আলো_আধারের_খেলা
পর্ব_০৯
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
জান্নাত একটু হাসলেই তার গালদুটি একদম হালকা গোলাপি রঙের মতো হয়ে যায়।বলতে গেলে একদম ধবধবে ফর্সা তার গায়ের রঙ। ভ্রু দুটো ছিলো সরু এবং ঘন কালো চুলে পরিবেষ্টিত। যা দেখতে খুবই সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। চোখ দুটোর পাঁপড়ি ছিলো ঘন পল্লবে ভরা। চোখের দৃষ্টি ছিলো গভীরতম,এক পলক তাকাতেই যে কেউ কাবু হয়ে যেতে পারে।রুয়েল জান্নাতের এমন সৌন্দর্য দেখে ভিতরে ভিতরে ছটফট করতে লাগলো। সে কিছুতেই নিজেকে সামলাতে পারছিলো না।জান্নাত রুয়েলকে এভাবে তাকানো দেখে তার চোখ ফিরে নিলো।সে অন্য মুখ হতেই রুয়েল হাত বাড়িয়ে দিলো।রুয়েলের হাতের স্পর্শ পেতেই থরথর করে কাঁপছিলো জান্নাতের ঠোঁটদুটি।সে তৎক্ষনাৎ চোখ বন্ধ করে নিলো।এদিকে রুয়েলের ভিতরটা লণ্ডভণ্ড হয়ে যাচ্ছে।সে কিছুতেই নিজেকে স্থির রাখতে পারছিলো না।তবুও জান্নাতের শরীরের এমন কাঁপুনি দেখে নিজেকে সংযত করলো।আর মনে মনে ভাবলো,জান্নাতের ভয় এখনো কাটে নি।ওকে আরো সময় দেওয়া উচিত।এজন্য রুয়েল বললো, জান্নাত অনেক রাত হয়েছে।এখন তো ঘুমানো উচিত আপনার।আমার না হয় রাত জাগার অভ্যাস আছে।কিন্তু আপনার তো নেই।যান তাড়াতাড়ি বেডে গিয়ে শুয়ে পড়ুন।
জান্নাত সেই কথা শুনে বললো, জ্বি।আপনিও শুয়ে পড়ুন।এই বলে সে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো। কিন্তু রুয়েল বোকার মতো তাকিয়ে রইলো জান্নাতের দিকে।সে বুঝতেই পারছে না আর কিভাবে জান্নাতকে তার কাছে আসার কথা বলবে।
রুয়েল ঘরের লাইট টি অফ করে দিলো।
রুম টি অন্ধকার হলেও ডিম লাইটের হালকা নীল আলোয় জান্নাতের মুখখানা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।একদম নীল পরীর মতো লাগছিলো জান্নাতকে।রুয়েল তার জায়গা থেকে দাঁড়িয়েই জান্নাতকে দেখতে লাগলো। অজানা এক সৌন্দর্যের মাঝে তার দৃষ্টি এমনভাবে আটকে পড়েছে যে রুয়েল তার অজান্তেই পা চালিয়ে জান্নাতের পাশে এসে বসলো।জান্নাতের মাথায় কোনো কাপড় ছিলো না।সে চুলগুলো ছেড়ে রেখেছে।জান্নাতের চুলগুলো লম্বা হওয়ার কারনে চুলের আগা ফ্লোর ছুঁয়ে আছে।রুয়েল হাত দিয়ে চুলগুলো স্পর্শ করতেই জান্নাত তাড়াতাড়ি করে উঠে বসলো আর বললো,আপনি এভাবে বসে আছেন কেনো?ঘুমাবেন না?
রুয়েল জান্নাতের কথা যেনো শুনতেই পারলো না।সে তো জান্নাতের কথা বলার স্টাইল দেখছে।জান্নাত কিভাবে তাকায় কিভাবে কথা বলে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করছিলো।সে জান্নাতকে যতই দেখছে ততোবেশি আকর্ষণ অনুভব করছে।রুয়েল বেহায়ার মতো জান্নাতের দিকে অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে।জান্নাত এতোক্ষণে খেয়াল করলো ব্যাপার টা।সে রুয়েলকে এভাবে তাকানো দেখে সাথে সাথে তার চোখ ফিরে নিলো।সে ভাবতেই পারছে না এভাবে খোলামেলা ভাবে কোনো এক পুরুষ মানুষের সামনে সে বসে আছে।না আছে মাথায় কাপড় না আছে মুখে।যে মেয়ে বাবা মা দাদী ছাড়া কারো সামনে যেতে চাইতো না আজ সে একা একটা ঘরে অন্ধকারে অচেনা এক যুবকের সাথে।
দূর কি ভাবছি আমি!ইনি তো আমার স্বামী হন,ইনি কোনো অচেনা যুবক নন।
জান্নাত এখনো ফ্রি হতে পারছে না রুয়েলের সাথে।তার শুধু ভয় হচ্ছে রুয়েল যে কখন তার কাছে আসতে চায়।সে তো বারণও করতে পারবে না।কারণ রুয়েল তো তার স্বামী।কিন্তু ভালোভাবে দুইজন দুইজনকে না জানতেই কিভাবে তারা প্রেম ভালোবাসা আদান প্রদান করবে।না,আরো সময় চায় জান্নাতের।কিন্তু রুয়েল কি তাকে এই সময় টা দেবে।জান্নাত মনে মনে এসব ভাবতেই হঠাৎ রুয়েল জান্নাতকে বললো, জান্নাত উঠলেন কেনো?শুয়ে পড়ুন।এই বলে রুয়েল নিজেও জান্নাতের পাশে গিয়ে শুইলো।
জান্নাত বসেই থাকলো।রুয়েলকে এভাবে শোয়া দেখে তার হার্টবিট আরো দ্রুত চলতে লাগলো।রুয়েল তখন বললো,কি হলো জান্নাত?শুয়ে পড়ুন।
জান্নাত শুয়ে পড়তেই রুয়েল তাকে সাথে সাথে জড়িয়ে ধরলো।জান্নাত তা দেখে একদম ভয় পেয়ে গেলো।সে লজ্জায় আর আতংকে চোখ বন্ধ করে থাকলো।জীবনে প্রথম কোনো পুরুষ মানুষের আলিঙ্গন,সে কিছুতেই এভাবে থাকতে পারলো না।জান্নাত সেজন্য নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করলো।
রুয়েল তখন বললো, জান্নাত ভয় পাবেন না প্লিজ।আমি জানি আপনার অনেক অস্বস্তি হচ্ছে।এটাই স্বাভাবিক ব্যাপার।কিন্তু আপনাকে এই অস্বস্তি কাটাতে হবে।মনের ভিতর থেকে সব ভয় দূর করতে হবে। আপনি আমার বয়সে অনেক ছোট।সেজন্য আমি জোর করে কোনো ভালোবাসা আদায় করতে চাই না।আপনি যেদিন আমাকে নিয়ে কোনো সংকোচ রাখবেন না,আমার ছোঁয়াতে আপনার কোনো অস্বস্তি হবে না,সেদিনই আমি আপনার সাথে ঘনিষ্ঠ হবো।তবে এতোদিন আমাকে দূরে রাখবেন না প্লিজ।আপনাকে বুকের মাঝে নিয়ে ঘুমানোর অধিকারটুকু দিন।
জান্নাত রুয়েলের এমন আবেগঘন কথা শুনে খুবই কষ্ট পেলো।সে বুঝতে পারলো এরকম করা তার ঠিক হচ্ছে না।রুয়েলকে তার সঙ্গ দেওয়া উচিত।সে এ বিষয়ে একটা হাদিস জানে,স্বামী যখন স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে,কিন্তু স্ত্রী যদি স্বামীর ডাকে সাড়া না দেয়,সেজন্য স্বামী যদি অসন্তুষ্টিতে রাত্রি যাপন করে তাহলে ভোর হওয়া পর্যন্ত ফেরেশতারা লানত করতে থাকে(হাদিসঃ৩৪৩২,সহিহ)
জান্নাত এজন্য রুয়েলের পাশ ফিরলো।সে তার জড়তা আর ভয় কাটিয়ে, লজ্জা শরম ত্যাগ করে রুয়েলের চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,আপনি আমার স্বামী হন।আপনি যাতে অসন্তুষ্ট হন এমন কোনো কাজ আমি কখনোই করবো না।
রুয়েল সেই কথা শুনে মুচকি একটা হাসি দিয়ে জান্নাতের কপালে একটা কিস করে বললো, আপনার কথা শুনে খুব খুশি হলাম জান্নাত।অনেক কপাল গুনে আপনার মতো একজন বউ পেয়েছি আমি।আপনাকে কষ্ট দিয়ে কখনোই কোনো কাজ করতে চাই না।আপনি আগে আমাকে বুঝতে শিখুন।আমাকে যেদিন মন থেকে ভালোবাসবেন সেদিন ই আমি আপনার অনেক কাছে আসবো।গভীরতম এক ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করবো সেদিন।এই বলে রুয়েল জান্নাত কে তার বুকের সাথে ভালো করে মিশিয়ে নিলো।জান্নাত রুয়েলের কথা শুনে একদম স্তব্ধ হয়ে গেলো।তার হঠাৎ দাদীর কথা মনে পড়লো।দাদী মনে হয় এজন্যই তাকে বলেছিলো,রুয়েলের মতো ভদ্র আর নিষ্ঠাবান ছেলে তিনি দেখেন নি।জান্নাত নিজেও বুঝে গেলো আসলেই রুয়েল একজন অনেক বড় মনের মানুষ।রুয়েল কে সে যত দেখছে,তার কথা যত শুনছে ততোবেশি সে অবাক হয়ে যাচ্ছে।রুয়েল বাসর রাতে বউ কে এতো কাছে পেয়েও জোর করে তার সাথে মিলনে সঙ্গম হলো না।কারণ সে জানে জান্নাত অনেক ছোটো।এখনো সে স্বামী স্ত্রীর প্রেম ভালোবাসা বিষয়ে ভালোভাবে জানে না।তাছাড়া বাবা মা দাদীকে ছেড়ে অন্য এক অচেনা মানুষের বাসায় এসেছে।এমনিতেই সে ভীষণ আপসেট আজ।তাকে কিছুদিন তার মতো করে সময় কাটাতে দিতে হবে।তার যত কষ্টই হোক জান্নাতের সাথে জোর করে সে কিছুই করবে না।
আজ রাত তিনটা পার হয়ে গেলো,তবুও জান্নাত ঘুম থেকে জেগে উঠলো না।এতোদিন তিনটা বাজার সাথে সাথে সে জেগে উঠতো।রুয়েলের বুকের উপর শুয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে সে।কিন্তু রুয়েল সেই থেকে জেগেই আছে।সে জান্নাতের চুলগুলো বুলিয়ে দিচ্ছে আর জান্নাত আরামে ঘুমাচ্ছে।হঠাৎ জান্নাত তাড়াহুড়ো করে উঠে পড়লো।সে চোখ ঘষতে ঘষতে ঘড়ির দিকে তাকালো। এদিকে রুয়েল একদম ভয় পেয়ে গেলো।জান্নাত হঠাৎ এভাবে চমকে উঠলো কেনো?সেজন্য রুয়েল জান্নাতের হাত ধরে বললো, জান্নাত,জান্নাত!কি হয়েছে আপনার?খারাপ কোনো স্বপ্ন দেখেছেন?
জান্নাত ঘুম ঘুম চোখে বললো,না। কোনো খারাপ স্বপ্ন দেখি নি।আমি আসলে এখন তাহাজ্জুদের নামায পড়বো।এই সময় আমি প্রতিদিন জাগা পাই।
রুয়েল জান্নাতের কথা শুনে বললো,সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ।চলুন অযু করে আসি।
জান্নাত রুয়েলের কথা শুনে বললো,আপনিও তাহাজ্জুদের নামায পড়েন?আপনি তো পাঁচ ওয়াক্ত নামাযই ঠিক ভাবে আদায় করেন না।
রুয়েল সেই কথা শুনে বললো,আপনি আল্লাহ তা”য়ালার সন্তুষ্টির জন্য যেসব ইবাদত করেন,আমিও আজ থেকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সেসব ইবাদতই করবো।আমি আমার বউ কে রেখে একা একা জাহান্নামে গিয়ে কি করবো?আমি আপনার সাথে একসাথে বেহেশতে থাকতে চাই জান্নাত।আমি আপনাকে হারাতে চাই না কখনো।ইহকাল পরকাল সবখানে শুধু আপনাকেই চাই।আমি আপনাকে অনেক অনেক ভালোবাসতে চাই।
জান্নাত রুয়েলের মুখে এসব কথা শুনে নিজের অজান্তেই রুয়েল কে জড়িয়ে ধরলো। তার চোখে জল চলে এলো।
রুয়েল তখন নিজেও জান্নাতকে ভালোভাবে জড়িয়ে ধরলো আর বললো,দেখছেন জান্নাত!আপনি নিজের থেকে কিভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন!এই কাজটি আপনি আপনার মন থেকেই করেছেন।একদিন এইভাবে আপনি নিজেই আপনাকে ভালোবাসার জন্য আবদার করবেন।
জান্নাত সেই কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে রুয়েলকে ছেড়ে দিলো।আর ওয়াশরুমের দিকে চলে গেলো।জান্নাত আগে ওযু করতে ধরলো।কিন্তু তার তখন মনে হলো রুয়েল তো নিজের মুখে বললো সেও নামায পড়বে।তাহলে ওনাকেই আগে অযু করতে বলি।এজন্য জান্নাত আবার রুয়েলের কাছে ফিরে এলো।
রুয়েল জান্নাতকে দেখে বললো, এতো তাড়াতাড়ি অযু করা হয়ে গেলো?
জান্নাত তখন বললো,আপনিও তো নামায পড়বেন।তাহলে আপনিই আগে অযু করে নিন।আপনার হয়ে গেলে তারপর আমি করবো।রুয়েল সেই কথা শুনে অযু করতে গেলো।
আর জান্নাত ওয়াশরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলো।
হঠাৎ জান্নাতের সেই স্বপ্নের কথা মনে হলো।সে ঘটি থেকে পানি ঢালছে আর এক সুদর্শন যুবক সেই পানি দিয়ে অযু করছে।জান্নাত সেজন্য রুয়েলের কাছে গিয়ে বললো, আপনি কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি?
–জ্বি বলুন।
–আপনি যে যে ওয়াক্ত বাসায় নামায পড়বেন আমি কি সেই সেই ওয়াক্তের অযুর জন্য পানি নিজের হাতে ঢালতে পারি আপনার শরীরে?
–হ্যাঁ অবশ্যই।কেনো নয়?আমি তো আজ থেকে আপনার সাথে সাথে তাহাজ্জুদ আর ফজরের নামায বাসাতেই পড়বো।এই দুই ওয়াক্তে আপনি আমাকে ওযুর সময় হেল্প করলে আমি অনেক খুশি হবো।আমার অনেক কিছু শেখার আছে আপনার থেকে।
জান্নাত রুয়েলের কথা শুনে ভীষণ খুশি হলো।সে আজ কেই রুয়েলকে অযু করতে হেল্প করলো।এইভাবে জান্নাত আর রুয়েল তাহাজ্জুদের নামায পড়লো।আবার কিছুক্ষন গল্প করে ফজরের নামায পড়ে শুয়ে পড়লো।
সকাল আটটা বেজে গেলো।জান্নাত আর রুয়েল এখনো ঘুমে আছে।তারা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।ফজরের নামায পড়ে পাঁচটার সময় ঘুমিয়ে পড়েছে সেজন্য এখন একটু ভালোভাবেই চোখ টা লাগিয়ে এসেছে।রুয়েল তো এমনিতেই ১২ টার আগে ওঠেই না।আজ আবার বউকে কাছে পেয়েছে।আজ তো উঠবেই না।জান্নাত অনেকবার ওঠার চেষ্টা করেছে।সে রুয়েলকে বলেছে তার এখন ওঠা উচিত।নাস্তা বানাতে ভাবীকে হেল্প করা উচিত।কিন্তু রুয়েল উঠতে দেই নি জান্নাতকে।এজন্য জান্নাতও রুয়েলের সাথে ঘুমিয়ে আছে।
এদিকে রুয়েলদের বাসার কাজের মেয়ে হেনা আর ঊর্মি সবার জন্য নাস্তা রেডি করছে।ঊর্মি তার কাজকর্ম শেষ করে বাকি কাজ হেনাকে করতে বললো।
ঊর্মি সেজন্য দরজায় দাঁড়িয়ে থেকে হেনার কাজ দেখছে আর বার বার রুয়েলদের ঘরের দরজার দিকে তাকাচ্ছে।ঊর্মি মনে মনে ভীষণ জ্বলে যাচ্ছে।সকাল আটটা বেজে গেলো এখনো ওঠার নামগন্ধ নেই।এইভাবে ঘুমালে সংসার করবে কিভাবে?
হঠাৎ রুয়েলদের পাশের ফ্ল্যাট থেকে অনেকেই বউ দেখার জন্য এসেছে।ঊর্মি তখন তার শাশুড়ী কে গিয়ে বললো,মা, মা আপনার ছেলের বউ কে উঠতে বলেন।পাশের ফ্ল্যাট এর ভাবীরা এসেছে নতুন বউকে দেখতে।
রুয়েলের মা সেই কথা শুনে বললো, কি বলছো এসব?আমি কিভাবে ছেলেকে ডাক দিবো?তুমি হলে ওর ভাবী।তুমি গিয়ে ডাক দাও।
ঊর্মি সেই কথা শুনে বললো, না আমি পারবো না ডাকতে।আমি যদি ডাক দেই তখন আবার জান্নাত ভাববে, ভাবী হিংসা করছে।ওদিকে রুয়েলও হয় তো বিরক্ত হবে।
এদিকে ভাবীরা দেরি করতেও চাইছেন না।কি বলবো তাদের কে?
ঊর্মি এতো জোরে জোরে এসব কথা বলছে যে ভাবীরা সব শুনতে পেলো।তারা যখন দেখলো নতুন বউ এখনো ওঠেই নি সেজন্য তারা চলে গেলো।
রুবেল বাহিরে গিয়েছিলো।সে এলো নাস্তা খাওয়ার জন্য।অন্যদিকে হিয়া আর হৃদয় নাস্তা খাওয়ার জন্য আগেই টেবিলে বসে পড়েছে।ঊর্মি সবাইকে নাস্তা দিলো।হঠাৎ রুবেল বললো,বাকি সবাই কোথায়?
ঊর্মি মুখ ভেংচিয়ে বললো ওঠেই নি।
রুবেল সেই কথা শুনে কিছু আর বললো না।সে তার খাওয়া শেষ করলো।
এদিকে রুয়েলের মা নতুন বউ কে রেখে একা একা খেতে বসতেও পারছেন না।সেজন্য তিনি জান্নাতের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন।
কিছুক্ষন পরেই জান্নাত বের হয়ে আসলো রুম থেকে।পরনে সুন্নাতি জামা।তার উপরে বড় একটা ওড়না দিয়ে পুরো শরীর আর মুখ ঢেকে রেখেছে।সে রুম থেকে বের হয়েই তার শাশুড়ীর রুমে গেলো।সে তার শাশুড়ী কে দেখামাত্র সালাম দিলো।
জান্নাতের শাশুড়ী সালামের জবাব দিয়ে জান্নাতের কাছে এগিয়ে আসলেন,আর বললেন,মা জান্নাত!কাল থেকে একটু তাড়াতাড়ি উঠিও।তুমি যেহেতু এ বাড়ির বউ,তোমার তো উচিত তোমার বড় ভাবীকে কাজে হেল্প করা।
–জ্বি মা।আজ একটু উঠতে দেরি হয়েছে।কাল থেকে আর হবে না।এই বলে জান্নাত নিচ মুখ হলো।সে ভাবতেই পারে নি তার শাশুড়ী এইভাবে তাকে বলবে।জান্নাত মনে মনে ভাবতে লাগলো সে তো উঠতেই চাইছিলো,ওনার ছেলেই তো বললো উঠতে হবে না।ওনার কথা শুনে তার এভাবে শুয়ে থাকা উচিত হয় নি।
#চলবে,