
.
আদির জন্য আজ তার মাকেও যে ঘর ছাড়া হতে হবে ভাবেনি। সবকিছু ঘোলাটে হয়ে গেলো। এখন কোথায় যাবে তারা!
.
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here