কথা দিলাম 🌸❤️
||পর্ব ~ ১৬||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা
আধভিক: (চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস নিয়ে) আই লাভ ইউ সিয়ারা!
সিয়ারা কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালে আধভিক নিজের চোখ খোলে কিন্তু কিছু বলে না। দুজনেই নীরব। আধভিক নিজের নীচের ঠোঁটটা একটু কামড়ে ধরতেই সিয়ারা নীরবতা ভেঙে বললো,
সিয়ারা: নেশাটা মনে হয় একটু বেশিই করে ফেলেছেন আজকে। বুঝতে পারছি, যান বাড়ি চলে যান।
আধভিক: আমি সত্যি বলছি।
সিয়ারা নিজের কথা শেষ করে পিছন ফিরে চলে যাচ্ছিলো এমন সময় আধভিকের কথা শুনে দাঁড়িয়ে গেলো। তবে আধভিকের দিকে ফিরলো না।
আধভিক: আমি তোমাকে ভালোবাসি সিয়ারা। আমি সত্যি তোমাকে নিজের জীবনে চাই। আজকে হঠাৎ করে তোমাকে অন্য একটা ছেলের সাথে দেখে আমি মেনে নিতে পারিনি। মাথাটা কাজ করছিল না তাই আর জিজ্ঞেসও করিনি কিছু। যা মুখে এসেছে বলে গেছি।
সিয়ারা: এখনও মনে হয় সেটাই বলছেন। কারণ আপনি তো প্রেম ভালোবাসার মানেই বুঝতেন না তাহলে আজ হঠাৎ করে কীভাবে এতো নির্দ্বিধায় “ভালোবাসি” বলছেন?
আধভিক: তুমিই তো শিখিয়েছো “ভালোবাসা” শব্দের মানে। বুঝিয়েছো যে ভালোবাসা দিয়ে সব জয় করা যায়, তাই বলছি। আমি অনুভূতিটা বুঝতাম কিন্তু সেটার নাম জানতাম না। যখন তোমাকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না তখন প্রতিটা মুহূর্তে তোমার মুখটা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। তখন হয়তো সেটা শুধু ভালোলাগা ছিলো কিন্তু এই একমাসে সেটা ভালোবাসাতে পরিণত হয়েছে। এখন তুমি আমার থেকে দূরে গেলে সবার আগে এটা মনে হয় তোমাকে ফিরে পাবো তো? কারণ তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয়টা আরো বেশি জেঁকে বসেছে আমার মনে। আর এই ভয়টাই আমাকে বুঝতে শিখিয়েছে আমি তোমাকে ভালোবাসি। কারণ ভালোবাসা থাকলেই তো হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে তাই না?
সিয়ারা স্থির চাহুনীর দ্বারা আধভিকের দিকে তাকিয়ে থাকে। হয়তো সে চোখের দ্বারা আধভিকের কথার সত্যতা যাচাই করছে।
সিয়ারা: ভালোবাসা শব্দের মানে যখন শিখেছেন তখন এটাও নিশ্চয় জানেন এই শব্দটা আরো একটা শব্দের উপর নির্ভর করে? সেই শব্দটা হলো “বিশ্বাস” যা আপনি আমাকে করেন না।
আধভিক: করি, নিজের থেকেও বেশি বিশ্বাস করি তোমাকে। আমি তোমাকে সন্দেহ করিনি সিয়ারা। আমি ধরেই নিয়েছিলাম যে তুমি হয়তো অন্যকারো। আসলে, কাছের মানুষের বড্ড অভাব আমার জীবনে। তাই হারিয়ে ফেলার ভয়টাও ভীষণ। বলতে পারো এইজন্যেই কখনও কাওকে নিজের জীবনে আনিনি। খালি মনে হতো, জীবনে আসবে আবার হারিয়েও যাবে। তখন সেই কষ্টটা তো আমাকেই সহ্য করতে হবে, যেটা সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই।
ধীরে ধীরে সিয়ারার মন গলতে শুরু করেছে। তবুও সে চেষ্টা করছে যতটা সম্ভব নিজেকে শক্ত রাখার। সিয়ারা কিছু না বললে আধভিক সিয়ারার কাছে এগিয়ে এসে ওর হাত দুটো নিজের দুহাত দিয়ে ধরে। সিয়ারার চোখে চোখ রেখে আধভিক বলে,
আধভিক: প্লিজ, প্লিজ বি মাইন সিয়ারা। আমি তোমাকে হারাতে চাই না। নিজের অজান্তেই আমি তোমার সাথে জড়িয়ে পরেছি। আমার ভালো থাকা, খারাপ থাকা পুরোটাই তোমার উপর নির্ভর করছে। আমি জীবন্ত লাশ হয়ে বেঁচে থাকতে চাই না। এমন একজনকে আমি নিজের জীবনে চাই যে সম্পূর্ণ আমার হবে। তার উপর সব অধিকার শুধু আমার থাকবে। তাঁকে আকড়ে ধরে, তাঁর ভালোবাসাতেই আমি নিজের বাকি জীবনটা কাটাতে চাই। আর সেই একজনটা হলে তুমি!
সিয়ারা কিছুক্ষণ চুপ করে আধভিকের দিকে তাকিয়ে থাকার পর হঠাৎ করেই নিজের হাত ছাড়িয়ে সরে আসে। নিজেকে একটু শক্ত করে বলে,
সিয়ারা: এতই যখন ভালোবাসেন তখন আমার কথা অমান্য করেন কীভাবে?
আধভিক: ক..কি কথা অমান্য করেছি?
সিয়ারা: আবার জিজ্ঞেস করছেন? আমি না বলেছিলাম এইসব নেশাভাঙ চলবে না আর?
আধভিক: ইয়ে.. হ্যাঁ মানে না..মানে….
সিয়ারা: এতক্ষণ তো খুব বুলি ফুটছিলো। এখন তুতলে যাচ্ছেন কেন?
আধভিক: তোমাকে দেখে…
সিয়ারা: কিহ? (ভ্রু কুঁচকে)
আধভিক: (মাথা চুলকে) ইয়ে মানে নেশাটা কেটে যাচ্ছে তোমার রাগ দেখে। আর সব গুলিয়ে যাচ্ছে আবার কেমন জানো।
সিয়ারা: ও তার মানে নেশা করে থাকলেই ভালো ভালো কথা বলবেন আর নেশায় না থাকলে সকালের মতো কথা বলবেন?
আধভিক: এ বাবা না না। ধুর, এমনটা কখন বললাম? আমি এটা বলতে চাইনি। (বাচ্চাদের মতো করে)
সিয়ারার হাসি পেলেও সে হাসে না। হাসি চেপে নিয়ে আধভিকের চুলগুলো এলোমেলো করে দেয়। তারপর আধভিকের চোখে চোখ রেখে বলে,
সিয়ারা: অনেক রাত হয়ে গেছে। এইবার বাড়ি ফিরে যান। খাওয়া দাওয়া না করে সারাদিন ধরে যে এইসব গিলেছেন বুঝতেই পারছি। বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে নেবেন আগে।
আধভিক: উত্তরটা না পাওয়া পর্যন্ত গলা দিয়ে খাবার নামবে না। (কাতর ভাবে)
সিয়ারা: তাহলে আর কি? যান গিয়ে আবার মদ গিলতে বসে পরুন। সেটা তো গলা দিয়ে নেমে যাবে। (রেগে)
আধভিক: (তাচ্ছিল্য হেসে) তার মানে তোমার উত্তর না তাই তো? ঠিক আছে। আমি তোমার ডিসিশনকে রেসপেক্ট করবো।
সিয়ারা: (যেতে বাঁধা দিয়ে) বড্ড বেশি বোঝেন আপনি জানেন তো? এতই যখন রেসপেক্ট করেন আমার ডিসিশনকে তাহলে কেন এত ড্রিংক করেছেন বারণ করার পরেও? সেইবেলা রেসপেক্ট নেই তাই না? সকালবেলা যখন আমার কথা শোনার দরকার ছিল, বোঝার দরকার ছিলো তখন বুঝেছেন? সবসময় অকাজ করেন আর তারপর বাচ্চামু করেন। (একনাগাড়ে)
আধভিক সিয়ারার বকা শুনছে চুপচাপ বাচ্চাদের মতো। আধভিকের মুখটা দেখে সিয়ারা বলেই ফেলে,
সিয়ারা: আপনাকে ঠিক কি বলা উচিত আমি বুঝে উঠতে পারছি না জানেন তো? মাঝে মধ্যে ভীষণ ম্যাচিউর, মাঝে মধ্যে একদম বাচ্চা তো মাঝে মধ্যে পাগল।
কথাটা বলে সিয়ারা অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ছোট্টো নিশ্বাস ছাড়লে আধভিক মাথা তুলে সিয়ারার দিকে তাকিয়ে বলে,
আধভিক: এইসব কিছুই তোমার কাছে সিয়ারা। বাইরের সবার কাছে আমি যেমন তোমার কাছে আমি তেমন নই। বাইরের লোকের কাছে নিজের যেই রূপটা আমি লুকিয়ে রাখি, আমার সেই রূপটা শুধুমাত্র নিজের কাছের মানুষ, তোমার কাছেই প্রকাশ পায়। তুমি বিরক্ত হলে বলো, আমি নিজেকে সামলে নেবো।
সিয়ারা: হয়েছে হয়েছে। আব, যান এবার বাড়ি যান। অনেক রাত হয়ে গেছে আমার এখন ঘুম পাচ্ছে।
সিয়ারা আধভিককে চলে যেতে বলেও নিজেই নীচের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মাথার মধ্যে আধভিকের বলা কথাগুলো ঘুরছে সমানে। নিজের হাতে যখন আবার আধভিকের হাতের স্পর্শ পায় তখন সিয়ারা আধভিকের দিকে তাকায়।
আধভিক: আমি তোমার বিশ্বাস ভাঙতে দেবো না সিয়ারা। জাস্ট একটাবার আমাকে সুযোগ দাও। আমি নিজেকে বদলে নেবো, তোমার যা পছন্দ নয় আমি তা করবো না।
সিয়ারা: একদম না আধভিক। কখনও কাওর জন্য নিজেকে বদলাবেন না। নিজের জন্য নিজেকে বদলাবেন, নিজে ভালো থাকার জন্য নিজেকে বদলাবেন।
আধভিক: কেউ কাওর জন্য বদলায় না, ভালোবাসা বদলে দেয়। আমি তোমাকে ভালোবাসি সিয়ারা, তোমাকে পাওয়ার জন্য সব কিছু করতে পারি। কোনটা ভুল, কোনটা ঠিক আমি জানি না। আমি শুধু জানি তোমাকে আমার চাই। ভালোবাসতে হবে না আমাকে। ভালোবাসা পাওয়ার মতো ভাগ্য আমার নেই। (তাচ্ছিল্য হেসে) শুধু আমার সাথে থেকো, আমাকে ছেড়ে যেও না। তাহলেই হবে।
সিয়ারা কোনো উত্তর দেয় না। আধভিকের চোখের দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে ও। সিয়ারা খুব ভালো ভাবে বুঝতে পারে আধভিকের মনে লুকিয়ে থাকা কষ্টটা। প্রথম দিন থেকেই ও আন্দাজ করেছে ছেলেটার মধ্যে অনেক কিছু লুকিয়ে আছে। এইবার একে একে বার করতে হবে সব।
আধভিক: চলো।
সিয়ারা: হম? কোথায়? (অবাক হয়ে)
আধভিক: চলোই না আগে।
সিয়ারা: মাথা খারাপ হয়ে গেছে আপনার? কত রাত হয়েছে বলুন তো? এখন এইভাবে আপনার সাথে গেলে লোকে কি বলবে? ভাগ্যিস আমি আবাসনে থাকি, নাহলে এতক্ষণে সবাই জেনে গেলে আমি আস্ত থাকতাম না। যান বাড়ি যান।
আধভিক: সিয়ারা প্লিজ! আমি জানি তুমি খাওনি কিছু। তোমার মুখ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে সেটা। চলো আমার না সাথে? তোমার সাথে আরো কিছুক্ষণ থাকার সুযোগও পেয়ে যাবো। (অনুরোধ করে)
সিয়ারা: (হালকা হেসে) আপনার বাড়ি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমাতে ঘুমাতেই দেখবেন সকাল হয়ে গেছে। তারপর এনজিও তে চলে আসলেই দেখা পেয়ে যাবেন আমার।
আধভিক: তার মানে তুমি যাবে না আমার সাথে তাই তো? (মন খারাপ করে)
সিয়ারা: আজ্ঞে না। মন খারাপ করার প্রয়োজন নেই, আমি বললাম তো সকালে এনজিও তে চলে আসবেন। আর ড্রাইভার কেন নিয়ে আসেন না বলুন তো আপনি? আপনি এইরকম নেশা করে গাড়ি চালালে আমার ভয় করে।
আধভিক: (হাসিমুখে) চিন্তা করো না। আমি ঠিকভাবে পৌঁছে যাবো।
সিয়ারা: গিয়ে টেক্সট করবেন। আমি অপেক্ষায় থাকবো।
আধভিক: জো হুকুম।
সিয়ারা কিছু বলার আগেই দেখতে পেলো পাশের ফ্ল্যাটের লাইট জ্বলে উঠেছে। সঙ্গে সঙ্গে সিয়ারা নিএক্র বাড়ির ভিতরে দৌঁড় দিয়ে চলে গেলো আর দরজা বন্ধ করে দিল। আধভিককে টেক্সট করে দিলো যাতে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যায় ওখান থেকে। সিয়ারার সাথে সাথে আধভিকও টের পাওয়া সেও গাড়িতে উঠে বসে। তখনই সিয়ারার টেক্সট আসলে আর দেরী না করে বেরিয়ে যায় ওখান থেকে। বাড়ি ফিরে সিয়ারাকে টেক্সট করে দিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতেই ঘুমিয়ে পরে। খাওয়া আর হয় না।
সকালে,
সিয়ারা বেশ হাসিখুশি মনে রেডি হচ্ছে এনজিও যাওয়ার জন্য। আজকে একটু তাড়াতাড়িই যাচ্ছে সে এনজিওতে। যাতে ছুটিটাও তাড়াতাড়ি নিয়ে আধভিকের সাথে বেশি সময় কাটাতে পারে। এমন সময় দিয়ারা ওর ঘরে এসে উপস্থিত হলে সিয়ারা একটু অবাক হয়।
সিয়ারা: কি ব্যাপার দিয়া? তুই এত সকালে আমার ঘরে?
দিয়ারা: আমারও তো এটাই প্রশ্ন দি। তুই এত সকাল সকাল কোথায় যাচ্ছিস?
সিয়ারা: আব, আমি এনজিওতে যাচ্ছি। আজকে একটু তাড়াতাড়ি ছুটি দিয়ে দেবো ওদের, কাজ আছে তাই।
দিয়ারা: ওহ, তো প্রেম করাটাও আজকাল কাজের মধ্যে পরে বুঝি?
সিয়ারা নিজের ব্যাগ গোছাচ্ছিলো ঠিক সেই সময় দিয়ারার কথাটা শুনে একটু চমকে ওঠে ও। কিছুক্ষণ চুপ থেকে দিয়ারার দিকে ফিরলে দেখে দিয়ারা হাত ভাঁজ করে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে একভাবে।
দিয়ারা: কি হলো? কি এক্সকিউজ দিবি ভেবে পাচ্ছিস না?
সিয়ারা: এক্সকিউজ দেওয়ার কিছুই নেই দিয়া। তুই যেমন ভাবছিস তেমন কিছুই না।
দিয়ারা: আচ্ছা? তুই বলতে চাইছিস তুই আধভিকের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিস না? ওর সাথে বেশি সময় কাটানোর জন্য এনজিওতে তাড়াতাড়ি যাচ্ছিস না?
সিয়ারা: তুই এত কিছু কীভাবে জানলি?
দিয়ারা: কারণ আধভিককে ফলো করি আমি। ও কখন কি করছে না করছে সব কিছুর খোঁজ থাকে আমার কাছে। দেখ দি! আমি তোকে কিছু বলতে এসেছি। আমি আধভিককে ভালোবাসি। আর এটা তুই ভালো ভাবেই জানিস।
সিয়ারা: (অবাক হয়ে) কিহ? আমি জানতাম তুই একজন নামকরা প্রোডিউসারের ছেলেকে পছন্দ করিস। দূর থেকে আমরা এমন অনেককেই পছন্দ করে থাকি দিয়া, তাই বলে তাঁকে ভালোবাসা? এটা সম্ভব নয়।
দিয়ারা: কেন সম্ভব নয় দি?
সিয়ারা: কারণ ওই মানুষটা তোর ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আজ হঠাৎ একটা সুযোগ তুই পেয়ে গেছিস ওনার সাথে দেখা করার, কাজ করার তাই বলে তুই তাঁকে ভালোবেসে ফেললি? আজ যদি এই সুযোগটা না আসতো? তখনও কি তুই বলতিস তুই আধভিককে ভালোবাসিস? না। তুই তখন বলতিস তুই ওকে পছন্দ করিস। ভালো লাগা আর ভালোবাসার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ আছে দিয়া।
দিয়ারা: একদম জ্ঞান দিতে আসিস না দি। তোর এই ভালোবাসা সম্পর্কে জ্ঞান শুনতে আমি মোটেও বসে নেই। আমার আধভিককে ভালো লাগতো বলেই তো ওর কাছাকাছি আসায় সেটা ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে। ও দূরে থাকলে না আমি ওকে চিনতাম, বুঝতাম আর না ভালোবাসতাম। এই সহজ বিষয়টা বুঝতে পারছিস না তুই?
সিয়ারা: (নিজেকে শক্ত করে) তাহলে কি বলতে চাইছিস তুই?
দিয়ারা: আমি গতরাতে দেখেছি আধভিককে আমাদের বাড়ির সামনে আসতে। এর আগে ও বারে গিয়ে বসেছিলো সেই খবরও আছে আমার কাছে। তোদের মধ্যে কি কথা হয়েছে আমি জানি না আর জানতেও চাই না। আমি শুধু তোকে বলতে এসেছি, তুই সরে যা আমাদের মাঝখান থেকে।
সিয়ারা: অনুভূতিটা তোর হাতের পুতুল নয় দিয়া। আধভিক আমার জন্য ফীল করে। হি হ্যাভ আ ফিলিংস ফর মি। তুই সেটা জোর করে বদলে দিতে পারিসনা। আমি আজ অবধি আধভিককে যতটা চিনেছি তাতে এটুকু বলতে পারি, আমি যদি ওর জীবন থেকে সরে যাই তাহলে দ্বিতীয় কাওকে নিজের জীবনে আসতে দেবে না।
দিয়ারা: এটা তোর মনের ভুল। আধভিক ভালোবাসা চায় যেটা আমি ওকে দিতে পারবো। তুই তো শুধু কষ্টই দিতে জানিস ওকে। আসার পর থেকে তো সেটাই দেখছি আমি আর তাছাড়া তুই তো এইসবে ইনভলভ হতে চাসনি কখনও তাহলে আজ কেন আধভিককে ছাড়তে চাইছিস না। তুইও কি লোভী হয়ে গেলি দি?
সিয়ারা: দিয়া! (জোরে) লোভী আমি নই তুই হয়ে গেছিস। একটা কথা কান খুলে শুনে রাখ, আধভিককে কোনরকম কষ্ট পেতে আমি দেবো না। বিষয়টা যখন ওর ফিলিংস নিয়ে তখন কখনওই সেটা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হতে আমি দিতে পারি না। ও এমন একটা মানুষ যে কখনও কাওর অনুভূতি নিয়ে খেলতে জানে না। সব জানার পরেও আমি ওকে তোর হাতে তুলে দেবো বলছিস?
দিয়ারা: আজ অবধি আমি যা যা চেয়েছি সবই তো দিয়েছিস দি। তাহলে আধভিককে কেন দিতে পারবি না?
সিয়ারা: ও কি কোনো জিনিস নাকি দিয়া? যে তুই চাইলি আর আমি দিয়ে দিলাম? ও একটা জলজ্যান্ত মানুষ। ও যদি নিজে তোর হতে চায় তাহলে আমি বিনা বাক্যে তোদের মাঝখান থেকে সরে যাবো। আর না চাইলে কেউ আমাকে ওর জীবন থেকে সরাতে পারবেনা। কথাটা মাথায় রাখিস আর এই ভুল চিন্তা ভাবনাগুলো বের করে ফেলিস।
সিয়ারা ঘর থেকে বেরিয়ে যাবে তার আগেই দিয়ারা বলে উঠলো,
দিয়ারা: আমি যদি আধভিককে না পাই তাহলে আধভিককে অনেক কষ্ট পেতে হবে দি। পারবি তো সেটা সহ্য করতে? তুই খুব ভালো ভাবেই জানিস আমার জেদ ঠিক কতটা ভয়ানক। (বাঁকা হেসে)
[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে 🥀]