কথা দিলাম ‘ 🌸❤️ ||পর্ব ~ ৪৮|| 🔞 @কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা

0
326

‘ কথা দিলাম ‘ 🌸❤️
||পর্ব ~ ৪৮|| 🔞
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা

দিয়ারা আর কিছু বলতে পারে না তাঁর আগেই দেবাংশু ওর সামনে সজোরে হাতের বোতলটা ভেঙে ফেলে। দিয়ারা শুধু চোখ বুজে মাথাটা একটু সরিয়ে নেয় কিন্তু নিজের জায়গা থেকে সরে না।

দেবাংশু: চলে যা এখান থেকে। আমার চোখের সামনে আসার সাহস করিস না।

দিয়ারা ধীরে ধীরে নিজের চোখটা খুলে দেবাংশুর দিকে তাকিয়ে দেখলো দেবাংশু নীচের দিকে তাকিয়ে আছে আর রাগে ফুঁসছে। দেবাংশুর চোখের সামনে শুধু এই ঘটনার দৃশ্যটা ভাসছে যেখানে দিয়ারা অর্জুনের সাথে ঘনিষ্ট হয়ে নাচ করছিলো।

দিয়ারা: কেন এমন করছো তুমি? কি করেছি আমি যে এত রাগ দেখাচ্ছো আমার উপর?

দেবাংশু নিজের চোয়াল শক্ত করে দিয়ারার দিকে তাকালে দিয়ারা ঘাবড়ে যায় দেবাংশুর রক্তচক্ষু চাহুনি দেখে। দেবাংশু দিয়ারার একদম কাছে গিয়ে দাঁতে দাঁতে চেপে বলে,

দেবাংশু: আই সেইড জাস্ট গেট আউট ফ্রম হেয়ার!

দেবাংশু পিছন ফিরে সিঁড়ি দিয়ে উঠে নিজের ঘরে চলে যায়। দিয়ারা কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো দেবাংশুর যাওয়ার পথে। দরজা বন্ধ হওয়ার বিকট শব্দে কেঁপে উঠে দিয়ারা মেইন গেটের দিকে পা বাড়ালো। দু পা এগোতেই কোনো কিছু ভাঙার আওয়াজ শুনতে পেলো দিয়ারা। এই আওয়াজ যে দেবাংশুর ঘর থেকেই আসছে ওর বুঝতে বাকি নেই। ও সিঁড়ির কাছে যাবে সেই সময় বাড়ির কেয়ারটেকার ছুটে এলো ওর কাছে আর বললো,

__ম্যাডাম যাবেন না প্লিজ।

দিয়ারা: কেন?

__ম্যাডাম স্যার রেগে গেলে আমরা কেউ যাইনা। এটা সুধাংশু স্যারের পরামর্শ বলতে পারেন। আজ অনেক বছর পর স্যারকে এভাবে রেগে যেতে দেখলাম। হয়তো মারাত্মক কোনো কারণে রেগে আছেন। আপনি যাবেন না।

দিয়ারা: শুনুন ও এমনিতেই নেশায় আছে। রাগের বশে যদি নিজের ক্ষতি করে ফেলে? আমাকে যেতে দিন।

__কিন্তু ম্যাডাম…

দিয়ারা কোনো কথা না শুনে দেবাংশুর ঘরের দিকে এগিয়ে গেলো। দেবাংশুর ঘরে ঢোকার আগে একটা বড়ো নিশ্বাস নিয়ে নিলো। তারপর দরজার লকে হাত দিতেই বুঝলো দরজা লক করা নেই, দেবাংশু শুধু দরজাটা বন্ধ করার জন্য বল প্রয়োগ করেছিলো। দিয়ারা ঘরে ঢুকতেই দেখে দেবাংশু হাতে একটা ফুলদানি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার দিকে তাকিয়ে। দিয়ারা দরজাটা বন্ধ করে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলো দেবাংশুর কাছে আর দেবাংশুর পিছন থেকেই একটু পাশ হয়ে দাঁড়ালো যার ফলে আয়নায় দিয়ারার প্রতিচ্ছবি তৈরী হলো।

দেবাংশু আয়নার দিকে তাকিয়ে ছিলো কারণ আয়নায় সে নিজের অতীতকে দেখতে পাচ্ছিলো। ওখানে অন্যকাওর প্রতিচ্ছবি ছিলো হয়ে দেবাংশুর কাছে অপরাধী। সেই জায়গায় দিয়ারার প্রতিচ্ছবি দেখতেই সেটা মেনে নিতে পারলো না দেবাংশু। ফুলদানিটা ছুঁড়ে মারতেই যাচ্ছিলো ঠিক সেই সময় কেউ ওর হাত ধরে নিলে দেবাংশু সেদিকে তাকায় আর দিয়ারাকে দেখতে পায়। দিয়ারা ফুলদানিটা কেড়ে নিতে নিতে চিৎকার করে বলে,

দিয়ারা: ছাড়ো এটা…কেন করছো এমন?? কি হয়েছেটা কি?? আমি কি করেছি….

দিয়ারা আর কিছু বলার সুযোগ পেলো না তার আগেই দেবাংশু দিয়ারার দু গালে হাত রেখে নিজের কাছে টেনে দিয়ারার ঠোঁটজোড়া নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো। ঘটনচক্রে দিয়ারা অবাক হয়ে যাওয়ায় ওর হাত থেকে ফ্লাইভারের ফুলদানিটা পরে গেলো। সেই আওয়াজেও দেবাংশুর ঘোর কাটলো না। দিয়ারা দেখতে পেলো দেবাংশু চোখ বন্ধ করে দিয়ারাকে অনুভব করতে চাইছে। আবেশে দিয়ারার চোখ বন্ধ হয়ে আসে এবং দেবাংশুকে আরও ভালো করে সুযোগ করে দেয় ও’কে অনুভব করার।

দেবাংশুর কোনো দিকে কোনো খেয়াল নেই এখন। যখনই সে টের পেলো দিয়ারা তাঁকে সুযোগ করে দিয়েছে তখনই সে আরো বেশি করে দিয়ারাকে অনুভব করার জন্য উদ্যত হলো। এদিকে দিয়ারা নিজের জিভে দেবাংশুর জিভের স্পর্শ পেতেই শিউরে উঠলো। শক্ত করে দেবাংশুকে আকড়ে ধরলো নিজের দু হাত দিয়ে।

একটা সময় গিয়ে যখন দিয়ারার শ্বাসকষ্ট শুরু হলো ঠিক সেই সময় দিয়ারা সরে আসার চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু দেবাংশু পাগলের মতো ও’কে কাছে চাইছে। দিয়ারা একপ্রকার জোর করে সরে আসে দেবাংশুর থেকে। হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,

দিয়ারা: দেবদা!…কি করছো…কি করছো টা কি তুমি..পাগল হয়ে গেছো?

প্রতি উত্তরে দিয়ারা যত টুকু সরে গেছিলো দেবাংশু আবারও ওকে কাছে টেনে নিয়ে সেই দূরত্ব মুছে দিলো। দেবাংশু নিজেও ঘন ঘন নিশ্বাস নিচ্ছে। দেবাংশু বাম হাত দিয়ে দিয়ারার কোমর জড়িয়ে আছে। দিয়ারার বাম হাত নিজের কোমরের কাছে দেখে নিজের ডান হাত দিয়ে দিয়ারার বাম হাতে স্লাইড করতে শুরু করে। দিয়ারা শিউরে উঠে দেবাংশুর কোমরের কাছের জ্যাকেট আকড়ে ধরে। দেবাংশু ধীরে ধীরে নিজের আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে হাতের উপরে উঠে কাঁধ হয়ে দিয়ারার গালের কাছে চলে যায়। দেবাংশুর চোখে পরে দিয়ারার বন্ধ, কম্পিত চোখ ও ঠোঁটজোড়া। দেবাংশু দিয়ারার কানের নীচ দিয়ে নিজের হাত প্রবেশ করিয়ে স্লো ভয়েসে বলে,

দেবাংশু: সাহস কি করে হয় ওই অর্জুনের তোকে ছোঁয়ার? হাউ ডেয়ার হি? তোকে ছোঁয়ার অধিকার আমি ছাড়া আর কাওর নেই। তুই শুধু আমার দিয়ু, শুধু আমার!

দিয়ারা চট করে চোখ খুলে ফেলে। হতবাক হয়ে গেছে সে। দেবাংশুর কথাগুলো সমানে কানে বাজছে ওর। সবথেকে বেশি করে বাজছে “তুই শুধু আমার দিয়ু, শুধু আমার!”

দিয়ারাকে অবাক করে দেবাংশু দিয়ারার কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। তারপর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে দিয়ারার ঘাড়ে মুখ গুঁজে দেয়। ধীরে ধীরে আওড়াতে থাকে,

দেবাংশু: তুই শুধু আমার, শুধু আমার। অন্যকাওর সাহস নেই, কোনো অধিকার নেই তোকে ছোঁয়ার। তোকে ছোঁয়ার অধিকার শুধু আমার আছে। তোর উপর শুধু আমার অধিকার আছে, শুধু আমার।

দিয়ারার চোখে খুশিতে জল চলে আসে। দেবাংশুর থেকে সরে এসে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ওর চোখে চোখ রাখতে দেবাংশু আবার দিয়ারার দু গালে হাত রাখে। দিয়ারা জিজ্ঞেস করে,

দিয়ারা: তুমি, তুমি আমাকে ভালো…

দিয়ারা জিজ্ঞেস করতে পারে না তার আগেই দেবাংশু দিয়ারার ঠোঁটজোড়ার উপর দখল নেয়। কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিয়ে দিয়ারার সারা মুখে ঠোঁটের স্পর্শ দিতে দিতে স্লো ভয়েসেই বলে,

দেবাংশু: আমার তোকে চাই। আই নিড ইউ দিয়ু!

কথাটা বলতে বলতেই দেবাংশুর হাত দিয়ারার ওয়ান পিসের স্ট্রাপের কাছে চলে গেলো আর ঠোঁটজোড়া দিয়ারার ঘাড়ে স্পর্শ দিতে থাকলো। দিয়ারা আর বাঁধা দিতে পারেনি দেবাংশুকে। না পেরেছে নিজের মনের প্রশ্নটা করতে।

সকালে,

দিয়ারার ঘুমটা ভাঙতেই দিয়ারা পিটপিট করে চোখ খুলে তাকালো। বার বার চোখের পলক ফেলে বোঝার চেষ্টা করলো ও ঠিক কোথায়। কারণ ওর ঘরের পরিবেশের সাথে কোনো মিল পাচ্ছে না ও। মাথাটা দিয়ারা একটু তুলতেই দেখলো দেবাংশুকে। কিছুক্ষণ দেবাংশুর দিকে তাকিয়ে থাকতেই ওর মনে পরলো গতরাতের ঘটনা। সঙ্গে সঙ্গে ও নিজের দিকে তাকালো যেখানে ও নিজেকে দেখতে পেলো দেবাংশুর বুকের উপর। ওরা দুজনের শরীর একটা চাদরের নীচে একে অপরের সাথে মিশে রয়েছে। দিয়ারা লজ্জা পেয়ে মুখ গুঁজে দিলো দেবাংশুর গলায়, তবে তাঁর কোনো টের নেই। সে ঘুমে মগ্ন। কিন্তু দিয়ারা গলায় মুখ গুঁজে দিতেই দেবাংশু নিজের হাত দিয়ে ও’কে জড়িয়ে ধরলো। দিয়ারা কিছুক্ষণ পর ভাবলো যে ওর চলে যাওয়া উচিত, কারণ ঘুম থেকে উঠে দেবাংশুর মুখোমুখি হবে এই অবস্থায় এটা ভাবলেই দিয়ারার লজ্জা লাগছে। তাই দেবাংশুর গেলে ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়ারা উঠে গেলো এবং ফ্রেশ হয়ে নিজের ড্রেস পরে বেরিয়ে গেলো।

কিছুক্ষণ পর,

দেবাংশুর ঘুমটা ভাঙতেই দেবাংশু উঠে বসলো। চোখটা ভালো ভাবে খুলতেই দেখলো ঘরের সবকিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে আছে। সেসব দেখে দেবাংশুর রাতের কথা মনে পরে গেলো। দেবাংশু নিজের ফোনটা হাতে নেবে সময় দেখার জন্য সেই সময় ওর চোখ গেলো ফোনের নীচে চাপা থাকা একটা কাগজের উপর। কাগজটা হাতে নিয়ে খুলে পড়তেই দেবাংশুর চোখ বড় বড় হয়ে গেলো কারণ কাগজে লেখা ছিলো, “গতরাতের কথা আমি কখনও ভুলবো না। আমি ভাবিনি তুমি এভাবে আমাকে নিজের মনের কথা জানাবে। আর এটা তো আমার কল্পনাতেও ছিলো না যে, মনের কথা জানানোর সাথে সাথে আমাকে নিজেরও করে নেবে। থ্যাংক ইউ গতরাতের জন্য, এই রাতটা আমার জন্য সবসময় স্পেশাল থাকবে।”

কাগজটা থেকে চোখ সরিয়ে ওর নিজের শরীরের দিকে চোখ যেতেই ধীরে ধীরে সবটাই মনে পরে গেলো। দেবাংশু দু হাত দিয়ে মুখ ঢেকে মাথা উপরের দিকে করে বললো,

দেবাংশু: ওহ গড! আমি এসব কি করে করে ফেললাম? এতো বড়ো একটা ব্লান্ডার কীভাবে আমি… শিট! এখন..এখন কি করবো আমি?

দেবাংশু নিজের মাথাটা ধরে বসে রইলো কারণ মাথাটা ধরে আছে ওর। উঠে ফ্রেশ গিয়ে নিয়ে নীচে আসতেই দেখলো কেয়ারটেকার ওর জন্য ব্ল্যাক কফি এনে দিলো।

দেবাংশু: থ্যাংক ইউ কাকা। এটার খুব দরকার ছিলো।

__হ্যাঁ হ্যাঁ, সে তো কালকেই বুঝেছি তোমার কি দরকার। ম্যাডাম কে কিন্তু তোমার সাথে খুব ভালো মানাবে, আর ম্যাডাম তোমাকে খুব ভালো সামলাতেও পারে। (মুখ টিপে হেসে)

ওনার কথা শুনে দেবাংশুর মুখ থেকে কফি বেরিয়ে এলো একপ্রকার। সেটা দেখে উনি যেমন মুখ টিপে হেসে কথাগুলো বলছিলেন সেভাবেই ওখান থেকে সরে গেলেন।

দেবাংশু: (কপালে দু আঙুল চেপে) জিসাস ক্রাইস্ট! সবটা এভাবে ঘেঁটে ফেললাম?

দেবাংশু কফি শেষ করে নিজের গাড়ির চাবি নিয়ে তৎক্ষণাৎ ওখান থেকে বেরিয়ে গেলো। উদ্দেশ্য অর্জুনের ফ্যাশন হাউজ।

এদিকে,

অর্জুন: কি ব্যাপার দিয়ারা? তুমি এখানে একা দাঁড়িয়ে আছো যে? কাওর অপেক্ষা করছো নাকি?

দিয়ারাকে অফিসের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অর্জুন দিয়ারাকে কথাটা জিজ্ঞেস করলো। দিয়ারা সাথে সাথে নিজেকে স্বাভাবিক করে বললো,

দিয়ারা: আব, আমি, আমি ওই দেবদার অপেক্ষা করছিলাম। ও না আসলে তো আমরা কাজ শুরু করতে পারবো না। আমি শুনলাম কিছু ডিজাইন এসে গেছে তো সেটা দিয়ে একবার ট্রায়াল দিয়ে নিলে ভালো হতো তাই আর কি…!!

অর্জুন: ওহ, ওকে। বাট তুমি ভিতরে গিয়ে ড্রেসগুলো দেখতে পারো যতক্ষণ না দেব.. দেবাংশু আসছে।

দিয়ারা: আব না না ঠিক আছে। আমি দাঁড়…

অর্জুন: ওই তো এসে গেছে দেবাংশু।

অর্জুনের কথা অনুযায়ী তাকাতেই দিয়ারা দেখতে পেলো দেবাংশু এসে গেছে। অর্থাৎ ওরা যখন কথা বলছিলো সেই ফাঁকেই দেবাংশু চলে এসেছে। দিয়ারা পিছন ফিরে দেবাংশুর দিকে তাকাতেই দেখলো দেবাংশু ওর দিকে তাকিয়েই এগিয়ে আসছে। দেবাংশুর সাথে চোখে চোখ পড়তেই দিয়ারা লাজুক হেসে চোখ নামিয়ে নিলো আর ওখান থেকে চলে গেলো নিজের মুখের অভিব্যক্তি আড়াল করার জন্য। কিন্তু একজন এসব ঠিকই লক্ষ্য করলো।

দিয়ারাকে চলে যেতে দেখে দেবাংশুও অর্জুনের সাথে আর কথা না বলে চলে গেলো সেদিকে। অর্জুনও নিজের কাজে ফেরত চলে গেলো আর না ভেবে। দিয়ারা স্টুডিওতে এসে সমানে নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকে দেবাংশুর মুখোমুখি হওয়ার। ও বুঝতে পারছে না এতো কেন লজ্জা লাগছে ওর।

দেবাংশু: কাইন্ডলি আপনারা একটু বাইরে যাবেন?

দেবাংশু স্টুডিও তে ঢুকতেই কথাটা বললো আর দিয়ারার সারা শরীর জুড়ে একটা কাপুনি তৈরি হলো। ওর শরীরের সমস্ত লোমকূপ জেগে উঠেছে কথাটা শুনে। দেবাংশুর কথা মতো যে কয়েকজন ডিজাইনার ছিলো তাঁরা বেরিয়ে গেলো। দিয়ারা অনুভব করতে লাগলো দেবাংশু ওর কাছে এগিয়ে আসছে। ঠিক যেই সময় দেবাংশু দিয়ারার পিছনে এসে দাঁড়ালো সেইসময় দিয়ারা বললো,

দিয়ারা: আমি, আমি চেঞ্জ করে আসছি।

দিয়ারার বুকের ধুকপুকানি এমনিতেই দৌঁড়াচ্ছিল তার উপর ও’কে যেতে বাঁধা দেওয়ার জন্য দেবাংশু ওর হাত ধরলো তখন ওর হৃদয় বেরিয়ে আসার যোগান হলো।

দিয়ারা: কি..কিছু বলবে?

দেবাংশু: (কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে) গতরাতে যা কিছু হয়েছে সেটা একটা মিসটেক ছিলো দিয়া।

দেবাংশু দিয়ারার হাতটা ছেড়ে দেয় কিন্তু দিয়ারার হাতটা ওখানেই স্থির থাকে। দিয়ারা ধীরে ধীরে হাতটা সরিয়ে এনে দেবাংশুর দিকে ফিরে চোখের দিকে তাকায়। সেটা লক্ষ্য করে দেবাংশু মাথা নীচু করেই বলে,

দেবাংশু: আই অ্যাম সরি। আমার উচিৎ ছিল নিজেকে কন্ট্রোল করা। আই অ্যাম এক্সট্রিমলি সরি।

দিয়ারা: ম..মা..মানে? তু..তুমি কি, কি বলছো এসব? আমি, আমি কিছু ব..বুঝতে পারছি না। (হতবাক হয়ে)

দেবাংশু: কালকে রাতে আমাদের মধ্যে যা হয়েছিলো সেটা ভুলবশত। আমি নেশার ঘোরে…আমি নেশার ঘোরে তোর ক্লোজ হয়েছিলাম। আমার কোনো উদ্দেশ্য ছিলো না ওরকম কিছু করার।

দিয়ারা জানো নিজের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। ও দু পা পিছিয়ে গেলো দেবাংশুর কথা শুনে। চোখের সামনে সব কিছু কেমন জানো ঘুরছে দিয়ারার।

দেবাংশু: দিয়া আমি…

দিয়ারা: (দেবাংশুর কলার ধরে) কেন করলে তুমি আমার সাথে এমন? কেন করলে বলো? কে অধিকার দিয়েছে তোমাকে আমার সাথে এমন করার? আমার সাথে ক্লোজ হওয়ার পর, সারারাত কাটানোর পর এখন তুমি বলছো সেটা মিসটেক ছিলো? (চিৎকার করে)

দেবাংশু: (দিয়ারার হাত ঝাড়া নেড়ে সরিয়ে দিয়ে) ডোন্ট শাউট! আমার উপর চিৎকার করার কোনো অধিকার নেই তোর মত মেয়েদের। আমার মতো এরকম হাজারটা ছেলের সাথে ক্লোজ হোস তুই। একেকদিন একেকটা ছেলে লাগে তোর। তাঁদের উপর গিয়ে চিৎকার কর। আর চিৎকার করবিই বা কীভাবে তাঁদের উপর, তাঁদের কাছে আসতে তো তুই নিজে থেকে দিস আর তাই জন্যেই তাঁরা তোকে সরি বলতে আসে না ইউজ করে চলে যায়। আমাকেও তুই চাইলেই আটকাতে পারতিস কিন্তু আটকাসনি তারপরেও আমি যে তোর কাছে সরি বলতে এসেছি এটাই অনেক নয়? কিন্তু না তোর তো এটারও সুযোগ নিয়ে ড্রামা করা দরকার। (রেগে)

দিয়ারা কিছু বলার মত পরিস্থিতিতে নেই। দেবাংশুর কথাগুলো তীরের মতো বিঁধেছে ওর বুকে। দিয়ারার হয়তো উচিৎ এখন দেবাংশুকে কষিয়ে একটা থাপ্পর মারা কিন্তু দিয়ারার চোখের সামনে গতরাতের ঘটনা ভেসে উঠলো। আর নিজের আত্মসম্মান ভুলে ও জিজ্ঞেস করে বসলো,

দিয়ারা: কেন করলে এমন? গতরাতে যা ঘটেছে সবটা ভুলবশত? তোমার কোনো অনুভূতি ছিলো না তাতে?

দেবাংশু: না ছিলো না।

দিয়ারা: তার মানে আমিও তানিশার মতোই একজন তাইনা? স্পেশাল কেউ না?

দেবাংশু: আমি ভেবেছিলাম তোর সাথে বেশি থাকলে ওই তানিশা আমার ঘাড় থেকে নামবে। এখন সেটাও হবে না বরং উল্টে তুই আমার ঘাড়ে চেপে বসতে চাইছিস।

কথাটা বলেই দেবাংশু পিছন ফিরে গেলো। দেবাংশুর মাথায় সবকিছুর একটা মিশ্রণ চলছে। চোখ খুললে ওর সামনে ভেসে উঠছে বর্তমান আর বন্ধ করলে অতীত। কিছুক্ষণ পর দিয়ারা বললো,

দিয়ারা: আমি ভেবেছিলাম তুমি আমাকে ভালোবাসো।

দেবাংশু তৎক্ষণাৎ নিজের চোখ খুলে ফেললো আর দিয়ারার দিকে ঘুরে গেলো। দিয়ারাকে কাঁদতে দেখে দেবাংশুর কিছুক্ষণ আগে নিজের বলা কথাগুলো মনে পরতে লাগলো। দেবাংশু কিছু বলতে যায়,

দেবাংশু: আমি কী বলেছিলেন এমন কিছু…

দিয়ারা: না। (হাত তুলে) আমি ভেবে নিয়েছিলাম। আমি ভেবে নিয়েছিলাম তুমি আমাকে ভালোবাসো। এটা আমার ভুল। যা যা হয়েছে তার জন্য আমি দায়ী। আই অ্যাম সরি, নিজের ভুল থাকার পরেও তোমার উপর চিৎকার করার জন্য। আই অ্যাম এক্সট্রিমলি সরি।

দিয়ারা নিজের ব্যাগটা নিয়ে ওখান থেকে চোখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেলো। এদিকে দেবাংশু ঠায় দাঁড়িয়ে দিয়ারার কথা গুলো ভাবছে। শেষের কথা গুলো!

[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here