কাব্যের_বিহঙ্গিনী #পর্ব_১৬ #লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি

0
707

#কাব্যের_বিহঙ্গিনী
#পর্ব_১৬
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি

কাব্যের এমন কথায় মেহবিন হাসলো আর ফুলগুলো নিয়ে বলল,,

‘হয়তো একটা সময়ের প্রেমিক পুরুষের চোখে অনেক প্রেম ছিল তাই তো এতো প্রেমময়ী হতে পেরেছি।”

কাব্য মুচকি হেসে বলল,,

‘এখন প্রেমিক পুরুষ নয় কেন?”

“এখন তো সে আমার অর্ধাঙ্গ। এখন কি সে আর প্রেমিক পুরুষ আছে নাকি!”

‘তার মানে বলছো অর্ধাঙ্গ হওয়ার সাথে সাথে প্রেমিক পুরুষ চলে গেছে।”

‘আমি কখন বললাম প্রেমিক পুরুষ চলে গেছে। বরং অর্ধাঙ্গ হওয়ার সাথে সাথে তার প্রেমিক পুরুষ পদ থেকে প্রমোশন পেয়েছে।”

‘কথায় তোমার সাথে কেউ পারবে না।”

“তাই নাকি?”

“হ্যা তাই।”

“ডাক্তার ইইডা কিডা?”

হুট করে কারো কথায় দুজনেই চমকে উঠলো । পাশে তাকাতেই মেহবিন দেখলো তাজেল দাঁড়িয়ে। মেহবিন মুচকি হেসে বলল,,

‘নেত্রী!”

“ডাক্তার তোমাগো দেহি সব কালা। মাথায় দেহি দুইজনেই ক্যাপ পরছো। এইডা কিডা ডাক্তার তোমার জামাই নাকি?

মেহবিন মুচকি হেসে বলল,,

“জামাই হলে কি করবে নেত্রী।”

“একটা লজেন খাওয়ামু হেতিরে।”

তখন কাব্য বলল,,

‘তাহলে দিয়ে দাও লজেন। আমি তোমার ডাক্তারের জামাই।”

তাজেল একবার কাব্যের দিকে তাকালো আবার মেহবিনের দিকে তাকিয়ে বলল,,

“তোমার জামাই দেহি শরম পায় ডাক্তার। তাই তো মুখ ঢাইকা আইছে।”

তাজেলের কথায় কাব্য হেঁসে বলল,,

“শরম পাই নাই গো নেত্রী এমনি মাস্ক পরছি।”

“তুমি আমারে চেনো নাকি । আর তুমি আমারে নেত্রী কইতেছো কেন? ঐডা খালি ডাক্তার ডাকবো।”

“আমি তোমার ডাক্তারের জামাই তাই তো তোমায় নেত্রী ডাকছি। আর হ্যা আমি তোমায় চিনি।”

“ডাক্তারের জামাই দেইখা নেত্রী ডাকায় কিছু কইলাম না।”

“অন্যকেউ হলে কি করতে শুনি।”

“ডাক্তারের বাড়ির পাশে একটা বাবলা গাছ আছে না। ঐ গাছে বাইন্ধা পিটাইতাম।”

তাজেলের এমন কথায় কাব্যের মুখটা চুপসে গেল আর মেহবিন জোরে হেঁসে উঠলো। কাব্য বুকে হাত দিয়ে বলল,,

“তোমার ডাক্তারের জামাই দেখে বাইচা গেছি।”

“ডাক্তার তোমার জামাইরে এটটু দেহি। দেহি তোমার থিকা কালা না ধলা।”

মেহবিন মুচকি হেসে বলল,,

“দেখাতে পারি যদি একটা কথা রাখতে পারো। তুমি কিন্তু কাউকে বলতে পারবে না এটা আমার জামাই।”

“আইচ্ছা তোমার নেত্রী তোমারে কথা দিতাছে কাউরে কইবো না। এহন কইয়া ফালাও, না তোমার জামাইরে দেখাই ফালাও, আরে না ঐ কালা পাঞ্জাবিওয়ালা মুখ খুলো।”

কাব্য একটু নিচু হয়ে হেঁসে মুখ খুললো তাজেল কাব্যের দিকে একবার তাকালো আরেকবার মেহবিনের দিকে। কাব্যের মুখ দেখে তাজেল হা হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে বলল,,

“এই পুলিশ পাঞ্জাবিওয়ালা তোমার জামাই ডাক্তার?”

মেহবিন মাথা নাড়লো। তা দেখে তাজেল মাথায় হাত দিল আর বলল,,

“তাইলে হেইদিন জিগাইলাম তোমার জামাই নাকি তুমি হেইদিন কইলা না ক্যান?”

তখন কাব্য মাস্কটা পরে তাজেলের নাক ধরে একটু টান দিয়ে বলল,,

“সেদিন তো তোমার পা দিয়ে রক্ত বের হওয়ার জন্য তোমার প্রশ্নটা চাপা পরে গিয়েছিল।”

“ওহ আইচ্ছা তোমরা কোথাও ঘুরতে যাইতেছো নাকি?”

“হুম যাচ্ছি তো!”

তখন মেহবিন বলল,,

‘তুমি এখানে কি কর এখন?”

‘কিছু না এমনিই কিন্তু দেহো সেদিন আমার শরীর লুকাইলেও চোখ দেখছিল। আইজ কিন্তু কেউ লুকায় নাই সবাই সব দেখছে।”

তাজেলের কথায় মেহবিন হাসলো আর বলল,,

“তুমি আমার নেত্রী দেখেই কিন্তু সব জানতে পারলে। অন্যকেউ হলে কিন্তু জানতো না।”

“আইচ্ছা ঐডা ঠিক আছে। তা তোমার জামাই এর নাম কি? পাঞ্জাবিওয়ালা তো তুমি রাখছো।”

তখন মুখর কোলে নিয়ে গাড়ির ওপর বসিয়ে বলল,,

“তোমার ডাক্তার আমার আরো একটা নাম রেখেছে জানো। আমার নাম মুখর শাহরিয়ার কাব্য। মুখর শাহরিয়ার আমার বাবা মা রেখেছে আর কাব্যটা তোমার ডাক্তার।”

“একদম আমার মতো তাজেল আমার বাপ মায় রাখছিল আর শেখ আমি লাগাইছি।”

“হুম ঠিক কিছুটা তোমার মতোই শেখ তাজেল। তা তুমি চকলেট খাবে?”

‘না ডাক্তার আমারে মাঝে মাঝেই চকলেট দেয়। এহন খাইতে ইচ্ছা করতেছে না। আমি এহন খেলতে যামু। ওনে গেলেই ভাগ দেওয়া লাগবো।”

“ওহ আচ্ছা।”

“হ এহন আমারে নামায় দেও।”

মুখর তাজেল কে নামিয়ে দিল। তখন তাজেল বলল,,

“আমি কিন্তু তোমারে পুলিশ পাঞ্জাবিওয়ালা কমু ঠিক আছে। নামটা এক্কেরে ভাললাগছে পাঞ্জাবিওয়ালা তুমি তো আবার পুলিশ তাই পুলিশ ডাকমু ঠিক আছে।”

“ঠিক আছে তোমার যা ইচ্ছা তাই ডেকো।”

‘হুনো ডাক্তার রে দেইখা রাইখো হেতিরে জানি কেউ আবার নিয়া যায় না।”

“আমি থাকতে তোমার ডাক্তারে নেবে কে?”

‘তা ঠিক আছে তুমি তো আবার পুলিশ। ডাক্তার আসবা কোন সময়?

মেহবিন বলল,,

“বিকেলে বা সন্ধ্যা হতে পারে রাত ও হতে পারে বলতে পারছি না।”

‘তাইলে কাল আমার ছুটি?”

‘না পড়াবো।”

“একদিন না পরাইলে কি অয়?”

“আজকে না তোমার ছুটি ছিল!”

“হ তাই তো। আইচ্ছা তোমরা যাও আমি গেলাম খেলায় দেরি হইতেছে। আল্লাহ হাফেজ। আসসালামু আলাইকুম!

“ওয়ালাইকুমুস সালাম।”

তাজেল চলে গেল মুখর সেদিকে তাকিয়ে বলল,,

“মেয়েটা কিন্তু কিউটের ডিব্বা!”

মুখরের কথা মেহবিন হেঁসে বলল,,

“এখানে নেত্রী থাকলে কি বলতো জানেন? বলতো আপনার চোখে সমস্যা আছে ডাক্তার দেখাতে হবে আপনি মানুষ কে ডিব্বা দেখেন।”

মুখর হাসলো আর বলল,,

“ক্যারেক্টার একটা!”

“যাই হোক চলুন নাকি এখানেই থাকবেন। আশেপাশে মানুষ নেই তাই কি হয়েছে নেত্রীর মতো অনেকেই এখান দিয়ে যাওয়া আসা করবে।”

“হ্যা তা ঠিক বলেছো। উঠো গাড়িতে?”

মুখর আর মেহবিন গাড়িতে বসলো । গাড়ি স্টার্ট দিয়ে সেখান থেকে চলে গেল। কিছুদূর যেতেই মুখর বলল,,

“এক মাস চার দিন পর বিহঙ্গিনীর সাথে তার কাব্যের দেখা হয়েছে।”

“উহু শুধু এক মাস চার দিন নয়। এক মাস চার দিন তিন ঘন্টা উনিশ মিনিট পর।”

“বাহ বিহঙ্গিনী ঘন্টা আর মিনিটের খবর ও রেখেছ?”

“বিহঙ্গিনীর সাথে কাব্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত তাই এই ছোট ছোট বিষয়েও খেয়াল রাখতে হয়।”

“আচ্ছা ঠিক আছে। এখন কি বিহঙ্গিনী তার কাব্যের হাতটা জড়িয়ে ধরবে?”

মেহবিন মুচকি হেসে এগিয়ে এসে মুখরের হাত জড়িয়ে ধরলো ওর কাঁধে মাথা রাখলো। তখন মুখর বলল,,

“এখন কোথায় যাবে?”

“ঘুরতে নেওয়ার কথা আপনার। তাহলে আমি কেন বলবো?”

“আচ্ছা দুপুরে কি খাবে?”

‘আপনার যা পছন্দ?”

“তাহলে চলো আজ জমিয়ে কাচ্চি বিরিয়ানি খাবো। যেটায় আলু দেওয়া থাকে। তুমি কিন্তু তোমার প্লেট থেকে আলু আমায় দেবে।

মুখরের কথায় মেহবিন হাসলো আর বলল,,

“আচ্ছা ঠিক আছে দেব। আমি তো জানি আপনার কাচ্চির থেকে কাচ্চির আলু পছন্দ।”

“আমি কিন্তু কাচ্চি শুধু তোমার সাথে খাই।”

“হ্যা হ্যা তাই তো! সেদিন মিস্টার বাজপাখির সাথে কে বিরিয়ানি খেয়েছিল?

মেহবিনের এ কথা শুনে মুখর একটু হাসলো তারপর বললো,,

“ওটায় কিন্তু আলু ছিল না। আমি আলু ওয়ালা কাচ্চি শুধু তোমার সাথে খাই। আচ্ছা বাদ দাও তুমি কিন্তু আমার ক্যাপের ওপরের লেখা দেখো নি।”

“আপনাকে কে বলল আমি দেখেনি আমি দেখেছি ওখানে ইংরেজি তে লেখা BIHONGGINIR KABBO!”

“হুম ভালো আজ তোমায় একটা জায়গায় নিয়ে যাবো।”

“আজ আপনার নামে আমার দিনটা লিখে দিয়েছি আপনার যেথায় ইচ্ছে সেথায় যান।”

মুখর একটা শুনশান লেকের জায়গায় নিয়ে গাড়ি থামালো সময়টা দুপুর বারোটা । কেউ নেই আশেপাশে। মুখর বেরিয়ে মেহবিনের দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। মেহবিন হেঁসে তার হাতে হাত রাখলো। তারপর দুজনে গিয়ে একটা বেঞ্চে বসলো। হুট করেই মুখর বলল,,

“তোমার নিকাব টা একটু খুলবে বিহঙ্গিনী? বহুদিন হয়ে গেছে আমি মুগ্ধ চোখে তোমার হাঁসি দেখার সুযোগ পাইনি।”

মুখরের এমন কথায় মেহবিন একটু থমকালো । তারপর হেঁসে নিকাব টা খুললো। মুখর মুগ্ধ চোখে সেদিকে তাকিয়ে রইল। কিছুক্ষণ পর মুখর বলতে লাগল,,

“এই বিশ্বে সবচাইতে ভয়ানক জিনিস কি জানো? নারীর চোখ আর হাঁসি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুরুষ মানুষ এখানেই আঁটকে যায়।”

মেহবিন হেঁসে বলল,,

‘এ কথা কে বলেছে?”

“আমি বললাম আর লেখিকা আজরিনা জ্যামি বলল।’

‘লেখিকা বললে ঠিক আছে কিন্তু আমার কাছে আপনার বলার গ্ৰহনযোগ্যতা হলো না।”

“আমায় আন্ডারেস্টিমেট করছো?’

“না তো কোথায় করলাম।”

মুখর মেহবিনের হাত ধরলো আর তার চোখে চোখ রেখে বলল,,

“তুমি আমার শীতের সকালের সোনালী সূর্য কণা,
তুমি মানে নীলাভ আকাশে মেঘের আনাগোনা।

তুমি মানে নতুন আলো, নতুন দিনের আভাস
আমার মনের মনিকোঠায় শুধু তোমার বসবাস।

তুমি মানে মেঘলা দিনের একটুখানি রোদ
তোমার জন্য পাড়ি দিতে পারি অনেকখানি পথ।

তুমি মানে রোদেলা দুপুরের এক টুকরো মেঘ
তোমায় নিয়ে মনের মাঝে অভিমান অনেক।

তুমি মানে উত্তাল সমুদ্রের এক টুকরো ঢেউ
তুমি ছাড়া আমার বলো আর কাছের কি আছে কেউ।

তুমি মানে গাছের ডালে বিহঙ্গদের বসেছে মেলা
তোমার অপেক্ষায় আছি শেষ যে হয়ে যায় বেলা।

তুমি মানে আঁধার রাতের একটুখানি আলো
আমি তোমায় বাসি আমার প্রাণের চেয়ে বেশি ভালো।

মুখরের এমন কবিতা শুনে মেহবিন হাসলো আর বলল,,

“কিছু মুহূর্ত এতো সুন্দর হয় কেন কাব্য? ভালোবাসা বাড়ানোর জন্য নাকি স্মৃতি রাখার জন্য?”

মুখর হেঁসে বলল,,

“দুটোর জন্যই। ভালোবাসাময় এক মুহুর্ত সারাজীবন ধরে পুনঃজীবিত করে রাখার জন্য।”

“হুম!”

“কি হুম?”

“কিছু না!”

“জায়গা টা কেমন?”

“বেশ ভালো।”

“আমার খুদা লাগছে তাহলে যাওয়া যাক।”

“আরেকটু থাকি না?’

“আরো কিছু জায়গায় যেতে হবে সাথে ফুতপাত দিয়ে হাতে হাত রেখে হাঁটতেও তো হবে।”

মুখরের কথায় মেহবিন হাসলো আর বলল,,

“আপনি কোন দিন ও শুধরাবেন না।”

“না তোমার কোন সমস্যা?”

“উঁহু কোন সমস্যা নেই এখন চলুন জনাব।”

ওরা দুজনে ওখান থেকে বেরিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলো। ওদেরকে কালো পোষাকে দেখে সবাই ওদের দিকে তাকালো। দেখেই বোঝা যাচ্ছে কাপল। মুখর মেহবিনের হাত ধরে কথা বলতে বলতে যাচ্ছে যা সবার নজর কারলো সব থেকে নজর কারলো দুজনের ক্যাপ যেখানে তাদের নিজেদের দেওয়া নাম আছে সোনালী রঙের। ওরা ভেতরে একটা রুমের মতো সেখানে চলে গেল। মুখর দু’জনের জন্য কাচ্চি অর্ডার করলো। মুখর মাস্ক খুলে ফেললো মেহবিন সেদিকে তাকিয়ে রইল। তা দেখে মুখর বলল,,

“কি দেখছো?”

“আপনিও প্রেমময় কিন্তু কম নন।”

‘আয় হায় এই জালিম মেয়েটা আমার প্রশংসা করছে ভাবা যায়।”

“যে মানুষ টা আমার দিকে সবসময় মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকে। আমাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে সঠিক সময়ের জন্য আমার জন্য অপেক্ষা করে তার প্রশংসা করবো না।”

“শুধু কি আমি করি তুমিও তো অপেক্ষা কর। আমার অপেক্ষা তো শেষ হবে একদিন। কিন্তু তুমি যার জন্য অপেক্ষা কর তার অপেক্ষার অবসান কি কখনো হবে?”

মুখরের এই কথায় মেহবিনের হাঁসি মুখটা একটু থমকে গেল। তবুও আবার মুচকি হেসে বলল,,

“আল্লাহ চাহে তো হবে। ওসব নিয়ে আমি ভাবি না। জীবনের এতটা পথ একাই পাড়ি দিয়ে এসেছি। এরপর তো আপনি আছেন ঠিকই জীবন কেটে যাবে।”

তখনি ওয়েটার এলো খাবার নিয়ে। মেহবিন বলল,,

“খাবার এসে গেছে আপনার না খুদা লাগছে শুরু করুন।”

“আজ আমি তোমায় খায়িয়ে দিই?”

“কেন সবগুলো আলু নিবেন বলে?”

মেহবিনের এমন উত্তর মুখর আশা করেনি। ও হা করে ওর দিকে তাকিয়ে বলল,,

“আমি বললাম কি, আর তুমি বললে কি? তুমি একটা যা তা!”

মুখরের এমন কথায় মেহবিন হেঁসে ফেললো। আর সামনের চেয়ারটা থেকে উঠে এসে মুখরের পাশের চেয়ারে বসলো। আর বলল,,

“নিন খায়িয়ে দিন।”

মুখর হেঁসে বলল,,

“তুমি একটা,,”

“কি?”

“গোলাপ ফুল!”

‘সাবধান গোলাপ ফুলে কিন্তু কাঁটাও থাকে।”

‘তোমার সবকিছুই মধুর লাগে আমার তা হোক স্নিগ্ধতা বা হোক আঘাত।”

‘হুম অনেক হয়েছে এখন শুরু করুন। আপনার সাথে কথা বলতে বলতে আমারই খুদা লেগে গেছে।”

‘সবসময় কথা কাটানোর ধান্ধায় থাকো। যাই হোক হা করো।”

মুখর মেহবিন কে যত্ন করে খায়িয়ে দিল মেহবিন ও খায়িয়ে দিল। দূর থেকে কেউ একজন এটা দেখে মুচকি হাসলো। সাথে সাথে একটা নিজের আইডি তে পোস্ট ও করলো ” ভালোবাসা সুন্দর যদি মানুষটা সঠিক হয়!’

খাওয়া দাওয়া শেষ করে ওরা বের হলো আর হাত ধরে রাস্তার ফুটপাতে হাঁটতে লাগলো। একজন ফুল বিক্রেতা আসলে মুখর একটা বেলি ফুলের মালা জরিয়ে দিল মেহবিনের হাতে। পুরো সারাটা দিন নিজেদের মতো কাটালো। কয়েকটা ছবিও তুললো। সন্ধ্যার পর মেহবিন কে পাকা রাস্তায় নামিয়ে দিল সাথে সে ও নামলো। মেহবিন হেঁসে বলল,,

“আজকের দিনটা অনেক সুন্দর ছিল কাব্য।”

‘হুম তা তো সুন্দর হবেই বিহঙ্গিনী যে তার কাব্যের সাথে মিলেছিল।”

‘হুম!”

মেহবিন অদ্ভুত ভাবে মুখরের চোখের দিকে তাকিয়ে রইল। তা দেখে মুখর বলল,,

“কিছু বলবে বিহঙ্গিনী?”

মেহবিন মুচকি হেসে বলল,,,

“বলার মতো কিছু নেই। কি বলবো?”

“তোমায় নিয়ে?”

“আমার আমিকে নিয়ে কিছু বলার নেই। সময়ই পাইনি কোনদিন নিজেকে নিয়ে ভাবার। কিন্তু সবাই ভাবে কতো অফুরন্ত সময় আমার।”

মেহবিনের এমন কথা শুনে মুখর ওর দিকে তাকিয়ে রইল। আর বলল,,

“সত্যিই কি পাওনি সময়?”

মেহবিন মুচকি হেঁসে বলল,,

“ছোটবেলায় ছিলাম মুক্ত পাখির মতো এখানে ওখানে নিজের ইচ্ছে মতো উড়ে বেড়াতাম নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় কই। দিন তো এমনিই পেরিয়ে যেত। পাখনা দিয়েছিল আমার মা বাবা। মাকে হারালাম সাথে নিজেকে। নীড় পরিবর্তন হলো সেখানে মানিয়ে নেওয়ার তীব্র চেষ্টা করলাম নিজেকে তাদের সাথে। মানাতে মানাতে জীবনে কিছু মানুষ এলো খুব কাছের হলো মাঝপথে ছেড়ে চলে গেল । আবার একা হয়ে পরলাম তবুও নিজেকে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়ার তীব্র চেষ্টা আবার করলাম। আবার নীড় হারালাম নতুন করে নিজের নীড় খুঁজতে লাগলাম একটা নীড় হলো তারপর আপনাদের সাথে পরিচিত হলাম। আপনি এলেন অন্যরুপে অনেক ভাবনা চিন্তার পর আপনাকে নিজের সাথে জড়ালাম। তারপর সাময়িক বিচ্ছেদ হলো আমাদের নিজেকে নিজের একাকিত্বের সাথে আবার মানিয়ে নেওয়ার তীব্র চেষ্টা করলাম। অতঃপর আমার একাকীত্ব আমার সঙ্গী হলো কিন্তু গন্তব্য বদলে গেল। গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য আবার তীব্র চেষ্টা করলাম বা করছি। এখন বলুন নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় কখন পেলাম। জীবনের এতটা সময় পার করে এলাম অথচ নিজেকে নিয়ে ভাবার সময়ই পেলাম না। কি অদ্ভুত তাই না। উর্দু তে যদি বলি,,

“Itna Saal gujar di Per Waqt hi nhi Mila..koe puche Mujhe Aise kya kia Zo Waqt hi nhi Mila.. Eh to Mujhe nhi Malum per Mujhe Waqt hi nhi Mila.

সবশুনে মুখরের চোখটা ছলছল করে উঠলো। অথচ মেহবিনের মুখে স্নিগ্ধ হাঁসি। মুখর অসহায় চোখে একটা হাঁসি দিয়ে বলল,,

Kash Hum Sath hote, Kash Hardin Aise Khubsurat Hota.

মেহবিন মুচকি হেসে বলল,,

Honge na! Sabr Kijiye.. Allah Hafiz…

~চলবে,,

বিঃদ্রঃ আসসালামু আলাইকুম। আজকের পর্বটা ছিল পুরো কাব্যবিহঙ্গিনীময় সাথে ছিল নেত্রী। আজকের পর্বটা একটু স্পেশাল ছিল কেমন লাগলো জানাবেন। আর হ্যা কবিতাটা কেমন হয়েছে সেটাও জানাবেন। সবথেকে বড় কথা থ্রিলার গল্প এটা আস্তে আস্তে আগাতে হবে তাড়াহুড়ো করলে সব ঘেটে ঘ হয়ে যাবে। ধৈর্য্য ধরে সাথে থাকুন সঠিক সময় সব সামনে আসবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here