আমার_ফুলবাবু❀ #পর্ব_১৪(শেষ)

0
414

#আমার_ফুলবাবু❀
#পর্ব_১৪(শেষ)
#ফিহা_আহমেদ(লেখনীতে)

(❌কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ❌)

#১৪.
দু’বছর পর, আজ জুঁইয়ের এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশিত হবে। জুঁই চিন্তিত হয়ে রুমে পায়চারি করছে।জুঁইকে চিন্তিত দেখে ধ্রুব নীরবে হাসলো।ধ্রুব পরীক্ষার কাগজ দেখতে দেখতে জুঁইকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো ,,,,

— চিন্তা করো না জুঁই।

— আইচ্ছা ফুলবাবু যদি আমি পাশ না করি তাইলে কি আন্নে আমায় বাড়ি থাইকা বাহির কইরা দিবেন।(জুঁই মন খারাপ করে কথাটি বললো)

জুঁইয়ের কথায় ধ্রুব হেসে উঠলো।পরীক্ষার কাগজগুলো টেবিলের একপাশে রেখে ধ্রুব জুঁইয়ের কাছে আসলো।জুঁইয়ের হাতের ওপর হাত রেখে বলে ,,,,,

— কি সব বাজে বকছো তুমি জুঁই। আমি তোমায় সব পড়া পড়িয়ে পরীক্ষার হলে পাঠিয়েছি।আমার বিশ্বাস তুমি পাশ করবে।ভালো রেজাল্ট না করলে ও মোটামুটি ভালো রেজাল্ট করবে তুমি এই বিশ্বাস আমার তোমার প্রতি আছে জুঁই।এখন এসব বাজে চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে আমার জন্য এক গ্লাস লেবুর শরবত বানিয়ে নিয়ে আনো তো যাও।

জুঁই মাথা নাড়িয়ে চলে গেল ধ্রুব জন্য লেবুর শরবত বানাতে।

কিছুকাল পর, জুঁই ধ্রুবর জন্য লেবুর শরবত নিয়ে এলো।

— এই নেন আন্নের শরবত।

জুঁই ধ্রুবর সামনে গ্লাসটি ধরে কথাটি বললো।ধ্রুব কিছু না বলে চুপচাপ গ্লাসটি হাতে নিল।ধ্রুবকে চুপচাপ দেখে জুঁই ভয় পেয়ে গেল।

— তার মানে কি আমি পাশ করি নাই?

কথাটি ভেবে জুঁই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।জুঁইকে ফুঁপিয়ে কাঁদতে দেখে ধ্রুব জুঁইকে জড়িয়ে ধরে বললো ,,,,,,,

— কংগ্রাচুলেশনস। তুমি পাশ করেছ জুঁইফুল।জিপিএ ৪.৫০ পেয়েছো।এখন কান্না বন্ধ করো।

জুঁই এই কথা শুনে ধ্রুবকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো ,,,,,

— সত্যি কইতাছেন ফুলবাবু?

— হুম সত্যি বলছি জুঁইফুল।

দু’জন চুপচাপ দু’জনকে জড়িয়ে ধরে আছে।কয়েক মিনিট পর ধ্রুব বলে উঠলো ,,,,

— ভালোবাসি জুঁইফুল!

ধ্রুবর কথায় জুঁই মাথা তুলে আশ্চর্য চোখে ধ্রুবর দিকে তাকালো।জুঁইকে এভাবে তাকাতে দেখে ধ্রুব হালকা হাসলো।ধ্রুবকে হাসতে দেখে জুঁই লজ্জা পেয়ে ধ্রুবর বুকের মাঝে মুখ লুকিয়ে আদুরে কন্ঠে বলে উঠলো ,,,,,,

— আমার ফুলবাবু!

_______
‘ঝুমা হইলো তোর?’ (ইভান)

— হ হইয়া গেছে। কিন্তু যামুডা কই?(ঝুমা)

— গেলে ই বুঝবার পারবি।এখন চল।

বলে ইভান ঝুমার হাত ধরে বাহিরে নিয়ে আসলো।একটা রিকশায় দু’জন উঠে পড়লো।এক ঘন্টা পর রিকশা থামলো।ইভান রিকশাভাড়া মিটিয়ে ঝুমার হাত ধরলো।

— ইভান ভাই এইডা আবার কোন জায়গা?

ঝুমার মুখে ভাই ডাক শুনে ইভান রেগে ঝুমার দিকে তাকালো।ঝুমা ইভানকে রাগতে দেখে শুকনো ঢোক গিলে জিহ্বায় কামড় দিয়ে বললো ,,,,,

— ভুইলা গেছিলাম।আর ভাই কমু না প্রমিজ।

— মনে থাকবে তো?

— হ থাকব।

ইভান ঝুমাকে নিয়ে একটা বাগানবাড়িতে প্রবেশ করলো। এতবড় বাগানবাড়ি দেখে ঝুমার মুখ হা হয়ে গেল।বাগানটায় বেশিরভাগ গাছ ই শিউলি ফুলের গাছ।মাঝে মাঝে রজনীগন্ধা, বেলী,গোলাপ আরো অনেক রকমের ফুলের গাছ আছে।এসব দেখে খুশিতে ঝুমার চোখ চকচক করে উঠলো।

— ভালো লাগছে?

— হ ভীষণ ভালা লাগছে। জানেন ইভান ভাই ছোড থাইকা আর অনেক ইচ্ছা আছিল এমন বাগানবাড়ি দেহার।আন্নে আর ইচ্ছাডা পূরণ করলেন।আন্নেরে অনেক ,,,,,

বলে ঝুমা পাশে তাকিয়ে দেখে ইভান নেই।ঝুমা ভয় পেয়ে গেল ইভানকে তার পাশে না দেখে।ঝুমা ভীতু কন্ঠে বলে উঠলো ,,,,

— ইভান ভাই ও ইভান ভাই আন্নে কই গেছেন?

অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর ইভানের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঝুমা কান্না করা শুরু করলো।

— এই পাগলনী কান্না করছ কেন?

পিছন থেকে ইভানের গলার আওয়াজ পেয়ে ঝুমা দৌঁড়ে এসে ইভানের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো।ইভানের বুকে মাথা রেখে ঝুমা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে যাচ্ছে।ইভান ঝুমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো ,,,,

— ভয় পাইছচ?

— হ। অনেক ডরাইছি।আন্নে কই গেছিলেন আরে রাইখা?

ইভান কিছু না বলে মুচকি হেসে ঝুমার খোঁপায় হাত রাখল।ঝুমা ইভানের থেকে সরে এসে বলে ,,,,,

— কি করতাছেন?

বলে ঝুমা মাথায় হাত দিয়ে চমকে উঠে বলে ,,,,

— গাজরা?

— শিউলি ফুলের গাজরা।তোর লাইগা শিউলি ফুলের গাজরা আনতে গেছিলাম।আইসা দেখি তুই বাচ্চা পোলাপানের মতো কান্না করছিস।

ইভানের কথায় ঝুমা ইভানের বুকে কয়েকটা থাপ্পড় মারলো।ইভান হেসে উঠলো ঝুমার কাজে।ইভান ঝুমাকে নিজের কাছে নিয়ে এসে বলে উঠলো ,,,,,,

— ভালোবাসি পিচ্চি পরী!

ঝুমা লাজুক হেসে ইভানের বুকে মুখ লুকিয়ে বললো ,,,,,

— আই ও আন্নেরে অনেক ভালোবাসি ইভান ভাই!

ঝুমার কথায় ইভান ঝুমাকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিয়ে মিথ্যে রাগ দেখিয়ে বললো ,,,,,,

— লাগব না তোর ভালোবাসা সামনের তাই সর কইতাছি।

ভাই বলাতে ইভান রাগ করেছে।ব্যাপারটা ঝুমা বুঝতে পেরে মুখ টিপে হাসছে।

(ইভান ঝুমাকে ছোট থেকেই পছন্দ করতো।ইভানের ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটা চাকরি নিয়ে তারপর ঝুমাকে নিজের বউ করবে।কিন্তু খায়েরের জন্য বাধ্য হয়ে ইভান ঝুমাকে বিয়ে করে নিল।)
®ফিহা আহমেদ
________
ফিহা রান্নাঘরে ফাহাদের পছন্দের পায়েস রান্না করছে।
রান্না অবস্থায় কেউ ফিহাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।ফিহা ভয় পেয়ে গেল হঠাৎ কেউ এভাবে জড়িয়ে ধরতে দেখে।ফিহা মাথা পিছনে ফিরিয়ে দেখলো ফাহাদ তাকে জড়িয়ে ধরে আছে।ফিহা ফাহাদকে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মনে মনে বলে উঠলো ,,,,,,,

— এটা তো আমার প্রেমিক পুরুষ।আর আমি কিনা ভয় পাচ্ছিলাম।

ফিহা কিছু না বলে রান্নায় মনোযোগ দিল।হঠাৎ ফাহাদ বলে উঠলো ,,,,,,,

— ভালোবাসি ফিহু জান!
(নেশাক্ত কন্ঠে বললো)

ফাহাদের কথায় ফিহা ফাহাদের দিকে ফিরলো। ফাহাদ নেশাক্ত চোখে ফিহার দিকে তাকিয়ে আছে।ফাহাদের নেশাময় চোখ দেখে ফিহা হালকা কেঁপে উঠল।ফিহা ধীরে ধীরে ফাহাদের কানের কাছে মুখ এনে ধীর কন্ঠে বলে উঠলো ,,,,,,

— ভালোবাসি!

বলে ফিহা একমুহূর্ত ও দাঁড়ালো না।দৌঁড়ে রান্নাঘর থেকে প্রস্থান করলো।ফাহাদ ফিহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।

________
মিরাজ এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাবা-মায়ের সাথে ফান্স চলে গেল।মিরাজ এখনো ঝুমাকে ভালোবাসে।অনেক চেষ্টা করেছে ঝুমাকে ভুলতে কিন্তু সক্ষম হয়নি।মিরা যে তাকে ভালোবাসে মিরাজ জানে।মিরাজকে মুখে ভালোবাসার কথা বলতে পারবে না বলে মিরা চিঠির মাধ্যমে মিরাজকে ভালোবাসার কথা জানিয়েছে।মিরাজ চিঠির উওর দেইনি।বর্তমানে মিরা-মিরাজ কেউ ই ভালো নেই।

(ইভার বিয়ে হয়ে গেছে তার বাবার বন্ধুর ছেলের সাথে।বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল না ইভার।ইভানের জায়গায় সে অন্য কাউকে বসাতে চাইলো না।কিন্তু বাবার জোরাজোরিতে বাধ্য হয়েই বিয়েটা করেছে ইভা।)

_________ সমাপ্ত _________

(অনেক অগোছালো ভাবে গল্পটা শেষ করেছি।ভুল-ভ্রান্তি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।মূলত পরীক্ষার জন্য ই গল্পটা তাড়াহুড়ো করে শেষ করতে হলো।যদি গল্পটায় গ্যাপ রাখতাম তাহলে গল্পটা লিখতে অনেক সমস্যা হতো।তাই গল্পটা এখানেই সমাপ্তি দিয়ে দিলাম।আর #Dragon_Queen গল্পটি পরীক্ষা শেষ হলে শুরু করব ইন-শা- আল্লাহ।যারা এতোদিন আমার পাশে ছিলেন তাদের অবিরাম ভালোবাসা।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন আমি যেন পরীক্ষায় সফল হই।আল্লাহ হাফেজ।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here