#আনন্দ_অশ্রু
#পর্ব_১৩
#লেখনীতে_ওয়াসেনাথ_আসফি
শাফায়াতের কথা গুলো শুনে মায়ার চোঁখে অশ্রু চিকচিক করছে। এই অশ্রু কষ্টের বা কোনো যন্ত্রণার না এই অশ্রু হচ্ছে আনন্দের। মায়া এতো দিন ভাবতো রেহান একজন আদর্শ স্বামীর দায়িত্ব পালন করছে সে কখনই ভাবেনি রেহান তাকে এতটা ভালোবাসে এতো টা চায়, মায়া সব সময় ভেবেছে রেহান হয়তো মায়াকে প্রতিষ্ঠিত করে তাকে অন্য রাস্তায় হাঁটতে বলবে কিন্তু যেই মানুষটার কাছে সব কিছু নিজ ইচ্ছায় ধরা দেয় সেই মানুষটা নিজের বলতে শুধু মায়াকে চেয়েছে রেহানের প্রতিটা চিন্তা ভাবনায় মায়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রেহানের প্রতি মূহুর্তের অপেক্ষার নাম মায়া, রেহানের ছোটো ছোটো আনন্দের নাম মায়া রেহানের সকল আবেগ অনুভুতি মায়াকে ঘিরে। এই মুহূর্তে মায়ার আনন্দের শেষ ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মায়ার চোঁখ থেকে আনন্দের অশ্রু গড়িয়ে পরলো।শাফায়াত আর নাফিসা মায়ার চোঁখের পানি দেখে মুচকি মুচকি হাসছে। মায়া নাফিসা আর শাফায়াত কে হুমকির সুরে বলে,
আমার এই আবেগের কথা যদি এই দরজার বাইরের যায় তাহলে আমি তোমাদের দুইজনের অবস্থা চিৎ হয়ে থাকা তেলাপোকার মতো করে দিবো হাত পা ছুরা ছুরি করবে কিন্তু উঠতে পারবে না।
মায়ার এমন হুমকি শুনে শাফায়াত ভয় পাওয়ার মতো চেহারা করে বলে,,
মিসেস আসফিয়া হাসনাত মায়া রেহান শিকদার তোমার বরের মতোই তোমার হুমকি টা ভয়ঙ্কর ছিলো কিন্তু মজার ব্যাপার কী জানো আমি কোনো টাকেই ভয় পাইনা।তাই তোমার হুমকির কোনো সাইড এফেক্ট আমার ওপর হবে না। আমার টা আমি বলে দিলাম পাশের জনের টা জানি না হয়তো তেলাপোকার নাম শুনেই তার রফা দফা হয়ে গেছে।
শাফায়াতের কথা শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো নাফিসা কটমট করে বলে,,
এইযে মিষ্টার প্যাচাল বাজ আমি তেলাপোকা ভয় পাইনা আমি তেলাপোকা ধরে ধরে এক্সপেরিমে্ট করি তাই আপনার কষ্ট করে বলা প্যাচাল টা বেহুদা হয়ে গেলো। আপনার জন্য অনেক গুলা সমবেদনা।
মিস হুরায়রা আপনার মনে হয়না আপনার নামের সাথে আপনার ব্যবহার টা মানান সই না? দেখেন কি সুন্দর নাম আর কি সুন্দর চেহারা আর ব্যবহার টা কী ভয়ঙ্কর।
আহা কী সুন্দর নাম শাফায়াত কবির নিরব কিন্তু নামের সাথে আচার ব্যবহারের কোনো মিল নাই দেখতে পুরা একটা সাদা বাঁদরের মতো আর স্বভাব টাও বাঁদরের মতোই, অন্যের ঘাড়ে নাচা নাচি।
এই তুমি কী বললে আমাকে বাঁদরের মতো দেখতে লাগে তুমি জানো, ইউএসএ যখন ছিলাম তখন কত কত মেয়ে আমার ওপর ফিদা ছিলো?
হ্যাঁ সেটা বিদেশ বলে ছিলো পারলে বাংলাদেশে একটা মেয়ে দেখান যে আপনার এই বাঁদর মুখে ক্রাশ খেয়ে ব্রাশ মুখে দিছে।
দেখতে চাও কয়টা মেয়ে আমার ওপর ক্রাশ খাইছে? কালকে হসপিটাল চলো তার পর দেইখো আর আপচোস কইরো এতো সুন্দর ছেলেকে কেনো আগে থাকতে দাম দিলাম না,বলে।
ঠিক আছে দেখবনে আর সব কয়টা কে তেলাপোকা মারার ঔষধ খাইয়ে শহীদ করে দিবনে। ওদের বেচেঁ থাকার কোনো অধিকার নেই দুনিয়াতে এতো পোলা থাকতে একটা বাঁদরের ওপর কেমনে ক্রাশ খায়?
মায়া ওদের ঝগড়ার দেখে নিজেই বোকা বনে চলে গেছে। মায়া যদি জানতো তার এই ছোটো একটা হুমকি তে এতো বড় যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে তাহলে সে নিজেই অসহায় চিৎ হওয়া তেলাপোকার রুপ ধারণ করতো। ওদের দুইজনের ঝগড়া বন্ধ করতে অসহায় ভঙ্গিতে বলে,,
শাফায়াত আমি আপনার কাছে অনুরোধ করছি আপনারা ঝগড়া বন্ধ করুন।আপনাদের ঝগড়া দেখে আমার নিজেরই শহীদ হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।
মায়ার কথায় দুজনেই চুপ করলো।শাফায়াত মায়াকে আশ্বস্ত করল সে তাদের মধ্যকার কোনো কথা দরজার বাইরে যেতে দিবে না তার পর নাফিসার দিকে তাঁকিয়ে একটা গা জ্বালানো হাসি দিয়ে বলে, মিস বঙ্গ ললনা কাল হসপিটালে দেখা যাবে কার কতো ফ্যান ফলোয়ার। বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
নাফিসা কাদু কাদু মুখ করে মায়াকে বলে,
দোস্ত আমার সাদা রসগোল্লায় মাছি হানা দিচ্ছে আমি এখন কী করবো? বাঙালি মাছি যদি আমার বাংলিশ রসগোল্লার রস খেয়ে ফেলে তাহলে আমি কী করবো? আমি তো প্রেম হওয়ার আগেই ছ্যাকা খেয়ে ব্যকা হয়ে যাবো।
নাফু দোস্ত আমার মন খারাপ করিস না কাল আগে মাছি গুলোকে দেখি তারপর ভালো করে তাড়ানোর চেষ্টা করবো যদি চেষ্টাতে কাজ না হয় তাহলে সব চেষ্টা বাদ দিয়ে সোজা প্রেসকন্ট্রোলিং করিয়ে দিবো। তুই ভাবিস না তোর সাথে তোর কাকার বউ আছে।
মায়ার কথা আর চেহারার ভঙ্গি দেখে নাফিসা হেসে দিলো সাথে মায়াও।
________________
বিকেল বেলা রেহান,শাফায়াত, আনাম, নিতুল, মমিন আর হাইউল বাগানে ক্রিকেট খেলছে। নাফিসা আর মায়া বাগানে রাখা দোলনায় বসে বসে রেহান আর শাফায়াত কে দেখছে। তানজিল আর তিশা ড্রয়িং রুমে বসে কাচের কিছু আসবাব পত্র মুছে শো- কেজে তুলে রাখছে।
মায়ার তাকিয়ে থাকা দেখে রেহান মায়ার কাছে যায় সুন্দর করে নাফিসার মাথায় একটা গাট্টা মেরে মায়ার পাশে বসা থেকে উঠিয়ে দেয় আর নিজে বসে পরে তার আসুসোনার পাশে। মায়া রেহানের পাশে বসাতে খুশি হয়েছে কিন্তু চেহারায় তা প্রকাশ করছে না, রেহান যেনো কোনো ভাবেই মায়ার ভালো লাগা টা বুঝতে না পারে সেই জন্য মায়া বড্ডো বিরক্ত কন্ঠে বলে,
আচ্ছা আপনার কী খেয়ে দেয়ে আর কোনো কাজ নেই? যখন দেখি তখনই আমাদের দুই বান্ধুবীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে দেন। আপনি না ইঞ্জিনিয়ার? ইঞ্জিনিয়ারের কাজ কী সব কিছু জোড়া লাগানো, আর আপনি তো শুধু আলাদা আর দূর করার কাজটাই জানেন। বলি আপনাকে কে ইঞ্জিনিয়ারের সার্টিফিকেট দিছে আমাকে একটু বলেন তো তাকে একটু দেখে আসি?
আসুসোনা তুমি জানো আমি এই এতো বড় দুনিয়াতে তোমার মত আনরোমান্টিক আর নিম তিতা বউ একটাও দেখিনি বিশ্বাস কর।
রেহানের কথায় মায়া ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।
এমন করে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই তুমি আসলেই একটা নিম তিতা বউ। কেনো বলছি শোন, অন্য বউদের বর যদি প্রবাসে থাকে তাহলে প্রতিদিন ভিডিও কলে কথা বলে আর স্বামীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে আর যখন স্বামী প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরে তখন বউরা তাদের স্বামীকে প্রতিদিন বাসর রাত উপহার দেয়, এক মুহুর্তের জন্যও চোঁখে হারায় না। আর তোমাকে দেখো, আমি বিদেশে যাওয়ার পর এক দিনও ভিডিও কলে কথা বলছো? একটু প্রেম নিবেদন করছো? কর নি। যাও তখন তুমি ছোটো ছিলে এতো কিছু বোঝনা বলে সেই কথা বাদ দিলাম কিন্তু এখন তো বড় হয়ে গেছো মেডিকেল স্টুডেন্ট তুমি সব বুঝো। আমি বাড়ি ফিরেছি সপ্তাহ হলো তার মধ্যে এক দিন একটু জড়িয়ে ধরেছো এর বেশি কিছু না কপালে একা চুমুও খেতে দাওনি একটু আহ্লাদ করে কথাও বলো নি ভালোবাসা তো দূর থাক।
এইটুকু বলে রেহান একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস নিলো, মায়া তাকিয়ে আছে রেহানের দিকে ভাবছে, যেই মানুষটাকে সে এতো দিন মনে করতো গম্ভীর সেই মানুষ টা যে এমন নির্লজ্জ আর ঠোঁট কাটা হবে এটা কখনও ভেবেও দেখেনি। রচনার মতো এতো বড় করে বউ যে তার নিম তিতা এটার প্রমাণ পত্র দিলো। মায়া নিজের ধ্যান ভেঙ্গে বললো,
আচ্ছা আপনি তো এত দিন বিদেশে ছিলেন কত মানুষের সাথে দেখা হয়েছে কথা হয়েছে কখনো কী কোনো মেয়ের সাথে কথা হয়নি?
মায়ার এমন কথায় মুচকি হাসলো রেহান ছোটো করে উত্তর দিলো,
আমার কেশোবতী আমার অপেক্ষায় ছিলো আর আমার বউয়ের মত কেউ চোঁখে পরে নি।
রেহানের উত্তরে ভিতরে ভিতরে খুশি হলো মায়া কিন্তু তা প্রকাশ করলো না। রেহান বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো মায়ার দিকে তাঁকিয়ে মিষ্টি করে হাসি দিয়ে বলে,
তোমার অপেক্ষায় আছি তোমার যতো সময় লাগে নিয়ে নাও আমি কিছু বলব না কিন্তু একটা কথা মাথায় রেখো কেউ তোমার অপেক্ষায় বিনিদ্র রজনী পার করছে তাকে ভুলে যেও না দূরে থাকতে চাইলেও তার হয়েই থেকে যেও।
আমি একটু বাইরের যাচ্ছি তোমার কিছু লাগবে?
রেহানের কথায় মুচকি হাসলো মায়া উত্তরে জানায়,
অনেক দিন হলো বন্ধুর আনা ফুচকা আইসক্রীম আর চকলেট খাওয়া হয়না তার সাথে বসে গল্প করা হয় না। বাসায় ফেরার সময় এইগুলো নিয়ে আসবেন আর সাথে করে আমার বন্ধুকেও।
মায়ার কথায় রেহান মুচকি হেসে চলে যায় মায়া এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রেহানের যাওয়ার পানে।
_________________
রাত আট টা বাজে রেহান তার আসুর জন্যে তার বলা সব কিছু নিয়ে এসেছে সাথে এক তোরা কাঠগোলাপ।ড্রয়িং রুমে সবার চোঁখে মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। রেহান এমন থমতমে পরিবেশ দেখে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস না করে সোজা চলে যায় মায়ার কাছে। মায়ার ঘরে ঢুকে দেখে মায়ার কপালে ব্যান্ডেজ বাঁধা মায়া চোঁখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।এটা দেখে রেহানের রাগ মাথা চারা দিয়ে উঠে তাও নিজেকে শান্ত রেখে মায়ার পাশে গিয়ে বসে। রেহানের উপস্থিতি টের পেয়ে মায়া চোখ খুলে রেহানের দিকে তাকায় আর একটা মন ভোলানো হাসি দেয়। রেহান শান্ত ভঙ্গিতে মায়াকে জিজ্ঞেস করে,
আসুসোনা, সত্যি সত্যি বলবে কি করে তোমার এই অবস্থা হলো? মিথ্যে বলার বিন্দু পরিমাণ চেষ্টাও করবে না। যদি কোনো ভাবে আমি সত্যি টা জানতে পারি তাহলে মিথ্যা বলার জন্য কিন্তু শাস্তি পেতে হবে।
মায়া রেহানের কথায় বুঝতে পারছে রেহান খুব রেগে আছে তাই নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে রেহানকে শান্ত করার জন্য বলে,
বন্ধু আপনি শুধু শুধু এতো বেশি কথা বলছেন, আমি কেনো আপনাকে মিথ্যা বলবো। আপনি যাওয়ার কিছুক্ষন পর আমি ওয়াশরুমে পা পিছলে পরে গেছি আর কপালে একটু ব্যাথা পেয়েছি।
রেহান মায়ার কথায় মুচকি হাসলো তারপর মায়ার হাত ধরে বলে,
তুমি একটু অপেক্ষা করো আমি পাঁচ মিনিট পর তোমাকে নিতে আসবো ঠিক আছে।
বলেই মায়ার ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো রেহান,শাফায়াত আর নাফিসাকে ডেকে নিজের ঘরে নিয়ে গেলো,
তোরা দুজন সত্যিটা কি নিজ ইচ্ছায় বলবি নাকি আমি অন্য কোনো পদ্ধতিতে সত্যি টা বের করবো কোনটা?
ছোটো কাকা আমি সত্যিটা বলছি যদিও মায়া নিষেধ করেছে কিন্তু আজ ওর কোনো কথা রাখবো না।
তুমি যখন বাইরের গেলে তার কিছুক্ষন পর আমি আর মায়া আম্মুর সাথে কাচের জিনিস গুলো শো-কেজে রাখছিলাম। আম্মুর একটা কল আসাতে আম্মু উঠে কথা বলতে চলে যায়। মায়া প্লেট গুলো মুছে আমাকে দিছিলো আর আমি সেগুলো রাখছিলাম। একটা প্লেট আমার হাত থেকে পরে ভেঙ্গে যায় আমি কাচের টুকরো গুলো পরিষ্কার করার জন্য ঝাড়ু আর বেলচা আনতে চলে যাই যখন ফিরে আসি তখন দেখি মেজো কাকী মায়ার হাত উল্টে ধরে আছে। মেজো কাকী আমাকে দেখতে পেয়ে মায়াকে ধাক্কা দেয় আর মায়া গিয়ে দেওয়ালে থাকা আয়নায় ধাক্কা খায় আয়না ভেঙ্গে ওর কপাল কেটে যায়। আমি অনেক বার মেজো কাকি কে বলেছি প্লেটটা আমার হাত থেকে পরে ভেঙ্গেছে কিন্তু সে সেটা মানতে নারাজ।
মায়ার এই অবস্থার পিছনে তিশার হাত আছে শুনে রেহান পুরো একটা পারমাণবিক বোমার রুপ ধারণ করেছে।নাফিসাকে বলে,
যেই সেটের প্লেট টা ভাঙছে ওই সেটটা বের কর আর শাফায়াত তুই আসু কেমন করে বসলে আরাম পাবে সেটার ব্যবস্থা কর মাত্র দুই মিনিট সময় দিলাম।
বলেই সোজা চলে গেলো মায়ার ঘরে, মায়া শুয়ে ছিলো রেহান মায়াকে শোয়া থেকেই পাজা কোলে উঠিয়ে নিলো মায়া।কিছু বলবে তার আগেই রেহান বলে,
এখন আমি যা করতে বলবো তাই করবে যদি আমার কথা না শোনো তাহলে তুমি আমার সেই রুপ দেখবে যেটা আমি কোনো দিন তোমাকে দেখাতে চাইনি।
মায়া বুঝতে পারছে রেহান সত্যিটা জেনে গেছে তাই আর কিছু বললো না আর বললেও যে রেহান শুনবে না এটা মায়া জানে।
ড্রয়িং রুমে সবাই উপস্থিত তিশা ভাবলেশ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে এখনো বুঝে উঠতে পারেনি রেহান যে সবটা জেনে গেছে। নাফিসা পুরো সেটটা মেঝেতে সাজিয়ে রেখেছে শাফায়াত সুন্দর করে একটা বসার ব্যাবস্থা করেছে আর রেহান মায়াকে সেখানে বসিয়ে দিয়ে বলছে,
এইযে এতো গুলো জিনিস দেখছো এইগুলো সব ভাঙবে একটাও আস্ত রাখবে না এমন ভাবে ভাঙবে যেনো বোঝা না যায় কোন পিস টা কোন জিনিসের বুঝতে পারছো।
মায়া রেহানের আদেশ শুনে অনুরোধের কণ্ঠে কিছু বলবে তার আগেই রেহান চিৎকার দিয়ে বলে,
তুমি যদি এই গুলো ভেঙ্গে গুঁড়ো গুঁড়ো না করো তাহলে আমি এই বাড়ির একটা আসবাবও আস্ত রাখবো না আর যে তোমার এই অবস্থা করেছে তাকেও এর থেকে খারাপ অবস্থা করতে দুইবার ভাবো না। এখন ভেবে দেখো কাজটা কী তুমি শেষ করবে নাকি আমি শুরু করবো?
রেহানের চিৎকার শুনে মায়া একটা একটা করে সব জিনিষ ভেঙ্গে গুঁড়ো গুঁড়ো করে দেয় সবাই চুপ চাপ বসে বসে দেখছে আর তিশার দিকে তাঁকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। সবার মধ্যে বেচারা মমিন হাসতে পারছে না, সে ভিতরে ভিতরে খুব হাসছে কিন্তু প্রকাশ করছে না প্রকাশ করলে তার কপালে বউ নামক অশান্তি জুটবে তাই সে নিরব দর্শক।
ভাঙা শেষে রেহান আবার মায়াকে কোলে তুলে নিলো, তিশার কাছে গিয়ে শান্ত স্বরে বলে,
আমার আর আমার বউয়ের আশে পাশে আসার চিন্তা করবে না আজ যেটা করেছো সেটা বা এর থেকে হালকা বা বেশি কিছু করার চেষ্টা করো না।মোঘলে আজম মুভিতে যেমন আনার কলিকে জীবিত দেয়ালে প্লাস্টার করে দেয় ঠিক তেমন ভাবে তোমাকে দেয়ালে প্লাস্টার করতে দ্বিতীয় বার ভাবো না।
কথা গুলো বলে মায়াকে নিয়ে সোজা নিজের ঘরে চলে গেলো রেহান। মায়াকে নিজের বিছানায় শুইয়ে দিয়ে মায়ার হাতে ধরে অনুরোধের স্বরে বলে,
তোমার কপালে একটা চুমু দেওয়ার অধিকার আমাকে দিবে আসু?
#চলবে………………….
গল্পটি সম্পর্কে (রিভিউ) আলোচনা সমালোচনা করুন এই গ্রুপে।(যেকোনো গল্প খুজতে আমাদের গ্রুপটি ব্যবহার করতে পারেন)
গ্রুপ লিঙ্ক👇
https://www.facebook.com/groups/273212672043679/?ref=share_group_link