মিশেছো_আলো_ছায়াতে #Writer_Sintiha_Eva #part : 50

0
373

#মিশেছো_আলো_ছায়াতে
#Writer_Sintiha_Eva
#part : 50

🍁🍁🍁

সবাই দৌড়ে দ্রুতপায়ে সিমথির দিকে এগিয়ে যায়। সিমথি পেটের বাম দিকে হাত চেপে নিচে বসে পড়ে। পেট দিয়ে গলগলিয়ে রক্তপাত শুরু হয়। কালো শার্ট টা রক্তে ভিজে উঠে। সিমথি নীলয় খানের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যেকর হাসি হেঁসে উঠে। নীলয় খান পড়তে পড়তে উঠে দাঁড়ায়। হাতে রিভলবার। ঠোঁটের কোণায় পৈশাচিক হাসি।

আদি : স সিয়াজান। চ চোখ খোলো।

সিমথি : আ আমি ঠিক আআ আছি।

আচমকা আরেকটা গুলির শব্দে সবাই আঁতকে উঠে। সায়ন নিজের বুকে বাম হাত চেপে ধরে। মিম চেঁচিয়ে উঠে। ইফাজ & রোজ অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে নীলয় খানের দিকে তাকায়। এই লোকটাকে চিনতে আজ ওদের ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। সায়ন আহত দৃষ্টিতে নীলয় খানের দিকে তাকায়।

সিমথি : ভা ভাইয়া।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে জাফর ইকবাল তার ফোর্স কে কল লাগায়। মুহুর্তের ব্যবধানে সবাই হতভম্ব হয়ে। সবার মস্তিষ্ক অচল হয়ে যায়। আদিরা একবার সিমথির দিকে তাকাচ্ছে আবার সায়নের দিকে তাকাচ্ছে। তরী, রোজ, আদিবা রা কেঁদে ওঠে।

ইশান : আরে এম্বুলেন্স কল লাগাও। সায়ন ভাইয়া, ভাবীর তো গুলি লেগেছে।

ইশানের কথায় সবাই হুশ ফিরে পায়। মিম সায়নের মাথা নিজের কোলে নিয়ে কেঁদে ওঠে। সায়ন নিভু নিভু চোখে নিজের বোনের দিকে তাকায়। মেয়েটা উঠে ওর দিকে আসার চেষ্টা করছে৷ হয়তো আর কখনো এই বন্ধ চোখ খুলে প্রাণ প্রিয় মানুষ গুলোকে দেখা হবে না৷ চোখ বন্ধের আগে একবার বিশ্বাস ঘা/ত/ক নীরব খানের দিকে তাকায়। এই মানুষ টায় তো ছোট থেকে আঁকড়ে রাখলো তাহলে আজ সেই রক্ষকই ভক্ষক কেনো হলো। সায়ন শত চেষ্টায় ও চোখ খুলে রাখতে পারে না।

মিম : আল্লাহ। সায়ন

মিমের কান্নার সুরে তুষার রা এগিয়ে যায়। সায়নকে কোলে তুলে বাইরে যেতে নিলে নীলয় খান তুষার, ইশানের দিকেও রিভলবার তাক করে। সিমথিসহ সবাই চমকে যায়। এতোগুলো মানুষের বিপদ হবে ওর জন্য এটা সিমথি মানতে পারবে না। ওকেই কিছু করতে হবে। কিন্তু গুলিটা পেটে ঢুকায় উঠে দাঁড়ানো দায় হয়ে পড়েছে। সিমথি জোরে একটা শ্বাস নেয়। পাশে আদিবা থাকায় আদিবার ওড়নার অর্ধেক টা ছিঁড়ে নেয়। আদিবা সিমথির দিকে তাকায় কাঁদতে কাঁদতে। সিমথি আদিকে ছাড়িয়ে উঠতে নিলে আদি আঁকড়ে ধরে। সিমথি আদির দিকে তাকায় অতঃপর আলতো হেসে উঠে দাঁড়ায়। ছেঁড়া ওড়নার টুকরোটা পেটে জোরে বেঁধে নেয় টাইট করে। ব্যথায় কুঁকড়ে উঠে। তবুও নিজে সামলে নিচ থেকে রিভলবার টা তুলে নেয়। অনিলের দিকে তাকাতেই অনিলের মলিন মুখ টা চোখে পড়ে। সিমথি অনিল কে কিছু একটা ইশারা করতেই অনিল সায় দেয়।

সিমথি : শ শাওন ভাইয়া শ শুনো।

শাওন : কি বল।

সিমথি : ওদের স সবাই কে নিয়ে উপরে যাও।

তুহা : কি বলছো এসব ভাবী।

সিমথি : ত তোমমমরা এখানে নি নিরাপদ না। প্লিজ ম মেহের ভা ভাবী উপরে যাও এদের নিয়ে।

আদির মা : কি যাতা বলছিস। তোদের এই অবস্থায় রেখে,,,

সিমথি : মা প্লিজ যাও। এখন কথা বাড়ানোর সময় নেয়। ত তুষার ভ ভাইয়া ভ ভাইয়া কে নিয়ে তোমরা বাইরে যাও। হসপিটালে গেলেই হবে বাকিটা তুহিন রা সামলে নেবে।

নীরব খান : পারলে বের করিয়ে দেখা। তোদের দুজনকেই আজ মা/র/বো।

সিমথি : একটা গুলিতে আমাকে দুর্বল ভাববেন না মিস্টার এন.কে। রিভলবার আমার হাতেও আছে।

জাফর : সিমথি সায়নকে আমি হসপিটালে পাঠাচ্ছি। তুই ও চল। একে আমি দেখে নেবো৷

সিমথি : আপনি আগে আমার বাড়ির লোকদের সেফ জোনে পাঠান। প্লিজ আঙ্কেল।

রোজ : আ আমরা কোথাও যাবো না। তোমাদের ছেড়ে।

সিমথি : রোজ যা বলছি।

আদি : কিন্তু,,,

সিমথি : কোনো কিন্তু নয় যান বলছি সবাই । আমার কসম লাগে।

সিমথির চেঁচানোতে সবাই ঘাবড়ে। সেই সঙ্গে সিমথির কথা কর্ণপাত হতেই আদি দু পা পিছিয়ে যায়। অশ্রুসিক্ত লোচনে সিমথির দিকে তাকায়। সিমথি মুখশ্রী জুড়ে রাগের আভাস বিদ্যমান।

আদি : কাজ টা ঠিক করিসনি। ভালোবাসি বলে এভাবে দুর্বল জায়গায় আঘাত করলি।

আদির কথায় সিমথি চোখ বুঁজে নেয়। আঘাত সত্যিই তো সিমথি আদিদের দুর্বল জায়গায় আঘাত করেছে। কিন্তু তাছাড়া উপায় কি। এতোগুলো মানুষের ক্ষতি কিভাবে চাইবে। এরা প্রত্যেকে যে সিমথির জীবনের ইম্পর্ট্যান্ট পার্ট। তারজন্য এতোটুকু কঠোরতা না করলে কিভাবে হবে।

সিমথি : অনিল তোমার স্যারদের উপরে নিয়ে যাও আর দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে দিও।

সিমথির আদেশানুসারে অনিল আদিদের উপরে নিয়ে যায়। কেউই যেতে রাজি না হলেও সিমথির কথা মনে পড়তেই সবাই সিমথির রুমে যায়। ড্রয়িং রুমে আপাতত তুষার, ইশান, সিমথি, নীলয় খান, আহত সায়ন, জাফর ইকবাল এবং তার দুজন অফিসার।

আচমকা সিমথি নীলয় খানের পায়ে গু/লি করে। নীলয় খান পা ধরে নিচে বসে পড়ে কাতরাতে কাতরাতে। সিমথি তুষার দের দিকে তাকাতেই তুষার, ইশান বেরিয়ে পড়ে সায়ন কে নিয়ে। সায়নের শ্বাস ধীরে ধীরে চলছে। দুজনকে বের হতে দেখে একজন আর্মির অফিসার দৌড়ে এগিয়ে এসে গাড়ির দরজা খুলে দেয়। সায়ন কে নিয়ে ভেতরে বসতেই ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট করে৷

রুমের ভেতর সবার শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা। রোজ, তরী, ইফাজ তিনজনই পাথরের মতো বসে আছে। মেহের তটস্থ দৃষ্টিতে আদির দিকে তাকায়। আদি মাথা নিচু করে বসে আছে। আদির মা, চাচীরা তিন্নিদের নিয়ে বসে আছে। তখনই আদ্র পিপপ্পি বলে কেঁদে উঠে আধো আধো গলায়। সবাই আদ্রর দিকে তাকায়। আদি মিমের দিকে তাকায়। মিম নির্জীব দৃষ্টিতে নিচে বসে আছে। আদি চোখে পানি মুছে আদ্র কে কোলে নিয়ে কপালে চুমু খায়। আদ্র মুখের ভেতর আঙ্গুল ঢুকিয়ে গোল গোল দৃষ্টিতে আদিকে দেখছে।

সিমথি : তোকে বলেছিলাম না সিমথির ইমোশনস নিয়ে খেললে তোকে আমি আমার সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ টা দর্শন করাবো।

নীলয় খান : প পা ছ ছাড় জ জ্বলে যা যাচ্ছে।

সিমথি : জ্বলছে। জ্বলুক। আমার বড্ড ব্যথা লেগেছিলো যখন আমার সামনে আমার ভাইয়ার বুকে শুট করেছিলি। আমি অতটা ভদ্র নয়।

কথাটা বলে সিমথি পায়ের ক্ষত স্থানে মরিচ ঢেলে জোরে পাড়া দিয়ে দাঁড়ায়। নীলয় খান পুনরায় চেঁচিয়ে ততক্ষণে আর্মি ফোর্স চলে আসে বাড়ির ভেতরে। জাফর ইকবাল ভয়ার্ত দৃষ্টিতে সিমথির দিকে তাকায়। সিমথির মাঝে বহুবছরের পুরানো বন্ধু আহনাফের দেখা মিলছে। কিন্তু এখন সিমথি কে থামানো প্রয়োজন। ওর শরীর ঢুলছে। যেকোনো মুহুর্তে সেন্সলেস হয়ে যাবে। রক্তে ফ্লোর ভিজে উঠে। পেটে বাধা ওড়না থেকে টুপটুপ করে র/ক্ত ঝড়ছে।

জাফর : সিমথি মামণি ওকে এখন আমাদের হাতে তুলে দে। তোর ব্লিডিং হচ্ছে অনেক। অনিলকে দিয়ে আদিদের নিচে আনা। তোর এখন ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন। গু/লি টা এখনো তোর গায়ে আছে।

জাফর ইকবালের কথায় সিমথি ঢুলুঢুলু শরীরে জাফর ইকবালের দিকে তাকায়। সেই মুহুর্তেই নীলয় খান হাত দিয়ে সিমথি পা সরিয়ে সিমথি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে কোনোমতে আধো করে উঠে। সিমথি সিঁড়ির রেলিঙের সাথে বারি খায়। রাগান্বিত দৃষ্টিতে নীলয় খানের দিকে তাকাতেই চোখে পড়ে ওর দিকে তাক করা রিভলবার। নীলয় খান সিমথির দিকে রিভলবার তাক করে পৈশাচিক হাসি দেয়। জাফর ইকবাল সহ সমস্ত অফিসার রা ভয় পেয়ে যায়। এগুতে নিলে এন.কে এর হুমকিতে থেমে যায়। সিমথি দু পা এগিয়ে যায়। হাতে থাকা রিভলবার টা নীলয় খানের দিকে তাক করে। দুজন দুজনের দিকে রিভলবার তাক করে তাকিয়ে আছে। একজনে চোখে হিংস্রতা অন্যজনের চোখে মুখে পৈশাচিক আনন্দ। অনিল ভয়ার্ত ও করুণ দৃষ্টিতে সিমথির দিকে তাকায়। সিমথির আদেশ ব্যতিত কোনো পদক্ষেপ অনিল নিতে পারবে না অথচ বাইরে গার্ডস রা সবাই প্রস্তুত। কিন্তু এই প্রথম অনিল সিমথির আদেশ অমান্য করলো। ছুটে গেলো আদিদের বন্ধ করে রাখা রুমে দিকে। এই মুহুর্তে স্যারকে প্রয়োজন যে বড্ড। জাফর ইকবাল পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়। এনকাউন্টার ব্যতিত কোনো পদক্ষেপ নেই।

জাফর ইকবাল : সিমথি আমি বলছি গু/লি চালা।

সিমথি জাফর ইকবালের দিকে তাকায়। গুলি টা করতে আধো পারবে কিনা সিমথির জানা নেয়। হা কাঁপছে। সবটা সাজানো নাটকীয়তা হলেও এই মানুষটার মাঝে বাবার প্রতিচ্ছবি দেখেছিলো সিমথি। যাকে বাবা ডাকা যায় তাকে কি খু/ন করা যায়৷ স্বার্থের জন্য হলেও তো এই মানুষ টা এতোদিন ছায়ার মতো থেকেছিলো। হোক না এর পেছনে অন্য কারণ এটা তো তখন সিমঢিসহ সবার অজানা ছিল। ভরসার হাত হিসেবে এই মানুষটার হাত মাথার উপর পেয়েছিলো। সিমথিকে অন্যমনস্ক জাফর ইকবাল চেঁচাতে শুরু করে। আচমকা সিমথি একটা কাজ করে বসে। উপস্থিত সবাই চমকায়। নীলয় খান কিছু টা পিছিয়ে যায়। বুকে জায়গা করে নেওয়া মেয়েটার দিকে তাকায়।

সিমথি : কেনো এমন টা করলে বড় আব্বু। কিসের কমতি ছিলো আমাদের। শুধুমাত্র লোভের বশবর্তী হয়ে এতোগুলো মানুষের জীবন কেনো নিলে। জানো আজ থেকে তিন বছর আগে যখন আমি এসব জানতে পেরেছিলাম ভীষণ কষ্ট হয়েছিলো। তোমাকে তো আমি বড় আব্বু বলে ডাকতাম। বাবাইয়ের অনুপস্থিতিতে তো তুমিই আগলে রাখলে। সেই আগলে রাখার হাত টায় যে আমার মাম্মাম-বাবাই, ফুফি আম্মু, ফুফা, বড় আম্মুর র/ক্ত লেগে আছে এটা জানার পর আমার শ্বাসরোধ হয়ে এসেছিলো। কেনো করলে। এমনটা না করলে আজ আমাদের একটা সুন্দর ফ্যামিলি থাকতো। কারোর কমতি থাকতো না। আমার জীবনটা ও এমন হতো না। নিজের হাতে আমি তোমাকে কখনো মা/র/তে চাই নি। কিন্তু তুমি সেই পরিস্থিতি তৈরি করলে। ও বড় আব্বু বলো না কেনো করলে এমন টা। বলো না বলো না।

সিমথির কথাগুলো শুনে উপস্থিত সবার চোখে পানি চলে আসে। জীবনের অন্তিম পর্যায় এসে হলেও নীলয় খানের অনুতাপ হচ্ছে। সত্যিই তো কিসের কমতি ছিলো ওদের। যে এই পাপের পথ বেঁচে নিলো। নিজের আদরের ভাই কে মা/র/লো। নিজের স্ত্রী কে মা/র/লো। সিমথি, সায়ন, ইফাজ, রোজের মতো চারটা সন্তান কে হারালো। কোলে করে মানুষ করা বাচ্চাগুলো আজ বড় হলো কিন্তু নিজের পাপের কারণে সবার চোখে ভালোবাসার বদলে ঘৃণা দেখতে হচ্ছে। কি পেলো এসব করে। কিন্তু ওই যে লোভ কখনো মানুষ কে ভালো হতে দেয় না। তার জলজ্যান্ত প্রমাণ বোধহয় নীলয় খান।

সিমথি : আম সরি বড় আব্বু।

নীলয় খান : আম সরি প্রিন্সেস।

সেই মুহূর্তে পর পর কয়েকটা গু/লি/র আওয়াজ হয়। আদিরা এতোক্ষণ সিড়িতে দাঁড়িয়ে ছিলো। গু/লি/র আওয়াজে সবাই চমকে যায়। আতঙ্কিত দৃষ্টিতে দুজনের দিকে তাকায়। দুজন দুদিকে চিটকে পড়ে ফ্লোরে। দুজনের হাতের থাকা রিভলবার গুলোও চিটকে পড়ে। দুজনের গায়ে রক্তের স্রোত বইতে শুরু করে। সবার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। কি হয়েছে এটা বুঝতেই শাওন রা দৌড়ে সিমথির কাছে যায়। আদি ওখানেই ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। সবাইকে নিজের দিকে দৌড়ে আসতে দেখে সিমথি ব্যথাতুর হাসে। এতো সুন্দর পরিবারের সাথে জীবনের শেষ কয়েক মাস কাটাতে পেয়েছে এটাই সিমথির জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। ইফাজ সিমথি মাথা নিজের কোলে তুলে শব্দ করে কেঁদে দেয় । নীলয় খান ব্যথাতুর দৃষ্টিতে নিজের ছেলে-মেয়েদের দিকে তাকায়। অন্যায় করলে বুঝি শেষ সময় সন্তান রা ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।

ইফাজ : বোন চোখ খোল। এই সোনা চোখ খোল। ভাইয়ার কথা শুনবি না৷

সিমথি : ভ ভাইইইয়া,,

ইফাজ : আরেহ কেউ গাড়ি বের করো।

কারোর সাড়াশব্দ না পেয়ে ইফাজ সিমথির মাথা ফ্লোরে রেখে নিজেই এলোমেলো পায়ে এগিয়ে যায় বাইরের দিকে। অনিলের ডাকে আদির হুশ ফিরে দৌড়ে গিয়ে সিমথির মাথা নিজের কোলে তুলে রক্তাক্ত দেহটা জড়িয়ে ধরে।

আদি : স সসস সিয়া জান চোখ খোলা রাখ। ত তোর ককিচ্ছু হবে। আমি আছি না।

সিমথি : আ আআআদি

আদি : চ চুপ একদম চুপ। কথা বলবি ন না।

সিমথি : এ এমনি ত তেই চ চুপ হ হয়ে যাবো।

সিমথির এ কথায় আদিবারা সবাই ডুকরে কেঁদে দেয়। আদি সিমথিকে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।

আদি : এভাবে বলিস না জান। আ আমি শেষ হ হয়ে যাবো। তুই না ব বলেছিলও আ আমার সাথে বৃদ্ধ হবি। তখন আ আমাকে জ জ্বালাবি৷ ত তাহলে এ এখন কে কেনো ফাঁকি দিতে চ চাইছিস। ত তুই ন না ত তোর ক কথার খেলাপ করিস না ত তাহলে আ আমার ব বেলায় কেনো করিস।

আদির প্রতিটা কথা সিমথির বুকে ঝড় তুলছে। কিন্তু শরীরের অবস্থা ভালো না। হার্টে তিনটা গু/লি লেগেছে।
বাঁচা অসম্ভব। একজন ডাক্তার হয়ে সিমথি এতোটুকু বুঝতে পারছে ওর আয়ু ফুরিয়ে এসেছে। শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। শাওন, মেহেররা কাঁদতে কাঁদতে তিন্নিকে আঁকড়ে ধরে। মেয়েটা সমানে কাঁদছে।

সিমথি : ব বলেছিলাম ন না জজীবনের শ শশশেষ ন নিঃশ্বাস আ আমি তোমমার ক কোলে ফেলললবো। ক ককথা র রেখখখেছি। তিন্নি ক স সোনা কাঁদে না। ক ককাকিয়ার কষ্ট হয় না। আ আআর ম মমা তত তোমার ভা ভালো ব বউ মমা হহতে পারলাম না। ত তোমার ম মনের মতো মমেয়ে ববিয়ে ককরিও। ততোমার ছেললের ব ব বয়স এএখনো আ আছে ব বিয়ের।

আদি : সিয়া মা/র খাবি। কি সব বলছিস। বউ এমন করিস না। আমি তোকে ছাড়া শেষ হয়ে যা যাবো। আরেহ কেউ গাড়ি বের করো না কেনো।

আদি সিমথি কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ওঠে। সিমথি বহুকষ্টে আদিকে আঁকড়ে ধরে। কানের কাছে ঠোঁট ছোঁয়ায় সবার অগোচরে। বহু কষ্টে ফিসফিসিয়ে বলে উঠে,,,,

সিমথি : এই জন্মের দূরত্ব টা পরের জন্মে ঘুচিয়ে দেবো। এই জন্মের অপূর্ণতা পরের জন্মে পুষিয়ে দেবো। আমি কেবল তোমারই হবো৷ যতবারই জন্মাবো সিমথির প্রতিটা শ্বাস আদির নামে পড়বে। মনে থাকবে।

সিমথির কথাগুলোই আদি সিমথিকে আরো জোরে আঁকড়ে ধরে। ঘাড়ে মুখ গুঁজে কেঁদে ওঠে চিল্লিয়ে। আদির মা-বাবা সবাই ছেলে-মেয়ের অবস্থা দেখে দিশেহারা হয়ে পড়ে।

সিমথি : ভ ভালোবাসি জজ জামাইজানন। ভ ভীষণ ভা ভালোববাসি।

আচমকা সিমথির হাত দুটো আদির পিঠ ছাড়িয়ে নিচে পড়ে যায়। সবাই চমকে যায়। আদি মুখ তুলে সিমথির দিকে তাকায়। ওর সিয়াজান চোখ বুঁজে আছে কেনো। মেহের, রোজ, তরী, আদিবারা সবাই পিছিয়ে যায়। ইফাজ দরজার কাছেই থমকে যায়। হঠাৎ যেনো সবাই থমকে গেছে।

” যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে
তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে
তারার পানে চেয়ে চেয়ে নাইবা আমায় ডাকলে
যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে ”

চলবে,,,,,

( আগামী কয়েক পর্বে আয়াশ-মেঘাসহ ওদের ফ্রেন্ডসার্কেলের মিল ঘটানো হবে। আজ অনেক বকা আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি জানি আপনাদের খারাপ লাগবে কিন্তু থিমটায় এমন ছিলো। ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here