কি_নেশায়_জড়ালে #পর্ব_৩ লেখিকা #Sabihatul_Sabha

0
707

#কি_নেশায়_জড়ালে
#পর্ব_৩
লেখিকা #Sabihatul_Sabha

রূপা নিচে আসতেই ওর আম্মু রাগী দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,’ এতোক্ষন কোথায় ছিলে..? সোহা বারবার তোমাকে খুঁজতে ছিলো। তুমি জানো মেয়েটা তোমাকে কতোটা ভালোবাসে।
রূপা ওর আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললো,’ এতো মানুষের চিৎকার চেচামেচিতে আমার সমস্যা হয় আম্মু। মাথা ধরে গিয়ে ছিলো তাই উপরে চলে গিয়ে ছিলাম। ‘
~তোমার আব্বুর কালকে স্কুল আছে তাই আমি চলে যেতে হবে। তুমি কয়েকদিন এখানে থাকো সময় হলে নাদিম তোমাকে নিয়ে বাসায় দিয়ে আসবে।
রূপাঃ সময় হলে মানে..? আম্মু আমি কোথাও থাকছি না। আমার নতুন একটা কোম্পানিতে ইন্টারভিউ আছে।
~ ইন্টারভিউ দেরি আছে। থেকে যাও ভালো লাগবে।

পেছন থেকে নাদিম বলে উঠলো, ‘ থেকে যা সোহা এসে তোকে দেখলে খুশি হবে। কাল তো বৌ ভাত অনুষ্ঠান। ‘
রূপা বিরক্ত মুখে নাদিম এর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ আমি সোহার সাথে ফোনে কথা বলে নিবো।’

এমনিতেই বাড়ির কারো মন ভালো না, সোহার জন্য সবার মন খারাপ।

রাতে রূপা বসে আছে ছাঁদে। পাশে গিয়ে দাঁড়ালো নাহিদা।

নাহিদা হলো রূপার ছোটো মামার মেয়ে ।

রূপার দুই মামা। নানু-নানাভাই অনেক আগেই মা-রা গেছে।

বড় মামার এক মেয়ে, সোহা। আর ছোটো মামার এক ছেলে এক মেয়ে, নাদিম, নাহিদা।

বড় মামি কে রূপার একদম পছন্দ না । উনার তাকানো, কথা বলার স্টাইল কিছুই রূপার পছন্দ হয়না। তবে ছোটো মামি মুটামুটি ভালোই আবার মিশুক ও।

রূপাও চলে যাচ্ছিলো কিন্তু ওর ছোটো মামি যেতে দেয়নি। উনার মুখের উপর না ও করতে পারেনি রূপা।
প্রায় মেহমান সবাই চলে গেছে।

নাহিদা রূপার দিকে তাকিয়ে বললো,’ আপু জানো আজকে সোহা আপুর শশুর বাড়ি থেকে কতো কিউট, সুন্দর, হ্যান্ডসাম ছেলে এসেছে। উফফ সোহা আপুর দেবর এতো হ্যান্ডসাম কি বলবো সাথে চাপ দাঁড়ি ছেলে তো নয় পুরাই চকলেট বয়।

রূপা বিরক্ত দৃষ্টিতে নাহিদার দিকে তাকালো।

নাহিদা সে দিকে পাত্তা না দিয়ে আবার বলতে শুরু করলো, ‘ জানো আপু আমার সাথে ধাক্কা খেয়ে ছেলের পাঞ্জাবি নষ্ট হয়ে গিয়ে ছিলো। আমি তো ছেলেটাকে দেখেই সেই লেভেলের ক্রাশ খেয়েছি। কি সুন্দর করে কথা বলে মন চায় টুপ করে খেয়ে ফেলি।

রূপা এতো সময় চুপ করে থাকলেও এবার বলে উঠলো, ‘ তোমার বয়স কতো নাহিদা…?’

নাহিদা কি ভাবলা জানা নেই লজ্জা পাওয়ার মতো একটা হাসি দিয়ে বললো, ‘ পনেরো বছর। ‘
রূপা অবাক হয়ে বললো,’ সবে পনেরো!। কিন্তু বয়সের তুলনায় একটু বেশি পেকে গেছো। এখন উঠতি বয়স যাকে দেখবে তাকেই ভালো লাগবে। নিজের মনকে নিজের আয়াতে আনো। তুমি এখনো বাচ্চা মেয়ে।

রূপার এইসব জ্ঞানের কথা নাহিদার একদম পছন্দ হলো না। সে জামার ভেতর থেকে মোবাইল বের করে ফেসবুকে ঢুকলো।
নাহিদার রূপাকে এই জন্য পছন্দ না। কিছু বললেই বলবে এমনটা করো না ওমনটা করোনা, তুমি ছোটো, প্রেম ভালোবাসা তোমার জন্য না। আগে বড় হও। কেনো যে সোহা আপু এতো পাগল রূপার জন্য নাহিদা বুঝে না।
রূপা আঁড়চোখে নাহিদার মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেললো। আজ-কাল বাচ্চাদের এই মোবাইল একদম নষ্ট করে দিয়েছে। এই যে পনেরো বছরের কিশোরী চেটিং এ ব্যাস্ত।

_________

আহনাফ বার বার সোহার সাথে কোনা না কোনো বাহানা দিয়ে কথা বলতে রুমে আসছে। বিভিন্ন ধরনের আজিব আজিব প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছে।

বিরক্ত হয়ে সুমাইয়া বললো,’ কি হয়েছে আহনাফ ভাই । তুমি তো সহজে বেশি কথা বলো না। তুমি আর সাজ্জাদ ভাই মনে হয় গুণে গুণে কথা বলো। কিন্তু আজকে প্রয়োজনের থেকে বেশি কথা বলছো। ভাবির চৌদ্দ গুষ্ঠির খরব জেনেও তুমি শান্ত হওনি এখন উনার কোথায় কোথায় বোন আছে..? নাম কি..? এইগুলো কি..? আমার মনে হচ্ছে তুমি আসলে ভাবির সম্পর্কে নয় অন্য কারো সম্পর্কে জানতে চাচ্ছো। সত্যি সত্যি বলে ফেলো আসলে তুমি কি জানতে চাচ্ছো..? আমি তোমার হেল্প করবো দরকার হলে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসবো।
আহনাফ সুমাইয়ার কথা শুনে হাসলো।
সুমাইয়া আহনাফ কে হাসতে দেখে বললো,’ বাহ্ ভাই আমার আইডিয়া সত্যি হয়ে গেলো। কে সেই সুন্দরী রমনী ..? বলো বলো ভাবি তোমার আরেক বোন আসছে তোমার জা হয়ে। অবশ্য ঘটক হবে ভাবি আর তুলে আনার দায়িত্ব আমার।
সুমাইয়ার কথা শুনে সবাই হেঁসে উঠলো।
আহনাফ সুমাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ সুমু তুই এই রুম থেকে বেরিয়ে যা। ভাবির সাথে আমার পারসোনাল কিছু কথা আছে।

আহনাফ এর কথা শুনে আরিফ ভ্রু কুঁচকে আহনাফ এর দিকে তাকালো। তার বউ এর সাথে আহনাফ এর পারসোনাল কি কথা..?
আরিফ আহনাফ এর দিকে তাকিয়ে বললো,’ যা বলার সবার সামনে বল পারসোনাল কিসের কথা..?? ‘

আরিফ এর বাচ্চাদের মতো কথা শুনে সুমাইয়া সহ বাকি সবাই শব্দ করে হেঁসে উঠলো।

আহনাফ বিরক্ত হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। কিভাবে জানবে সে রূপার সম্পর্কে? কোথায় আছে রূপা..?

[ চৌধুরী বাড়ি,

চৌধুরী সাহেব এর চার ছেলে। বড় ছেলে কবির চৌধুরী যার এক মেয়ে দুই ছেলে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। এক ছেলে ফাহিম দেশের বাহিরে থাকে। আরেক ছেলে আরিফ একজন ডাক্তার।
মেঝো ছেলে আজাদ চৌধুরী দুই ছেলে আহনাফ চৌধুরী আর রাফি চৌধুরী। রাফি মা-রা গেছে আর আহনাফ বাবার বিজনেস সামলাচ্ছে, এক মেয়ে সুমাইয়া এবার ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে।
সেজো ছেলে আদি চৌধুরী এক ছেলে সাজ্জাদ চৌধুরী সে নিজে একজন বিজনেসম্যান। চৌধুরী ইন্ডাস্ট্রিজ এর এম ডি সে।
আর ছোটো ছেলে আরিয়ান চৌধুরী সে এখনো বিয়ে করেনি, বয়স ৪৮ বছর।বিজনেস এর কাজে দেশের বাহিরে আছে। দুইদিন পর দেশে আসবে। ]

সাজ্জাদ রাতে গোসল করে নিলো। ভীষণ গরম পড়েছে।
সাজ্জাদ রুমে এসে নিজের রুমালটা সব জায়গায় খুঁজে নিলো কোথাও নেই। চোখ বন্ধ করতেই আজ বিকেলের কথা মনে পড়লো রুমালটা তো মেয়েটার কাছে রয়ে গেছে। সাজ্জাদ নিজের জিনিস অন্য কাউকে দিতে একদম পছন্দ করে না কিন্তু মেয়েটার কান্না দেখে খুব মায়া হয়ে ছিলো তখন। মনে হয়ে ছিলো তখন রুমালটা মেয়েটার খুব বেশি প্রয়োজন। আচ্ছা মেয়েটা কে তো জিজ্ঞাসা করা হয়নি এভাবে অন্ধকার রুমে কান্না কেনো করছিলো..? উফফ এই মেয়ে সম্পর্কে জানার এতো কৌতুহল কেনো জাগছে আমার..? দেখা গেলো আগামীকাল যদি মেয়েটা আমার মুখোমুখি ও হয় আমি চিনতে পারবো না। অন্ধকারে মেয়েটার মুখটা স্পষ্ট দেখা যায়নি।

সবাই রুম থেকে বেরিয়ে যেতে সোহার শাশুড়ী ওর কাছে আসলো। নিজ হাতে ওকে খাবার খাইয়ে দিলো। গরম দুধের গ্লাস রুমে রেখে। ওর সামনে কতোগুলো শাড়ি, গহনা রাখলো।
~ কাল সকালে এখান থেকে একটা শাড়ী পড়ে নিবে কেমন, সাথে গহনা গুলো। সকাল থেকে বাড়িতে মেহমান আসা শুরু হবে। তুমি ক্লান্ত বলে আমি কাউকে বাড়িতে এসে ভির করতে দেইনি। সবাই কে বলে দিয়েছি কাল সকালে বউ দেখতে আসতে। নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে নিও আমি ব্যাস্ত থাকবো। বুঝই তো মা কাল বৌ ভাত কাজ তো অনেক৷
সোহা মিষ্টি হেঁসে শাশুড়ীর দিকে তাকালো। ইসস কি সহজ-সরল মানুষ৷ জেনো শাশুড়ী নয় মা। হ্যাঁ আজ থেকে আমার দুইটা আম্মু। সোহা ওর শাশুড়ী কে জড়িয়ে ধরলো।

আমেনা বেগম সোহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।

_________

সকাল থেকে চৌধুরী বাড়িতে মেহমান আশা শুরু করেছে বউ দেখার জন্য ।

সোহা কে সুন্দর করে সাজিয়ে দিলো সুমাইয়া, রিয়া। রিয়া হলো আরিফের ছোটো বোন।

ছেলেরা সবাই খুব সুন্দর করে আয়োজন করলো সব কিছুর।

এদিকে নাহিদ, নাহিদা, রূপা আর ওর দুই মামা আসলো সোহা কে নিতে।

ওদের কে খুব সুন্দর করে আপ্যায়ন করলো সবাই।

নাহিদা এদিক ওদিকে তাকিয়ে কাউকে খুঁজছে।
তখনি একটা মেয়ে এসে বললো ভাবি আপনাদের উপরে রুমে যেতে বলেছে।
মেয়েটার কথার বিপরীতে রূপা একটা মিষ্টি হাসি দিলো।
মেয়েটা রূপার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ বাহ্ আপনার হাসিটা আপনার মতো খুব মিষ্টি। ‘
মেয়েটার এমন সরাসরি কথায় রূপা কিছুটা লজ্জা পেলো।

নাদিম মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ আপনিও দেখতে বেশ মিষ্টি। এই যে সামনে মিষ্টি রাখা আপনাকে দেখার পর থেকে এইসব মিষ্টি কেমন টকটক লাগছে। ‘

রূপা রাগী দৃষ্টিতে নাদিম এর দিকে তাকালো।

নাদিম সে দিকে পাত্তা না দিয়ে বললো,’ আপনার নাম টা যদি একটু বলতেন বে..য়া…ইন…! ‘

মেয়েটা নাদিম এর দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে নাদিম এর সামনে থেকে একটা মিষ্টি তুলে নিলো তারপর সবটা মিষ্টি নাদিম এর মুখে ঢুকিয়ে দিলো৷
~ এবার বলেন এটার স্বাদ কেমন বে…য়া..ই।

রূপা মুখে হাত দিয়ে হেঁসে উঠলো।

নাদিম বোকার মতো মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে।

মেয়েটা রূপা আর নাহিদা কে নিয়ে গেলো সোহার কাছে। সিঁড়ির কাছে যেতেই নাহিদা বললো,’ আপু আপনার নাম কি মিষ্টি..? ‘
~ না আপু আমার নাম সুমাইয়া সবাই ভালোবেসে সুমু বলে ডাকে।
রূপাঃ বাহ্ খুব সুন্দর নাম।
সুমাইয়াঃ ধন্যবাদ আপু।

রূপা নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর মোবাইল নাদিম এর কাছে রয়ে গেছে।
রূপাঃ আচ্ছা তোমরা যাও আমি আমার মোবাইলটা নিয়ে আসছি।
সুমাইয়াঃ ঠিক আছে আপু। এই যে দুইতলার তৃতীয় রুমটায় সোহা ভাবি আছে।

রূপা নিচে গিয়ে দেখলো সোফার উপর ওর মোবাইল। রূপা মোবাইল নিয়ে আবার সোহার কাছে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।
দুইতলায় আসতেই সামনে আহনাফ কে দেখলো মোবাইলে কথা বলতে বলতে এইদিকে আসছে।
রূপা সাথে সাথে পাশে থাকা রুমের মধ্যে ঢুকে পরলো।
রূপা চায়না আর কখনো আহনাফ এর মুখোমুখি হতে। চাইলেই কিছু মানুষকে ভুলে যায় না। সামনে আসলে অতীতের সেই স্মৃতি গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠে।
আহনাফ অভিনয় করেছে রূপা নয়। কিন্তু আহনাফ এই বাড়িতে কেনো..? তাহলে কি এটা আহনাফ এর বাড়ি!..? এখান থেকে এখনি চলে যেতে হবে। যেকোনো বাহানা দিয়ে রূপা বেড়িয়ে পরবে এই বাড়ি থেকে তারপর নিজের শহরে চলে যাবে।

রুম থেকে বের হওয়ার জন্য দরজার কাছে আসতেই ভয়ে পেছনের দিকে দৌড় দিলো রূপা, গিয়ে ধাক্কা খেলো বইয়ের ডেস্কের সাথে। সাথে সাথে সবগুলো বই নিচে পড়ে গেলো। রূপা ভয়ে সামনে তাকালো মুখ ভয়ংকর রকম গুমরা করে তাকিয়ে আছে একটা বিড়াল। রূপার দিকে আসতেই রুপা বিছানায় উঠে গেলো একের পর এক বালিশ ছুড়ে মা’রলো বিড়ালের দিকে। বিড়ালটা এদিক থেকে ওদিকে ছুটছে, ভয়ে রূপা সামনে যা পাচ্ছে তাই বিড়ালের দিকে ছুড়ে মা’রছে। তাতে বিড়ালের কিছু হচ্ছে না তবে রুমের অবস্থা খুবি খারাপ হয়ে গেছে। এতো সুন্দর পরিপাটি একটা রুম। এখন দেখলে মানুষ বলবে এই রুমে কোনো সুস্থ মানুষ থাকে না।

বিড়ালটা রূপার দিকে আসতে আসতে করে এগিয়ে গেলো। রূপা বিড়াল মারাত্মক ভয় পায়। আশেপাশে কিছু খুঁজে পেলো না রূপা। বিড়ালটা লাফ দিলো ওর দিকে রূপা চিৎকার দিয়ে সামনে কাউকে দেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। রূপার সারা শরীর কাপছে।

সাজ্জাদ থতমত খেয়ে গেলো। রুমে ঢুকতেই কেউ এভাবে ওর উপর ঝাপিয়ে পড়লো।

সাজ্জাদ এর হার্টবিট বেড়ে গেলো৷ মনে হচ্ছে সে তার সব শক্তি হারিয়ে ফেলেছে একটা মেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরেছে। এই প্রথম কোনো মেয়ে তার এতোটা কাছে আসলো। সাজ্জাদ ভুলে গেলো এখন কি করতে হবে। মেয়েটাকে সরিয়ে দিবে নাকি অপেক্ষা করবে মেয়েটা নিজ থেকে ছেড়ে দেওয়ার।

সাজ্জাদ মেয়েটার চুল থেকে মিষ্টি একটা ঘ্রাণ পেলো। ঠিক এমন ঘ্রাণ কাল কের সেই অচেনা মেয়ের থেকে পেয়ে ছিলো। কিন্তু সেই মেয়ে এখানে এলো কিভাবে..? ‘

রূপা কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলো, ‘ প্লিজ এই বিড়াল টাকে দূরে ফেলে দিয়ে আসুন। ‘

সাজ্জাদ সামনে তাকালো মিনি চোখ মুখ গম্ভীর করে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।
সাজ্জাদ চোখের ইশারায় মিনিকে ব্যালকনিতে চলে যেতে বললো।
মিনি মুখ গম্ভীর করে চলে গেলো।

সাজ্জাদ রূপা কে দূরে সরিয়ে দিতে চাইলো কিন্তু বেচারি আরও শক্ত করে ধরে কেঁদে উঠলো।

সাজ্জাদ রূপার কানের কাছে গিয়ে বললো, ‘ আপনি চোখ খোলে তাকিয়ে দেখুন।বিড়াল রুমে নেই, আমি তারিয়ে দিয়েছি। ‘
রূপা বিশ্বাস করলো সাজ্জাদ এর কথা। সাজ্জাদ কে ছেড়ে পেছন ফিরে তাকালো। নাহ নেই কোনো বিড়াল।

সামনে তাকিয়ে সাজ্জাদ কে দেখে লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো। ছিঃ কিভাবে জড়িয়ে ধরলো একটা অচেনা ছেলেকে। এখন নিশ্চয়ই ছেলেটা ওকে নির্লজ্জ মেয়ে ভাবছে।

সাজ্জাদ একহাত পকেটে ঢুকিয়ে রূপার দিকে তাকালো। ঘাড় কাত করে রূপা কে লজ্জা পেতে দেখে মুচকি হাসলো।
সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে মুখ আগের মতো গম্ভীর করে বলে উঠলো, ‘ আপনি এই রুমে কি করছেন…?
রূপা ভয়ে কেঁপে উঠল।
সাজ্জাদ পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে নিলো।
পুরো রুমের অবস্থা দেখে সাজ্জাদ রেগে গেলো। রূপার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ আমার রুম এমন হলো কিভাবে..? ‘
রূপা মাথা নিচু করে আমতা আমতা করে বলে উঠলো, ‘ আসলে আ..আমি জানতাম না এটা আপনার রুম।’

সাজ্জাদ মোবাইল হাতে নিয়ে ব্যালকনির দিকে যেতে যেতে বললো,’ দশ মিনিটের মধ্যে সব আগের মতো দেখতে চাই। ‘
রূপা মুখ গুমরা করে বলে উঠলো, ‘ আমি জানিনা কোনটা কোথায় ছিলো..?’
সাজ্জাদ ঘাড় ঘুরিয়ে রূপার দিকে তাকিয়ে বললো,’ নষ্ট করার সময় জানতে কেনটা কোথায় ছিলো..?’
রূপা নাড়ে না বুঝালো।
সাজ্জাদ বলে উঠলো, ‘ তাহলে নিজ দায়িত্বে সব ঠিক করে নাও।’
রূপা সাহস করে বলে উঠলো, ‘ আমি তো একা নষ্ট করিনি..!’
সাজ্জাদ বলে উঠলো, ‘ তাহলে কি মিনি কে পাঠিয়ে দিবো..? ‘
রূপাঃ মিনি!!
সাজ্জাদঃ বিড়াল..
রূপা চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো, ‘ না! না একদম না! আমি একাই ঠিক করে দিচ্ছি৷ ‘

সাজ্জাদ মুচকি হেঁসে রুমের ক্যামেরা অন করে ব্যালকনিতে চলে গেলো। ক্যামেরা কেনো অন করলো সে জানে না তবে সে বার বার এই ভীতু মুখটা দেখতে চায়।

কি আজব আজ তার রাগ হচ্ছে না। যার রুমে কেউ প্রবেশ করার আগে পারমিশন নেওয়া লাগে আজ একটা অচেনা মেয়ে ওর রুম এভাবে নষ্ট করে দিলো। কিন্তু ও চেয়েও আজ এই মেয়ের উপর রাগ করতে পারছে না।

চলবে…
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here