#প্রনয়
#নুসরাত সুলতানা সেজুথী
পর্ব — ১৫
নেহালের কেবিন রুদ্রর মতো নয়।রুদ্রর মতো ফুটবলের মাঠ নিয়ে বসেনি উনি।ঠিক যত টুকু জায়গা দরকার ততটুকুই ব্যাবহার করেছেন কেবিন হিসেবে।সেঁজুতি চোখ ঘুরিয়ে এদিক ওদিক দেখলো।বিশেষ কিছু চোখে লাগলোনা।এখান থেকে বাইরেটাও দেখা যায়না।সেঁজুতি নেহালের দিকে তাকালো।তিনি এখনও ওর দিকে চেয়ে।কেমন অদ্ভূত দৃষ্টি। টেবিলের মুখোমুখি চেয়ারে বসে আছে সেজুথি আর অপর পাশে নেহাল।নেহাল টুকিটাকি কথা বলছেম।মুখের থেকে লোকটার চোখ চলছে বেশি। শরীরের দিকে তাকাচ্ছেন বারবার।ব্যাপার টা যতবার ই সেজুথি বুঝতে পারছে তত বার ই নঁড়েচড়ে গাট হয়ে বসছে।
— স্যার! তবে কি আপনি মিটিং ফিক্সড করতে রাজি আছেন?
সেঁজুতি মৃদূ কন্ঠে শুধালো।নেহাল বললেন,
‘আপনার বস এতো ঘনঘন মিটিং কেনো চাচ্ছেন? আমার নিজেরও কিছু কাজ থাকে তাইনা?হূটহাট বললেই তো হয়না।
সেঁজুতি রুদ্র অার নেহালের ব্যাপারে আগামাথা কিছুই জানেনা।এ প্রেক্ষিতে তার উত্তর কী হওয়া উচিত জানেনা সেটাও।চুপ থাকবে নাকী উত্তর দেবে এই নিয়েই দ্বিধাদ্বন্দে ভুগলো।নেহাল জিজ্ঞেস করলেন,
— হ্যালো মিস,,কিছু ভাবছেন??
সেঁজুতি মাথা নেঁড়ে বলল,
— জ্বি? না।
নেহাল চেয়ারে হেলান দিয়ে বললেন,
“মিটিং ফিক্সড করতে আমার কোনো অসুবিধে নেই। কিন্তু শিডিউল আমি এক্ষুনি দিতে পারছিনা।কোথায় কোন মিটিং আছে চেক করতে হবে। আমি না হয়, শিডিউল আপনাদের অফিসে আমার এসিস্ট্যান্ট কে দিয়ে পাঠিয়ে দেবো।
সেঁজুতি ব্যাস্ত কন্ঠে বলল,
— না,না স্যার,আপনার কষ্ট করে পাঠাতে হবেনা।আমরা ব্যাবস্থা করেই রেখেছি।
সেঁজুতি ফাইল থেকে কাগজ বের করে নেহালের সামনে রাখলো।
” এই দেখুন স্যার,এই পেপার্স এ সমস্ত কিছু উল্লেখ করাই আছে। আপনি শুধু পুরো টা পড়ে সাইন করে দেবেন।তাহলেই হবে।
নেহালের মেজাজ বিগড়ালো।ভাবলো এই সুযোগে রুদ্রকে আরেকটু ঘোরাবে।চতুর লোকটা একটা ফাঁক ও রাখেনা মাছি পালানোর।মেকি হেসে বলল,
— ওহ আই সি,,,
খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কাগজের সব লেখা পড়লো নেহাল।তুষ্ট কন্ঠে বলল,
বাহ! টাইম মেইনটেইন তো বেশ ভালোই করেছেন।এরকম টাইমিং এ আমার কোনও আপত্তি থাকবেনা,। আমি সাইন করে দিচ্ছি…
‘ধন্যবাদ স্যার,
— পেন?
সেঁজুতি কলম এগিয়ে দেয়।নেহাল যেন সুযোগ সন্ধানী । কলম নেয়ার অজুহাতে নিজের হাত দিয়ে সেজুথির হাতে স্পর্শ করলো।ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মেজাজ খারাপ হলেও সেজুথি কোনও প্রতিক্রিয়া দেখালোনা।বা দেখাতে পারলোনা।
— নিন।
— ধন্যবাদ স্যার,এবার তবে আমি উঠি।
সেঁজুতি সন্তর্পনে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো।এতক্ষন লোকটার সামনে দম আটকে বসে ছিলো যেন।পৃথিবীর সব পুরুষই কী এমন?নারীদের শরীরেই তাদের আকর্ষন।সেঁজুতি উঠে দাড়াতেই ডেকে উঠলো নেহাল,
– শুনুন। আপনার পুরো নাম?
‘নুসরাত সুলতানা স্যার।
‘ ওকে মিস নুসরাত,
চেয়ার ছেড়ে উঠে এলো নেহাল।নেহাল কে এগোতে দেখে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে চাইলো সেজুতি। নেহাল ওর সামনে এসে দাঁড়ালো। দাঁত বার করে হাসলো।সেঁজুতি এলোমেলো দৃষ্টিতে আশেপাশে তাকাচ্ছে।কেন যেন গলা শুকিয়ে আসছে।অজানা আসঙ্কায় আড়ষ্ট শরীর। নেহাল সেঁজুতির পা থেকে মাথা অব্দি চোখ দিয়ে মাপলো।সেঁজুতিকে স্তব্ধ করতে দু আঙুল দিয়ে গালে স্লাইড করে বলল
“ইউ আর সো বিউটিফুল লেডি!
প্রসংশা শুনলে খুশি হওয়া উচিত।অথচ নেহালের বলার ভঙ্গিতে খুশির বদলে ফুঁসে উঠলো সেঁজুতি। তার ওপর লোকটা গায়ে হাত দিলো।সেঁজুতি একরকম ঝাঁড়া মেরে গাল থেকে নেহালের হাত টা সরিয়ে দিলো।শান্ত অথচ ঝাঁঝালো কন্ঠে বলল,
“আপনি আমার বসের সহকর্মী।বয়সেও আমার বাবার মতোই।তাই আপনার ভদ্রতা বজায় রাখা দরকার স্যার।
সেঁজুতি ভাবলো ব্যাপারটা এখানেই মিটে যাবে।নেহাল হয়তো অতোটাও অভদ্র হবেন না।নেহাল কে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে ধরলো।কিন্তু নেহাল তাকে ভুল প্রমান করলো নিমিষেই। খপাৎ করে হাত চেপে ধরলো নেহাল।সেঁজুতি বিস্ফোরিত চোখে তাকালো।নেহাল ভ্রু কুঁচকে বলল
” দেমাগ দেখাচ্ছো? তা ভালো।সুন্দরী মেয়েদের একটুআকটু দেমাগ না থাকলে ঠিক জমেনা।দেমাগী মেয়েদের বশ করতেও আমার খুব আনন্দ লাগে। কিন্তু এত্ত দেমাগ আমাকে দেখিয়ে লাভ নেই।সেকেন্ড হ্যান্ড জিনিসের আবার কীসের এত অহংকার!
সেঁজুতির মাথায় যেন বাঁজ পরলো।সেকেন্ড হ্যান্ড দিয়ে কী বোঝালো লোকটা? নেহাল কুটিল হেসে বলল,
” রুদ্র রওশনের বয়স যখন ২২, তখন থেকেই ওকে চিনি আমি।ওর সব খুঁটিনাটি জানি।রাতে ওর নারী সঙ্গের কথা বিজনেস এরিয়ার কে না জানে?আর তুমিতো সেখানে ওর পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট।সব পার্সোনাল কাজেই রুদ্রর তোমাকে দরকার তাইনা?প্লিজ এখন এটা বলোনা যে ওর সাথে বিছানায় যাওনি এখনও।রুদ্রর আশেপাশে যেসব মেয়েরা ঘুরঘুর করে সবাই ওর সাথে বেড শেয়ার করার জন্যে উঠেপরে লাগে।আর সেখানে তুমিতো এত্ত সুন্দরী। তোমাকে কি আর রুদ্র রওশন ছেড়ে দিয়েছে? শুধু শুধু নাটক করছো। আমার কথা মন দিয়ে শোনো,একবার ভেবে দেখো,ওই রুদ্র রওশনের থেকে বেডের টাকা বাড়িয়ে দেবো তোমাকে ,আর সাথে আমার পার্ফমেন্স ও ভালো হবে।চিন্তা নেই।
সেঁজুতি নিজেকে আর সংযত করতে পারলোনা।নেহাল থামতেই ঠাস করে এক চড় বসালো গালে।নেহাল হকচকালো প্রথমে।শরীরের সমস্ত রক্ত টগবগিয়ে ফুটে উঠলো তাৎক্ষণিক।গালে হাত বোলালো নিজের।হাটুর বয়সী মেয়ের থাপ্পড় খেলো সে? নেহাল যেন বিশ্বাসই করতে পারলোনা। ক্রোধে জ্বলে উঠলো চোখ দুটো।আগের থেকেও শক্ত করে চেপে ধরলো সেঁজুতির হাত।দাঁত পিষে বলল
— দুই টাকার মেয়ে!এতবড় সাহস তুই নেহাল উদ্দিন এর গায়ে হাত তুলিস?আজ তো তোকে এখানেই….
সেঁজুতির কপালে সূক্ষ্ণ ঘাম।ভেতরটা ঢিপঢিপ করছে।নেহাল এগিয়ে আসতেই পেছাতে শুরু করলো।কাঁপা গলায় বলল
” এ…এগোবেন না…দে…দেখুন আ..আমি কিন্তু চিৎকার করবো..লোক জড়ো করবো…
নেহাল তাচ্ছিল্য হাসলো,পৈশাচিক আনন্দে হৈ হৈ করে বলল,
” চেঁচা না,চেঁচা। যত পারিস চেঁচা। রেপ হবি আর না চেঁচালে হয়?আমিওতো মজা পাবোনা।এটা আমার অফিস। এখানে সবাই আমার গোলাম,তোর চিৎকার শুনলেও কেউ কিচ্ছু করতে আসবেনা।অবশ্য শুনবেই বা কিভাবে রুম টাই তো সাউন্ডপ্রুফ।হা হা হা।
নেহাল অট্টহাসিতে ফেঁটে পরলো। সেঁজুতির চোয়াল ঝুলে পরলো ওর কথা শুনে।পেছাতে পেছাতে দেয়ালেও পিঠ ঠেকে এলো।নেহাল তড়িৎ গতিতে সেঁজুতির গাল চেপে ধরলো এক হাতে।অন্য হাতে সেঁজুতির এক হাত শক্ত ভাবে বন্দি।নেহাল ঠোঁট এগিয়ে আনতেই চট করে ওর সারা মুখে পারফিউম স্প্রে করে দিলো সেজুতি।আচমকা হামলায় নেহাল ভঁড়কালো।স্প্রে চোখে নাকে ঢুকে গিয়েছে। জ্বলে যাচ্ছে সব।সেঁজুতি মাথা থেকে বেরিয়ে গেলো নেহালের।হাত দিয়ে মুখ ঢেকে চিৎকার করে উঠলো।
সেঁজুতি বিজয়ের হাসি হাসলো।উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলল,
— এখানে চিৎকার করে কোনও লাভ নেই বেহাল মশাই।সাউন্ড প্রুফ রুম বানানোর মজা বোঝ এবার।
কথাটা বলেই জোরে নিজের পা দিয়ে একটা লাথি বসালো নেহালের পায়ের আঙুলের ওপর।বেচারা একেতো চোখ ডলছিলো।পায়ের ব্যাথায় চিৎকার করে ওঠে আবারো। দৌড়ে টেবিলের কাছে আসে পানির গ্লাস হাতরাতে।বিড়বিড় করে বলল ‘ মা** তোকে মজা দেখাচ্ছি দাঁড়া।
সেঁজুতিকে আর পেলেতো?সেই কখন সে সুযোগ বুঝেই পগারপার।
_______
সি এন জি তে সারাটা রাস্তা কেঁদেছে সেঁজুতি। কাঁদতে কঁদতে হেচকি উঠেছে।বুদ্ধি করে না বাঁচলে আজ তার কী হতো? নেহাল নিশ্চয়ই তাকে ছিড়েখুঁড়ে খেতো।হয় মেরে ফেলে লাশ গুম করতো আর নাহলে ছেড়ে দিতো আশ মিটিয়ে।ওভাবে বাঁচলেও বা কী! ওটাতো মরার মতোই।জীবন্ত লাশ এক কথায়।সেঁজুতির সব রাগ ক্ষোভ গিয়ে পরলো রুদ্রর ওপর। অফিসে ঢুকে সোজা সে রুদ্রর কেবিনের দিকে ছূটলো।রুদ্র তখন গভীর মনোযোগে কাজ করছে। সেঁজুতির আসা টা লক্ষ্য করেনি। সেঁজুতি কোনও কিছুতে তোয়াক্কা করলোনা।রুদ্র অফিসের মালিক রীতিমতো ভুলে বসলো কথাটা।নক না করেই গটগটিয়ে রুদ্রর কেবিনে ঢুকলো।
তীব্র ক্রোধে হাতের ফাইলটাকে ছুড়ে মারলো রুদ্রর মুখের ওপর। অতর্কিত হামলায় রুদ্র হতভম্ব হয়ে সামনে তাকালো।সেঁজুতি শূন্য অভিব্যাক্তি তে চেয়ে আছে।চোখ মুখ ফুলে ফেঁপে একাকার।রুদ্রর সেসবে খেয়াল নেই।একটু আগের ঘটনাটাই ঘুরেফিরে মাথায় ঢুকলো তার।
রাগে চোখ মুখ শক্ত হয়ে এলো, চিৎকার করে বলল,
— হোয়াট দ্যা হেল,,,ইজ দিস?? তোমার সাহস কি করে হয় আমার গায়ে ফাইল ছুড়ে মারার?
রুদ্রর চিৎকারে ঈষৎ কেঁপে ওঠে সেঁজুতি।
অথচ ঘাবড়ায়না।রুদ্রর মতোই পালটা চিৎকার ছুড়ে বলল
— এসব কি হচ্ছে সেটাতো আপনি আমাকে বলবেন। ইচ্ছে করে আমাকে এতো টা অসন্মান করিয়েছেন আপনি তাইনা?আপনার শিখিয়ে দেয়া কাজ ই করেছে ওই নেহাল তাইতো?
সেঁজুতির গলা বুজে এলো।
চোখদুটো আবার ভিজলো টলটলে পানিতে।রুদ্র ভ্রু কোঁচকালো।মেয়েটা কাঁদছে কেন? নরম স্বরে বলল,
— মানে?
সেঁজুতি চেয়ারে বসে পরলো।টেবিলে দুহাত রেখে মাথা গুজে হুহু করে কেঁদে উঠলো।রুদ্র চমকালো।উঠে এসে সেঁজুতির পাশে দাঁড়ালো।উদ্বিগ্ন হয়ে বলল,
— কি হয়েছে মিস সেজুতি? আপনি কাঁদছেন কেন?আমাকে বলুন….
সেঁজুতির কান্না থামলোনা।পিঠ কেঁপে কেঁপে উঠছে।রুদ্র একবার ছুঁতে গিয়েও হাত গুটিয়ে আনলো।মোলায়েম কন্ঠে বলল
— কি হলো,, আমাকে বলুন…কাঁদছেন কেনো আপনি??
সেঁজুতি চোখ তুলল।নাকের ডগা টা টকটকে লাল।ভেজা চোখের পাঁপড়ি।আর কেঁপে ওঠা ঠোঁট দুটোতে রুদ্র কিয়ৎ সময় গুলিয়ে যায়।তাল কাটে সেঁজুতির কথায়। নাক টেনে টেনে কাঁদতে কাঁদতে পুরো ঘটনাটাই রুদ্রকে বলল সেঁজুতি।
রুদ্র যেন বাকরুদ্ধ,বিস্মিত। নেহাল লোকটা খারাপ সে জানে কিন্তু এত দূর এগোবে সেটা ভাবেনি।ভাবলে সেঁজুতি কে কখনওই পাঠাতোনা।ক্ষুব্ধ রুদ্রর হাত মুঠো হয়ে এলো তাৎক্ষনিক।কপালের নীলাভ রগ দৃশ্যমান হলো। জ্বলন্ত চোখে আগুন দাউদাউ করছে যেন।
সেঁজুতি তখনও কাঁদছে।ফর্সা গালে অশ্রু কনা শিশিরের মতো লাগছে।রুদ্র জোরে একটা নিঃশ্বাস নিলো।ঘুরে গিয়ে নিজের চেয়ারে বসে বরফ কন্ঠে বলল
— মিস সেজুথি,এটা অফিস, আপনার কান্নার জায়গা নয়।
সেঁজুতির চেহারা রক্তশূন্য হয়ে এলো।অবাক চোখে তাকাতেই রুদ্র না চেয়েই বলল
‘এভাবে তাকানোর কিছু নেই।এসব আজকাল অহরহ ঘটছে।এগুলো ভুলে গিয়ে নিজের কাজে মন দিন।বড় বড় বিজনেসম্যান দের চরিত্রে এরকম একটু আকটু দোষ থাকে।
রুদ্র ল্যাবটবে কাজের ব্যাস্ততা দেখালো।
— হ্যা যেমন আপনার আছে।তাইনা…?
সেঁজুতি উত্তেজিত হয়ে পরলো রাগে।রুদ্রর প্রতি যেটুকু আস্থা অবশিষ্ট রইলো ধামাচাপা পরলো সেটুকুও।দাঁত চেপে কথা গুলো বলে উঠে দাড়ালো সেজুতি।পরমুহূর্তেই রাগে ফুঁসে বলল,
“ভেবেছিলাম আপনি যেমন ই হোন না কেনো একটা মেয়ের সন্মান হানি করতে চাওয়ার বিচার টা অন্তত করবেন।কিন্তু আমি ভুল ছিলাম,,আপনারা সব এক।সব।সেঁজুতি হনহন করে কেবিন ছেড়ে বের হয়। রুদ্রর মাঝে হেলদোল দেখা গেলোনা।ভাব এমন সেঁজুতির কথা কানেই ঢোকেনি তার।সে ব্যাস্ত।মহাব্যাস্ত।
___
সেঁজুতি অফিস থেকে ফিরেছে অনেকক্ষন।সারাটা অফিস মন মরা হয়ে থাকলেও বাড়ি এসেই মন ভালো হয়েছে মোটামুটি। আমির তিন রঙের সেমাই রেঁধেছে সেঁজুতির জন্যে।যেটা দেখতেই মুখে হাসি ফুটেছে। ছোট থেকেই এই সেমাই টা তার ভীষণ প্রিয়।কত গুলো রং একসাথে দেখা যায়।রঙিন সেমাই বেশ আনন্দ নিয়ে খেতো সে।আজ ও তাই।সব মন খারাপ ঝেরে ফেলে সেঁজুতি ফ্রেশ হলো।এক বাটিতে বাবার জন্যে আরেকটায় নিজের জন্যে সেমাই বেড়ে বাবার পাশে এসে বসলো ।আমির তখন টিভিতে চ্যানেল পাল্টাচ্ছেন।সেঁজুতি এক চামচ সেমাই মুখে তুলতে তুলতে টিভির দিকে তাকালো।হঠাৎ একটা চ্যানেলে চোখ আটকালো তার।তড়িঘড়ি করে বলল
‘বাবা দাঁড়াও দাঁড়াও,,আগের চ্যানেল টাতে দাও
তো,,
সেজুথির কথায় চ্যানেল পালটে আগের চ্যানেল ধরলো আমির।
-ব্রেকিং নিউজ……
“””””””””উত্তরার বিজনেসম্যান নেহাল উদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার….”””””””””””””””””””
সেঁজুতির খাবার গলায় আটকে এলো।চোখ যেন কোটর ছেড়ে লাফিয়ে আসে।এটাতো সেই নেহাল উদ্দিন।
চলবে…