#ইয়াসমিন_রিমা
#অসম_প্রেম
#পর্ব_৩৪
এদিকে প্রেমা গাড়িতে বসে আছে জানালায় হেলান দিয়ে।এক মনে বাইরে তাকিয়ে ভবছে,
,ভালো থাকার অভিনয় করতে করতে আজ বড্ড ক্লান্ত আমি।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ।যদি দূরে থেকে ও কাছে অনুভব করাটা ভালোবাসা হয় তাহলে প্রতিটা মুহূর্ত আমি তোমাকে অসম্ভব ভালোবাসি। চোখ দুটো বন্ধ করে নিল।
আজ হঠাৎ কিছু সৃতি পূড়াচ্ছে ।সেই মানুষ টাকে হয়ত কোনো দিন আর ভোলাই হবে না। খুব কম বয়সে কারোর প্রেমে পড়েছিল। তখন ওরা গ্রামেই থাকত। বিশেষ করে প্রেমা গ্রামের দাদা দাদী ফুফু তাদের সাথে থাকত।প্রেমার গ্রাম খুব পছন্দের।বাকি সবাই শহরে থাকত।তাই প্রেমা গ্রামের এক স্কুলে পড়ত। তখন মাত্র ক্লাস নাইনে পড়ে।১৬ বছর বয়সে কারোর মায়ায় আসক্ত হয়েছিল।যার সৃতি এখন পর্যন্ত কুরে কুরে খাচ্ছে।ওই একটা মানুষ পুরো জীবনটাই বিষাক্ত বানিয়ে দিয়েছে।প্রথম প্রেম।যার জীবনে শেষ প্রেম হওয়ার কথা ছিল।
যেতে যেতে গাড়ি টা কন্ট্রাকশন সাইডে চলে আছে।প্রেমা গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলো।ম্যানেজারের সাথে দেখা হলো।
চারি দিকে ভাঙাচোরা ইট বালু সিমেন্ট এগুলো বিভিন্ন জায়গায় ছটিয়ে আছে। জায়গায় জায়গায় পানি জমে আছে। অনেক লোক কাজ করছে। কিছু বয়স্ক লোক ও আছে।
,ম্যাডাম কাজ অনেক দূর এগিয়েছে।
, ওকে।সব কিছু যেন তারাতাড়ি ঠিক হয়ে যায়।
, ওকে ম্যাডাম
কথা বলছে আর সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।সব কিছু ঘুরে ঘুরে দেখছে। আঠারো তলা বিল্ডিং এর কাজ চলছে আপাদত।
হঠাৎ চলতে চলতে এক বয়স্ক লোককে দেখতে পেল।বিল্ডিং এর দেয়ালের ফাকে।সে মাথায় ইট টানছে।
, এখানে কোনো এক বয়স্ক লোককে দেখলাম।
,হ্যা ম্যাডাম অনেক লোক কাজ করছে তাদের মধ্যে থেকে কেউ হবে হয়তো।
, তুমি যাও আমি আসছি।
, ওকে ম্যাডাম
মনে মনে, অদ্ভুত লাগলো।কে হতে পারে। চেনা চেনা লাগছে। গিয়ে দেখি। হুম। আস্তে আস্তে খুঁজতে লাগলো।
,,,,
আদিত্য যখন নীল রঙের ডাইরি পড়ছিল তখন কেউ টান মেরে নিয়ে নেয়।সে আর কেউ নয় ফারহান। ফারহান প্রেমার সাথে দেখা করতে এসেছিল। কারন কাল রাতে তাড়াতাড়ি চলে যায়। যার কারণে প্রেমার বেশি সময় কাটাতে পারেনি।
ফারহানের জীবনে প্রেমার আগমন ঘটে ছিল একটু অন্য রকম ভাবে।ফাস্ট কলেজ এ রেগিংএ দেখা।ওর প্রথম ছোয়া।যা ফারহান কে একদম উলোট পালট করে দিয়েছে। ফারহান স্বপ্নেও ভাবেনি যে কেউ ওর জীবনে এক রমনীর আগমন ঘটবে।কত গুলো দিন কেটে গেছে প্রেমাকে দেখেনি।প্রতিবার মেয়ে টা এরিয়ে যায়। কিন্তু ফারহান প্রেমাকে প্রচন্ড ভালোবাসে। কিন্তু সব জেনে ও এরিয়ে যায়।প্রথমে জানতো না ফারহানের বাবার বন্ধুর মেয়েই প্রেমা। নিজের ভালোবাসা আপন করে পাওয়া জন্য কত অপেক্ষা করে আছে। ফারহান বিশ্বাস করে তার ভালোবাসা একদিন ঠিকই তারই হবে। প্রেমাকে পাওয়া জন্য সব কিছু করতে পারে প্রয়োজনে কাউকে লা,,,শ ও বানাতে পারে।
ফারহান রুমে ঢুকে দেখে আদিত্য প্রেমার অনুমতি বিহীন ওর ডাইরি পড়ছিল। তখনি ডাইরি টা নিয়ে নেয়। কারন প্রেমা কখনো এগুলো পছন্দ করে না। ফারহান ও তাই চায়।
বর্তমানে,
, ফারহান, তুমি প্রেমার পারমিশন ছাড়া ডাইরি কেন পড়ছ।
, আদিত্য,কই না তো। আমি ত জাস্ট দেখছিলাম।প্রেমা,,, প্রেমা আপু কি লিখেছে।
,দেখ আদি ওর যতই ভাই হও না কেন ।ও খুব রাগ করবে।
ও এগুলো পছন্দ করে না।
,ওহ্ আচ্ছা। আদিত্য খুব রাগ হচ্ছে ফারহান কে দেখে। আমার বউয়ের জিনিস যখন ইচ্ছা তখন ধরতে পারি। তার জন্য ফারহানের কাছ থেকে জানতে হবে না।
,আদি কি ভাবছো।
, কিছু না।তা তুমি এখানে।
, হাসি মুখে,প্রেমার সাথে দেখা করতে এসেছি। কোথায় ও।কত দিন দেখিনি।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।আজ প্রান ভরে দেখবো।
, আদি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।বুকে চিন চিন ব্যাথা হচ্ছে। ফারহান কথায় আদি র ঘোর কাটে।
,কাল ভালো করে দেখতে পারিনি। তাড়াতাড়ি চলে গিয়েছিলাম। কোথায় ও।
,ও কাজে গেছে। মুখ টা মলিন করে।
,ও ।এই মেয়ে জীবনে কাজ ছাড়া কিছুই বোঝে না।
,হ্যা।কাজ পাগলী।
, ফারহান মুচকি হেসে বলল। হ্যা। একদম ঠিক বলেছো। এখানে কি করছ।প্রেমা যদি জানে তুমি ওর পারমিশন ছাড়া রুমে ঢুকেছ । তোমাকে ও আস্ত রাখবে না।
, হুম চলো।
দুজনে ই বেরিয়ে গেল। বাড়ির সাইডে বাগান তার মধ্যে চেয়ার টেবিল দেওয়া আছে। সেখানে দুজনে বসে চা খাচ্ছে আর গল্প করছে।কেউ কারোর সম্পর্কে ভালো মতো জানে না। ফারহান এখনো জানে না প্রেমার সাথে আদির বিয়ে হয়েছিল।জানলে এত ভালো গল্পে মেতে উঠতে পারতো না। আদিত্য জানে না ফারহানের সাথে প্রেমার প্রথম দেখায় কি ঘটেছিল।
,ফারহান, আচ্ছা আদি তোমার বউ কে ত দেখলাম না। কোথায় চোখ উঁচিয়ে।
, আদি,আছে । একটা ডেবিল মার্কা হাসি দিয়ে, আমার খুব কাছেই আছে। সময় হয়ে দেখবে তোমার ভাবিকে।
রং
, ফারহান অট্ট হাঁসি দিয়ে উঠলো।তাই না কি। বাহ্ বউ কে লুকিয়ে রেখেছ ।যদি আমি নিয়ে যাই।হা হা হা হা
, আদি ও অট্ট হাঁসি উঠলো, আমার বউ কে দেখলে তুমি পাগল হয়ে যাবে।হা হা হা হা।
, তাহলে তো পাগল হতেই হবে।হা হা হা।
, আচ্ছা প্রেমার সাথে তোমার দেখা কিভাবে হলো।ওহ সরি আপু। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
,ওর সাথে দেখা অদ্ভুত ভাবে হয়ে ছিল।সে অনেক কাহিনী আছে।আমি ওকে খুব ভালো বাসি। বাবা আর আংকেল আমাদের বিয়ে ঠিক করেছে। কিন্তু ম্যাডাম তো কাজ কে ই জীবন সাথী বানিয়ে নিয়েছে।
, আদিত্য রাগে হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে নিল। এক্ষুনি চাইছে ফারহান মে, রে ফেলতে।ওর জানে হাত দিয়ে ছে।, শুধু বিয়ে ঠিক হয়ে ছে তাই না।
, হুম।ও ত সময় ই দেয় না। আচ্ছা ভাবীর কোথায় বলতো।
,ওই যে বললাম আমার কাছে।
, ওহ্। কিন্তু শুনেছিলাম যে ভাবি না কি তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে।যে চলে গেছে তাকে তুমি এখানো ভালো বাসো। সত্যি আদি ভাবী কিন্তু অনেক লাকি ছিল কিন্তু ব্যাড লাক।তোমার ভালোবাসা বুঝলো না।সরি আদি ভুল করে তোমাকে ভাবির কথা মনে করিয়ে দিয়েছি। I’m really really sorry 😞
, it’s ok ফারহান। তুমি শুধু দোয়া কর আমার বউ যেন আমার কাছে ই ফিরে আসে।
চলবে,,,, কপি করা নিষেধ