#প্রেম_প্রেম_পায়
#স্বর্ণালী_সন্ধ্যা
পর্ব আটাশ
২৮.
‘আরে কি হলো বলবেন তো? এভাবে টেনে নিয়ে আসলেন কেন?’
ফায়াদ কোনো কথা বলছে না। অপরাজিতা বার বার জিজ্ঞেস করছে কি হয়েছে কিন্তু কোনো জবাব পাচ্ছে না৷ অপরাজিতাকে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি চালানো শুরু করলো। কোনো একটা শব্দ করছে না সে। অপরাজিতা অনেক বার জিজ্ঞেস করলো।কিন্তু জবাব না পাওয়ায় সেও গাল ফুলিয়ে বসে রইলো।
ফায়াদ বিনা শব্দে শান্ত ভাবে গাড়ি চালাচ্ছে। বেশ অনেকটা সময় গাড়ি চালানোর পর গাড়ি এসে থামলো কোনো এক নির্জন জায়গায়।নির্জন বলতে ফাকা রাস্তা। রাস্তার এক সাইডে গাড়ি পার্ক করলো ফায়াদ।
গাড়ি থামিয়েই গাড়ির লাইট অফ করে দিয়ে সিটে গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে রইলো চুপচাপ।যেন আশে পাশে সে বাদে কেউ নেই।
গাড়ি থামতেই অপরাজিতা আশে পাশে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছিল এখানে এসেছে কেন? তার উপর ফায়াদের লাইট অফ করে দেওয়ায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো সে। এমনিতেই বাহিরে অন্ধকার। গাড়িতেও লাইট অফ করে দিল। কি আজব!
অপরাজিতা ফায়াদকে ডেকে বলল,
‘এখানে কেন এসেছেন?’
জবাব এলো না কোনো। অপরাজিতা আবার জিজ্ঞেস করলো,
‘লাইট কেন অফ করলেন?’
তবুও জবাব এলো না।
‘কথা বলেন না কেন? আমি কি করসি?’
নাহ! কিছুই বলছে না। আচ্ছা মুশকিল তো!অপরাজিতা আবার বলল,
‘এভাবে টেনে নিয়ে আসলেন কেন? কথা বলছিলাম তো আমি।’
সাথে সাথে গাড়ির দরজা খুলে বের হয়ে গেল ফায়াদ। অপরাজিতা যেন আহাম্মক বনে গেল। হঠাৎ এমন করার কোনো মানে হয়?
অপরাজিতাও বের হলো গাড়ির দরজা খুলে। বের হয়ে দেখলো ফায়াদ গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে ফায়াদের কাছে গেলেই ফায়াদ তার দিকে তাকালো শান্ত দৃষ্টিতে।সে দৃষ্টি দেখে অপরাজিতা বলল,
‘আমি কি করলাম!!’
ফায়াদ এবার মুখ খুলে বলল,
‘ওই লোকটা কে?’
‘আমাকে ক্যারাটে শিখিয়েছে তা তো বললামই।’
ফায়াদ ভ্রু কুচকে বলল,
‘তা আমিও শুনেছি। কিন্তু আমার ধারনা মতে সে তোমাকে পছন্দ করতো তাই না?’
অপরাজিতা কিছুটা ভেবে বলল,
‘হ্যা তা একটু করতো…ওয়েট আপনি জানলেন কিভাবে?’.
ফায়াদ বিরক্ত নিয়ে তাকালো।তার থেকে বিরক্তি এই মুহুর্তে কেউ নেই মনে হচ্ছে।ফায়াদ বিরক্ত নিয়ে বলল,
‘তার চাহনী দেখেই বুঝা যায়। তুমি তো ছিলে কথার ফুলঝুরি নিয়ে। বুঝবে কিভাবে! আরো বলো কথা বোকা কোথাকার! তাও আবার হেসে হেসে কথা বল!’
অপরাজিতা ফায়াদের কথা শুনে হা হয়ে গেলেও পরক্ষণেই তার মুখে চওড়া এক হাসি ফুটে। সে উৎফুল্ল হয়ে বলল,
‘আয়হায় আয়হায়!’
ফায়াদ কপালে ভাজ ফেলে রাগ দেখিয়ে হালকা ধমকে বলল,
‘কি হয়েছে!’
সাধারণত ফায়াদের রাগকে অপরাজিতার ভয় লাগে। বিনা কারনেই। কিন্তু আজ যেন ফায়াদের রাগ দেখে তার খুব মজা লাগছে। এ যেন মিষ্টি রাগ! খুবই মিষ্টি।
অপরাজিতা ফায়াদের গালে ছুয়ে বলল,
‘মি. ফায়াদ আহমেদ জেলাস?সিরিয়াসলি? ‘
ফায়াদ অপরাজিতা কথা শুনে খানিকটা বিব্রত হয়ে গাল থেকে হাত সরিয়ে বলল,
‘জেলাস! আমি?বাচ্চা মনে হয় আমাকে?’
অপরাজিতা হেয়ালি করে বলল,
‘না! একদমই না’
অপরাজিতার হেয়ালি দেখে ফায়দের যেন আর বাধ রইলো না। আজব তো তার ভালোবাসার মানুষকে কেউ মুগ্ধ চোখে দেখলে তার ভালো লাগবে নাকি?রাগ নিয়ে সে অপরাজিতাকে গাড়ির সাথে চেপে ধরে বলল,
‘হ্যা জেলাস!অনেক বেশি জেলাস! তোমাকে মুগ্ধ নয়নে আমি দেখবো আর কেউ না।যখন তোমাকে দেখছিল তার চাহনী আমার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছিল।সহ্য হচ্ছিল না।তুমি এতো হেসে হেসে কারো সাথে কথা বলবে না।’
গাড়ির সাথে চেপে ধরায় ফায়াদ অপরাজিতার খুব কাছে। ফায়াদ কথা গুলো বলছে রাগ নিয়ে। কিন্তু অপরাজিতার যেন এই রাগ দেখতে ভালোই লাগছে।রাগের মধ্যে ভালোবাসা ঝরছে।
ফায়াদ এতো কাছে দাঁড়িয়ে থাকায় অপরাজিতা একটু অন্যরকম লাগছিল।ভালোবাসার মানুষ তো! কাছে গেলে আরেকটু কাছে যেতে ইচ্ছে করে।
অপরাজিতা নিজেকে সামলে ফায়াদের দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক ভাবে বলার চেষ্টা করলো,
‘আমি তো এভাবেই কথা বলি সবার সাথে।’
ফায়াদ এবার অপরাজিতার দিকে আরেকটু ঝুকে বলল,
‘বলবে না আর!’
অপরাজিতা ফায়াদকে আরো ঝুকতে দেখে ঢোক গিলে বলল,
‘আ আচ্ছা বলবো না। আপনি সরুন!’
ফায়াদ অপরাজিতার দিকে তাকিয়ে রইলো বেশ কিছুক্ষন ভ্রু কুচকে।তারপর অপরাজিতার অবস্থা বুঝতে পেরে বাকা হাসলো। বলল,
‘সরবো?’
অপরাজিতা আবারো শুকনো ঢোক গিলল।জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলল,
‘হ হুম’
ফায়াদ আরেকটু ঝুকলো এবার। অপরাজিতার যেন নিশ্বাস আটকে যাবার উপক্রম। সে হালকা চিতকার দিয়ে বলল,
‘পিছে সরতে বলেছি!’
ফায়াদ যেন ঘোরে চলে যাচ্ছে। সে আরেকটু ঝুকলো অপরাজিতার মুখের উপর। অপরাজিতা চুল গুলো গুছিয়ে দিয়ে থুতনি ধরে মুখটা উচু করে ধরলো। অপরাজিতা অনুভুতির প্রেরণায় চোখ বন্ধ করে ফেলল।কাপছে সে। ফায়াদ অপরাজিতার থুতনি উঁচু করে ধীরে ধিরে মাথা ঝুকিয়ে থুতনির নিচে গলায় বেশ সময় নিয়ে একটা চুমু খেল। অপরাজিতা কাপতে কাপতে ধীর স্বরে বাধা দিতে বলল,
‘ফা ফায়াদ দ’
ফায়াদ অপরাজিতা ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ করিয়ে দিল তাকে। অপরাজিতার চোখ এখনো বন্ধ। তা দেখে মুচকি হাসলো ফায়াদ। অপরাজিতার ঠোঁটে নিজের আঙুলের উপর আলতো করে চুমু খেল।অপরাজিতা লজ্জায় নুয়ে গেল। ফায়াদ অপরাজিতার মাথা টা নিজের বুকে চেপে ধরলো৷
বুকে মাথা রেখে অপরাজিতা যেন আটকে রাখা নিশ্বাস টা ছাড়লো।ফায়াদের পিঠে আলতো করে হাত রাখলো।তার মনে হচ্ছিল সে বুঝি অজ্ঞানই হয়ে যাবে। কি তীব্র সে অনুভূতি! প্রিয় মানুষের স্পর্শ এভাবে শিহরন দেয়! মারা’ত্মক!
ফায়াদের বুকের ভেতরের হৃদ্যযন্ত্রটির প্রবল বেগে ছুটার শব্দ শুনতে পাচ্ছে সে। হৃদস্পন্দন বেড়ে গিয়েছে।হুম! অপরাজিতার সান্নিধ্যে এসে ডাক্তার সাহেবের হৃদস্পন্দন বেড়ে গিয়েছে।
ফায়াদ অপরাজিতার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
‘আমি হারিয়ে যাচ্ছি তোমাতে। গভীরভাবে হারিয়ে যাচ্ছি! ভালোবাসা এমন কেন?কাছে থাকলেও অস্থির লাগে। দূরে গেলেও অস্থির লাগে। বড়ই অদ্ভুত তার নিয়ম!’
————–
‘তারা কোথায় যেতে পারে? ‘
ফারাজ হাসতে হাসতে বলল,
‘তা তো জানি না। তবে আমাদের গাড়ি টা নিয়ে গেল যে?’ এতো শপিং ব্যাগ নিয়ে যাওয়া টা কষ্ট।রিকশা ডাকেন তো।’
রিকশা করে তারা দুজন বাসায় চলে আসলো।আখি বেগম তাদের ফিরতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,
‘ফায়াদ কোথায়?’
ফারাজ কিছু বলার আগেই নীতি জবাব দিল,
‘অপরাজিতার সাথে আছে মণি। তাকে দিয়ে আসবে।’
ফারদিন আহমেদ নীতির কথা শুনে জিজ্ঞেস করলেন,
‘কোথায় গিয়েছে তারা?’
ফারাজ বলল,
‘এখন আমি যদি কিছু বলি তাহলে আম্মু আর নীতি বলবে আমি অসভ্য।’
ফারদিন আহমেদ বললেন,
‘ওওওও আচ্ছা বুঝেছি।থাক থাক!’
উচ্চশব্দে হেসে দিল ফারাজ। হাসতে হাসতে রুমে চলে গেল সে।নীতি আগে উত্তর দিয়েছিল যাতে ফারাজ উলটা পালটা কিছু না বলে৷ লাভ কি হলো? ইনডিরেক্টলি বলেই দিল।আখি বেগম নীতিকে আস্তে করে বললেন,
‘লাভ নেই। সবগুলো একই।’
নীতি কপাল চাপড়ে গেল ফ্রেশ হতে।
ফায়াদ বাসায় ফিরতে মোটামুটি দেড়ি হলো। তার জন্য তাকে বাপ ভাইয়ের কাছে লেগ পুলিং এর স্বীকার হতে হয়েছে। সে আর কি করবে। বেচারা!
ডিনার শেষে সকলে যার যার রুমে চলে গেল। ফায়াদের চোখে তখনও অপরাজিতার সে কাপাকাপা মুখ ভাসছিল। মেয়েটা ভয় পাচ্ছিল তাকে। বেসামাল হয়ে গেলে সামাল দেওয়ার ভয় পাচ্ছিল।
ভেবে হেসে দিল ফায়াদ। ফায়াদ নিজেকে সামলে নিতে জানে।৷ প্রেমিকা বলে সামলে নিচ্ছে।তবে স্ত্রী হলে সামলাতে পারবে? মেয়েটাকি জাদু করে দিল তাকে?
মোবাইল বাজলো। মিষ্টি কণ্ঠ ভেসে আসলো,
‘আসসালামুআলাইকুম’
ফায়াদ জবাব দিল,
‘ওয়ালাইকুমুসসালাম’
অপরাজিতা লাজুক স্বরে বলল,
‘আমি সাজুগুজু করেছি এখন।’
ফায়াদ জিজ্ঞাসু ভাবে বলল,
‘হুম?’
অপরাজিতা আবারো একই ভাবে বলল,
‘আপনি একটু মনের চোখ দিয়ে দেখে বলেন তো কেমন লাগছে আমাকে?’
নিশব্দে হেসে দিল ফায়াদ। অপরাজিতা বুঝতে পারলো ফায়াদ হাসছে।সেও হাসছে। কারন সে এর আগেও একবার ফায়াদকে একথা বলেছিল জ্বালাতন করার জন্য। সেদিন ফায়াদ ফোন কেটে দিয়েছিল।
ফায়াদ হাসি থামিয়ে বলল,
‘পুচকি ফুলের মতো লাগছে’
অপরাজিতা এবার মেকি রাগ দেখিয়ে বলল,
‘এইহ!!’
ফায়াদ শব্দ করে হাসলো। অপরাজিতা গাল ফুলিয়ে বলল,
‘আপনি আমার কি নাম ছড়াচ্ছেন বলেন তো?আপনার বাসার সবাই আমাকে এটা বলে সুযোগ পেলেই’
ফায়াদ হাসতে হাসতে বলল,
‘আমি ছড়াই নি। রাফিয়া ছড়িয়েছে।’
‘সে কিভাবে জানলো?’
ফায়াদ একটু থেমে বলল,
‘আসলে আমার ফোনে থেকে। তোমার নাম্বার এটা দিয়ে সেভ করা।’
অপরাজিতা কপাল চাপড়ালো। বলল,
‘মানুষ দেয় প্রেয়সী, প্রিয়তমা, ভালোবাসা, সে, জান, প্রাণ, কলিজা! আর আপনি?’
ফায়াদ এবার শান্ত কণ্ঠে কৌতুক করে বলল,
‘তুমি ছিলে তখন ছোট আর কি দিব! তখন তো কলিজা ফুস্ ফুস ছিলে না।’
অপরাজিতা বলল,
‘তাহলে এখন চেঞ্জ করেন?’
‘কি দিব? লজ্জাবতী?’
অপরাজিতা জিজ্ঞাসা করলো,
‘আমি আবার লজ্জাবতী কবে হলাম?’
ফায়াদ দুষ্টুমি করে বলল,
‘কেন? মনে নেই? আজ —‘
অপরাজিতা সেই মুহুর্ত মনে করেই যেন আবার লজ্জা পেয়ে গেল। লজ্জা ঢাকতে চেয়ে বলল,
‘উফফ! আপনি-‘
ফায়াদ হাসলো। বলল,
‘আবার লজ্জা পাচ্ছো! ‘
‘মোটেই না’
ফায়াদ ডাকলো,
‘অপরাজিতা’
‘হুম’
‘ তুমি যখন আমার নাম ধরে ডাকলে এতো মধুর কেন শুনালো বলো তো?আরেকবার ডাকবে?’
অপরাজিতা লজ্জা পেয়ে বলল,
‘না’
ফায়াদ আর জোর করলো। এভাবে নানা কথা বলতে লাগলো তারা। কতোক্ষণ কথা বলবে কে জানে? অনুভূতির তো আর শেষ নেই।
ঘুম আসছিল না তাই ফারাজ আজ ছাদে গেল গিটার নিয়ে। ছাদে পৌছাতেই ফারাজ অন্ধকারে এক নারী মুর্তি দেখে ভরকে গেল কিছুক্ষণের জন্য। সামনে এগুতেই বুঝলো সেটা নীতি।
কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
‘এতো রাতে এখানে কি?’
নীতি হঠাৎ কারো আওয়াজ শুনে চিৎকার করে উঠলো। ফারাজ বলল,
‘আমি আমি’
ফারাজকে দেখে বুকে হাত চেপে স্বস্থি পেল সে। তারপর রাগ দেখিয়ে বললেন,
‘এভাবে কেউ কথা বলে?’
ফারাজ নিচে দেওয়াল ঘেঁষে বসতে বসতে বলল,
‘কিভাবে বলে?’
নীতি জবাব না দিয়ে তাকিয়ে রইলো ফারাজের দিকে৷ ফারাজ আবার জিজ্ঞেস করলো,
‘বললেননা তো কি করছিলেন?’
‘ঘুম আসছিল না।’
ফারাজ বলল,
‘ওহ’
নীতি এবার ফারাজের পাশে বসে বলল,
‘আমিও শুনবো।গান।’
ফারাজ কিছু বলল না। সুর তোলার বন্দোবস্ত করছে। নীতি হঠাৎ জিজ্ঞেস করলো,
‘তার নাম কি? ইউর ওয়াইফ!’
ফারাজ এর হাত থেমে গেল কিছুক্ষণ এর জন্য। তারপর বলল,
‘মাহিয়া’
বলে সুর তুলতে শুরু করলো সে। অন্ধকারে নিস্তব্ধতা ভেদ করে বেজে উঠছে গিটারের সুর৷ ফারাজের নজর গিটারের দিকে। নীতির নজর ফারাজের দিকে৷ নীতি বুকে এক সূক্ষ্ম ব্যাথার উপস্থিতি পেল৷দিনে দিনে তা যেন একটু একটু করে বাড়ে। নীতি জানে সে ব্যথার কারন। শুধু বলতে চায় না৷
সুর পুরোপুরি আয়ত্তে আসলে ফারাজ দেওয়ালে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে বাজাতে থাকে সে সুর। প্রতিটি ছন্দ যেন হৃদয়ে তীরের মতো বিধছে। একজনের হারোনোর কারনে। আরেকজনের হারানোর ভয়ে৷ নীতি ঘোরের মাঝে ফারাজের কাধে মাথা রাখলো।তাতে ফারাজের হাত থামে নি। বাধা দেয় নি সে৷ মূলত সে বাধা দেওয়ায় অবস্থায় নেই এখন। তার বিচরণ এখন পুরোনো স্মৃতিতে।নীতির চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে অবিরাম। ফারাজের কাধ ভিজে যাচ্ছে। সেদিকে খেয়াল নেই তার। সে তো তার মধ্যে নেই৷ থাকলে হয়তো দেখতো কারো না বলা যন্ত্রণা।
‘অনেক পথের পথিক আমি, ক্লান্ত সর্বশেষ
তোমার পথের ঠিকানা খুঁজে আমি আজ অবশেষ
তুমি আমার প্রথম ও শেষ জীবনের ভালোবাসা
তোমার মাঝে তাইতো আমার জীবনের শত আশা
কখনও ভাবিনি চলে যাবে তুমি
আমাকে এভাবে কাঁদিয়ে
কখনও বুঝিনি ফিরে আসবে না
আমার পৃথিবী রাঙিয়ে..’
(চলবে)