#ওগো_মনোহারিণী ( #রৌদ্র_মেঘের_আলাপন ) [১৪]
লেখনিতে : তাসলিমা নাসরিন
— আপনার হায়াত জানেন কতটুকু ? ”
— কি বলছো এইসব ? ”
— যা জিজ্ঞাসা করেছি শুধু সেটুকুই বলুন ! ”
— না জানি না ! ” ( কাঠকাঠ গলায় উত্তর দিলেন )
— কেনো জানেন না আপনি ? ”
— তুমি পাগল হয়ে গিয়েছো ? মানুষের হায়াত কতকাল কেউ জানে ? তা তো স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ তা জানার ক্ষমতা রাখেনা । ”
— বাহ ! ভেবেছিলাম যেমন ওতোটাও নগণ্য নও তুমি । ”
— যা বলার সরাসরি বলে ফেলো ! ”
— এতো তাড়া কীসের আপনার মিস্টার “NS” ! ”
— পাগল হয়ে গিয়েছো ? ”
— না । ”
— বলা নেই কওয়া নেই, তাহলে “NS” এর সাথে কেনো জড়াচ্ছো আমাকে ? জানো ওর সম্পর্কে ? কতোটা বাজে লোক সে ?”
— নিজের ব্যাপারে ভালোই গুনগান গাইতে পারো দেখছি ! ”
— যা বলার বলে ফেলো তাড়াতাড়ি। ডেকেছো কেনো ? ”
— এতো তাড়াহুড়ো কেনো গো ! ”
— আমার সাথে এইরকম হেলালি তুমি করতে পারো না। আমি তোমার স্বামী হই ।”
— নো নো মিস্টার । ইউ আর নট মাই হাসবেন্ড। ইউ আর মাই হাসবেন্ড’স বেস্টফ্রেন্ড।
— ওয়াট ?”
— ইয়েস মিস্টার “NS” । ”
— থাক তোর সামনে ভালো মানুষি না-ই বা করলাম। আসল কথা যখন জেনে গিয়েছিস তখন তোকে বাঁচিয়ে রেখে তো আর লাভ নেই।
***
— আপনার সাথে কথা বলার জন্য এখানে এসেছি আপনার জ্ঞান শুনতে নয় । আরে কোন মুখে আমাকে জ্ঞান শোনাচ্ছো তুমি ? নিজের হাল দেখেছো ! এসেছো তো পুরো প্যাকেট হয়ে। গেয়ো ভূত যেনো , বোরকা,হিজাব,নিকাব,পা মোজা,হাত মোজা । ”
— ভেরি নাইস ! আপনি তাহপে এতোটাও মূর্খ না । ”
— এই তুমি কাকে মূর্খ বলছো ? আর কেনো বলছো ? ”
— আমার সামনে বসে থাকা অসৎ মহিলাটি কে। আর ওতোটাও মূর্খ মনে হয়নি কারন আর যাই-হোক তুমি অন্তত আমার পোশাকের নাম জানো । ”
— থামবে তুমি ?”
— থামার জন্য তো এখানে আনি নি। ”
— কে তুমি ? ”
— আগে বলো তোমার এইসব পোশাকের কি ছি’ড়ি হ্যাঁ ? হাতা কাটা ব্লাউজ পাতলা ফিনফিনে শাড়ি। শরীর তো অর্ধেক দেখাচ্ছো মানুষ কে। তা NS কি এইসবের পারমিশন দেয় নাকি সেই তোমাকে দিয়ে দেহ/ব্যবসা করায় । ”
— থামবে তুমি ?
— কেনো কেনো ?”
— কিসব যা তা বলছো ? আর কোন মুখ নিয়ে কথা বলছো তুমি ? ”
— যে মুখ দিয়ে সব অত্যাচার সহ্য করে এসেছি ! ”
— বেশি বাড় বেড়েছো তাই না ? ”
— বাদ দাও তোমাকে যে কারনে ডাকলাম সেটা বলি । নো কথা কাটাকাটি অনলি তুমি । ”
— হুম ! ”
— তোমার আর নেওয়াজ শেখের রিলেশন কত দিনের ? ”
— তুমি ওনাকে কীভাবে চেনো ? ”
— অনলি উত্তর । ”
— আগে বলো তুমি কে ? ”
— আমি তোমার জবাব দিতে বাধ্য নই। তবে এটা জানি তুমি আমার পরমপিতা “**” এর বউ। ”
কথাটি শুনে খানিক চমকে উঠে সামনে বসে থাকা মহিলাটি। আর ঢোক গিলে বলে-
— কে তুমি ? ”
— আগে উত্তর দাও। ”
— কি?”
— নেওয়াজ শেখের সাথে কত বছরের সম্পর্ক ছিলো তোমার ? আই মিন অয়না চৌধূরী’র সাথে বিয়ে করার ঠিক আগে কতদিনের সম্পর্ক ছিলো তোমাদের । ”
— ২ বছর ! ”
— মানে অয়না চৌধূরীর বিয়ের আগে থেকেই ? ”
— হ্যাঁ। ”
— তা প্রিয় পুরুষ কে বিয়ে করতে দিলে কেনো ? ”
— নেওয়াজ শেখ চেয়েছিলো !”
— মানে ? ”
— মানেটা খুবই সিম্পল । সে তোমার সম্পত্তির কারনে তোমাকে বিয়ে করেছে। ”
আচ্ছা তাহলে আসি এখন সতিন মাহ ! খুব তাড়াতাড়ি দেখা হচ্ছে আমাদের। গুড বাই ! এই বলে যেতে থাকে আগুন্তুক। পেছনে থেকে আওয়াজ আসে-
— আমার হাতের বাঁধন তো খুলে যাও। এই এই যাচ্ছো কোথায় ? শুনে তো যাও। ”
***
— অপারেশন সাকসেসফুল। ”
— আলহামদুলিল্লাহ ! ”
— তাদের জ্ঞান আসবে কখন ? ”
— এই অপারেশন টা এতোই হার্ড আমাদের পক্ষে যে আপাততো তাদের কে টানা ২ দিন ইঞ্জেকশন পুশ করে অজ্ঞানে রাখতে হবে। ”
— ভাইয়া কোথায় । ”
— ভাইয়া আসছে। ”
— সিক্রেট রুমে আপাততো সব ওয়াশ করে দাও। আর ড্রয়িংরুমে আমাদের জন্য লাঞ্চের জন্য ব্যবস্থা করো। আর আমার রুমে ল্যাপটপ টা পাঠিয়ে দিও। ”
— ওকে আপু। ”
হঠাৎ করেই পাশ থেকে বিস্ফোরণের এক বিকট আওয়াজ এলো। আওয়াজটা বোধ হয় অপারেশন থিয়েটার থেকে এসেছে। আরোহী কিছুটা ঘাবড়ে গেলো। ছুটলো সেদিকটায়।
(চলবে)
ডিপ্রেশনে আছি বেশ তাই ৫০০+ শব্দের গল্প লিখলাম। ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ।